আনন্দ অশ্রু নিয়ে উত্তর গাজায় ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৮:২৮ পিএম, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

যুদ্ধ শুরুর পর প্রথম বারের মতো গাজার উত্তরাঞ্চলে নিজের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে হাজারো ফিলিস্তিনি। হামাস আরও ছয় জিম্মিকে মুক্তির বিষয়ে নিশ্চয়তা দেয়ার পর ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফেরার অনুমতি দিয়েছে ইসরাইল।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত শনিবার (২৫ জানুয়ারি) হামাস তাদের হাতে জিম্মি চার ইসরাইলি নারী সেনাকে মুক্তি দেয়। এর বিনিময়ে ২০০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দীকে মুক্তি দেয় ইসরাইল। তবে এরপর ইসরাইল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে।
গাজা যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর গাজা। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ওই এলাকার অধিবাসীরা তাদের আবাসস্থলে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু হামাস ওই নারী জিম্মিকে মুক্তি না দেওয়ায় তাদের ঘরে ফেরা আটকে যায়।
ইসরাইল বলছে, ‘হামাসের হাতে জিম্মি বেসামরিক ইসরাইলি আরবেল ইয়াহুদের মুক্তির যে পরিকল্পনা, সেটি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত গাজার বাসিন্দাদের উত্তর দিকে যেতে দেয়া হবে না।’
পরে রোববার (২৬ জানুয়ারি) আরও ছয় ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তির নিশ্চয়তা দিয়েছে। এরপরই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, সোমবার থেকে ফিলিস্তিনিরা গাজার উত্তরাঞ্চলে ফেরা শুরু করতে পারবেন।
যুদ্ধবিরতির পরই গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরতে চাইছেন। এ জন্য তাদের নেৎজারিম করিডর পার হয়ে আসতে হবে। কিন্তু ইসরাইল সেখানে উপকূলীয় একটি মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিল। তারা উত্তর গাজায় ফিরতে চাওয়া ফিলিস্তিনিদের মহাসড়ক পার হতে দিচ্ছিল না।
তবে সোমবার ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ফিলিস্তিনিদের পায়ে হেঁটে আল-রশিদ এবং সকাল ৯টা থেকে যানবাহনে সালাহ আল-দিনের করিডোর অতিক্রম করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে অনেকে এসব করিডোর অতিক্রম করেছে।
উত্তর গাজায় ফিরতে বাধা দেয়া হবে না ইসরাইলের এমন ঘোষণার পর নেৎজারিম করিডোরের কাছে অপেক্ষারত হাজারো ফিলিস্তিনিরা আনন্দে ফেটে পড়েন।
বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা এই মুহূর্তটিকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন। তাদের মতে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মতোই আজকের দিনটি গুরুত্বপূর্ণ। এটিও তাদের জন্য একটি বিজয়ের দিন।
আজকের দিনটিকে ‘বিজয়ের দিন’ উল্লেখ করে উত্তর গাজায় ফিরে আসা বাস্তুচ্যুত এক ফিলিস্তিনি বলেন, ‘আমি আমার ঘর পুনর্নির্মাণ শুরু করব। আমরা ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আবার নতুন করে তৈরি করব।’
যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ছয় সপ্তাহের ধাপে হামাস ৩৩ জন নারী, শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও আহত বন্দিকে মুক্তি দেবে, যেখানে প্রতি বেসামরিক জিম্মির জন্য ইসরাইল ৩০ জন বন্দি এবং প্রতি সেনার জন্য ৫০ জন বন্দি মুক্তি দেবে।