পুলিশ ভেরিফিকেশনে ‘রাজনৈতিক পরিচয়’ চায় না সংস্কার কমিশন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:৩৬ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০২৪
পুলিশ ভেরিফিকেশনে ‘রাজনৈতিক পরিচয়’ তুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন। এছাড়া, ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে পুলিশকে হাইকোর্টের নির্দেশনা মানতে হবে বলেও জানান তিনি।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকালে সচিবালয়ে উপদেষ্টার নিজ দপ্তরে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান সফর রাজ।
কমিশনের প্রধান বলেন, ‘কার্যবিধির ১৬৭ ধারায় যেখানে পুলিশ রিমান্ডে নেয়, সেটির ক্ষেত্রেও হাইকোর্টের নির্দেশনা মানতে হবে৷ ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে তার পরিবারকে ফোনে জানাতে হবে৷’
বেশকিছু ব্যাপারে তারা একমত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন দুইটি কড়া আইন রয়েছে৷ ৫৪ ধারা অনুযায়ী পুলিশ ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেফতার করতে পারে৷ আরেকটি ১৬৭ ধারায় যেখানে পুলিশ রিমান্ডে নেয়৷ এ দুইটি ক্ষেত্রে আমরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক নই৷ এমনকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও মালিক না। এটা সিআরপিসি। আইন মন্ত্রণালয়ের আইন৷ এসব বিষয়ের কারণে আমরা আইন মন্ত্রণালয় থেকেও একজন যুগ্ম সচিবকে এ সংস্থার কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করেছি৷
সফর রাজ আরো বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি, দীর্ঘ দিন হল এসব বিষয় নিয়ে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম মামলা চলছে৷ ব্লাস্ট নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে কামাল হোসেন সাহেব এ বিষয়ে একটি রিট করেছিলেন৷ ওই রিটে হাইকোর্ট বলেছিল- এ আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে৷ অনেকগুলো গাইডলাইন দিয়ে দেয়৷ পরবর্তী এ বিষয় নিয়ে সরকার অ্যাপিলেট ডিভিশনে যায়। সেখানেও অ্যাপিলেট ডিভিশন থেকে বলা হয়- এ বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনার আগেই দেওয়া আছে৷ অর্থাৎ, আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ও সরকারের অন্যান্য সংস্থাগুলোকে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে৷ এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কাউকে গ্রেফতার করতে হলে অবশ্যই তার পরিবারের লোকজনকে সেটা জানাতে হবে৷ এটা হাইকোর্টের একটি রায়৷ আপনারা জানেন হাইকোর্টের রায় আইনের একটি অংশ৷’
পুলিশের দুর্নীতি নিয়ে সফর রাজ হোসেন বলেন, ‘দুর্নীতি হচ্ছে আমাদের এক নম্বর শত্রু৷ কোন বিভাগের দুর্নীতি কমে গেলে সেখানে কর্মদক্ষতা বাড়ে। আইনের প্রতি মানুষের আনুগত্য বাড়ে৷ আমাদের দেশের বড় সমস্যাই দুর্নীতি৷ এছাড়া আমরা পুলিশের বেতন কাঠামো নিয়ে আলোচনা করেছি৷ কাল এটা নিয়ে আরো আলোচনা হবে৷’
তিনি বলেন, ‘পুলিশসহ সরকারের সব বিভাগকে রাজনীতিমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে৷ নিকট অতীতে গেল ১৫ বছরে আমরা দেখেছি- পুলিশসহ অন্যান্য বিভাগগুলোর সদস্যরা রাজনৈতিক দলের সাথে সংযুক্ত ছিলেন৷ অনেকে দুর্নীতি করেছে ও পদোন্নতি নেওয়ার চেষ্টা করেছে৷ এটি বন্ধে সুপারিশের কাজ চলছে৷ এছাড়া, সাদা পোশাকে গ্রেফতারের বিষয়ে এখনো কোন সুপারিশ করা হয়নি।’
তবে, এ ব্যাপারে একটি নির্দেশনা দেওয়া হবে বলেও জানান কমিশনের প্রধান৷