সব নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চায় স্থানীয় প্রতিনিধিরা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৫:৩২ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
জাতীয় সংসদসহ সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই সব সময়ের জন্য চায় স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা। একইসাথে ডিসি, ইউএনওদের পরিবর্তে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের তাগিদ দিয়েছেন।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারবিষয়ক কমিশনপ্রধান বদিউল আলম মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে সিটি করপোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদসহ সব স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ছিলেন। তারা সবাই বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় হওয়া উচিত। যে পদ্ধতিতে আছে, সেই পদ্ধতিতেই যেন হয়, সংসদীয় পদ্ধতিতে যেন না হয়। তারা নারী প্রতিনিধিত্ব অর্থবহ করতে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতির কথা বলেছেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অর্থবহ করতে সব স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি এবং সাংসদদের ভোটে চেয়েছেন। সর্বজন গ্রাহ্য ব্যক্তি যেন এ পদে আসতে পারেন, সেই কথাও তারা বলেছেন।’
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক জানান, অনেকেই স্থানীয় সরকার ভোট বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারে অধীনেই সংসদ নির্বাচনের আগেই করার জন্য বলেছেন। একইসঙ্গে তারা সব সময় সব নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে ভোটের জন্য বলেছেন। এ জন্য তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলেছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসকদের পরিবর্তে ইসির কর্মকর্তাদের চেয়েছেন। তাদের পদচ্যুত করায় মনক্ষুণ্ন, সবাই প্রায় অন্তুষ্ট। কিন্তু, সবাই চান সত্যিকারের স্থানীয় সরকার যেন প্রতিষ্ঠিত হয়। কর্তৃত্ববাদী সরকার হয়েছিল সেখানে স্থানীয় সরকার শক্তিশালী হলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হত। একইসঙ্গে তারা সাংসদ ও কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত যেন হয় সেটা চেয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদ বিলুপ্ত করে নারীদের জন্য অন্যভাবে নির্বাচনের সুপারিশ এসেছে। সবাই দাবি করেছেন, স্থানীয় সরকার যেন শক্তিশালী হয়। তারা যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, মানুষের জীবনমান উন্নয়নে যেন ভূমিকা রাখতে পারেন, এ জন্য জাতীয় সংসদের মত স্থানীয় নির্বাচনেও যেন ভাল ব্যক্তিরা আসতে পারেন, যার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার শক্তিশালী হবে, সে কথা বলেছেন। তাদের অনেকেই আজ প্রথম বারের মত জাতীয় সংসদ ভবনে এসে নিজেরা সম্মানিত বোধ করেছেন। তারা বলেছেন, এ সুন্দর ভবনে যেন কখনোই আর অসুন্দর ব্যক্তিরা ঢুকতে না পারেন। প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার ব্যাপক দাবি উঠেছে।’
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা সময়মত কাজ শেষ করতে চাই। আমরা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ শেষ করতে চাই। শেষ পর্যন্ত আমরা প্রস্তাব নেব। তারপর সরকারের কাছে সুপারিশ করব।’
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ চাই। কমিশন যেন কঠোর হয়। আমরা মতামত দিয়েছি, যেন অল্প সময়ের মধ্যে ভোট দিতে পারি। রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসি কর্মকর্তা যেন হয়। ডিসি বা ইউএনওকে চাই না। বিচার বিভাগ ছাড়া সব ইসির নিয়ন্ত্রণে চাই। আমরা তাড়াতাড়ি নির্বাচনের কথা বলেছি।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি যেন ন্যূনতম ডিগ্রি পাস হয়। স্থানীয় নির্বাচনে যে দলীয় মার্কা না থাকে।’
সাবেক এক ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল ফেরদৌস বলেন, ‘আগের সরকারের আমলের কেউ যেন পুনর্বহাল হতে না পারে। সঠিক সময়ে, সঠিক উপায়ে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করে দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন না করা হয়, সে প্রস্তাব আমরা করেছি।’
অন্য এক সাবেক জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘দ্রুত সব নির্বাচন চাই। দিনের ভোট রাতে চাই না। নির্বাচন যাতে স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ হয়।’