যে কারণে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আশাহত ফখরুল
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০২:৩৬ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০২৪
জাতীয় নির্বাচনের রূপরেখা না দেয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আশাহত হয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কার দৃশ্যমান করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মওলানা ভাসানীর মৃত্যু বার্ষিকীর আলোচনা সভায় ফখরুল ইসলাম এ কথা জানান।
সভায় মির্জা ফখরুর বলেন, ‘আমরা একটা ক্রান্তিকাল পার করছি। রোববার (১৭ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আমি আশাহত হয়েছি। ধারণা করেছিলাম, তিনি তার প্রজ্ঞা দিয়ে একটা নির্বাচনের রূপরেখা দেবেন। আমরা এখন পর্যন্ত আপনাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু, ফ্যাসিবাদের দোসররা সচিবালয়ে বসে আছেন। তারা তো আপনাকে সংস্কার করতে দেবেন না। তাই, সংস্কার দৃশ্যমান করুন। তবুও মানুষ মেনে নিচ্ছে। তারা ভাবছে, আপনি একটা সুন্দর জিনিস দেবেন।’
অবশ্যই সংস্কার চান উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘তবে এমন সময় যেন না নেয়া হয়, যাতে জনগণের ভেতর ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়। আমরা বলেছি, একজন দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। পার্লামেন্ট হতে হবে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট। বিচার বিভাগের সংস্কারের কথা পূর্বেও বলেছি আমরা। তারেক রহমানের কথা দেশবাসী ও তরুণরা গ্রহণ করছেন।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘রাজনীতি যদি ভুল হয়, তাহলে সে দলের ভরাডুবি হয়। যেমন এখন একটা পরিবর্তন এসেছে, এটাকে বুঝতে হবে যে ছেলেরা কী বলছে। ছাত্ররা বহু কথা বলছে, তাদের অধিকারও আছে। আমরা ১৫ বছর ধরে জান দিয়েছি, প্রাণ দিয়েছি। যখন বিভাগীয় সমাবেশ করতাম তখন আমরা বলতাম তরুণরা না আসলে বুক পেতে গুলি নেবে কে? আমরা বয়স্করা চিন্তা করি, আমার কী হবে? আমার পরিবারের কী হবে? কাজেই ছাত্রদের সাথে কোন দূরত্ব তৈরি করা যাবে না।’
‘আমরা আবার একটু হিসাবি। সেজন্যই আমরা বলছি, দ্রুত নির্বাচন হওয়া দেশের জন্য মঙ্গল। এ সরকার যত বেশি দিন থাকবে ততই সমস্যা বাড়বে। কারণ, এই সরকারের কোন মেন্ডেড নেই। হাসিনা পালিয়েছেন কেন? কারণ তিনি বুঝতে ভুল করেছেন। তিনি আমাদের কথা শোনেননি। আবারও বলতে চাই, এমন কাজ না করি, যাতে দেশ অনিশ্চয়তার দিকে যায়। বলেন ফখরুল।
মাওলানা ভাসানী ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক নেতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভাসানী কিংবদন্তি, তিনি বিরাট বটগাছ। তার অভ্যুত্থান একদম সাধারণ পরিবার থেকে। তার ভেতরে একটা আগুন আছে। পুরো ভারতবর্ষে পাকিস্তান আন্দোলনের জন্য তিনি কাজ করেছেন। সর্বত্র তার বিচরণ ছিল। তার আদর্শ আজকের রাজনীতির সাথে মিলিয়ে নিতে হবে। চাপিয়ে দেয়া বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছিল তার আন্দোলন।’
ফখরুল বলেন, ‘আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শেষ বর্ষের ছাত্র, তখন পল্টনে মাওলানা ভাসানী ডাক দিয়েছিলেন। সমাবেশ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু হাজার হাজার লোক হয়েছিল। আমরা কী করে তাকে ভুলব? তিনি যখন অসুস্থ হয়ে পিজিতে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন, সে সময় তিনি জিয়াউর রহমানকে বলেছিলেন তুমি তরুণ; তুমি সৎ; তুমি পারবে।’
‘তাই আসুন আমরা মাওলানা সাহেবের আদর্শ ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাই। আমরা বিশ্বাস করি, এ সরকার পারবে, এ দেশের মানুষ পারবে’।