‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নিয়ে উদ্বিগ্ন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ


Feb 2025/Human Right Watch.jpg

অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দেশের নিরাপত্তা খাত আমূল সংস্কারের অঙ্গীকার করেছে। তবে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে নিরাপত্তা ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে ইতোমধ্যে প্রায় দুই হাজার মানুষকে গ্রেফতার করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। রাজনৈতিক সহিংসতা বিচারে নিরপেক্ষতা ও আইনের শাসন নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিবৃতি প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

সংস্থাটির এশিয়া অঞ্চলের উপ-পরিচালক মীনাক্ষি গাঙ্গুলি বলেছেন, ‘দীর্ঘ দিনের দমনপীড়নে বাংলাদেশে রাজনৈতিক মেরূকরণ মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছিল। তবে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সে বিষয়ে বর্তমান কর্তৃপক্ষের সতর্ক থাকা উচিত। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের পরামর্শ মেনে রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক সুশাসনে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার কাজে সরকারের মনোনিবেশ করা উচিত।’

সম্প্রতি প্রকাশিত জাতিসংঘের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সাবেক সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সর্বশেষ আন্দোলন দমনের নামে পুলিশ, সীমান্তরক্ষী, র‍্যাব ও গোয়েন্দা বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন গোষ্ঠী ভয়াবহ পর্যায়ের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।

প্রসঙ্গত, ব্যাপক জনরোষের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর বাড়িটি ধ্বংস করে দেয় একটি গোষ্ঠী। পাশাপাশি দেশব্যাপী আওয়ামি লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত অনেক ব্যক্তির ঘরবাড়ি নির্বিচারে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

এর ধারাবাহিকতায় গাজীপুরে সাবেক এক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালাতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে কয়েকজন মারাত্মক আহত হন। এর প্রতিক্রিয়ায় সাবেক সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের ডেভিল হিসেবে আখ্যায়িত করে অপারেশন ডেভিল হান্ট বা শয়তান শিকার অভিযান শুরু করে অন্তর্বর্তী সরকার।

এই ব্যাপক ধরপাকড়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এইচআরডব্লিউ বলেছে, ‘সাবেক সরকারের সমর্থকদেরও সভা, সমাবেশ ও আন্দোলনের অধিকার অস্বীকার করতে পারে না অন্তর্বর্তী সরকার। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এগুলো মানুষের মুখ্য অধিকার।’

গাঙ্গুলি বলেছেন, ‘সাবেক সরকারের অন্যায় কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। তবে সেটা হতে হবে আইনের গতিপথ মেনে। মব সহিংসতা কোন সমাধান হতে পারে না। তবে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনও ব্যক্তি যখন প্রতিপক্ষদের শয়তান বলে অভিহিত করেন, তখন আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অলিখিত অনুমোদন পেয়ে যায় অন্যরা।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×