পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নাফিজের দুবাইয়ের ফ্ল্যাট ও ভিলা জব্দের আদেশ

পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের দুবাইয়ে থাকা একটি ফ্ল্যাট ও একটি ভিলা জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন। দুদকের পক্ষে থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত অর্থপাচার করে দুবাইয়ে সম্পদ কিনেছেন। তিনি দুবাইয়ে তিন বেডের (শয়নকক্ষ) একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এ ছাড়া, পাঁচ বেডের একটি ভিলা কিনেছেন। দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে আরও জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের বিদেশে অর্থ পাঠানোর সুযোগ নেই। কিন্তু, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন না নিয়ে অর্থপাচার করেছেন। চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের আয়কর বিবরণীতেও দুবাইয়ে থাকা সম্পদের তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করা সম্পদ দিয়ে দুবাইয়ে সম্পদ কিনেছেন তিনি। এর আগে গত ৭ জানুয়ারি ঢাকায় চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী ও ছেলের নামে থাকা ২২টি ফ্ল্যাট, তাদের ২টি বাড়িসহ সব প্লট ও জমি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। দুদকের তথ্য বলছে, ‘চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের নামে ঢাকার গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। গুলশান-২-এ রয়েছে ২০ তলা বাড়ি। এর বাইরে পূর্বাচলে সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লট রয়েছে। এ ছাড়া গাজীপুর ও বাড্ডায় তাঁর ২৫ কাঠা জমি রয়েছে। চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদের নামে ঢাকা পাঁচটি ফ্ল্যাট রয়েছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে সাত কাঠা জমির ওপর চারতলা একটি বাড়িও রয়েছে তাঁর। এর বাইরে তার নামে আরও ১৩ কাঠা জমির সন্ধান পেয়েছে দুদক। এ ছাড়া, চৌধুরী নাফিস সরাফাত ও আঞ্জুমান আরার ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফাতের নামে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় থাকা সাতটি ফ্ল্যাট ক্রোক করার আদেশ দেন আদালত। দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এ ছাড়া, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী ও ছেলের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে এসব সম্পত্তি অর্জন করা হয়েছে বলে দুদক জানতে পেরেছে।

এনসিসি ব্যাংকের নেতৃত্বে দিনাজপুরে ‘ক্লাস্টার ভিত্তিক অর্থায়ন’ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

এনসিসি ব্যাংকের নেতৃত্বে সম্প্রতি দিনাজপুরে ‘ক্লাস্টার ভিত্তিক অর্থায়ন’ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুর কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম কর্মশালা উদ্বোধন করেন। এনসিসি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির আনাম এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন। কর্মশালায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শফিকুল আলম, এনসিসি ব্যাংকের এসভিপি এবং এসএমই ও কৃষি প্রধান শরীফ মোহাম্মদ মহসীন এবং উত্তর অঞ্চলের প্রধান ওমর শরীফ অতিথি ছিলেন।এছাড়া, এনসিসি ব্যাংকের দিনাজপুর শাখার ব্যবস্থপক মো. কামাল হোসেনসহ অন্যান্য তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপকবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এনসিসি ব্যাংকের নেতৃত্বে দিনাজপুর জেলার ৪২টি তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১০৪ জন কর্মকর্তাসহ প্রায় ৯০ জন উদ্যোক্তা কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কর্মশালায় মো. রফিকুল ইসলাম ক্লাস্টার ভিত্তিক অর্থায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং ব্যাংকংগুলো অঞ্চলভিত্তিক এই ধরনের অর্থায়নে এগিয়ে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মো. জাকির আনাম ক্লাস্টার ভিত্তিক অর্থায়নের বিভিন্ন সুবিধাজনক দিকগুলো তুলে ধরেন এবং এনসিসি ব্যাংকবাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক এই ধরনের অর্থায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পূবালী ব্যাংকের খামারবাড়ি শাখায় ‘ইসলামী ব্যাংকিং কর্নার’ উদ্বোধন

গ্রাহকদের ইসলামী ব্যাংকিং সেবার চাহিদার কথা বিবেচনা করে সব শাখায় ‘ইসলামী ব্যাংকিং কর্নার’ স্থাপনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে ব্যাংক পূবালী ব্যাংক পিএলসি। এসব কর্নারের মাধ্যমে গ্রাহকরা সহজেই ইসলামী ব্যাংকিংয়ের সব সেবা নিতে পারবেন। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২২ জানুয়ারি) পূবালী ব্যাংক ঢাকার খামারবাড়ি শাখায় নান্দনিক ও গ্রাহকবান্ধব ‘ইসলামী ব্যাংকিং কর্নার’ উদ্বোধন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম। গেস্ট অব অনার ছিলেন পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আলী। পূবালী ব্যাংকের ঢাকা উত্তর অঞ্চলের অঞ্চল প্রধান ও মহাব্যবস্খাপক একেএম আব্দুর রকীবের সভাপতিত্বেঅনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামিক ব্যাংকিং উইং প্রধান ও মহাব্যবস্থাপক দেওয়ান জামিল মাসুদ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মো. সাহিনুল ইসলাম, পরিচালক (হর্টিকালচার উইং) এসএম সোহরাব উদ্দিন, সাবেক মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন খামারবাড়ি শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক বদরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে মো. ছাইফুল আলম বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকিং কেবল একটি আর্থিক সেবা নয়; এটি নৈতিকতা ও ধর্মীয়মূল্যবোধভিত্তিক একটি আর্থিক ব্যবস্থার অংশ। পূবালী ব্যাংকের এ উদ্যোগ গ্রাহকদের জন্য ইসলামী ব্যাংকিং সহজলভ্য করে তুলবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’ ইসলামী ব্যাংকিং কর্নার স্থাপন প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গ্রাহকদের ইসলামী মূল্যবোধ ও নীতি মেনে ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার জন্য পূবালী ব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের দেশে ইসলামী ব্যাংকিং সেবার চাহিদা ক্রমবর্ধমান এবং সেই চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে পূবালী ব্যাংক ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন শাখায় ‘ ইসলামিক ব্যাংকিং কর্নার’ স্থাপন করেছে। এতে গ্রাহকরা আধুনিক প্রযুক্তি ও নিরাপদ ব্যাংকিংয়ের সুবিধা নিয়ে ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী তাদের লেনদেন পরিচালনা করতে পারবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘পূবালী ব্যাংক সমাজে শুদ্ধ ও নৈতিক ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। ইসলামী ব্যাংকিংয়ের প্রসারে আমাদের এ প্রচেষ্টা গ্রাহকদেরকে সেবার নতুন অভিজ্ঞতা দিবে, যেখানে তারা তাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবেন। আমরা আশা করি, দেশের প্রতিটি অঞ্চলে এই সেবা পৌঁছে দিয়ে পূবালী ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিংয়ে একটি মানদণ্ড স্থাপন করবে।’

ফার্নিচার শিল্পের বিকাশে অধিক বিনিয়োগকারী প্রয়োজন: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘ফার্নিচার শিল্পে আমাদের বেশ সম্ভাবনা আছে। এ শিল্পের বিকাশে অধিক বিনিয়োগকারী প্রয়োজন।’ সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ ফার্নিচার ইন্ডাস্ট্রি: আনলকিং এক্সপোর্ট পটেনশিয়াল শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো ও বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স এসোশিয়েশন এ সেমিনারের আয়োজন করে। পরিবর্তন সুযোগের সূচনা করে উল্লেখ করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘ফার্নিচার শিল্পে অল্প সংখ্যক প্রতিষ্ঠান নিয়ে ২০৩০ সালের মধ্য ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব না। তবে এ খাতে আমাদের সম্ভাবনা রয়েছে।আমাদের সব রিসোর্স একত্রিত করে, রাষ্ট্রীয় সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কত দ্রুত ফার্নিচার বিশ্বে স্থান করে নিতে পারি, তা ভাবতে হবে ‘ বাণিজ্য উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য ছিলো ভারত কেন্দ্রিক। এ কারণে সম্ভবত রপ্তানি বাজার খুব বেশি অগ্রসর হয়নি। বিশ্ববাজার টার্গেট করে আমাদের ফার্নিচার উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে।’ আমাদের অর্থনীতিতে যে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে, তা চিন্তার বাইরে উল্লেখ করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে ব্যাংকিং ও গার্মেন্টসসহ দেশের প্রতিটি সেক্টরের সম্ভাবনাকে অসম্ভবভাবে নষ্ট করা হয়েছে। দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে ব্যবসায়ীসহ এ দেশের জনগণকে প্রতারিত করা হয়েছে। দেশের সম্ভাবনাকে নষ্ট করা হয়েছে, আমাদের ডিগনিটিকে নষ্ট করা হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে তাদের দুর্বৃত্তায়নের বোঝা আমাদের বহন করতে হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও বহন করতে হবে।’ শুধু বন্ড সুবিধা দিয়ে ব্যবসায় বাড়ানো সম্ভব না। বন্ড সুবিধার কারণে দেশে গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশ হয়েছে। তবে অনেক শিল্পের ক্ষতি করেছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে হবে। বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসবে, এটা ফেরাতে পারবেন না। বাণিজ্য উদারীকরণ হবে, নিজেদের সক্ষমতা না বাড়ালে ভবিষ্যতে টিকতে পারবেন না।’ বেশি সংখ্যক দেশের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করলে ব্যবসায় বাড়বে এটা ঠিক না। ইউরোপের যে দেশের মার্কেটে আমাদের এক্সেস আছে, তাদের সাথে এফটিএ করলে বরং দেশের ক্ষতি হবে। এফটিএ করতে হবে সে সব দেশের সাথে যাদের সাথে আমাদের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। অনেক ক্ষেত্রেই বন্ড সুবিধার অপব্যবহার হয় উল্লেখ করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘এটি বন্ধ করতে হবে। বন্ড, এফটিএ সুবিধা দিয়ে যতটা কাজ হবে তার থেকে সম্মিলিত প্রচেষ্টা আমাদের অনেকদূর এগিয়ে নেবে। অনেক দেশেই আমরা শুল্কছাড় সুবিধা পাচ্ছি।’ সেমিনারে কী-নোট উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স এসোশিয়েশনের পরিচালক দেওয়ান আতিফ রশিদ। এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভলপমেন্ট স্টাডিজের সাবেক প্রফেসর আবু ইউসুফ, বুয়েটের ম্যাটারিয়ালস এন্ড ম্যাট্যালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রফেসর ড. আহমেদ শরীফ, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ডিজাইনের ডীন প্রফেসর ফুয়াদ এইচ মল্লিক, প্রাণ আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আহসান খান চৌধুরী, হাতিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম এইচ রহমান। উল্লেখ্য, রপ্তানি প্রসার ও প্রণোদনামূলক কর্মকাণ্ডকে বেগবান করতে প্রতি বছর একটি পণ্যকে প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার বা বর্ষপণ্য ঘোষণা করা হয়। এ বছর বর্ষপণ্য হিসেবে ফার্নিচারকে বর্ষ পণ্য ঘোষণা করা হয়। গত ১ জানুয়ারি পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিসিএফসি) ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফার্নিচারকে ২০২৫ সালের বর্ষ পণ্য ঘোষণা করেন।

যেসব খাতে ভ্যাট হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করল এনবিআর

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারসহ শতাধিক পণ্যে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে, তীব্র সমালোচনা ও দাবির মুখে পণ্য ও সেবায় ভ্যাটের হার কমানো হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর জানায়, বাংলাদেশের নিজস্ব আর্থিক ভিত মজবুত করার লক্ষ্যে গত ৯ জানুয়ারি সরকার ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫‘ ও ‘দ্যা এক্সাইসেস অ্যান্ড সল্ট অ্যাক্ট (অ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডিন্যান্স, ২০২৫’ অধ্যাদেশ জারি করেছে। একই উদ্দেশ্যে কিছু পণ্য ও সেবার ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও আবগারি শুল্কের হার পুনঃনির্ধারণ করে এনবিআর কিছু প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। পরবর্তী বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, সুশীল সমাজ ও অংশীজনের অনুরোধ বিবেচনা করে বৃহত্তর জনস্বার্থে এনবিআর কিছু পণ্য ও সেবায় বিদ্যমান ভ্যাটের হার, উৎসে ভ্যাট কর্তনের হার ও সম্পূরক শুল্কের হার কমিয়ে ৪টি নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।যেসব খাতে ভ্যাটের হার পরিবর্তন করা হয়েছে:ওষুধ: সব জনগোষ্ঠীর জন্য চিকিৎসা সেবাকে আরও সহজ করার লক্ষ্যে ওষুধ শিল্পের ওপর ব্যবসায়িক পর্যায়ে বাড়ানো ভ্যাটের হার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে আগের ২ দশমিক ৪ শতাংশে বলবৎ রাখা হয়েছে। ওষুধের ওপর অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহার করায় ওষুধ শিল্পের ধারাবাহিক বিকাশ বজায় থাকবে এবং সাধারণ ভোক্তা পর্যায়ে ওষুধের দাম বাড়বে না। মোবাইল ফোন ও আইএসপি সেবা: দেশের চলমান ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা ও একটি আধুনিক আইটি জ্ঞানসম্পন্ন তরুণ প্রজন্ম বির্নিমান এবং অনলাইনভিত্তিক কর্মকান্ড বৃদ্ধির লক্ষ্যে মোবাইল ফোনের সিম/রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবার উপর বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক এবং আইএসপি সেবার ওপর নতুন আরোপিত সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। মোবাইল ফোন ও আইএসপি সেবার উপর বর্ধিত বা নতুন আরোপিত সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করায় এই দুই খাতে ভোক্তাদের খরচ বাড়বে না। রেস্তোরাঁ: দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য সুলভমূল্যে রেস্তোরাঁয় খাবার গ্রহণের সুবিধার্থে থ্রি-স্টার, ফোর-স্টার ও ফাইভ স্টার হোটেল ব্যতীত অন্য সব রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের ফলে সাধারণ জনগণ আগের দামেই এসব রেস্টুরেন্টের খাবার খেতে পারবেন। মোটর গাড়ীর গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপ: জনস্বার্থে মোটর গাড়ির গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপ সেবার ক্ষেত্রে বৃদ্ধিকৃত ভ্যাটের হার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের ফলে এ সংশ্লিষ্ট সেবা মূল্য বৃদ্ধি পাবে না।অন্যান্য: একই বিবেচনায় নিজস্ব ব্রান্ডের তৈরি পোশাক ব্যতিত অন্যান্য পোশাক বিপণনের ওপর অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া, নন এসি হোটেল, মিষ্টান্ন ভান্ডার, ও নিজস্ব ব্রান্ডের তৈরি পোশাক বিপণনের ক্ষেত্রে সেবার ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ হতে হ্রাস করে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের আপামর জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে গত কয়েক মাসে এনবিআর ভোজ্য তেল, চিনি, আলু, ডিম, পেঁয়াজ, চাল, খেজুর ও কীটনাশকের ওপর আমদানি শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি, ভ্যাট, অগ্রিম আয়কর ও আগাম করের ক্ষেত্রে ব্যাপক হারে করছাড় দিয়েছে। বাংলাদেশের সব পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পুস্তকের সহজলভ্যতা, আধুনিক ও তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ই-বুক সেবায় স্থানীয় সরবরাহ ও আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। যানজট নিরসনে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় দ্রুতগামী, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব মেট্রোরেল সেবার উপর ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া, হজ যাত্রীদের খরচ কমানোর লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হজ্ব টিকিটের ওপর আরোপযোগ্য আবাগারি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছে।

মোবাইল কলরেট ও ওষুধে বর্ধিত কর প্রত্যাহার

মোবাইল ফোন ও আইএসপি সেবা এবং ওষুধের ওপর নতুন আরোপিত শুল্ক-কর প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বুধবার (২২ জানুয়ারি) ভ্যাট বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়। শুল্ক-কর প্রত্যাহারে আগের দামে সেবা ও পণ্য কেনা যাবে। এনবিআর বলছে, ‘দেশের চলমান ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা ও একটি আধুনিক আইটি জ্ঞানসম্পন্ন তরুণ প্রজন্ম বিনির্মাণ এবং অনলাইনভিত্তিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির লক্ষ্যে মোবাইল ফোনের সিম ও রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবার ওপর বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক এবং আইএসপি সেবার ওপর নতুন আরোপিত সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে।’ গত ৯ জানুয়ারি সিগারেট, হোটেল-রেস্তোরাঁ সেবা, ইন্টারনেট সেবা, কোমল পানীয়, সিগারেটসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক ও কর বৃদ্ধি করে অধ্যাদেশ জারি করা হয়। ওই আদেশে মোবাইলফোনের সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের ওপর ২০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ হতো। এটি বাড়িয়ে পরে ২৩ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ইন্টারনেট সেবা বা আইএসপির ওপর প্রথমবারের মতো ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বসানো হয়েছিল। অন্যদিকে, ওষুধের বিষয়ে নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘সব জনগোষ্ঠীর জন্য চিকিৎসা সেবাকে আরও সহজতর করার লক্ষ্যে ওষুধ শিল্পের ওপর ব্যবসায়িক পর্যায়ে বৃদ্ধিকৃত ভ্যাটের হার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে পূর্বের হার ২ দশমিক ৪ শতাংশ বলবৎ রাখা হয়েছে।’ ওষুধের ওপর অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহার করায় ওষুধ শিল্পের ধারাবাহিক বিকাশ বজায় থাকবে এবং সাধারণ ভোক্তা পর্যায়ে ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি পাবে না বলে মনে করে এনবিআর।

পেছাল বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তি

আগামী ৫ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের সভায় উঠার কথা ছিল সংস্থাটির চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের বিষয়টি। তবে, সংস্থাটির বোর্ড সভা পিছিয়ে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের জন্য ঋণ ছাড়ের বিষয়টি পিছিয়ে যাচ্ছে। আগামী ১২ মার্চ আইএমএফের বোর্ড সভায় উঠতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকাওয়াচকে বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের আইএমএফের কার্যক্রম এক মাস বন্ধ ছিল। মূলত এ কারণেই বোর্ড সভার সময়সূচিতে পরিবর্তন এনেছে সংস্থাটি। এছাড়া, ডলার দর বাজারে ছাড়ার বিষয়ে সংস্থাটি থেকে চাপ ছিল। এক্ষেত্রে আমরা ইতিমধ্যে বাজারের কাছাকাছি চলে আসছি।’ তবে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, আইএমএফের চতুর্থ কিস্তি পেতে বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। শর্তগুলোর মধ্যে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের শর্ত ও ডলার দর বাজারে ছাড়ার বিষয়ে আপত্তি তুলেছে সংস্থাটি। তবে এনবিআরের একটি সূত্র দাবি করছে, ঋণের চতুর্থ কিস্তি পেতে এনবিআরের দিক থেকে কোন সমস্যা নেই। কারণ, ইতিমধ্যে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ ঋণের তিনটি কিস্তি পেয়েছে। চতুর্থ কিস্তিতে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পেতে পারে। এদিকে, ৪৭০ কোটি ডলারের চলমান এই ঋণ কর্মসূচির আকার আরও ৭৫ কোটি বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছিল বাংলাদেশ। এই অর্থ দিতেও সম্মত হয়েছে আইএমএফ। তবে, এ জন্য কর আদায় ও নীতি গ্রহণকারী সংস্থাকে আলাদা করাসহ রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর মত কিছু কঠোর শর্ত দিয়েছে আইএমএফ। গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশে আইএমএফের মিশনপ্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই ঋণ ছাড়ের বিষয়টি আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের সভায় উঠবে। সেখানে অনুমোদিত হলে তার দিন পাঁচেক পরে, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি তা ছাড় করা হবে। চতুর্থ কিস্তিতে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড়ে তারা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। তবে, রাজস্ব আয় বাড়ানো- সংক্রান্ত একটি কমিশন গঠনসহ কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদ সভায় চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। বোর্ড অনুমোদন দিলে ঋণ ছাড় করা হবে। একই সঙ্গে চলমান কর্মসূচির আওতায় ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে ৫৩০ কোটি ডলার করতেও তারা সম্মত হয়েছেন বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের সেবা আরো বাড়ানোর আহ্বান বিজিএমইএর

চট্টগ্রাম কাস্টমস্ বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার মোহাম্মদ শফি উদ্দিনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বিজিএমইএ’র নেতৃবৃন্দ। বিজিএমইএ’র সহায়ক কমিটির সদস্য এমডিএম. মহিউদ্দিন চৌধুরী নেতৃত্বে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকালে কমিশনারের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎপর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র প্রাক্তন প্রথম সহ-সভাপতি নাসিরউদ্দিন চৌধুরী ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রাক্তন পরিচালক এএম মাহাবুব চৌধুরী, হাসানুজ্জামান চৌধুরী, মোহাম্মদ মুসা, অঞ্জন শেখর দাশ, সাইফ উল্লাহ মনসুর, এএম শফিউল করিম খোকন। সাক্ষাৎকালে এমডিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ হিসেবে খ্যাত রপ্তানিকারক তৈরী পোশাক শিল্প আজ ইতিহাসের কঠিন সংকটে। বিগত সরকারের সম্পদ ও অর্থ লুটপাটের জেরে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বেসামাল। টানা মূল্যস্ফীতির চাপ, ডলার সংকট, ব্যাংকিংসহ নানামুখী সমস্যায় মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রাণের এই রপ্তানিকারক তৈরী পোশাক শিল্প। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে যে শিল্প গড়ে উঠে ছিল, তা আজ টিকে থাকার লড়াইয়ে অবতীর্ণ। তিনি আরো বলেন, ‘গত ৫ বছরে আমাদের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০ শতাংশ। পক্ষান্তরে, বিদেশী ক্রেতা পোশাকের দাম ১ সেন্টও বৃদ্ধি করে নাই। নতুন করে আবার শ্রমিকদের ৯ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধিতে আমাদেরকে কঠিন সংকটে ফেলে দিয়েছে। এ অবস্থায় দেশের সব মানুষের সাথে সরকারের সহযোগিতা ছাড়া এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। কঠিন এই সময়ে সরকারী বিভিন্ন আইনগত সামষ্ঠিক বিষয় গুলির সহজীকরণ ছাড়া এশিল্প টিকিয়ে রাখা যাবে না।’ মোহাম্মদ শফি উদ্দিন বলেন, ‘জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে পোশাক শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য শিল্প স্থাপন ও কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বন্ড কমিশনারেট সচেষ্ঠ রয়েছে।’ পোশাক শিল্পের বন্ড সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে বিদ্যমান জটিলতা নিরসন পূর্বক দ্রুততার সহিত কার্যক্রম সম্পাদন করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। বন্ড ও বিজিএমইএ’র মধ্যে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে যে কোন উদ্ধুত সমস্যা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পাদন ও কার্যক্রম সহজীকরণ করে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হবে মর্মেও মোহাম্মদ শফি উদ্দিন বিজিএমইএন নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেন।

এবার ওএমএসে পণ্য বিক্রি কার্যক্রমও বন্ধ করল সরকার

সরকার সাশ্রয়ী দামে ওপেন মার্কেট সেলের (ওএমএস) বিভিন্ন পণ্য বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ডিম, আলু-পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দাম নিয়ে ভোক্তাদের ব্যাপক সমালোচনা ও উদ্বেগের মধ্যে গত অক্টোবরে খোলা বাজারে কৃষি পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। যেখানে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে ডিম, আলু, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচসহ ১০ টি পণ্য বিক্রয় করা হত।গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ থাকা এই কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হবে না বলে জানিয়েছেন সালেহ উদ্দিন আহমেদ। বাজারে কৃষি পণ্যের দাম কমে আসায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের আরও জানান, বিভিন্ন পণ্যের উপর ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ করার কারণে মূল্য বৃদ্ধিতে তেমন প্রভাব পড়েনি। তবে কিছু কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে ভ্যাট আরোপের বিষয়ে আগামী বাজেটে সমন্বয় করা হবে।বর্তমানে চালের দাম সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘সরবরাহ পদ্ধতিতে কিছু জটিলতার কারণে মাঝে চালের দাম বেড়েছিল। চাষাবাদে ঘাটতি মেটাতে ইউরিয়া সার আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’বিশেষ ওএমএসের কৃষি পণ্যগুলোর মধ্যে ছিল ৩০ টাকা দরে পাঁচ কেজি আলু, ১৩০ টাকায় এক ডজন ডিম, ৭০ টাকায় এক কেজি পেঁয়াজ, ৫০ টাকায় এক পিস লাউ ইত্যাদি।

পূবালী ব্যাংক ও ইফাদ মোটরসের মধ্যে চুক্তি

পূবালী ব্যাংক পিএলসি এবং ইফাদ মোটরস্ লিমিটেডের মধ্যে সম্প্রতি একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত করেছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পূবালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহনেওয়াজ খান এবং ইফাদ মোটরস্ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ইফাদ গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান তাসকিন আহমেদ। এসময় পূবালী ব্যাংক পিএলসির হেড অব কার্ড বিজনেস ও উপ-মহাব্যবস্থাপক এনএম ফিরোজ কামাল; হেড অব কার্ড মার্কেটিং ও সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আসাদুল্লাহ খান এবং ইফাদ অটোস লিমিটেডের সিএফও সোহাদেব কে দাস এফসিএ, এসিএস সহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন নির্বাহীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এই চুক্তির আওতায়, পূবালী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডধারীরা ইফাদ মোটরের নির্ধারিত বিক্রয় কেন্দ্রগুলি থেকে রয়্যাল এনফিল্ড মোটর বাইক কেনার ক্ষেত্রে ২৪ মাস পর্যন্ত ইএমআই সুবিধা পাবেন।

ভারত থেকে এলো পৌনে ৬ হাজার টন চাল

ভারত থেকে আমদানি করা পৌনে ৬ হাজার টন চাল বাংলাদেশে এসেছে। আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এ চাল এনেছে খাদ্য অধিদপ্তর। সোমবার (২০ জানুয়ারি) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা ও জনসংযোগ কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলাম বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে খাদ্য অধিদপ্তরের ভারত থেকে আমদানি করা ৫০ হাজার টন সেদ্ধ চালের প্রথম চালান ৫ হাজার ৭৫০ টন বাংলাদেশে এসেছে। এ চাল নিয়ে এমভি ফু থানহ ৩৬ জাহাজটি মংলা বন্দরে ভিড়েছে। ইমদাদ ইসলাম জানান, জাহাজে থাকা চালের নমুনা সংগ্রহ করে ভৌত পরীক্ষা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। দ্রুতই জাহাজ থেকে চাল খালাস শুরু হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

পূবালী ব্যাংক ও ইফাদ মোটরসের মধ্যে চুক্তি সই

পূবালী ব্যাংক পিএলসি এবং ইফাদ মোটরস্ লিমিটেডের মধ্যে সম্প্রতি একটি চুক্তি সই করেছে। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে পূবালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহনেওয়াজ খান এবং ইফাদ মোটরসেরব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ইফাদ গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান তাসকিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় পূবালী ব্যাংকের হেড অব কার্ড বিজনেস ও উপ-মহাব্যবস্থাপক এনএম ফিরোজ কামাল; হেড অব কার্ড মার্কেটিং ও সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আসাদুল্লাহ খান, ইফাদ অটোসের সিএফও সোহাদেব কেদাসসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন নির্বাহীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।এই চুক্তির আওতায়, পূবালী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডধারীরা ইফাদ মোটরসের নির্ধারিত বিক্রয় কেন্দ্রগুলি থেকে রয়্যাল এনফিল্ড মোটর বাইক কেনার ক্ষেত্রে ২৪ মাস পর্যন্ত ইএমআই সুবিধা পাবেন।

ইসলামী ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর দুই দিনব্যাপী ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, রবিবার ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সমাপ্ত হয়েছে। ব্যাংকের বোর্ড অব ডাইরেক্টরস-এর চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ প্রধান অতিথি হিসেবে সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মোঃ আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, স্বতন্ত্র পরিচালক মোঃ আবদুল জলিল এবং শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমদ। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ ওমর ফারুক খান এবং দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ সময় ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার, ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ মাহবুব আলম, মাহমুদুর রহমান, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মুহাম্মদ সাঈদ উল্লাহ, কে.এম. মুনিরুল আলম আল-মামুন, ড. এম কামাল উদ্দীন জসীম ও মোঃ মাকসুদুর রহমান এবং প্রধান কার্যালয়ের উইং ও ডিভিশনের প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন নির্বাহীগণ, ১৬টি জোনের জোনপ্রধান ও ৮টি কর্পোরেট শাখাসহ ৪০০টি শাখার ব্যবস্থাপকগণ সম্মেলনে অংশ নেন।

চীনে শীর্ষ ১০০ স্টোর পুরস্কার পেল মিনিসো বাংলাদেশ

চীনে অনুষ্ঠিত বার্ষিক গ্লোবাল ইভেন্টে দুটি মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছে মিনিসো বাংলাদেশ। এই ইভেন্টে মিনিসো বাংলাদেশের গুলশানের ২টি স্টোর বিশ্বব্যাপী সাড়ে সাত হাজারের বেশি স্টোরের মধ্যে শীর্ষ ১০০ স্টোরের একটি হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মিনিসো বাংলাদেশ তার দ্বিতীয় পুরস্কার অর্জন করেছে স্টোর, কর্পোরেট ও ওয়‍্যারহাউস জুড়ে সেরা সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য। পুরস্কারগুলো মিনিসোর ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিনসেন্ট হুয়াংয়ের কাছ থেকে গ্রহণ করেন মিনিসো বাংলাদেশের পরিচালক শাহ রাঈদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আমি গর্বিত যে আমার দেশের পতাকা ও পরিচয় এমন একটি বৈশ্বিক মঞ্চে উপস্থাপন করতে পেরেছি। আমরা বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছি এবং জয়ী হচ্ছি। এটাই বড় পুরস্কার এবং অনুপ্রেরণা। ১১০টির বেশি দেশের মধ্যে আমরা প্রমাণ করছি এবং গর্বের সঙ্গে আমাদের দেশের পতাকা বহন করছি। এটি বিশ্বব্যাপী আমাদের দেশের জন্য প্রশংসার বিষয়। অনেক দেশ ও মানুষ যারা আগে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতো না, তারা এখন আমাদের সম্পর্কে জানছে। মূলত, মিনিসো, একটি লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড, ১৬০০ এরও বেশি দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই ব্র্যান্ড উচ্চমানসম্পন্ন পণ্য ও আধুনিক নান্দনিকতার মিশ্রণে সব বয়সের ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে সক্ষম। বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর থেকে মিনিসো তার সুপরিকল্পিত পণ্য সংগ্রহ, অফিসিয়াল আইপি সিরিজ এবং অসাধারণ কেনাকাটার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে গ্রাহকদের মন জয় করেছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বগুড়া ও সিলেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় স্টোর নিয়ে মিনিসো বাংলাদেশ মানসম্মত পণ্য ও সুখকর কেনাকাটার অভিজ্ঞতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

ব্যাংকারদের বিদেশ ভ্রমণে আর বাধা নেই

ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিদেশযাত্রায় সব ধরনের বাধা উঠিয়ে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে ব্যাংকারদের বিদেশে ভ্রমণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও কোনো অনুমতির প্রয়োজন হবে না। ব্যাংকের ভ্রমণ নীতিমালা অনুযায়ী কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ, সভা, সেমিনার, কর্মশালা ও শিক্ষাসফরে যেতে পারবেন। রোববার (১৯ জানুয়ারি) এক সার্কুলার জা‌রি ক‌রে এই নির্দেশনা দি‌য়ে‌ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশনায় বলা হয়, এখন থেকে ব্যাংকারদের বিদেশে ভ্রমণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও কোনো অনুমতির প্রয়োজন হবে না। ব্যাংকের ভ্রমণ নীতিমালা অনুযায়ী কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ, সভা, সেমিনার, কর্মশালা ও শিক্ষাসফরে যেতে পারবেন।

সোমবার সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

চার দিনের সরকারি সফরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম সম্মেলনে যোগ দিতে সোমবার (২০ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।ডেপুটি প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা এ সফরে বিশেষ বৈঠক করবেন জার্মানির চ্যান্সেলর, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট, বেলজিয়ামের রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে। এছাড়াও মেটা, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ কয়েকটি সংস্থার সাথেও বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে তার।’ বাংলাদেশ বিষয়ক ডায়ালগ হবে আলাদাভাবে, ব্যবসায়ীসহ অনেক গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সেখানে থাকবেন- এ কথা জানিয়ে আবুল কালাম বলেন, ‘এ ডায়ালগ বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের আয়োজনে বিভিন্ন কোম্পানির সিইও থাকবেন সেখানে।’তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার আশা করছে, বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রহ পাবে। আর বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীরা যাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেন সে আহ্বান থাকবে প্রধান উপদেষ্টার।’ বিনিয়োগ সহজীকরণ ও সরকারের অবস্থান বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ব্যাখ্যা করা হবে বলেও জানান তিনি।আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ‘সোমবার রাত ১টায় ঢাকার আন্তর্জাতিক শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাকে বহন করা বিমানের ফ্লাইট ছেড়ে যাবে। চার দিনের সফর শেষে দেশে ফিরবেন আগামী ২৫ জানুয়ারি তিনি।

১৮ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৪ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা

নয়া বছরের প্রথম মাসের (জানুয়ারির) ১৮ দিনে ১২০ কোটি ৬৮ লাখ ৮০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ১৪ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে প্রতিদিন গড় রেমিট্যান্স আসছে প্রায় ৮১৮ কোটি টাকা। রেমিট্যান্সের এ প্রবাহ অব্যাহত থাকলে পুরো জানুয়ারিতে তা দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। রোববার (১৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ‘জানুয়ারির প্রথম ১৮ দিনে ১২০ কোটি ৬৮ লাখ ৮০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। আলোচিত সময়ে সরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৫ কোটি ৮৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে একটি ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে এসেছে ৫ কোটি ৯ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৮৯ কোটি ৩৩ লাখ ১০ হাজার ডলার। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৭ লাখ ২০ হাজার ডলার।’ আলোচিত ১৮ দিনে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ৯টি। এরমধ্যে রয়েছে সরকারি খাতের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক। বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক। এর আগে একক কোন মাস হিসেবে বিদায়ী বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার বা ২৬৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকার বেশি। অতীতে কখনোই একক কোনো মাসে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। এরও আগে করোনাকালীন ২০২০ সালের জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার। ২০২৪ সালে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে সেই রেকর্ডও ভেঙে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ‘২০২৪ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুলাই বাদে বাকি ১১ মাসই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।’ তথ্য বলছে, ‘চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বরে) এক হাজার ৩৭৭ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৯৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার বেশি। গত অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বরে) রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৮০ কোটি ডলার।’

‘টিসিবির এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর ৩৭ লাখই ভুয়া’

বাণিজ্য উপদেষ্টা এসকে বশির উদ্দিন বলেছেন, ‘ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ৩৭ লাখই ভুয়া।’ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকা উত্তর সিটির আগারগাঁও বিআইসিসিতে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ২০২৪’-এর সিম্পোজিয়াম, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও জাতীয় বাজেট নিয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় বশির উদ্দিন আরো বলেন, ‘সমাজে বৈষম্য তৈরি হয়েছে বলেই আন্দোলন হয়েছে। যা দূর করা সম্ভব নীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে।’ কর প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দুই ধরনের করই গুরুত্বপূর্ণ এবং আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো এর প্রয়োগ করা।’ এ উপদেষ্টা বলেন, ‘অর্থনৈতিক মন্দা থাকার পরও ব্যাংকগুলো গত ডিসেম্বরে অনৈতিকভাবে লাভ করেছে, বিষয়টা খতিয়ে দেখা উচিত।’ সভায় ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো এবং শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখে অবাক হয়ে গেছি- কীভাবে অবিবেচকভাবে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। কর সংগ্রহ করতে হলে ক্রমান্বয়ে প্রত্যক্ষ কর প্রদানকারীর কাছে যেতে হয়।’ প্রত্যক্ষ কর আহরণের জন্য আমরা কোনো পরিকল্পনা দেখিনি উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘যারা কর দেয় না তাদের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেটাও জানা যায়নি। বিষয়টা আমাদের চিন্তিত করেছে। আগামী গরমে জ্বালানি পরিস্থিতি আরও জটিল হবে, এই শঙ্কা করছি।’ রেকর্ড পরিমাণ আমন উৎপাদন করেও সংগ্রহ অভিযানে সাফল্য নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সংগ্রহ অভিযানে আগে যেমন দুর্নীতি ছিল, তা এখনো আছে। কৃষক তার ফসলের সঠিক মূল্য পাচ্ছে না। সামাজিক সুরক্ষা বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে আছে।’

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বার্ষিক ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন শুরু

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ বর্তমানে ৪০০টি শাখা, ২৬৫টি উপশাখা, ২ হাজার ৭৮৩টি এজেন্ট আউটলেট, ৩ হাজার ৪০টি এটিএম/সিআরএম বুথের মাধ্যমে ২ কোটি ৫০ লাখ গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে। ১ লক্ষ ৬১ হাজার কোটি টাকার আমানত যা বিগত বছরের তুলনায় ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি ও ১ লক্ষ ৫৯ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের মাইলফলক স্পর্শ করেছে ২০২৪ সালে। বিগত বছরে এ ব্যাংক আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আহরণ করেছে যথাক্রমে ৬৪ হাজার ৭৮২ কোটি, ৩২ হাজার ৪৩৮ কোটি ও ৬৬ হাজার ১৭ কোটি টাকা। ডিজিটাল ওয়ালেট সেলফিন অ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৪৬ লাখ। ৩৪ হাজার গ্রামের ১৮ লক্ষাধিক পরিবারের মাঝে ক্ষুদ্র বিনিয়োগ করেছে এই ব্যাংক। ব্যাংকের ২ দিনব্যাপী ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এ সম্মেলনের উদ্বোধন হয়। ব্যাংকের বোর্ড অব ডাইরেক্টরসের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ সম্মেলন উদ্বোধন করেন। সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান এম মাসুদ রহমান, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল ও শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ বিশেষ ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খান এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. আলতাফ হুসাইন। ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টরমোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়েদ উল্ল্যাহ আল মাসুদ বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক দেশের এক নম্বর ব্যাংক এবং দেশের জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ এ ব্যাংকের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। সাড়ে ৬ হাজার ইউনিটের বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক দেশজুড়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাচ্ছে। আড়াই গ্রাহক আর এ বিস্তৃত নেটওয়ার্কই প্রমাণ করে এ ব্যাংকের জনপ্রিয়তা।’ তিনি আরো বলেন, ‘দেশের ৩৪ হাজার গ্রামে পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে ইসলামী ব্যাংক। আমরা এই সেবা দেশের ৬৮ হাজার গ্রামেই ছড়িয়ে দিতে চাই। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর এ ব্যাংক প্রায় ৯ লক্ষ নতুন গ্রাহক ও ১৩ হাজার কোটি টাকা নতুন ডিপোজিট সংগ্রহ করেছে। বিগত বছরেই ব্যাংক ৪০০তম শাখা উদ্বোধনের মাইলফলক অর্জন করেছে।’ মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইসলামী ব্যাংকের অবদান অবিস্মরণীয়। ২০২৪ সালে নানা চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেও ইসলামী ব্যাংক সব ব্যবসায়িক সূচকে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সবচেয়ে বেশি ডিপোজিট সংগ্রহ করেছে। দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় ৯ ভাগ এ ব্যাংকের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা এ ব্যাংকে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাছিয়েছেন; যা দেশের মোট রেমিট্যান্সের এক চতুর্থাংশ। এ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।’ অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারা বলেন, ‘এ ব্যাংকের কর্মীরা অত্যন্ত সততা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। একই ছাদের নিচে এত সৎ ও দক্ষ মানুষের সমাবেশ কোথাও নেই।’ বক্তারা রেমিট্যান্স আহরণ, বিনিয়োগ ও আমানতের অগ্রগতি অর্জনের জন্য দিকনির্দেশনা দেন। ইসলামী ব্যাংকের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অব্যাহত রাখতে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করার জন্য তারা সকলের প্রতি আহ্বান জানান। সম্মেলনে ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মাহমুদুর রহমান, মো. রফিকুল ইসলাম, মুহাম্মাদ সাঈদ উল্লাহ, কেএম মুনিরুল আলম আল-মামুন, এম কামাল উদ্দীন জসীম ও মো. মাকসুদুর রহমান এবং প্রধান কার্যালয়ের উইং ও ডিভিশনের প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন নির্বাহীগণ, ১৬টি জোনের জোনপ্রধান ও ৮টি কর্পোরেট শাখাসহ ৪০০টি শাখার ব্যবস্থাপক সম্মেলনে অংশ নেন।

ব্যাংকিং সেক্টর পেলেও রিফর্মস সহায়তা পায়নি ক্যাপিটাল মার্কেট

দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যাংকিং সেক্টরে রিফর্মসের জন্য সরকারের অনেক ধরনের সহায়তা প্যাকেজ আসছে। কিন্তু, এখন পর্যন্ত ক্যাপিটাল মার্কেটের জন্য কোনো সহায়তা প্যাকেজ আসেনি বলে জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে ঢাকার বিজয় নগরে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান। সিএমজেএফের সভাপতি ও সারাবাংলা ডট নেট’-এর হেড অব নিউজ গোলাম সামদানী ভূইয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সিএমজেএফের সেক্রেটারি ও আমাদের সময়ের সিনিয়র রিপোর্টার আবু আলী পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সিএমজেএফ ইসি কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মমিনুল ইসলাম আরো বলেন, ‘বহুজাতিক সংস্থাগুলো যেমন আইএমএফ, এডিবি- এদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। যাতে তাদের কাছ থেকে আমরা সাপোর্ট পেতে পারি। এতে আমাদের এই রিফর্মসের কাজগুলো একটু তরান্বিত হবে। আমাদের দেশের ব্যাংকিং সেক্টরের জন্য অনেক ধরনের সহায়তা প্যাকেজ আসছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ক্যাপিটাল মার্কেটের জন্য কোনো সহায়তা প্যাকেজ আসেনি। এ দাবিটাকে আমরা সরকারের কাছে জোড়ালোভাবে তুলে ধরতে চাই। এছাড়া, আমাদের সহযোগী যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আছে, তারা পুঁজিবাজারের দিকে একটু নজর দিন। যাতে আমাদের রিফর্মসের কাজগুলো একটু সহজ হয় এবং আমরা যাতে আরও সক্ষম হতে পারি।’ ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের শেয়ারবাজারকে কাঙ্খিত জায়গায় নিয়ে যেতে কাজ করা হচ্ছে। তবে, আমাদের শেয়ারবাজারের সমস্যা অনেক গভীরে। তাই, সমাধানে একটু সময় লাগবে। আমাদের শেয়ারবাজার অনেক সংকুচিত। গত ১৫ বছরে শেয়ারবাজার অনেক পিছিয়েছে। তবে, একই সময়ে বিশ্বের অন্য দেশগুলোর শেয়ারবাজার এগিয়েছে। এই অবস্থায় বর্তমান সময়ে দেশের সব স্টেকহোল্ডার বাংলাদেশের শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিতে ইতিবাচকভাবে কাজ করছেন। আমরা এরইমধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কাজের ফলাফল পেতে একটু সময় লাগবে। একটি ভবনের ভিত্তি নির্মাণ যেমন বাহিরে থেকে দেখা যায় না, ব্যাপারটি অনেকটা সেরকম। তবে, ভবনের উপরে নির্মাণ কাজটা সবাই দেখতে পায়। কিন্তু, আসল কাজটা করা হয় ওই ভিত্তি নির্মাণের সময়।’ তিনি আরো বলেন, ‘সবকিছুই বিফলে যাবে, যদি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে না পারি। এ জন্য স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ৪টি কাজকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। চারটি কাজের মধ্যে দ্রুত সময়ে কিছু ভালো কোম্পানি নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। এছাড়া, নেগেটিভ ইক্যুইটির সমস্যা সমাধান, ট্যাক্স সুবিধা দেওয়া ও ইনসাইডার ট্রেডিং বন্ধ করা। এই ট্রেডিংয়ের বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স।’ মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশে শেয়ারবাজারের যে ভূমিকা থাকার কথা ছিল, তা হয়নি। প্রত্যাশার লেভেল থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। স্টক এক্সচেঞ্জগুলোও অনেক সমস্যায় ছিল। এর মধ্যে অন্যতম নিয়ন্ত্রক সংস্থার অযাচিত হস্তক্ষেপ। এছাড়া, স্টক এক্সচেঞ্জের মানব সম্পদের অদক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সমস্যা রয়েছে। আর ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইনেও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’

শুল্ক ও কর বৃদ্ধি যেভাবে প্রভাব ফেলবে সিগারেটের বাজারে

মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে উল্লেখযোগ্যভাবে দাম বেড়েছে সিগারেটের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের, সরাসরি যার প্রভাব পড়েছে সিগারেটের বাজারে। হঠাৎ শুল্ক ও কর বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খাতসংশ্লিষ্ট অংশীজনেরা। তাদের মতে, এ সিদ্ধান্তের কারণে বাজারে চাহিদা কমবে এবং যার ধারাবাহিকতায় কমে আসবে সরকারের রাজস্ব আয়। এক্ষেত্রে, উৎকণ্ঠার আরও বিষয় হচ্ছে, সিগারেটের দাম বৃদ্ধির কারণে অবৈধ সিগারেটের বাজার বড় হতে পারে; যা রাজস্ব আয়কে আরও সংকুচিত করবে।নতুন শুল্ক ও কর পরিশোধের পরেই নিজেদের পণ্য বাজারে ছেড়েছে সিগারেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। যে কারণে প্রায় সব ধরনের সিগারেটের দামই শলাকাপ্রতি বেড়েছে এক থেকে দুই টাকা। সিগারেটসহ শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর ৯ জানুয়ারি থেকে শুল্ক ও কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বেড়েছে সিগারেটের দামও। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ইতোমধ্যেই নতুন মূল্যের ভিত্তিতে স্ট্যাম্প ও ব্যান্ড রোল ব্যবহারের নির্দেশনা জারি করেছে। ফরেন ইনভেস্টরস’ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) সম্প্রতি তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, অংশীজনদের সাথে আলোচনা না করে শুল্ক ও কর বৃদ্ধি ব্যবসাখাত ও বিনিয়োগকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। প্রসঙ্গত, তামাক, টেলিযোগাযোগ, জ্বালানি ও আর্থিক খাতসহ বিভিন্ন খাতে ৯০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) প্রতিনিধিত্ব করে এফআইসিসিআই। সংগঠনটি আরও জানায়, শুল্ক ও কর বৃদ্ধির মত পদক্ষেপ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও আত্মবিশ্বাসে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং ভবিষ্যতে দেশে এফডিআই প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করবে।এ বিষয়ে বিএটি বাংলাদেশের হেড অব করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স শাবাব আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘বিএটি বাংলাদেশ ১১৫ বছর ধরে ব্যবসায় পরিচালনার মাধ্যমে রাজস্বের অন্যতম বৃহৎ অংশীদার হিসেবে জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশে সিগারেট ট্যাক্স ডব্লিউএইচও’র নির্দেশিত মাত্রা (৭৫ শতাংশ) অতিক্রম করে গেছে। এক্ষেত্রে, এটি বেড়ে ৮৩ শতাংশ হলে, তা এই খাতের দীর্ঘমেয়াদী ভবিষ্যতের জন্য উৎকণ্ঠার বিষয় হবে। এই পরিবর্তন সামগ্রিকভাবে ব্যবসায় ও বিনিয়োগের ওপর প্রভাব ফেলবে, বাজারে অবৈধ সিগারেটের যোগান বাড়াবে এবং দীর্ঘমেয়াদে সরকারের রাজস্বের ক্ষতি করবে। পাশাপাশি, এই সিদ্ধান্ত তামাক খাত এবং এর সাথে সম্পর্কিত বিস্তৃত ভ্যালু চেইনের প্রায় ৪৪ লাখ মানুষ যেমন কৃষক, খুচরা বিক্রেতা ও পরিবেশকদের জীবিকায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকারের উচিত খাত-সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের সাথে অন্তর্ভুক্তিমূলক আলোচনা শুরু করা এবং হতাশাজনক এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে পুনর্বিবেচনা করা।খুচরা বাজারে প্রতি শলাকার দাম বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আগে বেনসন অ্যান্ড হেজেস ব্র্যান্ডের সিগারেটের প্রতি শলাকা ১৮ টাকা করে বিক্রি হত, এখন সেটা হচ্ছে ২০ টাকায়। গোল্ড লিফ ব্র্যান্ডের সিগারেটের প্রতিটি শলাকার দাম বেড়ে হয়েছে ১৩ থেকে ১৫ টাকা। একইভাবে, লাকি স্ট্রাইক সিগারেটের দাম শলাকাপ্রতি বেড়ে ১০ টাকা থেকে ১২ টাকা ও স্টারের প্রতি শলাকা ৮ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০ টাকা। ডার্বি, পাইলট ও হলিউড সিগারেটের প্রতি শলাকার দাম এখন ৮ টাকা এবং রয়্যালসের শলাকাপ্রতি দাম বর্তমানে ৭ টাকা। সিগারেটের ব্র্যান্ডগুলোর ২০ শলাকার প্রতিটি প্যাকেটে ২০ থেকে ৩০ টাকা দাম বেড়েছে। পাইকারি বাজারে ২০ শলাকার বেনসন অ্যান্ড হেজেস ব্র্যান্ডের সিগারেটের প্যাকেটের মূল্য ৩৭০ টাকা, জন প্লেয়ার গোল্ড লিফ ২৮০ টাকা, লাকি স্ট্রাইক ২১০ টাকা, স্টার ১৭২ টাকা, পাইলট ডার্বি স্টাইল ও হলিউড ১৪৪ টাকা এবং রয়্যালস ১২৬ টাকা। এনবিআরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নিম্নস্তরের সিগারেটের ক্ষেত্রে ১০ শলাকার প্যাকেটের দাম ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা বা তার অধিক হয়েছে। এক্ষেত্রে, সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৬০-৬৭ শতাংশ। মধ্যস্তরের সিগারেটের ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক সাড়ে ৬৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬৭ শতাংশ হয়ে দাম বেড়ে হয়েছে ৭০-৮০ টাকা বা তারও বেশি। উচ্চস্তরের সিগারেটের ক্ষেত্রে দাম ১২০ টাকা থেকে বেড়ে ১৪০ টাকা বা তার অধিক হয়েছে এবং এক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক সাড়ে ৬৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৭ শতাংশ। প্রিমিয়াম সিগারেটের ক্ষেত্রে দাম ১৬০ টাকা থেকে বেড়ে ১৮৫ টাকা বা তার বেশি হয়েছে এবং সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে সাড়ে ৬৫ শতাংশ থেকে ৬৭ শতাংশ।সিগারেটের মোড়কে ব্যান্ড রোল থাকা আবশ্যক। সিগারেটের প্যাকেট বাজারজাত করার আগে সিগারেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কারখানায় মোড়কে ব্যান্ড রোল যুক্ত করে। সরকার ব্যান্ড রোল বিক্রির মাধ্যমে সিগারেট থেকে রাজস্ব সংগ্রহ করে। বাংলাদেশে সিগারেট ও তামাক খাত সর্বোচ্চ রাজস্ব আয়কারী খাত। সিগারেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিটি শলাকার মূল্যের প্রায় ৬০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ কর ও শুল্ক হিসেবে পরিশোধ করতে হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এনবিআর এ খাত থেকে শুল্ক ও কর হিসেবে ৩৭ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা আদায় করেছে, যা পরিশোধ করেছে সিগারেট বিক্রয়কারী ৩১টি প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে, আগের অর্থবছরে ভ্যাট বিভাগ শুল্ক ও কর হিসেবে সিগারেট বিক্রি থেকে আদায় করেছিল ৩২ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি মূল্যস্ফীতি

চলতি বছরে (২০২৫) পাঁচটি ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝুঁকির বিষয়টি হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। এছাড়া, আরও চার ঝুঁকির বিষয়গুলো হল চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া, পরিবেশ দূষণ, বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক নিম্নমুখিতা। সম্প্রতি প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হিসেবে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া, বিশেষ করে বন্যা ও উচ্চ তাপমাত্রা এবং দূষণকে দায়ী করা হয়েছে। বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ ১০টি দেশের মধ্যে একটি, যেখানে দূষণকে শীর্ষ তিন ঝুঁকির একটি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।’ এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ও ভারত ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। দেশ দুটিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ অনেক ক্ষেত্রেই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। সবুজ অর্থনীতি রূপান্তরের ক্ষেত্রে দূষণ সচেতনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ ডব্লিউইএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আরও দুটি বিষয় খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এর একটি হচ্ছে বেকারত্ব, অন্যটি হচ্ছে অর্থনৈতিক নিম্নমুখিতা। এ দুটি বিষয়ের কারণে বাংলাদেশ উচ্চ মূল্যস্ফীতি, মুদ্রার অবমূল্যায়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ঘাটতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ধীর প্রবৃদ্ধি মোকাবিলা করছে।’ এতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশে ২০২৪ সালে মূল্যস্ফীতির গড়পড়তা হার ছিল ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে তা ছিল ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবমতে, ২০২২ সালে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৭ শতাংশ।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘জলবায়ুগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ সাম্প্রতিক বছরগুলোর অন্যান্য উদ্বেগকে ছাপিয়ে বিশ্বের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াতে পারে রাষ্ট্রভিত্তিক সশস্ত্র সংঘাত।’ দেশভিত্তিক প্রধান ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করতে নির্বাহী মতামত জরিপ (ইওএস) চালায় ডব্লিউইএফ। এটি মূলত ধারণাভিত্তিক জরিপ। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞেস করা হয়, আগামী দুই বছরে আপনার দেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কোনগুলো।’ অংশগ্রহণকারীদের ৩৪টি ঝুঁকির তালিকা দেওয়া হয়। সেখান থেকে তারা পাঁচটি প্রধান ঝুঁকি চিহ্নিত করেন।

রাজধানীর ছয় স্থানে ‘জনতার বাজার’ বসাচ্ছে জেলা প্রশাসন

নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ এবং জনজীবনে স্বস্তি আনার লক্ষ্যে রাজধানীর ছয়টি স্থানে ‘জনতার বাজার’ বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। রাজধানীর কামরাঙ্গীচরের কুড়ারঘাট মেডিক্যাল মোড়, মোহাম্মদপুর, গুলশান, মিরপুর, বাড্ডা ও ডেমরা এলাকায় ন্যায্যমূল্যের এই বাজারগুলো বসবে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর কামরাঙ্গীচর কুড়ারঘাট মেডিক্যাল মোড়ে এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ। জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে বাজারের সংখ্যা বাড়বে। রমজানে এসব বাজারের মাধ্যমে ভোক্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বড় সহায়ক হবে। তবে পণ্যের সরবরাহ, বাজারের নিরাপত্তা ও পণ্যের পরিমাণ যেন বেশি হয়– এসব বিষয়ে নজর দেওয়ার তাগিদ দেন তারা। মতবিনিময় সভায় ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ বলেন, ক্রেতাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, কৃষকের কাছ থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্য আসা পর্যন্ত কয়েকটি হাত বদল হয়। তাতে পণ্যের দর কয়েক গুণ বাড়ে। মধ্যস্বত্বভোগীর এই দৌরাত্ম্য কমাতে এমন উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে। মূলত সরাসরি কৃষক ও ভোক্তাদের সংযোগ স্থাপনের জন্য এই বিশেষ বাজার স্থাপন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই বাজারের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে খাদ্যপণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এতে সহায়তা করবে কৃষি বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এ বাজার টেকসইভাবে পরিচালিত হবে এবং রাজধানীর মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে বড় ভূমিকা রাখবে। সভায় জানানো হয়, নিত্যপণ্যের বাজার এখন বেশ চড়া। অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে গেছে পণ্যমূল্য। কিছু অসৎ ব্যবসায়ী ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাতে ভোক্তার ওপর বাড়ছে চাপ। দেখা দিয়েছে জনঅসন্তোষ। উৎপাদক ও আমদানিকারকের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য এনে বিক্রি করলে এসব দৌরাত্ম্য দূর হবে। এ জন্য বিভিন্ন জেলায় এরই মধ্যে প্রশাসনের মাধ্যমে এ ধরনের বাজার বসানো হয়েছে। তা জনমনে ইতিবাচক সাড়া ফেলছে। এ কারণে আশপাশের বাজারেও পণ্যের দর কমতে শুরু করেছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ঢাকায় বাজার বসানো হচ্ছে। জনতার বাজারে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, সবজিসহ নিত্যপণ্য সাশ্রয়ী দামে বিক্রি হবে। প্রাথমিকভাবে কামরাঙ্গীচরসহ ঢাকার ছয় স্থানে বাজার বসলেও পর্যায়ক্রমে পরিসর বাড়বে। বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারি জায়গায় অবকাঠামো নির্মাণ করে স্থানীয় উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী এবং বেকার যুবকদের সম্পৃক্ত করা হবে। শুধু খুচরা বিক্রির ব্যবস্থা থাকবে। পণ্য কেনার জন্য একটি নির্ধারিত মূল্য তালিকা অনুসরণ করা হবে। ক্রেতারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে টাকা পরিশোধ করে একটি কোড পাবেন, যা দেখিয়ে পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। বাজারের বিশেষত্ব জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে এই বাজার। এতে সহযোগিতা করবে সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর ও সংস্থা। দেশের যেখানে যে পণ্যের দাম তুলনামূলক কম থাকবে, সেখান থেকে পণ্য এনে সরাসরি এ বাজারে বিক্রি করা হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বেচাকেনা ও পরিবহন ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় উদ্যোক্তা, ছাত্র-জনতাকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। প্রতিটি পণ্য জেলা প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কমিটির মাধ্যমে নির্ধারিত দরে বিক্রি করা হবে। ক্রয়মূল্যের সঙ্গে প্রকৃত পরিবহন খরচ এবং উদ্যোক্তাদের প্রদেয় যৌক্তিক মুনাফা যোগ করে বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ হবে। তবে ইচ্ছা করলে যে কোনো চাষি, খামারি বা উৎপাদনকারী তার উৎপাদিত পণ্য সরাসরি এনেও বিক্রি করতে পারবেন। হিসাব সংরক্ষণ ও সার্বিক কার্যক্রম ব্যবস্থাপনার জন্য সফটওয়্যার নির্মাণ করা হবে। এর মাধ্যমে পণ্যের ক্রয় ও বিক্রয়মূল্য অনলাইনে দেখা যাবে। খুশি এলাকাবাসী ন্যায্য দরে পণ্য বিক্রির বাজার বসার ঘোষণায় এলাকাবাসী বেশ উচ্ছ্বসিত। রকি আহমেদ নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এটি ভালো উদ্যোগ। তবে পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে হবে। সব ধরনের নিত্যপণ্য রাখতে হবে, যাতে ক্রেতার অন্য বাজারে যেতে না হয়। সেলিম মিয়া বলেন, নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় কাজ। তবে এখন সবজির দর কম। তাই সবজি বিক্রি করলে বাজার জমবে না। চাল, ডালসহ নিত্যপণ্য সাশ্রয়ী দরে বিক্রি করলে মানুষ উপকৃত হবে। বাজার যেন কয়েক দিন পর বন্ধ হয়ে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন, ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) মো. শামীম হুসাইন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার এবং বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তানজিল পারভেজ, লালবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুল ইসলাম, কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম, খাদ্য অধিদফতরের প্রতিনিধি, কৃষি বিপণন অধিদফতরের প্রতিনিধি, ছাত্র প্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

অবিবেচকের মতো ভ্যাটের হার বাড়ানো হয়েছে: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

অবিবেচকের মতো পণ্যে ভ্যাটের হার বাড়ানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানী ফেলো ও শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর বিষয়ে কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর আগারগাঁও বিআইসিসিতে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ২০২৪-এর সিম্পোজিয়াম, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও জাতীয় বাজেট নিয়ে এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক সেক্টর বেশি মনোযোগ পেলেও অর্থনৈতিক সংস্কারে কোনো মনোযোগ নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো অর্থনৈতিক মেন্যুফেস্ট নেই। অনেকেই বলছেন অর্থনীতির ক্ষেত্রে এই সরকার আগের সরকারের মতোই কাজ করছে। অর্থনৈতিক দিকনির্দেশনা না পেলে সংস্কার পক্ষের মানুষ ধৈর্যহারা হবে মন্তব্য করে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান বলেন, এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা, প্রবৃদ্ধির ধারা, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক সুরক্ষা যদি নিশ্চিত করতে না পারি; তাহলে আমরা যারা সংস্কারকে গতিশীল করতে চায় তারা ধৈর্যহারা হয়ে যাবে। সংস্কারের পক্ষের মানুষগুলো অর্থনৈতিক অস্বস্তি ও নিরাপত্তার অভাব থেকে সুষম সংস্কারের পক্ষ থেকেও সরে যেতে পারে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক আশিক চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্টরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।