নারী দিবসে সিএসইর ‘রিং দা বেল ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি’ বিষয়ক অনুষ্ঠান


March 2025/Ring the Bell.jpg

আন্তর্জাতিক নারী দিবস’২০২৫ উপলক্ষে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই) তার চট্টগ্রামস্থ প্রধান কার্যালয়ে রোববার (৯ মার্চ) ‘রিং দা বেল ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি’ বিষয়ক অনুষ্ঠান করেছে। 

বিশ্বব্যাপী, ইভেন্টটির এই বছরের থিমটি হলো “নারী এবং মেয়েদের জন্য রিং দ্যা বেল: অধিকার, সমতা ও ক্ষমতায়ন।’’

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের লক্ষ্যে সারা বিশ্বজুড়ে স্টক এক্সচেঞ্জগুলি জাতিসংঘের সাসটেইনেবল স্টক এক্সচেঞ্জেস ইনিশিয়েটিভ, ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অফ এক্সচেঞ্জেস, ইউএন ওমেন, ইউএন গ্লোবাল কম্পেক্ট ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন- এই প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে ‘রিং দা বেল’ কার্যক্রম উদযাপন করে আসছে। ব্যবসায় ও টেকসই উন্নয়নের জন্য জেন্ডার ইকুয়ালিটির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিই এই প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার। চিফ রেগুলেটরি অফিসার মোহাম্মেদ মাহাদি হাসান এবং সিএসইর অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে এম সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের সাথে একাত্ম ঘোষণা করে সিএসইতে আমরা প্রতি বছর নারী দিবসের পালনের মাধ্যমে নতুন কমিটমেন্ট সেট করি এবং কাজের পরিবেশ আরও সুদৃঢ় করার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ হই। এক্সচেঞ্জ হিসেবে আমাদেরও অনেক দায়বদ্ধতা আছে, আর সে কারণে সিএসই তার জন্মলগ্ন থেকে ঐতিহ্যগতভাবে একটি স্ট্যান্ডার্ড কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করে আসছে। একই সাথে প্রতিনিয়ত এই মান উন্নত করার সর্বদাই সচেষ্ট রয়েছে এবং প্রদত্ত প্রতিশ্রুতির যথাযথ বাস্তবায়নে আমাদের প্রয়াস আন্তরিক। এছাড়া আমাদের কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রচার করাও জরুরী, যেন অন্যরাও জানতে পারে এবং উৎসাহিত হয়।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘সিএসই শুধু তার নারী কর্মী নয় বরং সব সম্মানিত কর্মকর্তা/কর্মচারীর জন্য উপযোগী, সহিষ্ণু, সুষম অংশগ্রহণ এবং সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ ইতিমধ্যে দিয়ে আসছে। আমাদের প্রয়াস থাকে কিভাবে এই পরিবেশকে আরও উন্নত করা যায়্, সমতা আনয়ন ক্রমাগত বৃদ্ধি করা যায় ,নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা যায় যেন আরও উপযোগী ও আস্থার পরিবেশ নিশ্চিত হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে জেন্ডার ইকুয়ালিটি বাস্তবায়নের জন্য নারীদের জন্য সমান সুযোগ করে দিতে পারলে সামগ্রিক উন্নতি নিশ্চিত করা যাবে। সে লক্ষ্যে সিএসই তিনটি বিষয় আমাদের বিবেচ্য-  প্রথমত ইকুয়াল কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা, উন্নতি করা ও মেইন্টেন করা, দ্বিতীয়ত আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করা এবং তৃতীয়ত উন্নয়নের দ্বার উন্মুক্ত করা একই সাথে সমস্যা থাকলে তা শনাক্তকরণ ও সমাধান করা। স্টক এক্সচেঞ্জের মত একটি ইউনিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার কারণে সব কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বেশ কিছু আলাদা চেলেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়, সেটাও বিবেচনায় রাখতে হবে।’ 

মোহাম্মেদ মাহাদি হাসান বলেন, ‘কর্পোরেট কর্মক্ষেত্রে সেলিব্রাল ইকুয়ালিটি থাকা বেশ জরুরী। যদিও এই ব্যাপারে আমাদের দেশ এখনও বেশ পিছিয়ে। তবে আশার কথা হলো সাম্প্রতিক সময়গুলোতে এখানে কিছুটা পরিবর্তন দৃশ্যমান। আমরা আশাব্যঞ্জক যে, আমাদের দেশে এই সংখ্যা আরও বাড়বে ও নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হবে। সিএসইতে ইকুয়াল কাজ করার সুযোগ আছে এবং এই ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’

জেনেরাল মেনেজার এন্ড হেড অফ ইনফর্মেশন টেকনোলজি মোহাম্মেদ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘কাজের ক্ষেত্রে প্রত্যেককে প্রত্যেকের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী সবার সম্মানটা ঠিকভাবে পাওয়াটা জরুরী। পরিসংখ্যান থেকে জানতে পারি, মেধার দিক থেকে এখন মেয়েরাও বেশ এগিয়ে এসছে, সুযোগ পেলে আরও বিকশিত হবার সুযোগ রয়েছে।’

জেনারেল মেনেজার এন্ড হেড অফ ট্রেক মার্কেটিং সার্ভিসেস মো. মুর্তজা আলম বলেন, ‘আজকের প্রতিপাদ্য বিষয়ের সাথে রিকগনিশন বিষয়টাও থাকা জরুরী। ১৯০৯ সাল থেকে এই দিবসটির সুচনা এবং ১৯৭৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হচ্ছে, সে হিসেবে আজ ৫০ বছর এই দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। এখনও আমাদের অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। কর্পোরেট পরিমণ্ডলে আমরা এই দিবসটি যেমন নিয়মিত পালন করছি, তেমনি লক্ষ্য নির্ধারণ করে ক্রমাগত পরিবর্তনের সাথে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের আবেদন থাকবে যে, ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারি পর্যায়ে আরও অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং সুষমভাবে তা পালন করার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট হতে হবে।’

সোনিয়া হোসেন বলেন, ‘শুধু একটি দিন নয় প্রতিটি দিনই আমাদেরকে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। দিনটির উদ্দেশ্যকে অনুধাবন করে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের পরিবার থেকেই সেই পরিবেশ তৈরির দায়িত্বটা নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নারীদেরকে তার সম্মানের উপযুক্ত জায়গাটা দিতে হবে, হোক সেটা ঘরে বা কর্মক্ষেত্রে। কিছুক্ষেত্রে এখনও অনেক আস্থাহীনতা দৃশ্যমান নারীদের ব্যাপারে, তাই উপযুক্ত পরিবেশ এবং সহযোগীতা পেলে সেও হবে সফল ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও সহকর্মী। আর এই অনুশীলন শুরু হতে হবে প্রতিটি পরিবার থেকে।ঘরে বাইরে শুধু নারী নয়,পুরুষ এবং নারী উভয়ের জন্যই কাজের পরিবেশটা অনুকূল করতে হবে এবং যাবতীয় ঝুঁকির বিষয়গুলোর নির্ধারণ করে যথাযথভাবে সেগুলোর সমাধান করতে হবে।’ 

এছাড়া সিএসইর অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দও তাদের মতামত ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×