সীমান্ত হত্যা নিয়ে নীরব থাকে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম
- প্রকাশঃ ০৯:২২ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম নীরব থাকে। তবে, বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম এ নিয়ে সরব। সীমান্ত হত্যা কাম্য নয়। এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁয় বে অফ বেঙ্গল সম্মেলনের অধিবেশনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের উদ্যোগে আয়োজিত সম্মেলনে ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জটিলতার গতিপথ’ শীর্ষক ওই অধিবেশনে বাংলাদেশ ও ভারতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।
অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, ‘বাণিজ্য, পানিবণ্টন কিংবা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি যে কোন ইস্যুতেই ভারত বাংলাদেশের ওপর কর্তৃত্ব রাখতে চায়। ভারতের ছাড় দেয়ার মানসিকতা কম।’
অন্য দিকে, নিউজ এইজের সম্পাদক নুরুল কবির বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু, ভারত এই যুদ্ধকে নিজেদের কৃতিত্ব হিসেবে বয়ান নির্মাণের চেষ্টা করে।’
অধিবেশনে বক্তারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু শুধু বাংলাদেশের নয়, ভারতেরও নিরাপত্তা ইস্যু। এই সংকট সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।’
ভারতের একজন প্রতিনিধি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব না দিলে সমাধান হবে না।’
বাংলাদেশের একজন বক্তা অভিযোগ করেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ভারতের সহায়তা তেমন পায়নি।
উভয় দেশের বক্তারা তিস্তা ইস্যু সমাধানে জোর দেন। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর ইস্যুতে ভারতের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব বলে তুলে ধরেন বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা। তবে, ভারতের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এতে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব নেই। তারা আলোচনার দিকে গুরুত্বারোপ করেন।
অধিবেশনে বক্তারা বলেন, ‘ভারতের সবচেয়ে বড় সীমান্তে বাংলাদেশে। দুই দেশের বহু সাফল্য রয়েছে। সমস্যাও আছে। তবে, সমস্যা সমাধানে এখন বাংলাদেশের নয়া সরকার ভারতের সরকারের সাথে আলোচনা করতে হবে।’
অধিবেশনে বাংলাদেশের একজন বক্তা বলেন, ‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে গণহত্যা চালিয়ে ভারতে আশ্রয়ে রয়েছেন। তাকে ফেরত আনতে আপনাদের পরামর্শ কি?’ এ ব্যাপারে ভারতের প্রতিনিধিরা বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ সরকার এখনো ফেরত চায়নি। তাকে ফেরত দিতে প্রসিডিউর ফলো করা উচিৎ।’
অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য দেন আলী রিয়াজ, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, নুরুল কবির, চাকমা সার্কেল প্রধান রাজা দেবাশীষ রায়, যুক্তরাষ্ট্রের কোলগেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক নবীন মুর্শিদ।
ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য দেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সেনা কমান্ডার অরুণ কে সাহনি, ভারতের ইনস্টিটিউট অফ গ্লোবাল স্টাডিজের সভাপতি অশোক সজ্জনহার, ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত, দ্যা হিন্দু পত্রিকার কূটনৈতিক সম্পাদক সুহাসিনী শেরিন হায়দার।
অধিবেশন সঞ্চালনা করেন সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো পারভেজ করিম আব্বাসি।
বে অফ বেঙ্গল কনভারসেশন উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এই বছরের সম্মেলনে পৃথিবীর ৮০ টিরও বেশি দেশ থেকে ২০০ জনের বেশি আলোচক, ৩০০ জন প্রতিনিধি ও ৮০০ অংশগ্রহণকারী যোগ দেন।