
চাল আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের বাস্তবমুখী সব সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন চাল আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘ব্যবসায়-বাণিজ্যকে সহজ করতে সরকার কাজ করছে। বাস্তবমুখী সব সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে।’ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিকালে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে চালের মজুত ও আমদানি পরিস্থিতি সংক্রান্ত সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। ব্যবসায়ীদের কোন সমস্যা থাকলে সরকার তা সমাধানের চেষ্টা করবে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘পাইকারি বাজার ও খুচরা বাজারে চালের দামের বড় ব্যবধান দেখা যাচ্ছে। এটার প্রকৃত কারণ জেনে আমরা সমাধান করতে চাই। বাজারের স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই ‘ সভাপতির বক্তব্যে সভায় শেখ বশিরউদ্দীন আরো বলেন, ‘অধিকাংশ পণ্যের দাম কমে এসেছে। চালের বাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে।’ খুব শিগগিরই দাম কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। সভায় আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘সরকারি খাদ্য মজুত এখন ১২ লাখ টনের ওপরে। চলতি মাসেই মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন চাল আসবে। পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশ থেকেও জিটুজি ভিত্তিতে চাল সংগ্রহের চেষ্টা চলমান রয়েছে।’ সরকার সিঙ্গেল সোর্স থেকে আমদানি নির্ভর না হয়ে বহুমুখী সোর্স থেকে চাল সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আলী ইমাম মজুমদার আরো বলেন, ‘টিসিবির মাধ্যমে নিয়মিত স্বল্প আয়ের মানুষকে চাল দেওয়া হচ্ছে। খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে ৩০ কেজি করে চাল পাচ্ছে পঞ্চাশ হাজার পরিবার। এছাড়াও, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম ওএমএস চালু রয়েছে।’ মজুমদার এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রির আদিত্য মজুমদার বলেন, ‘ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে চাচ্ছে না। শতভাগ মার্জিনে এলসি খুলতে হচ্ছে। এতে আমদানিকারকরা চাল আমদানিতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন।’ তিনি এলসি মার্জিন কমিয়ে ডলার সরবারাহ নিশ্চিত করতে উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। চাল ব্যাবসায়ী নাজির প্রধান বলেন, ‘সরকারিভাবে চাল সংগ্রহকালে ব্যাবসায়ীরা প্রতিযোগিতা করে ধান কেনায় দাম বেড়ে যায়।’ তিনি চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে চাল সংগ্রহ করতে সরকারকে পরামর্শ দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এলসি খোলার ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খাদ্যপণ্যে এলসি খোলায় কোন রকম গাফলতি হলে তা খতিয়ে দেখা হবে।’ প্রবাসী আয় বেড়েছে, এলসি খোলায় আর সমস্যা হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান, ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. আব্দুর রহিম খান, টিসিবির চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তফা ইকবাল বক্তব্য দেন।

১০০ নয়, কেবল পাঁচ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ করবে অন্তর্বর্তী সরকার
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার যে মিশন বিগত আওয়ামী লীগ সরকার নিয়েছিল, সেখান থেকে বেরিয়ে এসে অন্তর্বর্তী সরকার ‘অগ্রাধিকার’ ভিত্তিতে কেবল পাঁচটি অঞ্চল নিয়ে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। বর্তমান বাস্তবতায় এখনই ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির ‘প্রয়োজন নেই’ মন্তব্য করেন তিনি। আগামী দশ বছরে ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা গেলেই সেটি ‘যথেষ্ট’ হবে বলে তিনি মনে করেন আশিক চৌধুরী। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান। সংবাদ সম্মেলনে আশিক চৌধুরী বলেন, ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাঁচ সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ করা হবে। আমরা প্রমিজ করছি, এসব অর্থনৈতিক জোনে আগামী ১২-২৪ মাসের মধ্যে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও রাস্তার সংযোগ দেওয়া হবে।’ ‘চিহ্নিত পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চল সম্পূর্ণভাবে ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন হয়ে গেলে এবং পরবর্তী প্রয়োজন হলে আমরা বাকি পাঁচটি জোনে কাজ শুরু করব। এতে ৫-৭ বছর সময় লাগতে পারে।’ এই পাঁচ অঞ্চল হল জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এসব অঞ্চলের পুরো জায়গাজুড়ে আবার কাজ করবে না অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ সেসব জায়গায় ‘স্বল্প পরিসরে’ কাজের পরিকল্পনা নিয়েছে। দেশের বৃহত্তম অর্থনৈতিক অঞ্চল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর’-এর নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’। চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই উপজেলা এবং ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা ঘিরে এই শিল্পনগরের আয়তন ৩৩ হাজার ৮০৫ একর। এর মধ্যে কেবল এক হাজার ৪১ একরে আগামী দুই বছরে কাজ হবে। সংবাদ সম্মেলনে আশিক চৌধুরী জানান, তিনি বেজার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী ও সংস্থার সঙ্গে যে আলোচনা করেছেন, তাতে সম্পদ ও সেবার স্বল্পতার বিষয়টি বার বার উঠে এসেছে। সে কারণে আগামী দুই বছরকে চার ভাগে বিভক্ত করে এ পাঁচ অঞ্চলে ইউটিলিটি সেবা চালুর পরিকল্পনার কথা বলেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমরা এতকিছু করে কী আউটপুট দেখতে চাই? ২০২৬ সালের শেষে যেটা আমাদের এক্সপেক্টেশন, সেটা হল, এর মধ্যে আরও ১৩৩ জন বিনিয়োগকারীকে বেজাতে অপারেশনাল করব। ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ বাড়াব।’ ‘লোকাল ইনভেস্টমেন্ট ও ফরেন ইনভেস্টমেন্ট দুইটা মিলে আমরা টোটাল ইনভেস্টমেন্ট এক্সপেক্ট করছি ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। ফাইনালি এক্সপেক্ট করছি, আগামী দুই বছরে বেজাতে আড়াই লাখ লোকের এমপ্লয়মেন্ট জেনারেট করব।; আশিক চৌধুরী বলেন, ‘এটা যদি অ্যাচিভ করতে পারি, তাহলে আমরা মনে করব যে বেজার ’২৫, ’২৬ ইজ সাকসেসফুল। দিজ ইজ আওয়ার গোল।” যেসব জায়গা ইতোমধ্যে অধিগ্রহণ করা হয়েছে, কিন্তু অব্যবহৃত রয়েছে, সেখানে আগামী দুই বছরে অন্য কোন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড করা যায় কিনা, তাও বেজা ভেবে দেখছে বলে জানান নির্বাহী চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে মিরসরাইয়ে সোলার পাওয়ার প্লান্ট তৈরির সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’ নতুন করে অর্থনৈতিক অঞ্চল না করে বরং সরকারের পুরনো পাটকল, কারখানা যা এখন অব্যবহৃত আছে, কিন্তু জায়গা ও অবকাঠামো রয়েছে, সেগুলোকে অর্থনৈতিক অঞ্চলে রূপ দেওয়া যায় কিনা, তাও ভাবার কথা আশিক চৌধুরী বলেন। বর্তমানে দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলে ১৯টি ইকোনমিক জোনে কাজ চলছে। ১২২টি কোম্পানি নির্মাণ ও উৎপাদন পর্যায়ে আছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ৭ হাজার ২০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে এবং ৪৫ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত এসব অঞ্চলে বিনিয়োগ করেছে ২১২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

প্রকৃত খেলাপি ঋণ ছয় লাখ কোটি টাকার বেশি
‘পূর্বে খেলাপি ঋণের তথ্য লুকানো হত, এখন লুকিয়ে রাখা সব তথ্য প্রকাশের চেষ্টা চলছে। বলা হচ্ছে, খেলাপি ঋণ চার লাখ কোটি টাকা বা তার থেকে বেশি। পুরো তথ্য সামনে এলে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছয় লাখ কোটিও ছাড়িয়ে যেতে পারে। ব্যাংকগুলোতে অডিট হচ্ছে প্রকৃত খেলাপির তথ্য পেলে এরপর কমানোর পদক্ষেপ সম্পর্কে জানানো হবে।’ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা। সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে গত পাঁচ মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে, ব্যাংকিং টাস্কফোর্স গঠন হয়েছে, ডলার বাজার স্থিতিশীলতা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ অন্যান্য বিষয়ে বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে কিছু সুফল পাওয়া গেছে, কিছু ফলাফল আসতে আরও সময় লাগবে। কিন্তু আর্থিক খাতে এখনো পুরোপুরি স্থিতিশীলতা ফিরে আসেনি। তাই, বাংলাদেশ ব্যাংক খুব বেশি খুশি নয়।’ তবে, আর্থিক ভীতি কেটে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘২০২৫ সালের শেষ নাগাদ কোন ব্যাংকের মাধ্যমে কত টাকা কোন দেশে পাচার হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে জানা যাবে। পাচারের টাকা ফেরত আনা একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। নির্ধারিত সংস্থাগুলো বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। নিরাপত্তার স্বার্থেই তারা এই বিষয়গুলো আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেন না।’ মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা ইতোমধ্যেই একাধিকবার নীতি সুদ বাড়িয়েছি। আশা করছি, জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। না এলে হয়তো ফের নীতি সুদহার বাড়ানো হতে পারে। তবে, এই বিষয়ে ব্যবসায়ীরা মোটেই খুশি নন। কারণ, ব্যাংক ঋণের জন্য তাদের অতিরিক্ত সুদ গুণতে হয়। বিনিয়োগেও ধীরগতি নেমে আসে। তাই, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থাগুলোকে ঠিকঠাক মত কাজ করা প্রয়োজন।’ হুসনে আরা শিখা আরও বলেন, ‘বিনিয়োগ কমার জন্য শুধু সুদের হার এককভাবে দায়ী নয়। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, জ্বালানি সরবরাহ, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ আরও অনেক কিছু বিনিয়োগ বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একক প্রচেষ্টায় মূল্যস্ফীতি পুরোপুরিভাবে কমানো সম্ভব নয়।’ উল্লেখ্য, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি তলানিতে নেমেছে। গত নভেম্বর মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এই প্রবৃদ্ধি গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বেনামি-জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ বিতরণ কমে আসায় এবং দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত ও পর্ষদে পরিবর্তন হয়েছে- এমন ১১টি ব্যাংকের নতুন ঋণ প্রদান বন্ধ থাকায় এমন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এই ব্যাংকগুলো অবশ্য আমানতকারীদের টাকার চাহিদা মেটাতেই এখন হিমশিম খাচ্ছে।’ বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা কমে আসায় অনেক ব্যাংক সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। এতে ঋণের চেয়ে বেশি মুনাফা মিলছে। কারণ, ঋণ দিলে খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি থাকে আর বিল ও বন্ডে মুনাফা নিশ্চিত হয়। ফলে বিদায়ী ২০২৪ সালের কিছু ব্যাংকের পরিচালন মুনাফায় অনেক প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের নভেম্বরে বেসরকারি খাতের ঋণে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ হয়েছিল, যা ২০২১ সালের মে মাসের পর সর্বনিম্ন। ওই বছরের মে মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গত নভেম্বরে অর্জিত প্রবৃদ্ধি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে নিচে রয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধের জুলাই-ডিসেম্বর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ৯ দশমিক ৮ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল।

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক তিন এমডিসহ ২৬ কর্মকর্তার নামে দুদকের মামলা
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডের দিলকুশা শাখা থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকটির সাবেক তিন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও পাঁচ উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ২৬ জন ব্যাংক কর্মকর্তা ও ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতার অপব্যবহার ও ভুয়া মর্টগেজ তথ্য দিয়ে ঋণ অনুমোদনের প্রস্তাব করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সোমবার (৭ জানুয়ারি) দুদকের একটি সূত্র সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক এমডি দেওয়ান মুজিবুর রহমান, মো. এহসানুল হক এবং একেএম শহিদুল হক; সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল জলিল চৌধুরী, মোহাম্মদ মাসুম, গাউস উল ওয়ারা, মো. মোর্তজা, মু. মাহমুদ আলম চৌধুরী ও মতিউল হাসান; সাবেক ক্রেডিট ইনচার্জ ও ম্যানেজার অপারেশন প্রতাপ কুমার দেশমুখ্য; অ্যাসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ লুৎফল হক প্রবাল; সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আবদুস সালাম, ফয়সাল আহসান চৌধুরী; সাবেক সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট চৌধুরী মোস্তাক আহমেদ; কামরুল ইসলাম চৌধুরী; মো. রবিউল ইসলাম; সাবেক ফার্স্ট এভিপি শামীম আহমেদ; সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নজরুল হোসেন; এফএভিপি এএসএম কামাল হোসেন; সাইফুদ্দিন ভূঁইয়া সোয়েব; সাবেক ভিপি মইনুল ইসলাম এবং মো. শাফায়েত ওয়াহেদ; সাবেক এসভিপি মো. ফারুক আহমেদ, মো. অলিউল্লাহ, মো. জামাল হোসেন; সাবেক এসইভিপি নন্দ দুলাল ভট্টাচার্য্য; সাবেক এভিপি জাহিদুল আলম চৌধুরী ও ঋণ গ্রহীতা আখতার হোসেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করার মাধ্যমে ঋণ প্রস্তাব, ইসি মেমো ও ঋণ মঞ্জুরিপত্রে ভুয়া মর্টগেজ তথ্য দেন। ঋণ বিতরণের সময় কোন বন্ধকি দলিল বা আমমোক্তার দলিল সম্পাদন না করে সাড়ে চার কোটি টাকার ঋণ প্রস্তাব করে। পরে তা পরিচালনা পর্ষদ থেকে অনুমোদন পেয়ে ঋণ মঞ্জুরিপত্র ইস্যু ও ঋণ বিতরণ করা হয়। তবে ঋণ বিতরণের পর এক বার পুন:তফসিলিকরণও হয়েছে এবং ব্যাংকিং বিধি বহির্ভূত সুবিধা নিয়ে ওই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে পেনাল কোড, ১৮৬০’-এর ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারার সাথে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭’-এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

পূবালী ব্যাংক ও ডেল্টা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির ব্যাংকাসুরেন্স সেবা শুরু
ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রাহকদের সরাসরি ইনস্যুরেন্স সেবা দিতে ব্যাংকাসুরেন্স সেবা চালু করেছে পূবালী ব্যাংক পিএলসি। পূবালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় মিলনায়তনে পূবালী ব্যাংক ও ডেল্টা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ব্যাংকাসুরেন্স সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পূবালীব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মনজুরুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আলী। গেস্ট অব অনার ছিলেন ডেল্টা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানী পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হাফিজ আহমদ মজুমদার ও হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান একে আজাদ।বিশেষ অতিথি ছিলেন পূবালী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক মনির উদ্দিন আহমদ ও আজিজুর রহমান, ডেল্টা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানীর পরিচালনা পর্ষদের স্পন্সর পরিচালক জিয়াদ রহমান, আদিবা রহমান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) উত্তম কুমার সাধু, কনসালটিং অ্যাকচুয়ারি ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন ও কনসালট্যান্ট শফিউল আলম খান চৌধুরী। নতুন এই সেবার মাধ্যমে পূবালী ব্যাংকের শাখাগুলো থেকে গ্রাহকরা এখন জীবন বীমা সুবিধা নিতে পারবেন, যা তাদের আর্থিক নিরাপত্তাকে আরও সুদৃঢ় করবে। এ উদ্যোগ বাংলাদেশের আর্থিক খাতে একটি নতুন অধ্যায় সূচনা হয়েছে; যা দুই প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ দিনের সফল পথচলাকে আরও গতিশীল করবে। অনুষ্ঠানে মনজুরুর রহমান বলেন, ‘এই ব্যাংকাসুরেন্স সেবা আমাদের গ্রাহকদের জীবনকে আরও সুরক্ষিত করবে এবং তাদের আর্থিক সুরক্ষার একটি নতুন মাত্রা দেবে। পূবালী ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সেরাসেবা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ হাফিজ আহমদ মজুমদার বলেন, ‘ডেল্টা লাইফ ইনসিওরেন্স ও পূবালী ব্যাংকের এই যৌথ উদ্যোগ গ্রাহকদের জীবনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করবে। আমরা বিশ্বাস করি, এই সেবা আর্থিক খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন।’ একে আজাদ বলেন, ‘ব্যাংকাসুরেন্স হল একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। এই সেবা আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে এবং গ্রাহকদের সেবার মানকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।’ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ব্যাংকাসুরেন্স সেবা আমাদের গ্রাহকদের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। এটি শুধু আমাদের আর্থিক সেবার পরিসরকেই বিস্তৃৃত করবে না, বরং গ্রাহকদের জীবন বীমা সুবিধা আরও সহজলভ্য করে তুলবে। আমরা এই উদ্যোগকে বাংলাদেশের আর্থিক খাতে একটি নতুন অধ্যায় বলে মনে করি। এই সেবার মাধ্যমে পূবালী ব্যাংক ও ডেল্টা লাইফ ইনসিওরেন্স উভয়ই গ্রাহক সেবার মান আরও উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ১৬১তম ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম উদ্বোধন
ইসলামী ব্যাংক ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমি (আইবিটিআরএ) আয়োজিত ১৬১তম ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এ ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম উদ্বোধন হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ প্রোগ্রামের উদ্বোধন করেন। ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও আইবিটিআরএর প্রিন্সিপাল কেএম মুনিরুল আলম আল-মামুন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ জুবায়েরুল হক, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মিজানুর রহমান মিজি, এনএসএম রেজাউর রহমান, মুহাম্মদ নুরুল হোসাইন কাওসার ও মুন্সী রেজাউর রশিদ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ মিয়া। বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছেন।

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দ্রুত প্রতিবেদন দিতে সিআইডিকে নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনার মামলার দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে সিআইডির প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে সব থেকে বড় সমস্যা ছিল মানিলন্ডারিং। মানি লন্ডারিং নিয়ে আমি সিআইডি প্রধানকে সব থেকে বেশি ইন্সট্রাকশন দিয়েছি। আমি সিআইডি প্রধানকে বলেছি, দ্রুত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরির ঘটনার প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য।’ তিনি আরো বলেন, ‘তদন্তের নামে সময়ক্ষেপণ করে লাভ নেই। আমি একটা রিপোর্ট চাই যে, কারা কারা মানিলন্ডারিং এর সঙ্গে জড়িত সেটা আমি সিআইডিকে বলেছি। যদি তদন্তে দুই থেকে তিন বছর চলে যায় তাহলে তো এটার কোন কার্যকারিতা থাকে না।’

এনআরবিসি ব্যাংক খেকুদের দোসর বিএসইসির চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জে (বিএসইসি) চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ ছিলেন এনআরবিসি ব্যাংকের বিতর্কিত চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়াঁ আরজু ও এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমামের নেতৃত্বাধীন সংঘবদ্ধ আর্থিক দুর্নীতি চক্রের অন্যতম সহযোগী। পারভেজ তমাল কর্তৃক ব্যাংক দখলের সাথে সাথেই ২০১৮ সালের এপ্রিলে রাশেদ মাকসুদ ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে যোগ দেন এবং দুর্নীতির মাফিয়া সিন্ডিকেট গঠনে তমাল-আর্জু-আদনানের প্রধান সহযোগী হয়ে ওঠেন। এনআরবিসি ব্যাংকের সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, সরঞ্জামাদি ক্রয়, শাখা-উপশাখার ডেকোরেশন ও গাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন সেবা সরবরাহের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ নিতে ২০১৮ সালে এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামে একটি স্বতন্ত্র কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন তমাল, আরজু ও আদনান। যাত্রা শুরুর সময়ের আরজেএসসি অনুমোদিত সংঘবিধি অনুসারে ব্যাংকের মালিকানায় এনআরবিসি ম্যানেজমেন্টের দুই লাখ বা নয় দশমিক ১৪ শতাংশ শেয়ার ছিল। অপর দিকে, চার লাখ ১৫ হাজার ৩৮৩টি বা ১৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা নেন পারভেজ তমাল। রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু ও আদনান ইমামের প্রত্যেকের এক লাখ ৩৮ হাজার ৪৬১টি বা ছয় দশমিক ৩২ শতাংশ করে শেয়ার ছিল। এনআরবিসি ম্যানেজমেন্টের মালিকানা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের তিন শীর্ষ পদধারীর জানা স্বত্ত্বেও, এ সময় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে থাকা রাশেদ মাকসুদ একচেটিয়া ব্যাংকের সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, সরঞ্জামাদি ক্রয়, শাখা-উপশাখার ডেকোরেশন ও গাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন সেবা সরবরাহের কার্যাদেশ এনআরবিসি ম্যানেজমেন্টের অনুকূলে দেন। এছাড়া, শুধুমাত্র লুটপাটের উদ্দ্যেশ্যেই রাশেদ মাকসুদের অনুমোদনে ব্যাংকের কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ফরহাদ সরকারকে ব্যাংকের চাকুরীতে থাকা অবস্থায় পরিচালকদের মালিকানাধীন এনআরবিসি ম্যানেজমেন্টের এমডি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে ডেপুটেশনে পদায়ন করা হয়, যা ব্যাংকের সম্পূর্ণ স্বার্থবিরোধী কাজ। এভাবেই ব্যাংকের দুর্নীতিগ্রস্থ পরিচালকদের যোগসাজশে শত কোটি টাকা আত্মসাতে সহায়তা করেছেন রাশেদ মাকসুদ। ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ব্যাংকের ৭৮তম বোর্ড মিটিংয়ে ব্যাংকের এমডি রাশেদ মাকসুদের সুপারিশে এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের অনুকূলে ৬০ কোটি টাকার কম্পোজিট ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি অনুমোদন করা হয়, যন্মধ্যে ২০ কোটি টাকার অমনিবাস ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি ও ৪০ কোটি টাকার লিজ ফাইন্যান্স ফ্যাসিলিটি অন্তর্ভূক্ত ছিল। এখানে উল্লেখ্য, অমনিবাস ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি বিশেষ ধরনের ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি, যেখানে লোন গ্রহণের ক্ষেত্রে গ্রাহকের ইচ্ছাই প্রাধান্য পায়। গ্রাহক তার ইচ্ছেমাফিক যে কোন ধরনের ফান্ডেড না ননফান্ডেড লোন নিতে পারেন। এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট ব্যাংকের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং এনআরবিসি ব্যাংক তাদের একমাত্র সেবা গ্রহিতা বা গ্রাহক। এনআরবিসি ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান ও এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান একই ব্যক্তি হওয়ায় এবং পরিচালকেরা উভয় প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় থাকায়, লোন অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অবৈধ। ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১-’এর ১৮ (৬) ধারা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী জারিকৃত ‘ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাথে লেনদেন সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান’ সংক্রান্ত বিআরপিডি চার নম্বর সার্কুলারের পরিপন্থী। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের এফআইসিএসডি কর্তৃক পরিচালিত ২০২২ সালের বিশেষ পরিদর্শন ও অনুসন্ধান রিপোর্টে ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যানের সিংহভাগ মালকানায় থাকা এনআরবিসি ম্যানেজমেন্টের সাথে ব্যাংকের একচেটিয়া ব্যবসায়, নিয়োগ বাণিজ্য, অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ আদায়, ব্যাংকের নিজস্ব প্রকিউরমেন্ট পলিসি লঙ্ঘন ও বিধিবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে ব্যাংকের মুনাফা হ্রাসের বিষয়ে আপত্তি উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল ও তার পিতা শাহজাহানের বেনামী ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান লান্তা সার্ভিসেসের নামে পূর্বের তিন কোটি টাকার বেনামী লোন নিয়ে বোর্ডের আপত্তি ও উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ থাকা স্বত্ত্বেও (কোম্পানী ম্যাটার ২৫৯/২০১৬), ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৭৮তম পর্ষদ সভায় রাশেদ মাকসুদের সুপারিশে লান্তা সার্ভিসেসের নামে সাড়ে চার কোটি টাকার কম্পোজিট ক্রেডিট লিমিট দেয়া হয়। এই লোন প্রপোজাল অনুমোদনের সময় এই প্রতিষ্ঠানের সাথে তমাল পারভেজের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোন ডিক্লারেশন দেয়া হয় নাই। এই লোনের বিপরীতে কোন সহায়ক জামানতও নেয়া হয় নাই। এছাড়া, পারভেজ তমাল সেই বোর্ড সভায় নিজে উপস্থিতও ছিলেন। ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত পরবর্তী ৭৯তম বোর্ড মিটিংয়েই কম্পোজিট ক্রেডিট লিমিট সাড়ে চার কোটি থেকে বৃদ্ধি করে সাড়ে ছয় কোটি করা হয়। আবার ২০১৯ সালের ২৭ জুন অনুষ্ঠিত ৮২তম পর্ষদ সভার ৩৭তম এজেন্ডা অনুসারে লান্তা সার্ভিসেস লিমিটেডের নামে এক কোটি ৬০ লাখ টাকার হায়ার পারচেজ লোন অনুমোদন হয়। হায়ার পারচেজ লোনটি ‘মেমো থ্রু সার্কুলেশনের’ মাধ্যমে বিশেষ বিবেচনায় অনুমোদন দেয়া হয়। অথচ এই লোনটি সার্কুলেশন মেমো হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় মতন গুরুত্বপূর্ণ বা জরুরী ছিল না। এই লোনের বিপরীতে কাস্টমারের কাছ থেকে কোন প্রকার ইকুইটিও নেয়া হয়নি। শুধুমাত্র চেয়ারম্যানের স্বার্থসিংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবেই লান্তা সার্ভিস এই বিশেষ সুবিধা ভোগ করে। লানতা সার্ভিসেস লিমিটেডের বনানী শাখার একাউন্ট নম্বর ০১২১৩৩৩০০০০০৩৫০ পর্যালোচনা করে পাওয়া যায় যে, এক কোটি ৬০ লাখ টাকার হায়ার পারচেজ লোনটি ২০১৯ সালের ৩ জুন ডিসবার্সমেন্ট করা হয় এবং পে-অর্ডার নম্বর ৬৯৬৬৯৯’-এর মাধ্যমে এজি অটোমোবাইলসকে এই অর্থ দেয়া হয়। পরবর্তী ২০১৯ সালের ২০ জুলাই অনুষ্ঠিত ৮৪তম পর্ষদ সভার ৪৩তম এজেন্ডার মাধ্যমে ল্যান্ড রোভার গাড়ী ক্রয়ের জন্য দুই কোটি ৪২ লাখ টাকার হায়ার পারচেজ লোন অনুমোদন দেয়া হয়। কাস্টমার গাড়ীর মূল্যের মাত্র ১৫ শতাংশ ইকুইটি হিসেবে দেয়ার অনুমতি পায়। এভাবে পর্ষদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক ব্যাংকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানকে ঋণ অনুমোদনের মাধ্যমে অস্বাভাবিক সুবিধা দেয়া ক্রেডিট নর্মসের পরিপন্থী। ব্যাংকের চেয়ারম্যান, পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এই অনিয়মের দায় এড়াতে পারেন না। রাশেদ মাকসুদ ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকাকালীন তমাল-আর্জু-আদনানের নির্দেশে ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ব্যাংকের ৭৮তম পর্ষদ সভায় পাবনার রুপপুর শাখার গ্রাহক পাপারোমা্র নামে ৫ কোটি টাকার ওভারড্রাফট ঋণ অনুমোদন করেন। ঋণের অর্থে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন ১৭৩ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি পাপারোমার মালিকানায় কেনা হয়। কিন্তু ঋণ অনুমোদন ও জমি ক্রয়ের পূর্বেই ঋণের সহায়ক জামানত হিসেবে ১৭৩ দশমিক ৫০ শতাংশ জমিকেই দেখানো হয়। ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক ঋণের আবেদনে ভুল তথ্য প্রদান ও ঋণের টাকা ছাড় করে সহায়ক জামানত ক্রয় সম্পূর্ণ বে-আইনী ও সুশাসনের পরিপন্থী। এছাড়া, এই ঋণ অমুনোদনের ক্ষেত্রে ব্যাংকের নিজস্ব ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট পলিসিকেও সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি এন্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিভিশনের ২০২২ সালের ২৪ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ২৮ এপ্রিল এবং ২০২২ সালের ১০ মে থেকে ২০২২ সালের ১৫ মে পর্যন্ত ১৫ কার্যদিবস পরিচালিত বিশেষ পরিদর্শনে পাপারোমার ঋনের অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য প্রকাশিত হয়। কিন্তু তমাল-আর্জু-আদনানের সাথে সখ্যতার কারণে সেসময়ের বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীরের নির্দেশে ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদ মাকসুদসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এছাড়া, রাশেদ মাকসুদ ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক থাকাকালীন ব্যাংকের নতুন শাখা উপশাখার ডেকোরেশনের জন্য তমাল-আর্জু-আদনানের মালিকানাধীন এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট ও লান্তা সার্ভিসেসকে একচেটিয়া কাজ কার্যাদেশ দিয়েছেন এবং সন্তোষজনক কারণ ছাড়াই কার্যাদেশের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি করেছেন। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ৭৪ তম পর্ষদ সভার ৫১তম এজেন্ডায় উল্লেখ করা হয়েছে, নেত্রোকোনার পূর্বধলা শাখার ডেকোরেশনের জন্য তিনটি প্রতিষ্ঠান টেন্ডার আবেদন করেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে আর্কিকনস, লান্টা ফরচুনা প্রপার্টিস্ট লিমিটেড এবং আদ্রিতা ট্রেডিং। টেন্ডারে আর্কিকনস সর্বনিম্ন দর দিলেও পরে তারা এই দামে কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করায়, কাজটি লান্তা ফরচুনা প্রপারটিজকে দেয়া হয় এবং গুণমান সম্পন্ন কাজ করার জন্য টেন্ডার প্রাইজের চেয়ে ১০ শতাংশ দাম বেশী ধরে কাজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। ২০১৯ সালের ২৭ জুন অনুষ্ঠিত ৮২তম পর্ষদ সভার ৪২, ৪৩, ৪৪ ও ৪৬তম এজেন্ডার মাধ্যমে মাদারগঞ্জ, রাজবাড়ী, রামপুরা, বরগুনা শাখার ডেকোরেশনের কাজ ও ৫৪তম এজেন্ডার মাধ্যমে বিভিন্ন শাখায় ফার্নিচার সরবরাহের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। ২০১৯ সালের ২০ জুলাই অনুষ্ঠিত ৮৪তম পর্ষদ সভার ৩০তম এজেন্ডার মাধ্যমে বরগুনা শাখা ও রাজবাড়ী শাখার ডেকোরেশনের কার্যাদেশের মূল্য বৃদ্ধি করে লান্তা সার্ভিসেসের পক্ষে অনুমোদন করা হয়। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকাকালীন রাশেদ মাকসুদ কর্তৃক যাচাইবাছাই ব্যতীত শুধুমাত্র তমাল-আর্জু-আদনানের নির্দেশেই তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের ঋণ অনুমোদনের আরও অভিযোগ রয়েছে। ব্যাংকের আভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা দলের বিভিন্ন অনুসন্ধানী রিপোর্টে ব্যাংকের উত্তরা শাখার তৈরি পোশাকের গ্রাহকসহ বিভিন্ন শাখা থেকে দুর্বল গ্রাহকদের অনুকূলে নিয়ম বহির্ভূত ঋণ প্রদানের বিষয় উল্লেখ রয়েছে।

রেমিট্যান্সের রেকর্রডে জার্ভে স্বস্তি
গেল পাঁচ মাসে ৩৩০ কোটি ডলার পরিশোধের পর দেশে বৈদেশিক রিজার্ভ পরিস্থিতি বেশ শক্তিশালী হয়েছে। গত ৫ আগস্ট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময়, দেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৭০ কোটি ডলার, যার মধ্যে ৩৩০ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। পরিশোধের পরও দেশের রিজার্ভ বেড়ে ২১.৩৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি এবং আত্মবিশ্বাসের সংকেত। বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। এছাড়া, গত ডিসেম্বর মাসে রেমিট্যান্সের পরিমাণে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। দেশজুড়ে প্রবাসী পাঠানো রেমিট্যান্স গত মাসে ২৬৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার পৌঁছেছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। রেমিট্যান্স প্রবাহের এই বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে স্বস্তি ফিরেছে এবং রিজার্ভের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। দেশের রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রফতানি আয় অনেক বেড়েছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। গত অর্থবছরে যেখানে রফতানি আয় ৫.৮৯ শতাংশ কমেছিল, সেখানে এবার তা বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন—রফতানি প্রবৃদ্ধি এবং রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট অনেকটা দূর হয়েছে। আমরা রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি এবং পাচার রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখাকেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে রিজার্ভ ২১.৩৮ বিলিয়ন ডলার এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ পদ্ধতিতে হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ১৫০ কোটি ডলার। এর আগে, গত নভেম্বরের শেষে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ১৮ কোটি ডলার, এবং গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৪৯৭ কোটি ডলার। ফলে, ডিসেম্বর মাসে রিজার্ভের পরিমাণ বেড়েছে ২৬২ কোটি ডলার এবং গ্রস রিজার্ভ বেড়েছে ১৭৪ কোটি ডলার। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং এডিবি থেকে ঋণের অর্থ ছাড়ের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। এদিকে, প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানো বেড়েছে এবং অর্থ পাচারও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, ফলে দেশে মুদ্রার মজুত বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, আমরা রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি এবং পাচার রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিদেশি ঋণ পরিশোধের পর রিজার্ভ বেড়ে যাওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে একটি প্রশংসনীয় এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ। বিশেষ করে, দেশে কিছু সময় আগে যারা বিদেশে ঋণ নিয়ে পাচার করছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে এখন দেশের অর্থনীতির চিত্র অনেকটা পাল্টে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ২০২৪ সালের মধ্যে আরও কিছু বিদেশি ঋণ থেকে অর্থ ছাড় হতে পারে, যার ফলে রিজার্ভ আরও বৃদ্ধি পাবে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি থেকে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে, রিজার্ভের পরিস্থিতি আরও শক্তিশালী হবে, এমনটাই আশা করছেন অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা। এতসব উন্নতির কারণে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরেছে এবং রিজার্ভের পরিমাণ বাড়তে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের অর্থনীতিতে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নিরলসভাবে কাজ করা হচ্ছে এবং তাদের শিগগিরই এই ধারাবাহিক উন্নতি অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি পরিচালনা পরিষদের এক সভা সোমবার (৬ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ড. এম মাসুদ রহমান, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খান, মো. আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার, কোম্পানি সেক্রেটারি (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়ীদের জ্বালানি ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান এফবিসিসিআইয়ের
ব্রিটিশ-বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের জ্বালানি, প্রযুক্তি, শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, ব্লু-ইকোনমি, পর্যটনসহ অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিাসিআই)। সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকার হোটেল সোনারগাঁওয়ে এফবিসিসিআই এবং ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইউকেবিসিসিআই) মধ্যে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এই আহ্বান জানানো হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান। বাংলাদেশে ব্যবসায়-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং সম্ভাবনাময় খাতগুলো সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে ইউকেবিসিসিআইয়ের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এসেছে। প্রতিনিধি দলকে নেতৃত্ব দেন ইউকেবিসিসিআইয়ের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাজ্যের কোন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের এটিই প্রথম বাংলাদেশ সফর। সভায় বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের ওপর বিশেষ জোর দেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক। তিনি বলেন, ‘দেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে দ্বিপাক্ষীক সম্পর্ক শক্তিশালী হলে উভয় পক্ষই তার সুফল পাবে।’ ব্রিটিশ-বাংলাদেশী ব্যবসায়ীসহ যুক্তরাজ্যের সব উদ্যোক্তাকে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে বিনিয়োগ ও বাজার সুবিধা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান হাফিজুর রহমান। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সাপ্লাই-চেইনের সুফল কাজে লাগাতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রধিকারভিত্তিক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) প্রভৃতি বিষয়ে দুই দেশকে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার পরামর্শ দেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন বাংলাদেশী বংশদ্ভূত যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট মেম্বার রূপা হক। সভায় ইকবাল আহমেদ জানান, প্রবাসী ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। সেই বিনিয়োগ আকর্ষণে দেশের অর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর ওপর জোর দেন তিনি। সভায় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক মো. আব্দুল হক, প্রবীর কুমার সাহা, সাফকাত হায়দার, ওবায়দুর রহমান, গিয়ারউদ্দিন চৌধুরী খোকন), উইমেন অন্ট্রাপ্রেনিউরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডব্লিউইএবি) সভাপতি নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মো. আলমগীর, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স উইংয়ের প্রধান মো. জাফর ইকবাল।

মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট অব্যাহতি আরও এক বছর
ঢাকা সিটির জনপ্রিয় বাহন মেট্রোরেলের সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আরও এক বছরের জন্য অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সোমবার (৬ জানুয়ারি) এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের দ্বিতীয় সচিব মো. বদরুজ্জামান মুন্সী সই করা চিঠির সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু মেট্রোরেল বাংলাদেশের সর্বাধুনিক ও জনপ্রিয় গণপরিবহন; মেট্রোরেল যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি কর্মঘণ্টা সাশ্রয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে; মেট্রোরেলকে অধিক জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে যাতায়াত ব্যয় সাশ্রয়ী করা প্রয়োজন। সেহেতু এনবিআর মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’- (২০১২ সনের ৪৭ নম্বর আইন) এর ধারা ১২৬’-এর উপ-ধারা (৩)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, দ্রুতগামী, নিরাপদ, সময় সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব ও দূর নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পরিবহণ ব্যবস্থা মেট্রোরেল সেবার ওপর আরোপণীয় মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেওয়া হল। আর এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং ২০২৫ সালে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।’ ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর দেশের প্রথম মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উদ্বোধন করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে মেট্রোরেল চলাচল মতিঝিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। মেট্রোরেলের যাত্রীদের কোন ক্লাস বা শ্রেণিবিন্যাস নেই। সব যাত্রী একই ভাড়ায় নির্ধারিত গন্তব্যে আসা-যাওয়া করতে পারেন।

সংকট নিরসনে ডিএসইতে স্টেকহোল্ডারদের সাথে বসবেন অর্থ উপদেষ্টা
দেশের পুঁজিবাজারে চলমান সংকট নিরসনে করণীয় নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। কাল মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকাল দশটায় ঢাকার নিকুঞ্জে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ভবনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের উদ্যোগে এ আলোচনা সভায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল), সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল), ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, পুঁজিবাজারে এখন টালমাটাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অর্থনৈতিক সূচকগুলো ঘুরে দাঁড়ালেও পুঁজিবাজারে তার কোন প্রভাব পড়েনি। ফলে, বিনিয়োগকারী, স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকারসহ সব স্টেকহোল্ডারের মধ্যে আস্থার সংকট আরো প্রবলভাবে দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালে ডিএসইতে যাবেন সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেখানে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা শেষে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে ডিএসইতে আসবেন অর্থ উপদেষ্টা। পুঁজিবাজারের সব সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা হবে। আলোচনায় পুঁজিবাজারের উন্নয়নে স্টকহোল্ডারদের পক্ষ থেকে পরামর্শ ও সুপারিশ করা হতে পারে।’

দুদকের তিন মামলা: সেই মতিউরের আরো ১২৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ
১২৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী (লায়লা কানিজ) ও ছেলে-মেয়ের বিরুদ্ধে পৃথক আরও তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা তিনটি দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, ‘মতিউর রহমান সম্পদের হিসাব চেয়ে দুদক থেকে নোটিশ করা হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে দুদক থেকে অনুসন্ধান করে সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের সম্পদ বিবরণী দাখিল করার আদেশ করা হয়েছিল। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যরা সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।’ প্রথম মামলার আসামি হয়েছেন লায়লা কনিজ ও মতিউর রহমান। মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘আসামি লায়লা কানিজ ১৩ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। পাশাপাশি লায়লা কানিজের বিরুদ্ধে এক কোটি ৫৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।’ অন্যদিকে, তার মেয়ে ফারজানা রহমানের নামে ২ কোটি ৪৫ লাখ গোপন ও ৫৩ কোটি ৪১ লাখ টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে দ্বিতীয় মামলায়। ওই মামলায় মতিউর রহমানকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে। আর তৃতীয় মামলায় প্রথম ঘরের ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিরুদ্ধে ১৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন ও ৪২ কোটি ২২ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায়ও মতিউরকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে। এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর মতিউর রহমান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর (শাম্মী আখতার শিবলী) বিরুদ্ধে ১১ কোটি ১৮ লাখ ৮৬ হাজার ১২০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুই মামলা দায়ের করা হয়। প্রথম মামলায় মতিউরের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ২৮ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও ১ কোটি ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ২১৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর দ্বিতীয় মামলায় মতিউরের সঙ্গে আসামি হয়েছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলী। শিবলীর বিরুদ্ধে এক কোটি ৮৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৯০ টাকার অবৈধ সম্পদ ও দুই কোটি ৭৫ লাখ ২৮ হাজার ৪৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪’-এর ২৭ (১) ও ২৬ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়। কোরবানির জন্য ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনায় আসেন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামের এক যুবক। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। বলা হয়, ‘তার বাবা এনবিআরের সদস্য এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমান।’ এরপর আলোচনা চলে মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের কোথায় কী পরিমাণ সম্পদ রয়েছে এসব নিয়ে। এসব আলোচনার মধ্যে একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে মতিউর পরিবারের বিপুল বিত্তবৈভবের চাঞ্চল্যকর তথ্য। পরে গত বছরের ৪ জুন মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধানের নামে দুদক। অনুসন্ধানে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ৬৫ বিঘা জমি, আটটি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং তিনটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের তথ্য পায় দুদক। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব, মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবার হিসাব ও শেয়ারবাজারের বিও হিসাব জব্দ করা হয়। পরে ২৪ জুন মতিউর ও তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। এরপর গত ২ জুলাই মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী চেয়ে পৃথক নোটিশ পাঠায় দুদক। এসব নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ আগস্ট মতিউর, তার দুই স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েসহ পাঁচজনের সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা দেন।

বাংলাদেশকে পৃথিবীর কাছে তুলে ধরতে বেপজাকে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (বেপজা) কর্তৃপক্ষকে পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে দেশের শিল্প খাতে আরও বিনিয়োগ আসতে পারে। সোমবার (৬ জানুয়ারি) ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈঠকে বেপজার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেন সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অর্থনৈতিক কূটনীতির জন্য একটি টিম তৈরি করুন এবং বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরুন। এর জন্য প্রয়োজনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করুন।’ বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, বিশেষ করে যারা চীন ও জাপানে আছেন, তাদেরকে যুক্ত করে সেসব দেশের বিনিয়োগ আনা যায় কি না, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি আরো বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা যেন ভাষাগত সমস্যা অতিক্রম করে এ দেশে বিনিয়োগ করতে পারে, সে ব্যাপারে বিদেশে থাকা শিক্ষার্থীরা সহায়তা করতে পারে।’ আবুল কালাম জানান, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান এবং বৈশ্বিক রাজনৈতিক দৃশ্যপটের পরিবর্তনের মধ্যেই বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তারা ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন। ‘গত তিন সপ্তাহে আমরা চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছি। আরও বিনিয়োগের জন্য আলোচনা চলছে।’ তিনি আরও জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে আটটি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল চালু রয়েছে, যেখানে ৪৫২টি ফ্যাক্টরি রয়েছে। এসব জোনে আরও ১৩৬টি কারখানা নির্মাণাধীন রয়েছে। চালু থাকা কারখানার মধ্যে ১০০টির বেশি স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের মালিকানাধীন ও বাকি কারখানার মধ্যে বেশিরভাগই যৌথ উদ্যোগ। কারখানাগুলোর ৫২ শতাংশ তৈরি পোশাক সামগ্রী, টেক্সটাইল আইটেম ও গার্মেন্টস এক্সেসরিজ উৎপাদন করে। অবশিষ্ট কারখানাগুলো বহুমুখী উৎপাদন করে থাকে যেমন-কফিন ও খেলনা সামগ্রী। আবুল কালাম প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, বেপজা এলাকায় বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধা, চট্টগ্রাম-সাংহাই সরাসরি ফ্লাইট চলাচল এবং চীনের সাংহাই শহরে ভিসা কাউন্সেলর সার্ভিসসহ বিনিয়োগকারীরা কয়েকটি বিষয়ে জানিয়েছেন।’ এসব সুবিধা পেলে বিনিয়োগ বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি। মুহাম্মদ ইউনূস বেপজাকে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার এবং গ্যাস অনুসন্ধানে কাজ করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে, বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন কীভাবে করা যেতে পারে সে বিষয়েও বিশেষভাবে কাজ করতে বলেন। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে জ্বালানি আমদানি করে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর জোর দেন। তিনি জানান, সরকার দেশে বিদ্যমান প্ল্যান্টগুলো থেকে শিল্প কারখানায় যেন আরো বেশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পৌঁছাতে পারে, সেজন্য একটি সমন্বিত বিতরণ ব্যবস্থা তৈরিতে কাজ করবে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ‘রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।’ ‘আমাদের উচিত বেপজার পাশাপাশি বেজাকেও আরও আকর্ষণীয় করে তোলা এবং আরও বিনিয়োগ আনার জন্য বিশ্বজুড়ে এসব অঞ্চলে থাকা সুযোগ-সুবিধা প্রচার করা।’ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বিমসটেকের সেক্রেটারি জেনারেলের সৌজন্য সাক্ষাৎ
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বিমসটেকের সেক্রেটারি জেনারেল ইন্দ্রা মানি পান্ডে। সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকালে বাণিজ্য উপদেষ্টার সচিবালয়স্থ কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।সাক্ষাৎকালে তারা বিমসটেককে আরো কার্যকর করতে করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বাণিজ্য,বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে কাজ করার লক্ষে গঠিত প্রতিষ্ঠানটি সহযোগী দেশের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে। বিগত ২৭ বছরে অর্জন আশানুরূপ হয়নি। তবে, সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের সাথে ব্যবসায়ীদের পারস্পরিক বোঝাপড়া প্রতিষ্ঠানকে অধিক কার্যকর করতে ভূমিকা রাখতে পারে।’ এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা আঞ্চলিক বাণিজ্য দ্বিগুণ করতে বিমসটেককে একটি রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানান। ইন্দ্রা মানি বলেন, ‘বিমসটেককে আরো কার্যকর করতে মিনিষ্ট্রিয়াল বৈঠকগুলো সাহায্য করবে।’ আঞ্চলিক পরিমন্ডলে এক্সপোর্ট, ইমপোর্ট ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য মিনিষ্ট্রিয়াল বৈঠকগুলো ফলপ্রসূ করতে তিনি বাংলাদেশের সহযোগিতা চান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. আব্দুর রহিম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বিএসইসির চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দেওয়া দরকার: অর্থ উপদেষ্টা
দেশের শেয়ারবাজারে ক্রমাগত দরপতনের ঘটনা ঘটছে। প্রায় প্রতিনিয়তই কোম্পানির শেয়ারের দর কমতে থাকায় প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বাজারে ক্রমাগত দরপতনের কারণে নতুন বিনিয়োগকারী বাজার আসছে না বরং উল্টো বাজার থেকে বের হয়ে গেছেন। এ অবস্থায় বাজার নিয়ে নিজের অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘শেয়ারবাজারে অনেক কোম্পানি বিনিয়োগ করছে। কিন্তু অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে, তারপরও তাদের দাম বাড়ছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দেওয়া দরকার।’ রোববার (৬ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সৌদি-বাংলাদেশের বিনিয়োগবিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে শেয়ারবাজার প্রসঙ্গে সালেহ উদ্দিন এসব কথা বলেন। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে শেয়ারবাজারে দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন অর্থ উপদেষ্টা। এর ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থায় পরিবর্তনের বড় ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘শেয়ারবাজারে ক্রমাগত দরপতন চলছে। এ অবস্থায় যদি অর্থ উপদেষ্টা এ ধরনের কোন বক্তব্য দিয়ে থাকেন, সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ নানা কারণেই বর্তমান কমিশনের উপর বিনিয়োগকারীরা আস্থা রাখতে পারছেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর দেশের শেয়ারবাজারে গতি ফিরতে শুরু করে। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। সূচকেও বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটে। কিন্তু, খন্দকার রাশেদ মাকসুদ চেয়ারম্যান পদে যোগদানের পর থেকে যেন উল্টো পথেই হাঁটতে শুরু করেছে বাজার। গত ১৯ আগস্ট তিনি চেয়ারম্যান পদে যোগ দেওয়ার দিন ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল পাঁচ হাজার ৭৭৫ পয়েন্ট। গতকাল রোববার (৫ জানুয়ারি) সে সূচক কমে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ১৬৫ পয়েন্টে। এ হিসাবে রাশেদ মাকসুদ চেয়ারম্যান পদে যোগদানের পর ডিএসই সূচকের পতন হয়েছে ৬১০ পয়েন্টের। ফলে, রাশেদ মাকসুদ কমিশন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ ও হতাশা কাজ করছে। ইতোমধ্যে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা কয়েক দফা খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগের দাবিতে মিছিল-সমাবেশ করেছেন। এমনকি ঢাকার আগারগাঁয়ে অবস্থিত নিয়ন্ত্রক সংস্থার গেটে তালাও ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। অবশ্য চেয়ারম্যান হওয়ার পর পুঁজিবাজারে কারসাজির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বড় অংকের জরিমানা করেছে রাশেদ কমিশন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, শেয়ারবাজারের আলোচিত চরিত্র আবুল খায়ের হিরুসহ কারসাজি চক্রের হোতাদের বিরুদ্ধে জরিমানা করার কারণে এক শ্রেণির অসাধু চক্র বাজারকে অস্থির করে তুলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু, তারপরও বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে রাশেদ মাকসুদ কমিশন ব্যর্থ হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগকৃত শিবলী বুবাইয়াত উল ইসলাম গেল ১০ আগস্ট বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করার পর সাবেক ব্যাংকার খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয় সরকার। অবশ্য প্রথমে পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজকে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনি যোগ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয় সরকার। তিনি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। সাবেক ব্যাংকারকে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়ার পর পুঁজিবাজার বিষয়ে তার ‘অনভিজ্ঞতা’ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন।

জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমেছে ৪.২৩ শতাংশ
গত বছরের তুলনায় এ অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে মোট দেশজ উপাদানের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমেছে ৪.২৩ শতাংশ। সোমবার (৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এ তথ্য প্রকাশ করে। বিবিএস জানায়, চলতি অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এ হার দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ। এতে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের ৩ মাসে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ০ দশমিক ১৬ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এছাড়া শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮ দশমিক ২২ শতাংশ। সেবা খাতে গত তিন মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ৫ দশমিক ০৭ শতাংশ।

বাংলাদেশের সেরা এজেন্সি ২০২৪’-এর স্বীকৃতি দিল মেটলাইফ
মেটলাইফ বাংলাদেশের ‘সেরা এজেন্সি ২০২৪’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে নোয়াখালী জেলার ‘সুমন এজেন্সি’। জীবন বীমা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার, সন্তোষজনক গ্রাহকসেবা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি ২০২৪ সালে সারাদেশের সব এজেন্সির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জনের জন্য সুমন এজেন্সিকে এই স্বীকৃতি দিয়েছে মেটলাইফ বাংলাদেশ। নোয়াখালীর মাইজদি কোর্ট মেইন রোডে অবস্থিত সুমন এজেন্সির ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সফি উল্ল্যাহ সুমনের দক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে তার এজেন্সির সব ইউনিট ম্যানেজার ও ফিনান্সিয়াল অ্যাসোসিয়েটের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। প্রতি বছর শুধুমাত্র একটি এজেন্সিকেই এই সম্মানজনক স্বীকৃতি দেয়া হয়। সফি উল্ল্যাহ সুমন ২০০৮ সালে মেটলাইফে ফিনান্সিয়াল অ্যাসোসিয়েট হিসেবে যোগ দেন এবং ২০১০ সালে ইউনিট ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি পান। ধারাবাহিক সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১৮ সালে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি পান। সুমন এজেন্সি অফিসে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সফি উল্ল্যাহ সুমনের হাতে ‘সেরা এজেন্সি ২০২৪’ ট্রফি তুলে দেন মেটলাইফ বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আলা আহমদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ ডিস্ট্রিবিউশন অফিসার জাফর সাদেক চৌধুরী; ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ অপারেশন্স অফিসার কামরুল আনাম; অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ এজেন্সি সেলস অফিসার মো. লুৎফর রহমান। এ নিয়ে আলা আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশের সেরা এজেন্সি হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় সুমন এজেন্সিকে অভিনন্দন। এই সাফল্য প্রমাণ করে যে, দেশের যে কোন জায়গা থেকেই বীমা খাতে সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব এবং দেশের বেকারত্ব দূর করতে বীমা খাত একটি গুরুত্তপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’ তিনি আরও বেশী মানুষকে বীমার আওতায় আনতে এবং গ্রাহক সেবার মান আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য সকলকে আহ্বান জানান।

বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদেলোহাব সাইদানি। রোববার (৫ জানুয়ারি) বিকালে বাণিজ্য উপদেষ্টার সচিবালয়স্থ কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎকালে তারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পরিস্থিতি ও বাণিজ্য সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘ভাতৃপ্রতিম দেশ আলজেরিয়ার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতিক যোগ এ সম্পর্ককে শক্তিশালী করেছে। দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক আরো নিবিড় হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বাণিজ্যিক সহযোগিতার ক্ষেত্র বাড়াতে হবে।’ আলজেরিয়ার সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধিকে সম্ভাবনার নতুন ক্ষেত্র বলে অবিহিত করেন তিনি। এ সময় উপদেষ্টা বাংলাদেশের জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আলজেরিয়ার ভূমি ব্যবহার করে কৃষির বিকাশে (কন্ট্রাক্ট ফার্মিং) কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। আবদেলোহাব সাইদানি বলেন, ‘আলজেরিয়ায় বাংলাদেশের গার্মেন্ট পণ্যসহ সব পণ্যের বাজার রয়েছে। বিদ্যমান সুযোগকে বাংলাদেশের কাজে লাগানো উচিত।’ আলজেরিয়ার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলেও জানান তিনি। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘রমজান উপলক্ষে আলজেরিয়া থেকে উন্নত মানের খেজুর আমদানি হয়। সার ও জ্বালানি বিষয়েও বাণিজ্য বাড়ানোর সুযোগ আছে।’ এ সময় রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে টেক্সটাইল ও ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

‘টপ টেন রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড’ পেল এনসিসি ব্যাংক
২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স সংগ্রহে বিশেষ অবদানের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত ‘টপ টেন রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে এনসিসি ব্যাংক। সম্প্রতি আর্ন্তজাতিক অভিবাসী ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিতঅনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কাছ থেকে এ পুরস্কার নেন এনসিসি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব আলম। অনুষ্ঠানে এনসিসি ব্যাংকের এসভিপি ও ট্রেজারী ফ্রন্ট অফিস প্রধান মো. জহুরুল করীম চৌধুরী এবং এসএভিপি ও রেমিট্যান্স এন্ড এনআরবি সার্ভিসেস প্রধান মো. ফরাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘এই অর্জন বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্স সেবার মাধ্যমে প্রবাসীদের সহায়তা ও জাতীয় অর্থনীতিতেগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনেরই স্বীকৃতি।’

আরও পাঁচ ব্যাংকের এমডিকে বাধ্যতামূলক ছুটি
বাংলাদেশ ব্যাংকের গঠিত টাস্কফোর্সের পরামর্শে আরও পাঁচ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এসব ব্যাংকের এমডিদের ছুটিতে পাঠানোর বিষয়টি স্ব স্ব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদন হয়। ব্যাংকগুলো হলে এক্সিম ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামী ব্যাংক। রোববার (৫ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগে গতকাল শনিবার (৪ জানুয়ারি) দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। এস আলম গ্রুপকে অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ ছাড়ে তার দায়িত্বে অবহেলা পায় কর্তৃপক্ষ। আজ রোববার থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটিতে থাকবেন তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আন্তর্জাতিক নিরীক্ষার সুবিধার্থে আরও পাঁচ ব্যাংকের এমডি ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে পাঁচ ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এ ব্যাংকগুলোর এমডিদের সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঋণ কেলেঙ্কারি ও নানা অনিয়ম: বেসরকারি পাঁচ ব্যাংকে হবে ‘ফরেনসিক অডিট’
ঋণ কেলেঙ্কারি ও নানা অনিয়মে তারল্য সংকটে পড়ে খাদের কিনারায় যাওয়া পাঁচ বেসরকারি ব্যাংকে ‘ফরেনসিক অডিট’ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংক খাত সংস্কারে গঠিত টাক্সফোর্স। অডিট চলাকালে এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হবে। প্রথম ধাপে শরিয়াহভিত্তিক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে অডিট শুরু হবে। সে জন্য শনিবার (৪ জানুয়ারি) ব্যাংকটির পরিচালক পর্ষদের সভায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তার অবর্তমানে এমডির চলতি দায়িত্ব (সিসি) পালন করবেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া। পর্ষদ পুনগর্ঠনের পর ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়া আব্দুল মান্নান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা অডিটকে স্বাগত জানাই। নতুন দিনের একটি অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছি, ব্যাংকটিকে জনগণের স্বার্থে ব্যবহার করা হবে। এ জন্য অডিট খুবই কাজে লাগবে।’ এমডিকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘এমডি যেহেতু সে সময়ে (আগের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সময়ে) ছিলেন, তাই তাকে দায়িত্বে রেখে অডিট প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। কোন বির্তক যাতে না ওঠে, নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে তাকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।’ একটি নির্দিষ্ট সময়ে হওয়া সব ধরনের লেনদেন যাচাই-পর্যালোচনা ও কোন তথ্য মুছে ফেলা হয়েছি কি না, তা দেখতে এই ফরেনসিক অডিটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে টাক্সফোর্স। সেই সিদ্ধান্তে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকও। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংককেও ফরেনসিক অডিটের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সবগুলো ব্যাংকই বিগত সরকারের আমলে এস আলম গ্রুপের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে যদি এস আলমের সময়ের কর্মকর্তারা থাকেন, তাহলে অডিটে ম্যানুপুলেশন হওয়ার সম্ভবনা থাকতে পারে। তাই, বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংকগুলোর সিদ্ধান্ত এমন যে এস আলমের সময়কার কর্মকর্তাদের প্রভাবমুক্ত রেখে সঠিকভাবে এসব ব্যাংকের নিরীক্ষা করা।’ এস আলমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়া সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ রোববার জরুরি সভা ডেকেছে। অন্য ব্যাংকগুলোর উচ্চ পদেও শিগগিরই পরিবর্তন আসতে পারে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যরা ব্যাংক কোম্পানি আইনে ভেঙে নজিরবিহীনভাবে সাতটি ব্যাংক ও দুইটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বড় অঙ্কের শেয়ার দখলে নেয়। সাইফুল আলম তার পরিবারের সদস্য ছাড়াও কিছু আত্মীয়কে একাধিক ব্যাংকের বোর্ডে বসান। সাইফুল আলম নিজে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ চার ছিলেন বোর্ডে। তাদের ছেলে আহসানুল আলম, মেয়ে মাইমুনা খানম ও জামাতা বেলাল আহমেদ যথাক্রমে ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন। সাইফুল আলমের ভাই, বোনসহ অন্যান্য আত্মীয়রাও বেশ কয়েকটি ব্যাংকের পর্ষদে ছিলেন। এস আলম গ্রুপ ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো এসব ব্যাংক থেকে বিপুল অংকের ঋণ নিয়ে আত্মসাৎকরেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ক্ষমতায় পালাবদলের পর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ১১ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়। একইভাবে বেসরকারি খাতের ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ পুনগর্ঠন করা হয়। এর মধ্যেই সরকার অনিয়মে জর্জরিত আর্থিক খাতের সংস্কারে শ্বেতপত্র প্রকাশের পাশাপাশি ব্যাংক খাতের সংস্কারে টাক্সফোর্স গঠন করে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ব্যাংক খাতের সমস্যা সমাধানে কারিগরি ও অর্থ সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। বিশ্ব ব্যাংকও ফরেনসিক অডিট করতে সহযোগিতার কথা বলে। এরপরই সবচেয়ে বেশি সমস্যাগ্রস্ত পাঁচটি ব্যাংকে ফরেনসিক অডিটের সিদ্ধান্ত হয়।

বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতৃবৃন্দের বৈঠক
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইউকেবিসিসিআই) নেতৃবৃন্দ। রোববার (৫ জানুয়ারি) সকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক ব্যবসায়-বাণিজ্য ও বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শেখ বশিরউদ্দীন যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের এ দেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন, দেশের উন্নয়নে অবদান রাখুন। দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কোন্নয়নে আপনাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ উপদেষ্টা ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে পাটজাত দ্রব্য, পর্যটন, ফার্মাসিউটিক্যালস ও টেলিকম খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ ভাল। বিনিয়োগে কোন বাধা নেই। বিনিয়োগকারীদের সব সুবিধা নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে।’ ইউকেবিসিসিআইয়ের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ ন্যাশনাল টি বোর্ড, সরকারি টেলিকম খাত ও শিক্ষা খাতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহার বাড়াতে বিনিয়োগ করতে তাদের আগ্রহের কথা জানান। এছাড়াও নেতৃবৃন্দ সী ফুড এক্সপোর্ট, ফুড প্রসেসিং ও গ্রীন ফার্মিং সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ এগ্রিকালচারাল জোন (এগ্রিকালচারাল বেসড ইপিজেড) স্থাপনের দাবি জানান। বৈঠকে ইউকেবিসিসিআইয়ের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ, প্রেসিডেন্ট এমজি মওলা মিয়া, প্রতিষ্ঠাকালীন প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ, যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সের এমপি রুপা হক বক্তব্য দেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. আব্দুর রহিম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।