ইসলামের দৃষ্টিতে স্বাধীনতা ও বিজয়
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০১:৫৬ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯
ইসলামে বিজয় ও স্বাধীনতার গুরুত্ব অপরিসীম। স্বাধীনতা সম্পর্কে ইসলামী আদর্শের মূল কথা হলো মানুষ মানুষের গোলামি করবে না। মানুষ একমাত্র তার সৃষ্টিকর্তার গোলামি করবে। পৃথিবীতে লক্ষাধিক নবী-রসুলের আগমন হয়েছে। তাঁরা সবাই সমাজ, দেশ, জাতি তথা মানুষের স্বাধীনতার জন্য কাজ করেছেন। মানুষের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য নবী-রসুলগণ অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন।
বলা যায়, সব ধরনের দাসত্ব ও পরাধীনতা থেকে মুক্ত করাই হচ্ছে মহান আল্লাহর প্রেরিত নবী-রসুলদের কাজ। এই স্বাধীনতার জন্যই রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করে মদিনায় সংগঠিত হয়ে মক্কাকে করেছিলেন স্বাধীন। সবাইকে উপভোগ করতে দিয়েছিলেন মক্কা বিজয় তথা স্বাধীনতার প্রকৃত আনন্দ। বিজয় সম্পর্কে আল কোরআনে দুটি সূরা রয়েছে। একটি সূরা ফাতাহ বা বিজয়, আরেকটি সূরা আন নাসর বা মুক্তি ও সাহায্য। আসলে বিজয়ের যে আনন্দ তা আল্লাহর শুকরিয়া, আল্লাহর পবিত্রতা ও বড়ত্ব বর্ণনার মাধ্যমেই প্রকাশ করার শিক্ষা ইসলাম আমাদের দেয়।
যারা রাষ্ট্রের স্বাধীনতা অর্জন বা সুরক্ষার জন্য অবদান রাখেন তাদের মর্যাদাও ঘোষণা করেছেন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। একাধিক হাদিসে তিনি মুসলমানদের তাদের মাতৃভূমির সীমান্ত পাহারা দেওয়ার মর্যাদা বর্ণনা করেছেন। এক হাদিসে তিনি শত্রুর আক্রমণ থেকে মাতৃভূমি রক্ষার জন্য এক রাত পাহারা দেওয়াকে এক মাস নফল নামাজ ও রোজার চেয়ে উত্তম বলে গণ্য করেছেন। ইসলামে নামাজ ও রোজার মর্যাদা অপরিসীম। মাতৃভূমির সুরক্ষাকে সে মর্যাদার অনুষঙ্গ করা হয়েছে। ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী শত্রুদের দ্বারা আক্রান্ত হলে যেমন সে আক্রমণ প্রতিহত করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য তেমন মাতৃভূমি আক্রান্ত হলেও তা রক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরজ।
একবার রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সাহাবির জানাজা পড়ার জন্য প্রস্তুত হলেন। হজরত ওমর (রা.) তাঁকে বলেন, ‘ইয়া রসুলুল্লাহ! এই ব্যক্তি খারাপ ছিল, তার জানাজা পড়বেন না।’ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত সাহাবিদের দিকে ফিরে তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমরা কেউ কি এই লোকটিকে ইসলামের কোনো কাজে দেখেছ?’ একজন সাহাবি বললেন, ‘হ্যাঁ, সে আল্লাহর জন্য সীমান্ত (স্বাধীনতার) পাহারায় একটি রাত জেগে ছিল।’ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জানাজা পড়লেন এবং তাঁকে দাফন করলেন। তারপর (সেই সাহাবির বিষয়ে) বললেন, ‘তোমার সাথীরা মনে করছে যে তুমি একজন জাহান্নামি মানুষ, আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি জান্নাতের অধিবাসী।’ বায়হাকি। মহান আল্লাহ মুক্তিযোদ্ধাদের দুনিয়ায় নেক হায়াত ও পরকালে জান্নাত দিয়ে ধন্য করুন!
লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।
ঢাকাওয়াচ/স