মামুনুর রশীদ-ফেরদৌসী মজুমদারকে মঞ্চে উঠতে মানা শিল্পকলার ডিজির
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৪:৪০ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

শিল্পকলার মঞ্চে অভিনয় থেকে নাট্যজন মামুনুর রশীদকে সাময়িক দূরে থাকার অনুরোধ করেছেন একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) সৈয়দ জামিল আহমেদ। একই অনুরোধ নাট্যজন ফেরদৌসী মজুমদারকেও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন নাট্য নির্দেশক। নাট্যপাড়ায় চলমান অস্থির পরিবেশ বিবেচনাতেই ডিজি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ব্যাপারটি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মামুনুর রশীদ। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি এখন ভাল নয়। আমি চাই না নিউজটি এখনই করা হোক। তবে, এটা কি হতে পারে? কেউ কি আমাকে এমন অনুরোধ করতে পারেন?’
এরপর ইস্যুটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তিনি বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিস্তারিত কথা বলেন তিনি।
মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আমাকে বিপ্লববিরোধী আখ্যা দিয়ে শিল্পকলা একাডেমি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ এই স্লোগান দেওয়া উচিত হয়নি বলে বিবৃতি দিয়েছিলাম। এই বিবৃতি কোন বিপ্লববিরোধী বিবৃতি ছিল না। সেটা ছিল আমার পরামর্শ। কিন্তু, আমি নিজেও গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছি। যখন ছাত্রদের ওপর পুলিশ গুলি চালিয়েছে, তখন রাজপথে অবস্থান নিয়েছি। ছাত্র হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে মিছিল করেছি। তাহলে, আমার অপরাধ কোথায়? অথচ সেই বিবৃতির ইস্যুকে কেন্দ্র করে আমাকে শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে অভিনয় না করার সিদ্ধান্ত আরোপ করা হয়। আমি নাকি মঞ্চে অভিনয় করলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।’
সাম্প্রতিক নাটক মঞ্চায়নের বিষয়টি টেনে এই কিংবদন্তি বলেন, ‘‘অথচ কয়েক দিন আগে নাট্যদল আরণ্যকের ‘ময়ূর সিংহাসন’ নাটক নিয়ে আমি মঞ্চে উঠেছি। কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে নাটকের মঞ্চায়ন হয়েছে। বরং, দর্শকরা পুরো নাটকটি মনোযোগ দিয়ে দেখেছেন ও উপভোগ করেছেন।’’
এ নিয়ে সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, ‘একাডেমির পক্ষ থেকে মামুনুর রশীদকে শিল্পকলার মঞ্চে অভিনয়ের বিষয়ে কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। আমরা তাকে কিছু দিন শিল্পকলার মঞ্চে অভিনয় থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের অবস্থান কোন নাট্যদলের বিপক্ষে নয়। যেসব ব্যক্তি বিপ্লবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে। শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা বিভাগ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, বিপ্লবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া ব্যক্তিদের আপাতত শিল্পকলার মঞ্চে পারফর্ম করতে দেওয়া হবে না।’
এই বিবৃতিদাতাদের তালিকায় ছিল ফেরদৌসী মজুমদারের নামও। বক্তব্য জানতে তাকে ফোন দেওয়া হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
গেল ১৬ জুলাইয় দেওয়া সেই বিবৃতিদাতাদের মধ্যে ছিলেন অনুপম সেন, সৈয়দ হাসান ইমাম, ফেরদৌসী মজুমদার, সুজেয় শ্যাম, সারওয়ার আলী, আবেদ খান, কর্নেল (অব.) সাজ্জাদ আলী, মামুনুর রশীদ, মফিদুল হক, শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, নাসির উদ্দিন ইউসুফ, কামরুল হাসান খান, শফি আহমেদ, আবদুস সেলিম, মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী, ম. হামিদ, রাইসুল ইসলাম আসাদ, গোলাম কুদ্দুছ, শ্যামল দত্ত, মলয় ভৌমিক, লাকী ইনাম, সারা জাকের, শিমুল ইউসুফ, আহকাম উল্লাহ ও নাসির উদ্দিন ইউসুফ।