‘বাংলাদেশ গণমাধ্যম কমিশন’ গঠনের প্রস্তাব
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:৪২ পিএম, ২২ মার্চ ২০২৫

‘বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল’ এবং সম্প্রচারমাধ্যম ও অনলাইনের জন্য বিগত সরকারের প্রস্তাবিত ‘সম্প্রচার কমিশন’-এর সমন্বয়ে ‘বাংলাদেশ গণমাধ্যম কমিশন’ গঠনের সুপারিশ করেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন।
শনিবার (২২ মার্চ) দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তরকৃত প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন।
প্রতিবেদনে করা ২০টি মূল সুপারিশের ভেতর একটি ‘বাংলাদেশ গণমাধ্যম কমিশন’ গঠনের সুপারিশ।
এই প্রস্তাবনায় বলা হয়, এই প্রতিষ্ঠানটিকে সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত একটি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গণমাধ্যমের স্বনিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব পদ্ধতি ও প্রতিষ্ঠান কার্যকর ভূমিকা রাখছে, তার অভিজ্ঞতার আলোকেই এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা দরকার।
প্রস্তাবনায় প্রতিষ্ঠানটিকে আর্থিকভাবে সচ্ছল করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি যাতে করে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সেজন্য আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে হবে। সরকারি অর্থের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার অর্থই হচ্ছে কোনো না কোনোভাবে সরকার কর্তৃক প্রভাবিত হওয়া। সেজন্য গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য তাদের আয় থেকে নির্ধারিত হারে চাঁদা নির্ধারণের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ের সংস্থান করা যেতে পারে।
উদাহরণ তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের প্রেস কাউন্সিল প্রতিটি সংবাদপত্রের ওপর আনুপাতিক হারে লেভি আদায় করে। তারা সরকারের অনুদানও গ্রহণ করে। ইন্দোনেশিয়ায়ও মিডিয়া কাউন্সিল সরকারের সহায়তা গ্রহণ করে, তবে তা নিঃশর্ত হতে হয়। বাংলাদেশেও প্রস্তাবিত গণমাধ্যম কমিশনে সরকারি সহায়তা নেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত, তবে তা হতে হবে নিঃশর্ত অনুদান।
‘বাংলাদেশ গণমাধ্যম কমিশন’ যেসব দায়িত্ব প্রস্তাব করা হয়েছে- প্রকাশক ও সম্পাদকের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা নির্ধারণ যাতে ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত এবং ঋণখেলাপিরা গণমাধ্যমে মালিক বা সম্পাদক না হতে পারে; সাংবাদিকতার জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ
৩. সারা দেশে কর্মরত সাংবাদিকরা গণমাধ্যম কমিশনে নিবন্ধিত হবেন এবং কমিশন তাদের একটি তালিকা সংরক্ষণ করবে; সাংবাদিকদের জন্য একটি আচরণবিধি (কোড অব কন্ডাক্ট) প্রণয়ন করবে ও তার প্রতিপালন নিশ্চিত করবে; সম্প্রচার মাধ্যম (টিভি ও রেডিও) এবং অনলাইন পোর্টালের লাইসেন্স প্রদানের সুপারিশ ও তার শর্ত প্রতিপালন নিশ্চিত করবে এবং ভুল বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীর অভিযোগের প্রতিকার। এটি সম্ভব হলে সংবাদমাধ্যমের প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হবে এবং গণমাধ্যম মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হবে।