ফারইস্ট লুট: মামলার এক বছরেও হেমায়েতের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়নি দুদক
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৪:২২ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স থেকে ৩৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় কোম্পানির সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ হেমায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগপত্র দেয়া হয়নি। গত বছরের ৯ মে দুদকের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক আবু সাঈদ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘২০১৩ সালের ১১ আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে তিনটি ব্যাংকে ১৫টি হিসাব খোলেন হেমায়েত উল্লাহ। ওই হিসাবগুলোতে নিজেকে নমিনি দেখিয়ে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের নামে থাকা তিনটি ব্যাংক হিসাব থেকে ৩৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ওই ১৫টি হিসাবে জমা করেন। পরবর্তী বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে নগদে তুলে সেই টাকা হেমায়েত উল্লাহ আত্মসাৎ করেন।’
এই কাজের মাধ্যমে তিনি দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭ ও ৪৬৮ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে জানিয়েছে দুদক। মামলার তদন্তে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা বা যোগসাজশ পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় নেয়া হবে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
বর্তমানে মামলাটির দায়িত্বে রয়েছেন দুদকের উপপরিচালক রেভা হালদার। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘হেমায়েত উল্লাহ বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা হয়েছে। এখন একেকজনের কাছে একেকটি মামলা, আমার কাছে একটি আছে। সবগুলো নিয়ে আসলে আমি বলতে পারব না। আমার কাছে যে এজাহারটি আছে, সেটা কেবল আমি হাতে পেয়েছি।’
অভিযোগপত্র দেয়া নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এক চিঠিতে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স থেকে হেমায়েত উল্লাহকে বরখাস্ত করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ‘কোম্পানি পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, আর্থিক অনিয়ম, বিমা পলিসি গ্রাহক ও বিমাকারীর স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর কর্মকাণ্ডের তথ্য আইডিআরএর নজরে এসেছে। বিমা গ্রাহকদের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সব অনিয়মের তথ্য-প্রমাণ আইডিআরএর কাছে আছে।’
হেমায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা নিজ ভোগ দখলে রেখে এবং মিথ্যা তথ্যসংবলিত সম্পদ বিবরণী দাখিলের অভিযোগে দুদক মামলা করেছে। তার বিদেশ গমনেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
ফারইস্ট লাইফ সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানিটির অপসারিত চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের দুর্নীতির অন্যতম সহযোগী হিসেবে বিবেচনা করা হয় হেমায়েত উল্লাহকে। নজরুল ইসলাম স্বল্প সময়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে আর দেশে ফিরছেন না।