২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে এক হাজার ১৫২ জন নতুন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর মশাবাহিত এ রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৩ জনে। আর পুরো মাসে ডেঙ্গুতে প্রাণ গেলো ৮০ জনের। এছাড়া, এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার ৯৩৮ জন।সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ১৫২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায়ই ৪৭১ জন রয়েছেন। এছাড়া, ঢাকা বিভাগে ২১৯ জন, বরিশালে ৭০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩৩ জন, খুলনায় ৮৬ জন, ময়মনসিংহে ২৭ জন ও রাজশাহী বিভাগে ৪০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, শেষ ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে নবজাতক থেকে ৫ বছরের শিশু আছে ৫৯ জন। সবচেয়ে বেশি রোগী ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সীরা।
ছাত্র আন্দোলনে আহত ১৬০ জন রোগীকে দেখলো চীনা মেডিকেল টিম
জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের উন্নত চিকিৎসা দিতে ঢাকায় রয়েছে চীনের একটি জরুরি মেডিকেল টিম। চীন থেকে আসা মেডিকেল টিম ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত ১৬০ জন রোগীকে দেখেছেন এবং ১০৫ জন রোগীর মেডিকেল রেকর্ড পরীক্ষা করেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।বৃহস্পতিবার (২৬শে সেপ্টেম্বর) সচিবালয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের (পরিকল্পনা অনুবিভাগ) অতিরিক্ত সচিব ড. শাহ মো. হেলাল উদ্দিন এসব কথা জানান।ড. শাহ মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে চীনা মেডিকেল টিম অতি দ্রুত সময়ে ঢাকায় আসে। এই টিম ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসে এবং তারা ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে কাজ শুরু করে। গতকাল পর্যন্ত তারা পাঁচটা হাসপাতাল ভিজিট করেছে। এই সময়ের মধ্যে ১৬০ জন রোগীকে ভিজিট করেছেন। ১০৫ জন রোগীর মেডিকেল রেকর্ডস পরীক্ষা করেছেন। এই টিম মূলত মেডিকেল অ্যাসেসমেন্ট টিম।তিনি বলেন, ১০৫ জন রোগীর মধ্যে কয়েকজন রোগী বেশি আহত। এই রোগীদের বিষয়ে তারা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তারা তাদের সিনিয়রদের সঙ্গে পরামর্শ করে দ্রুত একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যাসেসমেন্ট আমাদের পাঠাবেন। তাদের মধ্যে ২-৩ জন আইসিইউতে আছেন। কিছু আছেন নার্ভ ইনজুরি পেসেন্ট।স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বলেন, আমরা চেষ্টা করছি চাইনিজ এক্সপার্টদের দেশে এনে অথবা যদি প্রয়োজন হয় এই সমস্ত রোগীকে আমরা দেশের বাইরে পাঠানোর চিন্তা ভাবনা করছি। এই বিষয়ে আমাদের সিনিয়র সচিব এবং উপদেষ্টা মহোদয় খুবই আন্তরিক। আমাদের পক্ষ থেকে এই সকল রোগীদের চিকিৎসায় কোনও ঘাটতি নেই।
২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে ছয়জনের মৃত্যু
ঢাকা: গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে এবং একই সময়ে সারা দেশে ৯২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৫১ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৯৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৭২ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৪৪ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৮ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬ জন এবং রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৩ রয়েছেন।২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৮০৪ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে, চলতি বছরে মোট ২১ হাজার ৮১ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ২৪ হাজার ৩৪ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী রয়েছেন।গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরের এ যাবত ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ১৩১ জন।২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬৭
রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে এই সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৬৭ জন। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩১, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১১৫, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৯১, খুলনা বিভাগে ১০ জন রয়েছেন। এছাড়াও রাজশাহী বিভাগে ১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদিকে গত এক দিনে সারা দেশে ২৫২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৭ হাজার ২৩৯ জন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ১৯ হাজার ৩৪২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১০৮ জনের। এছাড়াও গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।
স্বাস্থ্য সংস্কার কমিটি থেকে পদত্যাগ করলেন অধ্যাপক এম এ ফয়েজ
বিএনপি-সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ও বৈষম্যের শিকার চিকিৎসক সমাজের দাবির মুখে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারবিষয়ক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন অধ্যাপক এম এ ফয়েজ। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অধ্যাপক ফয়েজ নিজেই। এর আগে শুক্রবার বিকেলে তিনি স্বাস্থ্য সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠান।পদত্যাগের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছি। আমার পক্ষে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। দায়িত্ব নেওয়া পর একটি মিটিং করতে পেরেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। চিকিৎসাসেবার গুণগত মান উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কাঠামো শক্তিশালী করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত ৩ আগস্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি প্যানেল গঠন করে। ১১ সদস্যের এ প্যানেলের সভাপতি করা হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ফয়েজকে।কমিটি গঠনের পর থেকেই নানা সমালোচনা শুরু হয়। কমিটিতে শুধু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রাখা হয়েছে; কোনো জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, পুষ্টি বিশেষজ্ঞ, জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ রাখা হয়নি।বিএনপি-সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) সংবাদ সম্মেলন করে এ কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা দেয়। একইসঙ্গে বৈষম্যের শিকার চিকিৎসক সমাজ নামক আরেকটি ব্যানারে ১০০১ চিকিৎসকের দেওয়া এক বিবৃতিতেও কমিটি প্রত্যাখ্যান করা হয়।বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে দেশে এক ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে নবজাগরণ হয়েছে। ছাত্র-জনতা আত্মাহুতি দিয়েছে, হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে। ঠিক সেই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্য কাঠামো সংস্কারের জন্য যে বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করা হয়েছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমরা চিকিৎসক সমাজ এই প্যানেল এর ব্যক্তিবর্গকে দেখে বিস্মিত ও হতবাক।
বিগত সরকারের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবিতে চিকিৎসক-নার্সদের বিক্ষোভ
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নবনিযুক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিনসহ বিগত সরকারের একাধিক উচ্চপদস্থ স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ-কর্মসূচি পালন করছে চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা।বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয় তারা। অভিযোগ, বর্তমান মহা-পরিচালকসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা সেবা দিতে বাধা দিয়েছিলেন।একইসাথে মৃত্যুর সংখ্যা গোপনে সহায়তা করেছেন। এছাড়া বিগত সরকারের সময় তারা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিলেন- রয়েছে সেই অভিযোগও। তাই এসব কর্মকর্তার অপসারণ ও বিচার দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। এসব অপরাধীদের বিচার না করে উল্টো পদায়ন করায় বিস্ময় প্রকাশ করেন আন্দোলনরতরা।
আহতদের চিকিৎসা না দেওয়া সব চিকিৎসকের সনদ বাতিল-অপসারণের দাবি ড্যাবের
কোটা সংস্কার ও পরবর্তীতে শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নিয়ে আহত হওয়া ছাত্র-জনতাকে চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি জানানো চিকিৎসকদের তালিকা প্রণয়ন করে বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন (সনদ) বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। একইসঙ্গে বিএসএমএমইউ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সব সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিবাদের দোসর চিকিৎসকদের অপসারণের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্থবিরতা ও ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতাকারী পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসন এবং চিকিৎসক, কর্মকর্তাদের প্রতি বৈষম্য ও হয়রানির প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ। এসময় তিনি বলেন, চিকিৎসকরা এদেশের সচেতন নাগরিক। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসকদের আত্মত্যাগ, নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের আত্মত্যাগ যেমন আন্দোলনকে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ দিয়েছিল। তেমনি এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চিকিৎসক সমাজ ও মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। যার ফলশ্রুতিতে ডা. সজীবসহ একাধিক চিকিৎসক শহীদ হন।হারুন আল রশীদ বলেন, আন্দোলন চলাকালীন আমরা দেখেছি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. আহমেদুল কবির, লাইন ডিরেক্টর (এনসিডিসি) ডা. রোবেদ আমীন, পরিচালক (প্রশাসন) ডা. হারুনুর রশিদ, লাইন ডিরেক্টর ডা. নাজমুল ইসলাম মুন্না, লাইন ডিরেক্টর ডা. সোহেল মাহমুদ, উপ-পরিচালক ডা. মোবারক হোসেন দিগন্ত, নিপসমের পরিচালক ডা. সামিউল ইসলাম সাদিসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অন্যান্য পরিচালক, লাইন ডিরেক্টর, উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, ইনস্টিটিউটের পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা সরকারি হাসপাতালে আহত ছাত্রদের চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।এমনকি বিভিন্ন হাসপাতালে ছাত্রলীগের পেটুয়া বাহিনী ও পুলিশ বাহিনী আহতদের চিকিৎসা কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করেছে। এমনকি নিহত ছাত্র-জনতার লাশের সংখ্যা গোপন করেছে এবং ছাত্রজনতার লাশগুলোকে সরকারকে দিয়ে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করতে সাহায্য করেছে। কিন্তু ড্যাবের চিকিৎসকরা সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে আহত ছাত্র-জনতার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে। ফলশ্রুতিতে তারা বদলি, শারীরিক নির্যাতন এবং হয়রানির শিকার হয়।তিনি আরও বলেন, ৮ আগস্ট নতুন সরকার গঠনের পর বাংলাদেশের সব নাগরিকের মত চিকিৎসক সমাজ আমরা আশা করেছিলাম বৈষম্যবিরোধী যে আশা নিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে তার আলোকে বৈষম্যহীন নতুন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। কিন্তু স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সংস্কারের শুরুতেই আমরা দেখলাম ফ্যাসিবাদী ও মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে দোষী বিগত সরকারের সুবিধাভোগী লোকদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নিপসমের পরিচালক, আইপিএইচ এর পরিচালক পদে পদায়ন করা হয়। আমরা স্বাভাবিকভাবে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ।এসময় ড্যাবের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালাম বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে ড্যাবের চিকিৎসকসহ ভিন্নমত পোষণকারী সব চিকিৎসক কর্মকর্তারাই জুলুম, নির্যাতন, পদোন্নতি বঞ্চনা, বদলি হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় অবর্ণনীয় বৈষম্যের শিকার হয়েছে। অনেকের চাকরিচ্যুতি হয়েছে, নির্যাতনের কারণে অনেকেই চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। তারপরেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ড্যাব সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই ড্যাব এই আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন প্রদান করে এবং ড্যাবের চিকিৎসকরা বিভিন্ন পর্যায়ে ছাত্রদের সাথে যোগাযোগ করে সহযোগিতা করেছে।ড্যাব মহাসচিব আরও বলেন, আমরা চিকিৎসকরা আশা করেছিলাম, গণ-অভ্যুত্থানে পর অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের সহিত আলাপ-আলোচনা করে আওয়ামী সরকারের ভঙ্গুর স্বাস্থ্যখাতকে পুনর্গঠন এবং দুর্নীতিবাজ চিকিৎসকদের অপসারণ এবং দুর্নীতি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। একইসঙ্গে সৎ, যোগ্য, পরিশ্রমী ও বঞ্চিত চিকিৎসকদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল, হাসপাতালের পরিচালক এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ পূরণ করে একটি আস্থাশীল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলবেন। কিন্তু আমরা গণ-অভ্যুত্থানের এক মাস হয়ে গেলেও তার কোনো প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি না। বরং শান্তি মিছিলে অংশগ্রহণকারী, দুর্নীতিবাজ ও ছাত্র-জনতার চিকিৎসায় বাধা প্রদানকারী স্বৈরাচারের দোসর চিকিৎসকদের পদায়ন করার মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে।সংবাদ সম্মেলনে ড্যাবের পক্ষ থেকে বেশকিছু দাবি উপস্থাপন করা হয়-১. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদের অযোগ্য দুর্নীতিবাজ ফ্যাসিবাদের দোসর ডা. রোবেদ আমীনসহ অন্যান্য সুবিধাপ্রাপ্ত ও ফ্যাসিবাদের দোসর যাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ও অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে তাদের নিয়োগ আদেশ বাতিল করতে হবে।২. আহত ছাত্র জনতাকে যারা চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করেছে (বিএসএমএমইউ থেকে শুরু করে সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান) তাদের তালিকা প্রণয়ন করে বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে হবে। শাস্তি সমাবেশে যোগদানকারী ও ফ্যাসিবাদের দোসর সব চিকিৎসক ও কর্মকর্তা/কর্মচারীকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করে শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।৩. অতি দ্রুত বৈষম্যের শিকার সব চিকিৎসক ও কর্মচারীকে ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি দিয়ে বৈষম্য দূর করতে হবে। বর্তমানে পদোন্নতিযোগ্য প্রত্যেককেই দ্রুততার সাথে পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই বঞ্চিত, দক্ষ, যোগ্য কর্মকর্তাদের পদায়ন করে স্বাস্থ্য প্রশাসন ঢেলে সাজানো সম্ভব হবে।৪. মেডিকেল কলেজসহ প্রতিটি হাসপাতাল দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান দুর্নীতিমুক্ত করতে যোগ্য ও বৈষম্যের শিকার শিক্ষক ও চিকিৎসকদের যথোপযুক্ত পদে পদায়িত করতে হবে। বিগত দীর্ঘ ১৬ বছর সময়ে স্বাস্থ্য খাতে যত দুর্নীতি হয়েছে তার শ্বেতপত্র প্রকাশ ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।৫. মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইনস্টিটিউট সমূহ, নার্সিং কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অতিদ্রুত স্বৈরাচারের দোসরদের সরিয়ে বৈষম্যের শিকার চিকিৎসকদের পদায়ন করতে হবে।৬. প্রতিবাদকারী যেসব চিকিৎসকদের হয়রানিমূলক বদলি করা হয়েছে সেই বদলি আদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। ভবিষ্যতে বৈষম্যের শিকার চিকিৎসকদের কোনোভাবেই হয়রানিমূলক বদলি না করার দাবি জানাচ্ছি।৭. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ও চিকিৎসাসেবার গুণগতমান উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কাঠামো শক্তিশালীকরণের জন্য গঠিত বিশেষজ্ঞ প্যানেল কমিটি অতি দ্রুত বাতিল করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশকারী চিকিৎসক সমাজের প্রতিনিধিত্ব রেখে কমিটি পুনঃগঠনের জোর দাবি জানাচ্ছি।
সারাদেশে চিকিৎসকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা
চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, দোষীদের গ্রেপ্তার ও সেনাবাহিনী মোতায়েন না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (ঢামেক) নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আব্দুল আহাদ। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রশাসনিক ব্লকে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আব্দুল আহাদ সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা জানেন গতকাল শনিবার থেকে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আমাদের তিনজন চিকিৎসককে নিউরোসার্জারি বিভাগ থেকে মারতে মারতে প্রশাসনিক ব্লকের পরিচালকের রুমে নিয়ে আসা হয়। সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই বহিরাগতরা এসে হাসপাতালে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে (ওসেক) এসে ভাঙচুর চালায়। এরকম ঘটনা যদি প্রতিনিয়ত ঘটতে থাকে তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায় আমরা রোগীদের কীভাবে চিকিৎসা সেবা দেবো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়েছি। যেখানে আমাদের নিরাপত্তা নেই সেখানে আমরা কীভাবে চিকিৎসা দেবো।তিনি আরো বলেন, অনতিবিলম্বে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সব উপজেলা, জেলা সদরসহ সব হাসপাতালে আর্মি নিয়োগ করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগ করতে হবে। সার্জন আব্দুল আহাদ বলেন, আমাদের কর্মবিরতি চলবে। শুধু ঢাকা মেডিকেলেই কর্মবিরতি নয় সারা বাংলাদেশে এই কর্মবিরতি চলবে। দুপুর দুইটায় হাসপাতালের বাগান গেটে জমায়েত হব। সেখানে সাংবাদিকদের সব প্রশ্নের জবাব দেওয়া হবে। আপাতত আমাদের কর্মবিরতি চলবে অর্থাৎ কমপ্লিট শাটডাউন।আব্দুল আহাদ আরো বলেন, পরিচালক আমাদের নিশ্চিত করেছিলেন আমাদের ওপরে কোনো হামলা হবে না। কিন্তু তিনি তার সেই কথা রাখতে পারেননি। এখানে আমরা কোনো সেনাবাহিনীকে অস্ত্রসহ দেখতে পাইনি।এর আগে পরিচালক চিকিৎসকদের উদ্দেশে সভাকক্ষে বলেন, আন্দোলনে যেন রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেন। কিন্তু চিকিৎসকরা সেটি কর্ণপাত না করে চিকিৎসকরা জানান, আমরা কোনো চিকিৎসা দেবো না, এই বলে তারা বেরিয়ে আসেন।
ঢামেকে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, বন্ধ জরুরি বিভাগ
মারধর ও জরুরি বিভাগে ভাঙচুরের ঘটনায় সেবা বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে কর্মবিরতিতে যান তারা।ঢামেক হাসপাতাল সরেজমিনে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের চেম্বার বন্ধ। আইসিইউ চালু থাকলেও নেই চিকিৎসক। সিরিয়াস রোগী থাকায় নার্সরা আছেন সেখানে। পুরা হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে।গতকাল শনিবার নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসককে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সিসি টিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন চিকিৎসকরা। অন্যথায় ২৪ ঘণ্টা পর তারা কর্মবিরতিতে যাবেন বলে ঘোষণা দেন।ওইদিন মধ্যরাতে খিলগাঁও সিপাহীবাগ এলাকা থেকে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহতরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে আসেন। পরে অন্য আরেক গ্রুপ চাপাটিসহ হাসপাতালে জরুরি বিভাগের ভেতরে ঢুকে যায়। এ সময় হাতেনাতে চারজনকে আটক করে সেনাবাহিনীকে দেয় কর্তৃপক্ষ।পরে অন্য আরেক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের অনস্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে ভাঙচুর চালায় রোগীর স্বজনরা।নিরাপত্তা শঙ্কায় জরুরি বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আল্টিমেটামের ২৪ ঘণ্টা শেষ হওয়ার আগেই কর্মবিরতিতে যান তারা।এর আগে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার জন্য হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবেন বলে জানিয়েছিলেন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান। এরপরই মধ্যরাতে দুটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেল।
আন্দোলনে ঢাকা মেডিকেলে ১৭২ জনের প্রাণহানি: পরিচালক
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৮৪ জন হাসপাতালে মারা গেছেন এবং ৮৮ জনকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।পরিচালক বলেন, মারা যাওয়াদের মধ্যে বেশিরভাগেরই গুলির আঘাতে মৃত্যু হয়েছে। বিশেষ করে মাথায় ও বুকে গুলির কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়াদের মধ্যে ৮৫ শতাংশের ময়নাতদন্ত করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান তিনি।তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের সব তথ্য রয়েছে। তাদেরকে ডেথ সার্টিফিকেটও দেয়া হয়েছে। তবে মৃত অবস্থায় আসা ব্যক্তিদের সঠিক তথ্য না থাকায় ডেথ সার্টিফিকেট দেয়া সম্ভব হয়নি বলেও জানান তিনি।
স্বাস্থ্যখাতে সংস্কার: ৯০ দিনের কাউন্টডাউন শুরু
৯০ দিনের মধ্যে দেশের ভঙ্গুর স্বাস্থ্যখাতকে জনমুখী করার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ৯০ দিনের কাউন্টডাউন শুরু হচ্ছে আজ শনিবার থেকেই। বিকেলে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে আহতদের পরিদর্শন শেষে তারা এ দাবি জানান। এসময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, আন্দোলনে হতাহতদের যেসব হাসপাতাল চিকিৎসা দেওয়ার নামে নৈরাজ্য করেছে, লুটপাট করেছে তাদের সেসব ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আহতদের চিকিৎসায় স্পেশালাইজড ডেডিকেটেড কেয়ার ইউনিট খোলার দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা। সরকারি হাসপাতালে গাদাগাদি না করে রাষ্ট্রীয় খরচে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসার দাবি জানান তারা। প্রয়োজনে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা ফি মওকুফে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান তাদের। গত সরকারের আমলে বিভিন্ন চাপে স্বাস্থখাতে পরিবর্তন আনা যায়নি উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আহমেদুল কবির বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ খাতকে জনমূখী করা হবে, সেই সাথে নিশ্চিত করা হবে ন্যাশনাল ইনসুরেন্স সেবায়াও।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস বলেন, ‘স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীরা রাজধানীসহ সারা দেশের সরকারি হাসপাতালে সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। হাসপাতালগুলোতে শয্যার বিপরীতে দ্বিগুণ রোগী রয়েছেন। সরকারি হাসপাতালে শয্যা সংকট থাকলে আহতদের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দিতে হবে। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালগুলো আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে চিকিৎসার নামে লাখ লাখ টাকা আদায় করেছে। এসব টাকা ফেরত দিতে হবে।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘স্বাস্থ্যের এডিজি এবং ঢাকা মেডিকেলের পরিচালকের সঙ্গে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। উনারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যদি লাল ফিতার দৌরাত্ব না থাকে, টেন্ডারবাজি না থাকে, রাজৈনতিক আধিপত্য না থাকে তাহলে ৯০ দিনের মধ্যে স্বাস্থ্যখাতকে জনমুখী করা সম্ভব। আমরা তাদের আশ্বস্ত করতে চাই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আপনাদের সব ধরনের সহায়তা আমরা আপনাদেরকে দেব। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, স্বৈরতান্ত্রিক মাফিয়া ব্যবস্থা ছিল স্বাস্থ্যখাতে, তা কখনোই থাকবে না এবং ছাত্র-জনতা সেই কফিনে পেরেক মেরে দিয়েছে।’ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আহমেদুল কবির বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী থেকে প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে এই দেশে চিকিৎসা করতে হবে এবং সেই ব্যবস্থায় এ দেশের জনগণ চায়। অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন, অনেকেই বিভিন্ন হাসপাতালে আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে।’
পপুলার হাসপাতালে ‘ভুতুড়ে’ বিলের অভিযোগ, তদন্ত শুরু
রাজধানীর পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা আন্দোলনকারী ১৩ রোগীর ‘ভুতুড়ে’ বিলের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আজ বুধবার (১৪ আগস্ট) ওই হাসপাতালে পরিদর্শনে যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের তদন্ত কমিটি। আগামী সাত দিনের মধ্যে নিরপেক্ষ তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এরইমধ্যে ১৩ রোগীর ‘ভুতুড়ে’ বিল মওকুফ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর আগে, গত সোমবার (১২ আগস্ট) রাতে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত সকলের সকল চিকিৎসা খরচ (ঔষধ ব্যতীত) মওকুফ করে পপুলার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, জুলাইয়ে জোয়ার ওঠা কোটা সংস্কার আন্দোলন একপর্যায়ে পরিণত হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে। এতে প্রাণহানি ঘটে শত শিক্ষার্থী-জনতার। আহত হয় সহস্রাধিক। পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিতে বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত অবস্থায় ভর্তি আছেন অনেকেই।
স্বাস্থ্যখাতে সংস্কার শুরু, বাতিল হচ্ছে অবৈধ পদায়ন
স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতোমধ্যে অবৈধ অসংখ্য পদায়ন বাতিল করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ভারপ্রাপ্ত কিংবা চলতি দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের বদলি করে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি দিয়ে দায়িত্ব প্রদান করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. হারুন-অর-রশীদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ডেপুটি সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার, জুনিয়র লেকচারার, আবাসিক সার্জন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (৬ষ্ঠ গ্রেড), আবাসিক চিকিৎসক, সিনিয়র স্টোর অফিসার, কিউরেটর, সিনিয়র ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট, প্রিন্সিপাল মেডিকেল ফিজিসিস্ট, সিনিয়র লেকচারার ফিজিওথেরাপি, সুপারিন্টেন্ডেন্ট (৬ষ্ঠ গ্রেড) ও সহকারি পরিচালক (৬ষ্ঠ গ্রেড) তথা স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র স্কেল ক্যাডার পদে ক্যাডার কর্মকর্তাদের বিধিমোতাবেক পদোন্নতির মাধ্যমে পদায়ন নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আরও বলা হয়, এসব পদে ভারপ্রাপ্ত বা চলতি দায়িত্ব হিসেবে পদায়িত এডহক ও প্রকল্পভুক্ত এবং প্রকল্পভুক্ত চিকিৎসক কর্মকর্তাবৃন্দকে বদলি করে জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে ৬ষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতি পাওয়া ক্যাডার কর্মকর্তা পদায়নের মাধ্যমে এসব পদ পূরণ করা হবে। এছাড়া, এডহক, এনক্যাডার, নন ক্যাডার ও প্রকল্পে নিয়োগকৃত চিকিৎসক কর্মকর্তাদেরকে উপরে উল্লিখিত পদসমূহে বিভিন্ন সময়ে জারি করা পদায়ন আদেশ বাতিল করে পরবর্তী পদায়নের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে নাস্ত করা হলো।
বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে দারিদ্র্য নিরসনে বাংলাদেশ অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে: প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব
ঢাকা: বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে দারিদ্র্য নিরসনে বাংলাদেশ অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। রোববার (১৪ জুলাই) পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত ‘ন্যাশনাল ওয়ার্কশপ অন পিপিইপিপি ইউ প্রজেক্ট’ শীর্ষক একটি জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ইউউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে পিকেএসএফ বাস্তবায়নাধীন ‘পাথওয়েজ টু প্রসপারিটি ফর এক্সট্রিমলি পুওর পিপল-ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (পিপিইপিপি-ইইউ)’ প্রকল্পের আওতায় কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়। মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, গত দেড় দশকে বাংলাদেশে দারিদ্র্য ও অতিদারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে এবং এর পেছনে সরকারের বিভিন্ন গণমুখী, সময়োপযোগী পদক্ষেপের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর সহায়তা কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো অতিদারিদ্র্য নিরসন এবং এ লক্ষ্যপূরণে দীর্ঘমেয়াদী, টেকসই কার্যক্রম গ্রহণের বিকল্প নেই। কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খান, এফসিএমএ। চার্লস হোয়াইটলি তার বক্তব্যে বলেন, গত বছর ইইউ এবং বাংলাদেশ পারস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর উদ্যাপন করে। পিপিইপিপি-ইইউ প্রকল্পটি এ সম্পর্কেরই একটি প্রতিফলনই । গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক, অবকাঠামোগত ও মানবিক বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন হলেও হাওর ও উপকূলীয় এলাকার মতো দেশের অনগ্রসর অঞ্চলগুলোতে অতিদারিদ্র্যের এখনো বেশি; বিধায়, এসব স্থানে বিশেষ মনোযোগ অব্যাহত রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নমিতা হালদার এনডিসি। পিপিইপিপি-ইইউ প্রকল্পকে একটি অভিনব প্রকল্প হিসেবে আখ্যায়িত করে ড. নমিতা হালদার এনডিসি বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবন্ধিতা ও লবণাক্ততার প্রকোপ মোকাবিলার মতো কঠিন বিষয়গুলো সমাধানে কাজ করা হয়, যা একই সঙ্গে সময়সাপেক্ষ ও চ্যালেঞ্জিং। পিকেএসএফ-এর চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, দারিদ্র্য দূরীকরণে পিকেএসএফ-এর যত অভিজ্ঞতা ছিল, সব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পিপিইপিপি-ইইউ প্রকল্পের পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন করা হয়। এ প্রকল্পের অগ্রগতি আশা জাগানিয়া; তবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে প্রকল্পের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সদস্যরা প্রকল্প থেকে পাওয়া সহায়তার সুফল নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। এছাড়াও ২০২২ সাল থেকে বাস্তবায়নাধীন পিপিইপিপি-ইইউ প্রকল্পের বিভিন্ন কম্পোনেন্টের ওপর একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় এবং প্রকল্প বিষয়ক একটি সংক্ষিপ্ত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়ে মিয়ানমারে সেমিনার
ঢাকা: কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত ‘শেখ হাসিনা উদ্যোগ’-কে রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের একটি অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি শুক্রবার ( ১২ জুলাই) মিয়ানমারের বাণিজ্যিক শহর ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব পাবলিক হেলথে কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন। ইয়াঙ্গুনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং ইউনিভার্সিটি অব পাবলিক হেলথ যৌথভাবে সেমিনারটি আয়োজন করে। রাষ্ট্রদূত ড. হোসেন তার বক্তৃতায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি বহুমুখী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্যোগের মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্য উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। সুস্বাস্থ্যের সামাজিক মানদণ্ডের উন্নতির সাথে এই উদ্যোগগুলোর সম্মিলিত প্রভাবে বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে, যা প্রতিবেশী অনেক দেশ এবং অনেক উন্নয়নশীল দেশকে ছাড়িয়ে গেছে। রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও রোগনির্ণয়, নিয়মিত টিকাদান, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা এবং প্রয়োজনে উন্নত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলের প্রান্তিক জনগণের ব্যাপক উপকার করছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতিসংঘ ঘোষিত ২০৩০ সালের মধ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা প্রবর্তনের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, এই উদ্যোগটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুপ্রেরণায় বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরে কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণাটি চালু করেছিলেন। রাষ্ট্রদূত গভীর শ্রদ্ধায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন, যিনি সর্বপ্রথম স্বাস্থ্যসেবাকে গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার ধারণা দিয়েছিলেন। সেমিনারে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সেমিনারে অন্যান্য আলোচকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যায় স্বাস্থ্যকর্মীদের ভূমিকা, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অর্থায়নের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করার গুরুত্ব এবং মিয়ানমারে দক্ষ জনস্বাস্থ্যকর্মী তৈরিতে ইউনিভার্সিটি অব পাবলিক হেলথ-এর অবদান নিয়ে আলোচনা করেন। সেমিনারে রেক্টর, অধ্যাপক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, স্বাস্থ্য পেশাজীবী, জনস্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
ভারী বৃষ্টিতে ঢামেকের ওয়ার্ডে পানি
ঢাকা: সকাল থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চত্বরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানির জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই পায়নি হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পও। এছাড়া কয়েকটি ওয়ার্ডেও পানি ঢুকে পড়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। শুক্রবার (১২ জুলাই) সকাল থেকেই প্রবল বর্ষণের কারণে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চত্বরে প্রায় হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে যায়। এতে হাসপাতালের আসা-যাওয়া লোকজনের ভোগান্তিতে পড়তে দেখা যায়। এছাড়া জরুরি বিভাগে প্রবেশের সময় ডান দিকে হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্পে সড়ক থেকে উপচে পড়ে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে। এতে ক্যাম্পের ফ্লোর পুরোটাই তলিয়ে যায়। পুলিশ ক্যাম্পের একই ভবনের প্রবেশের পাশাপাশি অবস্থিত দুটি গোয়েন্দা বিভাগের রুমেও পানি প্রবেশ করে। হাসপাতালে জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজ জানান, সকাল থেকে তুমুল বৃষ্টির কারণে হাসপাতালে চত্বরে প্রায় হাঁটু পানি জমে যায়। এখন পর্যন্ত পানি সরছে না। এছাড়া পুরাতন ভবনের নিচতলায় ভ্যাকসিন সেন্টার বেজমেন্টে পানি প্রবেশ করে। সেখানে এক পর্যায়ে বালুর বস্তা ফেলে পানি আটকানো হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বরত (এএসআই) মাসুদ জানান, ভোর থেকে প্রবল বর্ষণের কারণে হাসপাতাল জরুরি বিভাগের চত্বরে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত পানি জমে যায়। প্রবল বৃষ্টির কারণে সড়কে থেকে সেই পানি এক পর্যায়ে পুলিশ ক্যাম্পে প্রবেশ করে পুরো ফ্লোর ডুবে গেছে। এখন পর্যন্ত পানি জমে আছে। এদিকে অপর এক ব্যক্তি জানান, এই প্রবল বৃষ্টির কারণে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চারিদিকের চত্বরে প্রায় জায়গায় পানি জমে আছে ।
ভেজাল ওষুধের ঝুঁকি দেশের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, নিম্নমানের এবং ভেজাল ওষুধের অব্যাহত ঝুঁকি দেশের জন্য বিরাট একটি চ্যালেঞ্জ। ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাউথ ইস্ট এশিয়া রেগুলেটরি নেটওয়ার্কের বার্ষিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বুধবার (৩ জুলাই) সকালে ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সাউথ ইস্ট এশিয়া রেগুলেটরি নেটওয়ার্কের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বার্ষিক সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া রেগুলেটরি নেটওয়ার্ক ( এসইএআরএন)দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর জাতীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিসেবে কাজ করে। ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, সাউথ ইস্ট এশিয়া রেগুলেটরি নেটওয়ার্কের সমাবেশে বক্তব্য দেওয়াটা আমার জন্য সম্মানের বিষয়। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর এ সমাবেশ আমাদের জন্য একত্র হয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং আমাদের অঞ্চলে ওষুধের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণকে শক্তিশালী করার জন্য একটি মূল্যবান সুযোগ তৈরি করেছে। আমরা সবাই জানি যে ওষুধের নিরাপত্তা কার্যকারিতা এবং গুণমান নিশ্চিত করা আমাদের জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নমানের এবং ভেজাল ওষুধের অব্যাহত ঝুঁকি আমাদের জন্য বিরাট একটি চ্যালেঞ্জ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সাউথ ইস্ট এশিয়া রেগুলেটরি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করে আমরা এ চ্যালেঞ্জগুলোকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের যৌথ দক্ষতা, সম্পদ এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারি। তথ্য আদান-প্রদান, সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ এবং পারস্পরিক সহায়তার মাধ্যমে আমরা স্বাস্থ্যসেবার এ উদীয়মান হুমকিগুলো মোকাবিলা করার মতো সক্ষমতা অর্জন করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. আহমেদুল কবীর। সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং তিমুর-লেস্তের প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষক সভায় অংশগ্রহণ করেন।
ঢামেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে যেন বিবাদ না হয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) সাংবাদিকদের সঙ্গে যেন বৈষম্য বা বিবাদ না হয় সে বিষয়ে পরিচালকে ডেকে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।রোববার (৯ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত বিএসআরএফ সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।প্রসঙ্গত, অনুমতি ছাড়া ঢামেক হাসপাতালেরকর্মকর্তা-কর্মচারীরা গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার বা বক্তব্য দিতে পারবেন না, এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এইনোটিশ জারি করেন।পরিচালকের এ নোটিশের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি আজসকালে পরিচালককে ফোন করেছিযে, কেন এ ধরনেরঘটনা হচ্ছে। আমার কাছে কিছু রং ইনফরমেশন আজ আসছে। পরিচালক আমাকে বললেন, স্যার আপনার সঙ্গে আমি দেখা করব। তিনি কিছুক্ষণ আগে আমার কাছে এসেছিলেন। আমি তাকে যেটা বলেছি যে, দেখেন, সাংবাদিকদের তাদের মতো কাজ করতে বলেন। এখানে যেন কোনো ধরনের বৈষম্য বা কোনো ধরনের বিবাদ না হয়। এটা আমি উনাকে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি। মন্ত্রী বলেন, তবে একটা কথা সত্যি আমি নিজেও ফেস করি। অনেক সময় দেখা যায় আমরা যখন রোগী দেখি...আমার ক্ষেত্রে আমি অনেক সাংবাদিকদের সঙ্গে... এত বড় বড় মেসিভ ঘটনা বাংলাদেশ ঘটেছে, নিমতলী থেকে শুরু করে যেগুলো আমি ট্যাকেল করেছি।সামন্ত লাল সেন বলেন, ওইটা একটু নিজেকে ইয়ে করে ট্যাকেল করতে হয়। সেটা আমিও উনাকে (ঢামেক পরিচালক) বলেছি, এখানে যেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ না করা হয়। এটা আমি সকালে উনাকে ডেকে বলে দিয়েছি।বিএসআরএফের সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাবের সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় এতে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা।
২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ তামাকমুক্ত হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ঢাকা: ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ তামাকমুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। শুক্রবার (৩১ মে) সকালে রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব কনভেনশন হলে ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা জানান। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। সামন্ত লাল সেন বলেন, সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। শুধুমাত্র তামাক আইন নয়, সব ক্ষেত্রেই সচেতনতা প্রয়োজন। সবাই প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিজ্ঞা করব যে, ২০৪০ সালের মাঝে দেশকে তামাকমুক্ত করব। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণে আজকের এ দিনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮৭ সাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং তামাক বিরোধী সংগঠনগুলো দিবসটি পালন করে আসছে। তিনি জানান, তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ প্রতিহত করি, শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করি- এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও তামাকবিরোধী র্যালি, মেলা, আলোচনা সভা, সম্মাননা প্রদান, ক্রোড়পত্র প্রকাশসহ নানা আয়োজন করা হয়েছে। ধূমপানের প্রত্যক্ষ ক্ষতি উল্লেখ করে সামন্ত লাল সেন বলেন, পরোক্ষ ধূমপানও অধূমপায়ীদের জন্য ক্ষতিকর। ধূমপান ও তামাক সেবনের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী রোগসহ নানা অসংক্রামক রোগ দেখা দেয়। তামাকের কারণে পৃথিবীতে প্রতি বছর ৮৭ লাখ মানুষ অকালে মারা যায়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান স্পিকার সামিটে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার যে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন, তা বাস্তবায়নে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি প্রনয়ন, জাতীয় তামাক কর নীতি প্রনয়ন ও বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও বাস্তবায়ন করার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে প্রশিক্ষণ, কর্মশালা এবং গণমাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা পরিচালনা করা হচ্ছে। বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতা দূর করে অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান। তামাকের আগ্রাসন থেকে শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা দিয়ে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরিবার-ভিত্তিক সচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলনের ওপর জোর দেন। আলোচনা সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন তামাক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে তামাক নিয়ন্ত্রণে জাতীয় সম্মাননা স্মারক ২০২৪ তুলে দেন। আলোচনা সভা শেষে মন্ত্রী তামাকবিরোধী মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন এবং তার সুচিন্তিত মতামত দেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জিয়াউদ্দীন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত ডিজি আহমেদুল কবীর, জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মনোজ কুমার রায় প্রমুখ।
মানুষের সেবা করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, কথা কম বলে মানুষের সেবায় কাজ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। শনিবার (৩০ মার্চ) সকালে রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, কথা কম বলে অসুস্থ মানুষের সেবায় কাজ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করতে হবে আমাদের। বঙ্গবন্ধু এই দেশকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। তিনি ২৩ বছর লড়াই সংগ্রাম করেছেন বাংলাদেশ একদিন স্বাধীন হবে সেই জন্য। তার দীর্ঘদিনের স্বপ্নের দেশ স্বাধীন হয়েছে। তিনি কিন্তু দেশকে তার স্বপ্নের মতো করে সাজানোর সুযোগ পাননি। তিনি মাত্র তিন বছরের মতো সময় ক্ষমতায় ছিলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হলেও দেশে তেমন কোনো সম্পদ বা অর্থ ছিল না। সেই দুর্ভিক্ষ পীড়িত দেশের দায়িত্ব নিয়ে এমন কোনো সেক্টর নেই যেখানে তিনি কাজ শুরু করেননি। স্বাস্থ্যখাতের সব ভালো উদ্যোগগুলো তিনিই শুরু করে দিয়েছিলেন। তিনি যেভাবে শুরু করেছিলেন দেশের বিভিন্ন কুচক্রী মহলের কারণে সেগুলো সেভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। এখন জননেত্রী শেখ হাসিনা বাবার কাজগুলো এক এক করে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, জনগণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করা। সেই কাজ করতে মুখে আমাদের বড় বড় কথা বললেই হবে না, কাজ করে দেখাতে হবে। এ জন্য আমরা যেন মুখে কথা কম বলে কাজ করেই আমাদের সক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে পারি সে লক্ষ্যেই মাঠে নেমে পড়তে হবে। ঈদের পর থেকে তৃণমূল স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে আমি আবারও মাঠে নেমে পড়ব। প্রয়োজনে প্রত্যন্ত গ্রামে গঞ্জে চলে যাবো। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে মানুষের জন্য সহজলভ্য করতে যা যা করার দরকার আমি তাই করবো। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ২৩ বছরের ত্যাগে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। কত দিন তিনি খেয়ে না খেয়ে দেশের মানুষকে একত্রিত করতে কাজ করেছেন তার হিসাব নেই। বিশ্বের অনেক দেশই স্বাধীনতার জন্য যুগের পর যুগ লড়াই করে যাচ্ছে, কিন্তু স্বাধীন হতে পারছে না। বাংলাদেশ কীভাবে পারলো, ভারত কীভাবে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করতে ঝাপিয়ে পড়লো! এগুলো তো আর এমনি এমনি হয়নি। বঙ্গবন্ধুর সাহস ছিল, বুকের পাটা বড় ছিল। এ জন্যই বাংলাদেশ এতো আগে স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর মতো সাহসী নেতা নেই বলেই অনেক দেশ স্বাধীন হতে পারছে না। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বিএসএমএমইউ ভিসি ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটো মিয়া, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাকসুরা নূর প্রমুখ। ঢাকাওয়াচ/টিআর
সকালের নাস্তা এড়িয়ে যেসব বিপদ ডেকে আনছেন
অনেকে বেলা করে ঘুম থেকে ওঠেন। বিশেষ করে শহরে এই প্রবণতা বেশি। এতে নাস্তাটা এড়িয়ে যান ইচ্ছা-অনিচ্ছায়। অথচ পুষ্টিবিদরা বলছেন সকালের খাবারটাই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যা এড়িয়ে গেলে বাড়বে কিছু বিপদ- হৃদরোগের ঝুঁকি দিনের পর দিন সকালের নাস্তা না করলে হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষ সকালে নাস্তা এড়িয়ে যান তাদের মধ্যে ২৭ শতাংশের বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। স্বাস্থ্যকর নাস্তা হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। টাইপ-২ ডায়াবেটিস হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি স্কুল অব পাবলিক হেলথের এক গবেষণা পরিচালিত হয় প্রায় ৬ বছর ধরে। মোট ৪৬ হাজার ২৮৯ জন নারীর ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে, যেসব নারীরা সকালে নাস্তা বাদ দিয়েছেন তাদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি। বিপাকক্রিয়ায় সমস্যা রাতের খাবার খাওয়ার পর থেকে ৮-১০ ঘণ্টা, একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পেট খালি থাকে। সকালে নাশতা করলে তাই তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায়। যারা সকালে নাশতা করেন না বা দেরিতে করেন তাদের পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বা খাবার দেরিতে হজম করা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। চুলপড়া বাড়ে সকালের নাস্তা এড়িয়ে গেলে শরীরে প্রোটিনের মাত্রা মারাত্মক মাত্রায় কমে যায়, যা কেরাটিনের মাত্রায় প্রভাব ফেলে। কেরাটিন কমে গেলে চুলের বৃদ্ধি কমে যায়। ফলে চুল পড়তে শুরু করে। স্মৃতিভ্রষ্টতা ও শক্তির ঘাটতি সকালের নাশতা না করলে স্মৃতিশক্তি ও শারীরিক শক্তির ঘাটতি দেখা দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সকালের নাশতা করেন না তারা অবসাদে ভোগেন এবং সহজে ভুলে যান। সকালের খাবার এড়ালে শারীরিক শক্তি কমে যেতে পারে, যা স্মৃতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ঢাকাওয়াচ/স
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত-মৃত্যু: অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২৩
বিদায়ী বছর ২০২৩ সালে রাজধানীসহ সারা দেশেই ছিল ডেঙ্গু রোগের অপ্রতিরোধ্য সংক্রমণ। ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সালে দেশে সাড়ে পাঁচ হাজার জন ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয় এবং ৯৩ জনের মৃত্যু হয়। ২০০১ সালে আড়াই হাজার লোক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় এবং ৪৪ জনের মৃত্যু হয়। ২০০২ সালে ছয় হাজার রোগীর মধ্যে ৫৮ জন মারা যান। ২০০৩ সালে ৪৮৬ জনের মধ্যে ১০ জন, ২০০৪ সালে চার হাজারের মধ্যে ১৩ জন, ২০০৫ সালে এক হাজারের মধ্যে চার জন, ২০০৬ সালে দুই হাজারের মধ্যে মৃত্যু হয় ১১ জনের। ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত আড়াই হাজার ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও কারও মৃত্যু হয়নি। ২০১১ দেড় হাজার ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ছয়জনের মৃত্যু হয়। ২০১২ সালে ৬৭১ জনের মধ্যে একজন, ২০১৩ সালে প্রায় দুই হাজারের মধ্যে দুজন রোগী মারা যান। ২০১৪ সালে ৩৭৫ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে কেউ মারা যাননি। ২০১৫ সালে তিন হাজারের মধ্যে ছয়জন, ২০১৬ সালে ছয় হাজারের মধ্যে ১৪ জন, ২০১৭ সালে তিন হাজারের মধ্যে আট জন, ২০১৮ সালে ১০ হাজার ১৪৮ জনের মধ্যে ২৬ জন, ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জনের মধ্যে ১৭৯ জন মারা যান। ২০২০ সালে দেড় হাজার মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও মৃত্যু হয় চারজনের। আর ২০২১ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় সাড়ে ২৮ হাজার, মারা যান ১০৫ জন। ২০২২ সালে সর্বমোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন এবং মোট ২৮১ জন মারা যান। ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে ২৮১ জনের মৃত্যু ছিল দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু বিষয়ক তথ্য থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ৫৬৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এবং ছয় জন মারা গেছেন। ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত ১৬৬ এবং মৃত্যু ৩ জন, মার্চে আক্রান্ত ১১১ জন এবং কেউ মারা যায়নি। এপ্রিলে আক্রান্ত ১৪৩ এবং মৃত্যু দুই জন, মে মাসে আক্রান্ত এক হাজার ৩৬ জন এবং মৃত্যু দুই জনের, জুন মাসে আক্রান্ত পাঁচ হাজার ৯৫৬ জন, মৃত্যু ৩৪ জন। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে আক্রান্ত ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন এবং ২০৪ জনের মৃত্যু হয়। আগস্ট মাসে আক্রান্ত ৭১ হাজার ৯৭৬ জন এবং মৃত্যু ৩৪২ জন, সেপ্টেম্বরে আক্রান্ত ৭৯ হাজার ৫৯৮ জন ও মৃত্যু ৩৯৬ জন। অক্টোবর মাসে আক্রান্ত ৬৭ হাজার ৭৬৯ জন এবং মৃত্যু ৩৫৯ জন, নভেম্বরে আক্রান্ত ৪০ হাজার ৭১৬ জন এবং ২৭৪ জনের মৃত্যু হয়। ডিসেম্বর মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট নয় হাজার ২৮৮ জন এবং ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের এক তারিখ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। এর মধ্যে ঢাকাতে এক লাখ ১০ হাজার আটজন ও সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। একই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকাতে ৯৮০ জন এবং সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ৭২৫ জন মারা যান। ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দেশের ইতিহাসে অতীতের সকল বছরের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত গ্রীষ্মকালে ডেঙ্গু রোগের মৌসুম হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে সারা বছর জুড়েই ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা গেছে। অতীতের বছরগুলোতে শহরের বাসা বাড়িতে আবাসিক ধরনের মশা (এডিস ইজিপটাই) ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটালেও, বর্তমানে গ্রামাঞ্চলের বুনো মশাও (এডিস এলবোপিকটাস) ডেঙ্গুর বাহক হিসেবে কাজ করছে। গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটলেও যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ না করায় ডেঙ্গু ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ঢাকাওয়াচ/টিআর
আজ বিশ্ব কিডনি দিবস
বিশ্ব কিডনি দিবস আজ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বৃহস্পতিবার (০৯ মার্চ) বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিশ্ব কিডনি দিবস পালিত হবে। প্রতি বছর মার্চের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার এই দিবসটি পালিত হয়। এ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। চলতি বছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘সবার জন্য সুস্থ কিডনি’। কিডনী দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ কিডনি ফাউন্ডেশন, ক্যাম্পস, বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশন, পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কিডনি ডিজিজ অ্যান্ড ইউরোলজি হাসাপাতালের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেশন হলে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। ঢাকাওয়াচ/স
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আইসিডিডিআরবি’র সচিত্র নির্দেশনা
মহামারী করোনাভাইরাসে মঙ্গলবার (৩ মার্চ) পর্যন্ত ৩ হাজার ১০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার মানুষ। এরই মধ্যে ৭০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। ফলে করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা সবাইকেই গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। মঙ্গলবার (৩ মার্চ) রাজধানীর মহাখালীতে আইইডিসিআর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেশ থেকে যারা আসছেন তাদের আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। কারো প্রতি সন্দেহ হলেই তাকে আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে। এদিকে, করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কিছু পরামর্শ মেনে চলার কথা বলেছে আইসিডিডিআরবি। লেখচিত্রে এই নির্দেশনাগুলো মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আইসিডিডিআরবির ওই সচিত্র নিদের্শনা তুলে ধরা হলো- নতুন করোনা ভাইরাস (সিওভিআইডি-১৯)-সহ অন্যান্য সংক্রমণ থেকে নিজেকে এবং অপরকে রক্ষা করুন। ঘন ঘন হাত পরিষ্কার করুন। উভয় হাত। কব্জি পর্যন্ত হাতের উভয় পাশ, হাতের নখসমূহ। সাবান ও পানি দিয়ে ভালো করে হাত পরিষ্কার করুন অন্তত ৪০-৬০ সেকেন্ড সময় ধরে। অথবা অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন (২০-৩০ সেকেন্ড)। পানি দিয়ে হাত ভেজান। পুরো হাতে সাবান মেখে ভালো করো ধুয়ে নিন। অথবা হাতের তালুতে স্যানিটাইজার দিয়ে ভালকরে হাত পরিষ্কার করুন। হাঁচি-কাশি শিষ্টাচার মেনে চলুন। হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় হাতের কনুই এর ভাঁজে, বা টিস্যু দিয়ে মুখ ও নাক ঢাকুন। ব্যবহৃত টিস্যুটি দ্রুত বন্ধ ডাস্টবিনে ফেলুন এবং সানিটাইজার বা সাবান ও পানি দিয়ে ভালো করে হাত পরিষ্কার করুন। অপরিষ্কার হাত দিয়ে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শকরা থেকে বিরত থাকুন। আক্রান্ত ব্যাক্তি থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন। হাঁচি, কাশি বা জ্বরে আক্রান্ত ব্যাক্তি থেকে কমপক্ষে ১ মিটার বা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন। পরিচিত বা অপরিচিত ব্যাক্তির সাথে হাত মেলানো বা আলিঙ্গন করা থেকে বিরত থাকুন। ঢাকাওয়াচ/স