শেখ হাসিনার বক্তব্য সমর্থন করে না ভারত: বিক্রম মিশ্রী
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে যে সকল সমালোচনা করেন তা ভারত সমর্থন করে না। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) কংগ্রেস নেতা শশী থারুর নেতৃত্বে ভারতের সংসদের পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী এই মন্তব্য করেন। মিশ্রী বলেন, ভারতের সম্পর্ক বাংলাদেশের সাথে কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এই সম্পর্কের ভিত্তি বাংলাদেশের জনগণের মধ্যেই নিহিত। তিনি জানান, ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে কোনো আলাদা প্ল্যাটফর্ম প্রদান করেনি, বরং হাসিনা তার ব্যক্তিগত যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে এইসব মন্তব্য করে চলেছেন। মিশ্রী আরও বলেন, ঢাকায় তার সফরের সময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জানিয়েছেন, ভারত জনগণের সাথে সম্পর্ক অগ্রাধিকার দেয় এবং বর্তমান সরকারের সাথে কাজ চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক। তিনি জানান, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা গুলো নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের এক ধরনের অস্বীকৃতি রয়েছে যা উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এই হামলা গুলোকে আওয়ামী লীগের উপর হামলা বলে যুক্তি দেখালেও মিশ্রী ব্যাখ্যা করেন, এমন যুক্তি এই ধরনের আক্রমণের ‘ন্যায্যতা’ প্রমাণ করতে পারে না। তিনি মন্দির ও ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর হামলার ঘটনাগুলোর সত্যতা মেনে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। তবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের এই ধরনের ঘটনায় যে ৮৮ জনকে গ্রেপ্তারের করেছে তা ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেন। এই সময় মিশ্রী সাবেক ইসকন নেতার গ্রেপ্তারের বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কিছু সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সন্ত্রাসী’র ভারত-বিরোধী বক্তব্যের বিষয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ভুল তথ্য প্রচারণার অভিযোগ আনা হয়। তিনি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্য ও সংযোগ অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বলেন যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে রেল লিঙ্ক, বাস লিঙ্ক এবং অভ্যন্তরীণ জলপথ তৈরি হয়েছে। তবে, তিনি কমিটিকে জানিয়েছেন যে দুই দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী রেল পরিষেবা ‘স্থগিত’ রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং বলেন, ২০২২ সালে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভারত ষোল লাখ ভিসা ইস্যু করেছে। অবশেষে, তিনি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি পুনর্বিবেচনার বিষয়টি তার আলোচনায় আসেনি বলে জানান।
সাংবাদিকদের জন্য বিপদজনক দেশের শীর্ষ তিনে বাংলাদেশ
বিশ্বজুড়ে ২০২৪ সালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৪ সাংবাদিক। এদের মধ্যে পাঁচজনই বাংলাদেশে নিহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপদজনক দেশের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সাংবাদিকতা বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের (আরএসএফ) এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি। আরএসএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৪ সাংবাদিক। আর সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপদজনক অবস্থানের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ফিলিস্তিন, যেখানে নিহত হয়েছেন ১৬ সাংবাদিক। এরপরই আছে পাকিস্তানের নাম। সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন সাত সাংবাদিক। তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ, যেখানে পাঁচজন করে সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। চতুর্থ স্থানে থাকা মেক্সিকোতে সাংবাদিক নিহতের সংখ্যা ৫। ২০২৩ সালে একই প্রতিবেদনে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) উল্লেখিত নিহতের সংখ্যা ছিল ৪৫। ৫৫ জন সাংবাদিক এ মুহূর্তে জিম্মি অবস্থায় আছেন। জিম্মিদের মধ্যে ২৫ জনই ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হাতে আটক রয়েছেন। পাশাপাশি, ২০২৪ সালে ৯৫ জন সাংবাদিক নিখোঁজ হয়েছেন। নতুন করে এই তালিকায় এ বছর চার জন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আরএসএফের এই বার্ষিক প্রতিবেদনে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্য যুক্ত করা হয়। এতে মন্তব্য করা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিন এখন সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপদজনক দেশ। গত পাঁচ বছরে অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে এ বছর ফিলিস্তিনে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেশি।’নিহতদের এক তৃতীয়াংশই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এ বছর ১৮ জন সাংবাদিকের প্রাণহানির সঙ্গে ইসরায়েলের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৬ জন গাজায় ও দুই জন লেবাননে নিহত হন। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজার সংঘাত শুরুর পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে ১৪৫ জনেরও বেশি সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৫ জন সংবাদ সংগ্রহের সময় নিহত হন। এই হত্যাযজ্ঞকে ‘নজিরবিহীন রক্তস্নান’ হিসেবে প্রতিবেদনে অভিহিত করা হয়। এদিকে, জ্ঞাতসারে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করে ইসরায়েল। তবে তারা স্বীকার করেছে, সামরিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর বিমানহামলা চালানোর সময় কয়েকজন সাংবাদিক নিহত হয়ে থাকতে পারে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মারসার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্যের সত্যতা অস্বীকার করেন।
মিয়ানমারের জেনারেলসহ শত শত সেনা আটক
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের মংডু শহর দখলে নেওয়ার পর দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি এবার রোহিঙ্গা যোদ্ধাসহ সরকারি বাহিনীর শত শত সৈন্যকে আটকের কথা জানিয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কুখ্যাত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনও রয়েছেন বলে জানিয়েছে আরাকান আর্মি। খবর মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর। আরাকান আর্মি (এএ) বুধবার ঘোষণা করেছে, তারা বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইন প্রদেশের মংডু শহরের শেষ জান্তা ঘাঁটিটি গত রোববার দখলে নিয়েছে এবং এসময় কুখ্যাত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনসহ শত শত সরকারি সেনাকে বন্দি করেছে। এদিকে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু শহর দখলে নেওয়ার ফলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় পৌনে তিনশ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সশস্ত্র এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি জান্তার শেষ অবশিষ্ট সীমান্ত ঘাঁটি মংডু শহরের বাইরে অবস্থিত বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নম্বর- ৫ বেশ কয়েক মাস লড়াইয়ের পর রোববার সকালে দখল করে নেয়। ব্যাপক সুরক্ষিত এই ঘাঁটিটি আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)-এর রোহিঙ্গা যোদ্ধাসহ ৭ শতাধিক পুলিশ অফিসার এবং সৈন্যদের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। আরাকান আর্মি বলেছে, তারা জান্তা বাহিনীর বিমান হামলার মধ্যে ৫৫ দিনের লড়াইয়ের পরে রোববার এই ঘাঁটি দখল করতে সক্ষম হয়। তারা আরও বলেছে, বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে লড়াইয়ের সময় ৪৫০ জনেরও বেশি সরকারি সেনা নিহত হয়েছে এবং আরাকান আর্মির সেনারা প্রচুর অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে। আরাকান আর্মির হাতে ঘাঁটিটির পতনের পর সরকারি সেনাসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। তবে ঘাঁটি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর প্রায় ৮০ জন রোহিঙ্গা বিদ্রোহীসহ সরকারি সেনার সঙ্গে জান্তার মিলিটারি অপারেশন কমান্ড (এমওসি) ১৫ এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে গ্রেপ্তার করে আরাকান আর্মি। ঘাঁটিটি দখল হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ভেতরে আটকে থাকা জান্তা সেনারা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেছিল যাতে তারা তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য জান্তা নেতার কাছে আবেদন করে। ভিডিওতে সরকারি সেনাদের বলতে শোনা যায়, তারা তিন মাস ধরে ঘাঁটিতে আটকে আছে। কিন্তু এরপরও নেতারা তাদের সরিয়ে নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেননি এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুন তাদের পরিত্যাগ করেছেন। ইরাবতী বলছে, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালেতে শান্তিপূর্ণ অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভের ওপর প্রাণঘাতী ক্র্যাকডাউন চালানোর জন্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুন কুখ্যাত। এছাড়া এই জেনারেল রাখাইন প্রদেশের উত্তরে জান্তার পক্ষে লড়াই করার জন্য রোহিঙ্গাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দেওয়ার অভিযোগেও অভিযুক্ত। আরাকান আর্মি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনসহ বন্দি জান্তা সেনাদের ছবি প্রকাশ করেছে। সেইসঙ্গে ঘাঁটি থেকে জব্দ করা অস্ত্র ও গোলাবারুদের একটি বড় সংগ্রহের ছবিও প্রকাশ করেছে তারা।
১৫ মিনিটে বাংলাদেশ দখলের হুমকি পশ্চিমবঙ্গ নেতার
মাত্র ১৫ মিনিটে সংখ্যালঘু মুসলিম নাগরিকদের নিয়ে বাংলাদেশ দখলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি টিংকুর রহমান বিশ্বাস এই হুমকি দিয়েছেন। তার এই হুমকির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু মুসলিম সেলের সভাপতি টিংকুর রহমান বিশ্বাস বলেন, ‘গতকালও আমাদের চোখে পড়েছে বিএনপি নেতা আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যঙ্গ করছিলেন। এখানে সংখ্যালঘু মুসলিম যারা আছি আমাদের জন্যই যথেষ্ট বাংলাদেশ। আমি কালকেও বলেছি, বর্ডার খুলি দিন ১৫ মিনিটের জন্য, বাংলাদেশ দখল করে নেব। পুলিশ লাগবে না, ফোর্সও লাগবে না। তিনি বলেন, যে নিজের জাতির পিতাকে চেনে না, মূর্তি ভাঙে তাদের কাছ থেকে আর কী আশা করতে পারি। ১৫ মিনিটের জন্য খুলে দিক বর্ডার, পুলিশ লাগবে না; আমরা যারা সংখ্যালঘু মুসলিম আছি পশ্চিমবঙ্গে আমাদেরই যথেষ্ট দখল করা বাংলাদেশ। ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য করে তৃণমূলের এই নেতা আরও বলেন, গোটা ভারতবর্ষ লাগবে না, আমরা ৩২ কোটি মুসলমান থাকি ভারতবর্ষে। এতোজনও লাগবে না। আমরা পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরাই দখল করে নিতে পারব। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নিপীড়নের অভিযোগের ঘটনায় প্রতিবেশী ভারতের রাজনীতিকদের বিতর্কিত মন্তব্য থামছেই না। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও বিরোধীদল বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রায় প্রত্যেকদিনই বাংলাদেশ ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্য করছেন। এবার মমতার দলের জেলা পর্যায়ের এক মুসলিম নেতা বাংলাদেশ নিয়ে বিতর্কিত এসব মন্তব্য করেছেন। একইদিনে (বুধবার) মমতা বন্দোপাধ্যায় কলকাতায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ভারতের কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বিতর্কিত এই আবদার জানিয়ে মমতা বলেন, কেন্দ্রকে অবশ্যই সহিংসতা-বিধ্বস্ত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে হবে এবং যারা ফিরতে ইচ্ছুক তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। তবে বাংলাদেশ ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গের অনেকেই সেখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেছেন মমতা। পশ্চিমবঙ্গের এই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কিছু অংশ সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভুয়া ভিডিও প্রচার করছে।
ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়েই যাচ্ছে ইসরায়েল। দখলদার দেশটির বর্বর হামলায় আরও ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের নিয়ে অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৪ হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে। বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলি বোমায় আহত হয়েছেন ৬৯ জন। এ নিয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৮০৫ জনে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর নিরলস হামলায় এ পর্যন্ত এক লাখ ৬ হাজার ২৫৭ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। গতকালের হামলার পর অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। উদ্ধারকারীরা যেতে না পারায় স্থানীয় লোকজন ভেতরে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে কাজ করছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থীশিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরায়েলি নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজাবাসী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।
বাংলাদেশ সফর নিয়ে দিল্লিতে সাংসদদের ব্রিফ করলেন বিক্রম মিশ্রি
বাংলাদেশ সফর থেকে ফেরার দুই দিন পর ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফ করেছেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) নয়াদিল্লির সংসদ ভবনের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা ব্রিফে দেশটির ২১-২২ জন সাংসদ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ এশীয় নিউজ সার্ভিসের। বিক্রম মিশ্রি ব্রিফিংয়ে অংশ নেওয়া সাংসদদের জানান, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকার। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব দেশটির সাংসদদের বলেন, ‘ঢাকা সফরে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সময় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন দিল্লির সঙ্গে স্বাক্ষরিত কোন চুক্তি পর্যালোচনা করার কথা উল্লেখ করেনি।’ ব্রিফ্রিংয়ের সময় বিক্রম মিশ্রির কাছে ভারতের কয়েকজন সাংসদ শেখ হাসিনা কোন মর্যাদায় দেশটিতে অবস্থান করছেন, সেই সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। ব্রিফ থেকে বেরিয়ে দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা ও সংসদের পররাষ্ট্রবিষয়ক স্থায়ী কমিটির প্রধান শশী থারুর সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘চমৎকার’’ ব্রিফিংয়ের সময় সচিবের কাছে বহু বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল।’ শশী থারুর আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের বিষয়ে আমাদের চমৎকার ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকালই পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশ থেকে ফিরে এসেছেন। সফরের বিষয়ে তিনি আমাদের একেবারে পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্রিফ করেছেন। কিন্তু, আমি এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব না। তবে, ২১-২২ জন সাংসদ সফরের বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিবকে গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশ্ন করেছেন। এ সময় তার কাছে বহু বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। পররাষ্ট্রসচিবও বিস্তারিত ও সোজাসাপ্টা জবাব দিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যে কোন ক্ষেত্রে এই ধরনের বিষয়ে সংসদে রিপোর্ট করি। কারণ, এটি একটি সংসদীয় কমিটির আনুষ্ঠানিক বিষয়; যার জন্য প্রতিবেদন প্রয়োজন।’ তিরুবনন্তপুরমের এই সাংসদ বলেন, ‘আপাতত আমাদের আলোচনা চলতে থাকবে এবং এর একটি খুব ভাল সূচনা হয়েছে।’ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়ার পর নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে প্রথম শীর্ষ পর্যায়ের কূটনৈতিক যোগাযোগের অংশ হিসেবে চলতি সপ্তাহে ঢাকা সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব। সফরে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পাশাপাশি ঢাকায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গেও বৈঠক করেন বিক্রম।
সিরিয়ার এইচটিএসের প্রতি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকারের’ আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
সিরিয়ার বিদ্রোহী জোটের নেতৃত্ব দেয়া গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামকে (এইচটিএস) সরাসরি দেশটির নেতৃত্ব না নিয়ে তার বদলে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়া পরিচালনার মাধ্যমে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এইচটিএসের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম যোগাযোগের বিষয়ে অবহিত করে এসব কথা জানান বাইডেন প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা ও মার্কিন কংগ্রেসের এক সহযোগী। সংবাদ রয়টার্সের। এইচটিএসের নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা রোববার (৮ ডিসেম্বর) সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক দখল করে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের দীর্ঘ দিনের শাসনের অবসান ঘটায়। তুরস্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের মধ্যস্থতায় ওয়াশিংটনের সঙ্গে এইচটিএসের যোগাযোগ হয়। এই হায়াত তাহরির আল-শাম গোষ্ঠীটি আগে আল কায়েদার সঙ্গে জোটবদ্ধ ছিল আর একে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠনের তকমা দিয়ে রেখেছে। ওই মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন জানান, এই যোগাযোগের বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের টিমকেও সবকিছু জানাচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে এইচটিএসের সঙ্গে ওয়াশিংটনের আলোচনা হয়েছে। আচানক আসাদের পতন হওয়ায় সিরিয়ায় যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার মধ্যে দেশটির বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে সমন্বয় করার বড় ধরনের প্রচেষ্টা শুরু করছে ওয়াশিংটন। এইচটিএসের সঙ্গে আলোচনা সেই প্রচেষ্টারই অংশ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই মার্কিন কর্মকর্তা জানান, গোষ্ঠীটিকে সিরিয়ার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক শাসন কাঠামো প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক প্রচেষ্টায় পথ দেখিয়ে সহায়তা করার বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, এসব বার্তা সরাসরি দেওয়া হয়েছে না মধ্যবর্তী কারও মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে তা জানাতে রাজি হননি তিনি। এই কর্মকর্তা জানান, আন্তর্বর্তী সরকারকে সিরিয়ার জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করা উচিত বলে ওয়াশিংটন বিশ্বাস করে এবং আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নতুন নেতা বেছে নেওয়া ছাড়াই এইচটিএসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়াকে সমর্থন করবে না। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ২০১৩ সালে এইচটিএসের নেতা আহমেদ আল-শারাকে (আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামেই বেশি পরিচিত) সন্ত্রাসীর তকমা দেয়। তারা বলেছিল, ‘ইরাকের আল কায়েদা আসাদকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদের জন্য শারাকে দায়িত্ব দিয়ে সিরিয়ায় ইসলামিক শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করতে বলেছিল। এইচটিএসের পূর্বসূরী নুসরা ফ্রন্ট সিরিয়াজুড়ে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে বেসামরিকদের হত্যা করেছিল ও সহিংস সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গী পোষণ করত।’ ওই কর্মকর্তা জানান, ভবিষ্যৎ সিরিয়া সরকারে জোলানির ভূমিকা কী হবে এবং তিনি এখনও চরমপন্থি মতাদর্শ পোষণ করেন কি না বাইডেন প্রশাসনের এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা নেই। মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিবর্তনের বিষয়ে বলেন, ‘ওয়াশিংটন সিরিয়ার সেই ভবিষ্যৎ সরকারকে স্বীকৃতি দেবে যারা বিশ্বাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অসাম্প্রদায়িক শাসক হবে।’
দিল্লিতে অবৈধ বাংলাদেশিদের ধরতে বিশেষ অভিযান পুলিশের
বাংলাদেশি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দিল্লি পুলিশের কর্মকর্তারা শহরটির কালিন্দি কুঞ্জ এলাকার বাসিন্দাদের নথি যাচাইয়ের জন্য বিশেষ এই অভিযান চালিয়েছেন। সংবাদ এএনআইয়ের। এর আগে, মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর (এলজি) ভিকে সাক্সেনা অবৈধ বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তার এই নির্দেশের পর দিন দিল্লি পুলিশের বিশেষ অভিযান চালিয়েছে। সাক্সেনার কার্যালয় মঙ্গলবার দিল্লির মুখ্যসচিব ও পুলিশ কমিশনারকে একটি চিঠি দিয়েছে। এতে দিল্লিতে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ‘‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই নির্দেশ পাওয়ার পর বুধবার দিল্লির কালিন্দি কুঞ্জ এলাকর বাসিন্দাদের নথি যাচাইয়ের জন্য পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। এ সময় সেখানকার বাসিন্দাদের প্রত্যেকের নথিপত্র যাচাই করা হয়। কয়েক দিন আগে দিল্লির মুসলিম নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল সাক্সেনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দিল্লিতে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এই সমস্যার সমাধানে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। দিল্লি পুলিশ বলেছে, ‘তারা অবৈধভাবে বসবাসকারীদের শনাক্ত ও অবৈধ উপায়ে পাওয়া তাদের সরকারি নথিপত্র বাতিল এবং বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই অভিযান চালাচ্ছেন।’
আসাদের পিতার কবরে আগুল দিল বিদ্রোহীরা
সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পিতা সাবেক স্বৈরশাসক হাফিজ আল আসাদের কবরে আগুন দিয়েছে বিদ্রোহীরা। সংবাদ বিবিসির। কয়েকটি ছবিতে পশ্চিম সিরিয়ার লাতাকিয়া প্রদেশে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল আসাদের কবরের আগুনের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। সেসময় দেখা যায়, কবরের একাংশ আগুন জ্বলছে। এতে একটি কফিনেও জ্বলতে দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, কফিনটি ওই কবর থেকে তোলা হয়েছে। হাফিজ আল আসাদ ২০০০ সালে মারা যান। এরপর তাকে তার পূর্বপুরুষের গ্রাম কারদাহায় সমাহিত করা হয়। গত রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিদ্রোহীদের অব্যাহত আক্রমণে মুখে রাজধানী দামেস্ক থেকে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন বাশার আল আসাদ। বিদ্রোহীদের দামেস্ক দখলের মধ্য দিয়ে অবসান ঘটল আসাদের দুই যুগের শাসনামলের। এরপর একের পর এক এলাকা দখল নিতে শুরু করে বিদ্রোহীরা। ক্ষমতা হারানোর পর দেশ ছেড়ে তিনি আশ্রয় নেন রাশিয়ায়। এ দিকে, অস্ত্রের গুদাম, গোলাবারুদের গুদাম, বিমানবন্দর, নৌঘাঁটি ও গবেষণা কেন্দ্রসহ সিরিয়ার সেনাবাহিনীর সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বাহিনী হামলা চালিয়েছে। এরপর পরই ইসরায়েলের ট্যাংক ঢুকে পড়ে সিরিয়ায় ও গোলান মালভূমির দখল নিতে শুরু করে।
ফিরে দেখা ২০২৪: ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে তোলপাড়
২০২০ সালে জো বাইডেনের কাছে হারলেও বছর চারেক পর এসে কোটি কোটি আমেরিকানের সমর্থনে ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে চমক দেখিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ইতিহাসে নিশ্চিতভাবেই এটি সবচেয়ে নাটকীয় প্রত্যাবর্তন। তার এই ফিরে আসা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে তো বটেই, বৈশ্বিক রাজনীতিতেও গভীর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইতিহাস পরিবর্তন করে এবার হয়তো হোয়াইট হাউসের গদিতে এক নারী প্রেসিডেন্টকে দেখা যাবে- এমন আশায় ছিল বিশ্বের বহু মানুষ। তবে, গেল ৫ নভেম্বর সেই আশা ভঙ্গ করে দ্বিতীয় বারের মত প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ট্রাম্প। এক বার হেরে গিয়ে ফের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ১৩২ বছরের রেকর্ড ভাঙলেন রিপাবলিকান এই প্রার্থী।এবার দিয়ে তিন বার নির্বাচনে অংশ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যে দুই বার জয় পেয়েছেন তিনি। চার বছর আগে বাইডেনের কাছে হারলেও এবার ট্রাম্পের অসাধারণ প্রত্যাবর্তন দেখেছে পুরো বিশ্ব।২০১৫ সালের জুন মাসে ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দেন। প্রচারণায় নিজের সম্পদ ও ব্যবসায়িক সাফল্য জাহির করতেন বার বার। তিনি মেক্সিকোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক, অপরাধ ও ধর্ষকদের পাঠানোর অভিযোগ তোলেন এবং দাবি করেন সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের খরচ ওই দেশকেই দিতে হবে।এরপর মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন-কে তার প্রচারাভিযানের স্লোগান বানিয়ে সহজেই রিপাবলিকান পার্টির অন্য সদস্যদের পেছনে ফেলে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ট্রাম্প।এরপর ২০২০ সালে বাইডেনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। ২০২৪-এ ফের তিনি লড়তে নামেন কমলা হ্যারিসের সঙ্গে। ট্রাম্পের এবারের নির্বাচনি প্রচারণার পর্বকে ইতিহাসের অংশ বললে কম বলা হবে। প্রচারণার সময় ট্রাম্পকে দুই দফা হত্যা চেষ্টা হয়। তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বাইডেন নির্বাচনের কয়েক মাস আগে নাম সরিয়ে নেন।এবারের নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেই অঙ্গরাজ্যগুলোতে হয়েছে, সেসব অঙ্গরাজ্যে আমেরিকানরা ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ভোটারদের অনেকেই ট্রাম্পকে ভোট দেয়ার পেছনে অর্থনীতি ও অভিবাসনের মত ইস্যুগুলোকে সামনে রাখছেন।২০২০ সালের নির্বাচনে হারের পর ট্রাম্প নির্বাচনে জালিয়াতির ভুয়া অভিযোগ তোলেন। এমনকি তার উসকানিতে উগ্র সমর্থকেরা ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেস ভবনে (ক্যাপিটল হিল) রক্তক্ষয়ী হামলা চালিয়েছিলেন।পরবর্তী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলা হয়। একটি ফৌজদারি মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত পর্যন্ত হন। এত কিছু সত্ত্বেও ট্রাম্প এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় ব্যবধানে কমলা হ্যারিসকে হারিয়েছেন।বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘ট্রাম্পে দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হওয়া একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের আভাস দেয়। বিশেষ করে, অর্থনীতি ও অভিবাসন নিয়ে উদ্বিগ্ন ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের শক্তিশালী আবেদন দেখা গেছে এবার।’বিবিসির এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্পের বক্তৃতাগুলো ছিল উসকানিমূলক ও প্রতিশোধপরায়ণ। তবে, অর্থনৈতিক বিষয়গুলোতে তার মনোযোগ বহু ভোটারকেই অনুপ্রাণিত করেছিল।’নির্বাচনী প্রচারণার সমাবেশগুলোতে ট্রাম্প একটি প্রশ্ন প্রায়ই করেছেন। ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি বার বার প্রশ্ন রেখেছেন ‘আপনি কি দুই বছর আগের চেয়ে এখন ভাল আছেন?’ট্রাম্পের এই প্রশ্নটি যুক্তরাষ্ট্রের বহু ভোটারের মনেই ভাবনার উদ্রেক করেছিল। বিশেষ করে যারা ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি ও অর্থনীতিতে করোনা মহামারির প্রভাবে হতাশ ছিলেন। তারা তাদের আর্থিক সংগ্রামের জন্য এক দিকে যেমন বাইডেন প্রশাসনকে দায়ী করেছেন, অন্যদিকে অনুভব করেছেন- ট্রাম্পের নীতিগুলো তাদের জীবিকার জন্য আরও ভাল ছিল।অভিবাসন ইস্যুও এবার ট্রাম্পকে জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর ভোটারদের মাঝে অবৈধ অভিবাসন নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ রয়েছে। বাইডেনের আমলে এই উদ্বেগ আরও বেড়েছে। এ অবস্থায় অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্প বরাবরই কড়া ভাষায় কথা বলে এসেছেন। অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করার বিষয়টি তার নির্বাচনী প্রচারণার অন্যতম কৌশল ছিল।ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ স্লোগানটিও এবার ভোটারদের গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। বাইডেন প্রশাসনের বিদেশে পাঠানো মার্কিন সাহায্য নিয়ে বিশেষ করে ইউক্রেনকে বিপুল সাহায্য ও সমর্থন দেয়ার বিষয়ে অসংখ্য আমেরিকান হতাশ ছিলেন। তারা বিশ্বাস করেন, বিদেশের বদলে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে আরও বেশি মনোযোগ দেয়া উচিত।ভোটারদের পরিবর্তনের এই আকাঙ্ক্ষাই ট্রাম্পের বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কারণ, বহু ভোটার মনে করেছিলেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের অধীনে বাইডেনের বিদেশ নিয়ে মাথা ঘামানোর নীতি একই রকম থেকে যাবে।এবারের নির্বাচনটি মার্কিন ভোটারদের সামনে দুটি দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছিল। একটি হল- ট্রাম্পের ‘আমেরিকাকে আবার মহান করার’ প্রতিশ্রুতি। আর দ্বিতীয়টি হল- ট্রাম্পের নেতৃত্বে গণতন্ত্র হুমকির বিষয়ে কমলা হ্যারিসের সতর্কতা। এ অবস্থায় ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব উভয়ই তার নীতির ফলাফলের মুখোমুখি হবে।এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আন্দ্রা গিলেসপির মতে, বাইডেন প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থা হারানো, জনপ্রিয়তার অভাব, প্রচারণায় সময় স্বল্পতা এবং নারী প্রেসিডেন্ট নিয়ে মার্কিনিদের মধ্যে আস্থার অভাব- এ বিষয়গুলোই কমলা হ্যারিসের পরাজয়ের মূল কারণ।এছাড়া, বাইডেন প্রশাসনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে যাওয়ায় কমলার ওপর বিশ্বাস হারিয়েছেন সাধারণ জনগণ। অপর দিকে, ট্রাম্প দেশের অর্থনীতির হাল শক্ত হাতে ধরবেন বলে আশা আমেরিকানদের।
আফগানিস্তানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিজ কার্যালয়ে প্রাণ হারালেন শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রী
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন দেশটির শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রী খলিল উর-রহমান হাক্কানি। কাবুলে শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিজ কার্যালয়ে বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। বুধবার কাবুলে শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বিস্ফোরণে মন্ত্রীর প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটেছে বলে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন হাক্কানির ভাতিজা আনাস হাক্কানি। নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে দেশটির সরকারি এক কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, কাবুলে শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে দুর্ভাগ্যজনক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মন্ত্রী খলিল উর-রহমান হাক্কানিসহ তার কয়েকজন সহকর্মী নিহত হয়েছেন। আফগানিস্তানে তালেবানের দুই দশকের বিদ্রোহের সময় সবচেয়ে সহিংস কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যাপক পরিচিত দেশটির সশস্ত্র সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্ক। মন্ত্রী খলিল উর-রহমান হাক্কানির ভাই জালালউদ্দিন হাক্কানি এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বিস্ফোরণে নিহত খলিল উর-রহমান হাক্কানি দেশটির তালেবান নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানির চাচা। ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সৈন্যদের আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এরপর দেশটির ক্ষমতায় আসে সশস্ত্র ইসলামপন্থী গোষ্ঠী তালেবান। আফগানিস্তানের এই গোষ্ঠী ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে সহিংসতা হ্রাস পেয়েছে। তবে দেশটিতে মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অনুসারী ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএস-কে) সক্রিয় রয়েছে। এই গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রায়ই আফগানিস্তানের বেসামরিক নাগরিক, বিদেশি এবং তালেবান কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে বন্দুক ও বোমা হামলা চালিয়ে আসছে। সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।
আসাদের পতনের নেপথ্যে ‘মূল ষড়যন্ত্রকারী’ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল: দাবি খামেনির
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের পতনের পর নিজের প্রথম মন্তব্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, তেহরানের কাছে ‘প্রমাণ’ রয়েছে যে, সিরিয়ায় যা ঘটেছে তা যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদিবাদী শাসকের (ইসরাইল) যৌথ পরিকল্পনার ফসল। সংবাদ আল জাজিরার।তুরস্কের দিকে ইঙ্গিত করে তেহরানে এক সমাবেশে খামেনি বলেন, ‘হ্যাঁ, সিরিয়ার প্রতিবেশী একটি সরকার এতে (আসাদের পতনে) স্পষ্ট ভূমিকা পালন করেছে ও করছে। আমরা এটি দেখতে পাচ্ছি।’তবে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল ‘মূল ষড়যন্ত্রকারী’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।এ দিকে, সিরিয়ায় ‘সন্ত্রাসী তৎপরতা প্রতিরোধে’ একটি ‘নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল’ গঠনের কথা জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। এরই মধ্যে দেশটির দক্ষিণের ওই অঞ্চলে সিরিয়ার ভূখণ্ড দখলে নিয়েছে ইসরাইলের বাহিনী। বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর বিমান হামলাও জোরদার করেছে ইসরাইল।মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, ‘তিনি সামরিক বাহিনীকে সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন। সেখানে ইসরায়েলের বাহিনীর স্থায়ী উপস্থিতি থাকবে না। তবে, সেটি নিয়ন্ত্রিত হবে।’এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি কাৎজ। তবে, তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্য ‘সিরিয়ার ভূখণ্ডে সন্ত্রাস প্রতিষ্ঠা ও সন্ত্রাসীদের সংগঠিত হওয়া’ প্রতিহত করা।’ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এটাও নিশ্চিত করেন, গভীর রাতে হামলা চালিয়ে সিরিয়ার বেশ কয়েকটি নৌযান ধ্বংস করা হয়েছে। আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ায় একের পর এক সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইলের বাহিনী। গেল ৪৮ ঘণ্টায় এমন ৪৮০টি হামলা চালানোর খবর জানিয়েছে তারা।
ভারতে ভেঙে ফেলা হল ১৮৫ বছরের পুরনো মসজিদ!
ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ১৮৫ বছরের পুরনো একটি মসজিদের একাংশ ভেঙে দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, মসজিদের ওই অংশ সড়কের (বান্দা-বাহরাইচ হাইওয়ে) ওপর পড়েছিল। ঘটনাটি রাজ্যের ফতেহপুর জেলায় ঘটেছে। সংবাদ এনডিটিভির।মসজিদের ভেঙে ফেলা ওই অংশটি ‘বেআইনি’ ছিল বলে দাবি করেছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। মসজিদটির নাম নূরী জামে মসজিদ।পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট (পিডব্লিউডি) দাবি করেছে, তারা গত ১৭ আগস্ট ‘অবৈধ নির্মাণের’ কারণে মসজিদের কিছু অংশ সরানোর নোটিশ দিয়েছিল।মসজিদ কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘তাদের এক মাসের সময় দেয়া হয়েছিল এবং তারা মামলাটি অনুসরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।’ তবে, এই আদেশকে উচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ করার সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানিয়েছে পিডব্লিউডি।লালাউলি থানার ইনচার্জ বৃন্দাবন রাই বলেছেন, ‘নুরি মসজিদের প্রায় ২০ মিটার বান্দা-বাহরাইচ হাইওয়ের প্রশস্তকরণে বাধা সৃষ্টি করেছিল। মঙ্গলবার কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে একটি বুলডোজার দিয়ে ওই অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং এখন এর ধ্বংসাবশেষ সরানো হচ্ছে।’তবে, নূরী মসজিদ পরিচালনা কমিটির প্রধান মোহাম্মদ মঈন খান পিডব্লিউডির দাবির বিরোধিতা করেছেন।তিনি বলেন, ‘নূরী মসজিদটি ১৮৩৯ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং এখানে রাস্তাটি ১৯৫৬ সালে নির্মিত হয়। তবুও, পিডব্লিউডি মসজিদের কিছু অংশকে অবৈধ বলে অভিহিত করছে।’অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অবিনাশ ত্রিপাঠী জানান, আগস্ট মাসে মসজিদের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষসহ ১৩৯টি সত্ত্বাকে নোটিশ জারি করা হয়েছিল, দখল ও অন্যান্য অবৈধ নির্মাণ অপসারণের জন্য।জেলা প্রশাসন এর আগেও মসজিদ পরিচালনা কমিটিকে বিষয়টি যথাযথভাবে অবহিত করেছিল বলে দাবি করেন তিনি।এ দিকে, এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ওই এলাকার বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
মিশরের কায়রোতে ভবনধসে নিহত ৮
মিশরের রাজধানী কায়রোতে একটি ছয়তলা আবাসিক ভবন ধসে পড়ার ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও তিনজন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মিশরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে। খবর এএফপির। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হোসাম আবদেল গাফ্ফার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে নয়টি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে হতাহতদের উদ্ধারে কাজ করছেন। ধ্বংসস্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে ৩৮ বছর বয়সী ওয়ালেদ মোহাম্মদ বলেন, আমি বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দে জেগে উঠেছি। ওয়ালেদ এবং তার বেশ কয়েকজন প্রতিবেশী ওই ভবনের দিকে দৌড়ে গেলে তারা দেখেন এটি ধসে পড়েছে। তিনি বলেন, গ্যাস পাইপে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে এবং সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র আল-আহরাম জানিয়েছে, ১৯৬০ এর দশকে নির্মিত ভবনটি পুনরুদ্ধারের জন্য ১৯৯৩ সালে তৎকালীন জেলাপ্রধান একটি আদেশ জারি করেছিলেন। কিন্তু ওই ভবনের বাসিন্দারা এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন এবং এটি কার্যকর করা হয়নি। এদিকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিবেশী ভবনগুলো থেকে এরই মধ্যে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ১৯ এবং ২০ শতাব্দীর প্রথম দিকে নির্মিত মধ্য কায়রোর বহু সংখ্যক ভবন এখনও পুনরুদ্ধার করা হয়নি।বৃহত্তর কায়রোতে ২৬ মিলিয়নেরও বেশি লোকের আবাসস্থল। গত কয়েক বছরে সেখানে বেশ কিছু ভবন ধসে পড়েছে।
সর্বকালের সর্বনিম্ন অবস্থানে ভারতীয় রুপির মান
মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান সর্বকালের সর্বনিম্নে নেমেছে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ডলারের বিপরীতে রুপির দাম প্রথম ৮৪ দশমিক ৮৫ এ নেমে আসে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির দর পতন চলছেই। এর মধ্যে মঙ্গলবার মুদ্রাটির মান ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে আসে। এদিন ভারতীয় মুদ্রার দর কমে প্রতি ডলার হয় ৮৪ দশমিক ৮৫ রুপি। একইসঙ্গে ১০ বছরের সরকারি বন্ডের ফলন (বন্ডে বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়ের হার) ২ বেসিস পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৬৯৫৪ শতাংশে। এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান কমেছিল। সেদিন ডলারের বিপরীতে রুপির দর ৮৪ দশমিক ৭৫ এ নেমেছিল। এবার সেটিকে ছাড়িয়ে ৮৪ দশমিক ৮৫ রুপির বিপরীতে মিলছে এক ডলার।
দুই দিনে সিরিয়ায় ৪৮০ হামলা ইসরায়েলের
বাশার আল আসাদের পতনের পর সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় তারা সিরিয়ায় ৪৮০টি হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে ১৫টি নৌযান, বিমান-বিধ্বংসী ব্যাটারি এবং বেশ কয়েকটি শহরে অস্ত্র উৎপাদনকারী কেন্দ্রও আছে। খবর আল জাজিরার। ইসরায়েল বলছে, আসাদ সরকারের পতনের পর অস্ত্র যাতে 'উগ্রপন্থীদের হাতে চলে না যায়' সেজন্য তারা পদক্ষেপ নিয়েছে।এদিকে সিরিয়ার তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বশির বলেছেন, সিরিয়ানদের স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। মোহাম্মদ আল-বশির বলেছেন, তিনি আসাদের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে পাবলিক সার্ভিস এবং প্রতিষ্ঠান পুনঃস্থাপনের জন্য কাজ করছেন। সিরিয়ার বিরোধী যোদ্ধারা বলছে, তারা সিরিয়ার কুর্দি বাহিনীর কাছ থেকে উত্তর-পূর্ব শহর দেইর আজ জোর দখল করেছে। আহমেদ আল-শারা, হায়াত তাহরির আল-শামের নেতা সিরিয়ার পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এদিকে বাশার আল আসাদের পতনের পর সিরিয়ার ওপর হামলা শুরু করায় আন্তর্জাতিক মঞ্চেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে ইসরায়েলকে। যদিও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে ইসরায়েল সরকার। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েলের কাছে পরাস্ত হয় মিশর, সিরিয়া এবং জর্ডনের মিলিত বাহিনী। ওই সময়ে সিরিয়ার গোলান মালভূমি চলে যায় ইসরায়েলের দখলে। পরবর্তী সময়ে অধিকৃত গোলান মালভূমির অনেকটাই প্রতিবেশী দেশকে ফিরিয়ে দেয় ইসরায়েল। তবে গোলান মালভূমির একটা অংশ অবশ্য নিজেদের দখলে রেখে দেয় তারা। সেখানে তৈরি করা হয় বাফার জোন। আমেরিকা ছাড়া দুনিয়ার অধিকাংশ দেশই আংশিক দখলে থাকা গোলান মালভূমিকে ইসরায়েলের অংশ বলে স্বীকৃতি দেয়নি। এবার বাশারের পতন হতেই আবার সিরিয়ায় হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবারই নেতানিয়াহু গোলান মালভূমিকে ইসরায়েলের অংশ বলে দাবি করেছেন। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের হামলাকে গোলান মালভূমিতে পুনরায় দখলের চেষ্টা বলে মনে করছেন অনেকে।
ট্রাম্পের স্বাস্থ্য সচিব কেনেডির বিরোধিতায় ৭৭ নোবেল জয়ী
আগামী ২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার কেবিনেট সাজাচ্ছেন। এরইমধ্যে অনেককেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনিডির ভাতিজা রবার্ট এফ কেনিডি জুনিয়রকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য সচিবের। তবে, ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন ৭৭ নোবেল বিজয়ী। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ৭৭ নোবেল পুরস্কার বিজয়ী যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন। যেখানে তাদের দাবি, রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের মনোনয়ন বাতিল করা। তাদের মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কেবিনেটে সেক্রেটারি অফ হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেসের (এইচএইচএস) জন্য উপযুক্ত নন তিনি। তাছাড়া, এর আগে ভ্যাকসিনবিরোধী কথা বলেছেন তিনি। যা জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ওই চিঠিতে সই করেছেন ৭৭ নোবেল বিজয়ী। যাদের মধ্যে আছে- চিকিৎসা, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা ও অর্থনীতিতে নোবেল জয়ীরা। চিঠিতে তারা উল্লেখ্য করেছেন, ‘পূর্বের রেকর্ডের পরিপ্রেক্ষিতে, কেনেডিকে ডিএইচএইচএসের দায়িত্বে রাখা জনসাধারণের স্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।’ স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন ড্রু ওয়েইসম্যান, যিনি এমআরএনএ ভ্যাকসিন তৈরির কাজ করার জন্য ২০২৩ সালে মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। যা কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি বড় অগ্রগতি ছিল। তাছাড়া কেনেডি জুনিয়রকে নিয়ে বিতর্ক, তার কোন চিকিৎসা ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। তিনি একজন পরিবেশবাদী আইনজীবী। তাছাড়া কেনেডি ভ্যাকসিন ও অটিজমকে যুক্ত করার ষড়যন্ত্র তত্ত্বের কথা বলেছেন। সেই সঙ্গে সম্প্রতি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়িয়েছেন। ওই চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, ‘কেনেডির অভিজ্ঞতার অভাব ছাড়াও বিজ্ঞান, জনস্বাস্থ্য বা প্রশাসনে অদক্ষতা রয়েছে। কেনেডি অনেক স্বাস্থ্য-রক্ষাকারী ও জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিনবিরোধী ছিলেন, যেমন হাম এবং পোলিও প্রতিরোধ ভ্যাকসিনের বিরোধী তিনি। কাজেই তাকে যেন নিয়োগ দেওয়া না হয়।’
ইউক্রেনে সহায়তা কমানোর ঘোষণার পর ট্রাম্পের প্রশংসায় জেলেনস্কি
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন ইউক্রেনে সহায়তা কমিয়ে দেবে বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে, সামাজিক মাধ্যমে দেয়া পোস্টে রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব নিরসনের বিষয়ে ট্রাম্পের প্রশংসা করেছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। এরমধ্যেই ইউক্রেনজুড়ে হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়ার বাহিনী। হামলা পাল্টা-হামলায় উত্তেজনা ছড়াচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। প্রতিদিনই একে অপরের ওপর হামলা চালাচ্ছে রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনারা। টানা হামলায় বিধ্বস্ত দেশ দুইটির বিভিন্ন অঞ্চল।সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাশিয়ার ছোড়া বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার দাবি করেছে ইউক্রেনের বাহিনী। পাল্টা হামলা জারি রেখেছে জেলেনস্কির বাহিনীও। তাদের ছোড়া ১৩টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি জানিয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। একই দিন ইউক্রেনের সামরিক বিমান ঘাঁটিতে হামলার দাবিও করে তারা।কেবল হামলা করেই থামেনি রাশিয়ার সেনারা। অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেনের বসতি দখলও। পূর্ব ইউক্রেনের আরেকটি বসতি দখলের দাবি করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা আরও জানায়, ইউক্রেন সীমান্তের প্রায় ২০ শতাংশ এখন রাশিয়ার দখলে।এ দিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, রাশিয়ার এসব হামলা থেকে ইউক্রেনের মানুষকে রক্ষার জন্য ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার আগ পর্যন্ত ইউক্রেনে বিদেশি সেনা মোতায়েন করা যেতে পারে। কূটনৈতিক সমাধান বহু মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।অন্য দিকে, নতুন মার্কিন প্রশাসন ইউক্রেনে সহায়তা কমাবে বলে গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন নতুন নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও, মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের একটি পোস্টে রুশ-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব নিরসনের বিষয়ে ট্রাম্পের প্রশংসা করেন জেলেনস্কি।পুতিন একমাত্র ট্রাম্পকেই ভয় পান বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন তিনি। ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় রাশিয়া যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনায় আগ্রহী বলেও জানায় ক্রেমলিন। তবে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিবৃতিতে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার যোগাযোগ হয়নি এ বিষয়ে।’
‘গণহারে’ বাতিল হচ্ছে ভারতীয়দের ভিসা, জানা গেল কারণ
ভারতীয়দের ভিসার আবেদন আশঙ্কাজনক হারে বাতিল করে দিচ্ছে উপসাগরীয় দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। উপসাগরীয় দেশটির নতুন কড়া আইনের কারণে অন্যান্যদের মতে ভারতীয়দেরও ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। সংবাদ দ্য হিন্দুস্তান টাইমস, পিটিআইয়ের। পূর্বে ভারতীয়রা দুবাই যাওয়ার আবেদন করলে প্রায় ৯৯ শতাংশই ভিসা পেয়ে যেতেন। আগে আবেদনকারী ভিসা বাতিলের পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ দুই শতাংশ। এখন তা প্রায় তিনগুণ বেড়ে ছয় শতাংশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ভিসার আবেদন বাতিল হওয়ার কারণে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। কারণ, এর সঙ্গে হোটেল বুকিং ও ফ্লাইট বুকিংও বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছেন আবেদনকারীরা। দুবাই সরকারের নতুন ভিসানীতি অনুযায়ী, একজন পর্যটককে তার হোটেলের রিজারভেশনের প্রমাণ, বিমানের টিকিট, রিটার্ন টিকিট, সব কিছুই তাদের ইমিগ্রেশন পোর্টালে আপলোড করতে হয়। এছাড়া, দুবাই যাওয়ার মত ব্যাংক ব্যালেন্স আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হয়। পর্যটকের শেষ তিন মাসের বেতনও দেখাতে হয়। ছাড়া ন্যূনতম ৫০ হাজার রুপিসহ ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্যান কার্ড নথি হিসেবে যুক্ত করতে হয়। এসব জটিলতার কারণে ভারতীয়দের ভিসা আবেদন বাতিল করা হচ্ছে ।প্যাসিও ট্রাভেলস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক নিখিল কুমার বলেন, ‘অনেক আবেদনকারীর নিশ্চিত ফ্লাইট টিকিট ও হোটেল বুকিংয়ের সব নথি যথাযতভাবে উপস্থাপন করার পরও ভিসা পাচ্ছেন না। অথচ আবেদনকারীরা এরই মধ্যে টিকিট কেনা ও হোটেল বুকিং বাবদ অর্থ ব্যয় করে ফেলেছেন। ভিসা না পাওয়ার কারণে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’
সিরিয়ায় হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার, দায়িত্বে আল-বশির
বাশার আল-আসাদের পতনের পর বিদ্রোহীদের নিয়ে গঠিত হচ্ছে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার। এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মোহাম্মেদ আল-বশির। তিনি সরকারবিরোধী আন্দোলন পরিচালনায় গঠিত বিদ্রোহীদের জাতীয় বিপ্লবী সরকারের ইদলিব অঞ্চলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সংবাদ আল জাজিরার। আসাদ সরকারের পতন হলেও শান্তি ফেরেনি সিরিয়ায়। এর পেছনে মূল কারণ দেশটির বিভিন্ন স্থানে ইসরাইলের শক্তিশালী হামলা।ইসরাইলের নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, সিরিয়ায় ইসরাইলের বিমানবাহিনীর ইতিহাসে অন্যতম বড় অভিযান চালানো হচ্ছে। সিরিয়ার সেনাবাহিনীর ডজনখানেক যুদ্ধবিমান, মিসাইল কারখানাসহ শত শত সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে নেতানিয়াহুর বাহিনী। সামরিক স্থাপনা ছাড়াও বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণাগারেও হামলা চালিয়েছে তেল আবিব।সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে নানা বিদ্রোহী সংগঠন। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) জাফরান গ্রামে মার্কিন সমর্থিত কুর্দি বিদ্রোহী গোষ্ঠী সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের ওপর বন্দুক হামলা চালায় তুরস্ক-সমর্থিত ‘সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি’। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন।বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মোহাম্মেদ আল বশির। ৪১ বছর বয়সি মোহাম্মেদ আল-বশির সরকারবিরোধী আন্দোলন পরিচালনায় গঠিত বিদ্রোহীদের জাতীয় বিপ্লবী সরকারের ইদলিব অঞ্চলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।আসাদ সরকারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজী আল-জালালি ও মোহাম্মেদ আল-বশিরের সঙ্গে এইচটিএস প্রধান আল জোলানির বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আর বৈঠকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী জালালি ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হয়েছেন।এ দিকে, নতুন সিরিয়ায় ফিরতে শুরু করেছেন হাজারও বাস্তুচ্যুত সিরীয়। তবে, এদের মধ্যে অনেকেই তাদের ফেলে যাওয়া বাড়িঘর অক্ষত অবস্থায় পাননি। এ অবস্থায় সিরিয়ার দশক পুরানো মানবিক সংকট আরও প্রকট হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দামেস্কের কাছাকাছি পৌঁছে গেল ইসরায়েলের সেনারা, চলছে বিমান হামলা
বিদ্রোহীদের তড়িৎগতির আক্রমণের মুখে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার সরকারের পতনের পর দেশটিতে বিমান হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সিরিয়ার সেনাবাহিনীর একাধিক ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বাহিনী। এ দিকে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সামরিক ট্যাংক সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে বলেও সিরিয়ার একাধিক সূত্র জানিয়েছে। সংবাদ রয়টার্সের। আসাদের পতনের পর সিরিয়ার সেনাবাহিনীর অস্ত্র যাতে অন্য কোন শত্রুর হাতে না যায়, সেই লক্ষ্যে ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে, সিরিয়ার সাথে সীমান্ত এলাকার নির্ধারিত বাফার জোনের বাইরে সিরীয় ভূখণ্ডে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর প্রবেশের খবর অস্বীকার করেছে তেল আবিব। রোববার (৮ ডিসেম্বর) বাশার আল-আসাদের পতনের পর মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দামেস্কে প্রথম বারের মত সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংক পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে। দামেস্কের রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছেন কর্মীরা। কিছু রাস্তায় যানবাহনের চলাচল বেড়েছে। দোকান পাট পুনরায় খুলতে শুরু করেছে। নির্মাণ শ্রমিকরা শহরের কেন্দ্রস্থলের গোলচত্বর মেরামত করছেন। বিদ্রোহীদের আন্দোলনে টিকতে না পেরে রোববার (৮ ডিসেম্বর) পরিবারসহ রাশিয়া পালিয়ে গেছেন বাশার আল-আসাদ। এর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় আল-আসাদ পরিবারের পাঁচ দশকের বেশি সময়ের শাসনের অবসান ঘটেছে। আসাদের পতনের পরপরই দীর্ঘ ৫০ বছর পর প্রথম বারের মত সিরীয় সীমান্তের বাফার জোন এলাকায় ঢুকেছে ইসরায়েলের সৈন্যরা। সীমান্তের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ইসরায়েলের সৈন্যরা সাময়িক সময়ের জন্য সেখানে ঢুকেছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। যদিও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, ‘আসাদের পতনে ভেঙে পড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দামেস্কের কাছাকাছি এলাকায় পৌঁছে গেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) অন্তত তিনটি নিরাপত্তা বলেছে, ‘ইসরায়েলের সৈন্যরা বাফার জোন অতিক্রম করেছে।’ সিরীয় একটি সূত্র বলেছে, ‘ইসরায়েলের সৈন্যরা ইতোমধ্যে কাতানা শহরে পৌঁছেছে। এই শহরটি বাফার জোন থেকে কয়েক কিলোমিটার পূর্বে ও দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত।’ যদিও ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র বলেছেন, ‘সেনারা ডিমিলিটারাইজড জোনের (ডিএসজেড) বাইরে যায়নি।’ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘দামেস্ক অভিমুখে ইসরায়েলের ট্যাংকের এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সব প্রতিবেদন মিথ্যা। আইডিএফের সৈন্যরা বাফার জোনে অবস্থান করছে।’ ইসরায়েল বলেছে, ‘তারা সিরিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষের সাথে সংঘাত চায় না। তবে, সিরিয়ার সামরিক অস্ত্র যাতে শত্রুর হাতে চলে না যায়, তা নিশ্চিত করতে গত তিন দিন ধরে সিরিয়াজুড়ে সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা করছে ইসরায়েলি বাহিনী। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে সিরিয়ায় সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে দুই শতাধিক বিমান হামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। সিরিয়ায় ইসরায়েলের বাহিনীর অনুপ্রবেশ ও হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিসর, কাতার ও সৌদি আরব। সৌদি আরব বলেছে, ‘ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপ সিরিয়ায় নিরাপত্তা ফেরানোর সম্ভাবনাকে নষ্ট করবে।’
সিরিয়ায়ও ‘আয়নাঘর’!
সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদ পালিয়ে যাওয়ার পর দেশটিতে একের পর এক ভয়ঙ্কর নির্যাতনের চিত্র উঠে আসছে। বিদ্রোহীদের দমনে নানা ধরনের নির্যাতনমূলক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন আসাদ। এর মধ্যে অন্যতম হল বন্দিশালা। যেখানে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হত বন্দিদের। সংবাদ বিবিসির। জাতিসংঘের সিরিয়া কমিশনের সমন্বয়ক লিনিয়া আর্ভিডসন বলেছেন, ‘বাশার আল-আসাদের বন্দিশালার যে চিত্র পাওয়া যাচ্ছে, তা ভয়ঙ্কর তবে আশ্চর্জজনক নয়।’ লিনিয়া আর্ভিডসন বলেছেন, ‘২০১১ সাল থেকেই জাতিসংঘের দল সিরিয়ার বন্দিশালাগুলোর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে সাবেক বন্দিদের সঙ্গে কথা বলে। তবে, এই প্রথম বার তারা সরাসরি বন্দিশালাগুলোতে প্রবেশের সুযোগ পেল।’ তিনি বলেন, ‘আন্ডারগ্রাউন্ড এসব বন্দিশালাতে কোন জানালা নেই। বন্দিরা সেখানে সূর্যের আলো দেখা ছাড়াই বছরের পর বছর, দশকের পর দশক অতিবাহিত করেছে।’ সাবেক বন্দিদের কাছ থেকে যে বর্ণনা পাওয়া গেছে, তার সঙ্গে বাস্তবের মিল পাওয়া গেছে বলেও জানান লিনিয়া আর্ভিডসন। এ দিকে, বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনে নেতৃত্ব দেওয়া সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএসের প্রধান জানিয়েছেন, আসাদ সরকারের আমলে যে সব কর্মকর্তা নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, কর্তৃপক্ষ তাদের তালিকা করবে। তাছাড়া নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিষয়ে তথ্য দিলে পুরষ্কার দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সিটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বন্ধুদের’ তাড়িয়ে দিল তুরস্কের প্রক্সিরা
মানবিজ। তুরস্কের সীমান্তবর্তী সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সিটি। এত দিন শহরটি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত কুর্দি ওয়াইপিজি সশস্ত্র গোষ্ঠীর কৌশলগত কেন্দ্র ছিল। সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের পতনের পর এবার এই শহরটি থেকে কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে তাড়িয়ে দিয়েছে তুরস্ক সমর্থিত সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এসএনএ)। সংবাদ আল-জাজিরার। তুর্কি সীমান্ত থেকে শহরটি মাত্র ১৯ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত। ইউফ্রেটিস নদীর পশ্চিমের এই অঞ্চলে ওয়াইপিজির সবচেয়ে বড় ঘাঁটি ছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ওয়াইপিজির দখলে চলে যাওয়া অঞ্চলগুলো পুনর্দখলের জন্য ‘অপারেশন ডন অফ ফ্রিডম’ পরিচালনা করছে এসএনএ। এই অভিযান শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই পতন ঘটল মানবিজের। সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) নেতৃত্ব দেয়া ওয়াইপিজি দেশটির উত্তর ও পূর্ব অঞ্চরের বিস্তীর্ণ এলাকা শাসন করে। যেখানে সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ তেল ক্ষেত্রগুলো রয়েছে। ওয়াইপিজির দখলে থাকা অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৯০০ সেনা রয়েছে। ২০১৬ সালে আইএসআইএলের (আইএসআইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় মার্কিন সমর্থনে মানবিজ দখল করে নেয় কুর্দি বাহিনী। যদিও ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র ও পরে রাশিয়া তুরস্ককে আশ্বস্ত করেছিল যে, আইএসকে পরাজিত করার পরে সেখান থেকে যোদ্ধাদের প্রত্যাহার করবে ওয়াইপিজি। কিন্তু, তুরস্ক বার বার বলে আসছে, এই প্রতিশ্রুতি কখনও রাখা হয়নি। তুরস্ক ওয়াইপিজিকে পিকেকে-এর সিরিয়ান অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। পিকেকে শুধু তুরস্কেই নয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নেও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে স্বীকৃত। তুরস্ক উত্তর সিরিয়ায় স্বায়ত্তশাসনের জন্য ওয়াইপিজির চাপকে তার আঞ্চলিক অখণ্ডতার জন্য হুমকি এবং তুরস্কের অভ্যন্তরে কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদের জন্য একটি সম্ভাব্য অনুঘটক হিসাবেও দেখে থাকে। এখন, মানবিজ দখলে নেয়া তুর্কি-সমর্থিত এসএনএ-র জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এরই মধ্যে তারা কুর্দি বাহিনী নিয়ন্ত্রিত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর রাক্কাকে পরবর্তী লক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে।সম্প্রতি বিদ্রোহীদের হাতে একের পর এক শহরের পতন ঘটলে দেশ ছেড়ে পালান স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদ। সিরিয়ায় সরকারের পতন হলেও দেশটিতে সক্রিয় রয়েছে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী। হায়াত তাহরির আল-শামের পাশাপাশি বর্তমানে দেশটিতে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি, সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স বা এসডিএফসহ আরও বেশ কয়েকটি সশস্ত্র সংগঠন। ২০১১ সালে জাবহাত আল-নুসরা। এরপরেই আসে সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মির নাম। বিভিন্ন ছোট গোষ্ঠীর সমন্বয়ে ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি। এই বাহিনীটির সদস্যরা তুরস্কের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখলেও, তাদের মধ্যে মতাদর্শিক কিছু ভিন্নতাও রয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে যে কোন মুহূর্তে এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে সংঘাত।’
মুম্বাইয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩০-৪০টি গাড়িতে ধাক্কা, নিহত ৭
ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাস ৩০-৪০টি গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে ফুটপাতে উঠে যায়।সোমবার রাত পৌনে ১০টার দিকে মুম্বাইয়ে কুরলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এ ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ৪৯ জন। নিহতদের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মহারাষ্ট্রের ‘মহাজুটি’ সরকার। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার। বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩০-৪০টি গাড়িকে ধাক্কা মেরে ফুটপাথে উঠে যায়। তার পর একটি আবাসনের মূল ফটকে ধাক্কা মারে। এই দুর্ঘটনায় প্রথমে চার জন পথচারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। পরে নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্র সরকারের অধীনে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বৃহন্মুম্বই ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট আন্ডারটেকিং (বেস্ট)-এর বাস ছিল সেটি। ওই বাস যাত্রীদের নিয়ে কুরলা স্টেশন থেকে আন্ধেরির উদ্দেশে যাচ্ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হঠাৎই বাসটির গতি বাড়তে থাকে। গতি কমানোর জন্য চিৎকার করতে থাকেন যাত্রীরা। তার পরেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। এই প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্রের অন্যতম ডেপুটি পুলিশ কমিশনার গণেশ গাওড়ে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেন, কুরলায় একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কিছু গাড়িতে ধাক্কা মেরেছে। আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তদন্ত চলছে।” সোমবার রাতেই বাসচালক সঞ্জয় মোরেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু হয়েছে। বাস চালানোর সময় তিনি মত্ত অবস্থায় ছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে যান ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্তের পরে কী কারণে দুর্ঘটনা, তা বোঝা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বাসটির কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।