হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ‘বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সি মালিক’
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৭:৪৫ পিএম, ০৭ নভেম্বর ২০২৪
চলতি বছরে পবিত্র হজ পালনের জন্য তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ‘বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সি মালিক’ ব্যানারে এজেন্সি মালিকদের একাংশ। এ সময় তারা বর্তমান সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী বিগত বছরের তুলনায় হজের খরচ কমেছে বলে দাবি করেন।
এর আগে মালিকদের অপর একটি অংশ সরকার ঘোষিত প্যাকেজে খাবার খরচ বাদ দেওয়ায় খরচ কার্যত কমেনি বলে জানিয়েছিল। তবে মালিকদের এ অংশ ওই দাবি অস্বীকার করে তাদের প্যাকেজ ঘোষণা করার অধিকার নেই বলে দাবি করেন।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি হলে বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির মালিকদের বেসরকারি হজ প্যাকেজ-২০২৫ ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির আহ্বায়ক মো. আক্তার উজ্জামান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ফরজ ইবাদাত পবিত্র হজ পালন করার সুযোগ পান। তবে কোটা বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও বিগত কয়েক বছরে নানা অনিয়ম, নৈরাজ্যের মাধ্যমে বিমান ভাড়া ও হজ্জ প্যাকেজ মূল্য অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি করে পুরো হজ ব্যবস্থাপনাকে সঙ্কটাপন্ন করে তোলা হয়। ফলে ২০২৪ সালে প্রায় ৪৫ হাজার নিবন্ধিত হাজী পবিত্র হজ পালন থেকে বঞ্চিত হয়।
আক্তার উজ্জামান বলেন, ২০২৫ সালের হজ প্যাকেজ মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিমান ভাড়াসহ প্যাকেজ মূল্য কিছুটা কমেছে। তবে এখনও এ দেশের সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সাধ ও সাধ্যের মাঝে বিস্তর ফারাক রয়েছে। ফলে আমরা এ বছরও কোটা পূর্ণ হওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি। আবেগ অনুভূতি সম্বলিত ফরজ ইবাদত হজ পালনকে সহজতর করার জন্য বিমান ভাড়া আরও কমিয়ে ও সৌদি পার্টের মুয়াল্লিম ফি এবং ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ ভ্যাট/ট্যাক্স কমিয়ে আরও সুলভ প্যাকেজের দাবি জানাচ্ছি। সাথে সাথে চলমান রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াকে বেগবান করার লক্ষ্যে বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সি মালিকদেরর পক্ষ থেকে বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকদের জন্য ঘোষণা করছি।
তাদের প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে, সাধারণ হজ প্যাকেজ-১ যাতে মোট ৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা, সাধারণ হজ প্যাকেজ-২ মূল্য মোট ৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং বিশেষ হজ প্যাকেজ, যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এসব প্যাকেজ হজযাত্রীদের জন্য খাওয়াসহ কুরবানি ব্যতিত মূল্য ধরা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী নাম প্রসঙ্গে আহ্বায়ক আক্তার উজ্জামান বলেন, হজ্জের খরচ বেড়ে যাওয়ায় মানুষ হজে যাওয়া কমে গিয়েছিল। বিগত সরকার ও তাদের সুবিধাভোগীদের জন্য এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এটা সকলের জন্যই বৈষম্য। ক্যাম্প দূরের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ক্যাম্প দূরের বিষয়ে সরকারকে সরাসরি বলেছি। খাবারের খরচটাও মূল প্যাকেজে যুক্ত করতে সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছি।
আলদা হওয়ার কারণ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে এজেন্সি মালিক নেতা সম্রাট বলেন, মন্ত্রণালয় তাদের (সাধারণ হজ এজেন্সির মালিক) কমিটি বাতিল করেছে। হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টেও তারা পরাজিত হয়েছে। তারা আমাদের আওয়ামী লীগ বানানোর চেষ্টা করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়ে হচ্ছে। আমরা সরকারের পক্ষ-বিপক্ষ নই। আমরা হাজীদের সুবিধার্থে কথা বলছি। আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই প্যাকেজের খরচ কমানো হয়েছি।
খাবারের খরচ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে খরচ বেড়েছে এবং ক্যাম্প বাইরে চলে গেছে এমন প্রশ্নের জবাবে সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী বলেন, প্যাকেজে খরচ কমেছে এটা দৃশ্যমান। আমরা বিমানের খরচ আরও কমানোর দাবি জানিয়েছি। গত বছরের তুলনায় ডলার ও রিয়ালের দাম বেড়েছে। সেই তুলনায় প্যাকেজ ৬ লাখের উপর হওয়ার কথা। দৃশ্যত যতটা কমেছে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পরিস্থিতি বিবেচনায় খরচ তার থেকেও বেশি কমেছে। আমরা সরকারের পক্ষে না, আমরা হাজীদের সুবিধার পক্ষে।
ক্যাম্প তিন কিলোমিটার দূরে হলে হাজীদের কষ্ট বাড়বে এমন অবস্থায় নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে তারা বলেন, একটু দূরে থেকে হলেও চলতি বছরে অধিক মানুষ হজের সুযোগ পাচ্ছেন। আমাদের আরও প্যাকেজ আছে। তিন কিলোমিটারেরটা একটি সাধারণ প্যাকেজ, আরও অনেক প্যাকেজ আছে যেখানে ১ কিলোমিটার দূরেও আছে। কাবা শরীফের ০ থেকে ১৩ কিলোমিটারের মধ্যে তাদের থাকার স্থান নির্ধারণ করা হয়। যারা চান তারা কাছের প্যাকেজ নিতে পারবেন। এছাড়া দূরের হাজীদের জন্য যানবাহন থাকবে।