খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা : শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

২০১৫ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগে মামলার আবেদন করা হয়েছে। রোববার (১৮ আগস্ট) ডিএমপির তেজগাঁও থানায় এসংক্রান্ত একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এতে অভিযুক্ত করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ মোট ১১৩ জনকে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি মিললে মামলা হিসেবে তা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তেজগাঁও থানার ওসির চার্জে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) সরোয়ার আলম খান। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ওই সময় তার গাড়ি বহরে হামলা হয় রাজধানীর কাওওয়ান বাজার, বাংলামোটর ও ফকিরাপুলে। ওইসব হামলায়ও সরকার দলীয়রা সম্পৃক্ত বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। ওই ঘটনায় আজ ২৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন বাদী হয়ে অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। অনুমতি পেলে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে।

হেফাজত সমাবেশে গুলি : শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনকে আসামি করে মামলা

২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রোববার (১৮ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকী-আল ফারাবীর আদালতে এ মামলার আবেদন করেন বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী। এসময় আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সামরিক উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, সাবেক সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবুল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, হাসান মাহাবুব খন্দকার, র‌্যাবের সাবেক প্রধান এ কে এম শহিদুল হক, এনএসআইয়ের সাবেক প্রধান জিয়াউল হাসান, মতিঝিল বিভাগের সাবেক ডিসি বিপ্লব কুমার সরদার, মতিঝিল থানার সাবেক ওসি ওমর ফারুক, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মুনসুর আহমেদ, তৎকালীন মতিঝিল থানার ছাত্রলীগ সভাপতি মাহাবুবুল হক হিরন, ইমরান, আওয়ামী লীগ নেত্রী মমতাজ পারভীন, মতিঝিল থানার সাবেক ওসি ফরমান আলী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সালু, মতিঝিলের সাবেক ডিসি নাজমুল আলম, হামদাদ গ্রুপের অবসরপ্রাপ্ত ডাইরেক্টর মেজর ইকবাল, ডিসি মতিঝিল বিভাগ আশরাফুজ্জামান, মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, এমদাদুল হক ও শেখ শাহে আলম তালুকদার। মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় ব্লগাররা ধর্মীয় অবমাননা ও হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি এবং আপত্তিকর লেখালেখি করার প্রতিবাদে হেফাজত ইসলাম ১৩ দফা দাবি সরকারের কাছে দেয়। সরকার দাবি না মানায় ২০১৩ সালে ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে রাস্তায় অবস্থান নেয় তারা। ওইদিন রাত ১১টা থেকে পরের দিন বেলা ১১টা পর্যন্ত রাস্তা ও বিদ্যুৎলাইন বন্ধ করে শেখ হাসিনার মদদে আসামিদের যোগসাজশে অন্য আসামিরা এজাহারে বর্ণিত পুলিশ ও আর্মি সদস্যরা মিলে নিরীহ মাদরাসাছাত্র ও পথচারীদের ওপর গণহত্যা চালায়। তাদের হত্যা করে লাশগুলো সিটি করপোরেশনের গাড়িতে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে গুম করে। এসময় বহু মাদরাসাছাত্র হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তাদের অভিভাবকরা সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা ও জিডি করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ কোনো মামলা নেয়নি। একজন রাজনীতিবিদ তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষকে নির্বিচার গণহত্যার কারণে আদালতে অভিযোগটি এনেছেন। এ নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১১টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে ৮টি হত্যা, একটি অপহরণ এবং দুটি মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এর পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলা হতে থাকে, যা অব্যাহত রয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সব প্রসিকিউটরের পদত্যাগ

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সব প্রসিকিউটরের পদত্যাগ করেছেন।পাঁচদিন আগে প্রথমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন প্যানেল থেকে পদত্যাগ করেন চার প্রসিকিউটর। দুইদিন পর আরও তিনজন। এর ধারাবাহিকতায় আরও দুই প্রসিকিউটর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন শনিবার। শনিবার (১৭ আগস্ট) এ তথ্য নিশ্চিত করেন ট্রাইব্যুনালের পদত্যাগকারী সদস্য অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। পদত্যাগকারীরা হচ্ছেন- শাহিদুর রহমান, আবুল কালাম আজাদ, রেজিয়া সুলতানা চমন, আলতাফ উদ্দিন আহম্মেদ, সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান (অবৈতনিক), সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী, সুলতান মাহমুদ সিমন, মোহাম্মদ মুখলেসুর রহমান বাদল ও ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল।এর আগে ১৩ আগস্ট ট্রাইব্যুনালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাসুদ রানা চিফ প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলীসহ চারজনের পদত্যাগের কথা জানান। অন্য তিনজন হলেন অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, অ্যাডভোকেট জাহিদ ইমাম ও ব্যারিস্টার শেখ মোশফেক কবীর। স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সালের ২৫ মার্চ। পরে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটিকে একীভূত করে আবার একটি ট্রাইব্যুনাল করা হয়।

ঢাকার আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে সরানো হচ্ছে লোহার খাঁচা

ঢাকার আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে আসামিদের রাখার লোহার খাঁচা সরানো হচ্ছে। শুক্রবার (১৬) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের দুজন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা সরানো হয়েছে। আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, উচ্চপর্যায় থেকে লোহার খাঁচা সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা পাওয়ার পর শুক্রবার দুপুরের পর থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতের কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা সরানো হয়। অন্যদিকে, এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা সরিয়ে ফেলাকে নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছে লোহার খাঁচা সরাতে হাইকোর্টে হওয়া রিটের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির। বিচারালয়ের এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শুক্রবার (১৬ আগস্ট) ঢাকার আদালতের কয়েকটি এজলাস কক্ষ থেকে সরিয়ে ফেলা হয় লোহার খাঁচা। গণপূর্ত বিভাগের লোকজন লোহার খাঁচা সরানের কাজটি করছেন। পর্যায়ক্রমে সব আদালতের খাঁচা সরিয়ে ফেলা হবে। দেশের অধ্বঃস্তন আদালত কক্ষে থাকা লোহার খাঁচা অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী। সে রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ৪ ফেব্রুয়ারি রুলসহ আদেশ দিয়েছিলেন। রিটের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, সারাদেশে অধ্বঃস্তন আদালত কক্ষে কতগুলো লোহার খাঁচা রয়েছে সে বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে হাইকোর্ট তার রুলে আদালত কক্ষে লোহার খাঁচার পরিবর্তে কাঠগড়া পুনঃস্থাপনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছিলেন। এছাড়া আদালত কক্ষে লোহার খাঁচা বসানো কেন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১, ৩২ ও ৩৫ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল। গত ১২ জুন পুরান ঢাকার একটি আদালতে হাজিরা দেওয়ার পর আদালত চত্বরে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ‘আজকে আমরা অনেকক্ষণ খাঁচার (আসামির কাঠগড়া) মধ্যে ছিলাম। বলা হয়েছিল, আপনি থাকেন। কিন্তু আমরা সারাক্ষণ লোহার খাঁচার মধ্যে ছিলাম। আমি আগেও প্রশ্ন তুলেছি, এটা ন্যায্য হলো কি না? আমি যত দূর জানি, যত দিন আসামি অপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত না হচ্ছে, তত দিন তিনি নিরপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবেন।’ ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেছিলেন, ‘একজন নিরপরাধ নাগরিককে শুনানির সময় লোহার খাঁচায় (আসামির কাঠগড়া) দাঁড়িয়ে থাকতে হবে, এটা আমার কাছে অত্যন্ত অপমানজনক। এটা গর্হিত কাজ। এটা কারও ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য না হয়। একটা পর্যালোচনা হোক। একটা সভ্য দেশে কেন একজন নাগরিককে শুনানির সময় পশুর মতো দাঁড়িয়ে থাকতে হবে, যেখানে তিনি তখনো দোষী সাব্যস্ত হননি।’ অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, অনেক আইনজ্ঞ আছেন, বিচারপক্ষের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা পর্যালোচনা করে দেখবেন, এটা রাখার দরকার আছে কি না। সারা সভ্য দুনিয়ায় যেভাবে হচ্ছে, সেভাবে হবে। আমরা সভ্য দেশের তালিকায় থাকতে পারি। লোহার খাঁচা মানবতার প্রতি অপমান। কেন পশুর মতো একজন মানুষকে খাঁচার ভেতর ভরে রাখবে? এটা সরিয়ে ফেলা উচিত।’

রিমান্ডের তৃতীয় দিন, প্রশ্ন করলেই হাসেন আনিসুল হক

সরকারের ব্যর্থতায় পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর দলের মন্ত্রী-এমপিরা কেউ পালিয়ে গেছেন আবার কেউ আছেন আত্মগোপনে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রিমান্ডে আছেন। তাদেরই একজন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে ১০ দিনের রিমান্ডে আছেন তিনি। তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচ্ছে পুলিশ। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) আনিসুল হকের রিমান্ডের তৃতীয় দিন ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে কোন প্রশ্নেরই উত্তর দেননি তিনি। জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে শুনে মুচকি হেসেছেন তিনি। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের অবস্থা জানতে চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে। কারা নতুন করে বিচারক হিসাবে নিয়োগ পেলেন সে বিষয়েও জানতে চান আনিসুল হক। জিজ্ঞাসাবাদে একেবারেই স্বাভাবিক ছিলেন তিনি। পুলিশের কোনো প্রশ্নের উত্তরই দেননি সাবেক এই আইনমন্ত্রী। প্রশ্ন করা হলে শুধু হেসেছেন। ডিএমপি নিউমার্কেট থানায় দায়ের হওয়া হকার শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয় সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হককে। বুধবার তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তারা এখন ডিবি হেফাজতে আছেন। যে মামলায় তারা রিমান্ডে আছেন ওই মামলায় কোনো আসামির নাম নেই। তবে অজ্ঞাতনামা হিসাবে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। সদ্য বিদায়ী সরকার আমলে গত ১৬ জুলাই করা মামলায় গ্রেপ্তার হন সদ্য বিদায়ী সরকারের প্রভাবশালী এই উপদেষ্টা ও মন্ত্রী। জিজ্ঞাসাবাদে তারা দেশে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরির জন্য দায় চাপিয়েছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ওপর। ডিএমপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গ্রেপ্তাররকৃতদের অপরাধ শুধু পুলিশ কেইসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। শেয়ারবাজারসহ অনেক অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত সালমান এফ রহমান। সরকারের অনেক অপকর্মকে আইনি বৈধতা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছেন আনিসুল হক। তাই তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে হত্যা মামলার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও আইনগত বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। গ্রেপ্তার সালমান ও আনিসুলকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে ডিএমপির (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মহা. আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। যদি কিছু থাকে-আমার যেটা বলার আপনাদের আমি দাওয়াত দিয়ে বলব।’

টুকু-পলক-সৈকতকে তোলা হবে আদালতে, রিমান্ড চাইবে পুলিশ

সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে গতকাল গ্রেফতার করে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে তাদের উপস্থিতিতে এ রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে, বুধবার রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় এ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর পুলিশ- ডিএমপি’র জনসংযোগ বিভাগ। উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পল্টনে হওয়া সহিংসতায় প্রাণ যায় এক রিকশাচালকের। সেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পল্টন থানায় মামলা হয়। সেই মামলায় এই তিনজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

স্নাইপার দিয়ে শিশুকে গুলি, হা‌সিনাসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মোহাম্মাদপু‌রে শিশু জোবা‌য়েদ হো‌সেনকে র‍্যাবের হেলিকপ্টার থেকে স্নাইপার দিয়ে গু‌লি করে হত্যার অভিযোগে সা‌বেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনাসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দা‌য়ের করেছে শিশু‌টির মামা আব্দুল্লা আবু সাঈদ। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকালে শিশু‌টির মামা আদালতে সি আর মামলা দা‌য়ের করলে মোহাম্মদপুর থানাকে এই মামলা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুপুরে মেট্রোপ‌লিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এই আদেশ দেন। এই মামলায় সা‌বেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কা‌দের, সা‌বেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সা‌বেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ পাঁচ মন্ত্রী ও পুলিশ, র‍্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা‌দের আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে, শেরেবাংলা থানা এলাকায় গত ৫ আগস্ট শাহাবু‌দ্দিন নামের এক যুবককে হত্যার নি‌র্দেশদাতা হি‌সে‌বে সা‌বেক প্রধানমন্ত্রীসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে সি আর মামলা দা‌য়ের করা হ‌য়। শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি নেয়ার নির্দেশ দেন আদালত। উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালানোর পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নামে এ নিয়ে মোট পাঁচটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি হত্যা মামলা আর একটি অপহরণ মামলা। অন্যদিকে, তার নামে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও একটি অভিযোগ এসেছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ ‌১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঢাকার ধানমন্ডিতে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে তদন্ত সংস্থার প্রধান কো-অর্ডিনেটর বরাবর বুধবার (১৪ আগস্ট) অ্যাডভোকেট গাজী এম এইচ তামিম এই আবেদন দায়ের করেন। আন্দোলনে গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের তদন্ত ও বিচার চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এর আগে আজ দুপুরে আবেদন করেন সাভারে নিহত নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবীর। তদন্ত সংস্থা এই আবেদন গ্রহণ করেছে। আবেদনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ, ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদসহ পুলিশের কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা কর্মী এবং সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অঙ্গ সংগঠনসমূহকে আসামি করা হয়েছে। আবেদনে অপরাধের ধরন হিসেবে বলা হয়েছে, এক থেকে নয় নম্বর আসামির নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশ্যে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে।

১০ দিনের রিমান্ডে সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। বুধবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদের আদালত এই আদেশ দেন। গত ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজের সামনে হতাহতের ঘটনায় নিউ মার্কেট থানার মামলায় তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চায় ডিবি পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জানা গেছে, আদালতে আসামিদের পক্ষে কোনও আইনজীবী ছিলেন না। এর আগে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয় থেকে তাদেরকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সিএমএম) নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে, আদালতে প্রাঙ্গণে পৌঁছানোর পর তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ডিম ছুঁড়ে মারেন। এ সময় তারা নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর তাদেরকে আদালতে তোলার পর প্রধান ফটকের সামনেও বিক্ষোভ করেন তারা। অপরদিকে, বুধবার বিকেল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আদালতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়ন করা হয়। এছাড়া জানা যায়, রাতভর ডিবি অফিসের হাজতখানায় ছিলেন সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হক। তাদের জন্য ছিল না কোনও বিশেষ ব্যবস্থা। আসামিদের জন্য নির্ধারিত স্বাভাবিক খাবার খেতে দেয়া হয় তাদের। এছাড়া, ভিআইপি আসামির ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে বিশেষ ব্যবস্থা রাখে গোয়েন্দা পুলিশ। কখনও কখনও পরিবার থেকে পাঠানো খাবার খেতে দেয়া হয়। বিছানায় ঘুমাতে দেয়া হয়। কিন্তু সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হকের ক্ষেত্রে এসব কিছুই হয়নি। অন্য আসামিদের মতো হাজতের মেঝেতেই ঘুমাতে হয় তাদেরকে। প্রসঙ্গত, নৌপথে পালানোর সময় গতকাল মঙ্গলবার রাতে কোস্টগার্ডের হাতে গ্রেফতার হন সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এরপর পুলিশের মাধ্যমে গতরাত রাত ১০টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে দু’জনকে নেয়া হয়।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবার ছাত্র হত্যা মামলা

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর এলাকায় ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফয়জুল ইসলাম রাজনকে হত্যার দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহম্মেদ হুমায়ুন কবিরের আদালতে এ মামলা করেন নিহত রাজনের ভাই মো. রাজিব। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ঢাকার কাফরুল থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। এই মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে। ছাত্র-জনতার অভ্যুথানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২০১৫ সালে রাজধানীর উত্তরা থেকে এক আইনজীবীকে অপহরণ করে গুম করার অভিযোগে আজ বুধবার শেখ হাসিনাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন— সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক ও র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ। এছাড়া র‍্যাবের অজ্ঞাত ২৫ সদস্যকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। আজ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর আদালতে এই মামলার আবেদন করেন ভুক্তভোগী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সোহেল রানা। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে উত্তরা-পশ্চিম থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে ওই আইনজীবী আদালতে মামলার আবেদন করেন। মুদি দোকানদার আবু সায়েদকে হত্যার অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ক্ষমতা হারানোর পর এটিই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এস এম আমীর হামজা নামে এক ব্যক্তি এই মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন।

এবার গুমের অভিযোগে হাসিনাসহ ৫ জনের নামে মামলা

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ পাঁচজনের নামে গুমের অভিযোগে মামলা হয়েছে। বুধবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা চৌধুরী সুমুর আদালতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সোহেল রানা বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানাকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে নেওয়ার আদেশ দেন। মামলায় সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক শহীদুল হক, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদসহ অজ্ঞাতনামা ২০ থেক ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় ঘটনার তারিখ ও স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর গেটের স্মাইল গ্যালারির সামনে। মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন বন্ধুর মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় বাদী ও তার বন্ধুকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িতে ১০/১১ জন বন্দুকধারী ছিলেন। গাড়িতে ঘণ্টাখানেক রেখে নির্যাতনের পর তাদের একটি ভবনে নেওয়া হয়। বাদীর অভিযোগ, তাকে ছয় মাস তিনদিন আটক রেখে নির্যাতন করা হয়। এদিকে পুলিশের গুলিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার মুদিদোকানি আবু সায়েদ নিহত হওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মামলা হিসেবে নিতে নির্দেশ দেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এ আদেশ দেন।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নেয়ার নির্দেশ আদালতের

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আবু সায়েদ নামের এক মুদি দোকানিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সিএমএম কোর্ট এজাহারটি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন মোহাম্মদপুর থানাকে। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে বাদী এস এম আমীর হামজার জবানবন্দি গ্রহণ করেন বিচারক। মামলার অপর আসামিরা হলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি হারুন-অর-রশীদ ও অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার। এর আগে আজ একই আদালতে মামলাটি নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ দুপুর ১২টার দিকে আদালত মামলার বাদী এস এম আমীর হামজার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আদেশ দেন আদালত। মামলার এজাহারে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। গুলিতে গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরের বছিলায় মুদি দোকানি আবু সায়েদ নিহত হন।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাবেক দুই মন্ত্রীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এক ব্যবসায়ী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এর শুনানি হবে বলে জানা গেছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা পুলিশ কর্মকর্তা বা পুলিশের সদস্য ও তৎকালীন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অজ্ঞাতনামা হিসেবে মামলায় আসামি করা হয়েছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর এই প্রথম তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হলো। মামলার বাদী এস এম আমীর হামজা শাতিল আদাবর এলাকার বাসিন্দা। সচেতন নাগরিক হিসেবে নিরীহ এক নাগরিককে হত্যার বিচার চেয়ে তিনি মামলাটি করেছেন বলে জানিয়েছেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে-সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল সমাবেশ করে। ওই সব শান্তিপূর্ণ মিছিলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। বহু ছাত্র জনতা নিহত ও আহত হন। গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে বসিলার ৪০ ফিট এলাকায় ছাত্র-জনতা শান্তপূর্ণ মিছিল সমাবেশ করছিল। সেখানেও পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। তখন রাস্তা পার হওয়ার সময় স্থানীয় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, নিহত সায়েমকে তার গ্রামের বাড়িতে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার নতুন বস্তি প্রধান হাটে নিয়ে দাফন করা হয়। তার মা, স্ত্রী, ছেলে সন্তান সেখানেই থাকেন। এ কারণে তারা ঢাকায় এসে মামলা করতে অপারগ। তাই বিবেকের তাড়নায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি মামলাটি করেন। মামলার অভিযোগে বাদী আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করার বারবার নির্দেশ দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান কামালের নির্দেশে পুলিশের আইজিপি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধীনস্থ পুলিশদের নির্দেশ দিয়ে মিছিলে গুলি চালায়। পরস্পর যোগসাজশে আসামিরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। কাজেই এর বিচার হওয়া প্রয়োজন। থানায় এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য মামলায় আবেদন জানানো হয়েছে বলে বাদীর আইনজীবী মো. মামুন মিয়া সাংবাদিকদের জানান।

শপথ নিলেন আপিল বিভাগের ৪ বিচারপতি

প্রধান বিচারপতির কাছে শপথ নিলেন আপিল বিভাগে নিয়োগ পাওয়া ৪ বিচারপতি। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সকালে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে হয় এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নবনিযুক্ত চার বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম, মো. রেজাউল হক ও এস এম এমদাদুল হক শপথ নেন। এর আগে, সোমবার রাতে বিচারপতিদের নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। আজ শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে তাদের নিয়োগ কার্যকর হবে। এর আগে গত ১০ আগস্ট শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করেন ২৪তম প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি। পরবর্তীতে, ঐদিন রাতেই প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। পরদিন ১১ আগস্ট প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি।

আজ থেকে হাইকোর্টের বিচারকাজ শুরু

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকাজ সীমিত আকারে পরিচালনার জন্য ৮টি বেঞ্চ গঠন করেছেন নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। আজ সোমবার (১২ আগস্ট) থেকে এসব আদালতে বিচারকাজ চলবে। দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিনে এই ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। রোববার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা অনুসারে একটি নোটিশ প্রকাশ করা হয়। প্রধান বিচারপতির নির্দেশনায় বলা হয়, ‘আমি এতদ্বারা নির্দেশ করছি যে, সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকার্য সীমিত আকারে পরিচালনার জন্য নিম্নে উল্লিখিত বেঞ্চসমূহ গঠন করা হইলো। বেঞ্চগুলোর মধ্যে পাঁচটি দ্বৈত বেঞ্চ এবং তিনটি একক বেঞ্চ।’ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের গঠিত বেঞ্চগুলো হলো- বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমান (রিট), বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহ (দেওয়ানি), বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী (কোম্পানি বেঞ্চ), বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খান (রিট), বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা (দেওয়ানি ও ফৌজদারি), বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসান (ফৌজদারি), বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজা (ফৌজদারি) এবং বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথ (দেওয়ানি)। উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। তিন দিন পর, অর্থাৎ ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এ দিন থেকে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম

ঢাকা: প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের পদত্যাগের পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র জানান, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম দায়িত্ব পাচ্ছেন। এদিকে আপিল বিভাগের আরও পাঁচ বিচারপতি পদত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে। এর আগে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পদত্যাগ দাবিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিক্ষোভ চলাকালে এক পর্যায়ে শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। পরে প্রধান বিচারপতি পদত্যাগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। এ খবরে বেলা ২টার দিকে আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছেড়ে চলে যান। প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, প্রধান বিচারপতি কিছুক্ষণ আগে পদত্যাগপত্র আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার পরবর্তী প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, আইন উপদেষ্টা হিসেবে এটা আমার স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার অফিসে যাবে। উনি এখন রংপুরে আছেন। উনি সম্ভবত প্লেনে আছেন। উনি নেমে আসার পর ওনার সম্মতি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারপর উনি এটা গ্রহণ করলে কার্যকর হয়ে যাবে। আমরা আশা করছি এটা আজকের মধ্যেই হবে। এরপর নতুন নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। নতুন প্রধান বিচারপতি কে হচ্ছেন, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এটা অবশ্যই আমাদের প্রধান উপদেষ্টার মতামত গ্রহণ করব। সবার বিবেচনা সাপেক্ষে আমরা চেষ্টা করব সবচেয়ে যোগ্য, নিরপেক্ষ, সৎ একজন যেন নিয়োগ পান। আপিল বিভাগের আরও কয়েকজন বিচারপতির পদত্যাগ নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আপিল বিভাগের অন্যান্য যারা বিচারপতি আছেন তাদের পদত্যাগের বিষয়ে ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে পদত্যাগের দাবি আছে বলে আমি শুনেছি। আমি শুনেছি, টেলিভিশন দেখেছি যে অন্যরাও পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ে আসেনি। আমরা অপেক্ষা করছি।

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের পদত্যাগ

ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান পদত্যাগ করেছেন। শনিবার (১০ আগস্ট) বেলা ৩টার দিকে সচিবালয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। আইন উপদেষ্টা বলেন, প্রধান বিচারপতি কিছুক্ষণ আগে পদত্যাগ পত্র আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার পরবর্তী প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, আইন উপদেষ্টা হিসেবে এটা আমার স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার অফিসে যাবে। উনি এখন রংপুরে আছেন। উনি সম্ভবত প্লেনে আছেন। উনি নেমে আসার পর ওনার সম্মতি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারপর উনি এটা গ্রহণ করলে কার্যকর হয়ে যাবে। আমরা আশা করছি এটা আজকের মধ্যেই হবে। এরপর নতুন নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। নতুন প্রধান বিচারপতি কে হচ্ছেন- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এটা অবশ্যই আমাদের প্রধান উপদেষ্টার মতামত গ্রহণ করব। সবার বিবেচনা সাপেক্ষে আমরা চেষ্টা করব সবচেয়ে যোগ্য, নিরপেক্ষ, সৎ একজন যেন নিয়োগ পান। আপিল বিভাগের আরো কয়েকজন বিচারপতির পদত্যাগ নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আপিল বিভাগের অন্যান্য যারা বিচারপতি আছেন তাদের পদত্যাগের বিষয়ে ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে পদত্যাগের দাবি আছে বলে আমি শুনেছি। আমি শুনেছি, টেলিভিশন দেখেছি যে অন্যরাও পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ে আসেনি। আমরা অপেক্ষা করছি। এর আগে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পদত্যাগ দাবিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিক্ষোভ চলাকালে এক পর্যায়ে শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। পরে প্রধান বিচারপতি পদত্যাগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। এ খবরে বেলা ২টার দিকে আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছেড়ে চলে যান। এ খবরে বেলা ২টার দিকে আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছেড়ে চলে যান।

পদত্যাগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে কথা বলে পদত্যাগের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলে আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নিবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। শনিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। এর আগে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিদের দুপুর ১টার মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বেলা ১১টায় হাইকোর্ট চত্বরে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এ আল্টিমেটাম দেন। এছাড়া বেলা ১১টার দিকে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে ঢল নেমে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে হাইকোর্টে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভে শতাধিক আইনজীবী অংশগ্রহণ করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি সুপ্রিম কোর্টের মূলভবনসহ আপিল বিভাগের এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। মিছিলে নেতৃত্ব দেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিলের নেতা অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার প্রমুখ। এর আগে প্রধান বিচারপতিকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যায়িত করে ফুলকোর্ট সভা বন্ধ করে পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পক্ষে মত দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সাংবিধানিক শূন্যতার পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও উপদেষ্টাদের শপথের পক্ষে মত দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে মত চাইলে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এ মত দেন আপিল বিভাগ। এরপর উপদেষ্টাদের শপথ পড়ানো হয়। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়, যদি কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হয় যে, আইনের এইরূপ কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হইয়াছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়াছে, যাহা এমন ধরনের ও এমন জনগুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করিতে পারিবেন এবং উক্ত বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জ্ঞাপন করিতে পারিবেন। স্পেশাল রেফারেন্স ১/২০২৪ এ সুপ্রিম কোর্ট বলেন, দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং রাষ্ট্রপতি বিগত ৬ আগস্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন, সেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৮ (৩) অনুসারে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করা সম্ভবপর নয়। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠন করার বিষয়ে সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ হতে ৮ আগস্ট প্রেরিত পত্রে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জনগুরুত্বপূ্ণ প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত যাচনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের বক্তব্য শোনা হলো। এমতাবস্থায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কোনো বিধান না থাকায় উল্লিখিত প্রশ্নের বিষয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই মতামত প্রদান করছে যে, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার নিমিত্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি উক্তরূপে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টাগদের শপথ পাঠ করাতে পারবেন। এদিকে আজ এক বার্তায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানায়, সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাইতে পারেন। সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল এ সংক্রান্ত একটি চিঠি আসে যেখানে রাষ্ট্রপতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত যাচনা করেন। সেই আলোকে স্পেশাল রেফারেন্স ১/২০২৪ এর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন, এরকম পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার নিমিত্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে এবং রাষ্ট্রপতি প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টাদের নিযুক্ত করতে পারেন ও প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করাতে পারেন মর্মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মতামত দিয়েছেন।

পদত্যাগ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন

আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল) এ এম আমিন উদ্দিন পদত্যাগ করেছেন। বুধবার রাষ্ট্রপতি বরাবার তিনি তার পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। পদত্যাগের কারণ ‘ব্যক্তিগত’ বলে উল্লেখ করেছেন। এর আগে ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আওয়ামীলীগপন্থি আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিনকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ দেন তৎকালিন রাষ্ট্রপতি। এদিকে আওয়ামীলীগ সরকারের পক্ষ নিয়ে উচ্চ আদালতেক আইনি লড়াই পরিচালনাকারী প্রধান আইন কর্মকর্তাসহ বেশ ক’জন আইন কর্মকর্তা পদত্যাগ করছেন মর্মে গুঞ্জণ ছড়িয়ে পড়েছে মঙ্গলবার। আজ-কালের মধ্যেই তারা প্রেসিডেন্ট বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠাবেন। এর মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিনউদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরীসহ অন্তত ১৩ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ৯ সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল রয়েছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর দেশের ১৬তম অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হন। দুই সরকার মিলিয়ে চার বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি অকুন্ঠচিত্তে আওয়ামী লীগ সরকারকে আইনি সেবা দিয়ে গেছেন।

শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি না করার নির্দেশনা চেয়ে রিটের আদেশ আজ

আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর সরাসরি লাইভ রাউন্ড (তাজা গুলি) না করার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের ওপর আদেশের জন্য সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় তোলা হয়েছে। গুলি না করার নির্দেশনা চেয়ে রিটের আদেশ হতে পারে আজ। রোববার (৪ আগস্ট) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকার ১০ নম্বর ক্রমিকে রাখা হয়েছে আবেদনটি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর সরাসরি লাইভ রাউন্ড (তাজা গুলি) ব্যবহার না করার নির্দেশনা চেয়ে গত ২৯ জুলাই রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা এই রিট করেন। রিটে আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিচালক, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানকে বিবাদী করা হয়। একই সঙ্গে রিটে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দ্রুত মুক্তি দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে মর্মেও রুল চাওয়া হয়। এরপর রিটের ওপর গত ২৯ ও ৩০ জুলাই শুনানি হয়। এরপর ৩১ জুলাই রিটটি আদেশের জন্য হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ কার্যতালিকায় ওঠে। কিন্তু সেদিন দ্বৈত বেঞ্চ বসেননি। জানা যায়, অসুস্থতার কারণে বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন ৩১ জুলাই ও ১ আগস্ট ছুটি নেন। এ কারণে ওই দুদিন দ্বৈত বেঞ্চ বসেননি। এর মধ্যে ১ আগস্ট আটক ছয় সমন্বয়ককে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ১ জুলাই শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ১৫ জুলাইয়ের আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের পর ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আন্দোলন চলাকালে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।

রোববার সাক্ষ্য নিতে রংপুর যাচ্ছে তদন্ত কমিশন

ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় আবু সাঈদসহ ৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় সাক্ষ্য নিতে তিন সদস্যের বিশিষ্ট বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন আগামী রোববার (৪ আগস্ট) রংপুর যাচ্ছে। তদন্ত কমিশনের সদস্যরা হলেন, বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী। শনিবার (৩ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছেন কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাদানকারী কর্মকর্তা আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার শেখ মোহা. আমিনুল ইসলাম। সোমবার (৫ আগস্ট) সকাল নয়টা থেকে রংপুর সার্কিট হাউজে নিহত আবু সাঈদের বিষয়ে, ৬ তারিখ সাজ্জাদ হোসেন, মোসলেম উদ্দিন ও মানিক মিয়ার বিষয়ে, ৭ তারিখ মেরাজুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ আল তাহেরের বিষয়ে সাক্ষ্য নেবে তদন্ত কমিশন। এর আগে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) কমিশনের সভাপতি বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান জানিয়েছিলেন, ১৮ জুলাই এক গেজেট এক সদস্য বিশিষ্ট কমিশন করা হয়েছিল। নতুন গেজেটে তিন সদস্যের কমিশন করা হয়েছে। এতে আগের গেজেট বাতিল করা হয়েছে। কাজের পরিধি ও সময় বেড়েছে। এখন ১৬ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সহিংসতা ও সংঘর্ষে নিহতদের মৃত্যুর কারণ ও দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করবে। ৪৫ কর্ম দিবসের মধ্যে এ প্রতিবেদন দিতে হবে। এর অংশ হিসেবে আগামী ৪ তারিখ কমিশন রংপুর যাবে। সোমবার সকাল নয়টা থেকে রংপুর সার্কিট হাউজে নিহত আবু সাঈদের বিষয়ে, ৬ তারিখ সাজ্জাদ হোসেন, মোসলেম উদ্দিন ও মানিক মিয়ার বিষয়ে, ৭ তারিখ মেরাজুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ আল তাহেরের বিষয়ে সাক্ষ্য নেবে তদন্ত কমিশন। জনসাধারণ সার্কিট হাউজে এসে এ বিষয়ে তথ্য দিতে পারবে। আর একটি ই-মেইল অ্যাড্রেস চালু করা হয়েছে। সেখানেও বক্তব্য পাঠাতে পারবে। রংপুর থেকে শুরু করে ক্রমান্বয়ে সব জায়গায় যাবো বলে জানান হাইকোর্ট বিভাগের এই বিচারপতি।

জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে নয় বিচারপতির শ্রদ্ধা

ঢাকা: ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগে স্থানী নিয়োগ পাওয়া নয় বিচারপতি। শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল ৯টায় তারা এ শ্রদ্ধা জানান। এসময় বিচারপতিরা জাতির পিতার পরিবারের সব শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার কথা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনাসহ পরিবার-পরিজনের মঙ্গল কামনায় মোনাজাত করেন। এর আগে, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা। ২০২২ সালের ৩০ জুলাই অতিরিক্ত বিচারপতি তারা হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে তাদের শপথ পড়িয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। ৯ বিচারপতি হলেন মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী, মো. আতাবুল্লাহ, বিশ্বজিৎ দেবনাথ, মো. আলী রেজা, মো. বজলুর রহমান, কে এম ইমরুল কায়েশ, ফাহমিদা কাদের, মো. বশির উল্লাহ, এবং এ কে এম রবিউল হাসান। দুই বছর পর ৩০ জুলাই নয়জনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতিমঙ্গলবার (৩০ জুলাই) এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে হাইকোর্ট বিভাগের নয়জন অতিরিক্ত বিচারপতিকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এ নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ হতে কার্যকর হবে।

কারাগারে থাকা ৪২ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানার মামলায় গ্রেপ্তার ৪২ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে জামিন দিয়েছেন আদালত।শুক্রবার (২ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রশিদুল আলমের আদালত এ আদেশ দেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. সাইদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জামিন প্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন- আলী হোসেন, ইসমাইল তালুকদার, ইমরান হোসেন, আব্দুল কাদের, নাফিজ, ইয়ামিন শেখ, আসিফ খান, আব্দুস সামাদ, এলাহি বক্স, সামির হোসেন, তানজিল হাসান, আলাউদ্দিন, অপু, ফয়সাল আহমেদ সামিউল আলম, শাখাওয়াত হোসেন, রনি শেখ, ইমরান আহম্মেদ আফসার, সম্রাট খলিফা, রাশিদুল ইসলাম তুহা, মাসুদ পারভেজ, আসিফ, আল আমিন, রায়হান ইসলাম, শাকিল আহম্মেদ, জাবের হোসেন, রুহুল আমিন, রাহাত উবায়দুল্লাহ, জাকি, তুহিন, নাহিদ আহম্মেদ, মাসুদ রানা, শরিফুল ইসলাম, শিহাব হোসেন, তাসরিফ স্বপ্ন, ছোয়াদ উর রহমান। বিস্তারিত আসছে...