মূল্যস্ফীতি নিয়ে যে সুসংবাদ দিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর
ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি যখন দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করছে তখন এই মূল্যস্ফীতি নিয়ে সুসংবাদ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতির হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসবে। গভর্নর বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য আগামী জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা। আমরা আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে এটিকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনব এবং আমি আশা করি, এটি সম্ভব হবে। আমরা এ লক্ষ্যে বিভিন্ন নীতিগত ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করছি।’ শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, নভেম্বর মাসে বাংলাদেশে সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা বেড়ে অক্টোবর ২০২৪ সালের ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ থেকে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই বৃদ্ধি প্রধানত খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণে হয়েছে, যা অক্টোবরের ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ থেকে বেড়ে নভেম্বরে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ হয়েছে। এ ছাড়াও, খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হারও সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে নভেম্বরে ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশে পৌঁছেছে, যা অক্টোবরে ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ড. মনসুর বলেন, ‘বন্যার কারণে প্রায় সারাদেশে খাদ্যশস্য ও সবজির উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাজারে সবজি ও খাদ্যদ্রব্যের দাম চড়া। এটা শীঘ্রই নেমে আসবে। আমরা যদি মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারি। তাহলে আমরা ব্যাংকের সুদের হার এবং নীতির হার কমিয়ে আনব।’ গভর্নর বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা থাইল্যান্ডসহ অনেক দেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে। আমরা দেখেছি যে মূল্যস্ফীতি একটি কাঙ্ক্ষিত স্তরে নামিয়ে আনতে কমপক্ষে ১২ মাস সময় লাগে। সুতরাং, এর জন্য আমাদের সেই নির্দিষ্ট সময়টা দিতে হবে।’ ড. মনসুর বলেন, যদিও মুদ্রানীতি কঠোর করা হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ঋণ নিয়ন্ত্রণেও রাজস্ব ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি এখনো কমেনি। গভর্নর বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই মুদ্রানীতি অত্যন্ত কঠোর করেছি। আমরা নীতি হার বাড়িয়েছি। আমি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং আমি মনে করি, জানুয়ারির তথ্য না আসা পর্যন্ত আমি দেখব। এ পর্যন্ত এটি হতাশাজনক ছিল।’ এসব ব্যাখ্যা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, বিগত সরকার তথ্য-উপাত্তে হেরফের করেছে বলে দুটি কারণে এমন হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘এখন আর কোনো বাধা নেই। সুতরাং, গত বছর কম ছিল, এই বছরটি বাস্তব এবং আমরা এই সময় অর্থনৈতিক নীতি কঠোর করার প্রক্রিয়াগুলোতে অর্থনীতির প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। এ ছাড়াও, মুদ্রানীতি কঠোর করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উপর মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে সাহায্য করার জন্য পেঁয়াজ, ভোজ্য তেল এবং চিনির মতো প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের আমদানি শুল্কও প্রত্যাহার করেছে সরকার।’ সূত্র: বাসস
শুল্কমুক্ত সুবিধায় ২৯ দিনে ভারত থেকে চাল এল ৩৫ হাজার ৪৩ টন
সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারত থেকে ২৯ দিনে ৯৬৯ ট্রাকে ৩৫ হাজার ৪৩ টন চাল আমদানি হয়েছে। দীর্ঘ দুই বছর বন্ধ থাকার পর গেল ১৩ নভেম্বর চালের প্রথম চালান আসে এই বন্দরে। এভাবে চাল আমদানি অব্যাহত থাকলে দেশের বাজারে দাম কমে আসবে বলে দাবি আমদানিকারকদের। তবে, ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘চাল আমদানির প্রভাব এখনো সাতক্ষীরার চালের বাজারগুলোতে পড়েনি।’ ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে চলতি অর্থব ছরের ১৩ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে বিভিন্ন প্রকারের ৩৫ হাজার ৪৩ টন চাল আমদানি হয়। যার আমদানি মূল্য প্রায় ৩২ কোটি টাকা। আমদানিকৃত এসব চালের মধ্যে রয়েছে চিকন বাসমতি, মিনিকেট ও মোটা স্বর্না এবং জামাইবাবু জাতের চাল। ভোমরা স্থল শুল্ক স্টেশন রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শফিউল বসর বলেন, ‘ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ১৩ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯৬৯টি গাড়িতে চাল আমদানি করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৪৩ টন। সরকার যেহেতু চালের ওপর ডিউটি ফ্রি করে দিয়েছে যার জন্য এখানে কোন রাজস্ব আদায় হয়নি।’ উত্তরবঙ্গের চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স সোনালী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কামাল হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর ভারত সরকার চাল রপ্তানি শুরু করার পর থেকে অন্যান্য বন্দরের পাশাপাশি ভোমরা বন্দর দিয়ে চাল আমদানি করছে তার প্রতিষ্ঠানটি। তবে, গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে কেবল আমদানি শুরু হয়েছে। এখনো তেমন প্রভাব পড়তে শুরু হয়নি দেশের চালের বাজারগুলোতে।’ সাতক্ষীরা জেলা সদরের বৃহৎ মোকাম সুলতানপুর বড় বাজারের চাল ব্যবসায়ীরা জানান, চিকন বাসমতি চাল প্রতি কেজি ৭৮ টাকা, চিকন আটাশ জাতের চাল কেজি প্রতি ৫৮-৫৯ টাকা ও মোটা জাতের চাল ৪৮-৫০ টাকা দরে বিক্রি করেন। এ ছাড়া, আমদানিকৃত মোটা স্বর্ণা ও জামাইবাবু জাতের চাল ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। তবে, ভারতীয় চাল আমদানিতে দেশি চালের বাজারে এর কোনে ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি বলে জানান তিনি। সাতক্ষীরা জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সালেহ্ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘বর্তমান সাতক্ষীরার চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। তবে, ভারত থেকে চাল আমদানি শুরুর কারণে শিগগিরই চালের বাজার কমতির দিকে আসবে বলে আশা করছেন তিনি।
কমল স্বর্ণের দাম
দেশের বাজারে টানা দুই দফা বাড়ানোর পর ফের স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভরিতে এবার সর্বোচ্চ এক হাজার ৭৭৩ টাকা কমিয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দাম কমানোর ফলে ভাল মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম হবে এক লাখ ৩৮ হাজার ৪৯৮ টাকা। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে গেল ১ ডিসেম্বর সোনার দাম কমানো হয়। পরে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ও বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুই দফায় সোনার দাম বাড়ানো হয়।
মাথাপিছু জিডিপিতে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ
ভারত ও পাকিস্তানের মানুষের চেয়ে গড়ে বেশি আয় করেন বাংলাদেশের মানুষেরা। আয়ের ক্ষেত্রে কয়েক বছর ধরেই ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। অথচ দুই দশক আগেও ভারত ও পাকিস্তান বেশ এগিয়ে ছিল বাংলাদেশের চেয়ে। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘করোনা মহামারী ও বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা স্থবির হলেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার একেবারে নেতিবাচক ধারায় যায়নি। প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তবে তা ছিল ধীরগতির। এ দিকে, জাতীয় মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে গত দুই যুগের ব্যবধানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মায়ানমার থেকে।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘বহু স্বল্প আয়ের দেশ ঋণ সংকটে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। তবে, তা উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে প্রবৃদ্ধি সাড়ে চার শতাংশে নেমে আসে। ২০২০-২১ অর্থ বছরে তা আরও কমে তিন দশমিক চার শতাংশে নেমে যায়। পরবর্তী দুই বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে গতি অর্জন করে। ২০২১-২২ অর্থ বছরে তা বেড়ে সাত দশমিক এক শতাংশে দাড়ায়। কিন্তু, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে প্রবৃদ্ধির হার ফের ধীর হয়ে আসে।’ চলতি অর্থ বছরে প্রবৃদ্ধির হার চার শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে পূর্ভাবাস দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। এ দিকে, বিশ্ব ব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে বিশ্ব ব্যাংক ৬৩টি দেশকে নিম্ন আয়ের হিসাবে শ্রেণিভুক্ত করেছিল। এরপর থেকে, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশসহ ৩৯টি দেশ মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় ওঠে আসে। যার অর্থ ২০২৩ সাল নাগাদ তাদের বার্ষিক মাথাপিছু আয় এক হাজার ১৪৫ ডলারের উপরে ছিল। বাকি দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার প্রত্যাশিত হয়নি। প্রবৃদ্ধির হারে টেকসই হওয়ায় নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মধ্যে মাত্র ছয়টির ২০৫০ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের মর্যাদা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। ২৫ বছরে অগ্রগতির বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই দেশগুলো এগিয়ে গেছে। এসব নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের আসন্ন গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস রিপোর্টে বিস্তারিত তুলে ধরবে। যা আগামী ১৪ জানুয়ারী প্রকাশিত হবে।’ প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চার বছর ধরে ভারতের ওপরে বাংলাদেশ। মাথাপিছু জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) ক্ষেত্রে টানা চার বছর ধরে ভারতের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। আইএমএফের সর্বশেষ হিসাবে, ২০২৩ সালে এসে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৬২১ ডলার। আর ভারতের মাথাপিছু জিডিপি দুই হাজার ৬১২ ডলার। ২০২০ সালে প্রথম বারের মত মাথাপিছু জিডিপিতে ভারতকে ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। ওই বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ছিল এক হাজার ৮৮৮ ডলার। আর ভারতের ছিল এক হাজার ৮৭৭ ডলার। এ দিকে, ২০১৬ সালে প্রথম বারের মত পাকিস্তানকে মাথাপিছু জিডিপিতে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ। ওই বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ৬৫৯ ডলার। পাকিস্তানের ছিল এক হাজার ৪৬৮ ডলার। এরপর আর কোন বছর পাকিস্তান বাংলাদেশকে ছাড়াতে পারেনি। মাথাপিছু জিডিপি ওঠানামার মধ্যে ছিল দেশটির। সর্বশেষ ২০২৩ সালে এসে পাকিস্তানের মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়ায় এক হাজার ৪৭১ ডলার। ক্রয়ক্ষমতায় পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে, ভারতের চেয়ে পিছিয়ে ভুটানের মাথাপিছু জাতীয় আয় ৭২০ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ৭৪০ ডলার। ওই সময়ে দেশটির মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৪১৯ শতাংশ। মায়ানমারের মাথাপিছু জাতীয় আয় ২০০০ সালে ছিল ১৯০ ডলার। গত বছর তা বেড়ে দাড়িয়েছে এক হাজার ২১০ ডলারে। ওই সময়ে দেশটির মাথাপিছু জাতীয় আয় বেড়েছে ৫৩৭ শতাংশ। আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে নেপালের মাথাপিছু জাতীয় আয় ২২০ ডলার থেকে বেড়ে এক হাজার ৩৭০ ডলার হয়েছে। ওই সময়ে দেশটির আয় বেড়েছে ৫২৩ শতাংশ। পাকিস্তানের মাথাপিছু জাতীয় আয় ৪৭০ ডলার থেকে বেড়ে এক হাজার ৫০০ ডলার হয়েছে। দেশটির আয় বেড়েছে ২১৯ শতাংশ। আগানিস্তানের মাথাপিছু জাতীয় আয় গত বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬০ ডলার।
ডিভিডেন্ড বিতরণে ব্যর্থতায় জরিমানার মুখে নয় কোম্পানির পরিচালকরা
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়টি কোম্পানির পরিচালকরা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে শেয়ারহোল্ডারদের ঘোষিত ডিভিডেন্ড বিতরণে ব্যর্থ হওয়ায় জরিমানার মুখে পড়ছেন। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানিগুলোকে ডিভিডেন্ড বিতরণ করার জন্য সর্বশেষ রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেও তারা শেয়ারহোল্ডারদের কাছে ডিভিডেন্ড পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছেন বিধায় কোম্পানিগুলোর পরিচালকদের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে জরিমানা আরোপ করছে বিএসইসি। কোম্পানিগুলো হল বিডি পেইন্টস, ওরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, সাফকো স্পিনিং মিলস, মামুন এগ্রো প্রোডাক্টস, লুব-রেফ (বাংলাদেশ), কৃষিবিড ফিড, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন, প্যাসিফিক ডেনিমস ও কৃষিবিদ সীড। বিএসইসি জানিয়েছে, দুই বছর আগে ২০২১-২২ অর্থ বছরের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছিল কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ। কিন্তু, সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঘোষিত ডিভিডেন্ডের অর্থ কোম্পানিগুলো তাদের শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করেনি।’ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় ও শেয়ারবাজারের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিএসইসি নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ডিভিডেন্ড বিতরণে ব্যর্থ কোম্পানিগুলোর পরিচালকদের (স্বাধীন পরিচালক ব্যতীত) জরিমানা আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে, জরিমানা আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও কমিশন কোম্পানিগুলোকে ঘোষিত ডিভিডেন্ড বিতরণের সুযোগ দেওয়ার জন্য একটি সময়সীমাও নির্ধারণ করে দিয়েছিল। যা ছিল ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪। যদি ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ কোম্পানির পরিচালকরা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ডিভিডেন্ড বিতরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের ওপর দশ লক্ষ টাকা থেকে আড়াই কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা আরোপ করা হতে পারে। আর যদি আরোপ করা জরিমানার অর্থ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা না হয়, তাহলে প্রতিদিন তাদেরকে দশ হাজার টাকা করে বাড়তি জরিমানা আরোপ করা হবে। ডিভিডেন্ড বিতরণের নিয়ম: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্তির বিধি অনুসারে, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) অনুমোদনের ৩০ দিনের মধ্যে ঘোষিত বা অনুমোদিত ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণ করতে হয়। যদি কোন তালিকাভুক্ত কোম্পানি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডিভিডেন্ড দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে এর পরিচালকরা যৌথভাবে ও একযোগে দায়বদ্ধ হবেন এবং তাদেরকে প্রতিদিন পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে। বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ডিভিডেন্ড বিতরণে ব্যর্থ হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিডি পেইন্টসের পরিচালকদের ৯৭ লাখ টাকা, ওরিজা এগ্রো ৪৭ লাখ টাকা, সাফকো স্পিনিং ২০ লাখ টাকা, পেসিফিক ডেনিমস ১৩ লাখ টাকা, লুব-রেফ দুই কোটি ৩৫ লাখ টাকা, মামুন এগ্রো ১৩ লাখ টাকা, কৃষিবিদ ফিড দশ লাখ টাকা, কৃষিবিদ সীড দশ লাখ টাকা ও অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন এক কোটি ৯১ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা হতে পারে।
বিসিসিএমইএর বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ চারকোল ম্যানুফেকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিসিসিএমইএ) বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) হোটেল ফারস্ এন্ড রিসোর্ট ঢাকায় এ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় বিস্তারিত আলোচনার পর সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগাম নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং নির্বাচন বোর্ড ও আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান মনোনয়ন দেওয়া হয়। নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়েছেন গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী খোকন ও আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুল হক আব্বাসী। সভায় ‘বিসিসিএমইএ’র সদস্যরা ছাড়াও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক ও বর্তমান পরিচালনা সহায়ক কমিটির সদস্য মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী খোকন ও বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ সদস্য সচিব মো. জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন। জিয়াউল হক সভায় সঞ্চালনা করেন ও আবুল কালাম আজাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
তিন ধরনের লোক বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতে লুটপাটে জড়িত: অধ্যাপক তামিম
বিগত সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে একক ক্ষমতাবলে কুক্ষিগত করে রেখে সীমাহীন দুর্নীতি করা হয়েছে। রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ীরাই- এই দুইটি খাতে লুটপাটে জড়িত। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত বিতর্ক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম তামিম।অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিযোগিতা ছাড়াই বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেয়া হয়েছে। কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণে একক ক্ষমতা চরম অপব্যবহার করা হয়েছে। পিডিবি বিদ্যুৎ কেনা, সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ হয় এককভাবে। আমলা, রাজনীতিবিদরা এই একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করে সুবিধাভোগ করে। নিজস্ব ক্ষমতা সম্পন্ন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান দরকার। যার মাধ্যমে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে দুর্নীতি কমিয়ে আনা সম্ভব।’আইন দিয়ে দুর্নীতি বন্ধ হয় না উল্লেখ করে এই অধ্যাপক বলেন, ‘মাফিয়ারা আইনের মাধ্যমেই চুরি করেছে। কিছু ক্ষেত্রে আইনের ফাঁক রয়েছে। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া দরকার। তাহলে পরবর্তী কেউ এমন করার সাহস পাবে না। এ জন্য শপথ নিতে হতে হবে তরুণদের।’‘শ্বেতপত্রের প্রতিবেদনে তিন বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত মুনাফা দেখানো হয়েছে। কাগজ-কলমের মাধ্যমে আমরা দেখিয়েছি। কিন্তু, কাগজের বাইরে যে লুটপাট হয়েছে, তা প্রমাণ করা সম্ভব নয়। বললেন ম তামিম।তিনি বলেন, ‘আদানির প্রজেক্টে কয়লার মূল্য বহু বেশি ধরা হয়েছে। বাকি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে কয়লার দাম বহু কম। ১০০ শতাংশ ক্যাপাসিটি চার্জ তো দিতে হবেই, সঙ্গে ৪০ শতাংশ বিদ্যুতের দাম দিতে হবে, ব্যবহার না করলেও। অন্যান্য ক্ষেত্রে শুধু ক্যাপাসিটি চার্জ দিলেই চলে। দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য তেলবিদ্যুতের বিকল্প ছিল। কিন্তু, ২০১২-১৩ সালের পর কুইক রেন্টাল প্রয়োজন ছিল না।’ডোমেস্টিক সেক্টরে মূলত গ্যাস চুরি হচ্ছে উল্লেখ করে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সার্বক্ষিণিক ব্যবহার করছে দুই চুলা এক হাজার ৪০০ টাকায়। দুই সিলিন্ডার ব্যবহারে লাগে ২৮ হাজার। তফাত কম হলে চুরি কম হত। যেহেতু পার্থক্য বেশি, সেহেতু অবৈধ সংযোগে ঝোঁক বেশি। এটি বন্ধ করতে কাঠামোগত পরিবর্তন দরকার।’ তিনি বলেন, ‘বিপিসি বাংলাদেশের সবচেয়ে অস্বচ্ছ একটি প্রতিষ্ঠান। এর সঙ্গে সরকারি স্বার্থ জড়িত। লস দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ হাতানোর কারণে একে অস্বচ্ছ রাখা হয়েছে। এর নিয়ন্ত্রণ বিইআরসির হাতে দেয়া উচিত। বাংলাদেশের বিদ্যুত খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতার দরকার আছে, কিন্তু তা অবশ্যই ন্যায্যতার ভিত্তিতে।’
বরিশালে ন্যাশনাল ব্যাংকের আঞ্চলিক ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের আঞ্চলিক ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বরিশালের হোটেল গ্র্যান্ড পার্কে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। দিনব্যাপী এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। সম্মেলনে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উদ্যোক্তা পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন, স্বতন্ত্র পরিচালক ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সাত্তার সরকার, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. জুলকার নায়েন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল আলম খান, খুলনা ও শরীয়তপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক, খুলনা ও শরীয়তপুর অঞ্চলের শাখা ব্যবস্থাপকবৃন্দ, অপারেশনস ম্যানেজারগণ ও উপশাখা ব্যবস্থাপকরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে আবদুল আউয়াল মিন্টু ন্যাশনাল ব্যাংকের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারে সব স্তরের কর্মীদের নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বিশেষভাবে শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়, নতুন আমানত সংগ্রহ ও গ্রাহক সেবার মানোন্নয়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। মো. তৌহিদুল আলম খান শাখাগুলোকে রেমিটেন্স গ্রাহকদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি সব গ্রাহকের কাছে নতুন ও আকর্ষণীয় ডিপোজিট পণ্য পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানান।
সৌদিতে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেলের সাথে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎ
সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মিয়া মো. মাইনুল কবিরের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এ সাক্ষাৎ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাতে সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেসব সমস্যা মোকাবেলা করছেন এবং ইসলামী ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণে যেসব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে সৌদি আরবে বাংলাদেশের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর সৈয়দা নাহিদা হাবিবা, ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জাহাঙ্গীর আলম ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আশরাফুল আলমসহ ব্যাংকের সৌদি আরবের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এনআরবি ব্যাংকে এএমএল অ্যান্ড সিএফটি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত
এনআরবি ব্যাংক পিএলসি. কর্মীদের মধ্যে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এএমএল এন্ড সিএফটিকনফারেন্স-২০২৪ আয়োজন করেছে। আজ শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই কনফারেন্সের উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন এ,কে,এম, এহসান, হেড অফ বিএফআইইউ (এক্টিং) এবং সভাপতিত্ব করেন এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ শাকির আমীন চৌধুরী, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ক্যামেলকো আনোয়ার উদ্দিন, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিও মো. শাহীন হাওলাদার, উপ-ব্যবস্থাপনাপরিচালক ও সিআরও মো. আলী আকবর ফরাজি। বিএফআইইউ-এর যুগ্ম পরিচালকদ্বয় জনাব মো. ইমতিয়াজ হারুন এবং ইবনে আহসান কবির রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং প্রতিদিনের ব্যাংকিং কার্যক্রমে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নবিষয়ক করণীয় এবং বর্জনীয় নিয়ে তাদের আলোচনা উপস্থাপন করেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যামেলকো, ডামেলকো, হেড অফ ডিভিশন ও শাখা প্রধানগণ।
মোটা চালের দাম কিছুটা কমেছে
বাজারে চিকন চালের দাম আগের অবস্থানেই রয়েছে। তবে সামান্য কমেছে মোটা চালের দাম। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন খেটে খাওয়া মানুষ। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২-৩ টাকা কমেছে মোটা চালের দাম। নগরীর ঢাকা উদ্যান এলাকার হাজী জয়নাল আবেদীন বাজার ঘুরে দেখা যায়, মিনিকেট নামে চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে। বিগত দুই সপ্তাহ ধরে একই দামে বিক্রি হচ্ছে মিনিকেট নামের চাল। দাম কিছুটা কমে এসেছে আটাশ চালের। গত সপ্তাহেও ৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া আটাশ এ সপ্তাহে মিলছে ৫৮ টাকা কেজি দরে। চাল বিক্রেতা মহিন উদ্দিন ভুইয়া বলেন, ‘আটাশ নতুন চাল আসার পর দাম গত সপ্তাহে কিছু কমেছিল। এ সপ্তাহে পুরান চালের দামও কিছুটা কমেছে।’ এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইজাম চাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভাতের চালের মধ্যে সবচেয়ে কম দামে মিলছে স্বর্ণা। কেজি ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। এছাড়া আতপ চাল ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইল চালের কেজি ৭৫ টাকা। বাঁশমতি চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।
খেলাপি ঋণের বিরুদ্ধে আরও কঠোর নীতির পরামর্শ দিল আইএমএফ
খেলাপি বা ঋণ শ্রেণিকরণ নীতিমালা আরও কঠোর করার কথা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল সুবিধা নিলে সঙ্গে সঙ্গে সেই ঋণ যেন নিয়মিত দেখাতে না পারে এমন নীতির করার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আইএমএফের মধ্যবর্তী পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে ঋণ শ্রেণীকরণ বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে বাংলাদেশ চতুর্থ কিস্তির অর্থ পাবে। চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে তৃতীয় কিস্তির পর্যালোচনা করতে আইএমএফের ১০ সদস্যের একটি দল ৪ ডিসেম্বর ঢাকায় এসেছে। দলটি বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে দুই সপ্তাহ ধরে বৈঠক করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ‘খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল সুবিধা নেওয়ার পর ব্যাংকগুলো ওই ঋণ সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত দেখায়। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চর্চা অনুসরণ করা হচ্ছে না। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যাসেল-৩ নীতিমালার আলোকে সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে বলেছে আইএমএফ।’ ব্যাসেল-৩ নীতিমালা অনুযায়ী, খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল সুবিধা নিলেও ওই ঋণ তিন মাসের আগে নিয়মিত দেখাতে পারবে না। এই তিন মাস যদি গ্রাহক ঠিক মতো ঋণের কিস্তি পরিশোধ করে তাহলে ঋণ নিয়মিত দেখাতে পারবে। তবে দেশের ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করার সঙ্গে সঙ্গে ঋণটি নিয়মিত দেখাচ্ছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ শ্রেণীকরণ নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত নীতিমালার প্রশংসা করেছে সংস্থাটি। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কোনো ঋণ পরিশোধ না করলে তা মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে গণ্য হবে। এরপর অনাদায়ি হিসেবে ওই ঋণ ৯০ দিন অতিক্রম করলে খেলাপি হয়ে যাবে। জানা গেছে, বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে কয়েক দফায় আলোচনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি ঋণসংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত করে। পাশাপাশি আগামী বছরের জুনে এই নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিবেদন তৈরিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলো তিন মাস ভিত্তিতে ঋণের মানসংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে, ফলে এপ্রিল মাস থেকে এই নীতিমালা কার্যকর হবে। এই নীতিমালার ফলে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি রেকর্ড ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে এক বৈঠকে বাজারে সরবরাহ বাড়াতে ডলারের দামের ওঠানামা চেয়েছিল আইএমএফ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘সাধারণত মুদ্রার বিনিময় হার যেভাবে ওঠানামা করার কথা, সেভাবে করছে না। এই বাস্তবতায় মানুষের মধ্যে ডলার ধরে রাখার প্রবণতা তৈরি হতে পারে। প্রভাব পড়তে পারে বাজারে ডলারের সরবরাহে। সে জন্য ক্রলিং পেগের কথা বলেছে আইএমএফ।’ এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটিও বিনিময় হারের ক্রলিং পেগ ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে সম্পূর্ণভাবে বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করা, বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে তা আধুনিক করা এবং আমদানির ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ অবশিষ্ট থাকলে তা তুলে নেওয়ার জন্যও পরামর্শ দিয়েছেন। আইএমএফের সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। এখন পর্যন্ত তিন কিস্তির অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। গত ডিসেম্বরে পেয়েছে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। আর গত জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। ঋণের বাকি প্রায় ২৩৯ কোটি ডলার পাওয়া যাবে চার কিস্তিতে, যার এক কিস্তি পাওয়া যেতে পারে চলতি ডিসেম্বরে।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে
প্রবাসীদের আয় রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ছে। ফলে দীর্ঘদিন পর ফের বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পৌঁছেছে। তবে নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ) এখনো ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে অবস্থান করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ উঠেছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন)। গত আওয়ামীলীগ সরকারের লাগামহীন অর্থ পাচার ও নানা অনিয়মের কারণে রিজার্ভকরে তলানিতে নামে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি ডিসেম্বরের মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ ২ হাজার ৪৭৫ কোটি মার্কিন ডলার বা ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন এক হাজার ৯২০ কোটি ডলার (১৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন)। চলতি মাসের শুরুর দিকে অর্থাৎ ৪ ডিসেম্বর গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন এবং বিপিএম-৬ ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার ছিল। গ্রস রিজার্ভ ও বিপিএম-৬ এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দেয়, প্রকাশ করে না। চলতি বছরের ১১ ডিসেম্বর শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ আছে এক হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের মতো ছিল (১৫ বিলিয়ন ডলার )। প্রতি মাসে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো কষ্টকর হয়ে যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হল বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ। বাড়ছে রেমিট্যান্সগত জুলাই মাসে কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে সংঘাত-সংঘর্ষ, কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধের প্রেক্ষাপটে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাবে না বলে হুমকি দেয় প্রবাসীরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে ১৯০ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা ছিল গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এরপর নতুন সরকার গঠনের পর আবার দেশ গঠনে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি। এর ফলে আবারও প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করে। সবশেষ নভেম্বর মাসে দেশে প্রবাসী আয় বেড়ে ২২০ কোটি (২ দশমিক ২০ বিলিয়ন) দাঁড়ায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার এবং অক্টোবরে ২৪০ কোটি মার্কিন ডলার। অর্থাৎ অর্থবছরের টানা চার মাস ২ বিলিয়নোর ওপরে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসীরা।
সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন
সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম ও তার স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার ৮০টি ব্যাংক হিসাবে ৯০৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দুদকের মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন ও সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন বলে জানা গেছে।অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, মির্জা আজমের নিজ নামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালিত ২৪টি ব্যাংক হিসাবে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৩৯০ কোটি ৮১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৭৯ টাকা জমা হওয়ার সন্দেহভাজন তথ্য পাওয়া যায়। যার মধ্যে ৩৮৯ কোটি ৭১ লাখ ৫৭ হাজার ৪৬৬ টাকা তুলে ফেলেছেন। সর্বশেষ স্থিতি ছিল ১ কোটি ১০ লাখ ১১ হাজার ৯১৩ টাকা। যা ফ্রিজ অবস্থায় রয়েছে।এছাড়া আসামি মির্জা আজম তার নিজ নামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানি/প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ১৩টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ঋণ উত্তোলন করেছেন। ১৩টি ব্যাংক হিসাবে অক্টোবর পর্যন্ত তিনি ২৯৯ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪৮৫ টাকা উত্তোলন করেছেন এবং ৩০০ কোটি ৩৭ লাখ ৭৯ হাজার ৮৫৪ টাকা জমা দিয়েছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে।অন্যদিকে মির্জা আজম ও তার স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ২৩টি হিসাবের বিপরীতে এফডিআর হিসেবে ৭০ কোটি ৪০ লাখ ৪৯ হাজার ৭৬৫ টাকা পাওয়া গেছে।মির্জা আজম ও দেওয়ান আলেয়াসহ তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানির নামীয় মোট ৬০টি ব্যাংক হিসাবে ৭২৫ কোটি ৭০ লাখ ৪২ হাজার ২৩২ টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুদক। যার মধ্যে ৭২৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৩ হাজার ৭১৬ টাকা উত্তোলন করার প্রমাণ মিলেছে।অন্যদিকে মির্জা আজমের প্রভাব খাটিয়ে নিজ ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকের ২০টি হিসাবে অক্টোবর পর্যন্ত মোট ১৮১ কোটি ৯৫ লাখ ৬২ হাজার টাকা অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।সব মিলিয়ে মির্জা আজম ও দেওয়ান আলেয়াসহ সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন নামে মোট ৮০টি ব্যাংক হিসাবে ৯০৭ কোটি ৬৬ লাখ ৪ হাজার ২৩২ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। আর ওই লেনদেন অস্বাভাবিক বলে প্রমাণিত হয়েছে। অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে মির্জা আজম তার স্ত্রী দেওয়ান আলেয়াসহ অন্যান্যদের নামে বেনামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাব পরিচালনার মাধ্যমে অবৈধ অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর আড়াল করার চেষ্টা করেছেন।ওই একই মামলায় সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের বিরুদ্ধে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, তাদের মেয়ে মির্জা অপির নামে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৮৩ হাজার টাকা এবং তার স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার বিরুদ্ধে ২৩ কোটি ৭৭ লাখ ৭১ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারা ও ৪ (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
দুর্বল ব্যাংকের সম্পদ পর্যালোচনা শিগগিরই শুরু হবে বললেন গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দেশের বেশকিছু ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগছে। এদের সম্পদ পর্যালোচনা কার্যক্রম শিগগিরই শুরু করা হবে। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ব্র্যাক ইপিএল আয়োজিত সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি। দেশে এলসি খুলতে কোন জটিলতা নেই উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, গত চার মাসে অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী কর্মীরা। যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে আহসান এইচ মনসুর বলেন, মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে অন্তত একবছর সময় লাগবে। আসছে জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামবে। আর আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। আলু-পেঁয়াজের দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে বন্যার কারণে সময়মতো আলু ও পেঁয়াজ উৎপাদন করা যায়নি। এ কারণে দামটা বেশি।
রূপালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও হলেন ওয়াহিদুল ইসলাম
রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক পিএলসি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও পদে কাজী মোঃ ওয়াহিদুল ইসলামকে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। তিনি বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে যোগদানের তারিখ হতে ৩ বছরের জন্য চুক্তিতে নিয়োগে সরকারের সম্মতি নির্দেশক্রমে জ্ঞাপন করা হয়েছে বলে জানানো হয়। ব্যাংক কোম্পানী আইন-১৯৯১” অনুযায়ী তাঁর নিয়োগের বিষয়ে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয় প্রজ্ঞাপনে।
পাঁচ দিনে শেয়ারে বিনিয়োগকারীরা হারালেন ১১ হাজার কোটি টাকা
দেশে দুই শেয়ারবাজারের পতন কোনভাবেই থামছে না। চলতি সপ্তাহে প্রথম কার্যদিবসে ঢাকার স্টক একচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ৯১ পয়েন্ট। এ সময় বিনিয়োগকারীরা বাজার মূলধন হারিয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা। চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৬০ পয়েন্টের বেশি। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) লেনদেনের শুরুতে ইতিবাচক ছিল ডিএসইর সূচক। প্রথম দশ মিনিটেই প্রধান সূচক বাড়ে ১৩ পয়েন্ট। এরপর শুরু হয় সূচকের পতন। দিনশেষে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ১৯ দশমিক শূন্য ছয় পয়েন্ট। অবস্থান করছে পাঁচ হাজার ১০৫ পয়েন্টে। এক সপ্তাহে সূচক হারিয়েছে ৯১ পয়েন্ট। সূচক কমলেও ডিএসইতে বৃহস্পতিবার কিছুটা বেড়েছে লেনদেন। মোট লেনদেন হয়েছে ৩৫১ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার। আগের দিন বুধবারের (১১ ডিসেম্বর) চেয়ে লেনদেন বেড়েছে ৪৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। হাতবদলে অংশ নেওয়া ৩৯৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর কমেছে প্রায় ৫০ ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০৫টি, কমেছে ১৯৮ টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৯১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানের তালিকায় প্রথম ওরিয়ন ইনফিউশন, দ্বিতীয় সায়হাম কটন ও তৃতীয় অবস্থানে লাভেলো। শতাংশের দিক থেকে দর বৃদ্ধির তালিকায় প্রথম অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন, আগের দিনের চেয়ে দাম বেড়েছে এক টাকা ৩০ পয়সা, দ্বিতীয় ওরিয়ন ইনফিউশন ও তৃতীয় অবস্থানে আমরা টেকনোলজি। অন্য দিকে, সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৬০ দশমিক চার চার পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে চার কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার।
মূল্যস্ফীতি সহনীয় হতে কত সময় লাগবে, জানালেন গভর্নর
মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে অন্তত এক বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে ব্র্যাক ইপিএল আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ কথা জানান। সেমিনারে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে অন্তত এক বছর সময় লাগবে। আসছে জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি সাত শতাংশে নামবে।’আর আগামী অর্থ বছরে মূল্যস্ফীতি পাঁচ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে জানান গভর্নর। আলু-পেঁয়াজের দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গত আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বন্যার কারণে সময়মত আলু ও পেঁয়াজ উৎপাদন করা যায়নি। এ কারণে দামটা বেশি।’
সিএসইর পাঁচ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন
চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির (সিএসই) ২৯তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রামে অবস্থিত সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সিএসইর চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান । সিএসইর পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম, মাহমুদ হাসান, নাজনীন সুলতানা, ফরিদা ইয়াসমিন, এমদাদুল ইসলাম, মোহাম্মাদ আখতার পারভেজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার, কোম্পানি সেক্রেটারি রাজীব সাহা সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় শেয়ারহোল্ডাররা ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জন্য পাঁচ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদানের জন্য অনুমোদন দেন । সিএসইর একজন শেয়ারহোল্ডার ডিরেক্টর পদের জন্য বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে দুইজন প্রার্থীর মধ্যে একজন নাম প্রত্যাহার করে নেয়ায় শাহজাদা মাহমুদ চৌধুরী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নির্বাচিত হন। শাহজাদা আলফা সিকিউরিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে ‘সার্টিফাইড এএমএল সিএফটি প্রফেশনাল’ কোর্স সম্পন্ন
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ‘সপ্তম সার্টিফাইড এএমএল এন্ড সিএফটি প্রফেশনাল’ শীর্ষক তিন মাসের বিশেষ ট্রেনিং কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠান বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএফআইইউর ভারপ্রাপ্ত প্রধান একেএম এহ্সান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফরমান আর চৌধুরী। বিভিন্ন শাখার ব্যামেলকো ও প্রধান কার্যালয়ের ৬১ জন নির্বাহী ও কর্মকর্তা কোর্সে অংশ নেন।অনুষ্ঠানে এআইবিটিআরআই ডিরেক্টর জেনারেল সৈয়দ মাসুদুল বারী, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ক্যামেলকো কাজী মাহমুদ করিমসহ ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে একেএম এহ্সান বলেন, ‘দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক এ ট্রেনিং কোর্স চালু করে একটি মাইলফলক স্থাপন করেছে।’ তিনি সব ব্যামেলকোকে বিএফআইইউর রিপোর্টিংয়েল ব্যাপারে সজাগ থাকার আহ্বান জানান। ফরমান আর চৌধুরী বলেন, ‘কোর্সে অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষণার্থীবৃন্দ এএমএল এন্ড সিএফটি কমপ্লায়েন্স আগের চেয়েবেশি সতর্ক থাকবেন এবং এ বিষয়ে ব্যাংকের রেটিং উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন।’
ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে দশ হাজার কোটি টাকা
সরকারি ও বেসরকারি খাতের কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক বেশ কিছু দিন ধরেই তারল্য সংকটে ভুগছে। ব্যাংকগুলো তাদের তারল্য সংকট দূর করতে এখন আমানত সংগ্রহকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। বিশেষ করে বেসরকারি খাতের কিছু ব্যাংক তাদের তারল্য সংকট দূর করতে উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ করছে। আমানত সংগ্রহের এই অভিযানে তারা বেশ সাড়াও পাচ্ছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানত বেড়েছে দশমিক ৭৩ শতাংশ। কিন্তু, আমানত সংগ্রহের এই দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে সরকারি ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো। এমনকি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে দুই দশমিক ৫৯ শতাংশ। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে দুই দশমিক ৭৯ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুন শেষে ব্যাংক খাতের আমানতের মোট স্থিতি ছিল ১৮ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা। আর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানত দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে ব্যাংক খাতে আমানত কমেছে ১৩ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা বা দশমিক ৭৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুন শেষে বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আমানতের স্থিতি ছিল ১২ লাখ ৬২ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা। আর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর আমানতের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৫৮ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে আমানত কমেছে চার হাজার ১২০ কোটি টাকা বা দশমিক ৩৩ শতাংশ। ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘ব্যাংক খাতে সুদহারের সীমা তুলে দেওয়ার পর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সরকারি ব্যাংকগুলো সেভাবে সুদ সমন্বয় করেনি। যার ফলে, তারা আমানত সংগ্রহের দৌড়ে পিছিয়ে আছে। এছাড়া, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে অনেকেই সংসারের ব্যয় মেটাতে ব্যাংক থেকে তাদের আমানত তুলে নিচ্ছে। এছাড়া, আস্থার সংকট থেকে অনেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। যার ফলে, বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো উচ্চ সুদে আমানত আকৃষ্ট করলেও সেইভাবে কাজ করছে। ফলে, তাদেরও আমানত কমেছে।’ অপর দিকে, চলতি বছরের জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএলের আমানতের স্থিতি ছিল চার লাখ ৪৪ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। আর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর আমানতের স্থিতি দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৩৩ হাজার ২১৭ কোটি টাকা। সে হিসেবে তিন মাসে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে ১১ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা বা দুই দশমিক ৫৯ শতাংশ। প্রাপ্ত তথ্যমতে, বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে আমানত বেশি কমেছে শরীয়াহ ভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলোর। ২০২৪ সালের জুন শেষে শরীয়াহ ভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানতের স্থিতি ছিল তিন লাখ ৯২ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা। আর একই বছরের সেপ্টেম্বর শেষে শরীয়াহ ভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৮১ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে দশ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা বা দুই দশমিক ৭৯ শতাংশ। তবে, আমানত বেড়েছে বিদেশি ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের জুন শেষে বিদেশি ব্যাংকগুলোর আমানতের স্থিতি ছিল ৮০ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। আর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে বিদেশি ব্যাংকগুলোর আমানতের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৮২ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে বিদেশি ব্যাংকগুলোর আমানত বেড়েছে এক হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা বা দুই দশমিক ৪১ শতাংশ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলোর আমানতের স্থিতি ছিল ৫০ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা। আর সেপ্টেম্বর শেষে বিশেষায়িত ব্যাংকের আমানতের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে আমানত বেড়েছে ২১৮ কোটি টাকা বা দশমিক ৪৩ শতাংশ।
ডিএসইর মৃত দুই পরিচালককে তলব
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মো. ইউনুসুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বিগত পরিচালনা পর্ষদ ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তলব করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এতে ডিএসইর প্রয়াত ২ পরিচালক রকিবুর রহমান ও হাবিবুল্লাহ বাহারও রয়েছেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিএসইসির উপ-পরিচালক মো. সুলতান সালাহ উদ্দিন সাক্ষরিত এক শোকজ চিঠি ডিএসইতে পাঠানো হয়েছে। জানা যায়, বিনিয়োগকারীদের জন্য সুরক্ষা ফান্ড (আইপিএফ) নিয়ে সিকিউরিটিজ আইনের ব্যত্যয় হয়েছে বলে তাদের তলব করা হয়েছে। ডিএসইর মো. ইউনুসুর রহমানের নেতৃত্বাধীন পর্ষদের ২০২১ সালের ২৮ জুন ও ১৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় অংশগ্রহণ করা ১২ জন পরিচালককে তলব করা হয়েছে। এরমধ্যে ২০২২ সালের ১৮ মার্চ মৃত্যুবরন করা রকিবুর রহমান ও একই বছরের ৯ আগস্ট মারা যাওয়া হাবিবুল্লাহ বাহার রয়েছেন। বিনিয়োগকারীদের জন্য সুরক্ষা ফান্ড সংগ্রহ ও ব্যবহার নিয়ে সিকিউরিটিজ আইনের ব্যত্যয় হয়েছে বলে ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর গঠিত এক তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ডিএসই কর্তৃপক্ষ ফান্ড যেমন সঠিকভাবে সংগ্রহ করেনি, একইভাবে তার ব্যবহার নিয়েও তদন্ত রিপোর্টে আছে প্রশ্ন। এ কারনে আগামি ২৩ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০ টায় বিএসইসিতে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তলব করা হয়েছে। যেখানে ডিএসইর প্রয়াত ২ পরিচালক রকিবুর রহমান ও হাবিবুল্লাহ বাহার রয়েছে। ডিএসইর এক পরিচালক বলেন, হাবিবুল্লাহ বাহার ও রকিবুর রহমান যে মারা গেছে, এটা সবাই জানে। দেশের সব গণমাধ্যমেও তাদের মারা যাওয়ার খবর এসেছে। এই অবস্থায় বিএসইসি তাদেরকে তলব করেছে। যে মানুষ মারা গেছে, সে কিভাবে শুনানিতে হাজির হবে। এই তলবের মাধ্যমে বিএসইসি খুবই অপেশাগত কাজ করেছে এবং অযোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক কর্মচারী কল্যাণ ইউনিয়নের নির্বাচিতদের সংবর্ধনা
ইসলামী ব্যাংক কর্মচারী কল্যাণ ইউনিয়ন (সিবিএ)-এর নির্বাচনে ২০২৫-২০২৬ সেশনের জন্য সভাপতি মোহাম্মদ নুরুল হক, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসহাক খান সালাম, সহ-সভাপতি মোঃ ফারুক হোসাইন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবুল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ মোঃ আমিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ওবায়েদুল্লাহ চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক মোঃ ইলিয়াস শিকদার ও অফিস সম্পাদক পদে মোঃ আম্মার হোসাইন নির্বাচিত হয়েছে। নব-নির্বাচিত কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে অনুষ্ঠিত হয়।ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ ওমর ফারুক খান, মোঃ আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার। সিবিএ-এর নব-নির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ নুরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসহাক খান সালাম। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টরবৃন্দসহ প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন নির্বাহীবৃন্দ এবং ব্যাংকের বিভিন্ন স্তরের কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
এক দিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম বাড়ল ভরিতে ১,৮৭৮ টাকা
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। সব থেকে ভাল মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম এক হাজার ৮৭৮ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার ২৭১ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। কাল বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) আর একদফা স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। এই দাম বাড়ানোর এক দিন পর বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে আর এক দফা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভাল মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৮৭৮ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার ২৭১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৮০৮ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৩৩ হাজার ৯০৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৫৪০ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১৪ হাজার ৭৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৩১৮ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৪ হাজার ২৫৭ টাকা। এর আগে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সব থেকে ভাল মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ১৬৬ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৩ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৯৭ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৩২ হাজার ৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৯৪৫ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১৩ হাজার ২৩৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৮০৫ টাকা বাড়িয়ে ৯২ হাজার ৯৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। বুধবার পর্যন্ত এ দামেই বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ। স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম দুই হাজার ৫৭৮ টাকা। এছাড়া, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম দুই হাজার ৪৪৯ টাকা। ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম দুই হাজার ১১১ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম এক হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।