
প্রাথমিকে তৃতীয় ধাপে নির্বাচিত ৬ হাজার ৫৩১ শিক্ষকের যোগদানের তারিখ ঘোষণা
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় ধাপে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগে নির্বাচিত প্রার্থীদের যোগদানের তারিখ ঘোষণা করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১২ মার্চ চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের স্ব স্ব জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে সশরীরে গিয়ে যোগদান করতে হবে। সোমবার (৩ মার্চ) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রেবেকা সুলতানার সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজস্বখাতভুক্ত ‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩’-এর তৃতীয় গ্রুপের (ঢাকা-চট্টগ্রাম বিভাগ) নির্বাচিত ৬ হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীর অনুকূলে নিয়োগপত্র জারি, যোগদান ও পদায়নের বিষয়ে নির্দেশক্রমে প্রশাসনিক অনুমোদন প্রদান করা করা হলো।’ এতে আরও বলা হয়, ‘নির্বাচিত প্রার্থীদের; যারা স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করে অন্যান্য ডকুমেন্টস জমা দিয়েছেন তাদের অনুকূলে ৪ মার্চ নিয়োগপত্র জারি করা হবে। নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে ১২ মার্চের মধ্যে যোগদান করতে হবে।’ প্রার্থীদের যথাযথভাবে পূরণকৃত পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য জেলা পুলিশ সুপার (এসবি)/সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে প্রেরণ ১৩ মার্চ এবং একই দিন পদায়ন আদেশ জারি করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নির্ধারিত সময়ে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত কোনো প্রার্থীর অনুকূলে নিয়োগপত্র জারি না হলে জেলা অফিসে যোগদান না করলে বা পদায়িত বিদ্যালয়ে যোগদান না করলে (কারণ ও মতামতসহ) ২০ মার্চ তালিকা অধিদপ্তরে পাঠাতে হবে।’

সচিবালয় অভিমুখে মঙ্গলবারও পদযাত্রা করবেন এমপিও শিক্ষকরা
শতভাগ উৎসব ভাতা চালু না হলে এসএসসি পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেওয়া শিক্ষকরা ফের পদযাত্রা কর্মসূচি ডেকেছেন। সোমবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় জোটের সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসেন আজীজী গণমাধ্যমকে বলেন, “দাবি আদায়ে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুরে আমরা ফের সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা করব। ‘শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের বিভিন্ন ভাতা পরিবর্তনের মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা আশ্বাসে বিশ্বাস করে আবার প্রতারিত হতে চান না। আমরা স্পষ্ট ঘোষণা বা লিখিত আদেশ চাই।’ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ২০ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসা শিক্ষকদের এই জোট সোমবার দুপুরে সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা শুরু করে। কিন্তু পুলিশ তাদের আটকে দেয়। ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’ ব্যানারে তারা আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। তাদের দাবির মধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ এবং সরকারি কর্মচারীদের মত একই হারে বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতাও রয়েছে। দেলাওয়ার হোসেন আজীজী বলেন, ‘এই কর্মসূচির সঙ্গে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বার্থও জড়িত। বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে একজন শিক্ষার্থীকে মাসে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দিতে হয়।’ ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয়করণ হলে শিক্ষার্থীরা ১০ থেকে ১৫ টাকা মাসিক বেতনে পড়াশোনা করতে পারবে।’ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ‘সবচেয়ে অবহেলিত’ মন্তব্য করে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাদের জন্য যতদূর করার, আমি চেষ্টা করব।’ ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অনলাইন বদলির ব্যবস্থা করছি। তারা যে ভাতা পান তা অপ্রতুল। আমাদের সীমিত সাধ্যের মধ্যে ভাতা বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

শেখ পরিবারের নামে থাকা ২৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন
গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা যায়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনের তথ্যানুযায়ী, বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সূত্রাপুর, ঢাকার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে কারকুনবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর, ঢাকার নাম পরিবর্তন করে তাজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ১৬নং বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর, নারায়ণগঞ্জ পরিবর্তন করে ১৬নং পাইকপাড়া পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাঁচবাড়িয়া হাসিনা ওয়াজেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ীর নাম পাঁচবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর, গাজীপুরের নাম পরিবর্তন করে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রাখা হয়েছে। চর সতরাজ শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাকেরগঞ্জ, বরিশালের নাম পরিবর্তন করে চর সতরাজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম পিরোজপুর বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর, পিরোজপুরের নাম পরিবর্তন করে পশ্চিম পিরোজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধামইরহাট, নওগাঁর নাম পরিবর্তন করে জগৎনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পত্নীতলা, নওগাঁর নাম পরিবর্তন করে নাদৌড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে। একইভাবে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পীরগঞ্জ, রংপুরের নাম পরিবর্তন করে সুবর্ণপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফুলপুর, ময়মনসিংহের নাম পরিবর্তন করে নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহের নাম পরিবর্তন করে ভালুক চাপড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুলাউড়া, মৌলভীবাজারের নাম পরিবর্তন করে কুলাউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুজিবাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পার্বতীপুর, দিনাজপুরের নাম পরিবর্তন করে পার্বতীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডোলোপাড়া শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর, পঞ্চগড়ের নাম পরিবর্তন করে ডোলোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর, পঞ্চগড়ের নাম পরিবর্তন করে রাজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাগনভূঞা, ফেনীর নাম পরিবর্তন করে পশ্চিম করমূল্যাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে। মুজিব রাসেল বিদ্যাপীঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাজিরা, শরীয়পুরের নাম পরিবর্তন করে হরিয়াসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিতার কান্দি বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জের নাম পরিবর্তন করে নিতার কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর, কিশোরগঞ্জের নাম পরিবর্তন করে বত্রিশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোপালপুর, টাঙ্গাইলের নাম পরিবর্তন করে দক্ষিণ সোনামুই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে।

সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে ৫ শতাংশ কোটা পাবে অভ্যুত্থানের আহত-নিহতদের সন্তানরা
মুক্তিযোদ্ধা কোটার মতো ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের পরিবারের সন্তানদের সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ২০ ফেব্রুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ রবিবার (২ মার্চ) জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। আদেশ বাস্তবায়নে স্কুল ও কলেজ অধ্যক্ষদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এই অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ‘মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ এ আহত বা শহীদ পরিবারের সদস্যদের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ এ আহত বা শহীদ পরিবারের সদস্যদের আসন নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্র বা গেজেটের সত্যায়িত কপি আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে এবং ভর্তির সময় মূল কপি প্রদর্শন করতে হবে।’ আদেশে আরও বলা হয়, ‘এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যু করা মুক্তিযোদ্ধা সনদ বা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এ শহীদদের গেজেট যথাযথভাবে যাচাই করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।’ মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এ আহত বা শহীদ পরিবারের সদস্যদের পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে ওই আসনে ভর্তি করতে হবে। কোন অবস্থায় আসন শূন্য রাখা যাবে না। এটি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে অফিস আদেশে।

ডুসামের নেতৃত্বে রিফাত-পিপাসা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) পড়ুয়া নেত্রকোনার মদন উপজেলার শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অফ মদন উপজেলার (ডুসাম) ২০২৫ সালের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো. আশিকুল হক রিফাত ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন পিপাসা আক্তার। শনিবার (১ মার্চ) রাতে সংগঠনের সাবেক সভাপতি ওহিদুল ইসলাম আকাশ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক নোবেল কর্মকারের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। নব-নির্বাচিত সভাপতি রিফাত ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্যার এএফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি একাধারে ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সদস্য ও দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার ঢাবি প্রতিবেদক। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পিপাসা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। নতুন দায়িত্ব পেয়ে রিফাত বলেন, ‘ঢাবিতে পড়া মদন উপজেলার শিক্ষার্থীদের উন্নয়নের জন্য আমরা একযোগে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আমরা একসাথে নতুন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করব। শিক্ষার্থীদের উন্নতি নিশ্চিত করতে মদন উপজেলায় নতুন প্রকল্প শুরু করব।’পিপাসা বলেন, ‘আমরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নীতিতে অটুট থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করব। শিক্ষার্থীদের চাহিদা ও প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের স্বার্থে নিবেদিতভাবে কাজ করে যাব।’

গোবিপ্রবির সাবেক ভিসিসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) সাবেক ভিসিসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুদক গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায় বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন সেকশন অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ কমিটির সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন, সেকশন অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ কমিটির সদস্য এবং ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোশারফ আলী, সেকশন অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ কমিটির সদস্য এবং খুলনা বিশ্বদ্যালয়ের এগ্রাটেকনোলজি ডিসিপ্লিন বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মান্নান, গোবিপ্রবির সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও বর্তমান সেকশন অফিসার যশোরের নোয়াপাড়া এলাকার আদির উদ্দিন চৌধুরীর মেয়ে শারমিন চৌধুরী। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা/সেকশন অফিসারের ১৬টি পদসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। ১৬টি শূন্য পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেও ২০ জনকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা/ সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দেয়া হয়। ওই পদে চাকরি প্রত্যাশী ছিলেন ৮৭০ জন। তবে সাবেক ভিসি ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের স্বাক্ষরিত আবেদকারীর ডাটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার শারমিন চৌধুরীর নামের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ৮৭০ জন আবেদনকারী থাকলেও নিয়োগ কমিটির সুপারিশের তালিকায় ৮৭৩ ক্রমিক নম্বরে দেখানো হয় আবেদনকারী শারমিন চৌধুরীর নাম। জাল-জালিয়াতি করে নিয়োগ কমিটির সদস্যরা শারমিন চৌধুরীকে নিয়োগ দেয়। শুধু তাই নয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বয়সসীমা ৩২ বছর থাকলেও বাস্তবে নিয়োগপ্রাপ্ত শারমিন চৌধুরীর বয়স ছিল ৩৩ বছর। দুদক জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘অবৈধ নিয়োগে জড়িত থাকায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কর্মকর্তা তুহিন মাহামুদ ও সহকারী রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম হিরার বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।’

৬ হাজার ৫৩১ শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি সোমবার
ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে উত্তীর্ণ ছয় হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদনের শুনানির জন্য সোমবার (৩ মার্চ) ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। রোববার (২ মার্চ) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। অপরপক্ষে ছিলেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, মুনতাসির আহমেদ। এর আগে গত ১৯ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগপত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচাপতি মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। কোটা পদ্ধিত অনুসরণ করে নিয়োগ দেওয়ায় আদালত এ আদেশ দেন। গত ৩১ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ৬ হাজার ৫৩১ জন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এ ফল প্রকাশ করা হয়। গত ২৮ মে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) মৌখিক পরীক্ষাসহ নিয়োগপ্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণসংক্রান্ত হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন, আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে মৌখিক পরীক্ষা নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে এই নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গণমাধ্যমে আসা অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

‘গণআত্মাহুতির’ হুমকি শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীদের
হাই কোর্টের রায়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা নিয়োগ না পেলে ‘গণআত্মাহুতির’ হুমকি দিয়েছেন। শনিবার (১ মার্চ) রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে তারা নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে ‘প্রতীকী ফাঁসি’ কর্মসূচি পালন করে এ হুমকি দেন। নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে ২৪ দিন টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। দুই বিভাগে নিয়োগ সুপারিশ পাওয়া ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করে দেওয়া হাই কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনায় আপিল করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার (২ মার্চ) সেই আপিল শুনানির তারিখ নির্ধারিত আছে। এদিন আপিল বিভাগের রায় আসতে পারে বলে আশা প্রার্থীদের। শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত তারা রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে সেখান থেকে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ শিরোনামে র্যালি বের করেন। র্যালিটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঘুরে ফের শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এসে শেষ হয়। পরে তারা সেখানেই অবস্থান নেন। রাতেও তারা সেখানে অবস্থান করছিলেন। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার নিয়োগ বাতিল হওয়া আন্দোলনর প্রার্থী মো. মজিবুর রহমান রাসেল বলেন, “নিয়োগ নিশ্চিতের দাবিতে আমরা বিকালে প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচি পালন করেছি। এসময় ছয়জন প্রার্থী গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে গলায় ফাঁসির দড়ি পরে নিয়োগ নিশ্চিত করার দাবি জানান। আরও বেশ কয়েকজন প্রার্থী গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে নিজেদের শেকলবন্দি করে কর্মসূচিতে অংশ নেন। ‘আগামী কাল আপিল শুনানির তারিখ নির্ধারিত আছে। আমরা সবাই রায়ের অপেক্ষায় আছি। আশা করছি আপিল বিভাগ হাই কোর্টের রায় বাতিল করে দেবে। কিন্তু তা না হলে আমাদের মৃত্যু ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। নিয়োগ নিশ্চিত জানার পর চাকরি না পাওয়ার কষ্ট আর সামাজিক বঞ্চনা আর কেউ বুঝবে কি না জানি না। তবে আপিলের রায়ের মাধ্যমে আমাদের নিয়োগ নিশ্চিত না হলে আমরা সবাই একসঙ্গে আত্মহত্যা করব।’ তিনি বলেন, “রমজানেও আমাদের রাজপথে থাকতে হবে সেটা কল্পনাও করিনি। কিন্তু আমরা রাজপথ ছাড়ব না। রাতে আমরা জাদুঘরের সামনেই তারাবির নামাজ আদায় করব, এখানেই সেহেরি করে রোজা রাখব।” নিয়োগ বাতিল হওয়ার আরেক প্রার্থী মো. আশরাফ উদ্দিন রমিজ বলেন, ‘এটা আমাদের যৌক্তিক দাবি। তিন মন্ত্রণালায়ের মতামত নিয়ে আমাদের নির্বাচিত করে ফল দেওয়া হয়েছিল। তারপরও কেন আমাদের নিয়োগ অনিশ্চিত। রোববার আমাদের শুনানি রয়েছে। শুনানিতে যেন আমাদের পক্ষে রায় দেওয়া হয়, আমরা আশাও করি আমাদের পক্ষে রায় আসবে।’ ‘আমরা তো মেধার জোরে শিক্ষক হিসাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি, কিন্তু তারপরেও কেন চাকরির দাবিতে রাস্তায় থাকতে হচ্ছে? সুপারিশ হয়েছে, মেডিকেল হয়েছে; আমরা টেস্টের জন্য রক্ত পর্যন্ত দিয়ে এসেছি কিন্তু পরে ফল বাতিল করে হাই কোর্ট রায় দিল। বাংলাদেশে বৈষম্যের এমন নজির দুঃখজনক।’ শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত হয়ে অনেকে আগের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিন্তু শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ে আমরা চরমভাবে হতাশাগ্রস্ত। ২৪ দিন ধরে আমরা রাস্তায়! এই সরকার আমাদের সুপারিশ করেছে, তাহলে কেন এত তালবাহানা। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের পক্ষে রায় না আসছে, আমরা রাস্তা থেকে সরছি না।’ গত ৩১ অক্টোবর তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য ৬ হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নির্বাচিত করে তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। ২০২৩ সালের ১৪ জুন এ নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে কোটায় নির্বাচিত হওয়া ৬ হাজার ৫৩১ জনের ফল বাতিল করে হাই কোর্ট। আদালত মেধার ভিত্তিতে নতুন করে ফল প্রকাশের আদেশও দেয়। সেদিন রাত থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা। ৩০ চাকরিপ্রার্থীর করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ১৯ নভেম্বর হাই কোর্ট বেঞ্চ এ নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দিয়েছিল। ফলে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ প্রার্থীর নিয়োগ আটকে যায়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি সেই রুলের ওপর রায় দেয় হাই কোর্ট। নিয়োগ বাতিলের রায় ঘোষণার পরদিন গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে প্রার্থীরা নিয়োগ নিশ্চিতের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দিকে পদযাত্রা করলে পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে তারা একাধিক বার শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে একইভাবে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।

ছাত্রদের নতুন দলকে ঢাকা কেন্দ্রীক উল্লেখ করে দুই সমন্বয়কের পদত্যাগ
ছাত্রদের নতুন সংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ- এর মধ্যে ঢাকা ও ঢাবিকেন্দ্রিক নয়া ফ্যাসিবাদী মনোভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে উল্লেখ করে সংগঠনটি থেকে পদপত্যাগ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) থেকে পদ পাওয়া দুইজন সমন্বয়ক। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নিজ নিজ ফেসবুক পোস্টে এ কথা জানান তারা। পদত্যাগ করা দুইজন হলেন- গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক মেহেদী সজীব ও যুগ্ম-সদস্য সচিব সালাউদ্দিন আম্মার। ফেসবুক পোস্টে মেহেদী সজীব লিখেছেন, ‘আজ ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’ এর কেন্দ্রীয় কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে আমার নাম বলা হয়েছে। গতকাল রাতেও এ নিয়ে আমি আমার স্ট্যান্ড ক্লিয়ার করেছি। এখনও বলছি। নতুন বন্দোবস্তের নামে ঢাকা ও ঢাবিকেন্দ্রিক নয়া ফ্যাসিবাদী মনোভাবের যে উত্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তার প্রতিবাদেই আমি এই প্লাটফর্মে থাকতে রাজি না। কেন্দ্র থেকে অন্য একটি মাধ্যমে আমার সাথে কয়েকবার যোগাযোগ করা হয়েছিলো। তবে তারা কেউ সরাসরি আমার সাথে যোগাযোগ করারও প্রয়োজন মনে করেনি। যে মাধ্যমে আমার সাথে যোগাযোগ করেছিলো, গতকাল রাতে সেই মাধ্যমকে আমি সাফ জানিয়ে দেই, আমি এই ছাত্র সংগঠনে থাকছি না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য স্টেইকদেরকে বিপ্লব পরবর্তী সময় থেকে যেভাবে বিভাজন করা হয়েছে সেই বিভাজনের রাজনীতিতে আমার পক্ষে থাকা সম্ভব নয়।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘তবুও আজ সংবাদ সম্মেলনে আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আমার ইচ্ছা ব্যতীত এই দলে আমাকে সম্পৃক্ত করার জন্য নিন্দা জানাচ্ছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যই আমি আজ মেহেদী সজীব হিসেবে গড়ে উঠতে পেরেছি। কিন্তু শত চেষ্টা করেও নয়া বন্দোবস্তের নাম নেওয়া কর্তাব্যক্তিদের কাছ থেকে আমাদের মৌলিক কিছু দাবিও পূরণ করতে পারি নাই। পিএসসি- ইউজিসিসহ নানান জায়গায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে সাইড করে রাখার প্রবণতা এখনো লক্ষ্য করছি।’ আমার স্পষ্ট বার্তা হলো– ‘ঢাকা ও ঢাবিকেন্দ্রিক ফ্যাসিবাদী মনোভাব থেকে যতদিন না এই দলের অংশীজনরা বেরিয়ে আসতে পারবে, বিকেন্দ্রীকরণের দিকে মনোনিবেশ করবে, ততদিন অবধি আমি তাদের সাথে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বোঝাপড়ায় যাবো না। আর তাই আমি উক্ত পদ থেকে পদত্যাগ করলাম। এ বিষয়ে বিস্তারিত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১ টায় পরিবহন চত্বরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সবাইকে অবগত করবো।’ আরেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার লিখেছেন, ‘আমাদের স্ট্যান্ড আমরা গতকাল রাতেই ক্লিয়ার করেছিলাম। আমাদের কাছে শিক্ষার্থীদের পালসটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ। রাবি শিক্ষার্থীরা চাচ্ছেনা এই ঢাবি আধিপত্যবাদের পক্ষে থাকতে। তাই আমরাও চাচ্ছি না। আগামীকাল প্রেস ব্রিফিংয়ে ইনশাআল্লাহ বিস্তারিত জানিয়ে দিবো।’ প্রসঙ্গত, বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে ছাত্রদের নতুন দল গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার। এতে দেশের স্বায়ত্তশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা সহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কে সম্পৃক্ত পাওয়া যায়। একই সাথে প্রথমবারের মতো কোনো ছাত্র সংগঠনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারীদেরকে দেখা যায় কমিটিতে স্থান পেতে।

১৯ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি, আবেদন শুরু ৫ মার্চ
বিভিন্ন জল্পনা কল্পনার পর অবশেষে দেশের ১৯টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গুচ্ছের অধীনে মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান- তিনটি বিষয়বস্তুর ওপর পরীক্ষা নেওয়া হবে। এসব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা হবে। উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির ওপর ভিত্তি করেই ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ভর্তির জন্য আগামী বুধবার (৫ মার্চ) দুপুর ১২টা থেকে আবেদন শুরু হবে। আবেদনের শেষ তারিখ ১৫ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। আবেদনের সময় বৃদ্ধি করা হবে না। আবেদন ফি, আবেদন পদ্ধতি: ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আবেদন ফি দেড় হাজার টাকা অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে। আর্কিটেকচার বিভাগের ব্যবহারিক (ড্রয়িং) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা আবেদন ফির সঙ্গে যোগ হবে। আবেদন করার পদ্ধতি জিএসটি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইট (www.gstadmission.ac.bd)-এ পাওয়া যাবে। আবেদনের সময়সূচি: আগামী ৫ মার্চ (বুধবার) দুপুর ১২টা হতে ১৫ মার্চ (শনিবার) রাত ১১.৫৯ মিনিট পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। আবেদনের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হবে না। ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র: পরীক্ষাকেন্দ্রের তালিকা থেকে আবদেনকারী একটি কেন্দ্র পছন্দ করতে পারবে। পছন্দকৃত কেন্দ্রই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। আবেদনের সময়সীমা শেষে কোনোভাবেই পরীক্ষা কেন্দ্র পরিবর্তন করা যাবে না। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া; মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল; পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী; নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী; জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ; যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর; বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর; পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা; গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ; বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল; রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি; রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, সিরাজগঞ্জ; গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর; নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়, নেত্রকোণা; জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জামালপুর; কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ; চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চাঁদপুর; সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সুনামগঞ্জ ও পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাপাসিটি সংখ্যক পরিমাণ)।

তিন শিক্ষকের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার সিদ্ধান্ত ঢাবি সাদা দলের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের শিক্ষক লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের সভাপতিত্বে আজ সোমবার বিকালে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম, অধ্যাপক ড. আবুল কালাম সরকার, অধ্যাপক আখতার হোসেন খান, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক মহিউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ঢাবি সাদা দলের সভায় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার ক্রমধারায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সাদা দল’ নামে একটিই সংগঠন আছে। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে একই নামে সংগঠনের যে তিনজন নিজেদের আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে পরিচিয় দিচ্ছেন, তাদের সঙ্গে সাদা দলের কোনো ধরনের সম্পর্ক থাকবে না। এই তিনজন শিক্ষক হলেন- পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলাম, তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মেজবাহ-উল-ইসলাম এবং উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আল মোজাদ্দেদী আলফেছানী। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং কমিটি নির্বাচনের সময় সাদা দলের শিক্ষকদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে নিজেরাই নিজেদের নেতা হিসেবে ঘোষণা দেওয়ায় সভা তাদের নিন্দা জানায়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, এখন থেকে এই তিনজন শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না। অতএব এই তিনজন শিক্ষকের সঙ্গে ঢাবি সাদা দলের হয়ে কোনো ধরনের সম্পর্ক না রাখার জন্য সভায় সকলকে পরামর্শ প্রদান করা হয়। দলের এ সিদ্ধান্তের উপেক্ষা করে তাদের সাথে কেউ যুক্ত হলে তাদের ব্যাপারেও পরবর্তীতে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক ড. আবুল কালাম সরকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

৪০ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
আসন্ন রমজান ও ঈদুল ফিতরসহ আরও কয়েকটি ছুটি মিলিয়ে ৪০ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে দেশের সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এছাড়াও আগামী ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। যেসব প্রতিষ্ঠানে এ পরীক্ষার কেন্দ্র রয়েছে সেগুলোতে ২ মাস ১০ দিনের লম্বা ছুটি থাকবে। শিক্ষাপঞ্জি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রমজান মাস, শুভ দোলযাত্রা, স্বাধীনতা দিবস, জুমাতুল বিদা, শবে কদর ও ঈদুল ফিতরের ছুটি ২ মার্চ থেকে শুরু হবে, শেষ হবে ৮ এপ্রিল। পবিত্র রমজান শুরু হবে ১ বা ২ মার্চ। ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ শুক্র ও শনিবারের ছুটি থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সর্বশেষ ক্লাস হবে ২৭ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার)। সে হিসাবে এক টানা বন্ধ থাকবে ৪০ দিন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানান, এসব ছুটির ঘোষণা দিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইতোমধ্যে ছুটির নোটিশ টানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাস, শুভ দোলযাত্রা, স্বাধীনতা দিবস, জুমাতুল বিদা, শবে কদর ও ঈদুল ফিতরের ছুটি ২ মার্চ থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ৮ এপ্রিল। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (মাধ্যমিক) মো. ইউনুছ ফারুকী বলেন, ‘রমজান ও ঈদুল ফিতরসহ আরও কিছু ছুটি মিলিয়ে প্রায় ৪০ দিনের ছুটি শুরু হবে। সরকারি শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী এ ছুটি থাকবে। এ ছুটি সরকারি, বেসরকারি সব পর্যায়ে স্কুলের জন্য প্রযোজ্য।’ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (কলেজ) নুরুল হক সিকদার বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সব সরকারি ও বেসরকারি কলেজে রমজানের ছুটির আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সর্বশেষ ক্লাস হবে।’ অন্যদিকে, ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হবে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে সেসব প্রতিষ্ঠানে টানা ২ মাস ১০ দিন ছুটি থাকবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানান, চলতি বছরের রমজান, ঈদুল ফিতরের ছুটির সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষার ছুটি মিলে যাওয়ায় লম্বা ছুটিতে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পরীক্ষার ফাঁকে ফাঁকে ক্লাস নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, ‘পরীক্ষা চলাকালীন বাদে স্কুল-কলেজগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় যদি ক্লাস নিতে চায় সেক্ষেত্রে আমাদের কোনো নিষেধ নেই।’ রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ এমান হোসাইন বলেন, ‘শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী রমজান ও ঈদের ছুটি শুরু হবে আগামী বৃহস্পতিবার। তবে সরকারিভাবে যদি ছুটির কোনো পরিবর্তন হয় সেটি সংশোধন করা হবে। এ সময় শিক্ষার্থীদের বাসায় পড়ার জন্য হোমওয়ার্ক দেওয়া হবে। শিক্ষকরা নিজেদের মতো করে সেগুলোর খোঁজখবর নেবেন।’ এদিকে, ২০ রমজান পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণির কার্যক্রম চালু রাখার দাবি জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সংগঠনটির সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু ও সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আজাদ খানের কাছে স্মারকলিপি দেন। সংগঠনটির দাবি, রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করে ২০ রমজান পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণির কার্যক্রম চালু রাখা হোক। জিয়াউল কবির দুলু বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হাতে এখনো সব বই পৌঁছায়নি। ফলে গত দুই মাসে সেভাবে পড়াশোনা হয়নি। এর মধ্যে রমজান, ঈদুল ফিতরের এক মাসের বেশি ছুটি। এরপর শুরু হবে এসএসসি পরীক্ষা। তাই আমরা দাবি জানিয়েছি, এই লম্বা ছুটিতে সরাসরি সম্ভব না হলেও অনলাইনে যেন ক্লাস হয়। মোট কথা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মধ্যে রাখতে হবে।’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ফল প্রকাশ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০২২ সালের ডিগ্রি পাস ও সার্টিফিকেট কোর্স দ্বিতীয় বর্ষ চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল আজ ঘোষণা করা হয়েছে। সারাদেশের ৬৭১টি কেন্দ্রে ১৯১০টি কলেজের ০২ লাখ ৭ হাজার ৯০৫ শিক্ষার্থী (নিয়মিত, অনিয়মিত ও মান উন্নয়নসহ) এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। গড় উত্তীর্ণের হার ৯১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এই ফলাফল পাওয়া যাবে। প্রকাশিত ফলাফলে কোনো প্রকার অসঙ্গতি বা ভুলত্রুটি পরিলক্ষিত হলে তা সংশোধন অথবা সম্পূর্ণ বাতিল করার ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করে।

এইচএসসির ফরম পূরণের তারিখ ঘোষণা, বেড়েছে ফি
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে আগামী ২ মার্চ। জরিমানা ছাড়া এ প্রক্রিয়া চলবে ১০ মার্চ পর্যন্ত। আর ১১ মার্চ পর্যন্ত ফি পরিশোধ করা যাবে। এবার সব বিভাগেরই ফরম পূরণের ফি বাড়ানো হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দারের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনী পরীক্ষার (টেস্ট পরীক্ষা) ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। এরপর ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের তথ্যসংবলিত সম্ভাব্য তালিকা বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। সম্ভাব্য তালিকা থেকে ২ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত বিলম্ব ফি ছাড়া অনলাইনে ফরম পূরণ করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। বিলম্ব ফি (জরিমানা) ছাড়া অনলাইনে ফি জমা দেওয়ার সময় ১১ মার্চ। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ১২ মার্চ থেকে ১০০ টাকা বিলম্ব ফিসহ ফরম পূরণ শুরু হবে। এ প্রক্রিয়া চলবে ১৭ মার্চ পর্যন্ত। আর সোনালী সেবার মাধ্যমে ফি জমা দেওয়ার সর্বশেষ তারিখ ১৮ মার্চ। এরপর আর ফরম পূরণের সময় বাড়ানো হবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, এবার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ ফি দিতে হবে ২ হাজার ৭৮৫ টাকা। গত বছর বিজ্ঞানের পরীক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ ফি ছিল ২ হাজার ৬৮০ টাকা। অর্থাৎ ফরম পূরণ ফি এবার বেড়েছে ১০৫ টাকা। একইভাবে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় এবার ফি ১০৫ টাকা বাড়িয়ে ২ হাজার ২২৫ টাকা করা হয়েছে, গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যা ছিল ২ হাজার ১২০ টাকা।

শেকৃবির ১২ শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) আওয়ামীপন্থি ১২ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া ও আন্দোলন দমনে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি )বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে তদন্ত কমিটির পর্যবেক্ষণে উঠে আসে, অভিযুক্তরা দলীয় আনুগত্যের মাধ্যমে প্রশাসনের সহায়তায় আন্দোলন দমন করেছেন। শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। বহিষ্কার শিক্ষকরা হলেন অধ্যাপক মো. হারুন-উর-রশিদ, দেব কুমার ভট্টাচার্য্য, অলি আহাদ সেতু, শরমিন চৌধুরী, মো. ফরহাদ হোসেন, আয়েশা আক্তার, রুহুল আমিন, চৈতী দে পূজা, ছাবেরা ইয়াছমীন, ওমর আলী মল্লিক, শাহ জহির রায়হান ও জিয়াউর রহমান ভূঁঞা। এ ছাড়া তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক শহীদুর রশিদ ভূঁইয়া, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক অলোক কুমার পাল ও ট্রেজারার অধ্যাপক নজরুল ইসলামের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।

৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার সময় পরিবর্তন
আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৪৪তম বিসিএসের সাধারণ ও কারিগরি বা পেশাগত উভয় ক্যাডারের প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি)। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সরকারী কর্ম কমিশনের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাসুমা আফরীন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৪৪তম বিসিএসের সাধারণ ও কারিগরি বা পেশাগত উভয় ক্যাডারের প্রার্থীদের আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মৌখিক পরীক্ষা অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। ওই মৌখিক পরীক্ষা আগাম ৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত অন্যান্য শর্তাবলি অপরিবর্তিত থাকবে।

২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ
২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ২৬ জুন বাংলা প্রথম পত্র দিয়ে এ পরীক্ষা শুরু হবে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দারের সই করা সময়সূচি প্রকাশ করা হয়। সূচি অনুযায়ী, আগামী ২৬ জুন থেকে তত্ত্বীয় পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হবে ১০ আগস্ট। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১১ আগস্ট শুরু হয়ে শেষ হবে ২১ আগস্ট।পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ নির্দেশাবলি: পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ৩০ নম্বরের বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ৩০ মিনিট এবং ৭০ নম্বরের সৃজনশীল (সিকিউ) পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। ব্যবহারিক বিষয়-সংবলিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে ২৫ নম্বরের বহুনির্বাচনী পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ২৫ মিনিট এবং ৫০ নম্বরের সৃজনশীল পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় ২ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। পরীক্ষা বিরতিহীনভাবে প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় পর্যন্ত চলবে। এমসিকিউ ও সিকিউ উভয় অংশের পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। সকাল ১০টা থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে সকাল সাড়ে ৯টায় অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনী ওএমআর শিট বিতরণ সকাল ১০টায় বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে। সকাল সাড়ে ১০টায় বহুনির্বাচনী উত্তরপত্র সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে। (২৫ নম্বরের বহুনির্বাচনী পরীক্ষার ক্ষেত্রে এ সময় ১০.২৫ মিনিট)। আর দুপুর ২টা থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে দুপুর দেড়টায় অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনী ওএমআর শিট বিতরণ। দুপুর ২টা বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে। দুপুর আড়াইটায় বহুনির্বাচনী উত্তরপত্র সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে। (২৫ নম্বরের বহুনির্বাচনী পরীক্ষার ক্ষেত্রে এ সময় ২.২৫ মিনিট) প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষার্থীরা তাদের প্রবেশপত্র নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছ থেকে সংগ্রহ করবে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থী সরবরাহকৃত উত্তরপত্রে তার পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি ওএমআর ফরমে যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবে। কোনো অবস্থাতেই মার্জিনের মধ্যে লেখা কিংবা অন্য কোনো প্রয়োজনে উত্তরপত্র ভাজ করা যাবে না।

কুয়েটে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, থমথমে পরিস্থিতি
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের পর ছয় দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) কোনো অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম হয়নি প্রতিষ্ঠানটিতে। কুয়েটের শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে প্রেস ব্রিফিং করে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ, শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের শাস্তি এবং উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবি জানান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুপুর একটার মধ্যে দাবি পূরণের আলটিমেটাম দেন তারা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকায় দৌলতপুর থানা যুবদলের সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি। বুধবার দুপুর ১২টায় খুলনা প্রেস ক্লাবে কুয়েট ছাত্রদল জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে। এর আগে ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধের ইস্যুতে মঙ্গলবার সারধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ক্যাম্পাস। এদিন সকালে মারধরসহ বিভিন্ন অভিযোগে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ বিভিন্ন দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনেও তারা বিক্ষোভ করেন। দুপুরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে মুখোমুখি অবস্থান নেয় ছাত্রদল ও শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে বাধে সংঘর্ষ। এতে অর্ধশতাধিক আহত হন।খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সরিয়ে দেয় তাদের। যে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় সতর্ক অবস্থানে আছে যৌথবাহিনী।

সাত কলেজ সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আহ্বান ইউজিসির

ফেব্রুয়ারির মধ্যেই বই পাবে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা: উপদেষ্টা
ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা সব বই পাবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ড্রিম স্কয়ার রিসোর্টে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও রুম টু রিড বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে পঠন দক্ষতা ও পাঠাভ্যাস উন্নয়নে সম্মিলিত ও সমন্বিত প্রয়াস শীর্ষক দুই দিন ব্যাপী রিডিং কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান। তিনি বলেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে গতকাল (রোববার) পর্যন্ত খবর হলো, ক্লাস থ্রি পর্যন্ত বইগুলোর ৮৫ ভাগের ওপরে মাঠে চলে গেছে। আর ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির বইয়ের ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে ছিলাম। সেগুলোর ৮৪ ভাগ বই মাঠে চলে গেছে। গতকালকে আমি রিপোর্টটি পেয়েছি। আমি আশা করি ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে প্রাইমারির সব বই শিক্ষার্থীরা পেয়ে যাবে। প্রাইমারিতে শিক্ষার মান উন্নয়নে তিনি বলেন, আমাদের দেশে একজন মানুষ তার বাচ্চাকে কোথায় পড়াবে সেটা তার নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়। সুতরাং কেউ যদি মনে করে কিন্ডারগার্টেনে গেলে বাচ্চার ভালো পড়াশোনা হবে সেটা তার ব্যাপার। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব দুইটি। প্রথমত, প্রাইমারি শিক্ষার মান যাতে বাড়ে আমরা সেই চেষ্টা করছি এবং যেসব জায়গাতে প্রাইমারি স্কুল ভালো চলে সেখানে কিন্তু লোকজন প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি করানোর জন্যই ভিড় করে। দুই, আমরা দেখব যেসব কিন্ডারগার্টেনগুলো চলে তারা যেন আমাদের জাতীয় কারিকুলাম ফলো করে। কারণ আমরা তাদের প্রাথমিক স্কুলের বইগুলো বিনামূল্যে দেই। ফলে তারা যেন এগুলো ফলো করে। পড়াশুনা যাতে ঠিকমতো হয়, সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোতে পড়াশোনা দেখার দায়িত্ব আমাদের। অনুষ্ঠানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল হাকিমের সভাপতিত্বে রিডিং কনফারেন্সে আরো বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পিইডিপি-৪) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) পরিচালক জিয়া আহমেদ সুমন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক হোসনে আরা বেগম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আতাউল গনি, রুম টু রিড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাখী সরকার প্রমুখ।

সচিবালয়ের সামনে অনড় অবস্থানে শিক্ষকরা, পুলিশের জলকামান নিক্ষেপ
সচিবালয়ে শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন নিয়োগ বাতিল হওয়া সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শাহবাগ থেকে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে আসেন তারা। একপর্যায়ে শিক্ষা ভবনের সামনে পৌঁছালে পুলিশের ব্যারিকেডের সম্মুখীন হন। পরে সেখানে অবস্থান নিয়ে দ্রুত নিয়োগের দাবিতে নানা স্লোগান দেন সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। এর আগে বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। পরে সাড়ে ১১টার দিকে দ্রুত নিয়োগের দাবিতে সেখানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে শিক্ষকদের ডাকা মহাসমাবেশ শুরু হয়। একপর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে শাহবাগ থেকে মিছিল নিয়ে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। ওই সময় প্রেস ক্লাব হয়ে সুপ্রিম কোর্টের সামনে দিয়ে সচিবালয় অভিমুখে আসার সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। তবে বাধা উপেক্ষা করে সচিবালয়ের দিকে অগ্রসর হন শিক্ষকরা। এরপর সচিবালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশের ব্যারিকেডের সম্মুখীন হন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জলকামান নিক্ষেপ করে পুলিশ। তারপর থেকে শিক্ষা ভবনের সামনে অনড় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। আন্দোলনকারীদের ভাষ্য, ১১ দিনেও কেউ তাদের সঙ্গে কথা বলেনি বা দাবি পূরণে কোনোপ্রকার আশ্বাস দেয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস না পেলে সড়কেই অবস্থান করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। ২০২৩ সালের ১৪ জুন প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। পরবর্তী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশিত হয়। যেখানে উত্তীর্ণ হন ৬ হাজার ৫৩১ জন। পরবর্তী নিয়োগবঞ্চিত কয়েকজন রিট করলে এসব শিক্ষকদের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেন আদালত। সবশেষ গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৬ হাজার ৫৩১ শিক্ষকের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর থেকে আন্দোলনে নামেন সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা।

রোববার মহাসমাবেশের ঘোষণা প্রাথমিকের নিয়োগপ্রত্যাশীদের
আগামী দুই দিন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচির পর রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি )মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রত্যাশীরা। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন এ ঘোষণা দেন তারা। তবে কোথায় এ সমাবেশ করা হবে তা জানানো হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন জান্নাতুন নাঈম সুইটি, সামিয়া আক্তার ও নওরীন আক্তার। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান স্থল ত্যাগ না করবেন না বলে জানান তারা। নিয়োগ প্রত্যাশীরা বলেন, ‘অধিকার আদায় না হলে আত্মহত্যা করবো, তবু আমাদের অধিকার আদায় করবো।’ সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘আগামী দুই দিন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে। নারী শিক্ষিকাদের গায়ে পুলিশের হাত তোলার প্রতিবাদ এবং যোগাদানের দাবিতে রোববার মহাসমাবেশ করা হবে। আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে নিয়োগ প্রত্যাশীরা বলেন, ‘আমরা নিয়োগপত্র পেয়েছি। ডোপ টেস্ট হয়েছে। যারা চাকরি পায়নি তারা রিট করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে। অথচ আমাদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।’ তারা বলেন, ‘পুলিশ যেসব শিক্ষককে আটক করেছে, তাদের এক ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে। দাবি আদায় না হলে আমরা রাজপথে আত্মহত্যা করবো। রোববারের মধ্যে অবৈধ প্রহসনের রায় বাতিল করে আমাদের যোগদান নিশ্চিত করতে হবে।’ দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার ঢাকার শাহবাগে সড়কে অবস্থান নেন তারা। এতে সায়েন্স ল্যাব হয়ে মৎস্যভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে আন্দোলনকারীদের সড়ক থেকে উঠিয়ে দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এছাড়া, জলকামান ব্যবহার করা হয়। পুলিশি অ্যাকশনে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন ও কয়েকজনকে আটক করার খবর পাওয়া যায়।

জলকামানের পানি ছিটিয়ে শাহবাগ মোড় থেকে শিক্ষকদের সরিয়ে দিল পুলিশ
ঢাকার শাহবাগ মোড়ে প্রাথমিকের সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। তাদের শাহবাগ মোড থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় সেখান থেকে ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে পুলিশের কাছ থেকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশকে সেখানে কয়েকজনকে আটক করতে দেখা গেছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৬ হাজার ৫৩১ জনের বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে টানা অষ্টম দিনের মতো আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সড়কের ওপর অবস্থান নেন সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। এতে সায়েন্সল্যাব হয়ে মৎস্যভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর দেড়টার দিকে প্রায় শতাধিক শিক্ষক দ্রুত নিয়োগের দাবিতে রাস্তায় নেমে পড়েন। একই সময় পাশে অবস্থান করতে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। দুপুর আড়াইটার পর পুলিশ তাদের শাহবাগ মোড থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় জলকামান থেকে তাদের ওপর পানি ছিটানো হয়। এক পর্যায়ে শাহবাগ মোড থেকে পিছু হটতে বাধ্য হন তারা। বেলা পৌনে তিনটার দিকে তারা পাশেই জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন। এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় অনেককেই কাফনের কাপড় পরে আন্দোলনে অংশ নিতে দেখা যায়। রাশেদা বেগম নামে এক নারী বলেন, ‘এ সরকার আমাদের চাকরি দিয়েও কেড়ে নিয়েছে। তাই আমরা রাস্তায় নেমেছি। চাকরি ফিরিয়ে না দিলে সন্তানদের নিয়েই রাস্তায় শহীদ হয়ে যাব।’ গেল ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে উত্তীর্ণ ছয় হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর আগে ১৯ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগপত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচাপতি মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। কোটা পদ্ধিত অনুসরণ করে নিয়োগ দেওয়ায় আদালত এ আদেশ দেন। গেল ৩১ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ৬ হাজার ৫৩১ জন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এ ফল প্রকাশ করা হয়। গত ২৮ মে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) মৌখিক পরীক্ষাসহ নিয়োগপ্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণসংক্রান্ত হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন, আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে মৌখিক পরীক্ষা নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে এই নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গণমাধ্যমে আসা অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
/bcs.jpg)
বিসিএসে চূড়ান্ত নিয়োগে বাদ পড়া ঠেকাতে হচ্ছে আইন
বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের গেজেট থেকে যাতে বাদ দেওয়া না হয়, সেজন্য বিধি সংশোধন করে নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। শিগগির এ বিষয়ে পদক্ষেপে নিতে যাচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। পিএসসির একাধিক সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের অতীতের কর্মকাণ্ড যাচাই-বাছাইয়ের জন্য নতুন নিয়মের খসড়া প্রণয়ন করেছে পিএসসি। বর্তমানে এটি খসড়া পর্যায়ে রয়েছে। শিগগির সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে। নতুন নিয়ম অনুমোদিত হলে প্রার্থীদের অতীত মূল্যায়নে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। তা ছাড়া, যদি কোনো প্রার্থীর নাম মনগড়াভাবে বা যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া সুপারিশের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ঘটনা ঘটে, তা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ খসড়া আইনে রাখা হয়েছে বলেও জানান তারা। পিএসসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম বলেন, তথ্য যাচাইয়ের নামে যেকোনো অন্যায্য কাজ ঠেকাতে নতুন এ নিয়ম ভূমিকা রাখবে। আইনটি গৃহীত হলে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের হয়রানি লাঘব হবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। তিনি আরও বলেন, আমরা এটি জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতনা সামনে রেখে প্রণয়ন করেছি। আমাদের লক্ষ্য পিএসসিকে একটি শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা। গত ৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিএসসির প্রধান কার্যালয়ে পূর্ণ কমিশন সভা হয়। সভায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা ও পিএসসির অভ্যন্তরীণ আলোচনার প্রেক্ষিতে বিসিএস ক্যাডার ও নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধি সংশোধনে আলোচনা হয়। সেদিন আইন সংশোধন ও পরিমার্জনের বিষয়টিও আলোচ্যসূচিতে ছিল।