দেশে-বিদেশি বিনিয়োগ: চীনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিতে খুলেছে সম্ভাবনার দুয়ার


March 2025/China President 2.jpg

দেশে-বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে যখন উঁকি দিচ্ছে শঙ্কার কালো মেঘ, তখন চীনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিতে খুলেছে সম্ভাবনার দুয়ার। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে প্রায় ৩০টি চীনা কোম্পানি। শুধু তাই নয়, চীনা উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার আশ্বাস দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

এছাড়াও, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নে ঋণ ও অনুদান মিলিয়ে আরও এক বিলিয়ন ডলারের বেশি পাচ্ছে ঢাকা। চীনের এমন ইতিবাচক মনোভাব বাংলাদেশকে উৎপাদনের হাবে পরিণত করতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা বিশ্লেষকদের।
 
স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের যাত্রায় দরকার ব্যাপক বিদেশি বিনিয়োগ। অথচ গত কয়েক অর্থবছরে প্রাপ্তির হিসাবটা নামমাত্র। সবশেষ চলতি অর্থবছরে দুই প্রান্তিক মিলিয়ে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ মাত্র ২১ কোটি ডলার। প্রথম প্রান্তিক অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বরে যা ছিল ১০ কোটি ডলার, বছর ব্যবধানে ৭১ শতাংশ কম।
 
এমন বাস্তবতায় চীন সফরে মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বের বৃহত্তম সৌর প্যানেল উৎপাদনকারী কোম্পানি লঞ্জি, মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক অপ্পো, চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি, হিসেন্স ইন্টারন্যাশনালসহ শীর্ষ চীনা কোম্পানির প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন।
 
বাংলাদেশ ব্যবসায়ের জন্য কতটা উন্মুক্ত তা তুলে ধরা হয় এ বৈঠকে। চীন সরকার ও চীনা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ।

চীন সফরের সময় প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগে চীনা উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। আমরা আশা করছি, চীনা বিনিয়োগ বড় পরিসরে আসবে।’
 
এটাকে চীনা বিনিয়োগের দ্বার উন্মোচিত হওয়ার সবুজ সংকেত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরাও।
 
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবু ইউসূফ বলেন, ‘বিনিয়োগে সহায়ক পরিবেশ আছে দেশে, এটি যদি বাইরে একটা বার্তা দেয়া যেত তাহলে চীন ছাড়াও জাপান আছে বা অন্য দেশও বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে।’
  
দেশীয় উদ্যোক্তারা বলেন, ‘চীনা বিনিয়োগে দ্রুতই বাড়বে কর্মসংস্থান। তবে অর্থনীতিতে কতটা প্রভাব পড়বে তা জানতে সময় লাগবে।’
 
ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘ব্যাপারটা যদি এমন হয় যে, পুরো কাঁচামালটা আসছে সেটা আবার প্রস্তুত হয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে, সেখানে সেভাবে ট্যাক্স ও আয় হচ্ছে না। শুধুমাত্র তারা তখন মুজুরি দিচ্ছেন, বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্টকে বেতন দিচ্ছে তখন সেক্ষেত্রে খুব একটা লাভ হয় না। কিন্তু তারা লোকালি তাদের কাঁচামাল আমদানি সোর্স করছে তখন যেটা হয় সেটা হচ্ছে মূল্যায়নটার তাৎপর্যটা বেড়ে যায়।’
 
চীনা বিনিয়োগে বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য রফতানি বাজারে সহজে পৌঁছে দিতে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতেও ঋণ দিচ্ছে বেইজিং।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×