বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি মূল্যস্ফীতি

চলতি বছরে (২০২৫) পাঁচটি ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝুঁকির বিষয়টি হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। এছাড়া, আরও চার ঝুঁকির বিষয়গুলো হল চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া, পরিবেশ দূষণ, বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক নিম্নমুখিতা। সম্প্রতি প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হিসেবে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া, বিশেষ করে বন্যা ও উচ্চ তাপমাত্রা এবং দূষণকে দায়ী করা হয়েছে। বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ ১০টি দেশের মধ্যে একটি, যেখানে দূষণকে শীর্ষ তিন ঝুঁকির একটি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।’ এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ও ভারত ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। দেশ দুটিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ অনেক ক্ষেত্রেই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। সবুজ অর্থনীতি রূপান্তরের ক্ষেত্রে দূষণ সচেতনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ ডব্লিউইএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আরও দুটি বিষয় খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এর একটি হচ্ছে বেকারত্ব, অন্যটি হচ্ছে অর্থনৈতিক নিম্নমুখিতা। এ দুটি বিষয়ের কারণে বাংলাদেশ উচ্চ মূল্যস্ফীতি, মুদ্রার অবমূল্যায়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ঘাটতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ধীর প্রবৃদ্ধি মোকাবিলা করছে।’ এতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশে ২০২৪ সালে মূল্যস্ফীতির গড়পড়তা হার ছিল ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে তা ছিল ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবমতে, ২০২২ সালে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৭ শতাংশ।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘জলবায়ুগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ সাম্প্রতিক বছরগুলোর অন্যান্য উদ্বেগকে ছাপিয়ে বিশ্বের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াতে পারে রাষ্ট্রভিত্তিক সশস্ত্র সংঘাত।’ দেশভিত্তিক প্রধান ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করতে নির্বাহী মতামত জরিপ (ইওএস) চালায় ডব্লিউইএফ। এটি মূলত ধারণাভিত্তিক জরিপ। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞেস করা হয়, আগামী দুই বছরে আপনার দেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কোনগুলো।’ অংশগ্রহণকারীদের ৩৪টি ঝুঁকির তালিকা দেওয়া হয়। সেখান থেকে তারা পাঁচটি প্রধান ঝুঁকি চিহ্নিত করেন।

রাজধানীর ছয় স্থানে ‘জনতার বাজার’ বসাচ্ছে জেলা প্রশাসন

নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ এবং জনজীবনে স্বস্তি আনার লক্ষ্যে রাজধানীর ছয়টি স্থানে ‘জনতার বাজার’ বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। রাজধানীর কামরাঙ্গীচরের কুড়ারঘাট মেডিক্যাল মোড়, মোহাম্মদপুর, গুলশান, মিরপুর, বাড্ডা ও ডেমরা এলাকায় ন্যায্যমূল্যের এই বাজারগুলো বসবে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর কামরাঙ্গীচর কুড়ারঘাট মেডিক্যাল মোড়ে এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ। জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে বাজারের সংখ্যা বাড়বে। রমজানে এসব বাজারের মাধ্যমে ভোক্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বড় সহায়ক হবে। তবে পণ্যের সরবরাহ, বাজারের নিরাপত্তা ও পণ্যের পরিমাণ যেন বেশি হয়– এসব বিষয়ে নজর দেওয়ার তাগিদ দেন তারা। মতবিনিময় সভায় ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ বলেন, ক্রেতাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, কৃষকের কাছ থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্য আসা পর্যন্ত কয়েকটি হাত বদল হয়। তাতে পণ্যের দর কয়েক গুণ বাড়ে। মধ্যস্বত্বভোগীর এই দৌরাত্ম্য কমাতে এমন উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে। মূলত সরাসরি কৃষক ও ভোক্তাদের সংযোগ স্থাপনের জন্য এই বিশেষ বাজার স্থাপন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই বাজারের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে খাদ্যপণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এতে সহায়তা করবে কৃষি বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এ বাজার টেকসইভাবে পরিচালিত হবে এবং রাজধানীর মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে বড় ভূমিকা রাখবে। সভায় জানানো হয়, নিত্যপণ্যের বাজার এখন বেশ চড়া। অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে গেছে পণ্যমূল্য। কিছু অসৎ ব্যবসায়ী ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাতে ভোক্তার ওপর বাড়ছে চাপ। দেখা দিয়েছে জনঅসন্তোষ। উৎপাদক ও আমদানিকারকের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য এনে বিক্রি করলে এসব দৌরাত্ম্য দূর হবে। এ জন্য বিভিন্ন জেলায় এরই মধ্যে প্রশাসনের মাধ্যমে এ ধরনের বাজার বসানো হয়েছে। তা জনমনে ইতিবাচক সাড়া ফেলছে। এ কারণে আশপাশের বাজারেও পণ্যের দর কমতে শুরু করেছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ঢাকায় বাজার বসানো হচ্ছে। জনতার বাজারে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, সবজিসহ নিত্যপণ্য সাশ্রয়ী দামে বিক্রি হবে। প্রাথমিকভাবে কামরাঙ্গীচরসহ ঢাকার ছয় স্থানে বাজার বসলেও পর্যায়ক্রমে পরিসর বাড়বে। বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারি জায়গায় অবকাঠামো নির্মাণ করে স্থানীয় উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী এবং বেকার যুবকদের সম্পৃক্ত করা হবে। শুধু খুচরা বিক্রির ব্যবস্থা থাকবে। পণ্য কেনার জন্য একটি নির্ধারিত মূল্য তালিকা অনুসরণ করা হবে। ক্রেতারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে টাকা পরিশোধ করে একটি কোড পাবেন, যা দেখিয়ে পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। বাজারের বিশেষত্ব জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে এই বাজার। এতে সহযোগিতা করবে সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর ও সংস্থা। দেশের যেখানে যে পণ্যের দাম তুলনামূলক কম থাকবে, সেখান থেকে পণ্য এনে সরাসরি এ বাজারে বিক্রি করা হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বেচাকেনা ও পরিবহন ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় উদ্যোক্তা, ছাত্র-জনতাকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। প্রতিটি পণ্য জেলা প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কমিটির মাধ্যমে নির্ধারিত দরে বিক্রি করা হবে। ক্রয়মূল্যের সঙ্গে প্রকৃত পরিবহন খরচ এবং উদ্যোক্তাদের প্রদেয় যৌক্তিক মুনাফা যোগ করে বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ হবে। তবে ইচ্ছা করলে যে কোনো চাষি, খামারি বা উৎপাদনকারী তার উৎপাদিত পণ্য সরাসরি এনেও বিক্রি করতে পারবেন। হিসাব সংরক্ষণ ও সার্বিক কার্যক্রম ব্যবস্থাপনার জন্য সফটওয়্যার নির্মাণ করা হবে। এর মাধ্যমে পণ্যের ক্রয় ও বিক্রয়মূল্য অনলাইনে দেখা যাবে। খুশি এলাকাবাসী ন্যায্য দরে পণ্য বিক্রির বাজার বসার ঘোষণায় এলাকাবাসী বেশ উচ্ছ্বসিত। রকি আহমেদ নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এটি ভালো উদ্যোগ। তবে পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে হবে। সব ধরনের নিত্যপণ্য রাখতে হবে, যাতে ক্রেতার অন্য বাজারে যেতে না হয়। সেলিম মিয়া বলেন, নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় কাজ। তবে এখন সবজির দর কম। তাই সবজি বিক্রি করলে বাজার জমবে না। চাল, ডালসহ নিত্যপণ্য সাশ্রয়ী দরে বিক্রি করলে মানুষ উপকৃত হবে। বাজার যেন কয়েক দিন পর বন্ধ হয়ে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন, ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) মো. শামীম হুসাইন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার এবং বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তানজিল পারভেজ, লালবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুল ইসলাম, কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম, খাদ্য অধিদফতরের প্রতিনিধি, কৃষি বিপণন অধিদফতরের প্রতিনিধি, ছাত্র প্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

অবিবেচকের মতো ভ্যাটের হার বাড়ানো হয়েছে: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

অবিবেচকের মতো পণ্যে ভ্যাটের হার বাড়ানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানী ফেলো ও শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর বিষয়ে কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর আগারগাঁও বিআইসিসিতে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ২০২৪-এর সিম্পোজিয়াম, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও জাতীয় বাজেট নিয়ে এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক সেক্টর বেশি মনোযোগ পেলেও অর্থনৈতিক সংস্কারে কোনো মনোযোগ নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো অর্থনৈতিক মেন্যুফেস্ট নেই। অনেকেই বলছেন অর্থনীতির ক্ষেত্রে এই সরকার আগের সরকারের মতোই কাজ করছে। অর্থনৈতিক দিকনির্দেশনা না পেলে সংস্কার পক্ষের মানুষ ধৈর্যহারা হবে মন্তব্য করে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান বলেন, এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা, প্রবৃদ্ধির ধারা, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক সুরক্ষা যদি নিশ্চিত করতে না পারি; তাহলে আমরা যারা সংস্কারকে গতিশীল করতে চায় তারা ধৈর্যহারা হয়ে যাবে। সংস্কারের পক্ষের মানুষগুলো অর্থনৈতিক অস্বস্তি ও নিরাপত্তার অভাব থেকে সুষম সংস্কারের পক্ষ থেকেও সরে যেতে পারে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক আশিক চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্টরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ভ্যাট না কমালে রাস্তায় নামার ঘোষণা প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য উৎপাদকদের

প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ওপর থেকে অতিরিক্ত ভ্যাট প্রত্যাহার করা না হলে সচিবালয়ের সামনে সমাবেশ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ‘বাংলাদেশে অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে করে বাপার সভাপতি এমএ হাশেম বলেন, ‘ভ্যাট বাড়ালেই রাজস্ব আদায় বাড়ে না। রাজস্ব বাড়ানোর অনেক উপায় আছে।’ ‘ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরকার না সরলে সচিবালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করব। কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এমন একটি খাত নিয়ে ব্যবসায় করি, যার সঙ্গে সরাসরি শ্রমজীবী ও কৃষক জড়িত। আমরা যদি টমেটো না কিনি তাহলে কৃষকরা তা কোথায় বিক্রি করবেন।’ সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বাড়ায় সরকার। ভোক্তা পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ৫ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়। এসব পণ্যের মধ্যে প্রক্রিয়াজাত খাবারও আছে। এ অবস্থায় ‘প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে বর্ধিত ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক আরোপ এবং প্রস্তাবিত গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে’ রাজধানীর একটি ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ডাকে বাপা। সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘প্রক্রিয়াজাত খাবারে ভ্যাট বাড়লে বাজারে ১০ টাকার নিচে কোন খাদ্যপণ্যে মোড়ক পাওয়া যাবে না।’ ভ্যাট অপরিবর্তিত রেখে রাজস্ব বাড়ানোর বিকল্প উপায় রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারা। বিকল্প সম্পর্কে এক সাংবাদিক জানতে চাইলে প্রাণ আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘সরকার যদি আমাদের সঙ্গে বসে, আমরা জানিয়ে দেব, দেখিয়ে দেব; আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসুক। আমরা বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বসতে চাই।’ সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, ভ্যাটের হার বাড়ায় বিস্কুট, কেক, আচার, চাটনি, টমেটো পেস্ট, টমেটো কেচাপ, টমেটো সসসহ প্রকিয়াজাত খাবারের দাম বেড়ে যাবে। ফলের রস, কোমল পানীয়, কৃত্রিম ঘ্রাণ ও নন-কার্বোনেটেড পণ্যর দামও বাড়বে। খাদ্যপণ্যে ভ্যাট বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হওয়া প্যাকেটজাত পণ্য। আহসান খান বলেন, ‘এনবিআর তো কোম্পানির কাছে ভ্যাট চায়; পণ্যর দামের সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত থাকে। এখন ভ্যাট বাড়ালে পণ্যর দামও তো বাড়াতে হবে, নইলে ওজন কমাতে হবে।’ আকিজ ফুডস অ্যান্ড বেভারেজের পরিচালক সৈয়দ জহুরুল আলম বলেন, ‘৫ টাকার বিস্কুট, কেক, চকলেটে আমরা কোন লাভ করি না, হয় না। আমরা এটা করি মার্কেটে ঢুকতে। এখন দাম বাড়ালে তো ১০ টাকার বিস্কুটেও লাভ করা সম্ভব নয়।’ এনবিআর রেস্তোরাঁ শিল্পেও ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করেছিল। রেস্তোরাঁ মালিক ও শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে বৃহস্পতিবার আবার তা ৫ শতাংশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ভ্যাট হার আগের অবস্থায় না ফেরানো হলে সড়কে নামার হুঁশিয়ারি দিয়ে সৈয়দ জহুরুল আলম বলেন, ‘এটা জনবান্ধব সরকারের সিদ্ধান্ত নয়। তারা (এনবিআর) তো আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারত। সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর অনেক পথ আছে।’ এনবিআরকে উদ্দেশ করে বাংলাদেশ বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভুইয়া বলেন, ‘রাজস্ব বাড়ানোর অনেক পথ আছে, আমরা দেখিয়ে দেব; আমাদের সঙ্গে বসেন।’ এসিআই অ্যাগ্রো বিজনেসের প্রেসিডেন্ট এফএইচ আনসারি বলেন, ‘কৃষি প্রধান দেশে খাদ্যপণ্যে ভ্যাট তুলে দেওয়া উচিত। কৃষিতে বাণিজ্যের কারণে কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। আমরা যে পণ্য বানাই তা সাধারণ মানুষ খায়; ধনীরা খায় না। দাম বাড়ালে সাধারণ মানুষের উপর পড়বে।’’ সারা দেশে বাপার সদস্য সংখ্যা ৪০০। এর বাইরেও প্রায় পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠান প্রক্রিয়াজাত খাবার উৎপাদন করছে বলে জানানো হয়। দেশে তৈরি প্রক্রিয়াজাত খাবারের কাঁচামালের ৮০-৯০ শতাংশই অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়। এসব পণ্যর রপ্তানি বাজার বতর্মানে এক বিলিয়ন ডলার। বাপার সাধারণ সম্পাদক ইকতাদুল হকের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে এসএমসি এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ নাসির, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

এস আলম পরিবারের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ

আলোচিত ব্যবসায়ী মো. সাইফুল আলম (এস আলম) ও তার পরিবারের সদস্যদের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মীর মোহাম্মদ আলী সালাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার রয়েছে, যা অবরুদ্ধ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সম্পদ’ অনুসন্ধানকালে এসব শেয়ারের সন্ধান পাওয়া যায়।’ দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমির হোসেন বলেন, ‘দুদকের উপ-পরিচালক আবু সাঈদের আবেদনের উপর শুনানি করে বিচারক এ আদেশ দেন।’ আবেদনে বলা হয়, ‘এস আলম তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস ও অন্যান্য দেশে এক বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানকালে তার ও তার পরিবারের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট শেয়ারের তথ্য পাওয়া যায়।’ এতে আরো বলা হয়, ‘এসব স্থাপনা এবং স্থাবর সম্পত্তিগুলো অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া না হলে অভিযোগ নিষ্পত্তির আগেই বেহাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ এছাড়া অস্থাবর সম্পদগুলো মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২’-এর ১৪ ধারা অনুযায়ী অবরুদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) এস আলম ও তার পরিবারের ২০০ কোটি টাকা মূল্যের ১৬টি স্থাবর সম্পত্তি জব্দ ও ২৫ কোটি টাকাসহ তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ৮৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। ক্রোক করা ১৬ সম্পত্তির মধ্যে আছে গুলশানের ১০ তলা ভবন এস আলম টাওয়ার, ধানমন্ডিতে এক বিঘা জমিসহ ৬ তলা ভবন, ধানমন্ডি লেক সার্কাসে ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ জমিসহ ৪ তলা ভবন, গুলশানের ২ হাজার ৬৫৮ বর্গফুট জমির ওপর নির্মিত ফ্ল্যাট, গুলশান-২’-এর দশমিক ৭ হাজার ৮৮৮ একর জমি, উত্তরা আবাসিক এলাকায় ৭ তলা ভবন, ভাটারাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ১০৩ দশমিক ৩ কাঠা জমির প্লট এবং পৃথক পৃথক ১ দশমিক ৭ হাজার ২০০ একর জমি, ৯৬ কাঠা জমি, ১ দশমিক ৯৫৩৬ একর জমি, ১১ দশমিক ১০৬১ বিঘা জমি ও ১৩১ দশমিক ০৪ কাঠা জমি। অবরুদ্ধ করা ৮৭টি ব্যাংক হিসাবের মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার ১৯টি হিসাবে ১২ কোটি ২৪ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬৩ টাকা ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার ৬৮টি হিসাবে ১৩ কোটি ৫৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা অবরুদ্ধ করা হয়। এরও আগে ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর একই আদালত সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশে ১ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে এস আলম ও তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আদালত। নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া অন্যরা হলেন সাইফুল আলমের স্ত্রী ফারজানা পারভীন, দুই ছেলে আশরাফুল আলম ও আহসানুল আলম; ছয় ভাই মোরশেদুল আলম, সহিদুল আলম, রাশেদুল আলম, আবদুস সামাদ, ওসমান গণি ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান। এছাড়া আবদুস সামাদের স্ত্রী শাহানা ফেরদৌস, ওসমান গণির স্ত্রী ফারজানা বেগম ও মিশকাত আহমেদ নামের এক ব্যক্তি দেশত্যাগ করতে পারবেন না। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন অনিয়ম সামনে আসে। চট্টগ্রামভিত্তিক এ গ্রুপের চেয়ারম্যান এস আলমের বিরুদ্ধে ব্যাংক খাতে অনিয়ম, টাকা পাচার, আয়কর ফাঁকির অভিযোগ তদন্ত শুরু করে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। দুদকও ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে। ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় এস আলমের বিরুদ্ধে জোরজবরদস্তি করে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার অভিযোগ বহু পুরনো। পরে তিনি ও তার ব্যবসায়ী গোষ্ঠী শরীয়াহভিত্তিক আরও কয়েকটি ব্যাংকের পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ নেন। এসব ব্যাংক থেকে বিপুল অর্থ নামে ও নাম সর্বস্ব কোম্পানি খুলে অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এরইমধ্যে এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। তাদের বিও অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ করে শেয়ার লেনদেনও স্থগিত করা হয়েছে। নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিভিন্ন ব্যাংকের শেয়ার সরকারের মালিকানায় নেওয়ার কথা বলেছেন। এর মধ্যে গত ২৯ আগস্ট এস আলমসহ ৭ আলোচিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মালিকানা হস্তান্তর স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে যৌথমূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরকে চিঠি দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পরের দিন ৩১ আগস্ট সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট জানায়, এস আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন ও তাদের ছেলে আহসানুল আলম ও আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের তথ্য মিলছে।

ওষুধ-পোশাকসহ নিত্যপণ্যের ভ্যাট রিভিউ হচ্ছে: অর্থ উপদেষ্টা

ওষুধ ও পোশাকসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর যে বাড়তি ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে, তা রিভিউ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। বাড়তি ভ্যাটের কারণে বাজারে পণ্যের দামে এরই মধ্যে প্রভাব পড়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ভ্যাটের কারণে সম্পূর্ণ না। দামের প্রভাব কিছু কিছু জায়গায় হয়তো ভ্যাটের কারণে হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে এটা হলো ম্যানুপুলেশন, সাপ্লাই চেনের ওপর।’ তিনি বলেন, ‘ভ্যাটের মাধ্যমে আমি দাম বাড়িয়েছি কয়েকটি জিনিসের। ফোন, বিদেশি ফলের জুস কয়টা মানুষ কেনে। অতএব ওটার ওপর পড়েছে (ভ্যাটের কারণে দাম বেড়েছে) তা না। তবু আজ আমরা রিভিউ করছি, কিছু কিছু ম্যাটার। আপনারা পরে জানতে পারবেন।’ সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘অত্যাবশ্যকীয় কিছু কিছু জিনিসের বিষয়ে আমরা বলেছি। তারপর ওষুধ ও পোশাকসহ অত্যাবশ্যকীয় যেসব পণ্য সাধারণ লোকজনের ওপর প্রভাব ফেলে, সেগুলো রিভিউ করা হচ্ছে। আমদানি করা ফলের জুস- এগুলো আমি কেন কমাব?’ সৌদি আরবে ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) অংশগ্রহণ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আইডিবি সাধারণত আমাদের বিরাট একটা অঙ্ক দেয় গ্যাস ও পেট্রোলিয়ামের জন্য। আমি এবার অনুরোধ করেছি, সারের জন্য অর্থ দিতে। তারা রাজি হয়েছে।’ সম্প্রতি পটেটো ফ্ল্যাকস, কর্ন, মেশিনে প্রস্তুত বিস্কুট, হাতে তৈরি বিস্কুট, আচার, চাটনি, টমেটো পেস্ট বা টমেটো কেচআপ বা সস, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাল্প, তেঁতুলের পেস্ট, ট্রান্সফরমারের তেল, লুব্রিকেন্ট তেল, এলপি গ্যাস, আমদানি করা বাল্ক পেট্রোলিয়াম বিটুমিন, বিআরটিএ থেকে নেওয়া লেমিনেটেড ড্রাইভিং লাইসেন্স, কঠিন শিলা, ফেরো-ম্যাঙ্গানিজ ও ফেরো-সিলিকো ম্যাঙ্গানিজ, ফেরো সিলিকন অ্যালয়, এইচআর কয়েল থেকে সিআর কয়েল, সিআর কয়েল থেকে জিপি শিট, জিআই তার, ৫ কেভিএ থেকে ২ হাজার কেভিএ বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার, চশমার প্লাস্টিক ফ্রেম, চশমার মেটাল ফ্রেম, রিডিং গ্লাস, নারিকেলের ছোবড়া থেকে তৈরি ম্যাট্রেসের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। এসব পণ্যের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া রেস্তোরাঁর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ, ইনভেন্টিং সংস্থার ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিচেন টাওয়াল, টয়লেট টিস্যু, ন্যাপকিন টিস্যু, ফেসিয়াল টিস্যু, হ্যান্ড টাওয়াল, সানগ্লাস, নন-এসি হোটেল, মিষ্টান্ন ভান্ডার, প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটা, নিজস্ব ব্র্যান্ড-সংবলিত তৈরি পোশাকের শোরুম বা বিপণিবিতান- এসব পণ্য ও সেবার ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫ শতাংশ। বিদ্যুতের খুঁটি, মোটর গাড়ির গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপ, ডকইয়ার্ড, ছাপাখানা, চলচ্চিত্র স্টুডিও, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী (সিনেমা হল), চলচ্চিত্র পরিবেশক, মেরামত ও সার্ভিসিং, স্বয়ংক্রিয় বা যন্ত্রচালিত করাতকল, খেলাধুলা আয়োজক, পরিবহন ঠিকাদার, বোর্ড সভায় জোগানকারী, টেইলারিং শপ ও টেইলার্স, ভবন রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা, সামাজিক ও খেলাধুলা-বিষয়ক ক্লাব ইত্যাদি সেবার ক্ষেত্রে ভ্যাট ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।

পূবালী ব্যাংকের অঞ্চল ও কর্পোরেট শাখা প্রধানদের প্রথম ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

পূবালী ব্যাংক পিএলসির অঞ্চল ও কর্পোরেট শাখা প্রধানদের প্রথম ব্যবসায়িক সম্মেলন-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সব অঞ্চল প্রধান, কর্পোরেট শাখা প্রধান ও সব বিভাগ প্রধান ও নির্বাহীদের অংশগ্রহণে সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন পূবালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুরুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধাননির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী।ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইছা, মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, আহমদ এনায়েত মনজুর, মো. শাহনেওয়াজ খান, মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান ও সুলতানা সরিফুন নাহার সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।সম্মেলনে মনজুরুর রহমান বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-নীতি মেনে চলার মাধ্যমে ব্যাংকিং পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেন। ব্যাংকিং নীতিমালার যেন কোন ধরনের ব্যত্যয় না ঘটে সে দিকটায় বিশেষ দৃষ্টি দেয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান। মোহাম্মদ আলী বৈশ্বিক অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গতি ফেরাতে ব্যাংকিং খাতের প্রয়োজনের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সকলে মিলে সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে কাজ করার মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কনফারেন্সে ব্যবসায়িক অর্জন ও বিশ্লেষণ এবং করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সম্মেলনে ২০২৫ সালে ব্যাংকের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিভিন্ন কৌশল ও দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ‘বার্ষিক ঝুঁকি সম্মেলন- ২০২৫’ অনুষ্ঠিত

শরি‘আহ্ ভিত্তিক স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসির ‘বার্ষিক ঝুঁকি সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার (১১ জানুয়ারি) ঢাকার র‌্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ রিস্ক অফিসার মো. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান। সম্মেলনে ব্যাংকিং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কৌশল, নীতিমালা ও এর প্রায়োগিক বিষয়গুলোর উপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়। সম্মেলনে বক্তব্য দেন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ভিপি ও ঝুকি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সব বিভাগীয় প্রধান, শাখা প্রধান ও প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ সম্মেলনে অংশ নেন।

গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাবে আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা, উসকে দেবে মূল্যস্ফীতি

চড়া সুদহার, জ্বালানি সংকট, সেই সঙ্গে গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য ফের বাড়ানোর পাঁয়তারার খবরে কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে ব্যবসায়ীদের। এমন বাস্তবতায় নতুন করে গ্যাসের দাম না বাড়ানোর আহ্বান তাদের। তবে, দাম বাড়লে উৎপাদন খরচ পণ্যের ওপর দিয়েই উঠাতে চাইবেন ব্যবসায়ীরা। এতে উসকে যাবে মূল্যস্ফীতি, ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে রফতানি খাত, মন্তব্য অর্থনীতিবিদের। চাহিদার বিপরীতে দেশে এখন প্রতিদিন গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি ১০০-১২০ কোটি ঘনফুট। ব্যবহৃত গ্যাসের ৭৫ শতাংশ পূরণ হয় দেশি উৎস থেকে, বাকি ২৫ শতাংশ আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) থেকে।শতাধিক পণ্যে ভ্যাট বাড়ানোর পর এবার গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রচেষ্টা চলছে। আবাসিকে দাম বাড়ানোর পাশাপাশি শিল্পখাতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা)। এই দাম কার্যকর হলে ব্যবসায়-বাণিজ্য থমকে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।শ্রাবণী নিটওয়্যার লিমিটেডের মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘গ্যাসের দাম বাড়লে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ খাতের বেতন-বোনাস দিতে চাপে পড়তে হবে। অনিশ্চয়তায় পড়বে পুরো খাত।’জেএস স্টাইল বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গ্যাসের দাম বাড়লে বাড়বে পণ্যের দামও। এতে কমবে ক্রেতাদের আগ্রহ।’কর বাড়ানোর পাশাপাশি চড়া সুদহার ব্যবসায়ীদের জন্য এখন বড় চাপ। এর মাঝে জ্বালানির দাম বাড়লে রফতানিখাত চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)। সংগঠনটির পরিচালক মিনহাজুল হক বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দাম বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়।’ব্যবসায় খরচ বাড়লে তা পণ্যের দাম বাড়িয়েই তুলে নিতে চাইবে ব্যবসায়ীরা। ফলে, আরেক দফা মূল্যস্ফীতি উসকে যাবে বলে মন্তব্য অর্থনীতিবিদের। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আইনুল ইসলাম বলেন, ‘এদিকে শুল্ক-ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে শতাধিক পণ্যে। অন্যদিকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা চলছে। এটি বাস্তবায়ন হলে ক্ষতির মুখে পড়ে অনেকেই ব্যবসায় ছেড়ে দেবেন। যা প্রভাব ফেলবে রফতানি খাতে।’শ্রমিক অসন্তোষ ও বেতন-ভাতা বাড়ানোয় চাপে থাকা শিল্পখাতে নতুন করে জ্বালানির দাম বাড়ার চাপ কর্মসংস্থানেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

হোটেল-রেস্তোরাঁয় ভ্যাট থাকছে আগের মতোই

দেশের রেস্তোরাঁর খাবারের বিলের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হতে যাচ্ছে। ফলে রেস্তোরাঁয় নতুন করে আর ভ্যাট বাড়বে না। আগের মতোই রেস্তোরাঁর খাবারের বিলের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ এ বিষয়ে আদেশ জারি করা হবে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছেন এনবিআরের মূসক আইন ও বিধি বিভাগের দ্বিতীয় সচিব ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সী। তিনি বলেন, গত ৯ জানুয়ারি অধ্যাদেশ জারি করে হোটেল, রেস্তোরাঁ খাতে ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছিল। তবে সেটি আবারও আগের হারে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ হোটেল, রেস্তোরাঁ খাতে ভ্যাট ৫ শতাংশই থাকছে। গত ৯ জানুয়ারি অধ্যাদেশ জারির পর নানা মহলে এ নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। বর্ধিত ভ্যাট হার কমানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার সারাদেশে মানববন্ধন করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। এ অবস্থায় বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রথম সচিব (মূসক নীতি) মশিউর রহমানের সই করা এক চিঠিতে এনবিআর জানায়, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির পাঠানো পত্র জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করে রেস্তোরাঁ খাতে ভ্যাট হার পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ অবস্থায়, ভ্যাটের আওতাসহ রাজস্ব বৃদ্ধি ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সমিতির বিশেষ সহযোগিতা কামনা করেছে এনবিআর। এদিকে, আরও কয়েকটি পণ্যে ভ্যাট কমানোর চিন্তাভাবনা চলছে জানিয়ে মো. বদরুজ্জামান মুন্সী বলেন, তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বাড়ল স্বর্ণের দাম, ভরি কত টাকা?

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১৫৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এ দাম বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। এর আগে গত ২৪ ও ৩০ ডিসেম্বর দুই দফা সোনার দাম কমানো হয়। দুই দফা দাম কমানোর পর এখন দাম বাড়ানো হল। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এ দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ১৫৫ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৯৭ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৯৪৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৮০৫ টাকা কমিয়ে ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে গেল ৩০ ডিসেম্বর সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৮৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৪ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৩২ হাজার ১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৮৬৩ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৩ হাজার ১৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৭৩৫ টাকা কমিয়ে ৯২ হাজার ৮৬৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। বুধবার পর্যন্ত এ দামেই সোনা বিক্রি হয়েছে। সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাড়ল সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতায় বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। স্কিমের ধরন অনুযায়ী নতুন মুনাফার হার ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত করা হয়েছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এই মুনাফার হার কার্যকর হবে। এতে করে মুনাফাহার অন্তত এক শতাংশ বেড়েছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মুনাফার হার বাড়ানো পাঁচ স্কিমের মধ্যে রয়েছে পরিবার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র ও পোস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিট। সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগকারীদের দুটি ধাপ রাখা হচ্ছে। প্রথম ধাপ ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচের বিনিয়োগকারী। আর দ্বিতীয় ধাপটি হলো ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার ওপরের বিনিয়োগকারী। পরিবার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার কম বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীরা সাড়ে ১২ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পাবেন ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ। পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এছাড়া, পোস্ট অফিসে ফিক্সড ডিপোজিটে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার করা হচ্ছে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুনের মধ্যে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই মুনাফার হার কার্যকর হবে। তবে এক জানুয়ারির আগে ইস্যুকৃত সচ সঞ্চয়পত্রে ইস্যুকালীন মেয়াদে, ইস্যুকালীন মুনাফার হার প্রযোজ্য হবে। তবে, পুনঃবিনিয়োগের ক্ষেত্রে পুনঃবিনিয়োগের তারিখের মুনাফার হার প্রযোজ্য হবে। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ছয় মাস পর জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের বিনিয়োগের মুনাফার হার পুনরায় নির্ধারণ করা হবে। তবে, বিনিয়োগকারী ইস্যুকালীন বিদ্যমান মুনাফার পর বিনিয়োগকালের পূর্ণ মেয়াদে পাবেন। অর্থাৎ, ছয় মাস পর নতুন মুনাফার হার নির্ধারণ করা হলেও জানুয়ারি-জুন সময়ে যে মেয়াদ পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনা হবে, সেই সময় পর্যন্ত এখন যে হার নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই হারে মুনাফা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড ও ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক সাধারণ হিসাব এই চারটি স্কিমের মুনাফার হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এদিকে, মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে সঞ্চয়পত্র নগদায়নের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ, ৩ মাস অন্তর মুনাফা সঞ্চয়পত্রে ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ, পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ, পরিবার সঞ্চয়পত্রে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং পেস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিটে ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা পাওয়া যাবে। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র: প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা ৫ বছর বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরারা মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র: প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১১ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। পেনশনার সঞ্চয়পত্র: প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। পরিবার সঞ্চয়পত্র: প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। পোস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিট: প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। আর দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরা প্রথম বছরে ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১১ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।

দেশি-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে হিটম্যাপ পরিকল্পনা চূড়ান্ত

‘দেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যেমন রয়েছে, তেমনি চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো ধীরে ধীরে মোকাবেলা করে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে হিটম্যাপ নামে একটা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে ২০টি প্রতিষ্ঠানের মতামত নেয়া হয়েছে। এর ভিত্তিতে ১৯টি অগ্রাধিকার খাত নির্বাচন করা হয়েছে। হিটম্যাপ অনুযায়ী এসব খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হবে।’ ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মঙ্গলবার (১৩ জানুয়ারি) ‘বিনিয়োগের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনার করে, সেখানে এসব বিষয় তুলে ধরে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। সেমানারে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশকে প্রভাবিতকারী গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে বিডার পক্ষ থেকে আগামী ৭-১০ এপ্রিল বিনিয়োগ সম্মেলন করার ঘোষণা দেয়া হয়। সম্মেলনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ইকোনমিক জোনগুলো পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। সেমিনারটি ঢাকায় ইআরএপের অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয়। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইআরএপের সভাপতি দৌলত আকতার মালা। বক্তব্য দেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ, এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হাফিজুর রহমান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান, লাফার্স হোলসিম বাংলাদেশের সিইও মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরি। সেমিনারে ভ্যাট পরিস্থিতি নিয়ে চৌধুরী আশিক বলেন, ‘ভ্যাটের বিষয়টি নিয়ে তারা এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করবেন।’ গ্যাস পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ থাকা উচিৎ।’ মালেশিয়ার উদাহারণ দিয়ে চৌধুরী আশিক বলেন, ‘দেশটিতে উৎপাদিত গ্যাসের ৭০ শতাংশই শিল্পে ব্যবহার হয় এবং গ্যাসের বরাদ্দ শিল্প মন্ত্রণালয়ই করে থাকে।’ শিল্পে গ্যাস সরবরাহ সংকট নিয়ে উদ্যোক্তাদের উদ্বেগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আপাতত রাষ্ট্রায়ত্ত বন্ধ শিল্প কারখানাগুলো বেসরকারী বিনিয়োগকারীদের কাছে ছেড়ে দেওয়া যায় কিনা তা চিন্তা করছি। কারণ, এখানে ইতিমধ্যে গ্যাস-বিদ্যুতেরে সরবরাহ সুবিধা রয়েছে। ফলে, কারখানাগুলো দ্রুত উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব।’ একে আজাদ বলেন, ‘গ্যাস সরবরাহে সিস্টেম লসের নামে ১০ শতাংশ চুরি বন্ধ করা গেলে নতুন করে গ্যাসের দর বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকারই পারে এ চুরি বন্ধ করতে। কারণ, তাদের ভোটের প্রয়োজন নেই।’ নতুন করে গ্যাসের দর বৃদ্ধি ও ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সরকার যে নীতি নিচ্ছে, এগুলো বাস্তবায়ীত হলে আমরা কোথায় যাব? গ্যাস ও ভ্যাট বৃদ্ধির আগে অর্থনীতি এবং জনজীবনে এর কি প্রভাব পড়বে তা খতিয়ে দেখা হয়নি। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ নিয়ে কোন আলোচনা করা হয়নি।’ একে আজাদ বলেন, ‘পণ্য আমদানি, রপ্তানি ও মূলধনী যন্ত্রের আমদানি কমেছে। এই চিত্র বলছে বিনিয়োগ কমেছে। অর্থনীতির এই পরিস্থিতে গ্যাস ও ভ্যাট বৃদ্ধির প্রভাব কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে, তা চিন্তা করা উচিৎ।’ তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ী মানেই যেন অপরাধী। সবাই চুষে খেতে চায়। অনিয়মে অন্তত ৪০ শতাংশের মত ব্যয় করতে হচ্ছে।’ এ প্রসঙ্গে একে আজাদ আরো বলেন, ‘আসলে সব সরকারের চরিত্রই এক। গত সরকার বলেছিল গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন করবে। কিন্তু তারা সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি।’ গ্যাস ও ভ্যাট প্রসঙ্গে আবুল কাশেম খান বলেন, ‘নীতির ধারাবাহিকতার অভাব বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রধান প্রতিবন্ধকতা। এসআরও জারি করে সংশ্লিষ্ঠ গোষ্ঠীর সুবিধার জন্য ঘনঘন নীতির পরিবর্তন করা হয়। নীতি গ্রহণে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করা হয় না। দুর্নীতির কারণে সব খাত নষ্ট হয়ে গেছে। এসব ভেঙে দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্থার করতে হবে। দেশের জন্য কাজ করতে হবে। যাতে টেকসই বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি হয়।’ মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরি বলেন, ‘নতুন বিনিয়োগ আনতে দেশের বাইরে গিয়ে রোড শো করা হয়েছে। অথচ দেশেরে বিদ্যমান বিনিয়োগের পরিস্থিতি বুঝার প্রয়োজন ছিল। তাদের চ্যালেঞ্জগুলো সনাক্ত করার দরকার ছিল। বিনিয়োগকারীদের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেই। অথচ এই বিনিয়োগকিারীরাই বৈদেশিক বিনিয়োগে দেশের পক্ষে কাজ করবে।’ তিনি বলেন, ‘নীতি ঠিক নেই, আইন শৃঙ্খলা ঠিক নেই, নতুন একটা উদ্যোগ নিতে গেলে ২৩-২৭টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নিতে হয়। ট্রড লাইসেন্সের মত কাজগুলো করা সময় সাপেক্ষ। এসব অসুবিধা দূর করতে হবে।’ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘স্টক মার্কেটে বিনিয়োগকরলে দস্যুরা নিয়ে যায়। দোকান দিলে চাঁদাবাজরা নিয়ে যাবে। এই অনিশ্চয়তা নিয়ে বিনিয়োগ বাড়ানো সম্ভব নয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘দেশে বিনিয়োগের পথ সুগম করতে ট্যাক্স হ্যাভেন না হলেও একটু সুবিধা দিতে হবে। যাতে ব্যবসায় করতে গিয়ে কিছু পুঁজি নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে না হয়।’ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিডার হেড অব বিজনেস ডেভলপমেন্ট নাহিয়ান রহমান রচি।

পল্টনে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের এটিএম-সিআরএম বুথ উদ্বোধন

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পল্টন শাখার অধীনে এটিএম-সিআরএম বুথ বায়তুল মোকাররম মসজিদ কমপ্লেক্স মার্কেটে উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এ বুথের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও ঢাকা সেন্ট্রাল জোনপ্রধান মাহমুদুর রহমান, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পল্টন শাখাপ্রধান মুহাম্মদ নুরুল করিম, বায়তুল মোকাররম মসজিদ কমপ্লেক্স মার্কেট ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াকুব আলীসহ ব্যাংকের নির্বাহী ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ বুথে গ্রাহকরা ২৪/৭ নগদ টাকা জমা ও উত্তোলন করতে পারবেন। এছাড়া, ইসলামী ব্যাংকের এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে ফান্ড ট্রান্সফার, অ্যাকাউন্ট, কার্ড কিংবা সেলফিনে তাৎক্ষণিক টাকা জমা, ব্যালেন্স অনুসন্ধান ও মিনি স্টেটমেন্ট গ্রহণ, সেলফিন ও এম-ক্যাশের মাধ্যমে ক্যাশ-আউট সুবিধা, ক্যাশ বাই কোডের মাধ্যমে নগদ টাকা উত্তোলন ও প্রেরণের সুবিধা, যে কোন অপারেটরে মোবাইলে রিচার্জ, খিদমাহ্ কার্ডের বিল পরিশোধ, চেক বই অনুরোধ, ও ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট সুবিধাসহ বহুমুখী সেবা এ অত্যাধুনিক মেশিনে পাওয়া যাবে।

ন্যাশনাল ব্যাংকের কোর ব্যাংকিং সিস্টেম টেমেনোস আরটুটুর সফল আপগ্রেডেশন উদযাপন

ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড সম্প্রতি উন্নত কোর ব্যাংকিং সিস্টেম (সিবিএস) টেমেনোস ২২ সংস্করণে সফলভাবে মাইগ্রেশন সম্পন্ন করেছে। এই আধুনিক সিস্টেমটি উন্নত প্রযুক্তি, শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা, উন্নত ব্যবসায়িক বিশ্লেষণ এবং গ্রাহক সম্পর্ক ব্যবস্থাপনার উন্নত বৈশিষ্ট্যগুলো এনেছে; যা গ্রাহকদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করবে।এ উপলক্ষে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কেক কাটার মাধ্যমে সফল আপগ্রেডেশন উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) শেখ আকতার উদ্দিন আহমেদ। উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ রইস উদ্দিন ও ইমরান আহমেদ, এসইভিপি ও আইটি বিভাগের প্রধান কাজী কামাল উদ্দিন আহমেদ, ব্যাংকের অন্যান্য বিভাগীয় প্রধানগণ এবং টেমেনোস, বিজিআই ও এফডিএসের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

পূবালী ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে সুলতানা সরিফুন নাহারের নিয়োগ

পূবালী ব্যাংক পিএলসি পরিচালনা পর্ষদ সুলতানা সরিফুন নাহারকে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি এই পদে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রথম নারী, যা ব্যাংকের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ডিএমডি পদে নিয়োগের পূর্বে সুলতানা সরিফুন নাহার ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় মহাব্যবস্থাপক ও শাখা প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। একইসঙ্গে তিনি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ সালে সুলতানা সরিফুন নাহার পূবালী ব্যাংকে প্রবেশনারি সিনিয়র অফিসার হিসেবে ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরু করেন। ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে তিনি তার অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করেছেন। তিনটি কর্পোরেট শাখাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শাখায় ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে তিনি পেশাগত দক্ষতা ও কর্মনিষ্ঠার পরিচয় দেন। এছাড়া, ঢাকা কেন্দ্রীয় অঞ্চলের অঞ্চল প্রধান হিসেবে শাখাগুলোর ব্যাংকিং সেবার মানোন্নয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সুদীর্ঘ পেশাগত জীবনে সুলতানা সরিফুন নাহার দেশে-বিদেশে অসংখ্য সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন। মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ ও আম্বিয়া খাতুনের সন্তান সুলতানা সরিফুন নাহার ব্যক্তিজীবনে দুই পুত্রের গর্বিত জননী। তিনি ‘ওল্ড স্কাইট ডিইউএ’র একজন সক্রিয় সদস্য ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির আজীবন সদস্য।

সালমানের ৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকার শেয়ার জব্দ

ক্ষমাতচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকার শেয়ার জব্দ করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) অনুরোধে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। বিএসইসি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে সালমান এফ রহমানের নাম ব্যাপকভাবে জড়িয়ে আছে। ১৫ বছরে পুঁজিবাজারে বেপরোয়া লুটপাট করা হয়েছে। ৫ আগস্টের পর বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। সম্প্রতি সালমান এফ রহমানের শেয়ার জব্দের জন্য বিএফআইইউ থেকে বিএসইসিকে অনুরোধ করা হয়। ফলে, সালমান এফ রহমানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকার শেয়ার ছাড়াও আরও কয়েকজন উদ্যোক্তার ৭০০ কোটি টাকার শেয়ার জব্দ করেছে বিএসইসি। অন্যদিকে, আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক হিসাব ও পুঁজিবাজারের উদ্যোক্তাদের ২২ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে বিএফআইইউ। এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি এবং পুঁজিবাজার থেকে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া, আলোচ্য সময়ে ১১২টি মামলায় ৩৬৬ ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বিএফআইইউ। যেসব হিসাবে অনিয়ম পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে সালমান এফ রহমান ও এস আলমের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিএসইসি। সালমান এফ রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন বলে ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত ওই তথ্যের ভিত্তিতে এস আলম ও সালমান এফ রহমানের পরিবার এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে শেয়ারবাজারে অনিয়ম তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। ঋণখেলাপি, জমি জালিয়াতি, অর্থ পাচার ও শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি বললেই সবার আগে আসে সালমানের নাম। তার হাত ধরেই দেশের ঋণখেলাপির সংস্কৃতির বিকাশ হয়। অর্থাৎ, এ জগতে তার একচ্ছত্র আধিপত্য। বিভিন্ন তথ্য বলছে, ‘নামে-বেনামে তার ঋণের পরিমাণ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। শুধু জনতা ব্যাংকেই বেক্সিমকোর ২৯ প্রতিষ্ঠানের ঋণ সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ২ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা।’ এ হিসাবে পরিশোধিত মূলধনের ৯৩৪ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড ও বেক্সিমকো ফার্মার ঋণ ৬ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। কিন্তু, এ দুই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ১২৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ, পরিশোধিত মূলধনের ছয়গুণ ঋণ কোম্পানি দুটিতে। এর মধ্যে বেক্সিমকো লিমিটেড ৫ হাজার ৯৫৭ কোটি ও বেক্সিমকো ফার্মার ৭৪৬ কোটি টাকা।

পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি করবে বাংলাদেশ

পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি করতে দেশটির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ। সচিবালয়ের খাদ্য মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত স্মারকে সই করেছেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ইমদাদ ইসলাম পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তানের চেয়ারম্যান সৈয়দ রাফিও বশির শাহ এবং খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল খালেক এ সমঝোতা স্মারকে সই করেন। পাকিস্তান থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে আতপ চাল আমদানির জন্য আজ মন্ত্রণালয়ে এ সমঝোতা স্মারক সম্পাদিত হয়েছে। দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি ও শক্তিশালী করতে এই সমঝোতা স্মারক এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে বলে আশা করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

৩৬৬ জনের জব্দ করা ব্যাংক হিসাবে ১৫ হাজার কোটি টাকা

সন্দেহজনক লেনদেন, অর্থপাচার, অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠা আওয়ামী লীগ শাসনামলের প্রভাবশালীদের জব্দ করা ব্যাংক হিসাবে ১৫ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে তিন শতাধিক সাবেক মন্ত্রী-এমপি, বিতর্কিত ব্যবসায়ী ব্যক্তিদের জব্দ করা ব্যাংক হিসাবে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এই অর্থের সন্ধান পেয়েছে। সূত্র জানায়, জব্দ করা হিসাবের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকি ববির হিসাব রয়েছে। এ ছাড়া, আছে এস আলম, সামিট, বেক্সিমকো গ্রুপ, বসুন্ধরা, ওরিয়ন, নাসা, জেমকন, নাবিল গ্রুপ এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদসহ সাবেক সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হিসাব।হিসাবগুলো দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশে এখনো জব্দ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাদের আমলের মন্ত্রী-সাংসদ, বিভিন্ন সহযোগীসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার শীর্ষ পদে থাকা ব্যক্তিদের দুর্নীতি, অর্থপাচার ও ঋণ কেলেঙ্কারির খবর বেড়িয়ে আসছে। অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আটক ও গ্রেপ্তার হয়ে জেলে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব তলব ও জব্দ করে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ। একইসঙ্গে তাদের স্ত্রী, সন্তানসহ ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়। এখন এসব ব্যাংক হিসাবের চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে আর্থিক খাতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। বিএফআইইউর একাধিক কর্মকর্তা জানান, অর্থপাচার রোধ ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আপসহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রথমত পাচারের সঠিক তথ্য উদ্ধার, পরিমাণ নির্ণয় ও পরে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দিকে আগানো হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যদি কোনো প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গ্রুপের বিরুদ্ধে পাচারের তথ্য প্রমাণিত হয়, তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। কিন্তু তাদের ব্যবসায় ক্ষত সৃষ্টি হতে দেওয়া হবে না। বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর সন্দেহজনক লেনদেন ও বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে দেড় হাজারের বেশি ব্যাংক হিসাব তলব ও জব্দ করছে বিএফআইইউ। তবে ৮ আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বিএফআইইউ, এনবিআর এবং দুদক যৌথ প্রচেষ্টায় ৩৬৬ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে। তাদের অ্যাকাউন্টে ১৫ হাজার কোটি টাকা পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত ১১২টি মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

শিল্পের সাথে আবাসিকেও গ্যাসের দাম বাড়াতে চায় তিতাস

মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের বিল বাড়াতে চায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের সঙ্গে এই বিষয়টি থাকছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ বলেন, ‘মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকরা অনেক বেশি গ্যাস ব্যবহার করছে। এক চুলা ৫৫ ঘনমিটারের বিল ও দুই চুলা ৬০ ঘনমিটারের বিল আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু, ক্ষেত্র বিশেষে ১০০ ঘনমিটার পর্যন্ত গ্যাস ব্যবহারের রেকর্ড রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী ও নন মিটার গ্রাহকের ব্যবহারের মধ্যে অনেক তারতম্য রয়েছে। প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহক অনেকটা মিতব্যয়ী হন। তাই, তাদের ব্যবহারের পরিমাণ অনেক কম হয়ে থাকে। প্রিপেইড মিটার রয়েছে অভিজাত এলাকায় তারা অনেক সময় হোটেল-রেস্তোরাঁয় গিয়ে খেয়ে আসেন। তাদের সঙ্গে তুলনা করলে চলে না।’ গত ৬ জানুয়ারি বিদ্যমান গ্রাহকদের দর অপরিবর্তিত রেখে নতুন শিল্প কারখানার বয়লার ও শিল্প কারখানার জেনারেটরে (ক্যাপটিভ) সরবরাহ গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৩০ ও ৩১ দশমিক ৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ দশমকি ৭২ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে পেট্রোবাংলা। আইনগতভাবে পেট্রোবাংলার দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়ার সুযোগ নেই। কেবল মাত্র লাইসেন্সের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিতে পারেন। সে কারণে বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে মূল্য সমন্বয়ের প্রস্তাব চেয়েছে বিইআরসি (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন)। গেল ৭ জানুয়ারি ইস্যু করা পত্রে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে ট্যারিফ পরিবর্তনের প্রস্তাব কমিশনে দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকের নির্ধারিত পরিমাণ গ্যাসের বিল আদায় করা হয়। গ্রাহক ব্যবহার করুক, না করুক অথবা বেশি ব্যবহার করলেও নির্ধারিত বিলেই তাকে দিতে হয়। বিইআরসি সর্বশেষ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশ দেয় ২০২২ সালের ৫ জুন। ওই আদেশের পূর্বে গণশুনানি গ্রহণ করে। তখন বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকদের পরিসংখ্যানে দেখা যায় গড়ে এক চুলা ৪০ এবং দুই চুলা সর্বোচ্চ ৫০ ঘনমিটার ব্যবহার করছে। প্রিপেইড গ্রাহকের ব্যবহারের পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এক চুলা ৭৩.৪১ ঘনমিটার ও দুই চুলা ৭৭.৪১ ঘনমিটার থেকে কমিয়ে যথাক্রমে ৫৫ ও ৬০ ঘনমিটার করা হয়। বিইআরসির আদেশের ১০ মাস পর তিতাস গ্যাস বিদ্যমান এক চুলা ৫৫ ঘনমিটার (৯৯০ টাকা) থেকে বাড়িয়ে ৭৬ দশমিক ৬৫ ঘনমিটার দুই চুলা ৬০ ঘনমিটার (১ হাজার ৮০ টাকা) থেকে বাড়িয়ে ৮৮ দশমিক ৪৪ ঘনমিটার করার আবেদন দিয়েছে। আর পরিমাণ বেড়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই দামও বেড়ে যাবে। তিতাস তার আবেদনে বলেছে, ‘মিটারবিহীন কমবেশি ২৫ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে কোন সমীক্ষা বা তথ্য বিশ্লেষণ না করেই ঘনমিটারের পরিমাণ নির্ধারণ করেছে বিইআরসি। এতে কারিগরি ক্ষতি বেড়েছে এবং সরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠান তিতাস আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।’

শিক্ষার্থীদের টিফিনেও ভ্যাটের ‘বাগড়া’

সময় বদলেছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের টিফিনের তালিকায় যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন খাবার। অনেক অভিভাবকের পছন্দের তালিকায় রয়েছে বেকারিপণ্য বিস্কুট ও কেক। এছাড়া, সকাল-সন্ধ্যা চায়ের সঙ্গে বিস্কুটের জুড়ি নেই। এবার এসব পণ্য কিনতেও গুনতে হবে বাড়তি টাকা। সম্প্রতি হাতে ও মেশিনে তৈরি বিস্কুট-কেকসহ বেকারিপণ্যে ভ্যাট বাড়িয়েছে সরকার। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। এ তালিকায় রয়েছে বেকারিপণ্যে বিস্কুট ও কেকও। এসব পণ্যে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘এর ফলে ২-১০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে বিস্কুটের দাম। বাজারে ৫ টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত দেশীয় ব্র্যান্ডের বিভিন্ন বিস্কুট পাওয়া যায়।’ দোকানিরা জানিয়েছেন, এখনো বিস্কুটের দাম বাড়ানো হয়নি। এ দিকে, বিস্কুটের ওপর ভ্যাট বাড়ানো ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। এ নিয়ে মিরপুরের পল্লবীতে আলীম ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা হয়। জাহাঙ্গীর আলম নামের একজন অভিভাবক বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম এমনিতেই চড়া। শিশুদের ভালো টিফিন দেবো সেই জো নেই। বিস্কুটের দাম বাড়লে মধ্যবিত্ত পরিবার আরও বেশি বিপদে পড়ে যাবে।’ পলাশ তালুকদার নামের আরেকজন অভিভাবক বলেন, ‘এ মুহূর্তে বিস্কুট, কেক বা শিশু খাদ্যে ভ্যাট বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল না। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এখন বিস্কুটের দাম বাড়াবে, দেখা যাবে অনেক অভিভাবক টিফিন দেবে না। কিংবা সন্ধ্যার নাস্তা বন্ধ করে দেবে।’ বিভিন্ন এলাকার মুদি দোকান ঘুরে জানা যায়, এখনো বাড়ানো হয়নি। পণ্যটির সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। মিরপুরে এশিয়া বেকারির ম্যানেজার সালমান আহমেদ বলেন, ‘ভ্যাট বাড়ানোর ফলে বেকারির সব ধরনের বিস্কুটের দাম বাড়বে। আমরা এখনো বাড়াইনি, অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক হয়তো আগামী সপ্তাহে মূল্য বাড়ানো হতে পারে।’ বাংলাদেশ অটো বিস্কুটস অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারের সভাপতি ও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে খুব অস্বস্তিবোধ করছি। করণীয় নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’ পণ্যটির দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘১০ শতাংশ ভ্যাট বাড়ল। কাঁচামালের দামও বাড়ছে, আবার শুনছি গ্যাসের দামও বাড়াবে। কোম্পানিগুলো কী করবে, কীভাবে দাম বাড়াবে বা সমন্বয় করবে এটা নিয়ে পর্যালোচনা হচ্ছে।’

দাম বাড়ল এলপিজির

দেশে ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম ১২ কেজিতে চার টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৪৫৯ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিজ্ঞপ্তিতে দাম বাড়ানোর নতুন ঘোষণা দেয় বিইআরসি, যা এ দিন থেকেই কার্যকর হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সংশ্লিষ্ট প্রজ্ঞাপন ও আদেশ অনুযায়ী এলপিজির ওপর আরোপিত মূল্য সংযোজন করের (মূসক) হার পরিবর্তনের ফলে জানুয়ারি মাসের জন্য এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করা হয়েছে।’ নির্দেশনা অনুযায়ী, গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৪৫৯ টাকা। এর আগে, জানুয়ারি মাসের শুরুতে নির্ধারণ করা হয়েছিল এক হাজার ৪৫৫ টাকা। গত ডিসেম্বরেও অপরিবর্তিত ছিল এ দাম। এ ছাড়া, বেসরকারি এলপিজির রিটেইলার পয়েন্টে ভোক্তা পর্যায়ে মূসকসহ প্রতি কেজি গ্যাসের দাম ১২১ টাকা ৫৬ পয়সা ও রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে তরল অবস্থায় সরবরাহ করা গ্যাসের দাম ১১৭ টাকা ৮১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

রেমিট্যান্স পাঠানো দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র এখন শীর্ষে

রেমিট্যান্স পাঠানো দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র এখন শীর্ষে। সংযুক্ত আরব আমিরাতকে (ইউএই) পেছনে ফেলে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় পাঠানো দেশের তালিকায় উঠে এসেছে দেশটি। গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পরই যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় আসা বেড়ে গেছে, সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর- এই তিন মাসের প্রবাসী আয়সংক্রান্ত বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪ সালে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এই তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ১৪০ কোটি মার্কিন ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত বা ইউএই থেকে এই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছে ৯৯ কোটি ডলার। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রবাসী আয় প্রেরণের দিক থেকে শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় এরপরে রয়েছে যথাক্রমে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, ইতালি, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর।’ বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ‘গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৯ কোটি ৩৪ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল। এরপর সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩৯ কোটি ডলারে। এক মাসের ব্যবধানে দেশটি থেকে প্রবাসী আয়ে ৩৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়। অক্টোবরে তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ কোটি ডলারে। সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয় ২৮ শতাংশের বেশি। নভেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫১ কোটি ১৯ লাখ ডলারে।’ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ‘গত আগস্টেও দেশে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় প্রেরণকারী দেশ ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। ওই মাসে দেশটি থেকে প্রবাসী আয় এসেছিল ৩৪ কোটি ডলার, যা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ৫ কোটি ডলার বেশি। সেপ্টেম্বরে এসে প্রবাসী আয়ে ইউএইকে পেছনে ফেলে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সেপ্টেম্বরে ইউএই থেকে প্রবাসী আয় এসেছিল ৩৬ কোটি ডলার। একই মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে ৩৯ কোটি ডলার। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রবাসী আয় কমে যায়। অক্টোবরে দেশটি থেকে আসে ৩৩ কোটি ডলার। নভেম্বরে যা আরও কমে ২৯ কোটি ডলারে নেমে আসে।’

অবৈধ সম্পদের মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর জেলে

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর (এসকে সুর) চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকালে ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।এর আগে মঙ্গলবার বিকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করে দুদক। এরপর তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুুদকের উপ-পরিচালক নাজমুল হোসাইন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। এসকে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যান। অভিযোগ আছে, তিনি ডেপুটি গভর্নর থাকাকালে আলোচিত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন ও সুবিধা নিয়েছেন। পিকে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২২ সালে এসকে সুরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই বছরের ২৯ মার্চ ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ লুটপাটের ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর তার সম্পদ বিবরণী চাওয়া হয়। কিন্তু গত ২৩ ডিসেম্বর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা দাখিল না করায় এসকে সুর চৌধুরী, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির সময় ডেপুটি গভর্নর ছিলেন এসকে সুর চৌধুরী।