২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: হাইকোর্টে রায় ঘোষণা শুরু
বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের রায় পড়া শুরু হয়েছে। রোববার (১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় পড়া শুরু হয়। এর আগে চার দিন আপিলের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য ছিল। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে ফাঁসি এবং বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। পরে ওই বছরের ২৭ নভেম্বর মামলার বিচারিক আদালতের রায় প্রয়োজনীয় নথিসহ হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় এসে পৌঁছে। নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দীন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৯ আসামি শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ ওরফের আবু ওমর, আবু হোমাইরা ওরফে পীরসাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমদ ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, আরিফ হাসান ওরফে সুজন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর ওরফে সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, মহিবুল মোত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন (পলাতক), আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন (পলাতক), মো. খলিল (পলাতক), জাহাঙ্গীর আলম বদর ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর (পলাতক), মো. ইকবাল (পলাতক), লিটন ওরফে মাওলানা লিটন (পলাতক), তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া (পলাতক), হারিছ চৌধুরী (পলাতক), কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (পলাতক), মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মুফতি আবদুল হাই (পলাতক) এবং রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে বাবু ওরফে রাতুল বাবু (পলাতক)। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া দুই মামলার রায়সহ প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮৫ পাতার নথি ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়। পরে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানির জন্য মামলার পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেই আদেশের ধারাবাহিকতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাড়ে ১০ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়। আসামিদের মধ্যে ২২ জন খালাস চেয়ে আপিল করেছেন। অপরদিকে ১২ জন আসামির জেল আপিল দায়ের হয়েছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা-বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতা-কর্মী। তাদের অনেকে আজও শরীরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার নিয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন। অনেকে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের রিভিউ শুনানি ১৯ জানুয়ারি
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য করা তিনটি আবেদন একসঙ্গে শুনতে ১৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। রোববার (১ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বিভাগ শুনানির জন্য নতুন দিন ধার্য করেন। বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষ থেকে সময় আবেদনের করা হলে সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্ত দেন। এর আগে সকালে বিএনপির পক্ষে আইনজীবী জয়নুল আবেদীন এক মাস সময় আবেদন করেন। এ সময় জামায়াতও এ বিষয়ে আদালতে সময় আবেদন করেন। আপিল বিভাগ বলেন, এই মামলার সঙ্গে পঞ্চদশ সংশোধনীর মামলার কোনো সম্পর্ক আছে কি না। আপিল বিভাগ আরও বলেন, ১৯ জানুয়ারি এর শুনানি হবে। ওদিন সময় চাইলেও আর দেওয়া হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে বাতিল ঘোষণা করে রায় দেয় আপিল বিভাগের সাত বিচারকের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের করা আপিল মঞ্জুর করে ওই রায় দেওয়া হয়। সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য গত অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন। অন্য চার ব্যক্তি হলেন তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। এ দুটি রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য তোলার মধ্যেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আরেকটি আবেদন করেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন একটি সরকারের অধীনে সাধারণ নির্বাচন হলেও তখন বিষয়টি সংবিধানে যুক্ত করা হয়নি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিরোধীদলগুলোর আন্দোলনের চাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান এনে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংসদে পাস করে বিএনপি। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। পরের বিএনপি সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট সেই রিট খারিজ হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধই থাকে। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে আপিল করেন রিটকারীরা। ২০০৬ সালে রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে জরুরি অবস্থা জারির পর গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর ক্ষমতায় থাকার পর এ পদ্ধতির দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলে ২০১০ সালের ১ মার্চ আপিল বিভাগে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে আপিল আবেদনকারী এবং রাষ্ট্রপক্ষ ছাড়াও অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে শীর্ষস্থানীয় ৮ জন আইনজীবী বক্তব্য দেন। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন। এমনকি তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও এর পক্ষে মত দেন। ওই আপিল মঞ্জুর করে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেয়। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার আগেই ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি।
গ্রেনেড হামলা মামলার আপিলের রায়ের অপেক্ষা
বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের রায় ঘোষণা করা হবে আজ রোববার (১ ডিসেম্বর)। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী শিশির মনির গতকাল শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী শিশির মনির ঢাকা মেইলকে বলেন, রোববার একুশে আগস্ট গ্রেনেড মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। আশা করছি এ মামলায় বাবর সাহেব খালাস পাবেন। গত ২৩ অক্টোবর গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চে পাঠানো হয়। ৩১ অক্টোবর এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে ২১ নভেম্বর বেঞ্চ রায় ঘোষণার জন্য মামলাটি অপেক্ষমাণ রাখেন। ২০১০ সালের ১০ অক্টোবর আলোচিত এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১৯ জনকে। এই রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে আপিল করেন বেশ কয়েকজন আসামি, যার শুনানি শেষ হয় বৃহস্পতিবার। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কোনো সংশ্লিষ্টতা মেলেনি। ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। ভয়াবহ এ হামলায় ২৪ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত চার শতাধিক।
বিচার বিভাগ আমাদের গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ
বিচার বিভাগকে বাংলাদেশের ‘গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ’ হিসেবে তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ‘বেঞ্চ ও বারের পারস্পরিক সুষম সহযোগিতার ওপর এর শক্তি নির্ভর করে।’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে ২০২৪ সালে সদস্যভুক্ত হওয়া আইনজীবীদের উদ্দেশে বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন। শনিবার (৩০ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগ আমাদের গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ এবং এর শক্তি নির্ভর করে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ - বেঞ্চ ও বারের সুষম সহযোগিতার ওপর।’ ‘বার (আইনজীবী সমিতি) শুধু বিচার প্রক্রিয়ার একটি অংশ নয়, বরং ন্যায়বিচারের পবিত্রতা ও কার্যকারিতা রক্ষারও সমান অংশীদার।’ আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য হিসেবে আপনার ভূমিকা শুধু আইনজীবী হিসেবে সীমাবদ্ধ নয়; আপনি আইন পেশার অভিভাবক ও বিচার বিভাগের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী।’ ‘জাতি ও ব্যক্তিগতভাবে আমার প্রত্যাশা, আপনারা যত্ন, পেশাদারিত্ব ও গভীর দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করবেন, যাতে বিচার বিভাগ সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে সমর্থ হয়।’ সৈয়দ রেফাত আহমেদ প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার দায়িত্ব গ্রহণের পর নেওয়া কয়েকটি পদক্ষেপের কথা সভায় তুলে ধরেন। বিচার বিভাগের সংস্কারে এরই মধ্যে তার নেওয়া রোডম্যাপ ঘোষণার কথা তিনি তুলে ধরেন। একই সঙ্গে এ রোডম্যাপের অংশ হিসেবে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় করা এবং ‘জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা বলেন তিনি। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচারপতি অপসারণে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন হয়েছে, যা আগে পার্লামেন্টের কাছে ছিল।’ কর্মশালা শুরুর আগে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ, ২০২৪ সালে গণ আন্দোলনে নিহত ও অতি সম্প্রতি চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুব উদ্দিন খোকন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।
আইনের শাসন নিশ্চিতে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা করতে হবে
আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হলে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে সুপ্রিম কোর্ট বার আয়োজিত নবীন আইনজীবীদের কর্মশালায় এ কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারপতি অপসারণে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন হয়েছে; যা আগে পার্লামেন্টের কাছে ছিলো। বিচার বিভাগ আলাদা করার জন্য সরকারকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। নবীন আইনজীবীদের সততার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক স্বশাসন বিচার বিভাগের স্বাধীনতার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। নবীন আইনজীবীরা বিচারবিভাগের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সচেষ্ট হতে হবে। সাম্প্রতিক আদালত অঙ্গনে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আইনজীবীদের আরও দায়বদ্ধ থেকে কাজ করতে হবে। সার্বিকভাবে বিচারবিভাগ বার ও বেঞ্চের সমন্বয়ে এগিয়ে যাবে। এ সময় চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে ৫ আগস্ট ঘিরে আন্দোলনে নিহত আহতদের নিয়ে বিশেষ দোয়া হয়। উল্লেখ্য আজকের কর্মশালায় চট্টগ্রামের আইনজীবী আলিফেরও থাকার কথা ছিলো। এসময় আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান , সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন। এসময় সারা দেশ থেকে প্রায় এক হাজার ৫০০ নবীন আইনজীবী যারা বারে নতুন সদস্য হয়েছেন তারা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল হত্যার ঘটনায় মামলা, আসামি ৩১ জন
চট্টগ্রাম আদালত থেকে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে কারাগারে নেওয়ার সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহত আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলাটি করেন। মামলায় ৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আদালতে আইনজীবী ও পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় নিহত আলিফের ভাই আরেকটি মামলা করেছেন। ১১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। এর আগে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তিনটি মামলা করা হয়েছিল। গত মঙ্গলবারের ওই সহিংসতার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা তিনটি করে। এ তিন মামলায় ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১ হাজার ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। সংঘর্ষের ওই ঘটনায় গ্রেফতার ৩৮ জনের মধ্যে আইনজীবী হত্যায় নয়জন জড়িত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। হত্যা মামলা হলে তাদের ওই মামলায়ও গ্রেফতার দেখানো হবে বলে জানিয়েছিল পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশের পর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন। আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর করে। এরপর আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে খুন হয় আইনজীবী আলিফ। সড়কে লুটিয়ে পড়া অবস্থায় তাকে বেশ কয়েকজন এলোপাথাড়ি মারধর করছে। ভিডিওতে হেলমেট পরে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ানোদের মধ্যে যাদের ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, তাদের অনেককেই শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন উপকমিশনার রইছ উদ্দিন। পুলিশ বলছে, গ্রেফতারদের মধ্যে রুমিত দাশ, গগন দাশ, সুমিত দাশ, নয়ন দাশ, বিশাল দাশ, মনু মেথর, আমান দাশ ও রাজীব ভট্টাচার্য পুলিশের ওপর হামলার মামলার আসামি। পাশাপাশি তারা হত্যাকাণ্ডেরও জড়িত ছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
গণহত্যার অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হতে পারে জানুয়ারিতে
নিজের গড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে জুলাই গণহত্যার অভিযোগে মূল বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। সঙ্গে রয়েছেন তার মন্ত্রিসভার সদস্য, পুলিশের সাবেক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, সাবেক বিচারপতি এবং সচিবও। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল প্রসিকিউশন সূত্রে এমনই আভাস পাওয়া গেছে। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী হয়ে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য পুরাতন হাইকোর্ট ভবনে এ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করেন। এর মধ্যে বিচার শেষে জামায়াতের শীর্ষ কয়েকজন নেতার ও বিএনপির এক নেতার ফাঁসির দণ্ডও কার্যকর করা হয়। কিন্তু ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একই ট্রাইব্যুনালে আসামির কাঠগড়ায় ঠাঁই হয় পতিত সরকারের হেভিওয়েট মন্ত্রী, পুলিশ, বিচারক ও সচিবের। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে চিফ প্রসিকিউটর মামলা করেন। এসব হেভিওয়েট নেতার বিচার বর্তমানে প্রি-ট্রায়াল স্টেজে অর্থাৎ মামলা প্রাথমিক তদন্ত অবস্থায় রয়েছে। সেই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনাসহ কয়েকজন আসামি ছাড়া অনেককে ১৮ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন - সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ড. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৌফিক-ই-ইলাহী, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও সচিব জাহাংগীর আলম। যদিও একটি মামলায় রিমান্ডে থাকার কারণে সেদিন সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়নি। পরবর্তীতে সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান এবং কয়েকজন পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাকেও হাজির করা হয়। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর কার্যালয় থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব হেভিওয়েট আসামির তালিকায় কিছু দিনের মধ্যে যুক্ত হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু এবং কামরুল ইসলাম। তারা বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। সামনে এই দুই নেতাকে জুলাই গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিচার করার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। তাদের দুজনকে নিয়ে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শীর্ষ ১৪ নেতার বিচার করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। তাদের সকলের বিচার করা হবে একটি মামলায়; মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায়। এসব আসামির বিরুদ্ধে জুলাই- আগস্টের হত্যাকাণ্ডের ভুক্তভোগীদের করা নানা অভিযোগ এবং সেসব অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম ভুক্তভোগীদের পক্ষ হয়ে মামলাটি করেন। বর্তমানে মামলাটি ‘প্রি ট্রায়াল স্টেজে’ অর্থাৎ মামলা প্রাথমিক তদন্ত অবস্থায় থাকলেও চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী জানুয়ারি মাসে থেকে এসব নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার ‘ট্রায়াল স্টেজ’ অর্থাৎ মামলার মূল বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নিচ্ছে প্রসিকিউশন টিম। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগে এই মামলাটির বিচার কাজ শেষ হতে সময় দুই থেকে তিন বছর সময় লাগতে পারে। গেল ১৮ নভেম্বর শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রীদের কেন বিচার করা হবে এ বিষয়ে আদালতের সামনে তাজুল ইসলামের উল্লেখ করা কারণগুলোর মধ্যে ছিল, ছাত্র জনতাকে হত্যা, নির্বাচনের নামে প্রহসন, বিডিআর ট্র্যাজেডির কারণ, শাপলা চত্বরের হেফাজতের ওপর গণহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও আয়না ঘর তৈরি, ১১১৯ জনকে বিচার বহির্ভূত হত্যা, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি, দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার, শেয়ার বাজার লুট, রাজাকারের নাম দিয়ে ট্যাগ দেওয়ার কারণে দেশের মানুষকে পৃথক করার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী দিয়ে ছাত্র জনতার ওপর হামলা, জুলাই আগস্টের আন্দোলনে মরণাস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে হত্যা করার নির্দেশ দেওয়ার কারণে ‘সুপিরিয়র হিসেবে শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রীদের বিচার’ করার কথা আদালতের সামনে উল্লেখ করেন তিনি।
বিচারপতি নিয়োগে ১০ সদস্যের কাউন্সিলের প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্টের
উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে দশ সদস্যের ‘জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ চান সুপ্রিম কোর্ট।সুপ্রিম কোর্ট মনে করে, কাউন্সিলটি গঠিত হলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের মতামত নিয়ে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ প্রস্তাবনায় বিশ্বের অনেক দেশ বিশেষ করে ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, কেনিয়া, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকাকে উদাহরণ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। ওইসব দেশে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন বা এইরূপ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রস্তাবনায় বিচারপতি নিয়োগ পদ্ধতি হিসেবে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগপ্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সংবিধান অনুযায়ী অভিজ্ঞতার তথ্য নির্ধারিত ছকে পূরণ করে আবেদন করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রস্তাবনায়। এ ছাড়াও প্রস্তাবনায় বিচারপতি নিয়োগের জন্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ১০ সদস্য বিশিষ্ট কাউন্সিলর গঠনের কথা বলা হয়েছে। এই কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের একাধিক বিচারপতি, আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়, বার কাউন্সিল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি রাখার কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাব পাঠানোর পর সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত আইন, বিধি-বিধান, উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত, প্রথাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিষদ গবেষণা পরিচালনা করে একটি প্রস্তাব বৃহস্পতিবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওই প্রস্তাবে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি ‘জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে নিয়োগের লক্ষ্যে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই করে সুপারিশ করার জন্য কাউন্সিলের কাছে অনুরোধ পাঠাবেন। এ অনুরোধ পাওয়ার পর কাউন্সিল সুপারিশ পাঠাবেন বলে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। কাউন্সিলটি সংবিধানের ৯৫ ও ৯৮ অনুচ্ছেদের অধীনে বিচারক নিয়োগের জন্য সুপারিশ পাঠানোর লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুরোধ জ্ঞাপনের ভিত্তিতে ওই পদে নিয়োগের সুপারিশ প্রেরণের জন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের বিষয়ে মতামত বা পরামর্শ নেওয়ার জন্য কাউন্সিল সংশ্লিষ্ট যে কোনো ব্যক্তিকে কাউন্সিলের সভায় আহ্বান করতে পারবে বা যে কোএনা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে কাউন্সিলের চাহিদাকৃত তথ্য উপস্থাপনের জন্য নির্দেশ দিতে পারবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। বর্তমানে বিচারক-নিয়োগ সংক্রান্ত ৯৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, (১) প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং প্রধান বিচারপতির সহিত পরামর্শ করিয়া রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগদান করিবেন। (২) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক না হইলে, এবং (ক) সুপ্রিম কোর্টে অন্যূন দশ বৎসরকাল অ্যাডভোকেট না থাকিয়া থাকিলে; অথবা (খ) বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে অন্যূন দশ বৎসর কোনো বিচার বিভাগীয় পদে অধিষ্ঠান না করিয়া থাকিলে; অথবা (গ) সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে নিয়োগলাভের জন্য আইনের দ্বারা নির্ধারিত যোগ্যতা না থাকিয়া থাকিলে তিনি বিচারকপদে নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন না।
বিচারপতিকে আইনজীবীদের ডিম মারার ঘটনায় প্রধান বিচারপতির উদ্বেগ
ডিম মেরে বিচারপতিকে এজলাস থেকে নামানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বুধবার (২৭ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের প্রাঙ্গণে যে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত।’ একইসঙ্গে দেশের জেলা আদালতগুলোতেও যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থতির সৃষ্টি হয়েছে- সে বিষয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। সব প্রতিকূলতা ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সত্ত্বেও দেশের আদালতগুলোতে বিচারসেবা প্রদান অব্যাহত রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি। ভবিষ্যতে যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। এজলাসের কক্ষে হাইকোর্টের বিচারপতি আশরাফুল কামালের দিকে ডিম ছুড়ে মেরেছেন আইনজীবীরা। বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীরা জানান, ওই বেঞ্চে বিচারকাজ চলাকালে এক দল আইনজীবী এজলাস কক্ষে ঢুকেন। তারা বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি একজন বিচারপতি হয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। এখনও ওই চিন্তাভাবনা পোষণ করলে আপনার বিচারকাজ পরিচালনার অধিকার নাই।’ এক পর্যায়ে আইনজীবীদের মধ্য থেকে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে লক্ষ্য করে ডিম ছুড়ে মারা হয়। তবে, ছুড়ে মারা ডিম বিচারপতির আসনের সামনে থাকা ডেস্কে লাগে। এরপর বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলাম এজলাস ছেড়ে নেমে খাস কামরায় চলে যান। জানা গেছে, ২০১৬ সালে ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায়ে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল তার পর্যবেক্ষণে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেন।
বিচারককে ডিম মারা আইনজীবীদের বার কাউন্সিল সনদ বাতিল করা হবে
হাইকোর্টের এজলাসে ডিম ছুড়ে বিচারককে হেনস্তার ঘটনায় জড়িত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। মাহবুব উদ্দিন বলেন, ‘বিচারককে হেনস্তার ঘটনায় জড়িত আইনজীবীদের বার কাউন্সিল সনদ বাতিল ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ বাতিল করা হবে।’এজলাস কক্ষে হাইকোর্টের বিচারপতি আশরাফুল কামালের দিকে ডিম ছুড়ে মারেন আইনজীবীরা। বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীরা জানান, ওই বেঞ্চে বিচারকাজ চলাকালে এক দল আইনজীবী এজলাস কক্ষে ঢুকেন। তারা বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি একজন বিচারপতি হয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। এখনও ওই চিন্তাভাবনা পোষণ করলে আপনার বিচারকাজ পরিচালনার অধিকার নাই।’এক পর্যায়ে আইনজীবীদের মধ্য থেকে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে লক্ষ্য করে ডিম ছুড়ে মারা হয়। তবে, ছুড়ে মারা ডিম বিচারপতির আসনের সামনে থাকা ডেস্কে লাগে। এরপর বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলাম এজলাস ছেড়ে নেমে খাস কামরায় চলে যান। জানা গেছে, ২০১৬ সালে ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায়ে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল তার পর্যবেক্ষণে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেন।
গুম-নির্যাতনের অভিযোগ: র্যাবের সাবেক দুই কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অসংখ্য গুম ও গুমের পর নির্যাতনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় র্যাবের সাবেক দুই কর্মকর্তাকে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তারা হলেন, সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) মহিউদ্দিন ফারুকী ও বরিশাল রেঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন। তাদেরকে আগামী সোমবার (২ ডিসেম্বর) গুমের অভিযোগ দায়ের করা মামলায় তাদেরকে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। বিস্তারিত আসছে....
আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন সেই ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে দায়ের করা মানহানির মামলায় জামিন পেয়েছেন সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহম্মেদের আদালত শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। এর আগে, সকালে আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন ঊর্মি। গত ৮ অক্টোবর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন। ওইদিন বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালত আসামিকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, গত ৫ অক্টোবর আসামি তাপসী তাবাসসুম উর্মি শুধু শহীদ আবু সাঈদ নয়, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকার পরও ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার ও সরকার প্রধান নোবেল বিজয়ী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও অবমাননাকর বক্তব্য ফেসবুক লেখেন। যার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেফারেন্সের ভিত্তিতে সংবিধান সম্মতভাবে গঠিত একটি সরকার প্রধান সম্পর্কে বিষোদগার করা হয়েছে এবং সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৫ অক্টোবর ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি। সেখানে তিনি লেখেন, সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটনে ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলেছেন তিনি। এতই সহজ। কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে আপনার, মহাশয়। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ সম্পর্কে তিনি লেখেন, আবু সাঈদ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী একটি ছেলে, যে নিজের দলের লোকের হাতে মারা গেছে; সে নাকি শহীদ!" তার এই পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনায় মুখে পড়েন ঊর্মি। এ ঘটনায় গত ৬ অক্টোবর ঊর্মিকে ওএসডি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। এরপর ৭ অক্টোবর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
ইসকন ইস্যুতে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ
ইসকনের এক নেতার গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির যেকোনো অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষ আরো জানিয়েছে, এ বিষয়টি এখন সরকারের টপ প্রায়োরিটি। এরইমধ্যে এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৬ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ তথ্য জানানো হয়। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন এ তথ্য জানান। তারা বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। এ সময় আইনজীবী মনির উদ্দিন বলেন, এখন ইসকন নিষিদ্ধের সময়। তখন আদালত বলেন, সরকার অবশ্যই দেখবে। এর আগে বুধবার (২৭ নভেম্বর) ‘ইসকন’ কি ধরনের সংগঠন, এই সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন আছে কি না, কারা এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিষয়ে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি না, তা জানতে চান হাইকোর্ট। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানকে এ তথ্য আদালতে জানাতে বলা হয়। ওইদিন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে ইসকনের কার্যক্রম নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে এনে ইসকনের কার্যক্রম বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে আদালতের কাছে আবেদন করেন আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন।
আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন সেই সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাসসুম
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদসহ অন্য শহীদদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে দায়ের করা মানহানির মামলায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছেন। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহম্মেদের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে এ আবেদন করেন তিনি। এর আগে গত ৮ অক্টোবর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন। ওইদিন বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালত আসামিকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, গত ৫ অক্টোবর আসামি তাপসী তাবাসসুম উর্মি শুধু শহীদ আবু সাঈদ নয়, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকার পরও ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার ও সরকার প্রধান নোবেল বিজয়ী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও অবমাননাকর বক্তব্য ফেসবুক লেখেন। যার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেফারেন্সের ভিত্তিতে সংবিধান সম্মতভাবে গঠিত একটি সরকার প্রধান সম্পর্কে বিষোদগার করা হয়েছে এবং সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
অর্থ আত্মসাত মামলায় হলমার্কের জেসমিনকে জামিন দেননি আপিল বিভাগ
ভুয়া এলসির বিপরীতে জনতা ব্যাংকের ৮৫ কোটি ৮৭ লাখ ৩৩ হাজার ৬১৬ টাকা আত্মসাতের মামলায় হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। তার জামিন আবেদনটি তিন মাস পর শুনানির জন্য আসবে বলে আদেশে বলা হয়েছে। এর মধ্যে দুদকের তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দিতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে জেসমিনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসিফ হাসান। এর আগে ২০২২ সালে জেসমিন ইসলামকে এই মামলায় জামিন না মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। ভুয়া এলসির বিপরীতে জনতা ব্যাংকের ৮৫ কোটি ৮৭ লাখ ৩৩ হাজার ৬১৬ টাকা আত্মসাতের মামলায় হাইকোর্ট বিভাগ ২০১৯ সালের ১০ মার্চ তাকে রুল মঞ্জুর করে জামিন দেন। এর বিরুদ্ধে দুদক আপিল বিভাগে আবেদন করে। একই বছরের ১৬ জুন আপিল বিভাগ তার জামিন বাতিল করে চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর জেসমিন ইসলাম আত্মসমর্পণ করেন। পরে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করলে আদালত রুল জারি করেন।
আল্লাহর পর আপনাকে হাজির নাজির মনে করি: সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ
, যাত্রাবাড়ী থানার শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান ইমরান হত্যা মামলার রিমান্ড শুনানিতে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চেয়েছেন জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। তিনি বলেন, ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের সময় থেকে আমি এমপি ছিলাম। এরশাদের আমলেও জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। গত ৫ আগস্ট আমি আমার নির্বাচনি এলাকায় ছিলাম। সেখানকার ডিসি, এসপিদের সঙ্গে ফুটবল টুর্নামেন্টে ছিলাম। আল্লাহর পর আপনি যদি হাকিম হন, তাহলে আপনি ন্যায়বিচার করবেন। এ মামলার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। রাজনৈতিক কারণে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মামলার বাদী আদালতে এসে আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ মামলায় আমার নাম থাকার ব্যাপারে বাদী কিছুই জানেন না। এ বিষয়টি আপনি বিবেচনা করবেন। এ সময় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী জানান, মামলার বাদীকে ভয় দেখিয়ে আদালতে এনে নাম প্রত্যাহার করানো হচ্ছে। মামলা যেহেতু হয়েছে সে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিষয়টি দেখবেন কে জড়িত কে জড়িত না। এখানে আদালতে বাদীকে এনে তার কথা শোনা, তাকে নাম প্রত্যাহারে বাধ্য করা বেআইনি। যারা এর সাথে জড়িত তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হবে। এরপর উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত যাত্রাবাড়ী থানার সাইদুর রহমান হত্যা মামলায় আ স ম ফিরোজকে দুদিনের রিমান্ডে পাঠান।
কর ফাঁকির মামলা থেকে তারেক রহমানকে রেহাই
কর ফাঁকির অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) করা মামলা থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০’-এর বিচারক রেজাউল করিম এ আদেশ দেন। বুধবার (২৭ নভেম্বর) এ মামলাটিতে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ধার্য ছিল। তবে, মামলার বাদীর আনা অভিযোগ কাল্পনিক ও সৃজনকৃত উল্লেখ করেন বিচারক। পরে এ মামলা থেকে তারেক রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তারেক রহমানের আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ২৮ জুলাই ঢাকার কর অঞ্চল-৬’-এর উপ কর-কমিশনার সামিয়া আক্তার বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে বলা হয়, ‘তারেক রহমান ২০০২-২০০৬ সালের অর্থ বছরে বিভিন্ন খাত থেকে এক কোটি সাত ৪৭ হাজার টাকা আয় করেন। তবে, তিনি আয়কর বাবদ ২৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকা কর ফাঁকি দেন।’
স্ত্রী হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের জামিন
স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত বুধবার (১৪ আগস্ট) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে জামিন আবেদন করেছিলেন এসপি বাবুল আক্তার। পরে ১৮ আগস্ট বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন। জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তৎকালীন পুলিশ সুপার ও মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। তবে মামলায় স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে স্বামী বাবুল আক্তারেরই সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। ২০২১ সালের ১২ মে আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। একইদিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওইদিনই মামলাটিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে রয়েছেন বাবুল। এদিকে, প্রথম মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর নারাজির আবেদন করেন বাবুলের আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ নভেম্বর নারাজি ও পিবিআইয়ের প্রতিবেদন খারিজ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এরপর দুটি মামলাই তদন্ত করতে থাকে পিবিআই। তবে পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি মিতুর বাবার দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম মামলাটি অধিকতর তদন্ত শেষে বাবুলসহ ৭ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। গত বছরের ১৩ মার্চ আলোচিত মামলাটিতে বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা: খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে খালাস
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের দণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করে আজ (বুধবার) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন খোকন, ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসিফ হোসাইন। আদালতে শুনানি শেষে আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পেয়েছেন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজার বিরুদ্ধে গত ২০ নভেম্বর আপিল শুনানি শুরু হয়। তার আগে ৩ নভেম্বর এই মামলায় খালেদা জিয়ার সাজার বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য নিজ খরচে পেপারবুক তৈরির অনুমতি দেন হাইকোর্ট। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অন্য তিন আসামিকেও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছিলেন আদালত। খালেদা জিয়াসহ প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ট্রাস্টের নামে কেনা কাকরাইলে ৪২ কাঠা জমি বাজেয়াপ্ত করে তা রাষ্ট্রের অনুকূলে নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা জিয়া।
সাবেক আইন ও খাদ্যমন্ত্রী মন্ত্রী রিমান্ডে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর পৃথক থানার মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিমের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (২৭ নভেম্বর) তাদেরকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেনের আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় আনিসুল হককে ৩ দিন, লালবাগ থানার মামলায় কামরুল ইসলামকে ৩ দিন, চকবাজার ও লালবাগ থানার দুই মামলায় সোলাইমান সেলিমকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এছাড়া যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এদিকে বিভিন্ন থানার মামলায়, সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি, আনিসুল হক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, আমির হোসেন আমু, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, সোলাইমান সেলিম, সাদেক খান, এবিএম ফজলে করিম, মনিরুল ইসলাম, আ স ম ফিরোজ, মশিউর রহমান এবং শাহরিয়ার কবিরকে নতুন করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সাবেক এমপি জ্যাকব কারাগারে
রাজধানীর রুপনগর থানাধীন এলাকায় শামীম হাওলাদার নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা মামলায় ভোলা-৪ আসনের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল জ্যাকবকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) তাকে তিনদিনের রিমান্ড শেষে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রুপনগর থানার এসআই মামুন মিয়া মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মো. জুনাইদ এ আদেশ প্রদান করেন। এর আগে গত ১ অক্টোবর জ্যাকবকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ২০ জুলাই রাজধানীর রুপনগর থানাধীন প্রবেশিকা মোড় এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন শামীম হাওলাদার। তাকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীম মারা যান। এ ঘটনায় শামীমের চাচাতো ভাই সম্রাট হাওলাদার রুপনগর থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় জ্যাকব এজাহারনামীয় ১২২ নাম্বার আসামি।
৫ মে গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর হেফাজত ইসলামের নেতা জুনায়েদ আল হাবিবী ও মাওলানা মামুনুল হকের পক্ষে আজিজুল হক ইসলামাবাদী এ অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে মুফতি হারুন ইজহারের পক্ষে ট্রাইব্যুনালে আরেকটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক এমপি হাজী সেলিম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহমেদ, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ, ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, নির্মূল কমিটির সদস্য অধ্যাপক মুনতাসির মামুন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ, গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার, একাত্তর টিভির সাবেক সিইও মোজাম্মেল হক বাবু, সময় টিভির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আহমেদ জোবায়ের, এবিনিউজ২৪ ডটকমের সম্পাদক সুভাস সিংহ রায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ এবং এনএসআইয়ের মো. মনজুর আহমেদকে আসামি করা হয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর
নগরের নিউমার্কেট মোড়ের স্বাধীনতা স্তম্ভে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের সাবেক অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর (৩৮) জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দেন। এর আগে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হলো চিন্ময় কৃষ্ণকে
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে (৩৮) আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে তাকে হাজির করা হয়। আদালত সূত্রে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় দুপুর ১২টার পর শুনানি হবে। এর আগে, সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে মঙ্গলবার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় আদালতে হাজির করা হবে। এ মামলায় তিনিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন। গত ৩১ অক্টোবর বিএনপি নেতা ফিরোজ খান (পরে বহিষ্কৃত) বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়। মামলা অভিযোগ করা হয়, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হওয়ার পর নগরের নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্টে স্তম্ভের ওপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, যা এখনো সেখানে রয়েছে। ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে লালদীঘির মাঠে একটি মহাসমাবেশ হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো মানুষ ওই সমাবেশে যোগ দেন। ওইদিন চন্দন কুমার ধরসহ ৯ জন আসামির ইন্ধনে বাকি আসামিরা নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্ট স্তম্ভ ও আশপাশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে সেখানে স্থাপন করে দেয়। এ নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই মামলার পর ইসকন প্রবর্তক ধাম অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রসঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি মামলাটি সনাতনীদের আট দফা দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা হিসেবে আখ্যা দেন। ওই বিবৃতিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘৫ আগস্টের পর সনাতনীদের ওপর চালানো হামলা-নির্যাতনের প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন। এই আন্দোলন বর্তমান সরকার কিংবা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়।’