চার বছর প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে করতে অস্বীকৃতি, তারপর যা ঘটল..

তরুণীর সাথে দীর্ঘ চার বছরের প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন যুবক। তবে, সেই তরুণীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন সদ্য শিক্ষক হওয়া ওই যুবক। এ কারণে তাকে বন্দুকের মুখে অপহরণ করে ওই তরুণীকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারে। যুবকের নাম অবনীশ কুমার। তিনি সম্প্রতি শিক্ষক হওয়ার জন্য হার পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) নিজের কর্মস্থলে (স্কুল) যাচ্ছিলেন অবনীশ। পথে দুইটি স্করপিও গাড়ি তার রিকশার পথরোধ করে। সেখান থেকে বেশ কয়েকজন সশস্ত্র ব্যক্তি বন্দুকের মুখে তাকে তুলে নিয়ে যান এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাকে মারধর করে গুঞ্জন নামের তার প্রেমিকার সঙ্গে বিয়ে দেয়। যদিও, অবনীশ গুঞ্জনের সঙ্গে তার প্রেমের কথা অস্বীকার করেছেন।অবনীশ কুমার বিহারের বেগুরসরাই জেলার রাজৌরার বাসিন্দা সুধাকর রাইয়ের ছেলে। সম্প্রতি সরকারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অবনীশ এবং কাটিহার জেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তার পোস্টিং হয়েছে।গুঞ্জনের দাবি, অবনীশের সঙ্গে তার চার বছরের গভীর সম্পর্ক ছিল। তারা একাধিক বার দেখাও করেছেন। অবনীশ তখন তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।গুঞ্জন বলেন, ‘সে (অবনীশ) আমাকে তার স্কুলেও নিয়ে গিয়েছিল। পরে আমি যখন আমার বাড়িতে তার কথা জানায় এবং তারা তাকে বিয়ের কথা বলে, তখন সে সম্পর্ক অস্বীকার করে। এটা কখনোই মেনে নেয়া যায় না।’এরপরই অবনীশকে অপহরণ করা হয়। ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, অবনীশকে বেশ কয়েকজন লোক ধরে রেখেছেন। আর বিয়ের শাড়ি ও সিঁদুর পরে তার কাছে দাঁড়িয়ে কনে গুঞ্জন।বিয়ের পর গুঞ্জন তার পরিবারকে নিয়ে রাজৌরায় অবনীশের বাড়িতে গেলে সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। আর অবনীশের পরিবার গুঞ্জনকে তাদের পুত্রবধু হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। অবনীশও পালিয়ে যান।গুঞ্জনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছেন অবনীশ। তার ভাষ্য, ‘মেয়েটির সাথে আমার কোন ভালবাসার সম্পর্ক ছিল না। সে আমাকে বার বার ফোন করত ও পিছু নিয়ে হয়রানি করত। ঘটনার দিন আমি স্কুলে যাওয়ার সময় কিছু লোক আমাকে একটি গাড়িতে করে অপহরণ করে। তারা আমাকে মারধর করে ও সিঁদুর পরাতে বাধ্য করে।’এরপর বিচারের আবেদন জানিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন গুঞ্জন। অবনীশও অপহরণ ও মারধরের অভিযোগে থানায় একটি মামলা করেছেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন আনুষ্ঠানিকভাবে বরখাস্ত

সংসদে আইনপ্রণেতাদের ভোটাভুটিতে অভিশংসিত হওয়া ইউন সুক ইওলকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাতটা ২৪ মিনিটে তাকে বরখাস্ত করার তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয়। সংবাদ রয়টার্স, বিবিসির। অভিশংসিত হলেও জটিল আইনি প্রক্রিয়ার কারণে প্রেসিডেন্ট পদে থাকবেন ইউন। তবে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোন নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে না তার। সামরিক আইন জারি করার স্বল্পকালীন প্রচেষ্টার ঘটনায় শনিবার অভিশংসিত হয়েছেন ইউন সুক-ইওল। অভিশংসনের পর প্রেসিডেন্টের পদ থেকেও তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে তার দায়িত্ব ও ক্ষমতা থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তবে, সাংবিধানিক আদালত তার ভাগ্য নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকবেন তিনি। দেশটির সংবিধান, আইন ও প্রটোকল অনুযায়ী, ইউন সুক-ইওল কিছু ক্ষমতা হারালেও তার কিছু ক্ষমতা অব্যাহত থাকবে। বরখাস্তের পর ইউনের প্রধান সাংবিধানিক ক্ষমতা ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী হ্যান ডাক-সুর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কূটনৈতিক চুক্তি সই, কূটনীতিক নিয়োগ এবং পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত ক্ষমতা। এছাড়াও, দুই কোরিয়ার একত্রীকরণ বিষয়ক জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে গণভোটে দেওয়ার অধিকার থাকবে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের। ফলে, সামরিক আইন ঘোষণা ও বিদেশি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার একক ক্ষমতা হারাবেন ইউন। পাশাপাশি, সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব ও ফৌজদারী অপরাধের বিচার থেকে রেহাই পাওয়ার সুযোগ হারাবেন তিনি। মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও সাংবিধানিক আদালতের তিনটি শূন্যপদসহ সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগের ক্ষমতাও স্থগিত করা হয়েছে তার। সামরিক আইন জারি ঘিরে গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদে প্রেসিডেন্ট ইউনের বিরুদ্ধে প্রথম অভিশংসনের প্রচেষ্টা চালান বিরোধীরা। তবে, সামান্য ভোটের ব্যবধানে সেই দফায় বেঁচে যান তিনি। ওই সময় তার রাজনৈতিক দল ভোট বয়কট করায় অভিশংসনের পক্ষে সংসদে বিরোধীদের কোরাম করা সম্ভব হয়নি। ইউনের পিপল পাওয়ার পার্টির অন্তত ১২ জন আইনপ্রণেতা বিরোধী শিবিরে যোগ দেওয়ার পর শনিবার দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদে অভিশংসন প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। ৩০০ আসনের জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের ১৯২ আসনে নিয়ন্ত্রণ তৈরি হয়। যা অভিশংসনের জন্য প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের পথ পরিষ্কার করে। শনিবার সংসদে ইউন সুক-ইওলকে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন মোট ২০৪ জন আইনপ্রণেতা। বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৮৫ জন। এছাড়া, তিনজন আইনপ্রণেতা সংসদে অনুপস্থিত ছিলেন ও আটটি ভোটকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। সংসদে অভিশংসনের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতা সমর্থন জানানোয় এখন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের ভাগ্য নির্ধারণ হবে দক্ষিণের সাংবিধানিক আদালতে। দেশটির এই আদালত আগামী ছয় মাসের মধ্যে ইউনকে অপসারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। ইউনকে সরানোর জন্য সাংবিধানিক আদালতের নয় সদস্য বিশিষ্ট কাউন্সিলের অন্তত ছয়জনকে অভিসংশন প্রস্তাবের পক্ষে মত দিতে হবে। যদিও শনিবার আদালতের এই কাউন্সিলের ইউনের রাজনৈতিক দল পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) সমর্থক পাঁচ বিচারক পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগ করা সুপ্রিম কাউন্সিলের দুই সদস্য কিম মিন-জিওন ও ইন ইয়ো-হান অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউনের সমর্থক ছিলেন। এছাড়া, অন্য দুই বিচারক জ্যাং ডং-হাইওক ও যুব সুপ্রিম কাউন্সিল সদস্য জিন জং-ও পিপিপি নেতা হ্যানের সমর্থক ছিলেন। কাউন্সিলের অপর সদস্য কিম জে-ওনও পদত্যাগ করেছেন।

ভারতকে ‘অসহযোগী’ দেশ ঘোষণা করল যুক্তরাষ্ট্র

ভারতকে ‘অসহযোগী’ দেশগুলোর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ সংস্থা (আইসিই)। এটি এমন একটি তালিকা, যেখানে উল্লেখিত দেশগুলো প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ায় যথাযথ সহযোগিতা করে না বলে মনে করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। সংবাদ এনডিটিভির। এ তালিকায় ভারত ছাড়া রয়েছে ভুটান, কিউবা, ইরান, পাকিস্তান, রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলা। আইসিই জানিয়েছে, এই দেশগুলো সাক্ষাৎকার গ্রহণ, সময়মত ভ্রমণ নথি ইস্যু ও নির্ধারিত ফ্লাইটে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রত্যর্পণের মুখে ১৮ হাজার ভারতীয়: আইসিইর তালিকা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৪ লাখ ৫০ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়িত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ হাজার অভিবাসীই ভারতীয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় ৯০ হাজার ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টাকালে আটক করা হয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এদের অধিকাংশই পাঞ্জাব, গুজরাট ও অন্ধ্র প্রদেশের বাসিন্দা। বৈধতার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা: বহু ভারতীয় অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে তাদের অবস্থান বৈধ করার চেষ্টা করলেও এই প্রক্রিয়া বেশ সময়সাপেক্ষ। বৈধতার আবেদনে দুই-তিন বছর সময় লাগতে পারে। অবশ্য, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যায় ভারত সবার ওপর নয়। দুই লাখ ৬১ হাজার অবৈধ অভিবাসী নিয়ে শীর্ষে রয়েছে হন্ডুরাস, এরপর গুয়াতেমালার রয়েছে দুই লাখ ৫৩ হাজার অবৈধ অভিবাসী। এশিয়ার মধ্যে চীন ৩৭ হাজার ৯০৮ জন অভিবাসী নিয়ে শীর্ষে। ভারত রয়েছে ১৩তম স্থানে। কার্যকর হবে কঠোর অভিবাসন নীতি: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী এক মাসের মধ্যে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণায় অভিবাসন নীতি কঠোর করার অঙ্গীকার করেছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বৃহত্তম প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া পরিচালনার পরিকল্পনা করেছেন। ফলে, চূড়ান্ত আদেশপ্রাপ্ত হাজার হাজার ভারতীয় অভিবাসীকেও ফেরত পাঠানো হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ ভারত-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্কেও চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

পাকিস্তানের ৬০ কোটি ডলারের ঋণ বাতিল করল বিশ্ব ব্যাংক

পাকিস্তানের জাতীয় বাজেটের উন্নয়ন খাতের জন্য দেশটির সরকারকে যে ১০০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক, তার দ্বিতীয় কিস্তি বাতিল হয়ে গেছে। এর ফলে, ৬০ কোটি ডলারের ঋণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অর্থ সংকটে জর্জরিত দেশটি। খবর দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের। নিজেদের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে পৃথিবীর বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থাটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘চলতি অর্থ বছরে পাকিস্তানকে আর কোন প্রকার বাজেট বিষয়ক ঋণ দেওয়া হবে না।’ বিশ্ব ব্যাংক যেসব শর্ত সাপেক্ষে পাকিস্তানকে এই ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেসবের কোনটিই পূরণ করতে পারেনি পাকিস্তান সরকার। বিশ্ব ব্যাংকের এই পদক্ষেপ অর্থ সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানের জন্য একটি বড় ধাক্কা হয়ে হাজির হয়েছে। কারণ, বাজেট বিষয়ক ঋণপ্রাপ্তির পর নতুন আরও ২০০ কোটি ডলার ‍ঋণের জন্য আবেদন করার পরিকল্পনা ছিল ইসলামাবাদের; কিন্তু বাজেট ঋণ বাতিলের জেরে নতুন ঋণের জন্য আবেদনের পরিকল্পনাও কার্যত ভেস্তে গেল দেশটির। পাকিস্তানের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি খাত উন্নয়নের জন্য প্রস্তাবিত এই ঋণ প্রদানের কথা ছিল বিশ্ব ব্যাংক। ২০২১ সালে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি উৎপাদন ও ব্যবহার সংক্রান্ত পাকিস্তানের সরকারি প্রকল্প অ্যাফোর্ডেবল অ্যান্ড ক্লিন এনার্জি প্রোগ্রামের (পেস) অনুমোদন দেয় বিশ্ব ব্যাংক। পাশাপাশি, প্রকল্প গড়ে তুলতে প্রাথমিকভাবে ১০০ কোটি ডলার ঋণ প্রদানের প্রতিশ্রুতিও দেয়। সেই ঋণের প্রথম কিস্তি হিসেবে ইতোমধ্যে ৪০ কোটি ডলার পেয়েছেও পাকিস্তান। চলতি ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬০ কোটি ডলার আসার কথা ছিল। তবে, দ্বিতীয় কিস্তি প্রদানের আগে পাকিস্তানকে বেশ কয়েকটি শর্ত দেয় বিশ্ব ব্যাংক। সেসবের মধ্যে একটি শর্ত ছিল এই মুহূর্তে পাকিস্তানে যেসব বেসরকারি ও বিদেশি মালিকানাধীন কেন্দ্রগুলোর কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করছে পাকিস্তানের সরকার, সেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সাক্ষরিত চুক্তির অনুলিপি যেন বিশ্ব ব্যাংককে দেয়া হয়। সিপিইসি নামের একটি চুক্তির আওতায় পাকিস্তানে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে চীন। সেই চুক্তি সম্পর্কেও জানতে চেয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক। তবে, চীনের আপত্তির কারণে সিপিইসি চুক্তি সম্পর্কিত কোন তথ্য বিশ্ব ব্যাংককে দেয়নি ইসলামাবাদ। পাকিস্তানে এই মুহূর্তে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৬৫-৭০ পাকিস্তানি রুপি। ফলে, দরিদ্র তো বটেই, সাধারণ মধ্যবিত্তেরও নাভিশ্বাস উঠছে এই অতিমূল্যের কারণে। দাম কমানোর জন্য ইসলামাবাদ বেসকরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, এখনও কোন ইতিবাচক ফলাফল আসেনি।

গোপনে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ঘাঁটিতে নজর রাখছে ‘রাশিয়ার ড্রোন’

জার্মানিতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ঘাঁটিতে অজ্ঞাত ড্রোন উড়তে দেখা গেছে। এছাড়া, অজ্ঞাত ড্রোন দেখা গেছে জার্মানির অস্ত্র প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রাইনমেটালের বিভিন্ন স্থানেও। সংবাদ স্পিগেল নিউজ ম্যাগাজিনের। জার্মানির রামস্টেইনে অবস্থিত মার্কিন বিমান ঘাঁটি ও দেশটির প্রধান অস্ত্র প্রস্তুতকারক রাইনমেটলের আকাশে সন্দেহজনকভাবে ড্রোন উড়ার বিষয়ে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) প্রতিবেদন প্রকাশ করে স্থানীয় স্পিগেল নিউজ ম্যাগাজিন।গোপন সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে তারা জানায়, ৩ ও ৪ ডিসেম্বর এ স্থানগুলোতে বেশ কিছু ড্রোন কয়েক ঘণ্টা ধরে উড়তে দেখা যায়। এমনকি জার্মানির কেমিক্যাল গ্রুপ বিএএসএফের বিভিন্ন স্থানেও অজ্ঞাত এসব ড্রোন দেখা যায়। বিএএসএফের এক মুখপাত্র জানান, কোম্পানির সুরক্ষার জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিচ্ছেন তারা। তবে, এখন পর্যন্ত এ ঘটনার বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।এমন ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে পুরো জার্মানিতে। দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান জানান, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে কিয়েভকে সমর্থন দেয়ায় জার্মানিকে লক্ষবস্তুতে পরিণত করেছে মস্কো। এমনকি দেশের অভ্যন্তরে নাশকতা চালানোর আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে সতর্কও করেন তিনি।ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রাইনমেটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরমিন প্যাপারগারকে হত্যার পরিকল্পনা করছে বলে গত জুলাইয়ে প্রতিবেদন করেছিল সিএনএন এবং নিউইয়র্ক টাইমস।

জাতিসংঘের আহ্বান উপেক্ষা করে রাতভর সিরিয়ায় বিমান হামলা ইসরাইলের

সিরিয়ায় হামলা বন্ধে জাতিসংঘের মহাসচিবের আহ্বান উপেক্ষা করে রাজধানী দামেস্কে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলের বাহিনী। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতভর ব্যাপক বিমান হামলা চালায় ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। সংবাদ আল জাজিরার। শুক্রবার রাতে রাজধানী দামেস্কে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর চতুর্থ ডিভিশনের সদর দফতর এবং নিকটবর্তী গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত একটি রাডার ব্যাটালিয়ন লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।বাশার আল-আসাদের পতন উদযাপন করতে শুক্রবার হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল। এ সময় ইসরাইলের বাহিনী হামলা চালায়। তবে, এখন পর্যন্ত হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।গেল রোববার (৮ ডিসেম্বর) ২৪ বছর ধরে শাসন করা স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করে দামেস্ক দখল করে নেয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এরপরই সিরিয়ার গোলান মালভূমিসহ দক্ষিণ সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ দখল করে নেতানিয়াহু বাহিনী। একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনাগুলো গুঁড়িয়ে দেয় তারা। এরপর অগ্রসর হতে থাকে রাজধানী দামেস্কের দিকে। শুক্রবার রাতে সরাসরি দামেস্কে হামলা চালায় ইসরাইলের বাহিনী।ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) দাবি, আসাদ সরকারের পতন হওয়ার পর অস্ত্র ও সামরিক স্থাপনাগুলো যাতে বিদ্রোহীদের হাতে চলে না যায় এবং তাদেরর জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে না পারে- এ জন্য তারা অভিযান চালাচ্ছে।ইসরাইলের এমন আগ্রাসী অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরক, কাতার ও ইরাক। এরপর শুক্রবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সিরিয়ায় হামলা বন্ধ করতে আহ্বান জানান। কিন্তু, সেই আহ্বানে কান না দিয়ে শুক্রবার রাতেই দামেস্কে হামলা চালাল আইডিএফ।

সেনাপ্রধানের কার্যালয় থেকে সরল পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের ছবি, কেন এই সিদ্ধান্ত?

অর্ধশতাব্দী ধরে ভারতীয়দের কাছে ‘সবচেয়ে বড় সামরিক বিজয়ের’ প্রাণবন্ত প্রতীক ছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের নথিতে সইয়ের একটি ছবি। তবে, সম্প্রতি ছবিটি সেনাপ্রধানের কার্যালয় থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ছবিটি গত পাঁচ দশক ধরে সেনাপ্রধানের কার্যালয়ে ঝুলে ছিল এবং প্রায়ই বিদেশি জেনারেল ও অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে তোলা ছবির পটভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হত। সংবাদ টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া ও দ্য হিন্দুর। সেনাপ্রধানের লাউঞ্জে নতুন একটি চিত্রকর্ম স্থাপন করা হয়েছে। এই নতুন চিত্রকর্ম ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের দৃশ্য তুলে ধরা ঐতিহাসিক চিত্রকর্মের জায়গায় প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, নতুন চিত্রকর্মটির নাম হিন্দি ও ইংরেজিতে ‘করম ক্ষেত্র - ফিল্ড অব ডিডস’। এই চিত্রকর্ম ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২৮ মাদ্রাজ রেজিমেন্টের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল থমাস জ্যাকব এঁকেছেন। এতে সেনাবাহিনীকে ‘কেবল জাতির প্রতিরক্ষা নয়, এর পাশাপাশি ধর্মের রক্ষক, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও জাতীয় মূল্যবোধের সংরক্ষক’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এটি সেনাবাহিনীর প্রযুক্তিগত উন্নতি ও একীভূত শক্তি হিসেবে রূপান্তরকেও তুলে ধরেছে। নতুন চিত্রটির ব্যাকগ্রাউন্ডে তুষারঢাকা পাহাড়, ডান দিকে লাদাখের প্যাংগং লেক ও বাম দিকে গরুড় (হিন্দু পুরাণে উল্লেখিত পক্ষিশ্রেষ্ঠ ও বিষ্ণুর বাহন) ও কৃষ্ণের রথ এবং চাণক্যের (রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিষয়ে প্রাচীন ভারতের এক দিকপাল) উপস্থিতি রয়েছে। পাশাপাশি, আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম যেমন ট্যাংক, অল-টেরেইন যান, পেট্রল বোট, দেশীয় লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টার ও অ্যাপাচি অ্যাটাক হেলিকপ্টারের চিত্রও প্রদর্শিত হয়েছে। সেনাবাহিনীর এক সূত্র নাম প্রকাশ না করা বলেছে, ‘এই চিত্রকর্মটি এমন একটি দেশকে উপস্থাপন করে যার সমৃদ্ধ সভ্যতা রয়েছে, যা বরাবরই ন্যায়পরায়ণ ও প্রয়োজনমত বলপ্রয়োগে বিশ্বাস করে। এটি সাহসী, আধুনিক ও দক্ষ একটি সেনাবাহিনীকে তুলে ধরে, যারা সব সময় নিজেদের সীমান্ত এবং স্বার্থ রক্ষায় প্রস্তুত।’ সূত্রটি আরও জানিয়েছে, এটি মহাভারতের শিক্ষার ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর ন্যায়পরায়ণতার প্রতি চিরস্থায়ী অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে। চাণক্যের কৌশলগত ও দার্শনিক প্রজ্ঞাও এতে অন্তর্ভুক্ত, যা নেতৃত্ব, কূটনীতি ও যুদ্ধে সেনাবাহিনীর দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সহায়ক। সাম্প্রতিক সময়ে প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থ অধ্যয়ন এবং ভারতীয় দর্শন ও সংস্কৃতির ভিত্তিতে একটি ‘দেশজ কৌশলগত শব্দভান্ডার’ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। সূত্র আরও জানিয়েছে, এই নতুন চিত্রকর্মটি আধুনিক ভারতীয় সেনাবাহিনীর উন্নত প্রযুক্তি, স্থল, বায়ু ও সাগরের মধ্যে সমন্বয় এবং প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর হামলার প্রস্তুতিকে তুলে ধরে। এর মূল বার্তা হল-সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগ, শৃঙ্খলা ও বীরত্বের ঐতিহ্যকে সম্মান জানানো, পাশাপাশি ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের অটুট সংকল্প দেখানো। তবে, বেশ কয়েকজন সাবেক সেনাসদস্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই পরিবর্তন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। উত্তরাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এইচএস পানাগ লিখেছেন, ‘গত এক হাজার বছরে ভারতের প্রথম বড় সামরিক বিজয় ও একক জাতি হিসেবে প্রথম বিজয়- ১৯৭১ সালের প্রতীকী ছবি/চিত্রকর্মটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি এমন এক পদক্ষেপ, যা থেকে মনে হয় মিথ, ধর্ম ও দূরবর্তী খণ্ডিত সামন্ত শাসনের ইতিহাস ভবিষ্যতের বিজয়ের অনুপ্রেরণা দেবে।’ প্রসঙ্গত, ভারতের সেনাপ্রধানের লাউঞ্জে বাংলাদেশ সংক্রান্ত যে ছবিটি আগে টাঙানো ছিল, সেটির পটভূমি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের। ঐতিহাসিক ছবিটিতে দেখা যায়, পাকিস্তানের লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজি আত্মসমর্পণের দলিলে সই করছেন। তার পাশে বসে আছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান ও বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনীর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা। তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বাংলাদেশের কমান্ডার এয়ার ভাইস মার্শাল একে খন্দকার, ভাইস অ্যাডমিরাল কৃষ্ণন, এয়ার মার্শাল দেওয়ান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল স্বাগত সিং এবং মেজর জেনারেল জেএফআর জ্যাকব। ভারতীয় বিমানবাহিনীর সাবেক এয়ার ভাইস মার্শাল মনমোহন সিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ঢাকা আত্মসমর্পণ ছবিটি সরানোর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এখানে বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ও সামরিক প্রধানেরা সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ভারতের ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘটনাটির প্রতীকটি দেখেন। কিন্তু, এখন, এই অপটু উদ্যোগ কেন?’ পুরোনো চিত্রকর্মটি কোথায় রাখা হয়েছে, সেটি অন্য কোথাও টানানো হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। আর সরকার বা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ছবি সরানো নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

শেষ রক্ষা হল না দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের

পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল অভিশংসিত হয়েছেন। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দেশটির পার্লামেন্টের ২০৪ জন আইনপ্রণেতা ইওলের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। সংবাদ বিবিসির। শনিবার বিকালে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় বারের মত অভিসংশনের লক্ষ্যে অনাস্থা ভোটের আয়োজন করা হয়। এতে ৩০০ জন আইনপ্রণেতার মধ্যে ২০৪ জন সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। অপর দিকে, ৮৫ জন বিপক্ষে, তিনজন ভোটদানে বিরত ও চারটি ভোট বাতিল হয়।অভিশংসিত হওয়ায় ইওল কর্তৃত্ব হারাবেন। কিন্তু, সাংবিধানিক আদালত তাকে অপসারণ বা পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত তিনি পদে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন। যদিও আইনপ্রণেতাদের এই রায় প্রেসিডেন্টকে স্থায়ীভাবে সরানোর নিশ্চিয়তা দেয় না। কারণ, এখানে আইনি কিছু পথ রয়েছে। অভিশংসনের পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে কয়েক সপ্তাহও লেগে যেতে পারে।এ নিয়ে এখন সাংবিধানিক আদালতে শুনানি হবে। যদি আদালতের নয় সদস্য বিশিষ্ট কাউন্সিলের ছয়জন অভিসংশন প্রস্তাবের পক্ষে মত দেন, তখনই কেবল প্রেসিডেন্টকে স্থায়ীভাবে পদ ছাড়তে হবে। সেই পরিস্থিতিতে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে।এর আগে গত ৭ ডিসেম্বর অভিশংসনের জন্য ভোটাভুটি হয়। তবে, ইউনের ক্ষমতাসীন দলের সাংসদরা তা বয়কট করায় প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়।জাতীয় পরিষদের স্পিকার উ ওন-শিক ওই দিন জানান, মোট ১৯৫ ভোট পড়েছে। ভোট দেয়া সদস্যের সংখ্যা মোট সদস্যের প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়নি।গেল ৩ ডিসেম্বর দেশে আচমকা সামরিক আইন জারি করেন ইউন সুক। জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে’ সমূলে উৎপাটনের কথা বলে আচানক সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন তিনি। তার এ ঘোষণায় পুরো দক্ষিণ কোরিয়া স্তম্ভিত হয়ে যায়। তবে, বিরোধীদের তীব্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মুখে পিছু হটেন ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টির এ নেতা।

ইলন মাস্ককে টপকে পৃথিবীর ধনী পরিবার ওয়ালটন

২০২৪ সালের ধনী পরিবারের তালিকা প্রকাশ করেছে অর্থনীতি বিষয়ক সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গ। সেই তালিকায় স্থান পেয়েছে পৃথিবীল বিভিন্ন দেশের মোট ২৫টি পরিবার। এর মধ্যে শীর্ষ স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ালটন পরিবার। ভারত থেকে দুই পরিবার রয়েছে ব্লুমবার্গের ধনী পরিবারের তালিকায়। ২০২৪ সালের শেষে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী পরিবার হল ওয়ালমার্টের ওয়ালটন পরিবার। তাদের সম্পদের পরিমাণ ৪৩২ দশমিক চার বিলিয়ন ডলার। বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্কের ব্যক্তিগত সম্পদ ও আরবের রাজপরিবারগুলোর সম্পদের চেয়েও যা বেশি। ভারতের মধ্যে থেকে এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে আম্বানি পরিবার। তারা রয়েছেন অষ্টম স্থানে। আর শাপুরজি পলোনজি মিস্ত্রি পরিবার রয়েছে ২৩তম স্থানে। ওয়ালটন পরিবারের শীর্ষ স্থানে ফিরে আসা: ওয়ালটন পরিবার ব্লুমবার্গের ধনীতম পরিবারের তালিকায় ফিরে এসেছে মূলত ওয়ালমার্টের শেয়ারের কারণে। ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত, এ বছরের মধ্যে ওয়ালমার্টের শেয়ারের মূল্য ৮০ শতাংশ বেড়েছে, যা তাদের সম্মিলিত পারিবারিক সম্পদ ১৭২ দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের সম্পদ বৃদ্ধির হার ছিল দিনে প্রায় ৪৭৩ দশমিক দুই মিলিয়ন ডলার বা প্রতি মিনিটে তিন লাখ ২৮ হাজার ৫৭৭ ডলার। পৃথিবীর শীর্ষ পাঁচ ধনী পরিবার: ওয়ালটন পরিবার (ওয়ালমার্ট): ৪৩২ দশমিক চার বিলিয়ন ডলারের মালিক তারা, যা কোম্পানির ৪৬ শতাংশ শেয়ার থেকে এসেছে। এই তিন প্রজন্মের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করে। ওয়ালমার্টের দশ হাজার ৬০০টিরও বেশি স্টোর রয়েছে। আল নাহিয়ান পরিবার (সংযুক্ত আরব আমিরাত): ৩২৩ দশমকি নয় বিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আল নাহিয়ান। এই পরিবারটি তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল শাসন করে। তা ছাড়া, তারা আবুধাবির শেয়ার মার্কেটের ৬৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। আল থানি পরিবার (কাতার): ১৭২ দশমিক নয় বিলিয়ন ডলারের মালিক এই পরিবার তৃতীয় স্থানে রয়েছে। গ্যাস ও তেলই তাদের মূল সম্পদ। হারমেস পরিবার (ফ্রান্স): বিলাসবহুল পণ্য প্রস্তুতকারী এই পরিবারের সম্পদের পরিমাণ ১৭০ দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলার। কোখ পরিবার (যুক্তরাষ্ট্র): ১৪৮ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলারের সম্পদসহ তেল ব্যবসায় যুক্ত তিন প্রজন্মের পরিবার। ভারতের দুইটি পরিবার: আম্বানি পরিবার: ৯৯ দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে অষ্টম স্থানে রয়েছে মুকেশ আম্বানির পরিবার। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের বাড়-বাড়ন্ত তাদের সম্পদের মূল উৎস। মিস্ত্রি পরিবার (শাপুরজি পলোনজি): পাঁচ প্রজন্মের এই পরিবার তালিকায় ২৩তম স্থানে, তাদের সম্পদের পরিমাণ ৪১ দশমিক চার বিলিয়ন ডলার। পৃথিবীর শীর্ষ ১৫ ধনী পরিবারের তালিকা (২০২৪): ওয়ালটন, আল নাহিয়ান, আল থানি, হারমেস, কোখ, আল সাউদ (১৪০ বিলিয়ন ডলার), মার্স (১৩৩.৮ বিলিয়ন ডলার), আম্বানি, ভেরথেইমার (৮৮ বিলিয়ন ডলার), থমসন (৮৭.১ বিলিয়ন ডলার), জনসন (৭২.৪ বিলিয়ন ডলার), আলব্রেখট (৬০.২ বিলিয়ন ডলার), প্রিৎসকার (৫৯.৪ বিলিয়ন ডলার), কারগিল-ম্যাকমিলান (৫৬ বিলিয়ন ডলার), ওফার (৫৫.৬ বিলিয়ন ডলার)।

কানাডায় ৩ ভারতীয় ছাত্রের মৃত্যুতে দিল্লির উদ্বেগ

কানাডায় গত সপ্তাহে তিন ভারতীয় ছাত্রের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল কানাডার কাছে এ উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। এই ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক ট্র্যাজেডি’ আখ্যা দিয়ে সন্তপ্ত পরিবারকে শোক জানান তিনি। তিনি বলেন, এই মর্মান্তিক ঘটনায় কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয়রা নড়ে গিয়েছেন। আমাদের হাই কমিশন যতটা পারছে সহায়তা করছে।” জয়সওয়াল বলেন, কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক ও ছাত্রদের জন্য নির্দেশিকা জারি করেছি, যাতে তারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করেন। সে দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে, অপরাধের ঘটনা বাড়ছে। চোখ-কান খোলা রাখুন। এর পাশাপাশি, ভিসা নিয়ে ফের উত্তপ্ত ভারত-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। কানাডার ভ্যাঙ্কুভারের ভারতীয় কনস্যুলেটের ভিসা ফর্মে শিখ কানাডিয়ানদের লিখিত ভাবে জানাতে হচ্ছে, তারা খলিস্তানপন্থী আন্দোলনকে সমর্থন করেন না। এর পরে কানাডার খলিস্থানপন্থী নেতা বিক্রমজিৎ সিংহের হুমকি দেন, যদি কানাডায় বসবাসরত শিখদের পর্যটন ভিসা না দেয় দিল্লি, তবে কানাডায় সব ভারতীয় কনস্যুলেট ও দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হোক। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে জয়সওয়াল গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা কাকে ভিসা দেব, কাকে দেব না- এ আমাদের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। যারা আমাদের ছোট করে দেখে, তাদের ভিসা না দেওয়াটাও আমাদের সিদ্ধান্ত।

বাংলাদেশের সঙ্গে লাভজনক সম্পর্ক চায় ভারত: এস. জয়শঙ্কর

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্কর শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) লোকসভায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক লাভজনক এবং স্থিতিশীল সম্পর্কের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নতুন সরকার ভারতের সঙ্গে একটি দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করবে। যা দুই দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জন্য লাভজনক হবে।লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, "আমাদের দুই দেশের মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে ভালো অতীত রয়েছে। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের নতুন সরকার ভারতের সঙ্গে একটি স্থিতিশীল ও পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক স্থির করবে।" একই সময়ে জয়শঙ্কর বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, "আমরা আমাদের উদ্বেগের বিষয়ে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। সম্প্রতি পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি ঢাকা সফর করেছেন এবং এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন। আমাদের প্রত্যাশা, বাংলাদেশ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেবে।" উল্লেখযোগ্য যে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি গত ৯ ডিসেম্বর ঢাকা সফরে এসে ভারতের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, "আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক চাই।" তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি তিনি সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ জানিয়েছেন।

ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করলেন ম্যাক্রোঁ

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী হিসবে মধ্যপন্থী ফ্রাঁসোয়া বায়রুর নাম ঘোষণা করেছেন, যার কাঁধে দেশের রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ম্যাক্রোঁ এ ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স। মধ্যপন্থী জোটের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ৭৩ বছর বয়সী বায়রু কয়েক দশক ধরে ফরাসি রাজনীতিতে সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। জাতীয় পরিষদে কোনো একক দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বায়রুর প্রথম কাজ হবে একটা বাজেট পাস করা। তবে ব্যাপকভাবে বিভক্ত পার্লামেন্টে কাজটি তার জন্য বেশ কঠিন হবে বলেই মনে হচ্ছে। এর আগে, ফ্রান্সে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে গত সপ্তাহে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ে। ফলে দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র তিন মাসের মাথায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। ফ্রান্সে সবশেষ সংসদীয় নির্বাচনে কোনো দলের সামগ্রিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় একটি ঝুলন্ত সংসদ গঠিত হয়। সেখানে সরকারের বেঁচে থাকার একমাত্র চাবিকাঠি থাকে অতি ডানপন্থীদের হাতে। এদিকে, গত সপ্তাহে ম্যাক্রোঁ অঙ্গীকার করেছেন, ২০২৭ সালে তার মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় থাকবেন। যদিও বিরোধীদের কেউ কেউ তারও পদত্যাগ দাবি জানিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান দুর্বল হওয়ায় উদ্বেগে ভারত?

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের শাসনের অবসানকে ইরানের জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। সে দেশের (ইরানের) সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্রদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতন হয়েছে। তিনি সিরিয়া ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পর সেখানে ইরানি দূতাবাসেও হামলা চালিয়েছে বিদ্রোহীরা। এর আগে লেবাননে ইরানের ছায়া সংগঠন হিজবুল্লাহকে দুর্বল করে দিয়েছে ইসরায়েল। আর হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে পড়ার কারণে লেবাননে ইরানের উপস্থিতিও দুর্বল হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েল হামাসের শীর্ষ নেতাকে হত্যা করে তাদের (হামাসের) ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং গত মেয়াদে তাকে ইরানের প্রতি অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নিতে দেখা গিয়েছিল। এই সব মিলিয়ে ইরানের পরিস্থিতি এখন বেশ উদ্বেগজনক। সিরিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাবলি ইরাকেও প্রভাব ফেলতে পারে। সিরিয়ার পর, ইরাক ও লেবাননে তুরস্ক তার প্রভাব বাড়াতে পারেও অনুমান করা হচ্ছে। এই সমস্ত কিছুর প্রভাব পশ্চিম এশিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্যের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সিরিয়ায় ইরানের দুর্বল হয়ে পড়াটা সে দেশের ভাবমূর্তি এবং আঞ্চলিক কৌশলের জন্য মারাত্মক আঘাত। এই অঞ্চলে তুরস্কের অগ্রসর হওয়ার বিষয়টা ইরানের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ। প্রসঙ্গত, ইরান কিন্তু তুরস্ককে মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করে। একদিকে তুরস্ক আজারবাইজানের সমর্থক আর অন্যদিকে ইরান সমর্থন করে আর্মেনিয়াকে। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তুরস্কের সহায়তায় নাগোরনো-কারাবাখে জয় পেয়েছিল আজারবাইজান। অর্থাৎ, এখানেও ইরানকে পরাজয় স্বীকার করতে হয়েছে। সিরিয়ায় সাম্প্রতিক ঘটনাবলির আবহে 'উৎসাহিত' হয়ে তুরস্ক জাঙ্গাজুর করিডোর বাণিজ্য রুট নিয়ন্ত্রণের জন্য আজারবাইজানকে সমর্থন করতে পারে। তারা যদি সেটা করে, তাহলে আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া সরাসরি তুরস্কের সঙ্গে যুক্ত হবে আর ইরান ককেশাস থেকে বেরিয়ে যাবে। এই সমস্ত কিছু মিলিয়ে, এই মুহূর্তে সিরিয়ার কিন্তু আগের মতো শক্ত পরিস্থিতিতে নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর প্রভাব একাধিক দেশের ওপর পড়তে পারে যে তালিকায় ভারতও রয়েছে। ইরান কি সত্যিই দুর্বল হয়ে পড়ছে? ইরানকে পশ্চিম এশিয়ার একটা শক্তি হিসেবে দেখা হয়, যা ওই অঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখে। কারণ, পশ্চিমা মিত্র সৌদি আরব, ইসরায়েল ও তুরস্কের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করে আসছে ইরান। সৌদি আরব ও অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলোতে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করা তালমিজ আহমেদ সম্প্রতি করণ থাপারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘ইসরায়েল এখন পুরো অঞ্চলকে দীর্ঘ যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। এমনটা যদি হয়, তাহলে সেটা কোনোভাবেই ভারতের জন্য মঙ্গলজনক হবে না।’ কেন এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে তাও ব্যাখ্যা করেছেন তালমিজ আহমেদ। তার কথায়, ‘ভারতের উচিত ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করে সেটা বন্ধ করা। যদি এই অঞ্চলে সংঘাত বাড়তে থাকে, তাহলে উপসাগরীয় দেশগুলোতে বসবাসকারী প্রায় ৮৫ লক্ষ ভারতীয় নাগরিককে দেশে ফিরে আসতে হবে।’ ‘ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যদি ওই অঞ্চলে ইরান দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে ভারতের স্বার্থও দুর্বল হয়ে পড়বে।’ এই বিষয়ে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ওয়েস্ট এশিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক অশ্বিনী মহাপাত্রকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, বর্তমানে ইরানের অবস্থান দুর্বল হয়েছে বটে তবে চিরকালের জন্য তারা দুর্বল হয়ে যায়নি। অধ্যাপক মহাপাত্র বলছেন, ‘ইরানকে পশ্চিম এশিয়ায় একটা শক্তি হিসেবে ধরে রাখা ভারতের স্বার্থের জন্যই প্রয়োজন। ইরান দুর্বল হলে সুন্নি শাসকদের আধিপত্য বাড়বে এবং তারা পাকিস্তানকে সমর্থন করবে।’ ‘তুরস্কের প্রভাব বাড়বে এবং সেটা পাকিস্তানকেও সাহায্য করবে। এই পরিস্থিতিতে ইরানই পশ্চিম এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্য আনে।’ কীভাবে ভারতের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে তা ব্যাখ্যা করেছেন অধ্যাপক মহাপাত্র। তিনি বলেছেন, ‘ইরানের মাধ্যমেই ভারত মধ্য এশিয়ার বাজারে পৌঁছায়। ইরানে চাবাহার বন্দর নির্মাণ করছে ভারত। এই পরিস্থিতিতে ইরান অস্থির হয়ে উঠলে নানান দিক থেকে ভারতের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ ‘কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে ইরান এই ক্ষমতা আবার ফিরে পাবে। এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। ইরান প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। তারা নিজেদের পরমাণু কর্মসূচিও ত্বরান্বিত করবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ইরান জানে কীভাবে সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে হয়।’ ভারতের স্বার্থের ওপর প্রভাব বাশার আল-আসাদের পরিবার ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ইরানের প্রধান আঞ্চলিক মিত্র। শুধু তাই নয়, ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ইরান এবং ইরাকের মধ্যে যুদ্ধে সিরিয়াই একমাত্র আরব দেশ ছিল যারা ইরানকে সমর্থন করেছিল। বাকি আরব দেশগুলো কিন্তু ইরাকের সঙ্গে ছিল। এরপর ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ বাড়তে থাকে, কিন্তু ইরান তার সঙ্গ ছাড়েনি। এদিকে, ইরান কিন্তু সিরিয়া হয়ে লেবাননে হিজবুল্লাহ এবং গাজায় হামাসকে সহায়তা পাঠাত। আফতাব কমল পাশা জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ওয়েস্ট এশিয়া স্টাডিজের অধ্যাপক। অধ্যাপক পাশা মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরানের সমস্যা হয়তো বেড়েছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও অনেক কিছুই সে দেশের অনুকূলে যাবে। অধ্যাপক পাশা বলছেন, ‘প্রথমত, ইরান দুর্বল হয়নি। ইরান হিজবুল্লাহকে ৩০০০ কোটি ডলার দিয়েছে। সিরিয়াকেও তারা ১০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। এখন এই সমস্ত অর্থ নিজেকে শক্তিশালী করার জন্য ব্যয় করবে ইরান। এতে তাদের পরমাণু কর্মসূচি ত্বরান্বিত হবে।’ এর পাশাপাশি, অন্য একটা বিষয়ও উল্লেখ করেছেন অধ্যাপক পাশা। তার কথায়, ‘এরদোয়ান হয়তো এখনো মনে করতে পারেন যে, তিনি জয়ী হয়েছেন, কিন্তু তার পুরো মনোযোগ ২০২৮ সালের নির্বাচনের দিকে। সিরিয়ায় কিন্তু এই অস্থির অবস্থা বজায় থাকবে। আমি মনে করি, সিরিয়াকে অনেক ভাগে ভাগ হতে পারে। কিছু এলাকা ইসরায়েলের দখলে চলে যাবে।’ ‘ইসরায়েল ইতিমধ্যেই সেই কাজ শুরুও করে দিয়েছে। কিছু অংশ তুরস্কের দখলে চলে যাবে। সুন্নি ও আলবীয় একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে দেবে। কুর্দিরাও তাদের ভাগ দাবি করবে। এই অবস্থায় ইরানের পক্ষে সিরিয়ায় প্রবেশ করা কিন্তু কঠিন কাজ হবে না।’ পশ্চিম এশিয়ায় ইরান দুর্বল হলে ভারতের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক পাশা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ইরান দুর্বল হওয়ার ফলে কী হতে পারে তা ব্যাখ্যা করেছেন অধ্যাপক পাশা। তিনি বলছেন, ‘ইরান দুর্বল হওয়ার অর্থ হলো তুরস্ক ও অন্যান্য সুন্নি দেশগুলোর শক্তিশালী হয়ে ওঠা। এই পরিস্থিতি পাকিস্তানের জন্য আরও অনুকূল হবে। ভারত ও ইরান থেকে সস্তায় গ্যাস পেতে পারে, কিন্তু আমেরিকার ভয়ে তারা (ভারত) সেই সাহস দেখাচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘ইরান বরাবরই অভিযোগ করে আসছে, তাদের বিষয়ে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সামনে মাথা নত করে। কিন্তু ভারত বুঝতে পেরেছে ইরান তার জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ দেশ। মধ্যপ্রাচ্যে শক্তিশালী ইসরাইলের চাইতে শক্তিশালী ইরানকে বেশি প্রয়োজন ভারতের।’ ২০১৯ সালের নভেম্বরে ইরানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ মন্তব্য করেছিলেন, ভারতের উচিত তার মেরুদণ্ড শক্ত করা, যাতে তারা মার্কিন চাপের কাছে মাথা নত না করে। জারিফ ভারত ও ইরানের সম্পর্কে সুফি ঐতিহ্যের কথাও উল্লেখ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আগে তাদের আশা ছিল যে, ভারত ইরানের তেলের বৃহত্তম ক্রেতা হয়ে উঠবে। কিন্তু তা না হওয়ায়, তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ জানিয়েছিলেন, মার্কিন চাপের মুখে ভারতের আরও প্রতিরোধ দেখানো উচিত। তিনি বলেছিলেন, ‘ইরান বুঝতে পেরেছে যে, ভারত তার (ইরানের) ওপর নিষেধাজ্ঞা চায় না, কিন্তু একইভাবে তারা (ভারত) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষুব্ধ করতে চায় না। আসলে অনেক সময় মানুষ কিছু একটা চায় অথচ তাকে অন্য কিছু করতে হয়।’ ‘এটা বৈশ্বিক স্তরে একটা কৌশলগত ভুল এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই একই কাজ করছে। আপনি ভুল জিনিস যত গ্রহণ করবেন তার সমাপ্তি হবে না। আমেরিকার চাপে ভারত ইতোমধ্যে ইরান থেকে তেল কিনছে না।’ -বিবিসি বাংলা

দুই সপ্তাহে সিরিয়ায় ১১ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের পতন ঘটাতে গত ২৭ নভেম্বর বিদ্রোহীদের অভিযান শুরুর পর দুই সপ্তাহে অন্তত ১১ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। জাতিসংঘের ত্রাণ এবং মানবিক সহায়তা সংক্রান্ত সংস্থা (ওসিএইচএ) বলছে, নতুন করে যারা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সিরিয়ার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটিরিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ)। শুক্রবার আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তত ছয় লাখ ৪০ হাজার মানুষ আলেপ্পো থেকে পালিয়েছে। আর ইদলিব থেকে তিন লাখ ৩৪ হাজার ও হামা শহর থেকে এক লাখ ৩৬ হাজার মানুষ পালিয়েছে। অন্যদিকে অন্য এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত চার লাখ ৩৮ হাজার মানুষ ইদলিবে এসেছে। এছাড়া হামায় এক লাখ ৭০ হাজার ও দামেস্কের গ্রামীণ এলাকায় এক লাখ ২৩ হাজার মানুষ এসেছে। ওসিএইচএ বলছে, চার লাখেরও বেশি মানুষ সিরিয়ার উত্তর-পূর্ব এলাকার ২৪০টি আশ্রয়কেন্দে অবস্থান নিয়েছে। সেখানে তারা মানবিক সহায়তা পাচ্ছে। জাতিসংঘ বলছে, বিদ্রোহীদের অভিযান শুরুর পর সাত লাখেরও বেশি মানুষকে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়েছে। সিরিয়ার বিদ্রোহীরা দেশটির উত্তর-পশ্চিমের ইদলিবে তাদের ঘাঁটি থেকে সরকারবিরোধী বিস্ময়কর অভিযান শুরুর পর গত ৮ ডিসেম্বর বাশার আল আসাদ সরকারের পতন হয়। প্রেসিডেন্ট পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন।

ভারতের হাসপাতালে আগুন লেগে ৬ রোগীর মৃত্যু

ভারতের তামিলনাড়ুর দিনদিগুলে একটি বেসরকারি হাসপাতালে আগুন লেগে ৬ রোগী নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে দিনদিগুলের ত্রিচি রোডে সিটি হাসপাতালে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, উদ্ধারকাজ চলাকালীন হাসপাতালের লিফটে ৬ জনকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাদের দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই তাদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ছয়জনেরই নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েন চিকিৎসকরা। তবে এরইমধ্যে সেই হাসপাতাল থেকে ৩০ রোগীকে উদ্ধার করে নিরাপদে হাসপাতালে পাঠাতে সক্ষম হয় দমকল বাহিনী। হাসপাতাল সূত্রের বরাতে গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্য রোগীদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী এক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এদের বেশিরভাগকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা গেছে, আগুন লাগার পর ওই হাসপাতাল থেকে ধোঁয়া উড়ছে। দিন্দিগুলের জেলাশাসক এমএন পুঙ্গোডি বার্তাসংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘যে হাসপাতালে আগুন লেগেছিল, সেখান থেকে রোগীদের উদ্ধার করে অন্য সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ’ গত নভেম্বরেও ভারতে হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল। উত্তর প্রদেশের ঝাঁসির মহারানি লক্ষ্মীবাঈ মেডিক্যাল কলেজের নবজাতকদের জন্য নির্ধারিত আইসিইউ বিভাগে আগুন লাগে। সেই অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১১ জন নবজাতকের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়াও ১৬ জন এই অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়েছিল।

গাজায় ইসরায়েলিদের বর্বর হামলায় নিহত আরও ৩০

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ হামলায় আহত হয়েছেন ৯৯ জন। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৮৩৫ জনে। বৃহস্পতিবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত এক লাখ ৬ হাজার ৩৫৬ জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৩০ জন নিহত এবং আরও ৯৯ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

ফের টাইম ম্যাগাজিনের ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ ট্রাম্প

মার্কিন সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিন দ্বিতীয়বারের মতো আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাদের ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে ঘোষণা করেছে । আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষিক্ত হতে যাওয়া ট্রাম্প তাঁর ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন এবং রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করার জন্য এ স্বীকৃতি পেয়েছেন। এর আগে ২০১৬ সালে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারানোর পর ট্রাম্প প্রথমবার এ খেতাব পেয়েছিলেন। এবার পারসন অব দ্য ইয়ার লড়াইয়ে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ছাড়াও মনোনীত হয়েছিলেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেনবাউম, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির স্ত্রী অর্থনীতিবিদ ইউলিয়া নাভালনিয়া।

নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে মানা রাশিয়ার

যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোতে ভ্রমণ করতে নিজ দেশের নাগরিকদের নিষেধ করেছে রাশিয়া। রাশিয়ার নাগরিকরা সেই রাজ্যগুলোর প্রশাসনের ‘শিকার’ হতে পারে বলে দাবি করেছে পুতিন প্রশাসন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এই সতর্কতা জারি করেন। সংবাদ রয়টার্সের। সতর্কতা জারি করে মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের সাম্প্রতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিগত বা সরকারি ভ্রমণে গুরুতর ঝুঁকি আছে।’ সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আপনাদের অনুরোধ করছি, এই ছুটির মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কিছু দেশে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকবেন।’ রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকেরা বলছেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দুই দেশের বর্তমান সম্পর্ক ১৯৬২ সালের স্নায়ুযুদ্ধের চেয়েও খারাপ পর্যায়ে চলে গেছে।’ অন্য দিকে, হয়রানি বা বন্দি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যুক্তরাষ্ট্রও নিজেদের নাগরিকদের রাশিয়ায় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে বলেছে। এ দিকে, ইউক্রেনকে চলমান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা শত শত কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েছে এবং তারা রুশ বাহিনীকে পরাজিত করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধে বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, ‘একগুঁয়ে পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়ার পোস্ট-সোভিয়েত স্বার্থকে উপেক্ষা করেছে। তারা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনকে নিজের প্রভাবশালী অঞ্চলে টানতে চেয়েছে এবং ইউক্রেনের মাধ্যমে রাশিয়াকে দুর্বল করার লক্ষ্যে একটি প্রক্সি যুদ্ধ বাঁধিয়েছে।’ সম্প্রতি ইউক্রেনের জন্য প্রায় ১০০ কোটি ডলারের একটি সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে বাইডেন প্রশাসন। ধারণা করা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের আগে যত দ্রুত সম্ভব এই সহায়তা পাঠানোর চেষ্টা করছেন বাইডেন। তবে, ট্রাম্পের কিছু বক্তব্য ইউক্রেনের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। কারণ, নির্বাচনে জয়ী হয়ে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যুদ্ধ শেষ করবেন। তাই, ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা না থাকলে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে ইউক্রেন টিকে থাকতে পারবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

দ্বিতীয় বার টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ট্রাম্প

প্রভাবশালী সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনের ২০২৪ সালের ‘বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব’ নির্বাচিত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বিবৃতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে টাইম ম্যাগাজিন। এ নিয়ে দ্বিতীয় বারের মত মার্কিন এই প্রভাবশালী সাময়িকী তাকে বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে বেছে নিল। বিবৃতিতে টাইম ম্যাগাজিন বলেছে, ‘‘ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন, প্রজন্মের রাজনৈতিক পুনর্গঠনে নেতৃত্বদান, আমেরিকান প্রেসিডেন্সির পুনর্নির্মাণ ও বিশ্বে আমেরিকার ভূমিকা পরিবর্তন করার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প টাইমের ২০২৪ সালের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব।’’ টাইমের প্রধান সম্পাদক স্যাম জ্যাকবস বলেছেন, ‘ট্রাম্প এমন একজন ব্যক্তি, যিনি ‘ভাল কিংবা খারাপ’ যাই হোক না কেন, ২০২৪ সালে গণমাধ্যমের খবরে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছেন।’ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৬ সালেও প্রথম বারের মত ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল টাইম। ১৯২৭ সাল থেকে বর্ষসেরা ব্যক্তির খেতাব দেওয়া শুরু করে টাইম ম্যাগাজিন। মার্কিন এই সাময়িকী তখন থেকে এমন ব্যক্তি বা আন্দোলনকে স্বীকৃতি দেয়, যারা বিশ্বজুড়ে ‘ভালো কিংবা খারাপের জন্য...’ সারা বছরের ঘটনাপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেন। অতীতে জলবায়ু আন্দোলন কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জুকারবার্গ, পোপ ফ্রান্সিস ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও টাইমের বর্ষসেরা নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রত্যেক বছরের বিজয়ী নির্বাচিত করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন টাইমের সম্পাদকরা। ২০২৪ সালের বর্ষসেরা পুরস্কারের জন্য অন্তত দশজনের নাম বিবেচনায় নিয়েছিল টাইম। তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের মালিক ইলন মাস্কও ছিলেন। টাইম ম্যাগাজিনের প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকায় ট্রাম্পের বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘আশ্চর্যজনক রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন’ করায় বর্ষসেরার খেতাব জিতেছেন তিনি।’ এই সাময়িকী বলেছে,‘ট্রাম্প আমেরিকান ভোটারদের পুনর্বিন্যাস করেছেন, তরুণ পুরুষ ভোটারদের সক্রিয় করেছেন; যারা তার বিজয়ে অবদান রেখেছে। তরুণ ভোটাররাই তাকে প্রথম বারের মত পপুলারও ভোটে জয়ী করেছেন এবং দোদুল্যমান প্রত্যেকটি রাজ্য লালে পরিণত করেছেন।’

যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার বিমান ঘাঁটিতে হামলা ইউক্রেনের

রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে বিমান ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানোর দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে, তাদের ছোড়া সব ক্ষেপণাস্ত্রই প্রতিহত করার দাবি করেছে রাশিয়া। এ দিকে মার্কিন গোয়েন্দরা বলছেন, ‘ইউক্রেনে যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে রাশিয়া।’ রাশিয়ার অভ্যন্তরে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে ভ্লাদিমির পুতিনের কড়া হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভের সামরিক বিমানঘাঁটিতে পশ্চিমাদের তৈরি এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় ইউক্রেন। এরমধ্যে দুইটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার পাশাপাশি বাকিগুলো অত্যাধুনিক যুদ্ধসরঞ্জাম দিয়ে প্রতিহত করার দাবি করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।তবে, রোস্তভ অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর জানিয়েছেন, ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একটি শিল্প স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেইসঙ্গে পার্কিংয়ে থাকা ১৫টি গাড়ি পুড়ে গেছে। অন্য দিকে, কুরস্ক অঞ্চলের আরও দুইটি বসতি রাশিয়ার সেনারা নিজেদের দখলে নিয়েছে বলে দাবি রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।যদিও ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর দাবি, তাদের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রাশিয়ার সামরিক বিমান ঘাঁটির কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেইসঙ্গে দুটি প্রশাসনিক ভবন ও গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলেও দাবি তাদের। ইউক্রেন জানায়, রাশিয়ার সেনাদের সঙ্গে ১৪০টির মত সম্মুখ যুদ্ধ চলছে। এরমধ্যে পোকরোভস্ক ও কুরাখোভ অঞ্চলে সবচেয়ে তীব্র সংঘাত হয়।গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে তাদের সরবরাহ করা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার অনুমোদন দেয়। এর আগে হোয়াইট হাউজ সংঘাত বৃদ্ধির আশঙ্কায় কিয়েভের জন্য এই অস্ত্রের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তবে, রাশিয়া যে কোন মুহূর্তে ইউক্রেনে আরও বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র।মার্কিন গোয়েন্দারা এমন তথ্য পেয়েছে বলে জানান পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং। তিনি দাবি করেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই রাশিয়া এই হামলা চালাতে পারে।এ দিকে, বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা জানান, যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের কোন দাবি বা শর্ত মেনে নেবে না রাশিয়া। তবে, নতুন নিবার্চিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসতে তাদের কোন সমস্যা নেই। ট্রাম্প প্রশাসনের আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

‘অপরাধ ছাড়া গ্রেফতারের’ অনুমতিসহ বড় পরিকল্পনা ট্রাম্পের!

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি তার ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনেই ২৫টিরও বেশি নির্বাহী আদেশ ও নির্দেশ দেয়ার পরিকল্পনা করছেন। এর মধ্যে, অভিবাসন কর্মকর্তাদের যে কোন ব্যক্তিকে ‘কোন ধরনের অপরাধ ছাড়াই’ গ্রেফতারের অনুমতি দেয়ার বিষয়টিও রয়েছে। এছাড়া, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিতে মার্কিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে একমাত্র মাপকাঠি হবে মেধা। সংবাদ রয়টার্সের। নির্বাচনী প্রচারণায় নানা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ইস্যু।সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে, ট্রাম্পের জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্বের নীতি বাতিলের বিষয়টি উঠে আসে। তবে, কবে তা বাস্তবায়ন হবে- সে বিষয়ে কিছু জানা না গেলেও জানা যায়, ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনই অভিবাসনসহ ২৫টির বেশি নীতিতে বড় পরিবর্তন আনবেন ট্রাম্প।জো বাইডেনের উদার সীমান্ত নীতির পরিবর্তনের পাশাপাশি মেক্সিকো থেকে অভিবাসীদের ঢল ঠেকানোই ট্রাম্পের প্রথম দিনের কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বলে জানা গেছে।ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে সই করবেন, যাতে অভিবাসন কর্মকর্তাদের অপরাধমূলক রেকর্ড ছাড়াই যে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হতে পারে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আরও মার্কিন সেনা মোতায়েন ও সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণে কাজ পুনরায় শুরু করার নির্বাহী আদেশ দিতে পারেন ট্রাম্প।ট্রাম্পের শুরুর দিকের নির্বাহী আদেশের মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হবে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি উৎপাদন বৃদ্ধি। এর আগে, বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানিতে সাময়িক বিরতি দিয়েছিলেন। ক্ষমতায় আসার প্রথম দিনই এ বিরতি সরিয়ে দিতে পারেন ট্রাম্প।এছাড়া, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে একমাত্র মাপকাঠি হবে মেধা। জাতি বা লিঙ্গের ওপর ভিত্তি করে আলাদা কোন কোটা রাখা হবে না।

চুক্তি লঙ্ঘন: সিরিয়ার গোলান মালভূমির আরো ভেতরে ইসরাইলের সৈন্যরা

চুক্তি লঙ্ঘন করে সিরিয়ার গোলান মালভূমির আরো ভেতরে ঢুকেছে ইসরাইলের সৈন্যরা। ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালাচ্ছে লাতাকিয়া ও তার্তুজ বন্দরে। দখলে নিয়েছে বেশ কয়েকটি ট্যাঙ্ক ও বহু অস্ত্র সরঞ্জাম। স্বৈরাচারের অত্যাচার থেকে সিরিয়ার মানুষ মুক্ত হলেও পুরোপুরি শান্তি ফেরেনি দেশটিতে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরও একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। চুক্তি লঙ্ঘন করে সিরিয়া অধিকৃত গোলান মালভূমির আরও ভেতরে ঢুকে আক্রমণ চালাচ্ছে নেতানিয়াহু বাহিনী। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাতাকিয়া ও তার্তুজ বন্দরসহ বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা ও গবেষণা কেন্দ্র। অসামরিক অঞ্চলে অবস্থান নিয়ে সিরিয়ার বেশ কয়েকটি ট্যাঙ্ক ও বিপুল সংখ্যক অস্ত্র দখলে নেয়ার অভিযোগও উঠেছে ইসরাইলের সেনাদের বিরুদ্ধে।সিরিয়ায় ইসরাইলের সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। এছাড়া, বাফার জোন বা অসামরিক অঞ্চলে নেতানিয়াহুর সেনাদের অবস্থানকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করে সেখান থেকে সেনাদের প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স। আর চলমান পরিস্থিতিতে সিরিয়ায় ক্ষমতা বদলের প্রক্রিয়া যাতে মসৃণ হয় সে বিষয়ে সহযোগিতার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে, আইএসের উত্থান ঠেকাতে সতর্ক দৃষ্টি রাখার কথা জানান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিংকেন।সরকার পতনের পর সিরিয়ায় একের পর এক শহরের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তাহরির আল-শাম। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দেশটির পূর্বাঞ্চলের শহর দেইর আল-জেরের নিয়ন্ত্রণ নেন তারা।এদিকে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে নিজ দেশে ফিরতে শুরু করেছেন বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেয়া হাজারও সিরীয়। প্রতিনিয়ত সিরিয়ার সীমান্তে ভিড় করছেন তারা। বুধবার লেবানন ও সিরিয়ার মধ্যবর্তী মাসনা ক্রসিং পয়েন্টে হাজার হাজার মানুষের ভিড় দেখা যায়। একই দৃশ্য দেখা যায় তুরস্ক ও সিরিয়ার মধ্যবর্তী সীমান্তেও।

শেখ হাসিনার বক্তব্য সমর্থন করে না ভারত: বিক্রম মিশ্রী

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে যে সকল সমালোচনা করেন তা ভারত সমর্থন করে না। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) কংগ্রেস নেতা শশী থারুর নেতৃত্বে ভারতের সংসদের পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী এই মন্তব্য করেন। মিশ্রী বলেন, ভারতের সম্পর্ক বাংলাদেশের সাথে কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এই সম্পর্কের ভিত্তি বাংলাদেশের জনগণের মধ্যেই নিহিত। তিনি জানান, ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে কোনো আলাদা প্ল্যাটফর্ম প্রদান করেনি, বরং হাসিনা তার ব্যক্তিগত যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে এইসব মন্তব্য করে চলেছেন। মিশ্রী আরও বলেন, ঢাকায় তার সফরের সময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জানিয়েছেন, ভারত জনগণের সাথে সম্পর্ক অগ্রাধিকার দেয় এবং বর্তমান সরকারের সাথে কাজ চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক। তিনি জানান, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা গুলো নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের এক ধরনের অস্বীকৃতি রয়েছে যা উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এই হামলা গুলোকে আওয়ামী লীগের উপর হামলা বলে যুক্তি দেখালেও মিশ্রী ব্যাখ্যা করেন, এমন যুক্তি এই ধরনের আক্রমণের ‘ন্যায্যতা’ প্রমাণ করতে পারে না। তিনি মন্দির ও ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর হামলার ঘটনাগুলোর সত্যতা মেনে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। তবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের এই ধরনের ঘটনায় যে ৮৮ জনকে গ্রেপ্তারের করেছে তা ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেন। এই সময় মিশ্রী সাবেক ইসকন নেতার গ্রেপ্তারের বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কিছু সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সন্ত্রাসী’র ভারত-বিরোধী বক্তব্যের বিষয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ভুল তথ্য প্রচারণার অভিযোগ আনা হয়। তিনি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্য ও সংযোগ অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বলেন যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে রেল লিঙ্ক, বাস লিঙ্ক এবং অভ্যন্তরীণ জলপথ তৈরি হয়েছে। তবে, তিনি কমিটিকে জানিয়েছেন যে দুই দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী রেল পরিষেবা ‘স্থগিত’ রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং বলেন, ২০২২ সালে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভারত ষোল লাখ ভিসা ইস্যু করেছে। অবশেষে, তিনি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি পুনর্বিবেচনার বিষয়টি তার আলোচনায় আসেনি বলে জানান।

সাংবাদিকদের জন্য বিপদজনক দেশের শীর্ষ তিনে বাংলাদেশ

বিশ্বজুড়ে ২০২৪ সালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৪ সাংবাদিক। এদের মধ্যে পাঁচজনই বাংলাদেশে নিহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপদজনক দেশের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সাংবাদিকতা বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের (আরএসএফ) এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি। আরএসএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৪ সাংবাদিক। আর সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপদজনক অবস্থানের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ফিলিস্তিন, যেখানে নিহত হয়েছেন ১৬ সাংবাদিক। এরপরই আছে পাকিস্তানের নাম। সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন সাত সাংবাদিক। তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ, যেখানে পাঁচজন করে সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। চতুর্থ স্থানে থাকা মেক্সিকোতে সাংবাদিক নিহতের সংখ্যা ৫। ২০২৩ সালে একই প্রতিবেদনে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) উল্লেখিত নিহতের সংখ্যা ছিল ৪৫। ৫৫ জন সাংবাদিক এ মুহূর্তে জিম্মি অবস্থায় আছেন। জিম্মিদের মধ্যে ২৫ জনই ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হাতে আটক রয়েছেন। পাশাপাশি, ২০২৪ সালে ৯৫ জন সাংবাদিক নিখোঁজ হয়েছেন। নতুন করে এই তালিকায় এ বছর চার জন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আরএসএফের এই বার্ষিক প্রতিবেদনে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্য যুক্ত করা হয়। এতে মন্তব্য করা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিন এখন সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপদজনক দেশ। গত পাঁচ বছরে অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে এ বছর ফিলিস্তিনে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেশি।’নিহতদের এক তৃতীয়াংশই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এ বছর ১৮ জন সাংবাদিকের প্রাণহানির সঙ্গে ইসরায়েলের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৬ জন গাজায় ও দুই জন লেবাননে নিহত হন। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজার সংঘাত শুরুর পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে ১৪৫ জনেরও বেশি সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৫ জন সংবাদ সংগ্রহের সময় নিহত হন। এই হত্যাযজ্ঞকে ‘নজিরবিহীন রক্তস্নান’ হিসেবে প্রতিবেদনে অভিহিত করা হয়। এদিকে, জ্ঞাতসারে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করে ইসরায়েল। তবে তারা স্বীকার করেছে, সামরিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর বিমানহামলা চালানোর সময় কয়েকজন সাংবাদিক নিহত হয়ে থাকতে পারে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মারসার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্যের সত্যতা অস্বীকার করেন।