
ভাঙচুর-নাশকতার মামলায় খালাস পেলেন বিএনপির ৮০ নেতাকর্মী
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মিলনসহ বিএনপির ৮০ জন নেতাকে ভাঙচুর ও নাশকতার মামলা থেকে খালাস দিয়েছে আদালত। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতের বিচারক তোফাজ্জল হোসেনের আদালত তাদের খলাস প্রদান করেন।২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কালো পতাকা মিছিলকে কেন্দ্র করে ভাঙচুরের মামলায় চারশিটভুক্ত ৮০ জন আসামিকে মামলার বিচারিক কার্যক্রম সমাপ্তি শেষে খালাস প্রদান করা হয়।মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামি হলেন, বিএনপির উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ফজলুল হক মিলন, বিএনপির যুগ্মমহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি রফিকুল আলম মজনু এবং সাবেক ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব।মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী জাকির হোসেন জুয়েল বলেন, দীর্ঘদিন আইনি কার্যক্রম পরিচালনা করে সাক্ষীদের সঠিকভাবে জবানবন্দির মাধ্যমে উক্ত মামলা থেকে খালাস দিতে সামর্থ্য হয়েছি। আমরা মনে করি, ন্যায় বিচার পেয়েছি।

সব অপরাধের বিচার হবে : হাইকোর্ট
ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল চেয়ে দায়ের করা রিটের আদেশ দেওয়ার আগে হাইকোর্ট রিটকারীকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার সব অপরাধের বিচার করবে। সব অপরাধের বিচার হবে।রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহবুবুল উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান রিটকারীকে উদ্দেশ করে বলেন, ছাত্র-জনতাকে যারা গুলির নির্দেশ দিয়েছে, গুলি করেছে তাদের বিচারের বিষয়ে সরকার খুব আন্তরিক। গুলির নির্দেশ দিয়েছে ব্যক্তি। অপরাধ ব্যক্তি করেছে দল নয়।এসময় রিটকারী পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে আদেশ চাইলে হাইকোর্ট বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এরই মধ্যে সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে কথা বলেছেন। সরকার এ বিষয়ে খুব আন্তরিক। সব অপরাধের বিচার হবে।এরপর আদালত ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল চেয়ে দায়ের করা রিট সরাসরি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।রোববার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহবুবুল উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।রিটের পক্ষে রিটকারী আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া শুনানি করেন।এর আগে গত ২৭ আগস্ট ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল চেয়ে দায়ের করা রিটের শুনানি শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।

ফের রিমান্ডে টুকু, জয় ও আহমদসহ ৫ জন
হত্যা মামলায় সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আরিফ খান জয়, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনসহ পাঁচ জনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দেন।অন্যরা হলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহাইল এবং ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।রোববার সকালে আইডিয়াল কলেজের ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড শেষে ৬ আসামিকে আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা লালবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আক্কাস মিয়া। এ সময় তদন্ত কর্মকর্তা শামসুল হক টুকু, আরিফ খান জয় ও মোহাম্মদ সোহাইলের পুনরায় সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। অপরদিকে, আদাবর থানার গার্মেন্টস কর্মীরুবেলহত্যামামলায় আওয়ামী লীগ নেতা আহমদ হোসেন ও তানভীর হাসান সৈকতকে গ্রেফতার দেখানোসহ সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মিন্টু চন্দ্র বণিক। শুনানি শেষে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।এর আগে, গত ১৪ আগস্ট খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ এলাকা থেকে শামসুল হক টুকু ও তানভীর হাসান সৈকতকে গ্রেফতারের কথা জানায় পুলিশ। পরদিন কামাল উদ্দিন হত্যা মামলায় তাদেরকে ১০ দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।এদিকে, গত ১৯ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে আরিফ খান জয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরের দিন মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানদার আবু সায়েদ হত্যা মামলায় তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।তাছাড়া, গত ২০ আগস্ট আহমদ হোসেনকে রামপুরা এবং এম সোহায়েলকে ঢাকার বনানী থেকে গ্রেফতারের কথা জানায় পুলিশ। পরদিন পল্টন থানায় দায়েরকৃত যুবদল নেতা নবীন তালুকদার হত্যা মামলায় তাদের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
.jpeg)
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চেয়ে করা রিট খারিজ
ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল চেয়ে দায়ের করা রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহবুবুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।এর আগে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও দলটির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে করা রিটটি গত ২৭ আগস্ট খারিজ চান অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ঐদিন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানিতে এমন আর্জি জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।এরপর আদালত ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছিল। মানবাধিকার সংগঠন সারডা সোসাইটির পক্ষে আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া ১৯ আগস্ট এ রিট করেছিলেন।এছাড়া রিটে দেশ সংস্কারের লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সর্বনিম্ন তিন বছর চাওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে বিদেশে পাচার করা ১১ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের বদলি চাওয়া হয়েছে।

একযোগে ৮১ বিচারককে বদলি
জেলা পর্যায়ের ৮১ জন বিচারককে তাদের বর্তমান কর্মস্থল থেকে বদলি করা হয়েছে। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) এক সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।এতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের সাথে পরামর্শক্রমে জুডিশিয়াল সার্ভিসের ৪৪ সদস্যকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে বদলি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তাদের নামের পাশে বর্ণিত পদে ও কর্মস্থলে নিয়োগ বা বদলি করা হলো।

উস্কানির দায়ে ৩২ সাংবাদিকসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
জুলাই গণহত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় আরও একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এরমধ্যে গণহত্যায় উস্কানি দেয়ায় ৩২ জন সিনিয়র সাংবাদিককেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এইচ গাজী তামিম। তিনি জানান, আন্দোলনে নিহত রিহানের বাবা গোলাম রাজ্জাক আন্তর্জাতিক আদালতে এ আবেদন করেন।প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলী রিং রোডে বিজয় মিছিল চলাকালে গুলিতে নিহত হয় রিহান। সে মিরপুর বিসিআইসি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি চালালে রিহানের মুখে, মাথায় ও গলায় গুলি লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়।অভিযোগে শেখ হাসিনা ছাড়াও তার আমলের ২০ জন মন্ত্রী-এমপি, উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও ৩২ জন সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধির নামও আছে।এই আইনজীবী জানান, যারা ৩ আগস্ট শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেছিলেন এবং সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করে উস্কানি দিয়েছেন এবং টক শো করে গণহত্যার বৈধতা দিয়েছেন, মূলত তাদেরকেই অভিযুক্ত করা হয়েছে এই অভিযোগে।

ড. ইউনূসের দুর্নীতি মামলা সম্পর্কিত শুনানির দিন পেছালো
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দুর্নীতি মামলা তুলে নেয়া আইনসম্মত ছিল কিনা, এ বিষয়ে শুনানির দিন পেছানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিষয়টি নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে আদালত এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন।এর আগে, গত ১১ আগস্ট গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলা থেকে খালাস পান নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ওইদিন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এ আদেশ দেন।তার আগে, গত ৭ আগস্ট শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা থেকে ড. ইউনূসকে খালাস দেন আদালত। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম এ আউয়াল সেই আদেশ দেন।শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় গত ১২ জুন ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সবশেষ গত ১১ আগস্ট ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী মামলার প্রসিকিউশন প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন। পরে শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম ড. ইউনূসকে দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস দেন।

আমি ও সালমান আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম: আদালতে আনিসুল হক
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রিমান্ড শুনানি চলাকালে আদালতকে বলেছেন, আমরা দুজনই (আমি ও সালমান এফ রহমান) কোটা আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম। আমি নির্দোষ। ঘটনার বিষয় কিছুই জানি না। আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই।আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালতে রিমান্ড শুনানিতে তিনি ন্যায়বিচার চান।আজ সকাল ৭টার দিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, এমপি সাদেক খান ও সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ।পরে বাড্ডা ফুজি টাওয়ারের সামনে সুমন সিকদার হত্যা মামলায় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের ৫ দিন এবং আদাবরে পোশাক শ্রমিক রুবেল হত্যা মামলায় সাদেক খান ও জিয়াউল আহসানের ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।এর আগে, গত ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন নিউমার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে (২৪) হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তাদের দুজনের দশদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।প্রথম দফার রিমান্ড শেষে গত ২৪ আগস্ট তাদের আদালতে হাজির করা হয়েছিল। এরপর নিউমার্কেট থানার পৃথক দুই মামলায় দশদিন করে বিশদিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক দুই মামলায় পাঁচদিন করে দশদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাড্ডায় ফুজি টাওয়ারের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় সুমন সিকদার (৩১) নামের এক যুবককে। নিহতের মা মাসুমা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭৯ জনকে আসামি করা হয়।

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা
দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন এই মামলা দায়ের করেন। তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২১৯ ও ৪৬৬ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।এর আগে, গত ২৬ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় খায়রুল হকের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা হয়। সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পরিবর্তন ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করা হয়।নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. আব্দুল বারী ভূঁইয়া এই মামলা করেন।

পল্টন থানায় চার হাজার আনসারের বিরুদ্ধে মামলা
বেআইনি সমাবেশ ও পুলিশের কাজে বাধাদানের অভিযোগে রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় ৪ হাজার ১১৪ আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ১১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আজ (সোমবার) পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক সাজ্জাদ হোসেন ভুইয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। এ মামলায় ৯৫ আনসার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হবে।নিজেদের চাকরি জাতীয়করণের দাবি আদায়ে গতকাল প্রায় ১০ হাজার আনসার সদস্য একত্রিত হয়ে সচিবালয় ঘেরাও করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাত জন উপদেষ্টাসহ সচিবালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রাখে।উত্তেজিত আনসার সদস্যদের শান্ত করার জন্য বিকেলে মহাপরিচালক, আনসার ও ভিডিপি সচিবালয়ে আসেন এবং আনসার সদস্যদের সকল দাবি মেনে নেন। এরপরও উত্তেজিত আনসার সদস্যরা সচিবালয় এলাকা ত্যাগ না করে আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং কিছু আনসার সদস্য সচিবালয়ের তিন নম্বর গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।এ সময় উত্তেজিত আনসার সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদের ওপর অতর্কিত হামলা করে এবং সচিবালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর টহলের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ লাঠি দ্বারা আঘাত করে।এ সময় ছয় জন সেনাসদস্য আহত হয় এবং এর মধ্যে একজনের জনের অবস্থা গুরুতর।পরবর্তীতে সচিবালয় এলাকায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে আনসারদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়।এরপর সচিবালয়ে অবরুদ্ধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাত উপদেষ্টা, ডিজি আনসার, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সচিবালয়ের সকল কর্মকর্তা সেনাবাহিনীর সহায়তায় সচিবালয় এলাকা নিরাপদে ত্যাগ করেন।

জামায়াত নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার হচ্ছে আগামীকাল
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল তা আগামীকাল (মঙ্গলবার) প্রত্যাহার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। সোমবার (২৬ আগস্ট) সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়– যেহেতু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত কয়েকটি মামলার রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (পূর্বনাম জামায়াত-ই-ইসলামী/জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ) এবং উহার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে (পূর্বনাম ইসলামী ছাত্রসংঘ) ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ী হিসাবে গণ্য করা হইয়াছে; এবংযেহেতু, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে রাজনৈতিক দল হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বাতিল করিয়া দিয়াছে এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগের উক্ত রায়কে বহাল রাখিয়াছে; এবংযেহেতু, সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রহিয়াছে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং উহার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাম্প্রতিককালে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে সরাসরি এবং উসকানির মাধ্যমে জড়িত ছিল; এবংযেহেতু, সরকার বিশ্বাস করে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সহিত জড়িত রহিয়াছে;সেহেতু, সরকার, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসাবে তালিকাভুক্ত করিল। এই প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

শেখ হাসিনার নামে আরো ৭ মামলা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ঢাকাসহ সারা দেশে আরো বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ছাত্র-জনতার সরকার পতনের আন্দোলনে মৃত্যুর ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও অতি সম্প্রতি বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৪টি মামলা, ২টি নারায়ণগঞ্জ, ১টি রংপুরে দায়ের হয়েছে।এর মধ্যেবিডিআর বিদ্রোহের মামলার আসামি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহিমের কারাগারে মৃত্যুর ঘটনায় শেখ হাসিনা ও বিডিআর প্রধান (পরবর্তীকালে সেনাপ্রধান) জেনারেল আজিজ আহমেদসহ ১৩ জনের নামে মামলার আবেদন করা হয়েছে।আব্দুর রহিমের ছেলে অ্যাডভোকেট আব্দুল আজিজ রোববার (২৫ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আক্তারুজ্জামানের আদালতে এই আবেদন করেন।মামলার আবেদনে আসামির তালিকায় আছেন— সাবেক কারা মহাপরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম খান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সংসদ সদস্য শেখ সেলিম, নুর আলম চৌধুরী লিটন, শেখ হেলাল, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, তৎকালীন জেল সুপার, চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম ও আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল।রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি মডেল কলেজের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান সৈকত হত্যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন নিহতের বাবা মো. মাহাবুবের রহমান।রোববার (২৫ আগস্ট) রাতে মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তিনি।রামপুরা টিভি সেন্টারের সামনে অটোচালক বাবু মোল্লাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।রোববার (২৫ আগস্ট) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিহতের ভগ্নীপতি মাসুদ রানা বাদী হয়ে মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড শেষে এ মামলার আবেদনটি হাতিরঝিল থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনিরআখড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশের গুলিতে টিসিবির পণ্য বিক্রেতা মো. ইউসুফ সানোয়ার নিহতের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়।রোববার (২৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে নিহতের শ্যালক মামুনুর রশীদ মামলাটি করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ ৪৫১ জনকে আসামি করে মামলা হয়।রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি আমলি আদালতে মামলাটি করেন নগরীর লালবাগ চুরিপট্টি এলাকার বাসিন্দা দোকান শ্রমিক মমদেল হোসেন ওরফে মমদেল (২৮)।এছাড়াও বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শফিক মিয়া ও আশিক মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত শফিক মিয়ার চাচাতো ভাই আবু হানিফ ও আশিক মিয়ার মা কুলসুম বেগম বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।এর আগে আলাদা আলাদা সময়ে রাজধানীর হাতিরঝিল, যাত্রাবাড়ীসহ বগুড়া, নরসিংদী, পিরোজপুর, রংপুর, রাজশাহী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা), কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ), কুলাউড়া (মৌলভীবাজার), রাজবাড়ী, সিংড়া (নাটোর), রাউজানে (চট্টগ্রাম) শেখ হাসিনাসহ তৎকালীন সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী, এমপিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

হাসিনার চার চাচতো ভাইসহ খালেক, কামাল, মুন্নুজানের বিরুদ্ধে মামলা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪ চাচাতো ভাই খুলনা-২ সংসদ সদস্য শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, শেখ সোহেল, শেখ রুবেল ও শেখ বাবু, সাবেক খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়াননের বিরুদ্ধে ২ টি মামলা হয়েছে।খুলনার খালিশপুর থানায় ৯নং ও ১৫নং ওয়ার্ড বিএনপি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগে পৃথক মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছে।৯নং ওয়ার্ডের শেখ দবীর ও ১৫ নং ওয়ার্ডের কাজী মো. ইকরাম মিন্টু বাদী হয়ে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) গভীর রাতে মামলা দুটো দায়ের করেন। দুটি মামলার বেশিরভাগ আসামি একই ব্যক্তি।শেখ দবিরের দায়ের করা মামলায় ১১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট ৯নং ওয়ার্ড বিএনপি অফিস ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়।ইকরাম মিন্টুর মামলায় ১০৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় ২৫/৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর ১৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে।মামলারএজাহারে বাদিরা উল্লেখ করেন, তৎকালীন সময়ে বাদি সহ স্থানীয় বিএনপি নেতারা মামলা করার চেষ্টা করে ব্যর্থহন। কিন্তু গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন ও দেশ ছেড়ে পলায়নের পর নতুন নিরপেক্ষ সরকার গঠিত হওয়ায় এবং দেশের রাজনৈতিক অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ায় কিছুটা বিলম্বে তারা এজাহার দায়ের করেছেন।শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) আশিষ মৈত্র বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

রিমান্ড শেষে আজ আদালতে তোলা হবে আনিসুল এবং সালমান এফ রহমানকে
১০ দিনের রিমান্ড শেষে আজ আদালতে তোলা হবে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে। দুপুরের পর ডিবি কার্যালয় থেকে তাদের নেয়া হবে ঢাকার সিএমএম কোর্টে।গেল ১৪ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা নাগাদ কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় ক্ষোভে ফেটে পড়েন উপস্থিত আইনজীবীরা। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগানও দেন। ছুড়ে মারেন বিভিন্ন জিনিস। জনাকীর্ণ এজলাসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ফুটপাতের ব্যবসায়ী শাহজাহান নিহত হন। নিউমার্কেট থানায় তার মায়ের করা হত্যা মামলায় ১৩ আগস্ট গ্রেফতার হন সালমান ও আনিসুল।

চট্টগ্রামে হাসিনা-নওফেল-সাদ্দামসহ ৭৭ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ
ঢাকা: পদত্যাগের পর দেশত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির, রেজাউল করিম, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ৭৭ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ১৬ জুলাই চট্টগ্রামের মুরাদপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহীদ ফয়সাল আহমেদ শান্তর বাবা মো. জাকির হোসেনের পক্ষে বুধবার (২১ আগস্ট) আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান। অপরাধের ধরনে বলা হয়েছে, এক থেকে ১৬ নম্বর আসামির নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অপরাধ। যাদের আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আওয়ামী লীগ নেতা মোতাহেরুল ইসলাম, মফিজুর রহমান, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আরও অজ্ঞাতপরিচয় এক হাজার থেকে এক হাজার দুইশ’জনের কথা বলা হয়েছে। এর আগেও ঢাকায় চারটি গণহত্যার অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে।

শেখ হাসিনার নামে ঢাকার আদালতে আরও দুই হত্যা মামলা
ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সোমবার (১৯ আগস্ট) ঢাকার আদালতে দুটি মামলা হয়েছে। ঢাকার মিরপুর ও শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এ মামলা হয়। একটি মামলা হয় মিরপুরে লিটন হাসান লালু ওরফে হাসান নামে এক ব্যক্তি খুনের ঘটনায়। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৪৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে হাসানের ভাই মিলন এ মামলা দায়ের করেন। আদালত মিরপুর মডেল থানা পুলিশকে মামলাটি এজাহার হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দেন। মামলায় আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন খান (নিখিল), ইলিয়াস মোল্লা, কামাল আহমেদ মজুমদার, আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিআইজি হারুন-অর-রশীদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার ও ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব এস এম মান্নান (কচি)। বাদীপক্ষের আইনজীবী ইলতুৎমিশ সওদাগর এ্যানী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অভিযোগে বলা হয়, দেশে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলাকালে হাসান ৪ আগস্ট মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। দুপুর ২ টার দিকে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আব্দুল্লাহ আল মামুন, হারুন-অর-রশীদ, আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিপ্লব কুমার ও হাবিবুর রহমানের নির্দেশে অন্যান্য আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ২০০-৩০০ জন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ করেন। অজ্ঞাত আসামিদের ছোড়া বুলেটে হাসান গুলিবিদ্ধ হন। আগারগাঁও নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ আগস্ট হাসান মারা যান। এদিকে শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় কাঠমিস্ত্রি তারিক হোসেনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারহা দিবা ছন্দার আদালতে তারিকের মা মোসা. ফিদুশি খাতুন এ মামলা দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মামলায় আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিআইজি হারুন-অর-রশীদ ও অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার। বাদীপক্ষের আইনজীবী লিটন মিয়া এ তথ্য জানান। মামলায় অভিযোগ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে শেরেবাংলা নগর থানার সামনে রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হন তারিক হোসেন। তাকে দ্রুত পার্শ্ববর্তী শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগস্ট তিনি মারা যান। গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে সারা দেশে আদালত ও থানায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। অভিযোগ দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও।

খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা : শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
২০১৫ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগে মামলার আবেদন করা হয়েছে। রোববার (১৮ আগস্ট) ডিএমপির তেজগাঁও থানায় এসংক্রান্ত একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এতে অভিযুক্ত করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ মোট ১১৩ জনকে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি মিললে মামলা হিসেবে তা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তেজগাঁও থানার ওসির চার্জে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) সরোয়ার আলম খান। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ওই সময় তার গাড়ি বহরে হামলা হয় রাজধানীর কাওওয়ান বাজার, বাংলামোটর ও ফকিরাপুলে। ওইসব হামলায়ও সরকার দলীয়রা সম্পৃক্ত বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। ওই ঘটনায় আজ ২৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন বাদী হয়ে অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। অনুমতি পেলে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে।

হেফাজত সমাবেশে গুলি : শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনকে আসামি করে মামলা
২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রোববার (১৮ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকী-আল ফারাবীর আদালতে এ মামলার আবেদন করেন বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী। এসময় আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সামরিক উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, সাবেক সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবুল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, হাসান মাহাবুব খন্দকার, র্যাবের সাবেক প্রধান এ কে এম শহিদুল হক, এনএসআইয়ের সাবেক প্রধান জিয়াউল হাসান, মতিঝিল বিভাগের সাবেক ডিসি বিপ্লব কুমার সরদার, মতিঝিল থানার সাবেক ওসি ওমর ফারুক, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মুনসুর আহমেদ, তৎকালীন মতিঝিল থানার ছাত্রলীগ সভাপতি মাহাবুবুল হক হিরন, ইমরান, আওয়ামী লীগ নেত্রী মমতাজ পারভীন, মতিঝিল থানার সাবেক ওসি ফরমান আলী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সালু, মতিঝিলের সাবেক ডিসি নাজমুল আলম, হামদাদ গ্রুপের অবসরপ্রাপ্ত ডাইরেক্টর মেজর ইকবাল, ডিসি মতিঝিল বিভাগ আশরাফুজ্জামান, মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, এমদাদুল হক ও শেখ শাহে আলম তালুকদার। মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় ব্লগাররা ধর্মীয় অবমাননা ও হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি এবং আপত্তিকর লেখালেখি করার প্রতিবাদে হেফাজত ইসলাম ১৩ দফা দাবি সরকারের কাছে দেয়। সরকার দাবি না মানায় ২০১৩ সালে ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে রাস্তায় অবস্থান নেয় তারা। ওইদিন রাত ১১টা থেকে পরের দিন বেলা ১১টা পর্যন্ত রাস্তা ও বিদ্যুৎলাইন বন্ধ করে শেখ হাসিনার মদদে আসামিদের যোগসাজশে অন্য আসামিরা এজাহারে বর্ণিত পুলিশ ও আর্মি সদস্যরা মিলে নিরীহ মাদরাসাছাত্র ও পথচারীদের ওপর গণহত্যা চালায়। তাদের হত্যা করে লাশগুলো সিটি করপোরেশনের গাড়িতে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে গুম করে। এসময় বহু মাদরাসাছাত্র হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তাদের অভিভাবকরা সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা ও জিডি করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ কোনো মামলা নেয়নি। একজন রাজনীতিবিদ তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষকে নির্বিচার গণহত্যার কারণে আদালতে অভিযোগটি এনেছেন। এ নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১১টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে ৮টি হত্যা, একটি অপহরণ এবং দুটি মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এর পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলা হতে থাকে, যা অব্যাহত রয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সব প্রসিকিউটরের পদত্যাগ
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সব প্রসিকিউটরের পদত্যাগ করেছেন।পাঁচদিন আগে প্রথমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন প্যানেল থেকে পদত্যাগ করেন চার প্রসিকিউটর। দুইদিন পর আরও তিনজন। এর ধারাবাহিকতায় আরও দুই প্রসিকিউটর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন শনিবার। শনিবার (১৭ আগস্ট) এ তথ্য নিশ্চিত করেন ট্রাইব্যুনালের পদত্যাগকারী সদস্য অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। পদত্যাগকারীরা হচ্ছেন- শাহিদুর রহমান, আবুল কালাম আজাদ, রেজিয়া সুলতানা চমন, আলতাফ উদ্দিন আহম্মেদ, সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান (অবৈতনিক), সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী, সুলতান মাহমুদ সিমন, মোহাম্মদ মুখলেসুর রহমান বাদল ও ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল।এর আগে ১৩ আগস্ট ট্রাইব্যুনালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাসুদ রানা চিফ প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলীসহ চারজনের পদত্যাগের কথা জানান। অন্য তিনজন হলেন অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, অ্যাডভোকেট জাহিদ ইমাম ও ব্যারিস্টার শেখ মোশফেক কবীর। স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সালের ২৫ মার্চ। পরে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটিকে একীভূত করে আবার একটি ট্রাইব্যুনাল করা হয়।

ঢাকার আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে সরানো হচ্ছে লোহার খাঁচা
ঢাকার আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে আসামিদের রাখার লোহার খাঁচা সরানো হচ্ছে। শুক্রবার (১৬) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের দুজন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা সরানো হয়েছে। আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, উচ্চপর্যায় থেকে লোহার খাঁচা সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা পাওয়ার পর শুক্রবার দুপুরের পর থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতের কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা সরানো হয়। অন্যদিকে, এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা সরিয়ে ফেলাকে নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছে লোহার খাঁচা সরাতে হাইকোর্টে হওয়া রিটের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির। বিচারালয়ের এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শুক্রবার (১৬ আগস্ট) ঢাকার আদালতের কয়েকটি এজলাস কক্ষ থেকে সরিয়ে ফেলা হয় লোহার খাঁচা। গণপূর্ত বিভাগের লোকজন লোহার খাঁচা সরানের কাজটি করছেন। পর্যায়ক্রমে সব আদালতের খাঁচা সরিয়ে ফেলা হবে। দেশের অধ্বঃস্তন আদালত কক্ষে থাকা লোহার খাঁচা অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী। সে রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ৪ ফেব্রুয়ারি রুলসহ আদেশ দিয়েছিলেন। রিটের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, সারাদেশে অধ্বঃস্তন আদালত কক্ষে কতগুলো লোহার খাঁচা রয়েছে সে বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে হাইকোর্ট তার রুলে আদালত কক্ষে লোহার খাঁচার পরিবর্তে কাঠগড়া পুনঃস্থাপনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছিলেন। এছাড়া আদালত কক্ষে লোহার খাঁচা বসানো কেন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১, ৩২ ও ৩৫ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল। গত ১২ জুন পুরান ঢাকার একটি আদালতে হাজিরা দেওয়ার পর আদালত চত্বরে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ‘আজকে আমরা অনেকক্ষণ খাঁচার (আসামির কাঠগড়া) মধ্যে ছিলাম। বলা হয়েছিল, আপনি থাকেন। কিন্তু আমরা সারাক্ষণ লোহার খাঁচার মধ্যে ছিলাম। আমি আগেও প্রশ্ন তুলেছি, এটা ন্যায্য হলো কি না? আমি যত দূর জানি, যত দিন আসামি অপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত না হচ্ছে, তত দিন তিনি নিরপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবেন।’ ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেছিলেন, ‘একজন নিরপরাধ নাগরিককে শুনানির সময় লোহার খাঁচায় (আসামির কাঠগড়া) দাঁড়িয়ে থাকতে হবে, এটা আমার কাছে অত্যন্ত অপমানজনক। এটা গর্হিত কাজ। এটা কারও ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য না হয়। একটা পর্যালোচনা হোক। একটা সভ্য দেশে কেন একজন নাগরিককে শুনানির সময় পশুর মতো দাঁড়িয়ে থাকতে হবে, যেখানে তিনি তখনো দোষী সাব্যস্ত হননি।’ অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, অনেক আইনজ্ঞ আছেন, বিচারপক্ষের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা পর্যালোচনা করে দেখবেন, এটা রাখার দরকার আছে কি না। সারা সভ্য দুনিয়ায় যেভাবে হচ্ছে, সেভাবে হবে। আমরা সভ্য দেশের তালিকায় থাকতে পারি। লোহার খাঁচা মানবতার প্রতি অপমান। কেন পশুর মতো একজন মানুষকে খাঁচার ভেতর ভরে রাখবে? এটা সরিয়ে ফেলা উচিত।’

রিমান্ডের তৃতীয় দিন, প্রশ্ন করলেই হাসেন আনিসুল হক
সরকারের ব্যর্থতায় পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর দলের মন্ত্রী-এমপিরা কেউ পালিয়ে গেছেন আবার কেউ আছেন আত্মগোপনে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রিমান্ডে আছেন। তাদেরই একজন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে ১০ দিনের রিমান্ডে আছেন তিনি। তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচ্ছে পুলিশ। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) আনিসুল হকের রিমান্ডের তৃতীয় দিন ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে কোন প্রশ্নেরই উত্তর দেননি তিনি। জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে শুনে মুচকি হেসেছেন তিনি। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের অবস্থা জানতে চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে। কারা নতুন করে বিচারক হিসাবে নিয়োগ পেলেন সে বিষয়েও জানতে চান আনিসুল হক। জিজ্ঞাসাবাদে একেবারেই স্বাভাবিক ছিলেন তিনি। পুলিশের কোনো প্রশ্নের উত্তরই দেননি সাবেক এই আইনমন্ত্রী। প্রশ্ন করা হলে শুধু হেসেছেন। ডিএমপি নিউমার্কেট থানায় দায়ের হওয়া হকার শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয় সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হককে। বুধবার তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তারা এখন ডিবি হেফাজতে আছেন। যে মামলায় তারা রিমান্ডে আছেন ওই মামলায় কোনো আসামির নাম নেই। তবে অজ্ঞাতনামা হিসাবে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। সদ্য বিদায়ী সরকার আমলে গত ১৬ জুলাই করা মামলায় গ্রেপ্তার হন সদ্য বিদায়ী সরকারের প্রভাবশালী এই উপদেষ্টা ও মন্ত্রী। জিজ্ঞাসাবাদে তারা দেশে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরির জন্য দায় চাপিয়েছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ওপর। ডিএমপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গ্রেপ্তাররকৃতদের অপরাধ শুধু পুলিশ কেইসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। শেয়ারবাজারসহ অনেক অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত সালমান এফ রহমান। সরকারের অনেক অপকর্মকে আইনি বৈধতা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছেন আনিসুল হক। তাই তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে হত্যা মামলার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও আইনগত বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। গ্রেপ্তার সালমান ও আনিসুলকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে ডিএমপির (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মহা. আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। যদি কিছু থাকে-আমার যেটা বলার আপনাদের আমি দাওয়াত দিয়ে বলব।’

টুকু-পলক-সৈকতকে তোলা হবে আদালতে, রিমান্ড চাইবে পুলিশ
সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে গতকাল গ্রেফতার করে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে তাদের উপস্থিতিতে এ রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে, বুধবার রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় এ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর পুলিশ- ডিএমপি’র জনসংযোগ বিভাগ। উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পল্টনে হওয়া সহিংসতায় প্রাণ যায় এক রিকশাচালকের। সেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পল্টন থানায় মামলা হয়। সেই মামলায় এই তিনজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

স্নাইপার দিয়ে শিশুকে গুলি, হাসিনাসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
মোহাম্মাদপুরে শিশু জোবায়েদ হোসেনকে র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে স্নাইপার দিয়ে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে শিশুটির মামা আব্দুল্লা আবু সাঈদ। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকালে শিশুটির মামা আদালতে সি আর মামলা দায়ের করলে মোহাম্মদপুর থানাকে এই মামলা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুপুরে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এই আদেশ দেন। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ পাঁচ মন্ত্রী ও পুলিশ, র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে, শেরেবাংলা থানা এলাকায় গত ৫ আগস্ট শাহাবুদ্দিন নামের এক যুবককে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে সি আর মামলা দায়ের করা হয়। শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি নেয়ার নির্দেশ দেন আদালত। উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালানোর পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নামে এ নিয়ে মোট পাঁচটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি হত্যা মামলা আর একটি অপহরণ মামলা। অন্যদিকে, তার নামে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও একটি অভিযোগ এসেছে।
.jpg)
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঢাকার ধানমন্ডিতে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে তদন্ত সংস্থার প্রধান কো-অর্ডিনেটর বরাবর বুধবার (১৪ আগস্ট) অ্যাডভোকেট গাজী এম এইচ তামিম এই আবেদন দায়ের করেন। আন্দোলনে গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের তদন্ত ও বিচার চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এর আগে আজ দুপুরে আবেদন করেন সাভারে নিহত নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবীর। তদন্ত সংস্থা এই আবেদন গ্রহণ করেছে। আবেদনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ, ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদসহ পুলিশের কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা কর্মী এবং সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অঙ্গ সংগঠনসমূহকে আসামি করা হয়েছে। আবেদনে অপরাধের ধরন হিসেবে বলা হয়েছে, এক থেকে নয় নম্বর আসামির নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশ্যে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে।