হত্যা মামলায় সাবেক বিমানমন্ত্রীসহ চারজন রিমান্ডে

রাজধানীর ধানমন্ডি থানার শিক্ষার্থী শামীম হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খানসহ চারজনের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অন্যরা হলেন— সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ও সাবেক কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে আসামিদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে ৫ দিনের করে পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, আসামিদের সরাসরি ইন্ধনে উক্ত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এবং মূল রহস্য উদঘাটনসহ আরও কারা কারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত তা জানতে রিমান্ডের প্রয়োজন। তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী জানান আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী আসামিদের স্বৈরাচারের দোসর উল্লেখ করে রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজার আদালত তাদের প্রত্যেকের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগেও একাধিক মামলায় ফারুক খান, সাদেক খান, তানভীর সৈকত, হাসিবুর রহমান মানিক রিমান্ডে ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে শ্রম আইনের ৫ মামলা বাতিলের রায় বহাল

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইনের পাঁচ মামলার কার্যক্রম বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখা হয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। এই আদেশের ফলে শ্রম আইনের পাঁচ মামলার কার্যক্রম বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল থাকল বলে জানিয়েছেন ড. ইউনূসের পক্ষের আইনজীবী। আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। গত ২৪ অক্টোবর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইনের এই পাঁচ মামলায় ও মানহানির এক মামলার কার্যক্রম বাতিল করে রায় দেন। ড. ইউনূসের নামে যখন শ্রম আদালতে পৃথক পাঁচটি মামলা হয়, তখন তিনি গ্রামীণ টেলিকমিউনিকেশন্সের চেয়ারম্যান ছিলেন। প্রস্তাবিত ট্রেড ইউনিয়ন ঘিরে কর্মীর চাকরিচ্যুতির অভিযোগ তুলে ২০১৯ সালে এসব মামলা করা হয়।

মারধর করে ‘গান বাংলা দখল’: তাপস-মুন্নীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কৌশিক হোসেন তাপস ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা মুন্নী। ফাইল ছবিঅস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মারধর করে গানভিত্তিক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘গান বাংলার’ মালিকানা দখলের অভিযোগে ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৌশিক হোসেন তাপস ও স্ত্রী চেয়ারম্যান ফারজানা মুন্নীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্ল্যাহর আদালতে গত ২৫ নভেম্বর সৈয়দ শামস উদ্দিন আহমেদ মামলার আবেদন করেন। পরে আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।আজ শুক্রবার আদালত সূত্রে মামলার বিষয় জানা গেছে।মামলায় অন্য আসামিরা হলেন—রবি শংকর মৈত্রী, এম. আমানুল্লাহ খান (চঞ্চল খান), সৈয়দ নাবিল আশরাফ। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও চারজনকে আসামি করা হয়েছে।এ মামলায় তাপসকে গত ৪ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার সাব-ইন্সপেক্টর হারুনুর রশীদ গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছেন। আগামী ৯ ডিসেম্বর তাঁর উপস্থিতিতে গ্রেপ্তারের বিষয়ে শুনানি হবে।সৈয়দ সামস উদ্দিন আহমেদ মামলায় অভিযোগ করেন, ২০১১ সালের ২৫ জুলাই মো. বদরুদ্দোজা সাগর, বখতিয়ার শিকদার ও রবি শংকর মৈত্রী মিলে প্রাইভেট স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল প্রতিষ্ঠার জন্য বার্ডস আই ম্যাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন পিএলসি নামের একটি প্রতিষ্ঠান রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নেন। কোম্পানি গঠনের সময় মামলার বাদী ৭ হাজার প্রাথমিক শেয়ার এবং বখতিয়ার শিখদার, রবি শংকর মৈত্রী ও বদরুদ্দোজা সাগর প্রত্যেকে ১ হাজার করে সর্বমোট ১০ হাজার শেয়ার নেন, যার প্রাথমিক মূলধন ১ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়।২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর সৈয়দ সামস বার্ডস আই মাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন পিএলসির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং গান বাংলা স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল (প্রস্তাবিত) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে থাকার সময় আমানুল্লাহ খানের বাসায় যান। আসামি রবি শংকর ও এম আমানুল্লাহ খানের অনুরোধে তিনি ওই বাসায় গিয়েছিলেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।এতে আরও বলা হয়, আনুমানিক রাত ৮টার দিকে আসামি কৌশিক হোসেন তাপস, ফারজানা মুন্নী, সৈয়দ নাবিল আশরাফসহ অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫ জন কিছু কাগজ নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। কোশিক হোসেন তাপস ও সৈয়দ নাবিল আশরাফের হাতে থাকা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ফিল্মি কায়দায় সকল আসামির সহযোগিতায় সৈয়দ শামস উদ্দিন আহমেদ ও মো. বদরুদ্দোজা সাগরকে কাগজপত্রে স্বাক্ষর করতে বলে।অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, আটকাবস্থায় আসামিদের কথাবার্তায় বাদী বুঝতে পারেন যে, আসামিরা বার্ডস আই ম্যাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন পিএলসি নামীয় কোম্পানিতে বাদী ও বদরুদ্দোজা সাগরের ৮ হাজার শেয়ারের মালিকানা আত্মসাৎ করবে। এক পর্যায়ে বাদী ও মো. বদরুদ্দোজা সাগর প্রাণনাশের ভয়ে ভীত হয়ে প্রাণে বাঁচতে কাগজে স্বাক্ষর করেন। স্বাক্ষর নেওয়ার পর আসামিরা বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বাক্ষর গ্রহণের বিষয়ে কারো কাছে কোনো তথ্য প্রকাশ করলে তৎকালীন প্রশাসনকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করে মামলায় জড়াবে এবং প্রয়োজনে জীবন শেষ করে দিবে বলে হুমকি দেয়।উল্লেখ থাকে, গত ৪ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা থেকে তাপসকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ইশতিয়াক মাহমুদ নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।

আইনজীবী আলিফ হত্যা: ২ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার প্রধান আসামি চন্দন দাসের সাত দিন এবং রিপন দাসের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ শুক্রবার বিকেলে স্পেশাল আদালতের বিচারক কাজী শরিফুল ইসলাম শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আলিফ হত্যা মামলার দুই আসামিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়। মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্য।গত ২৬ নভেম্বর বিকেলে চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন। আদালত ভবনের মূল ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এই দিন সংঘর্ষে পুলিশের ১০ সদস্যসহ আহত হন অন্তত ৩৭ জন। এ ঘটনায় আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন কোতোয়ালি থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ভৈরব থেকে চন্দন দাসকে ও সন্ধ্যায় আনোয়ারা থেকে রিপন দাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে নগরীর কোতোয়ালি থানা হেফাজতে রাখা হয় তাঁদের।

টিকটকার প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের সত্যতা মিলেছে

ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে টিকটকার প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ। ফলে, মামলায় প্রিন্স মামুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটনের (ডিএমপি) ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশ। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ শাহজাহান তদন্ত শেষে গেল ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ সংক্রান্ত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। পরে সেটি বিচারের জন্য ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এ পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) আদালত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগে গত ৯ জুন ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানায় প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন লায়লা। মামলার পর দিন তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে শুনানি শেষে জামিন ও রিমান্ড উভয় নামঞ্জুর করে এ টিকটকারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর গত ১ জুলাই জামিনে মুক্তি পান তিনি। বর্তমানে জামিনেই আছেন। তদন্তে যা পাওয়া গেছে: আসামি প্রিন্স মামুন একজন টিকটকার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যমে একজন টিকটকার হিসেবে পরিচিত তিনি। অপর দিকে, বাদি লায়লা ফেসবুকে বেশ পরিচিত মুখ। তিনি বিবাহিতা। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না থাকার জন্য ফ্ল্যাটে সন্তানদের নিয়ে একাই থাকেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয় লায়লার। পরে এক পর্যায়ে লায়লার সঙ্গে মিডিয়াতে কাজ করার আগ্রহ পোষণ করেন টিকটকার মামুন। এরপর ২০২২ সালের শুরুর দিকে একসঙ্গে পথচলা শুরু করেন মামুন ও লায়লা। পরবর্বী দুইজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। যা পাকাপোক্ত করার জন্য দুইজনই একসঙ্গে লায়লার বাসায় থাকা শুরু করেন। মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের সত্যতা মিলেছে। সম্পর্ক ঘনিভূত হওয়ার কারণে আইডি, এনআইডি, পাসপোর্টসহ অন্যান্য কাগজপত্রে লায়লার ঠিকানা ব্যবহার করতে থাকেন মামুন। এরপর বিয়ে করবে- এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একই ফ্ল্যাটে বসবাস করতে থাকেন। আর একাধিক বার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করেন। যা কিনা প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা মিলেছে। এর আগে মামলার অভিযোগে লায়লা উল্লেখ করেন, মামলার বিবাদী আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের সঙ্গে আমার গত তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে মামুন আমাকে বিয়ে করবে মর্মে প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে। সে আমাকে জানায়, তার ঢাকায় থাকার মত নিজস্ব কোন বাসা নেই। যেহেতু প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয় এবং মামুন আমাকে বিয়ে করবে বলে জানায়, তাই তার কথা সরল মনে বিশ্বাস করে তাকে আমার বাসায় থাকার অনুমতি দেই। ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি মামুন তার মাকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাসায় এসে বসবাস করতে থাকে। ওই দিন থেকে সে আমার বাসায় আমার সঙ্গে একই রুমে থাকতে শুরু করে। আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে একাধিক বার আমার সঙ্গে শারীরিক সর্ম্পক স্থাপন করে। মামুন আমার বাসায় থাকাকালে তার বাবা-মা মাঝেমধ্যেই সেখানে এসে অবস্থান করত। আমি মামুনকে একাধিক বার বিয়ের বিষয় বললে সে বিভিন্ন অজুহাতে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৪ মার্চ মামুন আমার শয়ন কক্ষে আগের মত আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে ধর্ষণ করে। পরবর্তী আমি তাকে বিয়ের বিষয়ে বললে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমাকে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে।

গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের কারাদণ্ডের রায় বাতিল

অর্থপাচারের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া সাত বছরের কারাদণ্ডের রায় বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে এদিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ওমর সাদাত ও সাব্বির হামজা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান। এর আগে ২০১১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করে দুদক। মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিটিএল ও গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালের চেয়ারম্যান এম শাহজাদ আলী নেদারল্যান্ডসের একটি ঠিকাদারি কোম্পানির বাংলাদেশের এজেন্ট ছিলেন। ওই কোম্পানি রেলওয়ের সিগন্যালিং আধুনিকীকরণের টেন্ডার পায়। কিন্তু ২০০৩ সালে কার্যাদেশ চূড়ান্ত করার সময় গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ওই কাজের বিপরীতে এম শাহজাদ আলীর কাছে অবৈধ কমিশন দাবি করেন। নতুবা কার্যাদেশ বাতিল করার হুমকি দেন। এরপর শাহজাদ আলী ২০০৪ সালে ৬ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা মামুনের লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকের হিসাবে জমা করেন। পরে এ মামলায় ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন। এছাড়া ১২ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকের হিসাবে থাকা ৪৪ হাজার ৬১০ দশমিক শূন্য ৮ ব্রিটিশ স্টালিং (বাংলাদেশি টাকায় ৬ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা) বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন তিনি। সেই আপিলের শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার রায় দিলেন হাইকোর্ট। প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ৩০ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। চলতি বছরের ৬ আগস্ট তিনি কারামুক্ত হন।ওই ঘটনায় পরের বছরের ২৬ এপ্রিল দুদকের উপ-পরিচালক মো. ইব্রাহিম আদালতে মামুনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। একই বছরের ৩১ অক্টোবর আদালত মামুনের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে চার্জ গঠন করেন। বিচারকালে ১০ সাক্ষীর মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল প্রশ্নে চূড়ান্ত রায় ১৭ ডিসেম্বর

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের রায়ের জন্য ১৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন। গতকাল বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ-সংক্রান্ত শুনানি শেষ হয়। রায় কবে দেওয়া হবে আজ সেই তারিখ নির্ধারণ করা হয়।গতকাল আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও শাহরিয়ার কবির।আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালের ৩০ জুন পঞ্চদশ সংশোধনী আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়। এ আইন চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্টজন রিট করেন।প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৯ আগস্ট রুল দেন। রুলে পঞ্চদশ সংশোধনী কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।রুলে বিএনপি, জামায়াত, গণফোরামসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা ও ব্যক্তি পক্ষভুক্ত হন। শুনানিতে আইনজীবী বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীতে একই সঙ্গে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ও ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়টি রাখা হয়েছে; যা পরস্পরবিরোধী ও সাংঘর্ষিক। এই সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে।২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাস হয় এবং রাষ্ট্রপতি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ট্রাইব্যুনালে আবেদন

গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেছে প্রসিকিউশন। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে প্রসিকিউশনের পক্ষে সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি করা হয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের বেঞ্চে আবেদনের ওপর শুনানি হবে। বিষয়টি ঢাকা মেইলকে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেন, আবেদনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রেস কনফারেন্স করা হবে। ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তখন থেকে তিনি ভারতেই আছেন। সেখান থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করে যাচ্ছেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে সেই বক্তব্য আবার নিজেই ছড়িয়ে দিতে বলছেন। সেগুলো আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়েছে। পলাতক থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে প্রসিকিউশন। এদিকে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত এক মাসের মধ্যে শেষ করতে গত ১৮ নভেম্বর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

আমু ও কামরুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঠানো হলো কারাগারে

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত নজিরবিহীন গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক দুই মন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও কামরুল ইসলামকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী ১৮ ডিসেম্বর তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করার কথাও বলেছেন আদালত। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গাজী এম এইচ তামিম। তিনি বলেন, গত ১৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে সাবেক এই দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরে তাদের আদালতে তোলা হয় ও নিউমার্কেট এলাকার একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ২ ডিসেম্বর তাদের ট্রাইব্যুনালে তোলার জন্য আমরা আবেদন করি। আদালত তা মঞ্জুর করে আজকের দিন ধার্য করেন। তিনি আরো বলেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে তা আমরা ট্রাইব্যুনালের কাছে উপস্থাপন করেছি। আমাদের আবেদন মঞ্জুর করে ট্রাইব্যুনালের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং আগামী ১৮ ডিসেম্বর তাদের অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে ট্রাইব্যুনালে হাজির করানো হবে। পলাতক থাকা আসামিদের বিষয়ে এম এইচ তামিম বলেন, ট্রাইব্যুনাল থেকে এরইমধ্যে ৭০ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলেও সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। অল্প কয়েকজন ব্যক্তিকেই গ্রেপ্তার করা গেছে। বাকিরা পলাতক থাকার মাধ্যমে মামলার তদন্তে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন। সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ থাকবে, দ্রুত বাকি ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার নিশ্চিত করা।

হারিছ চৌধুরীর ডিএনএ মিলেছে , রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের নির্দেশ

বিএনপি নেতা আবুল হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নির্ধারণে কবর থেকে তুলে করা ডিএনএ টেস্ট তার পরিবারের সঙ্গে মিলেছে। এখন পরিবারে পছন্দমতো কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে হারিছ চৌধুরীর মরদেহ দাফন করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের পর বুধবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী।

সেই মাহমুদুর রহমানই হারিছ চৌধুরী

বিএনপি নেতা আবুল হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নির্ধারণে কবর থেকে তুলে করা ডিএনএ টেস্ট তার পরিবারের সঙ্গে মিলেছে। এখন পরিবারের পছন্দমতো কবরস্থানে হারিছ চৌধুরীর মরদেহ দাফন করা যাবে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের পর বুধবার (৪ ডিসেম্বের) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী। এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর তার মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিনের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ আবুল হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নির্ধারণে কবর থেকে তুলে করা ডিএনএ টেস্ট করার নির্দেশ দেন। ২০২১ সালে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওই সালের ৪ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ও বিএনপির সাবেক নেতা আবুল হারিছ চৌধুরী ‘মাহমুদুর রহমান’ পরিচয়ে ঢাকার সাভারের জালালাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসার কবরস্থানে দাফন করা হয়। হারিছ চৌধুরীর মেয়ে জানান, সদ্য বিদায়ী স্বৈরাচারী সরকার ওদের গোয়েন্দা বিভাগ একটা নাটক রচনা করে বাবার মৃত্যুকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মিডিয়া একটার পর একটা রিপোর্ট করেছে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। এটা নিয়ে যেন কখনো প্রশ্ন না উঠে সেটা ডিটারমিন করার জন্য এ রিট করেছি। আমার বাবার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ থাকবে সন্তান হিসেবে এটা খুব মর্মান্তিক, কষ্টদায়ক। এখনো মানুষ জিজ্ঞেস করে সত্যিই কি মারা গেছেন! আমাদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তাই এটা শেষ করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আদালত নিরাশ করেননি। সাভারের জামিয়া খাতামুন নাবিয়্যিন মাদ্রাসার কবরস্থানে মাহমুদুর রহমান নামে কবর দেওয়া হয় আবুল হারিছ চৌধুরীকে। তার পরিচয় নির্ধারণে কবর থেকে তুলে ডিএনএ টেস্ট করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর আবুল হারিছ চৌধুরীর নামে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে না ও তার নামে থাকা ইন্টারপোল রেড নোটিশ কেন প্রত্যাহার করা হবে না, তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী নিজ জেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধার যথাযথ সম্মান দিয়ে কেন কবরস্থ করা হবে না এই মর্মে রুল জারি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, রেজিস্ট্রার জেনারেল( জন্ম ও মৃত্যু), সিআইডির পরিচালক, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার ও সাভার মডেল থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। ২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর হারিছ চৌধুরী সস্ত্রীক তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে যান। রাত ১২টার পর তার ব্যক্তিগত সহকারী আতিক মোবাইল ফোনে জানান, ঢাকায় বিএনপি নেতাদের বাসভবনে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। কয়েক ঘণ্টা পর যৌথ বাহিনী হারিছের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু তার আগেই তিনি সটকে পড়েছিলেন। কিছুদিন সিলেটে এখানে-ওখানে লুকিয়ে থাকার পর ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে ভারতে চলে যান। ভারতের আসামের করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে তার নানাবাড়ি। সেখানেই তিনি ওঠেন। সেখান থেকেই বিদেশে যাতায়াত করতেন।

গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনালে আনা হলো সাবেক দুই মন্ত্রীকে

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত নজিরবিহীন গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক দুই মন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও কামরুল ইসলামকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ০৩/২০২৪ নম্বর মামলার পরোয়ানায় কামরুল ইসলাম এবং আমির হোসেন আমুকে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে প্রিজন ভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। এরপর তাদের রাখা হয় ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায়। সেখান থেকে তাদেরকে তোলা হবে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায়। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন কক্ষে তাদের শুনানি করবেন প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ ও গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম। গত ৬ নভেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে আমির হোসেন আমুকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম উত্তরায় গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেপ্তার হন গত ১৮ নভেম্বর। গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের কয়েকশ অভিযোগ এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে জমা পড়েছে। গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। এরইমধ্যে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ৯ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক সচিবকে কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

হত্যা মামলায় ৩ দিনের রিমান্ডে সাবেক কাউন্সিলর জামাল ও মহিলা লীগ নেতা রোকেয়া

পল্টন থানার যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় মিরপুরের সাবেক কাউন্সিলর জামাল মোস্তফা ও মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রোকেয়া জামানের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (৪ নভেম্বর) তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।মোহাম্মদপুর থানার হত্যা মামলায় আনিসুল হককে নতুন করে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে শাহবাগ থানার একটি মামলায় আনিসুল হক, হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেননকে নতুন করে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।এ ছাড়াও, পল্টন থানার একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানকে নতুন করে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।আসামি পক্ষের আইনজীবী মোর্শেদ হোসেন শাহীন জানান, বার বার একই আসামিদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো মানবাধিকার লঙ্ঘন। জামিন আসামির অধিকার। জামিন না দিয়ে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আসামিরা সবাই ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী। তারা ছাত্র আন্দোলন দমাতে মাঠে ছিলো। তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হস্তক্ষেপে এতো মানুষ প্রাণ হারান। তাই তাদের জামিনের বিরোধিতা করা হয়েছে। আসামিদের হয়রানি করা লক্ষ্য নয়। হত্যার বিচার করাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য।

সারজিস-হাসনাতের গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কা: চালক-সহকারী দুই দিনের রিমান্ড

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলমের গাড়িবহরে ধাক্কার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার ট্রাকচালক ও তার সহকারীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হকের আদালত এই আদেশ দেন। শুনানিতে অংশ নেওয়া আইনজীবী মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জিয়ারত শেষে ফেরার পথে হাসনাত-সারজিসের গাড়িবহরে ট্রাকচাপার ঘটনা ঘটে। এই অভিযোগে নিরাপদ সড়ক আইনে করা মামলায় ট্রাকচালক মুজিবুর রহমান ও সহকারী রিফাত মিয়াকে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। বাদী পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শাহজাহান এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, পুলিশের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত দুই দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুর্ঘটনায় হাসনাত-সারজিস অক্ষত থাকলেও তাদের গাড়িবহরে থাকা একটি গাড়ির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনার পরদিন ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটির চালক আহমেদ নেওয়াজ বাদী হয়ে লোহাগাড়া থানায় মামলা করেন।

১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলার তালিকা পাঠাতে চিঠি

রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলার তালিকা পাঠানোর জন্য দেশের সব পাবলিক প্রসিকিউটরকে চিঠি দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে। উপ-সলিসিটর সানা মো. মাহরুফ হোসাইনের সই করা চিঠিতে এই তালিকা চাওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের, বিশেষ করে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এবং পরে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করা হয়, যা অনেক ক্ষেত্রে ‘গায়েবি মামলা’ নামে পরিচিত। এসব মামলা সংক্রান্তে সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তথ্য না থাকায় আইনানুগভাবে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই নির্ধারিত ছকে এসব মামলার তথ্য জরুরি। মামলার তালিকা তৈরিতে বিশেষভাবে যত্নবান ও দায়িত্বশীল হওয়াসহ সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। মামলার তালিকা পাওয়ার পর মন্ত্রণালয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করবে বলে চিঠিতে বলা হয়েছে। যেসব তথ্য আবশ্যক ১. জেলার নামসহ আদালতের নাম, মামলার নম্বর, এজাহারকারী বা নালিশকারীর নাম ও পরিচয়, মোট আসামির সংখ্যা এবং এর মধ্যে অজ্ঞাতনামা এজাহারে উল্লিখিত ঘটনার তারিখ, আসামির সংখ্যা, মামলাটি কোন আইনের কোন ধারায়, মামলাটি কোন পর্যায়ে (তদন্তাধীন, নাকি বিচারাধীন)। ২. মামলার তালিকা প্রণয়নে বিশেষভাবে যত্নবান ও দায়িত্বশীল হওয়াসহ সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। উল্লেখ্য, প্রাপ্ত মামলার তালিকা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই বাছাই করা হবে। ৩. উল্লিখিত ছক অনুসারে বর্ণিত সময়ে আপনার জেলায় অথবা মহানগরে দায়েরকৃত রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলার তালিকা আগামী ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ মধ্যে সলিসিটর, সলিসিটর অনুবিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ, ঢাকা বরাবর (ই-মেইল: solicitor@lawjusticediv.gov.bd ) প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

ডা. গোলাম সাব্বির আহমেদের জামিন শুনানি পিছিয়েছে

মানবতাবিরোধী অপরাধে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ডা. গোলাম ছাব্বির আহমেদের জামিন শুনানি পিছিয়ে ১২ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে, চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম দেশের বাইরে থাকায় শুনানি পিছানো হয়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই জামিন শুনানির জন্য ১২ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেছে। শুনানিতে আসামির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, এবং প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন গাজী এম এইচ তানিম। এর আগে ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর, মানবতাবিরোধী অপরাধে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ডা. গোলাম ছাব্বির আহমেদ ও আব্দুস সাত্তারের জামিন আবেদন নাকচ করে দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এর নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির একটি বেঞ্চ ওই রায় দেন। ২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারিতে, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ডা. গোলাম ছাব্বির আহমেদসহ পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যান্য কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন: মো. হরমুজ আলী, ফখরুজ্জামান, আব্দুস সাত্তার, এবং খন্দকার গোলাম রব্বানী।

দেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট

বাংলাদেশে ভারতীয় সব টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধের দাবিতে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী এই রিটটি দায়ের করেন। হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে এই রিটের ওপর শুনানি হতে পারে। রিটে বলা হয়েছে, ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন ২০০৬ এর ২৯ ধারা অনুসারে ভারতীয় সব টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার নিষিদ্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হোক। একই সঙ্গে, বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধের বিষয়ে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন করা হয়েছে। এ ঘটনায় তথ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) সহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে। রিটের আইনজীবী বলেন, ভারতীয় চ্যানেলগুলোর মধ্যে যেমন স্টার জলসা, স্টার প্লাস, জি বাংলা, রিপাবলিক বাংলা এবং অন্যান্য চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে। তার মতে—ভারতীয় টিভি চ্যানেলে বিভিন্ন উসকানিমূলক সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে, যা বাংলাদেশে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, এসব চ্যানেলে বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিরোধী অনুষ্ঠান প্রচারের কারণে যুব সমাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। রিটকারীর অভিযোগ, এসব চ্যানেল কোনো আইন মানছে না, যার ফলে তাদের সম্প্রচার বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।

গুমের অভিযোগ: ট্রাইব্যুনালে র‌্যাবের সাবেক ২ কর্মকর্তা

গুমের অভিযোগে র‌্যাব-২ এর সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) মহিউদ্দিন ফারুকী ও বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাদের হাজির করার তথ্য জানিয়েছেন প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান। এর আগে গত ২৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাদের হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেদিন শুনানি শেষে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম বলেন, সাবেক দুজন র‌্যাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে তিনটি অ্যাপ্লিকেশন করেছিলাম। দুজনই র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) কর্মকর্তা ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য গুমের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এর ভিত্তিতেই ট্রাইব্যুনালে দুটি আবেদন করা হয়। এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর শনির আখড়ায় জোবায়ের ওমর খানের মৃত্যুর মামলায় এ দুই কর্মকর্তা গ্রেফতার আছেন। গত ১৩ নভেম্বর রাতে বরিশাল মহানগর এলাকা থেকে আলেপ উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয় এবং একই দিন ভোরে রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী (বেতবুনিয়া) এলাকা থেকে মহিউদ্দিন ফারুকীকে গ্রেফতার করা হয়।

‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগান : রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন

‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। সোমবার (২ ডিসেম্বর) অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী রোববার (৮ ডিসেম্বর) আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসবে। ২০২০ সালের ১০ মার্চ জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। বাংলায় দেওয়া রায়ের আদেশের অংশে আদালত বলেন, ‘আমরা ঘোষণা করছি যে জয় বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে।’ ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা চেয়ে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. বশির আহমেদের করা রিটের শুনানি শেষে এ রায় দেন হাইকোর্ট। পরে ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয় শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা।

নতুন মামলায় গ্রেফতার ইনু-মেনন-দীপু-পলক

রাজধানীর রামপুরা, হাতিরঝিল ও শাহবাগ থানায় করা নতুন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক চার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে। গ্রেফতার দেখানোর পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকালে এসব মামলায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। নতুন মামলা গ্রেফতার দেখানো চারজন হলেন- সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং সাবেক সমাজ কল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। হাতিরঝিল থানার খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলার মামলায় হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেননকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন আদালত। শাহবাগ থানার নতুন হত্যা মামলায় দীপু মনি ও জুনায়েদ পলককে এবং রামপুরা থানার নতুন হত্যা মামলায় হাসানুল হক ইনুকে গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদদ রয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে ছিলেন তারা।

১৫ আগস্ট সাধারণ ছুটির রায় আপিল বিভাগে স্থগিত

‘জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে ১৫ আগস্ট সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। সোমবার (২ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে করা আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে গত ১৩ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ১৫ আগস্টের ছুটি বাতিল করা হয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর ওইদিন এ বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে ব্যাপক ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিলের বিষয়টি উপদেষ্টামণ্ডলীর বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়েছিল। কিন্তু বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় এসে ২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে। এর ছয় বছর পর হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পুনর্বহাল করা হয়।

উচ্চ আদালতে জামিন পেয়েও মুক্তি পেলেন না বাবুল আক্তার

উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েও এখনও কারাগার থেকে মুক্তি পাননি স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু খুনে বাদী থেকে আসামি বনে যাওয়া আলোচিত সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার। রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল তার।জামিন-সংক্রান্ত কাগজপত্র বিকেল পৌনে ৫টার দিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের হাতে আসে। কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, জামিননামা পৌঁছানোর আগেই কারাগারের বন্দিদের তালাবদ্ধ করা হয়ে যায়। তাই, জামিননামাটি এখনও যাচাইবাছাই চলছে। নথি যাচাই-বাছাই শেষে তিনি মুক্তি পাবেন।ফলে আজ সোমবার তিনি মুক্তি পাবেন বলে কারা কর্তৃপক্ষ তার আইনজীবীকে জানিয়েছেন।এদিকে, আসামির শ্বশুর ও মামলার বাদী মোশাররফ হোসেন এই জামিননামা স্থগিত চেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। স্ত্রী হত্যা মামলায় বুধবার অন্তর্বর্তী জামিন পান বাবুল।উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন বাবুলের স্ত্রী মিতুকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। পিবিআইয়ের তদন্ত ও শ্বশুরের করা মামলায় বাবুল’সহ ৮ জনকে আসামি করা হয়।

সব বিচারপতিকে নিয়ে বিশেষ সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি

সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতির অংশগ্রহণে বিশেষ সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। আগামী মঙ্গলবার (৩ ডিসম্বের) বিকাল চারটায় সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের জাজেস লাউঞ্জে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। রোববার (১ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে একটি স্মারক জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। ‘বিশেষ সভা অনুষ্ঠান’ শীর্ষক স্মারকে বলা হয়, ‘আগামী ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকাল চারটায় সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত জাজেস লাউঞ্জে বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হবে।’

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক রহমানসহ সব আসামি খালাস

বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়্যারম্যান তারেক রহমাহসহ সকল আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি এই মামলার অভিযোগপত্রও অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। রোববার (১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার পর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, মামলার চার্জশিটে গ্রেনেড সরবরাহকারীর নাম উল্লেখ ছিল না। এছাড়া ঘটনাস্থলে কারা গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছিল তাও সাক্ষীদের বক্তব্যে উঠে আসেনি। এ সময় আসামিপক্ষের যুক্তিও রায়ে উল্লেখ করেন বিচারপতিরা। আদালত বলেন, মামলার চার্জশিট বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে গ্রহণ করানো হয়নি। এটি আইনের লংঘন। এর আগে, এই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় নিম্ন আদালত। এছাড়া, তারেক রহমানসহ ১৯ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর গত ২৩ অক্টোবর চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির দফতর থেকে হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পরে ৩১ অক্টোবর মামলার পেপারবুক পাঠের মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ শুনানি শুরু করে। গত ২১ নভেম্বর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি গ্রহণ শেষ হয়।