জুলাই বিপ্লবোত্তর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৩:৪৩ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জুলাই বিপ্লবোত্তর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন আন্দোলনে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবির) সিরাজুল ইসলাম লেকচার হলে ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লব পরবর্তী আন্ডারগ্রাজুয়েট পোস্ট গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা’ নিয়ে গবেষণা শীর্ষক বিশেষ সেমিনার এ তথ্য জানানো হয়।
বৈজ্ঞানিক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাবির প্রো-ভিসি (শিক্ষা) ড. মামুন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাবির সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এস এম আবুল কালাম আজাদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সেলিনা ফাতেমা বিনতে শহীদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা।
সেশন চেয়ার হিসেবে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাবির এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেহজাবীন হক।
গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ক্নিনিকাল সাইকোলজিস্ট সাদিয়া শারমিনসহ দুজন গবেষক। গবেষণা ফলাফলে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে তিনি জানান, জুলাই বিপ্লবোত্তর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে বাংলাদেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা।
জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ফলে বাংলাদেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা, যারা অন্তত ৫ দিন এই আন্দোলনে গিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে অনেকেই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসজুড়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহী বিভাগে গবেষণার কাজ পরিচালিত হয়।
গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল জুলাই-আগস্ট বিপ্লব পরবর্তী বিপ্লোবত্তর মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য পরিমাপ করা। মানসিক স্বাস্থ্যর অনেক দিক থাকলেও এঙ্কসাসি, ডিপ্রেশন অ্যান্ড পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারকে (পিটিএসডি) সামনে রেখে এই গবেষণার কাজ পরিচালনা করা হয়। যেখানে ৩৭৫ জন শিক্ষার্থীর যাদের বয়স ১৭-২৮ বছর তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে ২৬ জন ডাটা সংগ্রহকারীদের প্রায় ৩ মাস সময় লেগেছিল।
অনুষ্ঠানে মামুন আহমেদ জুলাই বিপ্লবের সময় মানুষের আত্মত্যাগ ও সার্বিক পরিস্থিতি কীভাবে মানসিক আঘাতের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের ঘটনা প্রচণ্ড মানসিক আঘাত ও বিষণ্ণতার কারণ হয়েছিল। আন্দোলনে আহত কিংবা প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিরা এখনও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এমনকি যারা বাসায় থেকে সব দেখেছেন, তারাও ওইসব ঘটনা দেখে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’
উমামা ফাতেমা বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে যথেষ্ট অবদান রাখা সত্ত্বেও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যথাযথ স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না, যা তাদের মানসিকভাবে আঘাত করছে। এ ছাড়া বিপ্লবে প্রথম সারিতে থাকা মেয়েদের অবদান যথেষ্ট প্রশংসিত হচ্ছে না, যা তাদের মনে হতাশার সৃষ্টি করছে।’
তিনি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কাউন্সেলিং পরিষেবা প্রকল্পের ওপর গুরুত্ব দেন এবং বাড্ডা, বাসিলা, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন রেড জোনে গবেষণা চালানোর আহ্বান জানান।