
সাত ঘণ্টায়ও এসকে সুরের লকার খুলতে পারেনি দুদক
সাত ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এসকে সুর) গোপন লকার খুলতে পারেনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। তার লকার খোলা নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে এসকে সুরের লকার খুলতে দুদকের সাত সদস্যের একটি টিম আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। সবকিছুর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও সন্ধ্যায় ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত লকার খোলা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে জানতে লকারের দায়িত্ব থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. আমজাদ হোসাইন খানকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। প্রসঙ্গত, এর গত ১৯ জানুয়ারি অভিযান চালিয়ে ঢাকা উত্তর সিটির ধানমন্ডিতে এসকে সুরের বাসা থেকে ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা জব্দের সময় তার নামে বাংলাদেশ ব্যাংকে ভল্ট থাকার তথ্য পায় দুদক। পরে সংস্থাটি জানতে পারে, সেটি ভল্ট নয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল্যবান সামগ্রী রাখার লকার (সেফ ডিপোজিট)। এর পর দুদক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া চিঠিতে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর ও হস্তান্তর না করতে বলে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা শাখা থেকে দুদককে ফিরতি চিঠি দিয়ে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর স্থগিত করার তথ্য জানায়। ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারে বিধি অনুযায়ী ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত মূল্যবান সামগ্রী তাদের নিজ নামে প্যাকেট অথবা কৌটায় নিজ দায়িত্বে সিলগালাযুক্ত অবস্থায় জমার তারিখ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত রাখা হয়।’

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পরিষদের এক সভা রোববার (২৬ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকার ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খান, মো. আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

পূবালী ব্যাংকের রাজশাহী অঞ্চলের ‘প্রথম শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত
সেবার মান বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যাংকের ব্যবসায় সম্প্রসারণে ব্যবস্থাপকদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে পূবালী ব্যাংক পিএলসির রাজশাহী অঞ্চলের ‘প্রথম শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন- ২০২৫’ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে পূবালী ব্যাংকের রাজশাহী অঞ্চলাধীন শাখাগুলোর ব্যবস্থাপকবৃন্দ অংশ নেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আলী।বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যাংকের সংস্থাপন ও সাধারণ সেবা বিভাগ প্রধান ও মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুজ্জামান। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী অঞ্চল প্রধান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. সাজিদুর রহমান।২০২৫ সালে ব্যাংকের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিভিন্ন কৌশল ও দিক নিয়ে সম্মেলনে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

জানুয়ারির ২৫ দিনে রেমিট্যান্স এল ২০ হাজার কোটি টাকা
দেশে চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম ২৫ দিনে বৈধপথে ১৬৭ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২০ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে)। দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৮১৮ কোটি টাকা। রোববার (২৬ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম ২৫ দিনে দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭ কোটি ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১২৪ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৭ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আলোচিত সময় কোনো রেমিট্যান্স আসেনি ৮ ব্যাংকে। এগুলো হল সরকারি খাতের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক। বিদেশি খাতের ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে দেশে এক হাজার ৩৭৭ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আগের বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল এক হাজার ৮০ কোটি মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৯৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার। অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ১৯৩ কোটি মার্কিন ডলার এবং ডিসেম্বর মাসে এসেছে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এর আগে, বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ, নভেম্বরে ১৯৩ কোটি, ডিসেম্বরে ১৯৯ কোটি ১২ লাখ, জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ, মার্চ মাসে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মে মাসে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ এবং জুন মাসে এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স।

‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি’ প্রণয়নে জাপানের সহায়তা চান নৌপরিবহন উপদেষ্টা
নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘জাপান বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, জ্বালানি পরিবহন ও অবকাঠামো খাতে জাইকা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। জাইকার সার্বিক সহযোগিতায় মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হচ্ছে। এছাড়া, সমুদ্র বন্দর ব্যবস্থাপনায় জাপানের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। দেশের মেরিটাইম সেক্টরে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বন্দরগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি’ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশের বন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নে জাইকাকে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা করার আহ্বান জানাচ্ছে সরকার।’ রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে নৌপরিবহন উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে গত ৫০ বছরের বেশি সময়েও বাংলাদেশে কোন সমন্বিত বন্দর ব্যবস্থাপনা কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়নি। প্রত্যেকটি বন্দর পৃথকভাবে তাদের কার্যক্রম ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এখন আধুনিক ও সমন্বিতভাবে কার্যকর বন্দর ব্যবস্থাপনা সময়ের দাবি। বিশ্বের বিখ্যাত বন্দরগুলো এখন অটোমেশনের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর ফলে সেখানে বেশি বেশি বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মেরিটাইম সেক্টরেও আরো বেশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে এবং একটি কার্যকর ও টেকসই বন্দর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার ‘ন্যাশনাল পোর্ট র্স্ট্যাটেজি’ প্রণয়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই কৌশলপত্রের মাধ্যমে একটি সমন্বিত, শক্তিশালী ও যুগোপযোগী বন্দর কাঠামো গড়ে তোলা হবে। বন্দর কেন্দ্রিক সব সেবাকে একটি প্লাটফর্মে আনতে মেরিটাইম সিঙ্গেল উইন্ডো চালু করা হবে।’ জাইকার সহযোগিতায় ‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্যাটেজি’ প্রণয়নের মাধ্যমে দেশের মেরিটাইম সেক্টরে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা। জাইকার প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নে উপদেষ্টার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ জাপানের অকৃত্রিম বন্ধু। জাপান সব সময় বাংলাদেশের জনগণের পাশে রয়েছে।’ ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন জাইকার প্রতিনিধি দল। বৈঠকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের অগ্রগতি পর্যালোচনাপূর্বক বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। ২০৩০ সালের মধ্যেই মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে বলে বৈঠকে আশা প্রকাশ করা হয়। বৈঠকে জাইকা বাংলাদেশের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইসিগুসি টমোহাইডের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এলএনজি আমদানি: মার্কিন কোম্পানির সাথে চুক্তি, জানে না ক্রেতা প্রতিষ্ঠান
বছরে ৫০ লাখ টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করতে মার্কিন কোম্পানি আর্জেন্ট এলএনজির সাথে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) করা চুক্তিকে ‘চুক্তি নয়’ ‘প্রাথমিক ধাপ’ বলে মনে করছে জ্বালানি বিভাগ। বিডার এই চুক্তির ফলে জ্বালানি বিভাগের কোনো বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়নি বলেও মনে করছেন জ্বালানি বিভাগের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এদিকে, চুক্তির বিষয়ে দেশে এলএনজির একক ক্রেতা পেট্রোবাংলা ও রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল) কিছুই জানে না। সংস্থা দুটির সংশ্লিষ্ট একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছেন, বিডার চেয়ারম্যানের করা চুক্তি সম্পর্কে তারা অবহিত নয়। গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর তারা জেনেছেন। তবে জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিডা থেকে তাদের জানানো হয়েছে, এ ধরনের একটি চুক্তি হতে পারে, নাও পারে। তবে দেশের জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘এ ধরনের চুক্তি থেকে বিরত থাকাই ভালো। কারণ, দেশে এলএনজি ক্রয়ের কোনো বেঞ্চমার্ক নেই। তার পরও চুক্তি করা হলে তো বিগত সরকারের মতোই হয়ে গেল। স্বচ্ছতা থাকল না। সবকিছুতে স্বচ্ছতা আনা উচিত।’ এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘এটা নন-বাইন্ডিং একটা চুক্তি। এটা চুক্তি না, চুক্তির একটি প্রাথমিক ধাপ। এতে করে আমাদের কোনো অবলিগেশন্স ক্রিয়েট (বাধ্যবাধকতা তৈরি) হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘মার্কিন এ কোম্পানিটি গ্যাস এক্সপ্লোর করবে, তারপর এলএনজি আকারে সরবরাহ করবে। এটা সময়ের ব্যাপার।’ মার্কিন কোম্পানি আর্জেন্ট এলএনজির সঙ্গে করা চুক্তি বিষয়ে বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, ‘বাংলাদেশ সরকার আজ ট্রাম্পের নতুন এনার্জি এক্সপোর্ট ম্যান্ডেটের ওপর ভিত্তি করে একটা ল্যান্ডমার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট সাইন করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর আমরাই প্রথম দেশ কোনো ডিল সাইন করলাম। ট্রাম্পের ইলেকশন প্রমিজের মধ্যে ‘ড্রিল, বেবি ড্রিল’ এই স্লোগানটা বেশ পপুলার ছিল। সেটা এই এনার্জি এক্সপোর্টকে ঘিরেই। আমাদের দেশে গ্যাসের বিশাল সংকট। ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ, কর্মসংস্থান ইত্যাদির জন্য আমাদের লং টার্ম গ্যাস সাপ্লাই সলিউশন বের করতেই হবে। মিডল ইস্টের বাইরে আমেরিকা একটা ইন্টারেস্টিং অলটারনেটিভ। কিন্তু, এই সাইনিংয়ের গুরুত্ব অন্য জায়গায়। ইকোনমিক ডিপ্লোমেসির অ্যাঙ্গেল থেকে। ট্রাম্প সরকারের স্টাইল খুবই ডিফারেন্ট। তারা জাত ব্যবসায়ী। আঁতেল টাইপের কথাবার্তায় নেই। স্ট্রেইট অ্যাকশন দেখতে চায়। লুইজিয়ানার সিনেটর বিল ক্যাসিডি সাইনিংয়ের কথা শুনে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরল! আগামী বছরগুলোতে আমরা যখনই বিভিন্ন ইস্যুতে ট্রাম্প এডমিনিস্ট্রেশনের কাছে যাবো, আমরা বলতে পারব যে, বাংলাদেশ কিন্তু তার প্রথম পার্টনার ছিল। তার আমেরিকা ফার্স্ট এর সঙ্গে আমাদের বাংলাদেশ ফার্স্ট। আর আমাদের জন্য বাংলাদেশের ইন্টারেস্ট ফার্স্ট!’ বিষয়টি নিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দেশে বছরে ৫০ লাখ টন তরলীকৃত গ্যাস সরবরাহ করবে মার্কিন কোম্পানি আর্জেন্ট এলএনজি। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বড় ধরনের একটি নন-বাইন্ডিং চুক্তির আওতায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি পেট্রোবাংলার কাছে এ গ্যাস সরবরাহ করবে প্রতিষ্ঠানটি।’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আর্জেন্ট এলএনজি বছরে আড়াই কোটি টন এলএনজি সরবরাহের সক্ষমতার একটি অবকাঠামো গড়ে তুলছে লুইজিয়ানার পোর্ট ফোরচনে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সেখান থেকে পেট্রোবাংলার কাছে চুক্তি অনুযায়ী এলএনজি বিক্রি করতে পারবে।’ এ ব্যাপারে আশিক চৌধুরী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ‘এই চুক্তি শুধু বাংলাদেশের শিল্পে ক্রমবর্ধমান নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহই নিশ্চিত করবে না, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের কৌশলগত অংশীদারত্বকেও শক্তিশালী করবে।’ তবে বিষয়টি সম্পর্কে জানে না পেট্রোবাংলা ও আরপিজিসিএল। এই দুটি সংস্থার তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।’ তারা বলেন, ‘এলএনজির কোনো চুক্তি করতে হলে পণ্যটির একক ক্রেতার মতামত অবশ্যই নিতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া, সরকার পর্যায়ে চুক্তি করতে হলে উভয় পক্ষে সরকারি প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে। সরকার কখনো অন্য দেশের বেসরকারি কোনো কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে পারে না। কোনো কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে হলে, উভয় দেশের কোম্পানি পর্যায়ে চুক্তি হতে হবে। এখানে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিডা কীভাবে মাকিন বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এটা সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরাই বলতে পারবে।’ তবে জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, বিডা থেকে জানানো হয়েছিল এ ধরনের কোনো চুক্তি হতে পারে, আবার নাও পারে। তবে বিস্তারিত জানানো হয়নি। এ বিষয়ে জ্বালানি ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে সরকারকে বিরত থাকাই উচিত। যারা কিনবে তারা জানে না, অথচ চুক্তি হলো।’ তিনি বলেন, ‘দেশে এলএনজি কেনার কোনো বেঞ্চমার্ক নেই। তাই, কার থেকে কোন দামে এলএনজি কেনা হবে- এগুলো স্বচ্ছ থাকা জরুরি।’

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের উপশাখা ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির উপশাখা ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন শনিবার (২৫ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকার শেরাটন হোটেলে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের বোর্ড অব ডাইরেক্টরসের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন। ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খান, মো. আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট একেএম মাহবুব মোরশেদ এবং স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মজনুজ্জামান। দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল লাইস মোহা. খালেদ। সম্মেলনে ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. মাহবুব আলম, মো. রফিকুল ইসলাম, ড. এম কামাল উদ্দীন জসীম ও মো. মাকসুদুর রহমানসহ ২৬৫টি উপ-শাখার ইনচার্জ এবং প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ব্যবসায়ীরা গণতান্ত্রিক সরকার চায়: বিসিআই
অর্থনীতির ক্ষেত্রে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও ব্যবসায়-বাণিজ্যে স্বস্তি না ফেরার বিষয়টি তুলে ধরে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) বলেছে, ‘দেশের ব্যবসায়ীরা গণতান্ত্রিক সরকার চায়।’ তাই ‘যত দ্রুত সম্ভব’ অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় চলে যাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটির সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ঢাকা উত্তর সিটির তেজগাঁওয়ে বিসিআইয়ের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, যত শর্ট টার্ম হোক, যত কুইক হোক, অন্তবর্তী সরকারের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় চলে যাওয়া উচিত।’ ‘তাতে সবার মধ্যে একটা স্বস্তি আসবে। ব্যবসায়ীরা গণতান্ত্রিক সরকার চায়।’ সংবাদ সম্মেলনে বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো অর্থনীতি নিয়ে চিন্তিত নয়। তারা একে অপরকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করলেও অর্থনীতি নিয়ে কিছু বলছেন না।’’ পোশাক খাতে জেনারেলাইজড স্কিম অফ প্রিফারেন্সেস (জিএসপি) ফিরে পেতে সরকার শ্রম আইন বাস্তবায়ন করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আইএমএফের প্রেসক্রিপশন মেনে চলছে সরকার, এতে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ ‘প্রয়োজনীয় সংস্কার’ করে বাকিটা বাস্তবায়নে অন্তবর্তী সরকার পথনকশা করে দিতে পারে বলে মনে করেন বিসিআইয়ের সভাপতি। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনমূলক নীতি নিয়েছে; তারল্য সরবরাহ কমিয়েছে।’ ‘কিন্তু আইএমএফের প্রেসক্রিপশন নিয়ে কিছু জায়গায় প্রস্তুতি নিতে পারি; কমপ্ল্যায়েন্স পূরণ করার জন্য অনেক জায়গায় কাজ করতে পারি। আইএমএফের প্রেসক্রিপশন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে গেলে আমাদের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে।’’ আনোয়ারুল আলম বলেন, ‘সরকার এক দিকে সুদহার বাড়িয়ে রেখেছে, অন্যদিকে আছে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি। এতে ব্যাংকের ঋণ বিতরণ কমবে।’ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে উত্তরণের কথা আছে বাংলাদেশের। তবে, এই সময়সীমা ২০২৯ সাল পর্যন্ত পেছানো দরকার বলে নিজের পর্যবেক্ষণ দেন তিনি। বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, ‘গত (আওয়ামী লীগ) সরকার বাহবা নেওয়ার জন্য ফোলানো-ফাঁপানো অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান দিয়ে উত্তরণের পথে হেঁটেছিল। আমরা ব্যবসায়ীরা মনে করছি, এই সময়সীমা পেছানো না হলে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধস নামবে।’ বিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি প্রীতি চক্রবর্তী, পরিচালক শহিদুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, এসএম শাহ আলম, জিয়া হায়দার, জাহাঙ্গীর আলম ও খায়ের মিয়া সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

ন্যাশনাল ব্যাংকের রাজশাহীর আঞ্চলিক ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের আঞ্চলিক ব্যবসায়িক সম্মেলন (রাজশাহী) অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বগুড়ার হোটেল ক্যাসেল সোয়াদের কনফারেন্স রুমে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) শেখ আকতার উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উপ-ব্যবস্থপনা পরিচালক ইমরান আহমেদ, রাজশাহী অঞ্চলের ব্যবস্থাপক ও ভিপি মো. রেজুয়ানুল হক, রাজশাহী অঞ্চলের ২৮টি শাখার শাখা ব্যবস্থাপক, অপারেশন্স ম্যানেজারবৃন্দ ও উপশাখার ব্যবস্থাপকরা অংশ নেন। সম্মেলনে আবদুল আউয়াল মিন্টু ন্যাশনাল ব্যাংককে তার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সব স্তরের কর্মীকে নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি শ্রেণীকৃত ঋণ আদায় ও আমানত সংগ্রহে জোর দেন। বিশেষ করে ঋণ আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করার জন্য আবদুল আউয়াল মিন্টু কর্মীদের নির্দেশনা দেন। অন্যদিকে, শেখ আকতার উদ্দীন আহমেদ ২০২৫ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, ব্যবসায় সম্প্রসারণ, গ্রাহক সেবার মানোন্নয়ন ও শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ের মাধ্যমে ব্যাংকের ধারাবাহিক উন্নয়নের জন্য পরিকল্পিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। উল্লেখ্য, সম্মেলনের পূর্বে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ একটি বিশেষ মতবিনিময় সভায় ব্যাংকের গ্রাহকদের সাথে আলোচনা করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে নেই কর্মচাঞ্চল্য, বেকার অনেক শ্রমিক
পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটানের পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। নেই চিরচেনা কোলাহল; বিরাজ করছে ভুতুড়ে পরিবেশ। বিপাকে আছেন ব্যবসায়ীরা। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অনেক শ্রমিক। রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। চিরচেনা হাঁকডাক, হৈচৈ, ট্রাকের হর্ন কিছুই নেই। বন্দর চত্বর জুড়ে নীরবতা। যেন এক ভুতুড়ে পরিবেশ। গত দুই মাস ধরে ভারত ও জানুয়ারিতে ভুটান থেকে পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় বাংলাবান্ধা বন্দরে নেই আগের কর্মযজ্ঞ।২০২৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এই স্থলবন্দর দিয়ে ৩৩ হাজার ৪১১টি পণ্যবাহী ট্রাকে পাথরসহ ৯ লাখ ১১ হাজার ৬৫ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে। ভুটান থেকে আমদানি করা পাথরের ট্রাকগুলোর স্লট বুকিং ইস্যুতে, ভারতের ফুলবাড়ী বন্দরে চলছে ট্রাক চালকদের আন্দোলন। এতে ৪ জানুয়ারি থেকে ভুটানের পাথর আমদানি বন্ধ।অন্যদিকে, বাড়তি ট্রাকভাড়া ও পাথরের মান কমে যাওয়ায়, নভেম্বর থেকে ভারতের পাথর আমদানি বন্ধ। যদিও রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে কয়েকটি পাথর বোঝাই ট্রাক এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে বন্দরে নেই আগের কর্মচাঞ্চল্য। কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক শ্রমিক। তারা বলেন, ‘কাজ না থাকায় আয়ও নেই। এতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকলেও ভারত ও ভুটানের অভ্যন্তরীণ জটিলতায় পাথর আমদানি হচ্ছে না। এতে কমেছে রাজস্ব আয়।’ বাংলাবান্ধা ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ভারত ও ভুটানের অভ্যন্তরীণ জটিলতায় পাথর আমদানি কম হওয়ায় রাজস্ব আয় কমে গেছে।’স্থলবন্দরটিতে দিয়ে ভারত ও ভুটানের পাশাপাশি নেপালের সঙ্গেও আমদানি-রফতানির সুবিধা আছে। পাথরের ছাড়াও আমদানি হয় চাল, ডালের মত নিত্যপণ্য।

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন-২০২৫ রাজধানীর প্যান প্যাসিফিকসোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান খাজা শাহরিয়ার শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও ফরমান আর চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সভায় পর্ষদের পরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদু, মো. শাহীন উল ইসলাম, এম আবু ইউসুফ ও মোহাম্মদ আশরাফুল হাছান উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাফাত উল্লা খান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাদিম, মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. ফজলুর রহমান চৌধুরী, মো. আসাদুজ্জামান ভূঁঞা, মো. আমিনুল ইসলাম ভূঁঞা, মোহাম্মদ হোসেন, কাজী মাহমুদ করিম, এসএম আবু জাফর, ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীগণ, জোনাল হেডগণ ও২২৬টি শাখার ব্যবস্থাপক অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে ব্যাংকের সার্বিক ব্যবসায় পরিস্থিতি নিয়ে পরিচালক পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ শাখা ব্যবস্থাপকবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাজা শাহরিয়ার বলেন, ‘গ্রাহকের আস্থা ও বিশ্বাসের কারণেই আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক দেশের অন্যতম সেরা ব্যাংক। ব্যাংকের আধুনিকায়ন, কর্মক্ষতা বৃদ্ধি, ব্রান্ডিং, ডিজিটাল ইনোভেশন ও অটোমেশন এবং নতুন নতুন প্রোডাক্টের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা আমরা গ্রাহকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সচেষ্ট। সুশাসন, জবাবদিহিতা ও দায়িত্ববোধকে আরো সুসংহত করে আমরা টেকসইউন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে চাই।’ তিনি ব্যাংকের খেলাপি বিনিয়োগ আদায় ও কমিয়ে আনতে শাখা ব্যবস্থাপকরে বিশেষ নির্শেনা দেন। ফরমান আর চৌধুরী শাখা ব্যবস্থাপকগণকে ব্যবসায়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে টার্গেট অর্জনের প্রতি আরও মনোযোগী হওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘আমানত ও মান সম্পন্ন বিনিয়োগ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।’ ফরমান আর চৌধুরী গ্রাহক সেবায় শাখাগুলোকে আরও আন্তরিক হওয়ার মাধ্যমে উন্নত ও দ্রুত সেবা প্রদানের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। ‘আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে গ্রাহকদের সর্বাধুনিক ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে।’ উল্লেখ্য, অনিরীক্ষিত তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সাল শেষে ব্যাংকের মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ৭৩৫কোটি টাকা। এ সময় আমদানি ও রপ্তানির পরিমান ছিলো যথাক্রমে ৩৪ হাজার ৩৮২ কোটি এবং ২৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। এ সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৯ হাজার ১৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশের সাথে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম এলএনজি রপ্তানি চুক্তি
বাংলাদেশ সরকারের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক সই করেছে আর্জেন্ট এলএনজি নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতি বছর ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করবে। সংবাদ রয়টার্সের। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। লুইজিয়ানাভিত্তিক মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর ২৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন এলএনজি উৎপাদনের একটি প্রকল্প পরিচালনা করছে। এই চুক্তি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বড় এলএনজি সরবরাহ চুক্তি, যা ট্রাম্প প্রশাসনের জ্বালানি শিল্প সহায়ক নীতির প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের এলএনজি রপ্তানি বাড়াতে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, বিশেষ করে এমন দেশগুলোতে, যেগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মুক্তবাণিজ্য চুক্তি নেই। এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম এলএনজি রপ্তানিকারক হয়ে উঠেছে এবং ২০২৮ সালের মধ্যে তাদের রপ্তানি ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। লুইজিয়ানার পোর্ট ফোরশনে আর্জেন্ট এলএনজি প্রকল্পটি যদি ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন হয়, তবে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা এই এলএনজি আমদানি করবে। বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, ‘এই চুক্তি শুধু বাংলাদেশের শিল্প খাতের জন্য নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহই নিশ্চিত করবে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করবে।’ বাংলাদেশ বর্তমানে তার দীর্ঘমেয়াদী জ্বালানি চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছে এবং এলএনজির ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে তাদের বাজার মূল্য-সংবেদনশীল যার কারণে ২০২২ সালে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর সময় এলএনজির দাম বেড়ে গেলে বাংলাদেশ সস্তা কয়লার দিকে ঝুঁকেছিল। মার্কিন প্রতিষ্ঠান আর্জেন্ট এলএনজির সঙ্গে এই চুক্তি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ছুটির দিনে জমজমাট বাণিজ্য মেলা
সপ্তাহের বাকি ছয় দিন ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এখানে আসা হয় না। আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সকালে উঠেই নাশতা সেরে চলে এসেছি। থাকবো সন্ধ্যা পর্যন্ত। কিনবো প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসও। কথাগুলো বলছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কানিজ ফাতিমা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে মালিবাগ থেকে বাণিজ্য মেলায় এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী রায়হান রহমান। তিনি বলেন, অফিসের কাজে সারা সপ্তাহ ব্যস্ত থাকতে হয়। সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে সেভাবে সময় দেওয়া হয় না। তাই ভাবলাম আজ যেহেতু শুক্রবার, তাকে নিয়ে একটু বের হই। সে কারণেই মেলায় আসা। এখন বিভিন্ন স্টল ঘুরে পরিবারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পাশাপাশি তার জন্য কয়েকটা শাড়ি-থ্রিপিসও কিনবো। স্কুলশিক্ষক নাজমুল হাসান। শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে কামরাঙ্গীরচর থেকে তিনি এসেছেন ৯ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে। তিনি বলেন, সারা সপ্তাহ কাজের অন্ত থাকে না। এমনও হয় কোনো কোনো দিন স্কুল থেকে বাসায় ফিরেও কাজ করতে হয়। পরিবার-পরিজনদেরকে সে অর্থে সময় দেওয়া হয় না। এদিকে মেয়েও অনেকদিন ধরে বায়না করছে, বাবা আমাকে মেলায় নিয়ে যাও। অবশেষে আজ সেই সুযোগ হলো। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ভোরেই বাপ-বেটি উঠে চলে এসেছি। এখন আমরা সারাদিন ঘুরবো, খাওয়া-দাওয়া করবো, আর দিনশেষে কেনাকেটা করে ঘরে ফিরবো। মেলা ঘুরে দেখা গেছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় গৃহস্থালি সামগ্রী, শীতের পোশাক ও খাবারের স্টলে। কারণ, এসব স্টলে চলছে হরেক রকমের অফার। কর্মীরাও হাঁক-ডাকে তুলে ধরছেন নিজেদের পণ্যের কথা। এর বাইরে নারীদের প্রসাধনী ও পোশাকের দোকানেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের উপস্থিতি বাড়ছে। এ সময় অনেককে সেলফিবন্দি করে মেলার স্মৃতি সংরক্ষণ করতে দেখা যায়। কেনাবেচা কেমন হচ্ছে জানতে একাধিক বিক্রেতার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় আজ মানুষের ঢল নেমেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বিক্রিও। তবে সময় যত গড়াবে, আরও জমজমাট হবে বেচাবিক্রি। প্রসঙ্গত, এবারের মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩৬২টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫১টিই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের স্টল-প্যাভিলিয়ন। বাকি ১১টি স্টল ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া—এই ৭ দেশের। মাসব্যাপী এ মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন খোলা থাকবে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা এবং ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা তাদের কার্ড দেখিয়ে বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।

সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরলেও অস্বস্তি চাল-মুরগির দামে
শীতকালীন শাক-সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ বজায় থাকায় এখন অনেকটাই স্থিতিশীল সবজির বাজার। সঙ্গে ডিম-মাছ-মাংসের বাজারেও দাম বাড়েনি নতুন করে। এরপরও সাপ্তাহিক বাজার উপভোগ্য হয়ে উঠতে পারছে না ক্রেতা সাধারণের কাছে; চড়া দামে কিনতে হচ্ছে চাল আর মুরগি। আসন্ন রমজানে দাম আরও বৃদ্ধির আশঙ্কায় কপালে ভাঁজ পড়ছে অনেকের। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। বিক্রেতারা বলছেন, কয়েক মাস ধরেই চালের বাজার চড়া। আমনের ভরা মৌসুমের পাশাপাশি শুল্ক কমানো ও আমদানিসহ কয়েকটি উদ্যোগ নিলেও কোনো কাজে আসছে না। মানভেদে বিভিন্ন ধরনের চালের কেজিতে ৫-৬ টাকা বেড়েছে। মধ্যবিত্তের চালখ্যাত সরু বা মিনিকেট চাল মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকায়। গরিবের মোটা বা গুটি স্বর্ণা জাতের চালও কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকায়। এ ছাড়া নাজিরশাইল জাতের চালের খুচরামূল্য মানভেদে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। মাঝারি বা ব্রি-২৮ ও পায়জাম জাতের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৬ টাকায়। মোটাদাগে বাজারে ৬০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো চালই। এদিকে চালের মতো কয়েক সপ্তাহ ধরে মুরগির বাজার ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে সোনালি জাতের মুরগির দামও। এ জাতের মুরগির কিনতে হলে এখন কেজিপ্রতি খরচ পড়ছে ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা; যা আগে ৩০০-৩২০ টাকা ছিল। তবে স্বস্তির খবর, বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বড় বাজারে ফার্মের প্রতি ডজন ডিম পাওয়া যাচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। পাড়া মহল্লার দোকানে তা মিলছে ১৪০-১৪৫ টাকা। অন্যদিকে বাজারে গত কয়েক মাস ধরে অস্বস্তি ছড়ানো আলুর দাম এখন ২০-২৫ টাকার মধ্যে চলে এসেছে। পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ৪০-৫০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া প্রতিকেজি বেগুন ৪০ থেকে ৫০, শিম ৩০ থেকে ৫০, কাঁচা পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, শসা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, করল্লা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মুলা ১৫ থেকে ২০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বর্তমানে। প্রতি পিস ফুল ও বাঁধাকপি মানভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা এবং লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। মুদি বাজারেও দামের তেমন হেরফের দেখা যাচ্ছে না। প্রতিকেজি আমদানি করা মসুর ডাল ১০৫ থেকে ১১০ ও দেশি চিকন মসুর ডাল ১৩০ থেকে ১৩৫ থেকে টাকা, মুগডাল ১৬৫ থেকে ১৭০ ও ছোলার কেজি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশে নতুন বন্দর নির্মাণ করতে চায় ডিপি ওয়ার্ল্ড ও মায়ারস্ক
পৃথিবীর দুই শীর্ষ স্থানীয় বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং এপি মুলার-মায়ারস্ক বাংলাদেশের শিপিং শিল্পে বড় বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা বঙ্গোপসাগরের উপকূলে নতুন বন্দর নির্মাণ ও বাংলাদেশকে একটি বৈশ্বিক রপ্তানি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করতে চায়। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম সামিট চলাকালে ডিপি ওয়ার্ল্ডের গ্রুপ চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী সুলতান আহমেদ বিন সুলায়েম এবং এপি মুলার-মায়ারস্কের চেয়ার রবার্ট মায়ারস্ক উগলা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং এ প্রস্তাব দেন। সুলতান আহমেদ বিন সুলায়েম জানান, তারা চট্টগ্রাম বন্দরের কনজেশন কমাতে এবং দূষণ হ্রাসের মাধ্যমে এর কার্যকারিতা বাড়াতে নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ করতে চান। সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক এই লজিস্টিক কোম্পানির সিইও জোর দিয়ে বলেন, ‘নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ বাংলাদেশকে আরও বেশি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এবং দূষণ কমাতে সহায়তা করবে। ডিপি ওয়ার্ল্ডের সিইও উল্লেখ করেন, তারা ২০২২ সালেও বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। তবে, তখনকার সরকার তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে একটি ডিজিটাল অনলাইন কাস্টমস প্রক্রিয়া চালু করতে চান, যা দুর্নীতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, ‘তারা বাংলাদেশে ইনলাইন কনটেইনার ডিপোতেও বিনিয়োগ করতে চান।’ প্রধান উপদেষ্টা সুলতান আহমেদ বিন সুলায়েমকে জানান, বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বন্দরকে আরও দক্ষ করতে চায় এবং বঙ্গোপসাগরের উপকূলে আরও বন্দর নির্মাণ করতে চায়। ‘আমাদের এটা করতে হবে। কারণ, আমাদের ভবিষ্যৎ চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। আমরা অঞ্চলটিকে বৃহত্তম বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’ প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যকারিতা বাড়াতে চায়। কারণ, দেশটি মনে করে এটি উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো নেপাল ও ভুটানের মতো দেশের কনটেইনার পরিচালনার জন্য একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হতে পারে।’ ‘আমাদের দ্রুত কাজ করতে হবে কারণ সময়েরও একটা মূল্য রয়েছে।’ ডেনমার্কভিত্তিক এপি মুলার মায়ারস্ক চেয়ার রবার্ট মায়ারস্ক উগলা জানান, তারা চট্টগ্রাম বন্দরের কাছাকাছি লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ করতে চান এবং তাদের কারিগরি সহায়তায় এটিকে একটি সবুজ বন্দর হিসেবে রূপান্তরিত করতে চান। রবার্ট মায়ারস্ক উগলা বলেন, ‘তারা মরক্কো এবং ওমানেও একই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। তাদের বিনিয়োগের মাধ্যমে ওমানের সালালাহ বন্দর বিশ্বের সেরা বন্দরের একটি হয়ে উঠেছে বলে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান উগলা।’ প্রধান উপদেষ্টা ডিপি ওয়ার্ল্ড ও এপি মুলার-মায়ারস্কের কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে ঢাকায় আসার আমন্ত্রণ জানান। ‘আমাদের বঙ্গোপসাগরের উপকূলে একাধিক বন্দর নির্মাণ করতে হবে, যেন আমরা একটি আঞ্চলিক ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে আমাদের সম্পূর্ণ সম্ভাবনা ব্যবহার করতে পারি,’ বলেন প্রধান উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশি বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানান।

২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামল রিজার্ভ
দেশে ডলারের সংকট এখনো কাটেনি। ফলে, বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ফের দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচে নেমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ‘বুধবার (২২ জানুয়ারি) দেশের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ২৫ দশমিক ২২১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ গণনার মান অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে অর্থাৎ ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার।’ প্রাপ্ত তথ্যমতে, ১৫ জানুয়ারি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ১৩ কোটি ডলার। ওই দিন মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫১৮ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত ৬ দিনে বিপিএম-৬ মান অনুযায়ী রিজার্ভ কমেছে ২০ কোটি ডলার। এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা প্রকাশ করা হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি আছে। প্রতি মাসে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৪ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামে। সে সময় বৈদেশিক ঋণ ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কেনার মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানো হয়। আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন গভর্নর এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে। আবার বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার জোগানের চেষ্টা করছে। তবে আগের দায় পরিশোধ করতে গিয়ে রিজার্ভ কিছুটা কমেছে। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুতে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ ছিল ২১ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়। তবে, এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, তা হলো ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ। এ তথ্য আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।

পৃথিবীর শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করেছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশের উন্নত বিনিয়োগ পরিবেশে আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত।’ সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি বিনিয়োগকারী কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম পরে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ইউনূসকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় বলছি, বাংলাদেশ বড় আকারে বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’ শফিকুল আলম বলেন, ‘সম্মেলনের ফাঁকে ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা একাধিক সরকার ও রাষ্ট্র প্রধান এবং বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন কোম্পানির নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের বিনিয়োগ উপযোগী পরিবেশের কথা তুলে ধরে বিনিয়োগ করার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’ ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, চীনসহ বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলছেন এবং আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন যে বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত।’ প্রেস সচিব বলেন, ‘বিপুলসংখ্যক তরুণ জনগোষ্ঠীর কারণে বাংলাদেশ যে একটি রপ্তানি কেন্দ্র হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রাখে, সে বিষয়টিও প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন বৈঠকে তুলে ধরছেন।’ এদিকে, আমিরাতভিত্তিক বন্দর পরিচালনাকারী কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের গ্রুপ চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুলতান আহমেদ বিন সুলাইম বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর জানান। ফেইসবুকের মূল কোম্পানি মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগও বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। গত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ডাভোসে পৌঁছানোর পর প্রধান উপদেষ্টা ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে’ তার তৃতীয় ব্যস্ত দিন পার করছেন।

২০২৪-২৫ অর্থবছর: ছয় মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৫৮ হাজার কোটি টাকা
ডিসেম্বরেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাজস্ব আদায় করতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায় কমেছে শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা। দেশ পরিচালনায় খরচ মেটাতে চলতি অর্থবছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা সাজিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে আন্দোলন, সংঘাত, ক্ষমতার পালাবদলের কারণে তৈরি হওয়া অস্থিরতার মাঝেই মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করছে সরকার।এমন প্রেক্ষাপটে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আয় করতে পারছে না এনবিআর। সংস্থাটির হালনাগাদ পরিসংখ্যান বলছে, ‘চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর এই ছয় মাসে, রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা কম। বছর ব্যবধানে কমেছে শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ।’তবে ডিসেম্বরে গত বছরের তুলনায় মোট রাজস্ব আদায় বাড়লেও পূরণ হয়নি লক্ষ্যমাত্রা। ডিসেম্বরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৯ হাজার ৬৩২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ হাজার ৬৮৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা কম।চলতি অর্থবছরের কোনো মাসেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি এনবিআর। জুলাই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ২৫ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ২০ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা। জুলাইয়ে রাজস্ব আদায় কমেছে ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।পরের মাস আগস্টেও একই অবস্থা দেখা গেছে। ওই মাসে ৩১ হাজার ৬০৭ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ রাজস্ব আদায় কমেছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।গত সেপ্টেম্বর মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৩৯ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ২৯ হাজার ২ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায় কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি।আর অক্টোবর মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৩৫ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ২৭ হাজার ৭২ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায় কমেছে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি।এছাড়া, নভেম্বর মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৩৬ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ২৫ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায় কমেছে সাড়ে ২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার বেশি।

জুলাইয়ের পর বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৭১ শতাংশ
জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে বিদেশি বিনিয়োগেও। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭১ শতাংশ কমেছে। যা গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বিনিয়োগ কমার পেছনে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাকে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই দেশজুড়ে ছিল রাজনৈতিক অস্থিরতা। আওয়ামী লীগ সরকার পতন হলে তৈরি হয় নতুন পরিস্থিতি। এরপরও কাটেনি অস্থিরতা, নানা দাবিতেই বিভিন্ন সংগঠন বারবারই পথে নেমেছে। সব মিলিয়ে অর্থনৈতিক কাঠামো ঝুঁকিতে পড়ে। যার প্রভাব পড়েছে বিদেশি বিনিয়োগেও। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশে মোট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে এক বিলিয়ন ডলারের কম। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে বিদেশ থেকে সরাসরি বিনিয়োগ এসেছে ৯৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আর এ সময় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৮৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার নিয়ে গেছেন। এতে নিট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বছরের ব্যবধানে বিনিয়োগ কমেছে ২৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ৭১ শতাংশ। এমন সময় বিদেশি বিনিয়োগে খরার তথ্যটি সামনে এসেছে যখন বিনিয়োগ টানতে বিডা হিটম্যাপ ঘোষণা করেছে। তবে, সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘দেশে আগেও ব্যবসায়-বাণিজ্যের পরিবেশ খুব একটা অনুকূলে ছিল না। বিনিয়োগ আকর্ষণে অনেক অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হলেও সেগুলো ব্যর্থ হয়েছে।’ ফরেন ইনভেস্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি জাভেদ আখতার বলেন, ‘আমাদের ১০০টা প্রয়োজন নেই। আমরা তিনটা ভালো ইকোনমিক জোন যদি করতে পারি, দেশের বিভিন্ন ভাগে, তাহলেই কিন্তু অনেক উন্নতি হবে। ঠিক মতো ফ্যাসিলিটি দিয়ে যেখানে পানি, গ্যাস, বিদ্যুতের সংযোগ আছে, সেটা যদি করতে পারি তার মাধ্যমেই কিন্তু বিনিয়োগ আসবে।’ চলতি অর্থবছর প্রথম প্রান্তিকে সর্বোচ্চ এফডিআই এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে ৬২ দশমিক ২০ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৬১ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন ও চীন থেকে বিনিয়োগ এসেছে ৫৫ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার । সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ এসেছে তৈরি পোশাক খাতে।

ফ্লোরিডায় ২৬-২৭ এপ্রিল পঞ্চম ওয়ার্ল্ড ফেয়ার অ্যান্ড ফেস্ট ট্যাম্পা বে
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ট্যাম্পা হাইটস ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারে ‘পঞ্চম ওয়ার্ল্ড ফেয়ার অ্যান্ড ফেস্ট ট্যাম্পা বে ২০২৫’ আগামী ২৬-২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দিয়েছে আয়োজকরা। এসোসিয়েশন অব ওয়ার্ল্ড ফেয়ার অ্যান্ড ফেস্ট ইউএসএ আইএনসি এ ইভেন্টটির আয়োজন করছে। সংগঠনটি প্রবাসী বাংলাদেশি ও বৈশ্বিক কমিউনিটির মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এই গ্লোবাল ইভেন্টের মূল উদ্দেশ্য হলো বৈশ্বিক সংস্কৃতির আদান-প্রদান, ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং ভ্রমণ ও বাণিজ্য খাতকে সহজতর ও সমৃদ্ধ করা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা ব্যবসায়িক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবেন। সংবাদ সম্মেলেনে বলা হয়, ‘ইভেন্টে প্রধান অতিথি থাকবেন ফ্লোরিডার স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ সুসান এল ভালডাস এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন প্রাক্তন স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ ডেইজি মোরাল। ইভেন্টে প্রায় ৩০টি দেশের প্রতিনিধি এবং স্থানীয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নেবেন। বাংলাদেশ থেকে এফবিসিসিআইয়ের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেবে এবং বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্ভাবনাকে তুলে ধরবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ কনসোলেট জেনারেল অব মিয়ামি ইভেন্টে ভিসা ও ভিসা-সংক্রান্ত সেবা দেবে।’ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইভেন্টে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা থাকবে বিশেষ আকর্ষণ। এবারের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে থাকছেন মোজেজা আশরাফ মোনালিসা। বিশেষ অতিথি থাকবেন অভিনেত্রী মৌসুমী। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেবেন প্রতিক হাসান, রেশমি মির্জা, শারমিন সিরাজসহ আরও অনেকে। ‘অংশগ্রহণকারীদের জন্য দৃষ্টিনন্দন ডিনার ক্রুজের আয়োজন করা হয়েছে। ইভেন্টের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে আরটিভি ও বায়ান্ন টিভি এবং ট্যুর পার্টনার হিসেবে থাকবে হ্যাভেন ট্যুরস অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড।’ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জয়েন্ট কনভেনার মোক্তার আহমেদ, এসোসিয়েশন অব ওয়ার্ল্ড ফেয়ার অ্যান্ড ফেস্ট ইউএসএ আইএনসির ডিরেক্টর আতিকুর রহমান, হ্যাভেন ট্যুরস অ্যান্ড রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা মোস্তফা, প্রোমোশন অফিসার আহসান ভাবনা, এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি জাকির হোসেন নয়ন, সাইদুল করিম চৌধুরী, জাকির হোসেন, ব্যবসায়ী আবুল হোসেন ও সাউদুল করিম। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংস্কৃতি, ব্যবসায় ও ভ্রমণ-বাণিজ্যে নতুন দ্বার উন্মোচনের জন্য আয়োজকরা সকলকে ইভেন্টে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

লে-অফ প্রত্যাহার ও এলসি খোলার অনুমতি চায় বেক্সিমকোর কর্মীরা
লে-অফ প্রত্যাহার করে বেক্সিমকোর গার্মেন্টস ডিভিশনের সব কারখানা খুলে দেয়ার পাশাপাশি রপ্তানি বাণিজ্য শুরুর ও বিদেশিদের কার্যাদেশ প্রাপ্তির সুবিধার্থে ব্যাংকিং কার্যক্রম ও ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার অনুমতি দেয়ার দাবি জানিয়েছে বেক্সিমকোর কর্মীরা। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বেক্সিমকো ফ্যাশন লিমিটেডের অ্যাডমিন বিভাগের প্রধান সৈয়াদ মো. এনাম উল্লাহ, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের অ্যাডমিন বিভাগের প্রধান আব্দুল কাইয়ুম বক্তব্য দেন। সংবাদ সম্মেলনে সৈয়াদ মো. এনাম উল্লাহ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের গার্মেন্টস ও এর সাথে সম্পর্কিত কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় ৪২ হাজার চাকুরীজীবিকে লে-অফের আওতায় জনতা ব্যাংকের ঋণ সুবিধায় জানুয়ারী- ২০২৫ পর্যন্ত বেতনাদি দেয়া হচ্ছে। সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই বিশাল জনবলকে আর কোন প্রকার আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হবে না। যার প্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারি-২০২৫ মাস থেকে ১৬টি কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাবে এবং এগুলোতে কর্মরত প্রায় ৪২ হাজার কর্মজীবী মানুষ চাকুরী হারাবে। সেই সাথে এই ইন্ড্রাষ্ট্রিয়াল পার্ককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা সব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, বাড়িওয়ালা, দোকানদার, অটো রিকসা চালক, স্কুল-মাদ্রাসা-কিন্ডার গার্ডেন বন্ধ হয়ে যাবে; যার সাথে পরোক্ষও প্রত্যেক্ষভাবে জড়িত আছে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের জীবন ও বেচে থাকার সব মৌলিক চাহিদা।’ তিনি আরো বলেন, ‘বেক্সিমকোর মত আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গ্রুপ বন্ধ হয়ে গেলে ৪২ হাজার কর্মজীবী মানুষ চাকুরী হারাবে। তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় ২ লাখ পরিবারের সদস্য এবং এই শিল্প ও কর্মজীবীদের কেন্দ্র করে গড়ে উঠা কর্মসংস্থানের আরো প্রায় ৮ লাখ মানুষের রিজিক বন্ধ হয়ে যাবে। এই ৪২ হাজার কর্মজীবী মানুষের মাঝে প্রায় ২ হাজার প্রতিবন্ধী, শতাধিক তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এবং ৫ হাজারের মত ষাটোর্ধ ব্যক্তি রয়েছেন, যাদেরকে আমরা পরম মমতায় আর যত্নে সমাজ ও পরিবারের বোঝা হওয়া থেকে রক্ষা করছি। সরকারের সিদ্ধান্তের যদি কোন পরিবর্তন না হয়, তাহলে এরা সবাই মানবেতর জীবনের দিকে এগিয়ে যাবে। সেই সাথে প্রায় ৪২ হাজারের নতুন বেকার এবং ব্যবসায়-বাড়িভাড়া বঞ্চিত লাখো মানুষ নৈরাজ্য আর অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে গিয়ে নতুন সংকট তৈরি করবে।’ সংবাদ সম্মেলন থেকে লে-অফ প্রত্যাহার করে ১৬টি বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলা হয়, ‘বেক্সিমকো শুধু বাংলাদেশে নয়, এশিয়া মহাদেশের একটি বড় ইন্ড্রাষ্ট্রিয়াল গ্রুপ এবং শুধু মাত্র বেক্সিমকো গার্মেন্টস ডিভিশনই আর্ন্তজাতিক বাজারে প্রতি মাসে প্রায় ৩০ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে প্রধান ভূমিকা পালন করতো। আজ সেই গার্মেন্টস ও সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলোকে বন্ধ করে রাখায়, ব্যাংকিং সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রাখায় সরকার ও জনগন সেই বিশাল বৈদেশিক মুদ্রা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যা আমাদেও জাতীয় আয় ও রিজার্ভ ঘাটতির অন্যতম কারণ।’ এনাম উল্লাহ বলেন, বর্তমান সময়ের উপযোগী মেশিনারিজ, প্রযুক্তি আর ৪২ হাজার দক্ষ জনবল নিয়ে তিল তিল করে গড়ে উঠা আজকের বেক্সিমকোর গার্মেন্টস শিল্প মরিচা ধরার অপেক্ষায় আছে। আমাদের মাসিক প্রায় ৪০-৫০ লাখ পিস গার্মেন্টস তৈরির সক্ষমতা, এশিয়ার বৃহত্তম ওয়াশিং প্লান্ট এবং অত্যাধুনিক মেশিনে সজ্জিত প্রিন্টিং, এমব্রয়ডারী ও এক্সেসসরিজ তৈরির কাখানা, টেক্সটাইল মিল ও দক্ষ জনবল সকল বায়ারদের প্রধান আকর্ষন। তিনি আরও বলেন, ‘কম্পোজিট গ্রুপ হওয়ায় শুধুমাত্র তুলা ও ক্যামিক্যাল ক্রয় ছাড়া গার্মেন্টস তৈরির অন্য কিছুই বাহির থেকে ক্রয় বা আমদানি করতে হয় না। এসব সুবিধা বেক্সিমকো ইন্ড্রাষ্ট্রিয়াল পার্কে বর্তমান থাকায় বায়াররা আমাদেরকে কার্যাদেশ দিতে সব সময় তৎপর থাকে। আমাদের করোনা মহামারী ও ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধকালীন বৈশ্বিক সঙ্কটের মাঝেও বেক্সিমকো গার্মেন্টস ডিভিশণ গার্মেন্টস রপ্তানিতে শীর্ষস্থানে ছিল। এই রকম একটি লাভজনক, সুবিধাজনক ও শ্রমঘন প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দিয়ে ১০ লাখ মানুষের মুখের আহার কেড়ে নিয়ে, জাতীয় প্রবৃদ্ধির ব্যাহত করে বর্তমান জননন্দিত সরকার কি সুবিধা লাভ করছেন, আমরা জানি না। তাই, সবিনয়ে অনুরোধ অবিলম্বে আমাদের কারখানাগুলোকে খুলে দিয়ে ৪২ হাজার শ্রমিক কর্মচারি ও ১০ লাখ মানুষের খেয়েপড়ে বেঁচে থকার ব্যবস্থাটুকু নিশ্চিত করা হোক।’ সংবাদ সম্মেলন থেকে বেক্সিমকোর ব্যাংকিং ও ব্যাক টু ব্যাক এলসি সুবিধা দেয়ার দাবি জানিয়ে বেক্সিমকোর এই কর্মী বলেন, ‘ব্যাংকিং ও এলসি সুবিধা ছাড়া দেশি-বিদেশি কোন ব্যবসায় বাণিজ্যই করা যায় না। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, ৬ মাস ধরে বেক্সিকোর গার্মেন্টস ডিভিশনের সব ব্যাংকিং ও এলসি সুবিধা বন্ধ রাখা হয়েছে। একদিকে কারখানা বন্ধ, উৎপাদন নেই অন্যদিকে দায়-দেনার পরিমাণ প্রচার করে তা পরিশোধের জন্য সব প্রকার চাপ অব্যহত আছে। সেই প্রেক্ষিতে বলতে হয়- আয় থেকে দায় শোধ-ব্যাংকিং ও ঋণ ব্যবস্থাপনার মূলমন্ত্র যদি হয়ে থাকে তাহলে বেক্সিমকো গ্রুপের সব দায়-দেনা নিয়মিত পরিশোধের জন্য এর বন্ধ রাখা প্রতিটি কারখানা খুলে দিয়ে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরুর করার কোন বিকল্প নেই।’ এনাম উল্লাহ বলেন, ‘প্রয়োজন আপনাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বন্ধ থাকা ব্যাক টু ব্যাক এলসি ওপেন করে দেয়া। কিন্তু সব কিছু বন্ধ করে দিয়ে দায় পরিশোধের চাপ সৃষ্টি শুধু অমানবিকই নয়, অন্যায্যও বটে। এই দায় বহন করার সক্ষমতা কোন সরকারের বা ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। কারখানা বন্ধ রাখার প্রক্রিয়া যতই প্রলম্বিত হবে বেক্সিমকোর দায়ও তাতে বাড়তে থাকবে। তাই, অবিলম্বে বায়ারদের কার্যাদেশ পাওয়ার সুবিধার্থে বেক্সিমকোর ব্যাংকিং সুবিধার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ব্যবস্থা নিয়ে উৎপাদন শুরু করার মাধ্যমে সব দায়-দেনা পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি।’ বকেয়া বেতন ও অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের কাছে শ্রমিকদের অর্জিত ছুটির ২ বছরের টাকা জমে গেছে এবং অফিসারদের ৪ মাসের বেতনের টাকা বকেয়া রয়ে গেছে। বর্তমান আর্থিক দূরাবস্থার ভেতর এই বকেযাগুলো পাওয়া গেলেও সন্তানদের স্কুল-কলেজে ভর্তির খরচটা মিটিয়ে ফেলা যেত। টাকার অভাবে সন্তানদের নতুন বছরে, নতুন ক্লাসে ভর্তি করানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘বেক্সিমকোর যে পরিমাণ ঋণ রয়েছে, তা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে আদায় করা সম্ভব না। এই ঋণ আদায় করতে হলে প্রতিষ্ঠান চালু রাখতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা বেশকিছু প্রস্তাবও দিয়েছি। এর মধ্যে একটি প্রস্তাব ছিলো ২৩ একর জমি বন্ধক রেখে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া। এই ঋণ চাওয়া হয় ৪ মাসের জন্য। এই ঋণ দেয়া হলে আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করে বকেয়া ঋণও পরিশোধ করতে পারবো। সেক্ষেত্রে বছরে ৪০০ কোটি টাকার মতো বকেয়া ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব, এ ধরনের একটি প্লানও আমরা দিয়েছি।’ আর এক প্রশ্নের উত্তরে এনাম উল্লহ বলেন, ‘আমরা মালিক বলতে এখন আমাদের এমডি ওসমান কায়সার চৌধুরীকে বুঝি। এমডি আছেন, রিসিভার আছেন। তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এমডি বেক্সিমকোর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের সঙ্গে আলোচন করেই সব ধরনের প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে।’

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, ভরি এক লাখ ৪১ হাজার ৪২৬
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আরেক দফা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৮৩ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪১ হাজার ৪২৬ টাকা নির্ধারণ করেছে সংস্থাটি। বুধবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। কাল বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৪১ হাজার ৪২৬ টাকা। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে, গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে। এর আগে সবশেষ গত ১৫ জানুয়ারি দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ১৫৫ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। এছাড়া, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছিল গত ১৬ জানুয়ারি থেকে। এ নিয়ে চলতি বছর দুই বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে দুই বারই। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার। স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

সিএসইর নতুন ট্রেডিং সময়সূচী প্রত্যাহারের দাবী ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের
সম্প্রতি চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই) তাদের ট্রেডিং সময়সূচীতে পরিবর্তন এনে ব্রোকারেজ হাউজে চিঠি দিয়েছে। নতুন সময়সূচী অনুযায়ী সিএসই আগামী রোববার (২৬ জানুয়ারি) থেকে তাদের ট্রেডিং সময়সূচী সকাল ১০টার পরিবর্তে সাড়ে ৯ টায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) পক্ষ থেকে সিএসর এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে বিদ্যমান সময়সূচী বহাল রাখার জোর দাবী জানিয়েছে। ডিবিএ বলছে, ‘কোন একটি দেশে একই টাইম জোনে একাধিক স্টক এক্সচেঞ্জে পৃথক ট্রেডিং সময়সুচী থাকার বিষয়টি নজিরবিহীন ও চিন্তাবহির্ভূত।’ ‘ডিএসই ও সিএসই উভয় এক্সচেঞ্জে একই সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয় হয়। প্রতিদিন একই সময়ে একই সাথে ট্রেডিং শুরু হওয়ার ফলে বিনিয়োগকারী উভয় এক্সচেঞ্জ যাচাই বাছাই করে প্রতিযোগীতামূলক উপযুক্ত দরে তাদের চাহিদা মাফিক শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে।’ডিবিএর দাবি, ‘ডিএসই অপেক্ষা সিএসই’র শেয়ার ভলিয়্যুম ৫ শতাংশের মত। ট্রেডিং কার্যক্রম ও ভলিয়্যুমের দিক থেকে সিএসই’র অবস্থান বিবেচনা করলে ভলিয়্যুমের স্বল্পতা এবং সব ব্রোকারের অংশগ্রহণ সীমিত হওয়ার কারণে প্রারম্ভিক ট্রেডিংয়ে শেয়ার প্রাইস ডিসকভারী বাধাগ্রস্ত হবে।’ ‘উভয় এক্সচেঞ্জে পৃথক ট্রেডিং সময়সূচীর ফলে দ্বৈত সদস্য কোম্পানীগুলোতে ট্রেডিং সেবা ও কার্যক্রম ব্যহত হবে এবং হাউজগুলোতে বিশৃংখলা তৈরী হয়ে বাজার ও বিনিয়োগকারীর আস্থায় এবং সামগ্রীক বাজার ব্যবস্থাপনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’ দীর্ঘ সময় ধরে বাজারে বিনিয়োগকারীর আস্থার কারণে মন্দা বিরাজ করছে। দীর্ঘ এ মন্দার ফলে বিনিয়োগকারীসহ বাজার অংশীজন ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে। তাই, বিনিয়োগকারী ও বাজারের স্বার্থে সিএসই’র নতুন ট্রেডিং সময়সূচীর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে বিদ্যমান সময়ে সকাল ১০ টায় বহাল রাখার জন্য সিএসই পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে ডিবিএ। এ বিষয়ে আমরা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ডিবিএ।’

পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নাফিজের দুবাইয়ের ফ্ল্যাট ও ভিলা জব্দের আদেশ
পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের দুবাইয়ে থাকা একটি ফ্ল্যাট ও একটি ভিলা জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন। দুদকের পক্ষে থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত অর্থপাচার করে দুবাইয়ে সম্পদ কিনেছেন। তিনি দুবাইয়ে তিন বেডের (শয়নকক্ষ) একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এ ছাড়া, পাঁচ বেডের একটি ভিলা কিনেছেন। দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে আরও জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের বিদেশে অর্থ পাঠানোর সুযোগ নেই। কিন্তু, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন না নিয়ে অর্থপাচার করেছেন। চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের আয়কর বিবরণীতেও দুবাইয়ে থাকা সম্পদের তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করা সম্পদ দিয়ে দুবাইয়ে সম্পদ কিনেছেন তিনি। এর আগে গত ৭ জানুয়ারি ঢাকায় চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী ও ছেলের নামে থাকা ২২টি ফ্ল্যাট, তাদের ২টি বাড়িসহ সব প্লট ও জমি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। দুদকের তথ্য বলছে, ‘চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের নামে ঢাকার গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। গুলশান-২-এ রয়েছে ২০ তলা বাড়ি। এর বাইরে পূর্বাচলে সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লট রয়েছে। এ ছাড়া গাজীপুর ও বাড্ডায় তাঁর ২৫ কাঠা জমি রয়েছে। চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদের নামে ঢাকা পাঁচটি ফ্ল্যাট রয়েছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে সাত কাঠা জমির ওপর চারতলা একটি বাড়িও রয়েছে তাঁর। এর বাইরে তার নামে আরও ১৩ কাঠা জমির সন্ধান পেয়েছে দুদক। এ ছাড়া, চৌধুরী নাফিস সরাফাত ও আঞ্জুমান আরার ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফাতের নামে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় থাকা সাতটি ফ্ল্যাট ক্রোক করার আদেশ দেন আদালত। দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এ ছাড়া, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী ও ছেলের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে এসব সম্পত্তি অর্জন করা হয়েছে বলে দুদক জানতে পেরেছে।