বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সীমান্ত শহর মংডু আরাকান আর্মির দখলে

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের মংডু শহর দখলের দাবি করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের পর মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা। ফলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় পৌনে তিনশ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।খবর সিএনএন ও ইরাবতীর। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রোববার মংডু শহর দখল করে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরাকান আর্মি (এএ)। সশস্ত্র এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, তারা জান্তার শেষ অবশিষ্ট সীমান্ত ঘাঁটি মংডু শহরের বাইরে অবস্থিত বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নং ৫ বেশ কয়েক মাস লড়াইয়ের পর রোববার সকালে দখল করেছে। এর আগে রোববার আরাকান আর্মি জানায়, ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এর সরকার এবং সহযোগী রোহিঙ্গা মিলিশিয়াদের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে। রাখাইনের মিডিয়া সোমবার জানিয়েছে, মংডুর এই যুদ্ধের পরে প্রায় ৮০ জন রোহিঙ্গা বিদ্রোহীসহ সরকারি সৈন্যদের পাশাপাশি সামরিক অপারেশন কমান্ড ১৫ এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে গ্রেপ্তার করেছে আরাকান আর্মি। আরাকান আর্মি মে মাসের শেষের দিকে মংডু আক্রমণ শুরু করে। আর সীমান্তবর্তী এই শহরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পেতে ছয় মাস সময় লাগল গোষ্ঠীটির। ইরাবতী বলছে, আরাকান আর্মি এখন বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের তিনটি শহরেরই নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করছে। এগুলো হচ্ছে- রাখাইন প্রদেশের মংডু ও বুথিডাং এবং চিন প্রদেশের পালেতোয়া। পালেতোয়ার সঙ্গে ভারতের সীমান্তও রয়েছে। রাখাইনে যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী একজন সামরিক বিশ্লেষক বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য পুনঃস্থাপন পশ্চিমাঞ্চলীয় এই প্রদেশে বসবাসকারী মানুষের দুর্দশা কমাতে সাহায্য করবে। অন্যদিকে রাখাইনে ২০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন বলে জাতিসংঘ গত মাসে জানিয়েছে। জান্তা বাহিনী এই প্রদেশের দিকে যাওয়ার রাস্তা ও নৌপথ অবরোধ করেছে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাসহ খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ সরবরাহেও বাধা দিয়েছে।

হাইতিতে গ্যাংয়ের হামলায় দুইদিনে নিহত ১৮০

হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের সিটে সোলেইল বস্তিতে চালানো গ্যাংয়ের হামলায় দুইদিনে কমপক্ষে ১৮০ জন নিহত হয়েছেন। এক গ্যাং নেতা তার সন্তানকে মন্ত্রবানে অসুস্থ করার অভিযোগ তুলেন বস্তিটির বৃদ্ধদের বিরুদ্ধে, এরপরই গ্যাংয়ের সদস্যরা বস্তিটির বৃদ্ধদের ওপর নৃশংস হামলা চালায়। এতে ওই হতাহতের ঘটনা ঘটে। খবর সিএনএনের। দেশটির মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘ জানিয়েছে, নিহতদের অধিকাংশেরই বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি এবং বেশিরভাগ লাশই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এ নিয়ে দেশটিতে চলতি বছরে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ‘মিকানো’ নামে পরিচিত ওয়ার্ফ জেরেমি নামক গ্যাংয়ের নেতা মনেল ফিলিপ্স তার সন্তানের অসুস্থতার পর এই হত্যাযজ্ঞের আদেশ দেন। হাইতির জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, মিকানোর মতে তিনি একজন ভুডু পুরোহিতের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছিলেন। যিনি ওই এলাকার বৃদ্ধদের বিরুদ্ধে মন্ত্রবলে তার শিশুকে ক্ষতি করার অভিযোগ তুলেছিলেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওয়ার্ফ জেরেমি গ্যাংয়ের সদস্যরা শুক্রবার কমপক্ষে ৬০ জন এবং শনিবার ৫০ জনকে কুপিয়ে হত্যা করে। সিটি সোলেইল মূলত পোর্ট-অ-প্রিন্সের বন্দরনগরের একটি ঘনবসতিপূর্ণ বস্তি। যা হাইতির সবচেয়ে দরিদ্র এবং সহিংস এলাকাগুলোর মধ্যে একটি। সেখানে গ্যাং গ্রুপের কঠোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তাদের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহার সীমিত করা হয়েছে। যা স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের তথ্য শেয়ার করাটা কঠিন করে তুলেছে। ওয়ার্ফ জেরেমি গ্যাংয়ের প্রধান ফিলিপ্স ২০২২ সালে প্রতিবেশী ডোমিনিকান রিপাবলিকে নিষিদ্ধ হন। সম্প্রতি তার এক সন্তান অসুস্থ হয় এবং শনিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়। জাতিসংঘ অক্টোবর মাসে অনুমান করেছিল যে, ফিলিপ্সের গ্যাং-এ প্রায় ৩০০ সদস্য ছিল এবং তারা ফোর্ট ডিমাঞ্চে এবং লা সালিনে এলাকায়ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতো। ২০১৮ সালের নভেম্বরে এই লা সালিনেই ৭১ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিককে হত্যার ঘটনা ঘটে এবং শত শত বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। লা সালিন হত্যাকাণ্ড পরিকল্পনা করার অভিযোগসহ আরও অনেক অপরাধে পোর্ট-অ-প্রিন্সের গ্যাংগুলোর জোট ভিভ আনসামের মুখপাত্র জিমি ‘বারবিকিউ’ চেরিজিয়েরকে জাতিসংঘ নিষিদ্ধ করেছিল। তিনি তখন একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন। গত অক্টোবরেও হাইতির আর্টিবোনিটে অঞ্চলের পন্ট-সন্ডে শহরে গ্যাংয়ের হামলায় কমপক্ষে ১১৫ জন নিহত হয়। গ্রান গ্রিফ গ্যাংয়ের দাবি, স্থানীয় বাসিন্দারা তাদেরকে সড়কে টোল আদায়ে বাধা দেওয়ায় এটি ছিল তাদের প্রতিশোধমূলক হামলা। হাইতির সরকার মূলত রাজনৈতিক বিবাদে আচ্ছন্ন। যে কারণে রাজধানী এবং এর আশপাশে সশস্ত্র গ্যাংগুলোর তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। হাইতির কর্তৃপক্ষ ২০২২ সালে স্থানীয় পুলিশের জন্য আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহায়তা চেয়েছিল। তবে জাতিসংঘ ২০২৩ সালে হাইতির জন্য যে মিশনটি অনুমোদন করেছে, সেটি আংশিকভাবে মোতায়েন হয়েছে এবং গুরুতরভাবে সংখ্যায় অপ্রতুল।

গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতা চলছেই, প্রাণহানি পৌনে ৪৫ হাজার ছাড়াল

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় থামছেই না ইসরায়েলি বর্বরতা। দখলদার দেশটির হামলায় একদিনে আরও অন্তত ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৮৪ জন। নতুনদের নিয়ে ফিলিস্তিনের উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৪ হাজার ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া গত ১৪ মাসের নিরলস হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজার ৭৫৮ জনে পৌঁছেছে বলে সোমবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত এক লাখ ৬ হাজার ১৩৪ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৫০ জন নিহত এবং আরও ৮৪ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। সেখানে যেতে পারছেন না উদ্ধারকারীরা। তবে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থীশিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরায়েলি নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজাবাসী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।

বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্তে ‘অ্যান্টি-ড্রোন ইউনিট’ বসাচ্ছে ভারত

ড্রোন হুমকি থেকে দেশকে রক্ষা করতে সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা জোরদারে বড় পরিসরে অ্যান্টি ড্রোন ইউনিট বসাতে যাচ্ছে ভারত। রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাজস্থানের যোধপুরে বিএসএফের ৬০তম প্রতিষ্ঠা দিবসের কুচকাওয়াজে দেয়া ভাষণে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এ কথা জানান।তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে ড্রোন হুমকি আরও বাড়তে পারে। তাই, এখন থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’অমিত শাহ বলেন, ‘সরকারের সব সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, ডিআরডিও এবং বিভিন্ন গবেষণা বিভাগের সমন্বয়ে এই অ্যান্টি ড্রোন ইউনিট গঠন করা হয়েছে।’তিনি আরো বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে পাঞ্জাবের আন্তর্জাতিক সীমান্তে এই ড্রোন বসানো হয়েছে। এটি ড্রোন অনুপ্রবেশের ৫৫ শতাংশ ঠেকাতে পারে, যা আগের ড্রোনবিরোধী সিস্টেম থেকে তিন শতাংশ উন্নত।’অমিত শাহ বলেন, ‘ড্রোন সৃষ্ট হুমকি থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ব্যাপক আকারে অ্যান্টি-ড্রোন ইউনিট গঠন করা হবে।’বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তের ব্যাপারে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মোদি সরকার আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর সংবেদনশীল এলাকাগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য একটি সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা (সিআইবিএমএস) চালু করেছে এবং আসামের ধুবরিতে স্থাপিত পাইলট প্রকল্পের যে ফল পাওয়া গেছে, তা খুবই উৎসাহব্যাঞ্জক।’ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পাইলট প্রকল্পটির আরও কিছু উন্নতি করার পর সিআইবিএমএস সিস্টেমটি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সীমান্তে ব্যবহার করা হবে।’তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সীমান্তে ৫৯১ কিলোমিটার বেষ্টনী নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এক হাজার ১৫৯ কিলোমিটার সীমান্তে ফ্লাডলাইট স্থাপন করা হয়েছে এবং ৫৭৩টি সীমান্ত ফাঁড়িসহ ৫৭৯টি পর্যবেক্ষণ পোস্ট নির্মাণ করা হয়েছে।’

ঋণ দেয়ার আশ্বাসে ৫৫ হাজার টাকার মুরগি খেলেন ব্যাংক ম্যানেজার!

পোল্ট্রি ব্যবসায় বড় করার জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চেয়েছিলেন এক খামারি। ঋণ অনুমোদনের জন্য যোগাযোগও করেন এক ব্যাংক ম্যানেজারের সাথে। তবে, ঋণ তো পাননি বরং তাকেই ৩৯ হাজার রুপির (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৫ হাজার টাকা) মুরগি খাওয়াতে হয়েছে ওই ব্যাংক ম্যানেজারকে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ছত্রিশগড় রাজ্যের বিলাসপুর জেলার মাস্তুরিতে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।ভুক্তভোগী ওই খামারির নাম রুপচাঁদ মনোহর। পোল্ট্রি ব্যবসায় বড় করার জন্য স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (এসবিআই) মাস্তুরি শাখা থেকে ১২ লাখ রুপি ঋণ নেয়ার কথা ভাবেন তিনি। আর এ কারণে ওই ব্যাংকের এক ম্যানেজারের দ্বারস্থ হন। কিন্তু, তিনি তখনো ভাবতে পারেননি যে, ঋণ পাওয়ার বদলে উল্টো তাকেই বিশাল অঙ্কের টাকা খোয়াতে হবে।ওই খামারি জানান, তিনি তার মুরগি বিক্রি করে দুই মাসের মধ্যে পুরো দশ শতাংশ কমিশন পরিশোধ করেছেন। কিন্তু, ঋণ অনুমোদনের জন্য ওই ব্যাংক ম্যানেজার তার কাছে প্রতি শনিবার দেশি মুরগি চান। আর শেষ পর্যন্ত তাকে ৩৮ হাজার ৯০০ রুপির মুরগি দিতে হয় বলে দাবি করেন মনোহর।মনোহর আরও বলেন, ‘ম্যানেজারকে দেয়ার জন্য একটি গ্রাম থেকে দেশি মুরগি কিনেছিলেন তিনি।’ আর মুরগি কেনার সেই বিলও তার কাছে আছে বলেও দাবি করেন তিনি।কিন্তু, এক সময় মনোহর বুঝতে পারেন, ওই ম্যানেজারের তার ঋণ অনুমোদনের কোন ইচ্ছাই নেই। তিনি কেবল তাকে ঠকাচ্ছেন। এমনকি ম্যানেজার যে মুরগি খেয়েছিলেন, তার মূল্যও পরিশোধ করতে অস্বীকার করেন। তাই, কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে তিনি সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট (এসডিএম) অফিসে অভিযোগ করেন। সেইসঙ্গে কর্মকর্তারা যদি ওই ম্যানেজারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হন, তাহলে তিনি আত্মহত্যা করারও হুমকি দেন।মনোহর অনশনে বসার হুমকি দিয়েছেন এবং যদি তার দাবি পূরণ না করা হয়, তাহলে মাস্তুরিতে এসবিআই শাখার সামনে আত্মহত্যা করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেয়া বন্ধের ঘোষণা ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে জন্ম নিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেশটির নাগরিকত্বপ্রাপ্তির যে আইন বা বিধি এত দিন প্রচলিত ছিল, তা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে ২০২১ সালের ক্যাপিটল হিল দাঙ্গায় জড়িতদের ক্ষমার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। সংবাদ বিবিসির। আগামী মাসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিনেই ২০২১ সালে ক্যাপিটল দাঙ্গায় জড়িতদের ক্ষমার দিকে তিনি নজর দেবেন বলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন। এনবিসির মিট দ্য প্রেসে দেয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘এই মানুষগুলো নরকযন্ত্রণা ভোগ করছে।’ গেল নভেম্বরের নির্বাচনে জয়লাভের পর এই প্রথম কোন সম্প্রচার নেটওয়ার্কে ইন্টারভিউ দিলেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী যে কারও জন্য স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব পাওয়ার যে প্রক্রিয়া রয়েছে, সেটিও বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে শিশু অবস্থায় নিয়ে আসা নথিপত্রবিহীন কিছু অভিবাসীকে সহায়তায় ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। গত শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রেকর্ড করা এই বিস্তৃত ইন্টারভিউতে ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালন শুরুর পর অভিবাসন, জ্বালানি ও অর্থনীতিসহ ‘অনেকগুলো’ নির্বাহী আদেশ জারি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে হামলা চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। কংগ্রেসের যৌথ ওই অধিবেশনে সেদিন জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছিল। এক পর্যায়ে ক্যাপিটল ভবনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ও মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন ট্রাম্পের সমর্থকরা। হামলাকারীদের অনেকেই ছিল সশস্ত্র। ভেতরে ঢুকে সিনেট হলে রীতিমত তাণ্ডব চালায় তারা। শুধু তা-ই নয়, তৎকালীন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিসহ বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতার কার্যালয়ও তছনছ করে তারা। হামলা-সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ নিহত হন পাঁচজন। এনবিসির মিট দ্য প্রেসে দেয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি সেই দাঙ্গায় জড়িত থাকার জন্য দোষী সাব্যস্ত কয়েক শত লোককে ক্ষমা করতে চাইবেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা মামলাগুলো দেখব। হ্যাঁ, কিন্তু আমি খুব দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নিতে যাচ্ছি। (আর সেটা) প্রথম দিনেই।’ অভিবাসন প্রসঙ্গে ট্রাম্প এনবিসিকে বলেন, ‘তিনি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তথাকথিত জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিধান বাতিল করার পরিকল্পনা করছেন। এই নীতির আওতায়, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া যে-কেউ- তার বাবা-মা অন্য দেশে জন্মগ্রহণ করলেও- মার্কিন পাসপোর্ট তথা নাগরিকত্ব পেয়ে থাকেন।’ জন্মগত নাগরিকত্বের বিধানটির মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে নিশ্চিত করা হয়েছে। এ সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী সব ব্যক্তিই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।’ তবে ট্রাম্প বলছেন, ‘এই নিয়ম বদলাতে হবে।’ অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন সংক্রান্ত আইনজীবীরা বলছেন, ‘ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ হবে মার্কিন সংবিধানবিরোধী এবং যদি ক্ষমতা গ্রহণের পর সত্যিই এটি কার্যকর হয়, তাহলে সংবিধান লঙ্ঘনের মত গুরুতর ঘটনা ঘটবে।’ প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব-গ্রিনকার্ড অর্জনের একটি সহজ এবং জনপ্রিয় পথ হচ্ছে মার্কিন ভূখণ্ডে সন্তান জন্মদান। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, কোন শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়া মাত্র তাকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হয় এবং ওই শিশুর বয়স ১৮ পার হওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে বড় করা এবং দেখাশোনা করার জন্য তার বাবা-মাকে বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়। আর এক বার বৈধ বসবাসের অনুমতি পেলে নাগরিকত্ব ও গ্রিনকার্ড প্রাপ্তির পথও বহু সহজ হয়। ফলে, ট্রাম্পের এই নির্দেশনা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বৈধ নথিবিহীন অভিবাসীদের জন্য বড় ধাক্কা।

শান্তির বার্তা দিয়ে সিরিয়ায় রাতভর হামলা ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্রের

সিরিয়ায় শান্তি ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে ১৮ মাসের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল। তবে, সিরিয়া পুনর্গঠনে সহযোগিতার কথা বললেও ইসরাইলকে সঙ্গে নিয়ে দামেস্কে রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাতভর বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাশার আল-আসাদের পতনের পর দামেস্কে প্রকাশ্যে এসেছেন বিদ্রোহী নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি। তাকে স্বাগত জানান সিরীয়রা। ঐতিহাসিক উমাইয়া মসজিদের ভেতর থেকেই নিজের প্রথম বার্তা দেন এই যোদ্ধা।তিনি বলেন, ‘এই বিজয় সিরীয়দের। ভাইয়েরা, এই বিজয় পুরো ইসলামি জাতির ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়। এটি এই অঞ্চলের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট। মাত্র ১১ দিনে আমরা পুরো দেশকে স্বাধীন করতে পেরেছি। সৃষ্টিকর্তাকে অশেষ ধন্যবাদ।’বিদ্রোহীদের অভিযানের মুখে পালিয়ে পরিবারসহ রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ার কথা জানিয়েছে রাশিয়া।এ দিকে, দেশটির চলমান সংকটময় পরিস্থিতিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরাপদ, নিরপেক্ষ ও শান্ত পরিবেশ গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিরোধী নেতারা। আর এ জন্য নির্বাচনের আগে ১৮ মাস পর্যন্ত অন্তর্বর্তী শাসন ব্যবস্থার কথা বলেছেন সিরিয়ার প্রধান বিরোধী গোষ্ঠীর বিদেশ শাখার নেতা হাদি আল-বাহরা।একইসঙ্গে ছয় মাসের মধ্যে নতুন সংবিধানের খসড়া তৈরি করে এর উপর গণভোটের দাবি জানিয়েছেন তিনি।এছাড়া, আসাদ সরকারের পতনের পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘দেশ পুনর্গঠনে এটা সিরীয়দের জন্য ঐতিহাসিক সুযোগ। তবে, দেশটিতে কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যেন মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ থাকবে ওয়াশিংটন।’তবে, বাইডেন শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বললেও, মিত্র ইসরাইলকে সঙ্গে সিরিয়ায় বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের অবস্থান দাবি করে সিরিয়ার বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালায় মার্কিন সেনাবাহিনী। একই দিন দামেস্কের একটি গবেষণাকেন্দ্র গুঁড়িয়ে দেয় নেতানিয়াহু বাহিনী।এছাড়া, সিরিয়ার একজন যুদ্ধ পর্যবেক্ষক জানিয়েছেন, রাতারাতি সিরিয়ার বিভিন্ন সামরিক অবস্থান ও ডিপো লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরাইল।এ দিকে, ৫০ বছর পর প্রথম বারের মত সিরিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করে গোলান মালভূমির একটি বড় অংশ দখল করেছে ইসরাইল। অঞ্চলটির পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দাদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্য দিকে, সিরিয়ায় আসাদ যুগের অবসানের পেছনে ইসরাইলের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছে ইরান। তেহরানের অভিযোগ, বিদ্রোহীদের অস্ত্রসহ সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে ইসরাইল।

সিরিয়ায় আইএসের ৭৫ ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

সিরিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ৭৫টি ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রোববার (৮ ডিসেম্বর) এসব হামলা চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, আইএসের শীর্ষ নেতা, সহযোগী ও বিভিন্ন ক্যাম্প লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে। সংবাদ এএফপি, তাসের। সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, বি-৫২, এফ-১৫ এবং এ-১০সহ একাধিক মার্কিন বিমান ৭৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশটির বিভিন্ন স্থানে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অভিযানের মুখে ব্যক্তিগত বিমানে করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন বাশার আল-আসাদ। বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘এর মাধ্যমেই সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫৩ বছরের শাসনামলের অবসান হল।’ ২০০০ সালের জুলাই মাসে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন বাশার আল-আসাদ। একই সময়ে তিনি বাথ পার্টির নেতা ও সামরিক বাহিনীর প্রধানের দায়িত্বও নেন। তবে, তার শাসনের এক দশক পর অর্থাৎ ২০১১ সালে সিরিয়ার জনগণ গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলনে মাঠে নামলে তিনি কঠোর দমননীতি গ্রহণ করেন। ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধকে ঘিরে বাশার আল-আসাদের সঙ্গে পশ্চিমাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। তিনি ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের বিরোধিতা করেছিলেন। সম্ভবত তার আশংকা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর পরবর্তী টার্গেট সিরিয়া হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র সেসময় ইরাকে তাদের বিরোধীদের কাছে অস্ত্র চোরাচালানে সহায়তার জন্য সিরিয়াকে দায়ী করছিল। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর ২০০৫ সালে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি বৈরুতে বিস্ফোরণে নিহত হলে এ ঘটনার জন্য অনেকে সিরিয়া ও তার সহযোগীদেরই দায়ী করে। এ দিকে, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ও তার পরিবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে। ক্রেমলিনের সূত্র উল্লেখ করে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবরে বলা হয়েছে, ‘মানবিক দিক বিবেচনা করে আসাদ ও তার পরিবারকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে রাশিয়া।’ ক্রেমলিনের একটি সূত্র বলেছে, রাশিয়া সব সময় সিরিয়ার সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষে ছিল। ‘আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আলোচনার পুনরারম্ভের জন্য জোর দিচ্ছি।’ রাশিয়ার কর্মকর্তারা সিরিয়ার সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। বিদ্রোহীরা সিরিয়ায় অবস্থিত রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি ও কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে। এ দিকে, সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান করেছে রাশিয়া। জাতিসংঘে দেশটির প্রথম উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি দিমিত্রি পলিয়ানস্কি জানান, সোমবার (৯ ডিসেম্বর) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বৈঠকের সময় নিশ্চিত করেছে। দিমিত্রি পলিয়ানস্কি বলেন, ‘আসাদ সরকারের পতনের গভীরতা এবং এর প্রভাব রাশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের জন্য কী হতে পারে, তা এখনই বলা কঠিন।’

আসাদকে জবাবদিহি করতে হবে: বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।’ বাশারের ক্ষমতাচ্যুত হওয়াকে দেশটির রাজনৈতিক উত্থান হিসেবে উল্লেখ করে বাউডেন বলেছেন, ‘দেশ পুনর্গঠনে সিরীয় নাগরিকদের ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’ এসেছে।’ রোববার (৮ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউসে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেছেন। সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠিগুলোর জোট আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর এটাই যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া। জো বাইডেন সতর্ক করে বলেছেন, ‘ওয়াশিংটনকে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর উত্থানের বিরুদ্ধেসর্বদা সজাগ থাকতে হবে।’ জঙ্গি গ্রুপগুলো ইসলামিক স্টেটের সদস্যদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী নতুন করে হামলা চালিয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। বাইডেন বলেছেন, ‘সিরীয় সরকারের পতন ন্যায় বিচারের মৌলিক ফল। সিরিয়ায় দীর্ঘ দিন ধরে চলা গৃহযুদ্ধের ভোগান্তিতে থাকা জনগণের জন্য এই বিজয় একটি ঐতিহাসিক মুহুর্ত।’ সাংবাদিকরা বাইডেনের কাছে জানতে চান, রাশিয়ায় পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া বাশারের পরিণতি কী হওয়া উচিত? জবাবে বাইডেন বলেছেন, ‘আসাদকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।’ বাইডেন বলেছেন, ‘দেশ পুনর্গঠনের কাজে সিরীয় নাগরিকদের সহযোগিতা দিবে যুক্তরাষ্ট্র।’

বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের কারণ জানালেন ট্রাম্প

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন নিয়ে মুখ খুললেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিদ্রোহী যোদ্ধাদের হামলার মুখে ব্যক্তিগত বিমানে সিরিয়া ছেড়ে পালিয়ে রাশিয়ায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়া আসাদকে পরিত্যাগ করাতেই তার পতন হয়েছে। খবর রয়টার্সের। রোববার ট্রাম্প তার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে লেখেন, আসাদ চলে গেছেন। তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তার রক্ষক, ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বাধীন রাশিয়া তাকে আর রক্ষা করতে আগ্রহী ছিল না। ইউক্রেনের কারণে রাশিয়া সিরিয়ায় সব আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। বিদ্রোহী যোদ্ধারা যখন সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ঢুকছিল, ঠিক তখন ব্যক্তিগত বিমানে দেশ থেকে পালিয়ে যান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদ। টানা ২৪ বছর ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে ৫৩ বছরের আসাদ পরিবারের শাসনের অবসান হয়েছে। দামেস্কের আগে আলেপ্পো, হামা এবং হোমসের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল বিদ্রোহীরা। আসাদের পতনের জেরে রোববার খুশিতে রাস্তায় নেমে আসে সিরীয়রা। সেনাবাহিনীর ট্যাংকের ওপর উঠে উল্লাস করেন অনেকে। বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সঙ্গে উল্লাসে মাতে সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন দেশের নেতাদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের হবু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও আসাদের এই পতন নিয়ে মন্তব্য করলেন। যুক্তরাষ্ট্রে আগামী ২০ জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। ট্রুথ স্যোশালে তিনি বলেন, আসাদের আরেক মিত্র ইরানও এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। ইসরায়েলকে মোকাবেলা করতে গিয়ে ইরান দুর্বল হয়েছে। আর রাশিয়া দুর্বল হয়েছে ইউক্রেন আর অর্থনৈতিক দৈনদশার কারণে।

গাজায় বর্বর ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৪৪ ফিলিস্তিনি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় একদিনে আরও অন্তত ৪৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৪ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ৪৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজার ৭০৮ জনে পৌঁছেছে বলে অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরলস এই হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত এক লাখ ৬ হাজার ৫০ জন আহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৪৪ জন নিহত এবং আরও ৭৪ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থীশিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরায়েলি নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজাবাসী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।

আসাদ পালানোর পর যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ একটি ব্যক্তিগত হেলিকপ্টারে করে রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও বাশারের দামেস্ক ছেড়ে যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। এরপর সিরিয়া নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস। সংবাদ আল জাজিরার। সিরিয়া পরিস্থিতির দিকে যুক্তরাষ্ট্র নিবিড়ভাবে নজর রাখছে বলে হোয়াইট হাউস বিবৃতি দিয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সিরিয়ার নজিরবিহীন পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।’ হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, জো বাইডেন ও তার দল সিরিয়ার নজিরবিহীন এই ঘটনা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং আঞ্চলিক অংশীদারদের সাথে এ বিষয়ে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখছে।’ গেল ২৬ নভেম্বর নতুন করে আসাদ বাহিনীর ওপর হামলা চালাতে শুরু করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম। প্রথমে আলেপ্পো শহর দখলের পর দ্রুত রাজধানী দামেস্কের দিকে এগোতে থাকে তারা। এরপর মাত্র ১১ দিনের মাথায় রোববার (৮ ডিসেম্বর) দামেস্ক ‘মুক্ত’ করার ঘোষণা দিল বিদ্রোহীরা। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে কার্যত সিরিয়ায় দীর্ঘ ৫৪ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটল। এ দিকে, প্রেসিডেন্টের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি বলেছেন, ‘জনগণের দ্বারা নির্বাচিত যে কোন নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’ তিনি বলেন, ‘তার বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেই। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সচল রাখতে কাজ করবেন।’ এ দিকে, বিদ্রোহী দলের প্রধান জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকবে।

দেশ ছেড়ে পালানোর পর আসাদের বাসভবনে লুট

সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ২৪ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের অবসান হতেই তার বাসভবনে ঝাঁপিয়ে পড়ে আমজনতা। শুরু হয় ভাঙচুর। প্রেসিডেন্টের বিলাসবহুল বাসভবনে ঢুকে চলে অবাধে লুটপাট। এমন ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সংবাদ বিবিসির। দেশ ছেড়েছেন বাশার আল-আসাদ। এই খবর চাউর হতেই প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে ঢুকে পড়ে আমজনতা। নানা বয়সী নারী ও পুরুষ ওই প্রাসাদে ঢুকে পড়েন। তারা অবাধে নানা সামগ্রী একেবারে নিজের মনে করে নিয়ে যান! এ নিয়ে এক্সে একজন লেখেন, ‘আমজনতা আসাদের প্রাসাদে ঢুকে পড়েছে এবং ইচ্ছামতো লুটপাট করছে।’ আরেকজন লেখেন, ‘আসাদ দেশ ছেড়ে পালাতেই সিরিয়ার মানুষ তার প্রাসাদে ঢুকে পড়েছেন।’ তবে, সিরিয়ার আমজনতা যে শুধুমাত্র প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে ঢুকে লুটপাট চালাচ্ছে, তা নয়। বাশার আল-আসাদের একটি মূর্তিও ভাঙচুর করেছে তারা। সেই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইদানিং এই ধরনের ছবি আরও দেখা গেছে। মনে হচ্ছে, যেন বার বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে বিশ্বের নানা প্রান্তে।

আসাদের পতনে নেতৃত্ব দেয়া কে এই জোলানি?

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনে অবদান রাখা গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সবার আগে আসবে হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নাম। আবু মুহাম্মদ আল-জোলানি এই গোষ্ঠীটির প্রধান। সিরিয়ায় আল কায়েদার শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও পরে এইচটিএস আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং লক্ষ্য অর্জনের জন্য আরও মধ্যপন্থী অবস্থান নেন জোলানি। সংবাদ এএফপির। রোববার (৮ ডিসেম্বর) যখন যখন বিদ্রোহীরা সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ঢুকে তখন তিনি তার বাহিনীকে নির্দেশ দেন, যাতে তারা জনসাধারণের জন্য নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে না যায়। গুলি ছুড়ে উদযাপন না করে। এই মধ্য দিয়ে তার তুলনামূলক মধ্যমপন্থা গ্রহণের দিকটিই প্রকাশিত হয়। আবু মুহাম্মদ আল-জোলানি বছরের পর নেপথ্যে থেকে কাজ করেছেন। তবে, সম্প্রতি তিনি আলোচনায় এসেছেন, আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন এবং এমন ঘোষণা দিচ্ছেন যা বিশ্বের সব সিরিয়ানের নজর কেড়েছে। বিশেষ করে, তাদের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে সে সম্পর্কে কিছু সূত্র খুঁজতে সিরিয়ানরা এখন জোলানির বক্তব্যের দিকে তাকিয়ে আছেন। শুরুর দিকে আল কায়েদার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তিনি তথাকথিত আল কায়েদা নেতাদের মত পাগড়ি পরতেন না। বরং, বেশির ভাগ সময়ই সামরিক পোশাক পরতে পছন্দ করেন। ২০১৬ সালে আল কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর জোলানি নিজেকে একজন আরও মধ্যপন্থী নেতা হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। তবে, তিনি এখনো বিশ্লেষক এবং পশ্চিমা সরকারগুলোর সন্দেহ দূর করতে পারেননি। তাদের অনেকেই এখনো এইচটিএসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মনে করেন। আবু মুহাম্মদ আল-জোলানি ১৯৮২ সালে দামেস্কে জন্ম নেন। সেখানেই বেড়ে ওঠেন তিনি। তার পরিবার ছিল বেশ উচ্চবিত্তের এবং শিক্ষা জীবনে তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। তবে, তার প্রকৃত নাম আহমদ আল-শারা। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যানেল পিবিএসকে বলেছিলেন, ‘তার ছদ্মনামটি মূলত তার পরিবারের মূল উৎস গোলান মালভূমির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের কারণে।’ ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা শুরু হলে তিনি সিরিয়া ছেড়ে যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি আল কায়েদা ইন ইরাকের সদস্য হন, যার নেতৃত্ব দেন আবু মুসাব আল-জারকাবি। সে সময় তিনি পাঁচ বছর কারাগারে বন্দী ছিলেন। পরে ২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ায় আসাদের শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু হলে তিনি দেশে ফিরে আল-নুসরা ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৩ সালে জোলানি ইসলামিক স্টেটের প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদির আনুগত্য করতে অস্বীকার করেন এবং পরিবর্তে আল কায়েদার প্রধান আইমান আল-জওয়াহিরির প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন। সমর্থকদের চোখে জোলানি একজন বাস্তববাদী ও প্রতিপক্ষের কাছে সুযোগসন্ধানী। ২০১৫ সালের মে মাসে জোলানি বলেছিলেন, ‘তিনি আইএসের মত পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানোর কোন ইচ্ছা রাখেন না।’ তিনি আরও ঘোষণা করেছিলেন, আসাদ পরাজিত হলেও প্রেসিডেন্টের গোত্রভুক্ত আলাওয়ি বা আলভি সংখ্যালঘুর ওপর কোন প্রতিশোধমূলক আক্রমণ চালানো হবে না।’ আল কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে জোলানি দাবি করেন, তিনি এটি করেছেন যেন, পশ্চিমা দেশগুলো তার সংগঠনের ওপর হামলা চালানোর কারণ না পায়। এর পর থেকে তিনি নিজেকে একজন বিশ্বাসযোগ্য রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে জোলানি উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামি গোষ্ঠীগুলোর ওপর চাপ দিয়ে তাদের সঙ্গে এইচটিএসের (হায়াত তাহরির আল-শাম) একীভূত হওয়ার ব্যবস্থা করেন, এর ফলে সরকারবিরোধী ইদলিব প্রদেশের বিশাল অংশ তার নিয়ন্ত্রণে আসে। নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে এইচটিএস একটি বেসামরিক সরকার গড়ে তোলে এবং ইদলিব প্রদেশে একটি রাষ্ট্রের আকার সৃষ্টি করে, একই সঙ্গে বিদ্রোহী প্রতিপক্ষদের দমন করে। এই প্রক্রিয়ায় এইচটিএস স্থানীয় বাসিন্দা এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছ থেকে গুরুতর নির্যাতনের অভিযোগের মুখোমুখি হয়, যা জাতিসংঘ যুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। নিজ দলকে ঘিরে থাকা ভীতি ও ঘৃণার ব্যাপারে সচেতন জোলানি আলেপ্পোর বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেন, তার নতুন শাসনের অধীনে তারা কোন ক্ষতির সম্মুখীন হবে না। তিনি তার যোদ্ধাদের আহ্বান জানান, আসাদের শাসন থেকে ‘মুক্ত’ করা এলাকাগুলোর নিরাপত্তা বজায় রাখতে।

দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর

বিদ্রোহীদের ক্রমাগত আক্রমণের ফলে ইরান সমর্থিত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে এক দল বন্দুকধারী হামলা চালিয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) আসাদ সরকার পালিয়ে যাওয়ার পরই এ হামলার ঘটনা ঘটে। তবে, কারা এই হামলা চালিয়ে তা স্পষ্ট করা যায়নি। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর রয়টার্সের। হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) বিদ্রোহী গোষ্ঠীসহ একাধিক গোষ্ঠী সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকা দখলে নিয়েছে। এরপরই ইরানি দূতাবাসে হামলার ঘটনা ঘটে। আরব ও ইরানের মিডিয়ার প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে, দূতাবাসের ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। হামলার ফলে ভবনের ভেতরে থাকা ফার্নিচেয়ার, বিভিন্ন নথি ও একাধিক জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রয়টার্সের পক্ষ থেকে ওই ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করা হয়নি। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ইরান জানায়, তারা দূতাবাস থেকে পরিবারগুলোকে সরিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু, নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে তা অস্বীকার করা হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘শুধু সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।’ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সিরিয়ায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত হোসেইন আকবারি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, ‘পাঁচ থেকে ছয়জন কূটনৈতিক ওই দূতাবাসে রয়েছে এবং এটি এখনও খোলা রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’

পাকিস্তানের সীমান্তে সংঘর্ষে ছয় সৈন্য ও ২২ সন্ত্রাসী নিহত

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) আফগান সীমান্তবর্তী এলাকায় সশস্ত্র সংঘর্ষে ছয়জন পাকিস্তানি সৈন্য ও ২২ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামপন্থি যোদ্ধারা ওই অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা বাড়িয়েছে। সংবাদ রয়টার্সের। সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে জানানো হয়, ওয়াজিরিস্তান এবং এর আশেপাশের এলাকায় অভিযান চালানোর পর এই সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষটি তিনটি জেলার বিভিন্ন স্থানে হয়েছে। তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি), যা পাকিস্তান তালিবান নামেও পরিচিত, দাবি করেছে যে, তাদের যোদ্ধারা একটি নিরাপত্তা চৌকিতে আক্রমণ চালিয়ে ওই সেনাদের হত্যা করেছে। তবে তারা সংঘর্ষে কতজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে, তা উল্লেখ করেনি। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে টিটিপি তাদের হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে, বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে। টিটিপি বিভিন্ন সুন্নি ইসলামপন্থি জঙ্গি গোষ্ঠীর একটি মাদার সংগঠন, যারা দীর্ঘ দিন ধরে পাকিস্তানের সরকারকে উৎখাত করে কঠোর ইসলামিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। টিটিপি আফগান তালিবান থেকে আলাদা হলেও, তারা আফগান তালিবানের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেছে। উল্লেখ্য, টিটিপির কার্যক্রম আফগানিস্তানে তালিবান সরকারের ক্ষমতা দখলের পর থেকে আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক বাহিনী আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করার পর, আফগানিস্তান তালিবান পাকিস্তান তালিবানকে কৌশলগত সহায়তা দিচ্ছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। ওয়াজিরিস্তান ও পার্শ্ববর্তী এলাকা দীর্ঘ দিন ধরে জঙ্গি কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দু। টিটিপির সাম্প্রতিক হামলাগুলো পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলেছে এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি সৃষ্টি করেছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চুক্তি করতে চান জেলেনস্কি, দাবি ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার (৮ ডিসেম্বর) জানিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে তার দেশের যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি চুক্তির বিষয়ে আগ্রহী। সম্প্রতি ফ্রান্সের প্যারিসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে সাক্ষাৎ হয়েছে। সেখানেই জেলেনস্কি ট্রাম্পকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন। সংবাদ এএফপির। এর আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) এলিসি প্রাসাদে জেলেনস্কি ও ট্রাম্পের সঙ্গে ত্রিমুখী আলোচনার আয়োজন করেছিলেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার প্রায় তিন বছর চলছে। অন্য দিকে, আগামী জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন ট্রাম্প। নিজের ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প লিখেছেন, এই পাগলামি বন্ধ করতে জেলেনস্কি ও ইউক্রেন একটি চুক্তি করতে চায়। ট্রাম্প আরো বলেন, ‘এখানে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি হওয়া উচিত এবং আলোচনা শুরু করা উচিত। অকারণে বহু জীবন নষ্ট হচ্ছে, বহু পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। যদি এটা চলতে থাকে তবে আরও বড় ও খারাপ কিছুতে পরিণত হতে পারে।’ এ দিকে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে হামলা-পাল্টাহামলার সংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। তাছাড়া শীতের শুরুতে হামলা জোরালো করেছে রাশিয়া। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ইউক্রেনের কেন্দ্রীয় শহর ক্রিভি রিহতেও হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার বাহিনী। স্থানীয় গভর্নর জানিয়েছেন, এ ঘটনায় অন্তত দুইজন নিহত হয়েছেন। সেখানের জরুরি সার্ভিস জানিয়েছে, ১৬ জন আহতের মধ্যে একজন শিশু। তাছাড়া, নিখোঁজদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে বলেও জানানো হয়েছে।

সিরিয়ায় আসাদের পিতার মূর্তি গুঁড়িয়ে দিল জনতা

সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রয়াত বাবা হাফিজ আল আসাদের একটি মূর্তি গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানী দামেস্ক শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে জেরমানা এলাকার প্রধান চত্বরে বসানো মূর্তিটি ভেঙে ফেলা হয়। সংবাদ রয়টার্সের।একজন প্রত্যক্ষদর্শী ও আরও কয়েকজন অধিকারকর্মী এ তথ্য জানিয়েছে। জেরমানা মূলত দ্রুজ অধ্যুষিত শহর। হোমস শহর দখলের পর শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিদ্রোহীরা যখন দামেস্কের দিকে রওয়ানা হয়, তখন প্রেসিডেন্ট আসাদবিরোধী বিক্ষোভকারীরা মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেয়।গণমাধ্যমে হাফিজ আল আসাদের আবক্ষ মূর্তি ভেঙে ফেলার ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়।হাফিজ আল আসাদ সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি সিরিয়ার ক্ষমতা দখল করেন এবং ২০০০ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত টানা ২৯ বছর সিরিয়া শাসন করেন।তার মৃত্যুর পর ছেলে বাশার আল আসাদ ক্ষমতা নেন এবং বিদ্রোহীদের দামেস্ক দখলের পর রোববার (৮ ডিসেম্বর) তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এর মধ্য দিয়ে পিতা ও পুত্র মিলে প্রায় ৫৪ বছর স্বৈরশাসনের অবসান ঘটল।

বিদ্রোহীদের তোপে পালিয়ে যাওয়া কে এই বাশার আল-আসাদ?

বিদ্রোহীদের হাত ধরে নতুন যুগ শুরু হয়েছে সিরিয়ায়। তারা রোববার (৮ ডিসেম্বর) সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সেই সাথে বলা হয়েছে, ‘দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন অজ্ঞাত স্থানে। এর আগে, মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে ধাপে ধাপে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো দখল করে নেয় বিদ্রোহীরা। টানা পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে সিরিয়ার ক্ষমতায় আছে বাশার আল-আসাদ পরিবার। তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ১৯৭১ সাল থেকে সিরিয়া শাসন করেছেন। পিতার মৃত্যুর পর ২০০০ সালে ক্ষমতায় বসেন ছেলে বাশার আল-আসাদ। টানা দুই যুগ (২৪ বছর) ধরে তিনি ছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।১৯৬৫ সালে দামেস্কে জন্ম নেন আসাদ। রাজধানীর মেডিকেল স্কুল থেকে তিনি স্নাতক হন এবং চক্ষুবিদ্যায় বিশেষ জ্ঞান লাভের জন্য লন্ডনে লেখাপড়া করেন। কিন্তু, তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর অধ্যয়নরত অবস্থায় সিরিয়ায় ফিরে আসেন তিনি।আসাদের বাবার মৃত্যুর পর নিয়মানুযায়ী তার বড় ভাই বাসেল আল-আসাদ ক্ষমতায় বসবেন এটাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু, আচানক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান বাসেল। এরপর সিরিয়ার রাজনৈতিক পট বদলে যায়। বাবার নির্দেশে লন্ডন থেকে ফিরে আসেন আসাদ।২০০০ সালে হাফেজ আল-আসাদের মৃত্যু হলে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে সিরিয়ার ক্ষমতায় বসেন আসাদ। ২০১১ সালে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে বিক্ষোভ শুরু হয়। গণতন্ত্রের জন্য রাস্তায় নামেন সিরিয়াবাসী। কিন্তু, তখন থেকেই তাদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু করে আসাদ বাহিনী। এক পর্যায়ে বাশারের পদত্যাগের দাবিতেও শুরু হয় বিক্ষোভ। তাতে আরও কঠোর হাতে দমন শুরু করে আসাদ সরকার। এতে সে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। এক সময় বাশার সরকারের বিরোধীরা তার বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নেয়। দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। বিদ্রোহীরা দখল করে নেয় সিরিয়ার বেশিরভাগ এলাকা। এরপর দেশটিতে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ। টানা ১৩ বছর ধরে চলে ওই যুদ্ধ। এতে মারা যায় দেশটির কয়েক লাখ মানুষ; উদ্ধাস্তু হন আরও কয়েক লাখ। পলাতক প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় সিরিয়ার অভ্যন্তরে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার, কুর্দিদের দমন ও গুমসহ অসংখ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।

সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতন নিয়ে কী বললেন ট্রাম্প?

বিদ্রোহীদের হাতে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন হয়েছে, যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গেছে পুরো বিশ্বে। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেছেন, ‘বাশার আল-আসাদ রাশিয়ার সমর্থন হারিয়ে তার দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন।’ সংবাদ আল জাজিরার।নিজের সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, ‘আসাদ চলে গেছেন। তার রক্ষক, রাশিয়া, ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বে তাকে আর রক্ষা করতে আগ্রহী ছিল না।’এর আগে, সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) তাদের টেলিগ্রামে বলেছে, ‘একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি হয়েছে এবং একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। স্বৈরাচার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পালিয়েছেন। সিরিয়া মুক্ত হয়েছে।’এইচটিএস আরও বলেছে, ‘এখন একটি ‘নতুন সিরিয়া’ গড়ে তোলা হবে; যেখানে ‘সবাই শান্তিতে বসবাস করবে এবং ন্যায়বিচারের জয় হবে।’রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ঢুকতে শুরু করেন বিদ্রোহীরা। এর মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালান। বাশার আল-আসাদ দামেস্ক ছাড়লেও কোথায় গেছেন, সেটা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, একটি ব্যক্তিগত বিমান দামেস্ক বিমানবন্দর ছেড়ে গেছে। বিমানটিতে সম্ভবত আসাদ রয়েছেন। বিমানটি ছাড়ার সময় সেখানে সরকারি সেনা উপস্থিত ছিল।

আসাদ সরকারের পতন: ৫০ বছরের মধ্যে প্রথম বার সিরিয়া সীমান্ত অতিক্রম ইসরাইলের বাহিনীর

বিদ্রোহী আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল সিরিয়ার মাটিতে তার সামরিক উপস্থিতি জোরদার করবে বলার কিছুক্ষণ পরই ইসরাইলি ট্যাংক সিরিয়ার সীমান্ত বেড়া অতিক্রম করেছে। ১৯৭৪ সালের পর এই প্রথম বারের মত ইসরাইলের ট্যাংক সিরিয়ার সীমান্ত বেড়া অতিক্রম করল। সংবাদ আলজাজিরার।সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী বা বেসামরিক নাগরিকদের আনুগত্য নির্বিশেষে, তাদের ইসরাইলের অবস্থানের কাছাকাছি আসা থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।এর আগে ইসরাইলের প্রবাসী-বিষয়ক মন্ত্রী আমিচাই চিকলি বলেছিলেন, ‘ইসরাইলকে অবশ্যই দখলকৃত গোলান মালভূমিতে হারমন পর্বতে সিরিয়ার সাথে ‘১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতির ভিত্তিতে একটি নতুন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে’।উল্লেখ্য, ইসরাইল ১৯৬৭ সালে সিরিয়ার গোলান মালভূমির বেশিরভাগ অংশ দখল করে নেয় এবং ১৯৮১ সালে এটিকে সংযুক্ত করে।এ দিকে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেশবাসীর উদ্দেশে নিজেদের প্রথম বিবৃতি সম্প্রচার করেছেন বিদ্রোহীরা।বেসামরিক পোশাক পরে রাষ্ট্রীয় টিভিতে এক ব্যক্তি বলেছেন, ‘দামেস্ক শহর মুক্ত করা হয়েছে।’ওই ব্যক্তি বলেন, ‘অত্যাচারী বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করা হয়েছে। দামেস্কের কারাগার থেকে সব বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, আমাদের সব যোদ্ধা ও নাগরিকরা সিরিয়া রাষ্ট্রের সম্পত্তি সংরক্ষণ করবে। সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক।’ এর আগে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) তাদের টেলিগ্রামে বলেছে, ‘একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি হয়েছে এবং একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। স্বৈরাচার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পালিয়েছেন। সিরিয়া মুক্ত হয়েছে।’

দামেস্কে রাস্তায়-রাস্তায় উল্লাস, বিমানবন্দরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পালিয়ে গেছেন। বিদ্রোহী যোদ্ধারা প্রায় বিনা বাধায় রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়ার পর বিমানে করে অজ্ঞাত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে শহরটি ছেড়ে যান আসাদ। এরপরই মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির রাজধানীতে রাস্তায় নেমে এসেছেন হাজার হাজার মানুষ। তারা উল্লাস প্রকাশের পাশাপাশি ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে বিভিন্ন স্লোগানও দিচ্ছেন। অন্য দিকে, দামেস্কের বিমানবন্দরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) এসব তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। বিদ্রোহীদের হাতে দামেস্কের পতন হয়েছে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ২৪ বছরের শাসনের অবসান আসলেই হয়েছে, কিনা সেটিও বলা যাচ্ছে না। তবে, কোনও সন্দেহ নেই যে- এটি সিরিয়ার যুদ্ধে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির নিয়ন্ত্রণের জন্য বিরোধীদের যারা বছরের পর বছর ধরে সংগ্রামে লিপ্ত ছিলেন তাদের কাছে। আল জাজিরা আরও বলেছে, ‘আমরা যা নিশ্চিত করতে পারি, তা হল- সশস্ত্র বিরোধীরা সিরিয়ার রাজধানীতে ঢুকেছেন। দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।’ মূলত গত দশ দিনে যা দেখা গেছে, তা হল- বিরোধীদের অগ্রযাত্রার মুখে সিরীয়ার সেনাবাহিনী কার্যত ভেঙে পড়েছে। তাদের লড়াই করার ইচ্ছা ছিল কম বা নেই বললেই চলে। মনে রাখতে হবে, সিরীয়ার সেনাবাহিনীর এই ব্যক্তিরা ছিল নিয়োগপ্রাপ্ত। মূলত সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছিল তারা। এ দিকে, প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ‘হাজার হাজার মানুষ গাড়িতে ও পায়ে হেঁটে দামেস্কের প্রাণকেন্দ্রে জড়ো হচ্ছেন। “স্বাধীনতা” স্লোগান দিচ্ছেন তারা।’ এছাড়া, অনলাইনে পোস্ট করা বেশ কিছু ভিডিওতে দামেস্কের উমাইয়াদ স্কোয়ারে বেশ কিছু লোককে পরিত্যক্ত সামরিক ট্যাংকের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে এবং আনন্দ উদযাপনে গান গাইতে দেখা গেছে। আল জাজিরা এসব ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেছে। এ দিকে, দামেস্কে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। বেশ কিছু ভিডিওতে সিরিয়ার রাজধানী থেকে সরকারি সৈন্যদের শহর ছেড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। আল জাজিরা এসব ফুটেজেরও সত্যতা যাচাই করেছে। এছাড়া, দামেস্কের প্রাণকেন্দ্রে গুলির তীব্র শব্দ শোনা গেছে বলে রোববার (৮ ডিসেম্বর) সেখানকার দুই বাসিন্দা জানিয়েছেন। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে গোলাগুলির উৎস কী তা এখনও স্পষ্ট নয়। বলে রাখা ভাল, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় রয়েছেন। এর আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর দেশটি শাসন করেছিলেন। তবে, ২০১১ সালে বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি। এরপর বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এতে করে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। যদিও ২০১৫ সালে বাশার আল আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া। সে বছর সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। এরপর বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। কিন্তু, সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে যাওয়ায় এবং ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার ব্যস্ত থাকার সুযোগে বিদ্রোহীরা ফের তৎপর হয়ে উঠে। এরই এক পর্যায়ে সম্প্রতি বিদ্রোহীরা হামলা শুরু করে এবং এই হামলার মুখে নাটকীয়ভাবে দামেস্ক ছেড়ে পালালেন আসাদ।

‘সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক’, রাষ্ট্রীয় টিভিতে ঘোষণা বিদ্রোহীদের

প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেশবাসীর উদ্দেশে নিজেদের প্রথম বিবৃতি সম্প্রচার করেছেন বিদ্রোহীরা। সংবাদ আলজাজিরার।বেসামরিক পোশাক পরে রাষ্ট্রীয় টিভিতে এক ব্যক্তি বলেছেন, ‘দামেস্ক শহর মুক্ত করা হয়েছে।’ওই ব্যক্তি বলেন, ‘অত্যাচারী বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করা হয়েছে। দামেস্কের কারাগার থেকে সব বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, আমাদের সব যোদ্ধা ও নাগরিক সিরিয়া রাষ্ট্রের সম্পত্তি সংরক্ষণ করবে। সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক।’এর আগে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) তাদের টেলিগ্রামে বলেছে, ‘একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি হয়েছে এবং একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। স্বৈরাচার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পালিয়েছেন। সিরিয়া মুক্ত হয়েছে।’এইচটিএস আরও বলেছে, ‘এখন একটি ‘নতুন সিরিয়া’ গড়ে তোলা হবে; যেখানে ‘সবাই শান্তিতে বসবাস করবে ও ন্যায়বিচারের জয় হবে।’রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানী দামেস্কে ঢুকতে শুরু করেন বিদ্রোহীরা। এর মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালান। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে সিনিয়র দুই সেনা কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, বাশার আল আসাদ দামেস্ক ছাড়লেও কোথায় গেছেন, সেটা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, একটি ব্যক্তিগত বিমান দামেস্ক বিমানবন্দর ছেড়ে গেছে। বিমানটিতে সম্ভবত আসাদ রয়েছেন। বিমানটি ছাড়ার সময় সেখানে সরকারি সেনা উপস্থিত ছিল।

দামেস্ক ছেড়ে পালালেন বাশার আল-আসাদ

বিদ্রোহীদের তোপের মুখে অবশেষে দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। তিনি বিমানে করে অজানা গন্তব্যের দিকে রওয়ানা দিয়েছেন। তবে কোথায় যাচ্ছেন সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে। দেশটির দুজন কর্মকর্তার সূত্রে এই তথ্য জানায় বার্তা সংস্থাটি। এদিকে সিরিয়ার বিদ্রোহী যোদ্ধারা দামেস্কে ঢুকে পড়েছে। শহরটির বিভিন্ন জায়গায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। রোববার ভোরেই সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হোমস শহর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দেয় বিদ্রোহী যোদ্ধারা। ২০১১ সালে এই শহর থেকেই প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিরোধী বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। মাত্র এক দিনের লড়াইয়ের পরে রোববার ভোরে হোমসের মূল শহরটির ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা জানায় বিদ্রোহীরা। এখন তারা রাজধানী দামেস্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ইতোমধ্যে দামেস্কের উপকণ্ঠে গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরই মধ্যে খবর এসেছে দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। হোমসের কেন্দ্রীয় শহর থেকে সরকারি সেনা প্রত্যাহারের পর হোমসের হাজার হাজার বাসিন্দা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা ‘আসাদ চলে গেছে, হোমস মুক্ত’ এবং ‘সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক, বাশার আল-আসাদের পতন হোক’ স্লোগানে নাচ-গানে মেতে ওঠেন। বিদ্রোহীরা আকাশে ফাঁকা গুলি চালিয়ে হোমসের বিজয় উদযাপন করেন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলতে দেখা যায় স্থানীয়দের। হোমসের পতনকে বিদ্রোহীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে। শহরটি সিরিয়ার কৌশলগত কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এটি দখলে নেওয়ার ফলে বিদ্রোহীরা গুরুত্বপূর্ণ হাইওয়ে ক্রসরোড এম-ফাইভ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। উপকূলীয় অঞ্চল লাটাকিয়া থেকে দামেস্ককে যাওয়ার মূল সড়ক এটি। লাটাকিয়ায় রাশিয়ার নৌঘাঁটি রয়েছে। সুন্নি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের কমান্ডার আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি, হোমস দখলকে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে অভিহিত করেছেন। যেসব সরকারি সেনা অস্ত্র সমর্পণ করবেন তাদের ক্ষতি না করার আহ্বানও জানান তিনি। বিদ্রোহীরা শহরের কারাগার থেকে হাজার হাজার বন্দিকে মুক্ত করেছে। সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কাগজপত্র পুড়িয়ে তাড়াহুড়ো পালিয়েছে। সিরিয়ার বিদ্রোহী কমান্ডার হাসান আব্দুল ঘানি রবিবার ভোরে এক বিবৃতিতে বলেছেন, দামেস্কের আশেপাশের গ্রামাঞ্চলকে ‘সম্পূর্ণ মুক্ত’ করার জন্য অভিযান চলমান রয়েছে এবং বিদ্রোহী বাহিনী রাজধানীর দিকে তাকিয়ে আছে।