
দায়িত্ব অবহেলা: ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের এমডিকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটি
দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলীকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়েছে। মূলত চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপকে অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ ছাড়ে তার দায়িত্বে অবহেলা পায় কর্তৃপক্ষ। রোববার (৫ জানুয়ারি) থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটিতে থাকবেন তিনি। শনিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত ব্যাংকটির ২৮৩তম পর্ষদ সভায় তার ছুটি অনুমোদন করে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। আর পরবর্তী এমডি না আসা পর্যন্ত নতুন করে এমডির চলতি দায়িত্ব (সিসি) পালন করবেন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মো. কাওসার উল আলম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রামভিত্তিক আলোচিত এস আলমের গ্রুপকে অর্থ লোপাটে সহায়তা করার অভিযোগে বিশেষ নিরীক্ষা কমিটি গঠন করে ব্যাংক। সেখানে এমডিসহ আরও কয়েক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ আনা হয়। তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এমডি সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলীকে তিন মাসে জন্য বাধ্যতামমূলক ছুটি দেওয়া হয়।

সার্ভার জটিলতার কারণে ডিএসইতে লেনদেন বন্ধ
সার্ভার জটিলতার কারণে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার (৫ জানুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন বন্ধ রয়েছে। এদিন সকাল ১০টা থেকে লেনদেন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে ডিএসই। জানা গেছে, রবিবার সকাল থেকে ডিএসইর আইটি টিম সমস্যার সমাধানের কাজ করে যাচ্ছে। ডিএসইর উপ-মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. শফিকুর রহমান রাইজিংবিডি বলেন, “সকাল থেকেই ডিএসএতে সার্ভার জটিলতা দেখা দিয়েছে। ডিএসইর আইটি টিম কাজ করছে। সমস্যার সমাধান হওয়া মাত্রই লেনদেন শুরু করা হবে।” এদিকে, ডিএসই কর্তৃপক্ষ মোবাইল ফোনে পাঠানো এক বার্তায় জানিয়েছে, সার্ভার জটিলতার কারণে আমরা সকাল ১০টা থেকে লেনদেন শুরু করতে পারছি না। ট্রেড শুরুর সময় পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে এদিন স্বাভাবিক নিয়মে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন চলছে।

২০ শতাংশ অর্ডার বাতিল, বন্ধের ঝুঁকিতে ১০০ পোশাক কারখানা
২০২৪ সালের শেষ ছয় মাসে প্রায় ২০ শতাংশ তৈরি পোশাকের অর্ডার বাতিল করেছে বিদেশি ক্রেতারা। শ্রমিক অসন্তোষে এখনও আস্থা পাচ্ছেন না তারা। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, আশুলিয়া এলাকার কারখানাগুলো নিয়ে আস্থা কম তাদের। বিজিএমইএ এবং বিকেএমইয়ের হিসাবে, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আগামী ছয় মাসে সারাদেশে প্রায় ১০০ কারখানা বন্ধ হবে। সাভার ও আশুলিয়ায় ছোট-বড় পোশাক কারখানার সংখ্যা ৪৫০টি। জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী শ্রমিক অসন্তোষের কবলে এই এলাকার কারখানাগুলো। বন্ধ হয়েছে ‘বিজিএমইএ’ এবং ‘বিকেএমইএ’র তালিকাভুক্ত প্রায় ২০০ কারখানা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আশুলিয়া এলাকার শ্রমিক অসন্তোষ পর্যবেক্ষণ করছেন বিদেশি ক্রেতারা। এসব কারখানায় কাজ দিতে আস্থা পাচ্ছেন না তারা। বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘ব্র্যান্ড ও বায়াররা এখন আশুলিয়া বেল্টের যে কোন ফ্যাক্টরিতে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক, সচেতন। তারা অনেকটাই আস্থাহীনতায় ভুগছে। আমাদের অর্ডার যে অন্য জায়গায় যাচ্ছে তার প্রমাণটা সামনে পাওয়া যাবে।’ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘ছয় মাসের অস্থিরতার ধকল আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বইতে হবে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া না গেলে আগামী ৬ মাসে আরও ১০০ কারখানা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘তারা হয়ত চেষ্টা করছে ব্যাংকের সাথে কোন নেগোসিয়েশন করে একটা পর্যায়ে গিয়ে আবার যদি পারে চালু করবে। না হলে তারা হয়ত পার্মানেন্টলি বন্ধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ, আগামী এক বছরে আরও ১০০ ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আমরা করছি।’ শাশা ডেনিমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস মাহমুদ বলেন, ‘শতভাগ ফ্যাক্টরি সচল রাখতে পারলেই কিন্তু আমরা ব্যাংকের ঋণ শোধ বা কর্মীদের বেতন চালু রাখতে পারব। কিন্তু এখন যদি আমার ২০ ভাগ ক্যাপাসিটিতে ফ্যাক্টরি চালাতে হয়, তাহলে যেটা হবে আমি তো আর্থিকভাবে সবল হব না।’ যদিও অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ‘বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে গড়পড়তা সস্তা পোশাক কিনছে। ফলে তারাও বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। তাই, সাময়িক অস্বস্তি থাকলেও বড় আকারে বাজার হারানোর আশঙ্কা নেই।’ সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘ভিয়েতনাম বলি কম্বোডিয়া বলি, কারও এত বড় সাপ্লাই বেজ নেই। সুতরাং, বড়ভাবে এখান থেকে মার্কেট শিফট হয়ে যাওয়ার কোন আশঙ্কা নেই। তবে সাময়িক কারণে কিছু সময়ের জন্য হয়ত কিছু অর্ডার এদিক সেদিক হতে পারে।’ তবে, ক্ষতি কাটাতে আগামী শীতের জন্য কাজ পেতে আগাম তৎপরতার কোন বিকল্প নেই বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

রমজান ঘিরে ঢাকার ১০০ পয়েন্টে ন্যায্যমূল্যে ডিম-মুরগি বেচবে বিপিএ
সদ্য বিদায়ী বছরের বেশিরভাগ সময়েই অস্থিতিশীল ছিল ডিমের বাজার। ডজন প্রতি ডিমের দাম উঠে গিয়েছিল ১৮০ টাকায়। দাম বেঁধে দেয়ার পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি বাজার। তবে, নভেম্বরে ১৮ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয়া হলে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হয়। তবে, নতুন বছরের শুরুতেই ফের ডজনে পাঁচ টাকা বেড়েছে ডিমের দাম। বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দামও। এ পরিস্থিতিতে রমজানকে সামনে রেখে ঢাকার ১০০টি পয়েন্টে ন্যায্যমূল্যে ডিম, মুরগি ও কৃষিজাত পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরিউ) সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান বিপিএর সভাপতি সুমন হাওলাদার।সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আসন্ন রমজান উপলক্ষে স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আগামী ১২ জানুয়ারি থেকে ঢাকা শহরের ২০ পয়েন্টে এবং পরবর্তী পর্যায়ক্রমে ১০০ পয়েন্টে সীমিত লাভে ডিম, ফ্রোজেন মুরগি এবং অন্যান্য কৃষিজাত পণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রির কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। এছাড়া, বিপিএর সাপ্লাই চেইনে যুক্ত হবে দক্ষ ব্যক্তি ও উদ্যোক্তা। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া কিছু সংখ্যক স্মার্ট ছাত্র যারা কৃষি খাত এবং ভোক্তা-উৎপাদকের স্বার্থ নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। তাদের দক্ষতা ও উদ্যমের মাধ্যমে এই উদ্যোগটি আরও কার্যকরী হবে, যা দেশের কৃষি খাতের উন্নতি এবং বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।’অভিযোগ করে সুমন হাওলাদার বলেন, ‘বছরে করপোরেট কোম্পানিগুলো ফিড ও মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করছে। তাদের হাতে বাজারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় কমছে না ডিম-মুরগির দাম। ভাঙ্গা যাচ্ছে না সিন্ডিকেট।’তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববাজারে ফিডের দাম কমলেও দেশের বাজারে না কমায় মুরগির দামে প্রভাব পড়ছে।’ সরকারের নীতি নির্ধারণী বৈঠকে প্রান্তিক খামারিদের রাখার আহ্বান জানান বিপিএর সভাপতি।খামারিদের হাতে সাশ্রয়ী মূল্যে ফিড ও মুরগির বাচ্চার সরবরাহ নিশ্চিত করারও দাবি জানান সুমন হাওলাদার।এ দিকে, সংবাদ সম্মেলনে সিন্ডিকেটের হাত থেকে প্রান্তিক খামারিদের টিকিয়ে রাখতে সরকারের কাছে ১০টি দাবি জানানো হয়।

১৪ দিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দামে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন, জানা গেল কারণ
স্বর্ণের দাম দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দেশটির স্পট গোল্ডের দাম ১ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স দুই হাজার ৬৪৯ দশমিক ৭৩ ডলার হয়েছে, যা ডিসেম্বর ১৮-এর পর সর্বোচ্চ। মার্কিন গোল্ড ফিউচারস শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ২,৬৬৩ দশমিক ২০ ডলার হয়েছে। খবর খালিজ টাইমসের। বাজার বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের কেনা-বেচা বেড়ে যাওয়া এর দর বাড়ার পেছনে সরাসরি ভূমিকা রেখেছে। সেই সঙ্গে মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের দর কমে যাওয়া এর প্রধান কারণ। একইসঙ্গে, ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার নিয়ে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন শুল্ক নীতি এই দর বাড়ার পেছনে ভূমিকা রাখছে। মার্কিন ১০ বছরের বন্ডের দর কমায় স্বর্ণের প্রতি ক্রেতার আকর্ষণ বাড়ছে, কারণ এটি মুনাফা দেয় না। বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা এবং আর্থিক অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণের প্রতি ঝুঁকছেন। ২০২৪ সালে সুদের হার কমানো, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রয় এবং ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা মূল্যবান এই ধাতুটির দরকে রেকর্ড উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল, যা বছরে ২৭ শতাংশ বেড়ে যায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন বছরের শুরুতে মুনাফা সমন্বয়ের পর স্বর্ণের দাম ফের বাড়তে থাকে। ২০২৫ সালে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে বলে অনুমান করছেন। অন্যান্য ধাতুর মধ্যে রুপার দর ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ২৯ দশমিক ৪৮ ডলার, প্লাটিনামের দর ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৯২২.৮৫ ডলার এবং প্যালাডিয়ামের দাম ১.৩ শতাংশ বেড়ে ৯২২.০৪ ডলার হয়েছে।
সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব ১৬৩টি, জমা ৩৮৬ কোটি
সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক হিসাব ১৬৩টি। তারা এসব হিসাবে ৩৮৬ কোটি টাকা জমা করেছেন। এর মধ্যে ৩৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। বর্তমানে হিসাবগুলোতে ছয় কোটি ২৭ লাখ টাকা জমা রয়েছে। এ ছাড়া পরিবারের চার সদস্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন ১২টি। এই কার্ডগুলো দিয়ে ২৮ লাখ টাকার বেশি লেনদেন করেছেন। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ও পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব ছিলেন নাঈমুল ইসলাম খান। এ ছাড়া একাধিক প্রত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খানের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ৯১টি। এসব হিসাবে ২৪৯ কোটি টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ২৩৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা তিনি উত্তোলন করেছেন। বর্তমানে তার ব্যাংক হিসাবে মাত্র ৬৪ লাখ টাকা জমা রয়েছে। তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি ১৩টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেন। এসব হিসাবে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে তিনি ১৩ কোটি টাকা উত্তোলন করেছেন। তাদের তিন মেয়ের ব্যাংক হিসাবেও মোটা অঙ্কের অর্থ জমা হওয়ার তথ্য মিলেছে। আদিবা নাঈম খানের হিসাবে ৩৫ লাখ, লাবিবা নাঈম খানের অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ২৫ লাখ এবং যূলিকা নাইম খানের অ্যাকাউন্টে ৬১ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এসব অর্থের সিংহভাগই তারা উত্তোলন করে নিয়েছেন। এ ছাড়া নাঈমুল ইসলাম খানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ৪৬টি হিসাবে জমা হয়েছে ১২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এর প্রায় পুরো টাকাই তিনি উত্তোলন করে ফেলেছেন। বর্তমানে মাত্র ২১ লাখ টাকা জমা আছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দেখা যায়, নাঈমুল ইসলাম খান এবং তার স্ত্রী-সন্তানরা মোট ১২টি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। এসব কার্ডের সর্বমোট সীমা ২৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬৭ টাকা। কার্ডগুলোতে বর্তমানে বকেয়া পড়েছে ৪৮ হাজার ৪০৮ টাকা। এর মধ্যে নাঈমুল ইসলাম খান একাই ব্যবহার করেন ছয়টি ক্রেডিট কার্ড। এসব কার্ডের সীমা ১৫ লাখ টাকার বেশি। তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির আছে চারটি ক্রেডিট কার্ড। এসব কার্ডের সীমা চার লাখ ১৯ হাজার টাকা। এ ছাড়া তার দুই মেয়ে সাড়ে ৪ লাখ টাকা সীমার দুটি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ২৫ আগস্ট নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। যদিও এর আগেই তারা প্রায় সব টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান হলে আত্মগোপনে চলে যান প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান। এরপর তিনি তার পরিচালিত পত্রিকাগুলো বন্ধ ঘোষণা করেন।

চাকরিচ্যুতরা এস আলমের অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত ছিল: এসআইবিএল
চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। অবস্থান নিয়েছেন ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে। আন্দোলনকারীদের দাবি, বিনা কারণে বিনা নোটিশে আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাংক বলছে, ‘ব্যাংকের সার্ভিস রুলস মোতাবেক ও নিয়োগ পত্রের ধারা দশ অনুযায়ী অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।’ বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছে এসআইবিএল। ব্যাংকটি বলছে, ‘ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এস আলম গ্রুপের অবৈধ নিয়োগ দেওয়া ৫৭৯ জন কর্মকর্তাকে গত ২৯ অক্টোবর চাকরিচ্যুত করে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকের সার্ভিস রুলস মোতাবেক ও নিয়োগ পত্রের ধারা দশ অনুযায়ী শিক্ষানবিশ সময়কালে ব্যাংক যে কোন সময় বিনা নোটিশে যে কোন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার অধিকার রাখে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এসব অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করা হয়।’ পরবর্তী চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ চাকরি পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে ব্যাংকের নিকট আবেদন করে। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যেকের সঙ্গে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে শুনানির আয়োজন করা হয়। শুনানি পরবর্তী ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তাদেরকে চাকরি পুনর্বহাল সম্ভব নয় উল্লেখ করে পত্র দেয়। এই চিঠি পাওয়ার পর গত রোববার (২৯ ডিসেম্বর) থেকে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে এবং লাগাতার ব্যাংকের সামনে অবস্থান করছে। যার ফলে, ব্যাংকের গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন এবং সাধারণ জনগণের স্বাভাবিক চলাফেরা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি ঢাকার মতিঝিলের সর্বোচ্চ স্থাপনা সিটি সেন্টারের সামনে এ ধরনের কার্যক্রম এই বিল্ডিংয়ে অবস্থিত অন্যান্য অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরও স্বাভাবিক চলাফেরা বাধাগ্রস্ত করছে। এসআইবিএল আরও জানায়, পটিয়া এলাকার প্রায় দুই হাজার কর্মকর্তা নিয়মবহির্ভূত নিয়োগ পেয়ে এখনো এসআইবিএলে কর্মরত রয়েছে। এসব কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এবং এস আলম গ্রুপের মদদে এই চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। তাদের এই পদক্ষেপ ব্যাংকিং খাত তথা রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পত্রের মাধ্যমে অবহিত করা হয় এবং তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দ্রুত তারা এ বিষয়ে কার্যকর নেবেন। এসআইবিএলের চেয়ারম্যান এম সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিয়োগপত্রের ধারা মেনেই অবৈধভাবে এস আলম গ্রুপের নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক যে, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর এস আলমের পৃষ্ঠপোষকতায় তারা এ ধরনের বিশৃঙ্খলা করে নৈরাজ্যের সৃষ্টি করছে; যা রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং সাধারণ জনগণ তথা ব্যাংকের গ্রাহকরা এর ফলে হয়রানির শিকার হচ্ছেন; যা মোটেই কাম্য নয়।’ ‘রাষ্ট্রীয় মদদে এস আলম গ্রুপ দেশের ব্যাংকিং খাতে ভয়াবহ দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে চরম অরাজকতার সৃষ্টি করেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক যখন ব্যাংকিং খাত সংস্কারে ইতিবাচক ও প্রশংসনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে, তখন এস আলমের মদদপুষ্ট এক গোষ্ঠী ফের অরাজকতা তৈরিতে সক্রিয় রয়েছে।’

জানুয়ারিতেও অপরিবর্তিত এলপি গ্যাসের দাম
ডিসেম্বরের মত জানুয়ারি মাসেও ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দাম অপরিবর্তিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকেই নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। যা বলবৎ থাকবে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত।বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ জানান, জানুয়ারি মাসে এলপিজির দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ১২ কেজি সিলিন্ডার বিক্রি হবে এক হাজার ৪৫৫ টাকায়।তবে, বৃহস্পতিবার অটোগ্যাসের দাম কমিয়েছে বিইআরসি। জানুয়ারি মাসে ভোক্তা পর্যায়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম তিন পয়সা কমিয়ে প্রতি লিটার ৬৬ টাকা ৭৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বিইআরসি জানিয়েছে, জানুয়ারি মাসের জন্য সৌদি আরামকোর প্রোপেন এবং বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন যথাক্রমে ৬২৫ মার্কিন ডলার ও ৬১৫ মার্কিন ডলার এবং প্রোপেন ও বিউটেনের অনুপাত ৩৫:৬৫ অনুযায়ী প্রোপেন ও বিউটেনের গড় সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন ৬১৮ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার বিবেচনায় জানুয়ারি মাসের জন্য বেসরকারি এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম ভোক্তা পর্যায়ে সমন্বয় করা হলো।প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে চার দফা কমেছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম, আর বেড়েছে সাত দফা। এক দফা ছিল অপরিবর্তিত। গত বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর বাড়ানো হয়েছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম। আর দাম কমেছিল এপ্রিল, মে, জুন ও নভেম্বরে। তবে দাম অপরিবর্তিত ছিল ডিসেম্বরে।

বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৪০তম প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত হল প্রাইম লিফ প্রসেসিং
বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষে (বেপজা) বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের ৪০তম প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিল্প স্থাপনের লক্ষ্যে লিজ চুক্তি সই করেছে প্রাইম লিফ প্রসেসিং কোম্পানি লিমিটেড। এই মাইলফলক বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান খ্যাতিকে আরো দৃঢ় করবে। সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভারতীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান প্রাইম লিফ প্রসেসিং বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৮৮ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার বিনিয়োগে তামাক প্রক্রিয়াকরণ কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর ও প্রাইম লিফ প্রসেসিংয়ের চেয়ারম্যান ম্যাং লি বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ঢাকাস্থ বেপজা নির্বাহী দপ্তরে চুক্তিতে সই করেন। বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রাইম লিফ প্রসেসিং বছরে ৩৬ হাজার টন তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাত করবে যেখানে ১০০ জন বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই নতুন উদ্যোগটি শিল্পের বৈচিত্র্যায়ন ও বিনিয়োগকারীদের আদর্শ ব্যবসায়িক পরিবেশ প্রদানের ক্ষেত্রে বেপজার অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রমাণ বহন করে। বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বাংলাদেশে বিশেষত বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় প্রাইম লিফ প্রসেসিং-কে ধন্যবাদ জানান। তিনি বিনিয়োগকারীদের বিশ্বমানের সহায়তা প্রদান, ব্যবসায় পরিচালনায় অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিতে বেপজার প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেন। আবুল কালাম বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান বিদেশি বিনিয়োগকারীকে বেপজায় বিনিয়োগের সুযোগ করে দিতে পারায় বেপজা গর্বিত। বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের সাফল্যে প্রাইম লিফ প্রসেসিংয়ের অবদান দেখতে আমরা আগ্রহী। বাংলাদেশের পর্যাপ্ত সুযোগ অনুসন্ধানে আমরা বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীগণকে আহ্বান জানাচ্ছি।’ ম্যাং লি বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের কারখানা স্থাপনের সুযোগ প্রদানের জন্য বেপজাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘২০২৫ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে আমাদের কারখানার উৎপাদন শুরু করতে আগ্রহী।’ স্থানীয় অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে তাদের বিনিয়োগের একটি ইতিবাচক প্রভাব থাকবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রাইম লিফ প্রসেসিংসহ মোট ৪০টি প্রতিষ্ঠান বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের লক্ষ্যে চুক্তি সই করল; যাদের মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ৯২৬ দশমিক পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ভ্যাট বৃদ্ধির পরিকল্পনায় ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা, আন্দোলনের হুমকি
কম ভ্যাটের বিমান ভ্রমণ, সিগারেট, এলপিজি, পোশাক ও রেস্তোরাঁর খাদ্যসহ একাধিক পণ্য ও সেবায় কর বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। ফলে, দেশে এরই মধ্যে ১১ শতাংশ ছাড়ানো মূল্যস্ফীতি আরও তীব্র হতে পারে। সরকারের পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানোর উদ্যোগে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘জুলাই- আগস্টের আন্দোলন ঘিরে প্রায় ৪-৫ মাস ধরে ব্যবসায় মন্দা ভাব দেখা গেছে। ব্যবসায়-বাণিজ্য যখন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে, তখনই কর বাড়ানোর মত আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার।’ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সুপারিশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রেস্তোরাঁয় ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করার পরিকল্পনা করেছে। নন-এসি হোটেলের ভ্যাট সাড়ে সাত শতাংশ থেকে দ্বিগুণ করে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এছাড়া, অভ্যন্তরীণ, সার্কভুক্ত দেশে ও আন্তর্জাতিক গন্তব্যে বিমান ভাড়াও বাড়তে পারে। বিমান টিকিটে আবগারি শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয় ফ্লাইটে শুল্ক ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা, সার্ক দেশগুলোর ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে তিন হাজার টাকা থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এ পদক্ষেপের মাধ্যমে এনবিআর ৩০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য স্থির করেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘তারা যদি রাষ্ট্র পরিচালনা না করতে পারে; তাহলে দায়িত্ব অন্য কাউকে দেওয়া হোক। এভাবে মানুষের ওপর জুলুম করার মানে হয় না। দেশটাকে খাদের কিনারে নিয়ে যাবে? ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা এরই মধ্যে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আন্দোলন, মূল্যস্ফীতি মিলিয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। এই করের বোঝা বাড়িয়ে আমলাদের চুরি করার একটা ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা স্ট্রাইকে চলে যাব। সব বন্ধ করে দেব। আমরা সবার সঙ্গে কথা বলছি। নিজেরা বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’ অরুনিমা রিসোর্টের চেয়ারম্যান ও ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট কবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এমনিতেই পর্যটন খাতের ১২টা বেজে রয়েছে। তারপর উড়োজাহাজের টিকিটের দাম বাড়লে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ খাত সংশ্লিষ্টরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে। আমরা সবার সঙ্গে বসে করণীয় ঠিক করব।’ বর্তমানে তৈরি পোশাকের আউটলেটের বিলের ওপর সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। এটি বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মিষ্টি কেনার ক্ষেত্রে ভ্যাট হার সাড়ে সাত শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক আইনে কিছু সংশোধন আনতে যাচ্ছে সরকার। যেন ওষুধ, গুঁড়াদুধ, সিগারেট, বিমানের টিকিটসহ ৬৫ ধরনের পণ্য ও সেবার ওপর বাড়তি মূসক ও শুল্ক আরোপ হতে পারে। ফলে, বাজেটের আগেই এসব পণ্য ও সেবার দাম এক দফা বাড়তে পারে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইনে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে। এসব সংশোধনীসহ মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধনী) অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়া সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং সাপেক্ষে গতকাল বুধবার (১ জানুয়ারি) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বিক্রি ৫০ লাখ টাকার বেশি হলে দিতে হবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট
বিদ্যমান নিয়মে কোন ব্যাবসায় প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বিক্রি ৫০ লাখ থেকে তিন কোটি টাকা পর্যন্ত হলে তার জন্য চার শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য ছিল। তবে, টার্নওভার ৫০ লাখ টাকা ছাড়ালেই এখন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের আওতায় নিয়ে আসছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে বিপুল সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বেড়ে যাবে। হিসাব অনুযায়ী, কোন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের দৈনিক বিক্রি গড়ে ১৩ হাজার ৬৯৮ টাকা পার হলেই প্রতিষ্ঠানটি ১৫ শতাংশ ভ্যাটের আওতায় চলে আসতে পারে। বর্তমানে বার্ষিক টার্নওভার ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত কোন প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট দিতে হয় না। এছাড়া, তাদের ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন বা বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (বিআইএন) নিতেও বাধ্য করা হয়নি। তবে, নতুন নিয়মে বছরে ৩০ লাখ টাকার বেশি টার্নওভার হলে ওই প্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলকভাবে বিআইএন নিতে হবে। এনবিআরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নতুন লক্ষ্য পূরণে বছরের মাঝামাঝি এসে এভাবে ভ্যাট হার বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নতুন ভ্যাট প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেলে দ্রুত অধ্যাদেশ জারি করে কার্যকর করা হতে পারে।’

ডিসেম্বরে রপ্তানি বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭২ শতাংশ
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে রপ্তানি আয় ১৭ দশমিক ৭২ শতাংশ বেড়ে চার দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের একই মাসে ছিল তিন দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) এ তথ্য প্রকাশ করেছে। চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) রপ্তানি আয় বেড়েছে ১২ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং ওই সময় আয় হয়েছে ২৪ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার; যা আগের বছর ছিল ২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। ডিসেম্বর মাসে পোশাক খাতের রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং আয় হয়েছে ৩ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছর ছিল ৩ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে তৈরি পোশাক থেকে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং আয় হয়েছে ১৯ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১৭ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে হিমায়িত এবং জীবন্ত মাছ থেকে রপ্তানি আয় ১৩ দশমিক ০১ শতাংশ বেড়ে ২৬৪ মিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা গত বছর ছিল ২১৭ মিলিয়ন। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে রপ্তানি আয় ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়ে ৫৭৭ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে যা গত বছর ছিল ৫২৩ মিলিয়ন ডলার। কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫৯৬ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি। পাট ও পাটজাত পণ্যে ৮ দশমিক ১১ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে এবং আয় হয়েছে ৪১৭ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছর ছিল ৪৫৪ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি করে ১৫৮ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা গত বছরের ১২২ মিলিয়নের তুলনায় ২৯ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি। ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য থেকে রপ্তানি আয় ১২ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে ১১৪ দশমিক ৪২ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। চামড়ার জুতা রপ্তানি ৩০ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়েছে এবং ৩৫৩২ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ২৭০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু চামড়াজাত পণ্যে ১১ দশমিক ১০ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি রেকর্ড করা হয়েছে। গত বছরের ১৮২ মিলিয়ন ডলারের বিপরীতে এ খাত আয় করেছে ১৬২ মিলিয়ন ডলার। কৃত্রিম চামড়ার পাদুকা থেকে রপ্তানি আয় উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে, যা ৩৯ দশমিক ১০ শতাংশ। এই উদীয়মান খাত আয় করেছে ২৭৪ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১৯৭ মিলিয়ন ডলার। হোম টেক্সটাইল খাতে ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেড়ে ৪১১ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৩৮১ মিলিয়ন ডলার।

চট্টগ্রামে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের রিটেইল বিজনেস হাব উদ্বোধন
গ্রাহকদের রিটেইল ব্যাংকিং সেবা দিতে চট্টগ্রাম সিটির জামালখান শাখায় রিটেইল বিজনেস হাব চালু করেছে আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক (এআইবি) পিএলসি। রিটেইল গ্রাহকরা হোম, সেমি পাকা, কার, পার্সোনাল বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ব্যাংকিং সুবিধা এ বিজনেস হাব থেকে পাবেন। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফরমান আর চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে বিজনেস হাবের উদ্বোধন করেন।অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফজলুর রহমান চৌধুরী। চট্টগ্রাম জোনাল হেড মোহাম্মদ আযমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. হাবীব উল্লাহ, মো. শোয়েব ইসলাম চৌধুরী, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট জালাল আহমেদ, রফিকুল ইসলাম ওজোনের শাখা ব্যবস্থাপকরা উপস্থিত ছিলেন।

ভ্যাট বাড়লেও প্রভাব পড়বে না নিত্যপণ্যে: অর্থ উপদেষ্টা
হোটেল, রেস্তোরাঁ ও পোশাকসহ ৪৩টি পণ্য-সেবার ওপরে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যের দামের ওপর কোন প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।উপদেষ্টা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে নয়, বরং রাজস্ব বাড়ানোর স্বার্থেই বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে।’তবে, ৪৩টি পণ্যের উপরে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যের দামের ওপরে প্রভাব পড়বে না উল্লেখ করে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কষ্ট হবে না। তিন তারকা মানের ওপরের হোটেলগুলোর ক্ষেত্রে কর বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ মানের হোটেল রেস্তোরাঁর ওপরে বাড়ানো হয়নি।’চলতি নতুন বছরে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসবে বলেও জানান উপদেষ্টা। সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ব্যাংকগুলোকে পর্যাপ্ত সাপোর্ট দেয়া হবে। আগামী বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হবে।’

হোটেল, রেস্তোরাঁ ও পোশাকসহ ৪৩ পণ্য-সেবায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট হচ্ছে
কম ভ্যাটের অন্তত ৪৩ ধরনের পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ আরোপের পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এসব খাতে বর্তমানে ৫-১০ শতাংশ হারে ভ্যাট নেওয়া হয়। মূল্যস্ফীতির এ সময়ে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট বাড়ানোর ফলে সাধারণ ভোক্তার ওপর নতুন করে ব্যয়ের চাপ তৈরি হতে পারে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানিয়েছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাকি ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) অতিরিক্ত ১২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হোটেল, রেস্তোরাঁ ও পোশাকের ওপর ভ্যাটের হার বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে এনবিআর। বর্তমানে সাধারণ মানের ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) রেস্তোরাঁয় খাওয়ার জন্য ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। এটি বেড়ে সাড়ে ৭ শতাংশ হতে পারে। এছাড়া, নন-এসি হোটেলের ভ্যাট ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ করে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আর স্থানীয় ব্র্যান্ডের পোশাকের ওপর বর্তমানে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। এটিও দ্বিগুণ হতে পারে। শুধু ব্র্যান্ডেড নয়, সাধারণ মানের যে কোন পোশাক কিনলেই ক্রেতাদের এ হারে ভ্যাট পরিশোধ করতে হতে পারে। মেডিসিন ব্যবসায়ও ভ্যাট বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, যেসব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কেনার ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ট্রেড ভ্যাট কার্যকর আছে, সেটি ৭ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সাবান, ডিটারজেন্ট, পেইন্ট, সুপারি ও আরও সাতটি পণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত আসতে পারে এনবিআরের কাছ থেকে। এর বাইরে বিমানের টিকিটের ক্ষেত্রে এক্সাইজ ডিউটি এবং তামাক পণ্যে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যালু বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে রাজস্ব বোর্ডের। এনবিআরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নতুন লক্ষ্য পূরণে বছরের মাঝামাঝি এসে এভাবে ভ্যাট বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।’ এ প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেলে আগামী শনিবার (৪ জানুয়ারি) অধ্যাদেশ জারি করে কার্যকর করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন এনবিআরের আরেক কর্মকর্তা। আগামী অর্থবছর থেকেই প্রায় সব পণ্য ও সেবার ওপর একক ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কার্যকর করতে চায় এনবিআর। ২০১২ সালে আইএমএফকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালনে পাশ করা একটি আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতেও তা করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এনবিআরের ভ্যাট নীতির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বলেন, ‘চলতি মাস থেকেই বড় আমরা ১৫ শতাংশ ইউনিফায়েড রেটের পরিকল্পনা করছি।’

আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলায় উপেক্ষিত এফবিসিসিআই, ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ
বুধবার (পহেলা জানুয়ারি ২০২৫) পূবার্চলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ২৯ তম ঢাকা আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলা অন্তর্বর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস উদ্বোধন করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা জনাব শেখ বশির উদ্দিন। বিগত বছরগুলোতে এফবিসিসিআই এর সভাপতি এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন এবং বক্তব্য প্রদান করেন। এবার এফবিসিসিআই প্রশাসক ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসাবে হাফিজুর রহমান উপস্থিত থাকার পরেও বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দেয়া হয়নি। বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ(এফবিসিসিআই) এ তথ্য জানান। বিবৃতিতে বলা হয় এফবিসিসিআই সর্বোচ্চ বাণিজ্য সংগঠন হিসাবে দেশের ৪ কোটি ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করে। এ ধরণের আচারণ ব্যবসায়ীদের সংক্ষুদ্ধ এবং অপমানিত করেছে। বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ দেশের অর্থনীতিকেগতিশীল করার জন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে আরো ইতিবাচক ভূমিকা আশা করেন।উপরোক্ত বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য দাবী জানিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ।

২০২৪-২৫ অর্থবছর: রাজস্ব আদায়ে বড় ধাক্কা, পাঁচ মাসে ঘাটতি ৪২ হাজার কোটি টাকা
চলতি অর্থবছরের পঞ্চম মাস নভেম্বরেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাজস্ব আদায় করতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায় কমেছে দুই দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ‘সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সরে না এলে বাড়বে না রাজস্ব আদায়।’ দেশ পরিচালনায় খরচ মেটাতে চলতি অর্থবছরে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা সাজিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে আন্দোলন, সংঘাত, ক্ষমতার পালাবদলের কারণে তৈরি হওয়া অস্থিরতার মাঝেই মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করছে সরকার। এমন প্রেক্ষাপটে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আয় করতে পারছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।সংস্থাটির হালনাগাদ পরিসংখ্যান বলছে, ‘চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর এই পাঁচ মাসে, রাজস্ব আদায় হয়েছে এক লাখ ২৬ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪২ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা কম। বছর ব্যবধানে কমেছে ২ দশমিক ৬২ শতাংশ।’আর শুধু নভেম্বরে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৫ হাজার ৩৫৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। যা গত বছরের একই মাসের তুলনায় প্রায় ৯ শতাংশ কম।দেশের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে মন্দাভাব থাকায় চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায় কম বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। এমন পরিস্থিতিতে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি থেকে সরে আসার পরামর্শ তাদের। অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবির বলেন, ‘সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে হবে। এটা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সরে না এলে বাড়বে না রাজস্ব আদায়।’এছাড়া, বিনিয়োগ বাড়াতে ঋণের সুদের হার কমিয়ে আনার দিকেও তাগিদ দিয়েছেন তারা।

সাবমিশন স্ট্যাটাস অফ ফিনান্সিয়াল স্টেটমেন্টস অফ লিস্টেড কোম্পানিজ মডিউল উদ্বোধন
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (ডিএসই) ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির (সিএসই) সাবমিশন স্ট্যাটাস অফ ফিনান্সিয়াল স্টেটমেন্টস অফ লিস্টেড কোম্পানিজ মডিউল উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এ মডিউলের উদ্বোধন করেন। এই মডিউলের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা বা যে কোন আগ্রহী পক্ষ (গুলি) তালিকাভুক্ত কোম্পানির আর্থিক বিবরণী জমা দেওয়ার অবস্থা দেখতে পারবে । খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এটিকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি অনন্য অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং ২০২৫ সালের প্রথম দিনে সফলভাবে মডিউলটি বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডার অর্থাৎ কমিশন, ডিএসই এবং সিএসইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিএসইর চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার, প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহাদী হাসান, ডেপুটি জেনারেল (হেড অব আইটি সার্ভিসেস) ম্যানেজার হাসনাইন বারী, ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এজিএম. সাত্ত্বিক আহমেদ শাহ, প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ, বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক কামরুল আনাম খান, পরিচালক মো. আবুল কালাম, অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান। অনুষ্ঠানে সিএসইর চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান সাবমিশন স্ট্যাটাস অফ ফিনান্সিয়াল স্টেটমেন্টস অফ লিস্টেড কোম্পানিজ মডিউলটির অসাধারণ ও সফল বাস্তবায়নের জন্য কমিশন, সিএসই এবং ডিএসইর সংশ্লিষ্ট সকলের প্রশংসা করেন ও ধন্যবাদ জানান।

কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের রেকর্ড
কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে পূর্বের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। সদ্য বিদায়ী বছরে ৩২ লাখ ৭৬ হাজার কনটেইনার এবং ১২ কোটি ৩৯ লাখ মেট্রিক টন পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছে এখানে। মূলত ডলার সংকট কাটিয়ে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য গতিশীল হওয়ায় বন্দরের এই সফলতা বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। পৃথিবীর ব্যস্ততম ১০০ বন্দরের মধ্যে ৬৭তম অবস্থানে থাকা চট্টগ্রাম বন্দরকে গত কয়েক বছর ধরেই নানা জটিলতার মধ্যে দিয়ে চলতে হচ্ছে। এরইমধ্যে ডলার সংকটের মুখে বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে লাগাম টানায় ভাটা পড়েছিল বন্দরের কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে। ২০২৩ সালে কনটেইনার হ্যান্ডলিং ৩০ লাখ ৫০ হাজার এবং কার্গো হ্যান্ডলিং ১২ কোটি দুই লাখ মেট্রিক টনে নেমে এসেছিল।গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা, পাশাপাশি সেপ্টেম্বরের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দেশের অর্থনীতি। এত সংকটের মাঝেও ২০২৪ সালে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ৩২ লাখ ৭৬ হাজার কনটেইনার এবং ১২ কোটি ৩৯ লাখ মেট্রিক টন পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছে এখানে।চবকের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে নিজের সক্ষমতা ও সকলের সহযোগিতায় এগিয়ে যাচ্ছে বন্দরটি।’রেকর্ডের অংশীদার কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলতে নতুন বছরের প্রথম দিন বুধবার (১ জানুয়ারি) সকালেই জেটিতে আসেন চবকের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান। এ সময় তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনা অনেক উন্নত করা হয়েছে। এতে কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে গতি বেড়েছে। এই গতি ধরে রাখতে পারলে ভবিষ্যতে বিদেশি বিনিয়োগ অনেক বাড়বে।’তবে, বন্দরটির অবস্থা বছরের শুরুতে এতটা রমরমা অবস্থায় ছিল না। ডলার সংকট আর রাজনৈতিক অস্থিরতায় হারাতে বসেছিল বিশ্ব র্যাংকিংয়ের অবস্থান। বর্তমানে এলসি খোলার ক্ষেত্রে ডলারের জোগান বাড়ায় আমদানি ও রফতানি দুটিই বেড়েছে বলে জানান শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আরিফ। তিনি বলেন, ‘এলসি খুলতে পারায় ও কাঁচামাল আমদানি বাড়ায় বেড়েছে উৎপাদন। এতে রফতানির পরিমাণও বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।’

বাণিজ্য মেলায় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের প্রিমিয়ার স্টল উদ্বোধন
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির প্রিমিয়ার স্টল ও তিনটি এটিএম বুথ উদ্বোধন করা হয়েছে। ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বুধবার (১ জানুয়ারি) ফিতা কেটে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার পূর্বাচলে ইসলামী ব্যাংকের ৬৩ নম্বর স্টল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট একেএম মাহবুব মোরশেদ, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মজনুজ্জামান ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এই স্টলে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আধুনিক ব্যাংকিং সেবাসহ বাণিজ্য মেলায় আসা ক্রেতা-দর্শনাথী, গ্রাহক ও ব্যবসায়ীদের তথ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। ব্যাংকের স্টলে রয়েছে অটোমেটেড চালান সিস্টেমের (এসিএস) মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ভ্যাট, ট্যাক্স ও বিভিন্ন ফি জমাদানের ব্যবস্থা। ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিদিনের লেনদেনের ভ্যাট-ট্যাক্সসহ অন্যান্য ফি এই স্টলে নিয়মিত জমা দিতে পারছেন। হিসাব খোলার ফরম পূরণ, এটিএম-সিআরএম থেকে টাকা উত্তোলন ও জমাসহ বিভিন্ন ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ডিজিটাল ব্যাংকিং অ্যাপ সেলফিন, এমক্যাশ, এজেন্ট ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ আমানত ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য জানা যাচ্ছে। সার্বিক সহায়তা করছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এছাড়া, ব্যাংকের তিনটি এটিএম বুথ থেকে হিসাবারীরা এটিএম কার্ড দিয়ে টাকা তুলে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে পারছেন। সিআরএমের মাধ্যমে বিক্রেতারাও যে কোন সময় নিজেদের টাকা জমা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ইসলামী ব্যাংক ২০১২ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাসহ ক্রেতা দর্শনার্থীদের স্মার্ট ব্যাংকিং সেবা দিয়ে আসছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রম বাড়ানো ও মানুষকে ইসলামী ব্যাংকিং সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতে প্রতি বছর মেলায় অংশ নিয়ে থাকে ইসলামী ব্যাংক।

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসল ডিসেম্বরে
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দুই দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার বা ২৬৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ৩১ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা। একক মাস হিসাবে আগে কখনোই এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। এর আগে করোনাকালীন ২০২০ সালের জুলাই দুই দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এবার সেই রেকর্ড ভাঙল ২০২৪ সালের বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ‘২০২৪ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুলাই মাস বাদে বাকি ১১ মাসই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।’ তথ্য বলছে, ‘চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বরে) এক হাজার ৩৭৭ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৯৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার বেশি এসেছে। গত অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৮০ কোটি ডলার।’

বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে এক্সেসরিজ তৈরির কারাখানা স্থাপন করবে ইপিএল
বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি এক্সেসরিজ তৈরির কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ইপিএল (এক্সপোর্ট লিংক) এক্সেসরিজ লিমিটেডের সাথে চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। প্রতিষ্ঠানটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে যার; ফলে ৬১০ জন বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বুধবার (১ জানুয়ারি) বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমানের উপস্থিতিতে সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর এবং ইপিএল (এক্সপোর্ট লিংক) এক্সেসরিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মনোয়ার হোসেন চুক্তিতে সই করেন।প্রতিষ্ঠানটি ফোম, কার্টন, পলি ও গাম টেপসহ বিভিন্ন ধরনের এক্সেসরিজ পণ্য তৈরি করবে। এছাড়া, তাদের ফোম ও ফ্রেব্রিক ল্যামিনেশন, স্ক্রিন প্রিন্ট ও এমব্রয়ডারির সক্ষমতাও রয়েছে। বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ইপিএল এক্সেসরিজকে ধন্যবাদ জানান এবং সুষ্ঠুভাবে ব্যবসায় পরিচালনায় সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বেপজার সদস্য (প্রকৌশল) মো. ইমতিয়াজ হোসেন, সদস্য (অর্থ) আনম ফয়জুল হক, নির্বাহী পরিচালক (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. তানভীর হোসেন, নির্বাহী পরিচালক (এন্টারপ্রাইজ সার্ভিসেস) মো. খুরশিদ আলম, বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল হক, নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) এএসএম. আনোয়ার পারভেজ উপস্থিত ছিলেন।

তিন ব্যাংককে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার বিশেষ ঋণ বাংলাদেশ ব্যাংকের
বাংলাদেশ ব্যাংক বিদায়ী ২০২৪ সালের শেষ দিনে আর্থিক হিসাব ঠিক রাখতে তিনটি বেসরকারি ব্যাংককে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিশেষ ঋণ দিয়েছে। এই ব্যাংকগুলো হল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং এবি ব্যাংক। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বছরের শেষ দিনে চলতি হিসাবের ঘাটতি পূরণে এই অর্থ দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পেয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংক পেয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা এবং এবি ব্যাংক পেয়েছে এক হাজার কোটি টাকা। এছাড়াও, দৈনন্দিন তারল্য সংকট মেটাতে এবি ব্যাংককে আরও ২০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।বুধবার (১ জানুয়ারি) এই ঋণ ফেরত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশেষ এই ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। গত ১৫ বছরে নানা অনিয়মের কারণে তিন ব্যাংকই বড় ধরনের তারল্য সংকটে পড়েছে। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ থেকে এস আলম গ্রুপ প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে বের করে নেয়, যা ব্যাংকটির মোট ঋণের ৫০ শতাংশ। ন্যাশনাল ব্যাংকেও সিকদার গ্রুপসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বিশাল অঙ্কের ঋণ অনিয়মিত হয়েছে। অন্যদিকে, এবি ব্যাংক দীর্ঘ দিন ধরে অনিয়মের শিকার, যা এর প্রতিষ্ঠাতা বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী মোরশেদ খানের পরিবার দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছিল। ঋণ অনিয়মের কারণে এই ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নগদ জমার হার (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ জমার হার (এসএলআর) বজায় রাখতে পারছে না। আগে থেকেই ট্রেজারি বিল ও বন্ড বন্ধক রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারা ঋণ নিয়েছে। ফলে নতুন করে ধার নেওয়ার কোন উপকরণ না থাকায় বছরের শেষ দিনে বিশেষ ঋণের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এই ঋণ ব্যাংকগুলোর চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত দেখাতে সহায়তা করলেও মূল সমস্যার সমাধানে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার প্রয়োজন। অনিয়ম রোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে এই ধরনের সংকট পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।

বাণিজ্য সচিবের অতিরিক্ত দায়িত্ব পেলেন আবদুর রহিম
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খানকে। নতুন সচিব পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি সচিবের রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-১ শাখা এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। আদেশে বলা হয়, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিনের অবসরজনিত কারণে নতুন সচিব পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত এ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খানকে তার নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি নির্দেশক্রমে সচিবের রুটিন দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’ যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সরকারি চাকরি থেকে অবসরে গিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন। তাকে দেয়া অবসরের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিনকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’- এর (২০১৮ সনের ৫৭ নম্বর আইন) ধারা ৪৩ (১) অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বর থেকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেয়া হল। তিনি বিধি অনুযায়ী অবসর ও অবসর-উত্তর ছুটিকালীন সুবিধা পাবেন।’