
এখনও ডিসেম্বর মাসের বেতন পাননি ৪০ হাজারের বেশি শিক্ষক
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতো জানুয়ারি থেকে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বা ইএফটির মাধ্যমে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়া শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কয়েক মাসের মাসের ট্রায়ালের পর শিক্ষকদের বেতন ইএফটিতে দেওয়া শুরু হয়। তবে এ নিয়ে নানা জটিলতায় পড়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে এখনও ডিসেম্বর মাসের বেতন পাননি ৪০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। জানা গেছে, বেসরকারি স্কুল-কলেজের ৩ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ৩ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য যাচাই করছে মাউশি। এরমধ্যে প্রথম ধাপে এক লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী ডিসেম্বর-২০২৪ মাসে ইএফটিতে বেতন পেয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার এবং তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার ৭০০ শিক্ষক-কর্মচারী ইএফটিতে বেতন পেয়েছেন। সব মিলিয়ে ৩ লাখ ৪০ হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মচারী ইএফটিতে ডিসেম্বর-২০২৪ মাসের বেতন ভাতা পেয়েছেন। সে হিসেবে এখনও ডিসেম্বর মাসের বেতন পাননি প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেল সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য যাচাইকালে অনেক শিক্ষক-কর্মচারীর ডাবল এমপিও, ভুল তথ্য দিয়ে এমপিও নেওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। এছাড়া অনেকের মাউশির এমপিও শিটের তথ্যের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের মিল নেই। আবার অনেকের ব্যাংক হিসাবের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের মিল নেই। বিষয়গুলো সমাধান করে চতুর্থ এবং পঞ্চম ধাপে শিক্ষকদের ডিসেম্বর মাসের বেতন ছাড়ের চেষ্টা চলছে। ইএমআইএস সেলের কর্মকর্তারা জানান, তৃতীয় ধাপে যারা বেতনবঞ্চিত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৮ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ছাড় করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। এই শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দিতে চিফ অ্যাকাউন্টস অফিসারের কাছে তথ্য পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই চতুর্থ ধাপের বেতন ব্যাংকে পাঠানো হবে। চতুর্থ ধাপে যারা বেতন পাবেন না তাদের ৫ম ধাপে বেতন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মাউশির ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট উইংয়ের পরিচালক গোপীনাথ পাল এ বিষয়ে বলেন, মাউশির এমপিও শিটের সঙ্গে শিক্ষক-কর্মচারীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যগত ভুল থাকায় অনেকে এখনও বেতন পাননি। বিষয়টি সমাধানের জন্য ইএমআইএস সেল কাজ করছে। আশা করছি চলতি মাসের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান করে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ছাড় করা সম্ভব হবে।

ফের আন্দোলনের ঘোষণা তিতুমী কলেজের শিক্ষার্থীদের
আগামী সাত দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া ছয় দফা আশ্বাস বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে গঠিত প্ল্যাটফর্ম তিতুমীর ঐক্য। শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘মন্ত্রণালয় দাবি পূরণে আশ্বাস দিলেও এখনও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।’ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কলেজের অডিটোরিয়ামের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ কথা জানায়। পরে মন্ত্রণালয়ের ছয় দফা আশ্বাস বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রতিনিধি দল চিঠি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে যায়। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে স্বতন্ত্র তিতুমীর কাঠামো গঠন, ছাত্র-শিক্ষক-শিক্ষাবিদদের প্রতিনিধি কমিটির মাধ্যমে ২০২৪-২৫ সালের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা এবং সেখানে ন্যূনতম দুটি আন্তর্জাতিক বিষয় আইন এবং সাংবাদিকতা বিভাগ সংযোজন, আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার ও শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসিকীকরণের জন্য টিঅ্যান্ডটির মাঠ, রাজউকের জমিসহ অন্যান্য সরকারি জমি শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়া, যাতায়াত ব্যবস্থার সংকট কাটাতে ন্যূনতম ২০টি লাল বাস ও আন্তর্জাতিক মানের লাইব্রেরি দেওয়া
/chain-bg.jpg)
মাউশির ডিজির প্রত্যাহার দাবিতে আবার শিক্ষা ভবন ঘেরাও
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ড. এহতেশাম উল হকের প্রত্যাহার দাবিতে ফের শিক্ষা ভবন ঘেরাও করেছে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট। বুধবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার পর আব্দুল গনি রোডে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মূল ভবনের সামনে শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর শিক্ষকরা মূল ভবনের সামনে এসে ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের কর্মসূচি ঘিরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শিক্ষকদের দাবি, মহাপরিচালককে সরিয়ে দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার পর্যন্ত আলটিমেটাম দেওয়া ছিল। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে এখনো সপদে বল রেখেছে। অবিলম্বে তাকে ডিজি পদ থেকে প্রত্যাহার না করলে সামনে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা। একইসঙ্গে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক পদে ড. জুলফিকার হায়দারকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট। শিক্ষকরা দাবি, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে পদায়ন পাওয়া অধ্যাপক ড. এহতেশাম উল হককে প্রত্যাহার করতে হবে। বর্তমান শিক্ষাসচিব আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন শুরু করেছে। অবিলম্বে মাউশির মহাপরিচালককে পদত্যাগ করতে হবে। তারা বলেন, মাউশির ডিজি পদে পদায়ন পাওয়া অধ্যাপক ড. এহতেশাম উল হক বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠ অনুচর হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত। তার হাত ধরেই বরিশাল বিএম কলেজের রসায়ন বিভাগ থেকে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদে পদায়ন পান অধ্যাপক ড. এহতেশাম উল হক। আওয়ামী বলয়ের প্রভাবশালী অধ্যক্ষ হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ লোপাট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ বিস্তর অভিযোগে পাঁচ আগস্টের পরে অধ্যক্ষ পদ থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিক আন্দোলন, আলটিমেটাম এবং শিক্ষা সচিবের লিখিত অভিযোগ দেন। এরপরই তাকে অধ্যক্ষ পদ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। আওয়ামী ঘনিষ্ঠ অনুচর ও বিতর্কিত শিক্ষা ক্যাডারের এই কর্মকর্তা কীভাবে মাউশির ডিজির পদে আসীন হয় তা শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটসহ শিক্ষার্থী এবং সুশীল সমাজের কারো বোধগম্য নয়। যার উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, মহাসচিব জাকির হোসেন, সহকারী মহাসচিব অধ্যাপক বদরুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ কাজী মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন, অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন লিটন, অধ্যাপক আব্দুল আউয়াল, যুগ্মমহাসচিব অধ্যাপক আব্দুল হাকিমসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শিক্ষক কর্মচারীরা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ঘেরাও করে ১০ ফেব্রুয়ারি মধ্যে থাকে প্রত্যাহারের আলটিমেটাম দেয়।

এখনও নতুন পাঠ্য বইয়ের অর্ধেকও পায়নি শিক্ষার্থীরা
জানুয়ারির মধ্যে সময় বেঁধে দেয়া হলেও প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৪০ কোটি বইয়ের মাত্র অর্ধেক পৌঁছেছে শিক্ষার্থীদের হাতে। এনসিটিবির চেয়ারম্যান একেএম রিয়াজুল হাসান বলছেন, ‘দেরিতে ছাপাতে দেয়ার পাশাপাশি প্রেস মালিকদের অসহযোগিতাও, দেরিতে বই পাবার অন্যতম কারণ।’ এই মুহূর্তে দশম শ্রেণিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বই ছাপানোর কাজ চলছে বলেও জানান তিনি। একই সাথে আশ্বস্ত করেন, চলতি মাসেই শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই পৌঁছে যাবে। রাজধানীর উদয়ন স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর ইংলিশ ভার্সনের ক্লাস রুমে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে ফটোকপি করা বই দিয়ে। তাদের ইংরেজী ভার্সনের কোন শিক্ষার্থীই এখনও কোন বই হাতে পায়নি। প্রাথমিকের শতভাগ এলেও মাধ্যমিকে চাহিদার অর্ধেক বই এসেছে। ষষ্ঠ শ্রেণীর ইংরেজি ভার্সনে একটি বইও যেমন হাতে আসেনি তেমনি বাকি তিনটি ক্লাসের জন্য তিনটি করে বই পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আরিফুর রহমান বলেন, ‘মূল ধারার বাংলা ভার্সনে অষ্টম ও দশম শ্রেণীতে সব বই পেলেও বাকি দুটি শ্রেণীতে মাত্র তিনটি বিষয়ের বই পেয়েছে শিক্ষার্থীরা।’ এনসিটিবির হিসেবে ৪০ কোটি বইয়ের অর্ধেক এখনও শিক্ষার্থীদের হাতে পৌছায়নি। দেরিতে ছাপাতে দেওয়ার বাস্তবতা সাথে ছপাখানার মালিকদের অসহযোগিতাকে সামনে আনছেন রিয়াজুল হাসান। তিনি বলেন, ‘চলতি মাসের মাঝামাঝিতে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর সব বই পৌছে যাবে। আর মাধ্যমিক সহ বাকি বই শিক্ষার্থীদের হাতের পেতে সময় লাগবে এ মাসের পুরোটাই।’

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবেন শিক্ষকরা
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথেই আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন সুপারিশপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষকরা। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলমান রয়েছে। শিক্ষকদের দাবি দাওয়া নিয়ে ইতিমধ্যে ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে গিয়েছেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’,‘হয়ত মোদের যোগদান দিন, নয়তো মোদের জীবন দিন’,‘থাকার কথা বিদ্যালয়ে, আমরা কেন রাজপথে’, ‘প্রথম ধাপ চাকরি করে, আসরা কেন রাজপথে’, ‘এক নিয়োগে দুই নীতি, মানি না মানবো না’, ‘এক দফা এক দাবি, চাকরি নিয়ে ফিরব বাড়ি’, ‘আবু সাঈদের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘যোগদান নিয়ে তালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘তোদের রায় তোরা নে, আমার চাকরি ফেরত দে’, ‘অবৈধ এই রায়, মানি না মানব না’,‘অধিদপ্তর নীরব কেন, প্রশাসন জবাই চাই’ সহ ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়। সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষক রাকিব সিদ্দিকী বলেন, ‘যত বাধাই আসুক, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না। ন্যায্যা দাবি আদায়েই আমরা এখানে এসেছি।’ এর আগে গতকাল সোমবারও (১০ ফেব্রুয়ারি) প্রাথমিকের সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেছিলেন। পরে পুলিশ জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড, লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে তাদের সরিয়ে দেয়। তখন বেশ কয়েকজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বলছেন, ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩ বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম এবং অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেও নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু ৩য় ধাপ নিয়ে প্রহসন থামছে না।’ তারা আরও বলছেন, ‘সুপারিশপ্রাপ্তরা নিজ জেলা সিভিল সার্জনে এরই মধ্যে মেডিকেল টেস্ট করে এবং জেলা শিক্ষা অফিসে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র ও পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম জমা দিয়েছে। দেশের সব জেলার প্রায় সব উপজেলাগুলোর চূড়ান্ত সুপারিশ প্রাপ্তরা যোগদান পত্রও হাতে পেয়েছেন। এরপরও যোগদান করতে না পেরে ৬ হাজার ৫৩১টি পরিবার সীমাহীন লাঞ্চনার মধ্যে পড়েছে। সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে।’ আমাদের মধ্যে অনেকেই সরকারি চাকরি করতেন। তারাও এই প্রাথমিকে যোগদান করার জন্য কর্মরত সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। সবাইকে আজ কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কিন্তু আমরা এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী নয়। তাই এই মুহূর্তে আমাদের দাবি হচ্ছে, রায় বাতিল করে আমাদের কাজে যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করেন হাইকোর্ট। মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগের নির্দেশ দেন আদালত। গত ১৯ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি মালায়ার সাথে সিভাসুর সমঝোতা স্মারক সই
গবেষণা কার্যক্রমে পারস্পরিক সহযোগিতার লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি মালায়ার (ইউএম) সাথে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। সিভাসুর উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান ও ইউনিভার্সিটি মালায়ার উপাচার্য প্রফেসর দাতো' সেরি আইআর ড. নূর আজুয়ান আবু ওসমান চুক্তিতে সই করেন। সম্প্রতি স্বাক্ষরিত এই চুক্তি অনুযায়ী সিভাসুতে চলমান ‘এনাপ্লাজমা রোগের ভ্যাকসিন উৎপাদন’ শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পের আওতায় দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকগণ পারস্পরিক বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার মাধ্যমে ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য যৌথভাবে গবেষণায় অংশগ্রহণ করবেন। তিন বছর (২০২৫-২০২৭) মেয়াদি এই প্রকল্প বাংলাদেশে গবাদি পশুর গুরুত্বপূর্ণ পরজীবীবাহিত এনাপ্লাজমা রোগ প্রতিরোধকল্পে ভ্যাকসিন বা টিকা উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে এবং আগামী তিন বছর মালয়েশিয়ার ওই বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করবে। সমঝোতা চুক্তির আওতায় গবেষণা প্রশিক্ষণ, গবেষকবৃন্দের অভিজ্ঞতা বিনিময়, প্যাটেন্ট ও উৎপাদিত টিকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক বিষয়ে যৌথভাবে কাজ করবে দুই বিশ্ববিদ্যালয়। সিভাসুর প্যাথলজি ও প্যারাসাইটোলজি বিভাগের প্রফেসর ড. এএমএএম জুনায়েদ সিদ্দিকীর তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্প ভবিষ্যতে বাংলাদেশে এনাপ্লাজমা রোগ প্রতিরোধে উন্নতমানের টিকা উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পুলিশের গাড়িতে সচিবালয়ে গেলেন নিবন্ধিত শিক্ষকদের প্রতিনিধিদল
শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) নিবন্ধিত প্রথম-১২তম নিয়োগ প্রত্যাশী শিক্ষকরা ডাক পেয়েছেন সচিবালয়ে। সে অনুযায়ী আলোচনার জন্য ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল সচিবালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে শাহবাগ থানা পুলিশের একটি গাড়িতে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সচিবালয়ে রওনা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে এনটিআরসিএ’র নিবন্ধিত প্রথম-১২তম নিয়োগ প্রত্যাশী শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক ও প্রধান সমন্বয়ক জিএম ইয়াছিন বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনে সাড়া দিয়ে কর্তৃপক্ষ আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের আলোচনার জন্য সচিবালয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছে। সেজন্য আমরা ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাছাই করেছি।’ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা হলেন আন্দোলনের প্রধান উপদেষ্টা আমির আসহাব, প্রধান সমন্বয়ক জিএম ইয়াছিন, সমন্বয়ক মো. মোস্তফা কামাল, সমন্বয়ক আল মুমিন, সদস্য শিল্পী আক্তার সাওফা, সদস্য আসমাউল হুসনা এলিজা ও সদস্য রাজিয়া সুলতানা রথি। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি )সংবাদ সম্মেলনে জিএম ইয়াছিন বলেন, ‘এনটিআরসিএ এখন পর্যন্ত ১৭টি নিয়োগ পরীক্ষার সুপারিশ করলেও মাত্র ৫টি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ দিয়েছে। এতে প্রায় ১২-১৩ হাজার যোগ্য শিক্ষক বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। বহু নিবন্ধিত শিক্ষক একাধিকবার পরীক্ষায় পাস করেও চাকরির সুপারিশ পাননি। অথচ কিছু লোক আবেদন ছাড়াই নিয়োগ পেয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘২০২১ সালের ৮ অক্টোবর থেকে আমরা লাগাতার মানববন্ধন করে আসছি। এনটিআরসিএর আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে আজও আমাদের নিয়োগ অনিশ্চিত। গত ১৭ অক্টোবর ও ২৩ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার এপিএস সাব্বির আহমেদ আমাদের দ্রুত নিয়োগের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। আমলারা তার প্রতিশ্রুতি মানছেন না।’ এমন অবস্থায় দাবি আদায় না হলে এখানেই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন তিনি। পরে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জের মুখে পড়তে হয় তাদের।
/sa.jpg)
১১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, দুই জন জাতীয় নেতা ও শেখ হাসিনাসহ বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য ও অন্যদের নাম বাদ দিয়ে দেশের ১১টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের বস্ত্র অধিদফতরের অধীনে থাকা ১১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে গত ২৩ জানুয়ারির প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রজ্ঞাপনে টাঙ্গাইলের কালিহাতির বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নাম পরিবর্তন করে টাঙ্গাইল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ঝিনাইদহ সদরের শেখ কামাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নাম পরিবর্তন করে ঝিনাইদহ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বরিশালের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নাম পরিবর্তন করে বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, রংপুরের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নাম পরিবর্তন করে রংপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, গোপালগঞ্জের শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নাম পরিবর্তন করে গোপালগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, জামালপুরের শেখ হাসিনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নাম পরিবর্তন করে জামালপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ করা হয়েছে। এ ছাড়া বরিশালের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন করে বরিশাল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, সিরাজগঞ্জের বেগম আমিনা মনসুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের নাম বদলে সিরাজগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, নওগাঁর মান্দার শহীদ কামারুজ্জামান টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের নাম বদলে নওগাঁ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, জামালপুরের মাদারগঞ্জের শেখ রাসেল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের নাম বদলে জামালপুর টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট এবং মেহেরপুরের ছহিউদ্দিন টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের নাম বদলে মেহেরপুর টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট করা হয়। এর আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানের নাম থেকে শেখ পরিবারের সদস্যদের নাম বাদ দিয়েছে। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা দেশের ১৩টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।

পরিবেশবান্ধব ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে আইইউবিএটির গ্রাজুয়েটদের প্রতি আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান শিক্ষার্থীদের দায়িত্বশীল নাগরিক ও ভবিষ্যৎ নেতা হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে একটি শোষণ ও অন্যায়মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে পারি। এমন একটি দেশ, যেখানে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং যা অন্যদের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ হবে।’ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বিআইসিসিতে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কনভোকেশন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রিজওয়ানা হাসান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দুটি গুরুত্বপূর্ণ অনুরোধ করেন। প্রথমত, অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজানো বন্ধ করতে হবে। এটি সমাজকে আরও শান্তিপূর্ণ ও পরিবেশবান্ধব করবে। দ্বিতীয়ত, এক বার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পরিহার করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণ আমাদের পরিবেশের জন্য বড় হুমকি। এটি কমাতে পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুস্থ পৃথিবী নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’ পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে আপনাদের সাহস ও ত্যাগের কারণে। আপনারা অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।’ তিনি শিক্ষার্থীদের স্মরণ করিয়ে দেন যে, ভালো ক্যারিয়ার গড়াই শেষ লক্ষ্য নয়। সমাজের কল্যাণে কাজ করাই প্রকৃত সাফল্য। বর্তমান উন্নয়ন মডেলের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘উন্নয়ন যেন প্রকৃতির ওপর চাপ সৃষ্টি না করে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। প্রকৃতির ক্ষতি না করেও উন্নতি সম্ভব। এজন্য আমাদের উন্নয়নের ধারণা বদলাতে হবে।’ তিনি আইইউবিএটিকে পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন মডেল প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আইইউবিএটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুর রব, সমাবর্তন বক্তা যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের অধ্যাপক ড. ট্যামসিন ব্র্যাডলি, আইইউবিএটির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিনা নারগিস ও পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী রিয়ানা আজাদ। পরে উপদেষ্টা সমাবর্তন ডিগ্রি দেন এবং ফাউন্ডার মিয়ান গোল্ড মেডেল, আলিমুল্লাহ মিয়ান অ্যাওয়ার্ড ও ক্রেস্ট বিজয়ীদের হাতে তুলে দেন

শাহবাগে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রাথমিকের শিক্ষকদের সড়ক অবরোধ
ঢাকার শাহবাগে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে সুপারিশপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হন তারা। এ সময় তাদের নিয়োগ বাতিলের প্রতিবাদ জানিয়ে ও দ্রুত নিয়োগ দেয়ার দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বলেন, ‘আমাদের নিয়োগ বাতিল করে যে রায় দেওয়া হয়েছে সেটি বৈষম্যমূলক। এ সরকারই আমাদের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে। আবার আমাদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। এটি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা। আমরা চাই দ্রুত যেন এ রায় বাতিল করে আমাদের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়।’ সাব্বির সাদেক নামের আন্দোলনকারী বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এখান থেকে সরব না।’ এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করেন হাইকোর্ট। মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। তারও আগে গত বছরের ১৯ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
/national u.jpg)
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স কোর্স হবে ৩ বছরের
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বছরের সম্মান বা অনার্স কোর্স রয়েছে তার মেয়াদ কমিয়ে তিন বছর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষে ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এম আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বছরের অনার্স কোর্সকে তিন বছরের করা হবে। বাকি এক বছরে ডিপ্লোমা ও কারিগরি ওপর ব্যাপকভাবে শিক্ষা দেওয়া হবে। একটা অনার্সের সার্টিফিকেট দেওয়া হবে; আরেকটা ডিপ্লোমার সার্টিফিকেট দেওয়া হবে, যে সার্টিফিকেট ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে। অধ্যাপক আমিনুল বলেন, তার অনার্স পড়ার যে স্বপ্ন তাও টিকে থাকল, আর অনেক ভালো চাকরিও পেল। এ ছাড়া কর্মসংস্থানে গিয়ে বেগ পেতে হবে না। একটা অভিনব অসাধারণ সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক সাইদুর রহমান, কারিগরি ও মাদ্রাসার শিক্ষা বিভাগের সচিব কবিরুল ইসলাম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জোবায়ের।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থীর বিক্ষোভ
ফলাফল বাতিল হওয়া ৬ হাজার ৫৩১ জন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষককে নিয়োগের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থী জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তার এক পাশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। তারা জানান, সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের ৩ দফায় নিয়োগ পরীক্ষা হলেও প্রথম এবং দ্বিতীয় দফায় শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়ে তৃতীয় দফার নিয়োগ স্থগিত করা হয়।গত ৩১ অক্টোবর তৃতীয় দফা নিয়োগ পরীক্ষায় চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে সরকার। তবে পরবর্তী ৩১ জন অপেক্ষমান প্রার্থীর একটি রিটের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের আদেশে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়।এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে চুড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্ত ৬ হাজার ৫৩১ জন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদপ্রার্থী। অবিলম্বে আইনি জটিলতা নিরসন করে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের দাবি জানান তারা।
/dafodil.jpg)
বৈষম্য-দারিদ্র্য দূর করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ
বৈষম্য ও দারিদ্র্য দূর করাই এখন বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। তারপরও আমাদের লক্ষ্য সুদূরপ্রসারী ও দৃঢ়। কিন্তু বৈষম্য ও দারিদ্র্য দূর করাটা এখনও আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেসরকারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) ১২তম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সাভারের বিরুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাসে এ অনুষ্ঠান হয়। রাষ্ট্রপতির ও বিশ্ববিদ্যালয়টির আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে গণশিক্ষা উপদেষ্টা সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন। অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বহু শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের নব্য স্বাধীনতা। সামাজিক বৈষম্য, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, পশ্চাৎপদতা দূরীকরণ এবং সুখী-সমৃদ্ধ, স্বনির্ভর ও আত্মমর্যাদাশীল জাতি গড়ে তোলার মাধ্যমেই অর্জিত হতে পারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, এ অর্জনের অঙ্গীকারই বাংলাদেশ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আশা করে। জ্ঞানবিজ্ঞান, শিক্ষা, গবেষণা, সাহিত্য, অর্থনীতি, রাজনীতিসহ সব ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন। সততা, কর্মনিষ্ঠা, দক্ষতা ও পরিশ্রম দিয়ে শিক্ষার্থীরা গড়ে তুলবে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ। গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, দেশের সামগ্রিক আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রয়োজন দক্ষ মানবসম্পদ। নিজেদের মেধা, শিক্ষা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে নিজেকে বিশ্বমানের মানবসম্পদে পরিণত হতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে তথ্যপ্রযুক্তির মহাসড়কে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ততদিন দেশ উন্নত হবে না যতদিন পর্যন্ত দেশ পরিচালনার জন্য, দেশের অর্থনীতির হাল ধরার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ প্রকৃত উচ্চশিক্ষিত নাগরিক আমরা সৃষ্টি করতে না পারি। গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশ ও দশের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করে তুলতে হবে। ভালো মানুষ, মানবিক মানুষ হতে হবে। বিশ্বসভায় দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে হবে। তরুণরা এ দেশে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। ভবিষ্যতের বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকারও বাকস্বাধীনতার। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অধ্যাপক হাসান দিয়াব। তিনি বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বাংলাদেশের নয়, এ অঞ্চলের সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আশার আলো ও মডেল। বিশ্ববিদ্যালয়টি আন্তর্জাতিকীকরণের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতে শাখা ক্যাম্পাস চালুর মধ্যদিয়ে বৈচিত্র্যময় ছাত্র সম্প্রদায়কে বিশ্বমানের শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে তার প্রতিশ্রুতি ও যোগ্যতা দেখিয়েছে। সমাবর্তনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান, উপাচার্য অধ্যাপক এম লুৎফর রহমান প্রমুখ। ডিগ্রি পেল ৩৯৫১ জন, ১২ জনের স্বর্ণপদক অর্জনড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ১২তম সমাবর্তনে মোট তিন হাজার ৯৫১ জন গ্র্যাজুয়েটকে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিগ্রি দেওয়া হয়। কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী ১২ গ্র্যাজুয়েটকে চ্যান্সেলর, চেয়ারম্যান ও উপাচার্যসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিত স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। সমাবর্তনে চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ফার্মেসি বিভাগের আবু ফারহান সিয়াম, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জাবেদ হাসান, নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের হুমায়রা আসিমা মিম, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মাশুর সাদ করিম ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আশিকুল হক।

দুই মাসেও হাতে আসেনি সব বই, বাজারে ছুটছেন অভিভাবকরা
নতুন বছরের দুই মাসেও এখনও সব বই পায়নি বেশ কয়েকটি শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। বইয়ের অভাবে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় চিন্তিত অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। কাগজ সংকটের কারণে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বই ছাপানো যাচ্ছে না বলে দাবি মুদ্রণ সমিতির। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) বলছে, ‘কিছু ছাপাখানা নোট-গাইড ছাপানোয় সময়মতো মিলছে না বই।’ ভর দুপুরে পঞ্চগড় বোদা উপজেলার ধনীপাড়া গাইঘাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাসের পরিবর্তে খেলায় মেতেছে শিক্ষার্থীরা। কোনো কোনো কক্ষে ক্লাস চললেও অনেকের হাতেই নেই বই। শিক্ষকরা বলছেন, ‘অনেক ক্লাসে একটি বইও হাতে পায়নি শিক্ষার্থীরা। শুধু আসা-যাওয়ায় সীমাবদ্ধ শ্রেণি কার্যক্রম।’বই না পাওয়ায় ছন্দহীন শিক্ষক, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শিক্ষাঙ্গন। নতুন বই পেতে অপেক্ষার প্রহর যেন শেষই হচ্ছে না। বছরের শুরুটাই বই ছাড়া কেটে যাওয়ায় পড়াশোনায় মনযোগ দিতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা।এখনেও সন্তানের হাতে বই না পৌঁছানোয় কপালে চিন্তার ভাঁজ অভিভাবকদের। অনেকেই বাজার থেক কিনছেন বিনামূল্যের বই। দ্রুত বইয়ের ব্যবস্থা করার দাবি তাদের।দুই মাসেও কেন বই পেল না শিক্ষার্থীরা? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনে। বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ জুনায়েদুল্লাহ আল মাহফুজের দাবি, বাজারে এনসিটিবির বেঁধে দেয়া মানের কাগজের সংকট থাকায় যথাসময়ে বই ছাপানো যাচ্ছে না। যেসব কাগজ আসছে সেগুলো দিয়ে ছাপার কাজ করছি।তবে কাগজের সংকট নেই বলে দাবি করেছেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘যাতে কাগজের কৃত্রিম কোনো সংকট না হয়, আমরা ছাপাখানার সঙ্গে কাগজ আমদানিকারকদের যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলাম। মূলত ছাপাখানার মালিকরা আগের অভ্যাস পরিবর্তন করতে পারছে না এবং চাইলেও নিম্নমানের কাগজ দিতে পারছে না।’তিনি আরও বলেন, ‘মনে কষ্ট নিয়ে হলেও তারা আমাদের কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। যার কারণে চুক্তি ভেঙে কিছু প্রেস পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ ফেলে নোট গাইড ছাপাচ্ছে। কিন্তু আমরা কোনোভাবেই ফেব্রুয়ারি পার করতে চাই না।’বই পাওয়ার আগ পর্যন্ত পিডিএফ থেকে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার পরামর্শ এনসিটিবির চেয়ারম্যানের।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয় হাজার ৫৩১ সহকারী শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এর আগে গত ১৯ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগপত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্ট। কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে তাদের নিয়োগ দেওয়ায় আদালত এ আদেশ দেন। পাশাপাশি রুল জারি করেন আদালত। গত ৩১ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ৬ হাজার ৫৩১ জন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ওয়েবসাইটে এ ফল প্রকাশ করা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ২৩ জুলাই কোটাপদ্ধতি সংশোধনের পর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে বলা হয়, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবরের জারি করা পরিপত্রসহ আগের এ সংক্রান্ত সব পরিপত্র বা প্রজ্ঞাপন বা আদেশ রহিত করা হলো। ফলে আগের কোনো আদেশ বহাল থাকছে না। তবে ৬ হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নির্বাচন করে নিয়োগের ক্ষেত্রে আগের সেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ অনুসরণ করা হয়। যেখানে নারী কোটা ৬০ শতাংশ, পোষ্য কোটা ২০ শতাংশ, ৪ শতাংশ অন্যান্য কোটা ছিল। যে কারণে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে নিয়োগের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন।’

শিক্ষার সাথে নৈতিকতার সংযোগ না ঘটলে মানুষ হওয়া যায় না: ধর্ম উপদেষ্টা
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘শিক্ষার সাথে নৈতিকতার সংযোগ না ঘটলে মানুষ হওয়া যায় না। শুধু সার্টিফিকেট অর্জন করা যায়। এ দুইয়ের সম্মিলন ছাড়া মানুষের মধ্যে দেশপ্রেমও তৈরি হয় না।’ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকার মুগদায় বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল ও স্প্রিং সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে তিনি এসব কথা বলেন। প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘পৃথিবীর নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেশিরভাগই বেসরকারি, এ মানের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খুব একটা নেই। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্ম নির্ভরতা আছে। মুসলমানদের প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ও মসজিদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।’ তিনি শিক্ষার সাথে ধর্মের সংশ্লিষ্টতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। খালিদ হোসেন বলেন, ‘নৈতিকতাবোধ জাগ্রত করা না গেলে শিক্ষার্থীরা পাশ করার পর অনৈতিক কাজ করবে। তারা অনিয়ম, ঘুষ ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়বে।’ তিনি অসৎপথে যেনতেন উপায়ে অর্থ উপার্জনের চিন্তা ত্যাগ করার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে অনুরোধ জানান। ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনীতির আখড়া বানিয়ে ফেলেছি। অন্ধ দলীয় রাজনীতি আমাদেরকে শেষ করে দিয়েছে। পৃথিবীর কোন দেশে এরূপ রাজনৈতিক সংস্কৃতি নেই।’ তিনি নবীন শিক্ষার্থীদেরকে এই সংস্কৃতি পরিহার করে লেখাপড়ায় মনযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া, উপদেষ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কাজে স্বচ্ছতা বজায় রাখার অনুরোধ জানান। ভাইস চ্যালেন্সর কাজী আখতার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান প্রফেসর কামালউদ্দিন আবদুল্লাহ জাফরি, বাংলাদেশ ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ শামসুল আলম, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক আব্দুল হাই শিকদার, বিআইইউর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সৈয়দ জারিফ জাফরি বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

গুচ্ছে থাকছে ২০ বিশ্ববিদ্যালয়, আশ্বাসে ইউজিসি ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা
দেশের ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (জিএসটি) গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। খুব শিগগির গুচ্ছ ভর্তির বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হবে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ এমন তথ্য জানিয়েছেন। তার আশ্বাসের পর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ফটকের সামনে অবরোধ করা শিক্ষার্থীরা ফিরে গেছেন। এর আগে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা ইউজিসি অডিটরিয়ামে গুচ্ছভুক্ত সমন্বিত ভর্তি কমিটির ৩২তম সভায় বসেন। এর পরপরই ইউজিসির ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। গুচ্ছভুক্ত ২৪ বিশ্ববিদ্যালয় রেখে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা চালু রাখার দাবি জানান তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেন। এদিকে, বৈঠক শেষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমরাও একমত। সে লক্ষ্যে কাজ করছি। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বের হয়ে গেলেও অন্তত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে। আজকের সভায় এটি সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার দিন-তারিখ ঠিক করা হয়েছে। খুব শিগগির আরেকটি সভায় গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞাপ্তি প্রকাশ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আশা করছি, পরবর্তী গুচ্ছ অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে আমরা আয়োজন করতে পারবো।’ গুচ্ছ ভর্তি কমিটির আহ্বায়কের ঘোষণার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আবদুল মালেক সিয়াম বলেন, ‘শিক্ষকরা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তারা যেকোনো মূল্যে অন্তত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন। তাদের আশ্বাসে আজকের মতো অবরোধ তুলে নিয়েছি।’ পরীক্ষা শুরু ২৫ এপ্রিল: এদিকে, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- আগামী ২৫ এপ্রিল ‘সি’ ইউনিটের (ব্যবসায় শিক্ষা শাখা) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ২ মে ‘বি’ ইউনিট (মানবিক) এবং ৯ মে ‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি বিজ্ঞপ্তি, আবেদন ফিসহ অন্যান্য বিষয় পরবর্তী সভা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং তা গুচ্ছ ভর্তির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও গণমাধ্যমে শিগগির প্রকাশ করা হবে।

বুয়েটে আট শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার, ৫২ জনকে ‘শাস্তি-সতর্ক’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আট শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আরও ২৫ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ২৭ জনকে ‘শাস্তিমূলক সতর্ক’ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তর পরিচালক (ডিএসডাব্লিউ) অধ্যাপক ড. একেএম মাসুদ সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুয়েটের অর্ডিন্যান্সের বিভিন্ন ধারা ভঙ্গ করার অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা ৪১টি মিটিং করেছেন। এরপর তারা উপাচার্যকে একটি প্রতিবেদন দেন। সেখানে কিছু সুপারিশ করা হয়। এরপর সেটি শৃঙ্খলা কমিটিতে উত্থাপন করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।কতজনকে কোন মেয়াদে শাস্তি ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের দেওয়া তথ্যমতে, আটজনকে আজীবনের জন্য এবং ১২ জনকে ছয় থেকে চার টার্মের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। আর ৭ জনকে আবাসিক হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা বাইরে থেকে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবেন। ছয়জনকে দুই টার্ম বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তাদের এ শাস্তি স্থগিত থাকবে। তারা স্বাভাবিকভাবে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবেন। তবে পরবর্তীতে তারা যদি আবারও বুয়েটের অর্ডিন্যান্সের কোনো ধারা লঙ্ঘন করেন, তখন সঙ্গে সঙ্গে এ শাস্তি অর্থাৎ, দুই টার্ম বহিষ্কারাদেশ কার্যকর হবে। বাকি ২৭ জনকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সতর্ক করা হয়েছে। তবে শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি বুয়েট কর্তৃপক্ষ। তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়েও এ ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ৫ আগস্টের বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কর্তৃপক্ষ এ ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।

সাউদার্ন ইউনিভার্সিটিতে ইসলামিক শিক্ষা বিভাগে নবীন বরণ অনুষ্ঠান
সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ইসলামিক শিক্ষা বিভাগের স্প্রিং সেমিস্টার ২০২৫’-এর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস বায়েজিদের আরেফিন নগরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিভাগীয় প্রধান ড. মোহাম্মদ নুরুন্নবীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ জালাল উদ্দীন আজহারী। স্নাতক প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজেদুল করিম সাজু সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রভাষক মুহাম্মদ মুহিউদ্দিন ও রেজাউল মোস্তফা রেজা। মোহাম্মদ নুরুন্নবী ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগসহ সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও ঐতিহ্য নবীন শিক্ষার্থীদের নিকট উপস্থাপন করার পাশাপাশি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ভিশন-মিশন, ক্যারিয়ার উইন্ডোসসহ সার্বিক বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন।

এক সপ্তাহ পর ক্লাসে ফিরেছে তিতুমীর কলেজ
সরকারের ‘আশ্বাস’ পেয়ে আন্দোলন স্থগিত করে এক সপ্তাহ পর শ্রেণিকক্ষে ফিরেছে ঢাকা উত্তর সিটির মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে সাত দিন পর আশ্বাসের দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখা গেলে ফের আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে রেখেছে তারা। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল পৌনে ৯টা থেকে ১১টা ক্লাস চলে। এরপর সাড়ে ১২টা থেকে তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা। আন্দোলনকারীদের নেতা নূর মোহাম্মদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আপাতত সাত দিন কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। এ সময়ে ক্লাস-পরীক্ষা সবই চলবে। সরকারের দৃশ্যমান সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে পরবর্তীতে কর্মসূচি দেওয়া হবে।’ তিতুমীরকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণাসহ সাত দাবিতে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে কর্মসূচি শুরু করছিলেন এ কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরদিন বিকালে শুরু হয় অনশন। সোমবার (২ ফেব্রুয়ার) শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির আশ্বাস দেওয়া হলেও প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের কোনো সুস্পষ্ট আশ্বাস দেওয়া হয়নি। পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রোহান হোসেন বলেন, ‘আশা করি, সরকার অবশ্যই দাবি মেনে নেবে। না মানলে আবার আন্দোলন। পড়াশোনার পরিবেশটা চাই আমরা, আর ঝামেলা চাচ্ছি না।’ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ফিরলেও তুলনামূলকভাবে উপস্থিতি কম।’ ‘প্রথম ছিল তো তাই। পরে হয়ত বাড়বে। দাবি পূরণ না হলে সমন্বয়করা হয়ত নতুন কোনো কর্মসূচি দেবে, সেটার সঙ্গে আমাদের একাত্মতা থাকবে।’ আশিকুর রহমান অন্ত বলেন, ‘ঘোষণার পরই আজকের ক্লাস। আশ্বাসের ব্যপারে আশাবাদী হয়ে ক্লাসে ফিরেছি। সবাই মিলেই ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত ছিল।’ গত ২৬ জানুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পর দিন ঢাবির উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে সাত কলেজকে মুক্ত করার ঘোষণা দেন। এই সাত কলেজ নিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা ভাবছে সরকার। তবে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা চাইছেন, তাদের প্রতিষ্ঠানটিকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেওয়া হোক। ওই দাবিসহ সাত দাবিতে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছিলেন তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা। পর দিন বিকাল থেকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে কলেজের মূল ফটকের সামনে অনশন শুরু করেন তাদের কয়েকজন। আর বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) থেকে বিরতি দিয়ে চলছিল সড়ক অবরোধ কর্মসূচি, যাকে তারা বলছেন, ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’। আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্যর’ সাত দফার মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ; ‘বিশ্ববিদ্যালয়’প্রশাসন গঠন করে ২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা এবং শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা কিংবা শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করা। এসব দাবিদাওয়া নিয়ে সোমবারও সড়ক অবরোধের পর মহাখালীতে রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ফলে দিনভর সড়কে যানজটের পাশাপাশি ট্রেন বন্ধে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। ক্ষোভে পরে যাত্রীরা কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজারকে অবরুদ্ধ করেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে রাতে কলেজটির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। পরে রাত সোয়া ৯টায় কর্মকর্তারা মহাখালী রেলক্রসিংয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যান। অনশনরত শিক্ষার্থীদের জুস খাইয়ে অনশন ভাঙান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. নুরুজ্জামান ও কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রাণী মণ্ডল। কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সুস্পষ্ট ঘোষণা না দিলেও শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির আশ্বাস দেন যুগ্মসচিব মো. নরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি কোন কাঠামোতে হবে তা আলোচনা করে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা দ্রুত ওই সিদ্ধান্ত জানাব। জমি বরাদ্দ, নতুন বিল্ডিং ইত্যাদি শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল। কলেজের পাশে টিএনটি ও রাজউকের জমি আছে। সেগুলো যদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তিতুমীরকে দিতে পারলে সেখানে আবাসন সংকট মেটানো সম্ভব।’ ‘আবাসন ও পরিবহন সংকট নিরসনে কার্যক্রম গ্রহণ করে আগামী সাত দিনের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি জানাব। শিক্ষা মান বাড়াতে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমানোর দাবির বিষয়ে আমরা ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা করব।’ তিতুমীর কলেজের আইন ও সাংবাদিকতা বিভাগ চালুর দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা ক্যাডারে এ সাবজেক্ট নাই। এ দাবিটি আরও পর্যালোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’ শিক্ষক সংকট নিরসনের আশ্বাস দিয়ে নুরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা আগামী সাত দিনের মধ্যে কলেজের পিএইচডি ডিগ্রিধারী ও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের পোস্টিংয়ের ব্যবস্থা করব। ১৫২ জন শিক্ষকের পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়া ছিল। এটি আরও ত্বরান্বিত করতে আমরা উদ্যোগ নেব।’ ‘তাদের আবাসনের ক্রাইসিস ও শিক্ষা মান বৃদ্ধির জন্য প্রিন্সিপাল মহোদয়ের নেতৃত্বে ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে একটি টিম গঠন করা হবে। তারা বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। তারা সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে আমাদের জানাবেন।’ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে যুগ্মসচিব বলেন, ‘সেমিস্টার সিস্টেমে পড়াশোনার কথা তোমরা বলছ। সেটি যদি সম্ভব হয়, আমরা পর্যালোচনা করব। ইউজিসি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে যে কমিটি হয়েছে তাদের কাছে আমরা এ প্রস্তাব রাখব। আমরা আশা করি সবাই মিলে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলব।’ শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি স্থগিত করে শ্রেণিকক্ষে ফেরায় মহাখালী থেকে গুলশানগামী রাস্তায় যান চলাচল এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
 25/titumir c.webp)
তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একগুচ্ছ আশ্বাসে সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। সোমবার ৯টা ৩৬ মিনিটে মহাখালী রেলক্রসিংয়ে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্যের’ নেতা ও অনশনরত শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম। গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এ শিক্ষার্থী বলেন, `আমরা অনশন প্রত্যাহার করছি।' আন্দোলনরত শিক্ষার্থী নায়েক নূর এ সময় বলেন, `আমরা আন্দোলন সাত দিনের জন্য স্থগিত করছি। মন্ত্রণালয় যেসব আশ্বাস দিয়েছে তা বাস্তবায়নে কার্যকর অগ্রগতি না দেখলে আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আন্দোলনে নামব।' পরে অনশনরত শিক্ষার্থীদের জুস খাইয়ে অনশন ভাঙান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. নুরুজ্জামান ও কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রাণী মণ্ডল। গত ২৬ জানুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে সাত কলেজকে মুক্ত করার ঘোষণা দেন। এই সাত কলেজ নিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা ভাবছে সরকার। তবে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা চাইছেন, তাদের প্রতিষ্ঠানটিকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেওয়া হোক। ওই দাবিসহ সাত দাবিতে মঙ্গলবার থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছিলেন তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা। পরদিন বিকাল থেকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে কলেজের মূল ফটকের সামনে অনশন শুরু করেন তাদের কয়েকজন। আর বৃহস্পতিবার থেকে বিরতি দিয়ে চলছিল সড়ক অবরোধ কর্মসূচি, যাকে তারা বলছেন, ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’। আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্যর’ সাত দফার মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ; ‘বিশ্ববিদ্যালয়’প্রশাসন গঠন করে ২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা এবং শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা কিংবা শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করা।

তিতুমীর কলেজ ইস্যুতে নাহিদ, ‘এই মুহূর্তে অনেক কিছুই করা সম্ভব না’
ঢাকা উত্তর সিটির মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘দাবি পূরণে সরকারের পক্ষ থেকে এই মুহূর্তে অনেক কিছু করে ওঠা ‘সম্ভব নয়’।’ তবে আগামীতে ‘ভালো কিছু হবে’ বলেও প্রত্যাশা রেখেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা। নাহিদ বলেন, ‘তাদের শিক্ষা জীবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিও সরকার আন্তরিক ও দায়িত্বশীল। তবে এই মুহূর্তে হয়তো অনেক কিছুই করা সম্ভব না। জনভোগান্তি না করে আমরা যাতে সেই বিষয়টি মাথায় রাখি। আশা করি সবার জন্যই ভালো কিছু হবে।’ সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজা পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিতুমীর কলেজ নিয়ে এ কথা জানিয়েছেন নাহিদ। সাত কলেজ দীর্ঘ দিন ধরে জটিল সমস্যায় পরিণত হয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার এ সমস্যা সমাধান করতে সচেষ্ট আছে।’ সাত কলেজ নিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা ভাবছে সরকার। তবে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা চাইছেন, তাদের প্রতিষ্ঠানটিকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেওয়া হোক। তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরসহ সাত দফা দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো সড়ক অবরোধ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলেজের মূল ফটকের সামনে বাঁশ ফেলে তারা সড়কটি আটকে দেন। এদিকে, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরে ‘বিশেষ বিবেচনা করিনি’ বলে শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ যে বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রত্যাহার করেছেন শিক্ষার্থীরা এবং প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর কমিশন গঠনে ‘বাধা দেওয়ার’ অভিযোগ তুলে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এই পরিস্থিতিতে উপদেষ্টা নাহিদ মনে করছেন শিক্ষার্থীদের আরো সংবেদনশীলভাবে বিবেচনা করা উচিত। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যখন যৌক্তিক দাবি নিয়ে মাঠে এসেছিল তখন মানুষ কিন্তু তাদের সমর্থন করেছিল। আমরা যে কোনো দাবির বিষয় ইতিবাচকভাবে দেখছি। যতটুকু সম্ভব যৌক্তিক, এ সময় বাস্তব করা সম্ভব, তা চেষ্টা করছি।’ সাত কলেজের সমস্যার পেছনে আওয়ামী লীগকে দায়ী করে নাহিত বলেন, ‘বিগত সময়ে একটা শিক্ষা বিষয়ক ভুল সিদ্ধান্তের কারণে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর জীবনের ওপরে প্রভাব পড়েছে।’ ‘অন্তর্বর্তী সরকার প্রথম থেকেই সাত কলেজের সমস্যাটা সমাধান করতে সচেষ্ট। সেখানে প্রত্যেকটা কলেজকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। সেটি হয়ত একটা ইতিবাচক সমাধানের দিকে যাবে, সেই প্রক্রিয়া চলমান।’ জগন্নাথ হলে নাহিদের সঙ্গে ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সজীব বলেন, ‘৫ আগস্টের পর প্রথম দিন থেকেই আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সুযোগ খুঁজে বেড়াচ্ছে। আমরা দেখেছি, কিছু মানুষ রিকশাওয়ালা সেজে এসেছিল। পরে বিভিন্ন এমপি মন্ত্রীদের সাথে তাদের ছবি দেখা গেছে।’ ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করেও আওয়ামী লীগ ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টায় আছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু তারা এতে সফল হয়নি। বাংলাদেশের মানুষ চায় না আওয়ামী লীগ কোনভাবেই তাদের মতাদর্শ বা নাম নিয়ে আবার ফিরে আসুক। কারণ এটা বাংলাদেশের সকল জনগণের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।’ বিশৃঙ্খলা রুখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক আছে বলে জানিয়েছেন সজীব।
 25/Titumir.jpg)
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধে যান চলাচল বন্ধ
সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের এক দফা দাবিতে রাজধানীর মহাখালীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। এতে ব্যস্ততম এ সড়কে দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ রুটের সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তীব্র যানজটে পড়েছেন অফিসফেরত মানুষরা। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিতুমীর কলেজের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আমতলী মোড়ে যান শিক্ষার্থীরা। সাড়ে ৬টার দিকে সেখানে অবরোধ শুরু করেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। এর আগে দুপুরে তিতুমীর কলেজ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি অযৌক্তিক। তাদের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনাও করা হচ্ছে না। সাত কলেজ নিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে। সেটা নিয়ে কাজ চলছে। আলটিমেটাম দিয়ে সরকারের কাছ থেকে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আদায় করা যাবে না।’ উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা ব্রিফিং করে ঘোষণা দেন এখন থেকেই সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি করা হবে। এরপরই তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আমতলী মোড়ে গিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবরোধ করেন। শিক্ষার্থীরা এটির নাম দিয়েছেন ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’।

তিতুমীর কলেজের অনশনরত তিন শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন কলেজটির কয়েক শিক্ষার্থী। পাঁচ দিন ধরে চলা এ কর্মসূচিতে কেউ জ্ঞান হারিয়েছেন, কেউ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে ১১ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ অবস্থায় কলেজের মূল ফটকের সামনে অনশন করছেন। যাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অনশনরত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ডাক্তার রাসেল আহম্মেদ এ তথ্য জানান। আশঙ্কাজনক শিক্ষার্থীরা হলেন রাশেদ, রায়হান ও রানা। রাসেল আহম্মেদ বলেন, ‘তীব্র শীত ও দীর্ঘ অনশনের ফলে তাদের শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অবস্থা বেগতিক হবে। দীর্ঘ সময় পানি পান না করার ফলে অনেকের প্রস্রাব হচ্ছে না। যার ফলে কিডনি ও লিভার বিকল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘অনশনকারীদের অবস্থা গুরুতর দেখে হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশ দিয়েছি। যদি হাসপাতালে ভর্তি করা না হয় তাহলে দীর্ঘদিনের জন্য শারীরিক সমস্যার মুখে পড়বে শিক্ষার্থীরা।’ তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত বলেন, ‘অনশনকারীদের অবস্থা গুরুতর হলেও এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস দেয়া হয়নি। আজকে রেলপথ ও সড়কপথ অবরোধ করার কর্মসূচি থাকলেও তা প্রত্যাহার করেছি যাতে বিশ্ব ইজতেমায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কষ্ট না হয়।’ ‘দ্রুত দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।’