ঈদের দ্বিতীয় দিনও গাজায় ইসরায়েলের তাণ্ডব, নিহত অন্তত ৩৪
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:৩৩ এম, ০১ এপ্রিল ২০২৫

ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিনও গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। সোমবার (৩১ মার্চ) তাদের হামলায় অন্তত ৩৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর আগের দিন দখলদার বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ৬৪ ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশুও ছিল। সংবাদ আল-জাজিরার।
একই পরিবারের ১২ জনকে হত্যা:
সোমবার বিকেলে গাজার একটি আবাসিক ভবনে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি সামরিক। এ সময় বাড়িটিতে একটি পরিবারের সদস্যরা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য একত্রিত হয়েছিলেন। হামলায় পুরো পরিবারই নিহত হয়েছে।
হাসপাতালে স্বজনদের আহাজারি ও শোকের দৃশ্য ছিল হৃদয়বিদারক। যারা বেঁচে গেছেন, তারা হাসপাতালে এসে স্বজনদের শেষ বিদায় জানাচ্ছিলেন। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরাও ছিলেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হামলার পরপরই ১০ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে তিনজন শিশু রয়েছে। ৪৫ মিনিট পর আরও এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই হামলায় মোট ১২ জন নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মরদেহ থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সপরিবারে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত:
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনি সাংবাদিক মোহাম্মদ সালেহ আল-বারদাউইল, তার স্ত্রী ও তিন সন্তান নিহত হয়েছেন।
এর আগে, রাফাহ বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের আল-মাওয়াসি এলাকায় আশ্রয় নিতে নির্দেশ দেয় ইসরায়েল। তবে নতুন এই স্থানান্তর নির্দেশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আল-মাওয়াসিতে বোমা হামলা চালিয়ে দুইজনকে হত্যা করে দখলদার বাহিনী।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবশেষ তথ্যমতে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার ৩৫৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৪ হাজার ৪০০ জন। তবে গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর বলেছে, মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে, কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া হাজারো মানুষকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
বৈরুতে ফের ইসরায়েলি হামলা
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠ দাহিয়েহতে শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। নভেম্বর মাসে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর এটি দ্বিতীয়বারের মতো ইসরায়েলের হামলা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা একটি ভবনে হামলা চালিয়েছে যেখানে হিজবুল্লাহর এক সদস্য অবস্থান করছিলেন। ওই ব্যক্তি হামাসের এক যোদ্ধাকে ইসরায়েলে হামলা চালাতে সহায়তা করছিলেন বলে ইসরায়েলের দাবি। হামলায় ভবনটি ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে, গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) বৈরুতে আরেকটি আবাসিক ভবনে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল। তখন তারা দাবি করেছিল, ওই ভবনটি হিজবুল্লাহর ড্রোন তৈরির কারখানা ছিল। যদিও সে দাবি প্রমাণিত হয়নি। ওই হামলায় কেউ নিহত হয়নি, কারণ ইসরায়েল আগে থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। তবে এবারের হামলার আগে কোনো সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি।