অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করতে দিল্লিকে বার্তা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৫:৪২ পিএম, ১৩ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে ভারতের এহেন মন্তব্য ভালোভাবে নেয়নি ঢাকা। সেজন্য দিল্লিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বার্তা দিয়েছে ঢাকা।
সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বাংলাদেশ ইস্যুতে করা মন্তব্য নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) নিয়মিত সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
রফিকুল আলম বলেন, গত ৭ মার্চ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের মন্তব্যের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও সংখ্যালঘু সম্পর্কিত বিষয়সমূহ নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে। বাংলাদেশ মনে করে, এ বিষয়সমূহ একান্তই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ ধরনের মন্তব্য অযাচিত ও অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপের শামিল। এই ধরনের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাস্তবতার ভুল প্রতিফলন।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ এবং গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ সব দেশের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা আশা করি যে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ধরনের মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
বাংলাদেশবিরোধী ভারতীয় অপপ্রচার বন্ধে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করণীয় নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রফিকুল আলম বলেন, ভারতীয় অপ্রচার যা আমরা দেখছি তার বেশিরভাগ বেসরকারি পর্যায়ের। বিভিন্ন মিডিয়া হাউস তাদের নিজেদের মতো করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ ধরনের অপ্রচার সঠিকভাবে মোকাবিলা করা খুব একটা সহজ ব্যাপার না। কিন্তু এ বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবেচনার মধ্যে আছে এবং কীভাবে ভালো উপায়ে রেসপন্স করা যায় এই নিশ্চয়তা দিতে পারি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক নিয়ে মুখপাত্র বলেন, গত ৬-৭ মার্চ ২০২৫ কলকাতায় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে গঙ্গার পানি বণ্টনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। কারিগরি পর্যায়ের সভায় মূল আলোচ্য বিষয় ছিল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্যার পূর্বাভাস সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়, সীমান্ত নদীগুলোকে কেন্দ্র করে দুই দেশের পরিকল্পনার বিষয়টি এবং আরও অনেক বিষয়।
তিনি বলেন, কিছু বিষয়ের আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্তে না আসতে পারার কারণে বৈঠকের পর কোনো মিনিটসে সই করা হয়নি। তবে এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। কোনো সভায় দুপক্ষ এক বা একাধিক বিষয়ে একমত না হলে মিনিটস স্বাক্ষর নাও হতে পারে। অতীতেও বিভিন্ন সভায় এরকম ঘটনা ঘটেছে। দু-পক্ষ পরে কূটনৈতিক মাধ্যমে মতৈক্যের ভিত্তিতে এটি স্বাক্ষর করার প্রচেষ্টা নেবে।