‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি’ প্রণয়নে জাপানের সহায়তা চান নৌপরিবহন উপদেষ্টা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:০২ পিএম, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫

নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘জাপান বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, জ্বালানি পরিবহন ও অবকাঠামো খাতে জাইকা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। জাইকার সার্বিক সহযোগিতায় মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হচ্ছে। এছাড়া, সমুদ্র বন্দর ব্যবস্থাপনায় জাপানের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। দেশের মেরিটাইম সেক্টরে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বন্দরগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি’ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশের বন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নে জাইকাকে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা করার আহ্বান জানাচ্ছে সরকার।’
রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকে নৌপরিবহন উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে গত ৫০ বছরের বেশি সময়েও বাংলাদেশে কোন সমন্বিত বন্দর ব্যবস্থাপনা কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়নি। প্রত্যেকটি বন্দর পৃথকভাবে তাদের কার্যক্রম ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এখন আধুনিক ও সমন্বিতভাবে কার্যকর বন্দর ব্যবস্থাপনা সময়ের দাবি। বিশ্বের বিখ্যাত বন্দরগুলো এখন অটোমেশনের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর ফলে সেখানে বেশি বেশি বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মেরিটাইম সেক্টরেও আরো বেশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে এবং একটি কার্যকর ও টেকসই বন্দর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার ‘ন্যাশনাল পোর্ট র্স্ট্যাটেজি’ প্রণয়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই কৌশলপত্রের মাধ্যমে একটি সমন্বিত, শক্তিশালী ও যুগোপযোগী বন্দর কাঠামো গড়ে তোলা হবে। বন্দর কেন্দ্রিক সব সেবাকে একটি প্লাটফর্মে আনতে মেরিটাইম সিঙ্গেল উইন্ডো চালু করা হবে।’
জাইকার সহযোগিতায় ‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্যাটেজি’ প্রণয়নের মাধ্যমে দেশের মেরিটাইম সেক্টরে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা।
জাইকার প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নে উপদেষ্টার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ জাপানের অকৃত্রিম বন্ধু। জাপান সব সময় বাংলাদেশের জনগণের পাশে রয়েছে।’
ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন জাইকার প্রতিনিধি দল।
বৈঠকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের অগ্রগতি পর্যালোচনাপূর্বক বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। ২০৩০ সালের মধ্যেই মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে বলে বৈঠকে আশা প্রকাশ করা হয়।
বৈঠকে জাইকা বাংলাদেশের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইসিগুসি টমোহাইডের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।