কাজে বাধা না দিতে আদালতকে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০১:০৯ এম, ২২ মার্চ ২০২৫

নিজের কাজে বাধা না দিতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যদি বিচারপতি রবার্টস এবং যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট এই বিষাক্ত ও নজিরবিহীন পরিস্থিতির শিগগির সমাধান না করেন, তাহলে আমাদের দেশ খুব গুরুতর সমস্যায় পড়বে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে এ আহ্বান জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি ওই পোস্টে লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। এই মহান লক্ষ্য ততক্ষণ পর্যন্ত অর্জন করা যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত উগ্র ও অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট বিচারকেরা এই আচরণ করার সুযোগ পাবেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ট্রাম্প প্রশাসন কিছু ব্যক্তিকে দেশ থেকে বের করে দেয়ার কঠোর সমালোচনা করেছেন ওয়াশিংটনের কেন্দ্রীয় সরকারের বিচারক জেমস বোসবার্গ। একই সঙ্গে তিনি এ ঘটনায় আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে বিচার বিভাগের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চান।
এর আগে, গত শনিবার (১৫ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অনিয়মিত যুদ্ধের’ অভিযোগ এনে ট্রেন ডি আরাগুয়ার গ্যাংয়ের ২৩৮ এবং আন্তর্জাতিক গ্যাং গোষ্ঠী এমএস-১৩ এর ২৩ সদস্যকে কারাগারে রাখতে এল সালভাদরের পাঠায় ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের কারাগারে রাখার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অর্থ পাবে মধ্য আমেরিকার দেশটি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শুক্রবার (১৪ মার্চ) ট্রেন ডি আরাগুয়ার সদস্যদের দ্রুত দেশ থেকে বের করতে কয়েক শতকের পুরোনো যুদ্ধকালীন আইন হিসেবে পরিচিত ভিনদেশি শত্রু আইন বা এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্ট ব্যবহারের নির্দেশ দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এই পরিস্থিতিতে গত সোমবার জেমস বোসবার্গ বিচার বিভাগের আইনজীবীদের কাছে কিছু বিষয়ে তথ্য জানতে চান। তার প্রশ্নের জবাব দিয়ে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী (আইসিই) কর্মকর্তা রবার্ট সারনা স্থানীয় একটি আদালতকে জানান, শনিবার বিকেলে হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে ট্রাম্পের নির্দেশ প্রকাশিত হওয়ার পর আটক ব্যক্তিদের বহনকারী তিনটি বিমান এল সালভাদরের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করে।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে বিচারকের অভিশংসন চেয়ে নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেন, তিনি একজন ‘বিঘ্ন ও উত্তেজনা সৃষ্টিকারী’ ব্যক্তি। তবে ট্রাম্পের পোস্টে সরাসরি বোসবার্গের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে, ট্রাম্পের পোস্টের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস এক বিবৃতিতে বোসবার্গের অভিশংসনের প্রস্তাব নিয়ে সতর্ক করে লিখেছেন, ‘দুই শতাব্দীর বেশি সময় ধরে এইটাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, বিচার বিভাগের সঙ্গে কোনো বিষয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে অভিশংসন কোনো সমাধান নয়, স্বাভাবিক আপিল বিভাগ বিষয়টি পর্যালোচনা করবেন।
তবে, প্রধান বিচারপতির তরফে বিবৃতিটি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। দেশটির ইতিহাসে প্রধান বিচারপতির এ ধরনের পদক্ষেপ দুর্লভ। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিচার বিভাগকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের সুপ্রিম কোর্টকে এভাবে আক্রমণ করা অকল্পনীয়।