মিয়ানমারে ভূমিকম্প: মসজিদ ধসে শত শত মুসল্লির মর্মান্তিক মৃত্যু
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৯:০৫ পিএম, ৩০ মার্চ ২০২৫

মায়ানমারের ভূমিকম্পের সময় অন্তত ৫০টি মসজিদ ধসে শত শত মুসল্লির করুণ মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম ইরাবতী। এদিকে ভূমিকম্পের দুই দিন পর নিহতের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ৭০০ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন তিন হাজার ৪০০ জন, আর নিখোঁজ রয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ।
ইরাবতী বলছে, ‘মায়ানমারে শুক্রবারের (২৮ মার্চ) বিধ্বংসী ভূমিকম্পে আনুমানিক ৫০০-৭০০ জন মুসলমান প্রাণ হারিয়েছে। এ সময় প্রায় ৫০টি মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে। স্প্রিং রেভল্যুশন মায়ানমার মুসলিম নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, মান্দালয় এবং সাগাইং অঞ্চলে ঊনিশ শতকের অনেকে মসজিদ ধসে গেছে। সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির কর্তৃপক্ষ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও রাশিয়া দেশটিতে ত্রাণ সামগ্রীসহ সহায়তা দল পাঠিয়েছে।’
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ব্যাপক ধ্বংস হয়েছে, এবং মানবিক চাহিদা প্রতি ঘণ্টায় বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, শুক্রবার আঘাত হানা মিয়ানমারের এই ভূমিকম্পকে ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বলা হচ্ছে। ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) বলেছে, নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াতে পারে। সংস্থাটির মতে, দেশটির আর্থিক, পরিবেশগত এবং সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ইউএসজিএসের ওয়েবসাইটের ইন্টারেক্টিভ ম্যাপে দেখা গেছে, ৭.৭ মাত্রার কম্পনের পর মিয়ানমারে অন্তত ১৪টি আফটারশক (ভূমিকম্প পরবর্তী ছোট ছোট কম্পন) আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ কম্পনই বড় ভূমিকম্প আঘাত হানার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঘটেছে। এগুলোর মাত্রা ছিল ৩-৫ এর মধ্যে।
সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৭, এটি ভয়াবহ ভূমিকম্পের প্রায় ১০ মিনিট পরে আঘাত হেনেছে। এ ছাড়া ৪.৯ এবং ৬.৭ মাত্রার দুইটি কম্পন মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় থেকে প্রায় ২০ মাইল দূরে ঘটেছে। এতেও যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্য কম্পনগুলো ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে উত্তর ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ে একটি রেখা তৈরি করেছে।
ভূমিকম্প পরবর্তী এসব ছোট ছোট কম্পন মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। কারণ, বড় কম্পনের পর মানুষ নিরাপদ ভেবে আশ্রয় নেয়া জায়গা থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে। তখন এই কম্পনের ফলে নতুন করে দুর্ঘটনা ঘটে। এসব কারণে মিয়ানমারেও হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।