
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের দাবিতে করা আপিলের শুনানি সপ্তম দিনে প্রবেশ করেছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এই শুনানি শুরু হয়। আদালতে বিএনপির পক্ষে শুনানি করছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
এর আগে ২ নভেম্বর ও ২৯, ২৮, ২৩, ২২ অক্টোবর আপিলের ধারাবাহিক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মোট ২১ অক্টোবর এই আপিল প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এর মূল প্রেক্ষাপট গত ২৭ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল দায়ের করেন।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয় ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে, যা জাতীয় সংসদে ১৯৯৬ সালে গৃহীত হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহ ও আরও দুইজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট এই রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।
এরপর সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। ২০০৫ সালে রিটকারী পক্ষ আপিল করেন। ২০১১ সালের ১০ মে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করেন।
এই রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই গেজেট প্রকাশিত হয়।
৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন। অন্য চারজন হলেন তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
এরপর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৬ অক্টোবর, এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ২৩ অক্টোবর রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আলাদা আবেদন করেন।
পরে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও গত বছর আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়ের করেন।