সরকারের সমালোচনা করে যা বললেন ইলিয়াস কাঞ্চন


Jan 2025/Feb 2025/Ilias_20250228_213027207.jpg

দেশের চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা তুলে ধরে নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, এমন পরিস্থিতি কারো কাম্য ছিল না। কিন্তু রাষ্ট্র এই পরিস্থিতির উন্নতিও করছে না। তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সমালোচনা করে বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দায়িত্বে থেকে নির্বাচন দিলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হবে না। চরম সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশকে দিয়ে কাজ করাতে পারছেন না। যার কারণে পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। তিনি সরকারকে জনগণের কথা শোনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণ কি চায় সেটি বুঝতে হবে এবং সেই আলোকে কাজ করতে হবে।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণশক্তি সভা কর্তৃক ‘জনদুর্ভোগ ও স্থানীয় সরকার বিভাগ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, বাকস্বাধীনতাকে প্রাধান্য দিতে হবে। তাহলেই জনদুর্ভোগ শব্দটি সামনে আসবে না। দেশের চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিনের নায়েবে আমির ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, মানুষ কথা বলার অধিকার ফিরে পেয়েছে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। এই গণঅভ্যুত্থানের পর মানুষের অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল। গত ১৫ বছর জনপ্রতিনিধির নাম ব্যবহার করে নিজেদের দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত ছিল পার্লামেন্ট মেম্বার থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার পর্যন্ত সকল স্তরে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দিয়ে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকেও দলীয়করণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন,  যারা ২০১৪,  ২০১৮, ২০২৪ এর নির্বাচনের কারিগর, তাদের দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা ঐ একই ধারার নির্বাচন করবে। যা হবে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন। একটি কার্যকর নির্বাচনের জন্য ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এর নির্বাচনের কারিগরদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে এবং রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে অবশ্যই স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন অঞ্চলভেদে পৃথকভাবে করতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে এই সরকার ও প্রশাসনের কাজের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণিত হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরে জাতীয় সরকার নির্বাচন হলে অন্তবর্তীকালীন সরকার ও প্রশাসন নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে পারবে।

ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ স্থানীয় সরকার। পার্লামেন্ট মেম্বারের সাথে জনগণের সরাসরি তেমন কোনো কাজ নেই। জনগণের মূল কাজ স্থানীয় সরকারের সাথে। অথচ দেখা যায়, পার্লামেন্ট মেম্বার নির্বাচনে জনগণের মধ্যে যে আগ্রহ থাকে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সেটি পরিলক্ষিত হয় না। বিগত ১৫ বছর পার্লামেন্ট মেম্বাররা (এমপি) জনগণের জন্য কোনো কাজ করেনি। তারা শুধু জনগণের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে।

তিনি আরও বলেন, ইউনিয়ন পর্যায় থেকে জনগণের প্রশাসন নিয়োগ করতে হবে। স্থানীয় নির্বাচন আগে দিয়ে সরকার ও প্রশাসনের সক্ষমতা যাচাই করতে হবে। অনেক পপুলার দল স্থানীয় নির্বাচন আগে চায় না কারণ তারা জনগণের ভোটে বিশ্বাসী নয়।

রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের আস্থা অর্জন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণকে নির্বিঘ্নে ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। এই পরিবেশ রাষ্ট্র, সরকার ও প্রশাসন সৃষ্টি করবে; তবে এরজন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে পরিবেশ সৃষ্টিতে সহযোগিতা করতে হবে।

গণশক্তি সভার সভাপতি সাংবাদিক সাদেক রহমানের সভাপতিত্বে ও প্রফেসর ড. দেওয়ান সাজ্জাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব কাশেম মাসুদ, গণমুক্তি জোটের চেয়ারম্যান ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ, নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের সেক্রেটারি লিটন এরশাদ, বাংলাদেশ গণমুক্তি জোটের কো-চেয়ারপার্সন আক্তার হোসেন, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার, বাংলাদেশ নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক আহাদ নূর চৌধুরী, কলামিস্ট মেহেদী হাসান, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক আলাউদ্দিন কামরুল প্রমুখ।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×