
কলকাতায় বসে আওয়ামী লীগের নাশকতা পরিকল্পনা, যা বললেন উপদেষ্টা
পবিত্র ঈদুল ফিতর ঘিরে কোনো নাশকতার শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। কলকাতায় একটি ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের সদস্যরা নাশকতার পরিকল্পনা করেছেন, এমন একটি বক্তব্য ছড়িয়েছে। এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলকাতায় কারা আছে... কলকাতায় আছে ক্রিমিনাল। ক্রিমিনালরা তো সব সময় এ জিনিস চিন্তা করবে। ক্রিমিনালদের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, আমরা সেই ব্যবস্থা নেবো।’ রোববার (৩০ মার্চ) দুপুর ১২টায় জাতীয় ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম এসব কথা বলেন। ফাঁকা ঢাকায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এবং নাশকতা হতে পারে এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গুঞ্জন সব সময় গুঞ্জনই থাকে। আমাদের নিরাপত্তার কোনো অভাব নেই। নাশকতা হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। যদি কোনো ধরনের সংবাদ আপনারা (সাংবাদিকরা) পান, তাহলে আমাদের জানাবেন। আমরা আপনাদের নিয়ে সেটি প্রতিহত করবো।’ জাতীয় ঈদগাহ মাঠের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঈদগাহে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাতে শরীক হন। এখানে অনেক গুণীজন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আসেন। তাদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের যত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা, সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। এখানে যেন সবাই ভালোভাবে ঈদের নামাজ পড়তে পারে সেজন্য অজুর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। খাবার পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যদি কারো চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এখানে কারও জায়নামাজ নিয়ে আসার দরকার নেই। সবার জন্য কার্পেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

ঢাকার ঈদের জামাতের নিরাপত্তায় থাকবে ১৫ হাজার পুলিশ
ঢাকার সব ঈদ জামাতের নিরাপত্তায় ১৫ হাজার পোশাকধারী পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, ‘পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ‘সমন্বিত নিরাপত্তা বলয়’ গড়ে তোলা হবে। কোনো ধরনের নিরাপত্তার ঝুঁকি না থাকলেও নিষিদ্ধঘোষিত কোনো দল যাতে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে সেজন্য সদা সতর্ক থাকতে হবে।’ রোববার (৩০ মার্চ) জাতীয় ঈদগাহে গৃহিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সাজ্জাত আলী এসব কথা বলেন। ডিএমপির কমিশনার বলেন, ‘বরাবরের মতো এবারও জাতীয় ঈদগাহে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লির অংশগ্রহণে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আর বায়তুল মোকাররমে ৫টি ঈদ জামাতের মধ্যে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকলে জাতীয় ঈদগাহের জামাতটি সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ঢাকা মহানগরীতে মোট ১১১টি ঈদগাহে এবং ১ হাজার ৫৭৭ টি মসজিদে ১ হাজার ৭৩৯টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।’ সাজ্জাত আলী আরো বলেন, ‘সব স্থানের ঈদ জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপি সমন্বিত ও সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা বিধানে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে। তল্লাশির জন্য আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। পুরো জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ আশপাশের এলাকা সিসিটিভি আওতাভুক্ত থাকবে। প্রায় ১০০ সিসিটিভি ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম থেকে যা সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘ঈদগাহে প্রবেশের প্রধান তিনটি গেইটে ব্যারিকেড থাকবে, যেখানে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। মৎস্যভবন, প্রেস ক্লাব ও শিক্ষাভবন এবং ঈদগাহ ময়দানের চতুর্পাশে বহির্বেস্টনি দিয়ে তল্লাশির ব্যাবস্থা থাকবে। ঈদগাহ ময়দান ও আশপাশের এলাকা এসবির সুইপিং টিম এবং সিটিটিসির ডগ স্কোয়াড সুইপিং করবে। সোয়াত ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট স্ট্যান্ডবাই থাকবে। সাদা পোশাকে ডিবি ও সিটিটিসি সদ্য মোতায়েন থাকবে। ওয়াচটাওয়ার থেকে মনিটরিংসহ ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।’ ‘নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশিকাজে সহায়তার অনুরোধ করা হলো। কোনো প্রকার ব্যাগ, ধারালো বস্তু, দাহ্য পদার্থ নিয়ে না আসার জন্য অনুরোধ রইল। সকলকে জামাত শেষে তাড়াহুড়া না করে সুশৃঙ্খলভাবে বের হওয়ার অনুরোধ করা যাচ্ছে।’ সন্দেহজনক কিছু মনে হলে নিকটস্থ পুলিশ সদস্যকে জানাতে কিংবা প্রয়োজনে ৯৯৯ অথবা পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন সাজ্জাত আলী। এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির কমিশনার বলেন, ‘আমরা দুই ধরনের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা নিয়েছি। একটা হলো- ওভার এবং আরেকটা কভার। সবকিছুতো আমরা ডিসক্লোজ করি না। অনেক কিছু নিরাপত্তার স্বার্থে গোপন রাখি।’ তিনি বলেন,‘ ঈদে কোনো ঝুঁকি নেই। আলহামদুলিল্লাহ আমরা রমজান মাসে ঢাকাবাসী অনেক ভালো ছিলাম বলেই আমি মনে করি। আজকে শেষ দিন রমজানের, ইনশাল্লাহ আজকের দিনটিও আমরা ভালোভাবে পার করতে সক্ষম হবো। ঈদ জামাতের নিরাপত্তায় ১৫ হাজার পোশাকধারী পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। সাথে এটিইউ, সিটিটিসি, ডিবি সবার সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। বাংলাদেশ আর্মিও থাকবে। সাবাই মিলে সমন্বিতভাবে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলছি।’ ঈদ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ‘অপতৎপরতা’ নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির কমিশনার বলেন, ‘আমরা সবসময় সতর্ক আছি। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ না, নিষিদ্ধঘোষিত যে সব দল আছে সেসব দল যাতে কোনো রকম অ্যাকটিভিটিজ পরিচালনা না করতে পারে সে ব্যপারে আমরা সদা সতর্ক।’ জাতীয় ঈদগাহের ঈদ জামাত ঘিরে চারপাশে যান চলাচলের বিষয়ে ডিএমপির ট্রাফিক রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের দিন সকাল ৬টা থেকে ঈদের নামাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’ যেসব পয়েন্টে চলবে ডাইভারসন: জিরোপয়েন্ট ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং, সরকারি কমচারী হাসপাতাল ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, মৎস্য ভবন ক্রসিং যে পয়েন্টে বন্ধ করা হবে সড়ক: সচিবালয় পুল গেইটের সামনে, প্রেস ক্লাবের সামনে, সরকারি কমচারী হাসপাতাল ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, মৎস্য ভবন ক্রসিং যানবাহন চলাচলের বিকল্প রাস্তা: শাহবাগ ক্রসিং-মৎস্য ভবন ক্রসিং হয়ে গুলিস্তান অভিমুখী যাত্রীবাহী গণপরিবহন/ব্যক্তিগত যানবাহন মৎস্য ভবন ক্রসিং বামে মোড় নিয়ে কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং-রাজমনি ক্রসিং হয়ে গন্তেব্যে যাবে। বঙ্গবাজার ক্রসিং হয়ে হাইকোর্ট ক্রসিং অভিমুখী যাত্রীবাহী গণপরিবহন/ব্যক্তিগত যানবাহন চাঁনখারপুল-বকশীবাজার- পলাশী ক্রসিং হয়ে গন্তেব্যে যাবে। বাবুবাজার ক্রসিং-গুলিস্তান ক্রসিং হয়ে কদমফোয়ারা ক্রসিং-মৎস্য ভবন ক্রসিং অভিমুখী যাত্রীবাহী গণপরিবহন/ব্যক্তিগত যানবাহন ইউবিএল ক্রসিং- নাইটিঙ্গেল ক্রসিং হয়ে গন্তেব্যে যাবে। গাড়িযোগে ঈদগাহে আগত সম্মানিত নগরবাসী রোড ব্লকে গাড়ি হতে নেমে পায়ে হেঁটে ঈদগাহে প্রবেশ করবেন এবং গাড়ি নির্ধারিত স্থানে পার্কিং করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ।

ঈদের দিন শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ মাঠে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন। রোববার (৩০ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া ঈদের দিন বিকেল ৪টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তিনি বিভিন্ন শ্রেণি পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। প্রসঙ্গত, আজ রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে সোমবার (৩১ মার্চ) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হবে।

ফাঁকা ঢাকা, সড়কে নেই গাড়ির চাপ
পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি উদযাপনে এরইমধ্যে রাজধানী ঢাকা ছেড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। যে কারণে প্রায় ফাঁকা হয়ে গেছে ব্যস্ততম ঢাকার অধিকাংশ সড়ক। যানবাহনের চাপ নেই প্রধান প্রধান অধিকাংশ সড়কে। অলিগলিতেও গাড়ির চলাচল কম। এর ফলে ঝামেলা ছাড়াই লোকজন স্বাচ্ছন্দ্যে গন্তব্যে যেতে পারছেন। তবে সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কিছুটা কম। রোববার (৩০ মার্চ) রাজধানীর একাধিক এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ব্যস্ততম মোড় শাহবাগ মোড়ে সরেজমিন দেখা যায়, রাস্তায় গাড়ির চাপ নেই। মূল সড়ক রিকশার দখলে। গাড়ির চাপ না থাকায় ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা পুলিশ বক্সের মধ্যে থেকেই দায়িত্ব পালন করছেন। সেখানে এক পুলিশ সদস্য বলেন, রাস্তায় গাড়ির কোনো চাপ নেই। তাই দায়িত্ব পালনে সমস্যা হচ্ছে না। তবে দুপুরের পর চাপ বাড়তে পারে। তখন হয়তো রাস্তায় দাঁড়িয়ে ডিউটি করতে হতে পারে। এদিকে, আজ ঈদের আগের দিন ধরেই রাজধানীবাসী শেষ সময়ের কেনাকাটা করতে বের হতে পারেন বিকেলের পর। তাই সেই সময় সড়কে চাপ বাড়তে পারে। বিশেষ করে মার্কেট এলাকা যেমন নিউমার্কেট, গুলিস্তান, বসুন্ধরাকেন্দ্রীক কারওয়ান বাজার এলাকায় বিকেলে চিত্রটা পাল্টে যেতে পারে। কারওয়ান বাজার মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো. মুস্তফা বলেন, ‘সকাল থেকে রাস্তায় গাড়ি চাপ নেই বললেই চলে। আমরা বসে বসে সময় পার করছি। তবে দুপুরের পর রাস্তায় গাড়ির চাপ কিছুটা বাড়তে পারে।’ শনিবার (২৯ মার্চ) বেশিরভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও গার্মেন্টস কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর কয়েকটি মহাসড়কে ঘরে ফেরা মানুষের চাপ বাড়তে থাকে। আর যারা গতকাল ঢাকা ছাড়তে পারেননি বিভিন্ন বাস টার্মিনালে তাদের আজ ঢাকা ছাড়তে দেখা গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ছিল সরকারি অফিসের শেষ কর্মদিবস। ওই দিন বেশিরভাগ মানুষ ঢাকা ছাড়েন। ফলে শুক্রবার (২৮ মার্চ) থেকে রাজধানী ফাঁকা হওয়া শুরু হয়। এবার ঈদের ছুটি বেশি হওয়ায় স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি ফিরতে পারছেন সাধারণ মানুষ। প্রসঙ্গত, ২৮ মার্চ (শুক্রবার) ও ২৯ মার্চ (শনিবার) সাপ্তাহিক দুদিনের ছুটি শেষে রোববার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। ঈদের ছুটি শেষে সরকারি অফিস খুলবে আগামী ৬ এপ্রিল (রোববার)।

জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ পড়বেন প্রধান উপদেষ্টা
রাজধানী ঢাকার হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রতি বছরের ন্যায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনও এখানে ঈদের জামাতে অংশ নিতে পারেন। মুহাম্মদ ইউনূস ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ মাঠে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন। এদিন বিকেল ৪টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তিনি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ। তিনি বলেন, ‘মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। এরপর বিকেলে তিনি তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।’ জাতীয় ঈদগাহ মাঠে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ঈদের জামাতে অংশ নিতে পারেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিস) প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা দুজনই জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাতে অংশ নেওয়ার বিষয়ে আশা করা যাচ্ছে। এছাড়া ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের নামাজে অংশ নিতে পারবেন।’ এর আগে ডিএসসিসি জানায়, জাতীয় ঈদগাহ মাঠে এবার জামাত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। আবহাওয়া খারাপ হবে না বলেই পূর্বাভাস পাওয়া গেছে। তবে আবহাওয়া বৈরী হলে সকাল ৯টায় বায়তুল মোকাররমে প্রধান জামাত হবে। ছাত্র জনতার গণঅভুর্থানের মুখে ৫ আগস্ট পতিত আওয়ামী লীগের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের পালিয়ে যাওয়ার পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস। তার দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম ঈদ উদযাপন করতে যাচ্ছেন তিনি ও তার উপদেষ্টা পরিষদ।

ঈদে ট্রেনযাত্রার শেষ দিনে ঢাকা ছাড়ছেন হাজারো মানুষ
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ঘোষিত ট্রেন চলছে। ঈদে ট্রেনযাত্রার শেষ দিনেও হাজারো ঘরমুখো মানুষ ঢাকা ছাড়ছেন। রোববার (৩০ মার্চ) সকাল থেকে পরিচালিত প্রত্যেকটি আন্তঃনগর ট্রেন নির্ধারিত সময় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে গেছে। কমলাপুর স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, বরাবরের মতই যাত্রীর চাপ রয়েছে স্টেশন এলাকায়। কেউ কেউ প্লাটফর্মে অপেক্ষা করছেন তার নির্ধারিত গন্তব্যের ট্রেনের জন্য। আর যেসব ট্রেন প্ল্যাটফর্মের লাইনে অবস্থান করছে সেসব ট্রেন ইতোমধ্যে যাত্রী বোঝাই হয়ে গেছে। প্রায় প্রতিটি কোচে যেন পা ফেলার জায়গা নেই। জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী শাফিউর রহমান বলেন, ‘ট্রেন ছাড়ার কিছু সময় আগে আমি ট্রেনের কাছে এসেছি। পরিবারসহ আমার সিটে যেতে অনেকটা বেগ পেতে হয়েছে। ট্রেন ভর্তি মানুষ ছিল। ট্রেনের ভেতর অনেক গরম। ট্রেন ছাড়লে হয়তো ঠিক হয়ে যাবে।’ একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী শাহিদ আল মিনার বলেন, ‘ট্রেন যাত্রায় বরাবর যেরকম ভোগান্তি হয়েছে, এবার তেমন কোনও ভোগান্তি দেখছি না। স্টেশনে কোনও ভিড় নেই। অতিরিক্ত কোনও যাত্রীর চাপও নেই। শুধু কিছু মানুষ দাড়িয়ে যাচ্ছে।’ ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের (কমলাপুর) স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রোববার সকাল ১১টা পর্যন্ত ১৫টি আন্তঃনগর ট্রেন স্টেশন ছেড়ে গেছে। প্রতিটি ট্রেনই নির্ধারিত সময়ে ঢাকা ছেড়েছে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক আছে।’

শেষ সময়ে বাড়তি ভাড়ায় লোকাল বাসেই ভরসা ঘরমুখো যাত্রীদের
ঈদুল ফিতর সামনে রেখে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মানুষ প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে শেষ মুহূর্তে যাত্রা করছেন। তবে সায়েদাবাদ-পদ্মা-খুলনা রুটের সরাসরি পরিবহন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বাসে সিট না থাকায় অনেক যাত্রীকেই লোকাল বাসে বাড়তি ভাড়া দিয়ে ঘরে ফিরতে হচ্ছে। সায়েদাবাদ-চট্টগ্রাম রুটের কিছু বাসে সিট থাকলেও সেখানে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। রোববার (৩০ মার্চ) রাজধানীর সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন করে এবং যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদ সামনে রেখে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ শেষ মুহূর্তে বাড়ি ফেরার জন্য ব্যস্ত। সোহাগ, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, ইমাদ, গ্রীন লাইন, দোলা প্রভৃতি সরাসরি পরিবহন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বাসে সিট ফাঁকা নেই। এর ফলে লোকাল বাসগুলো এখন ঘরমুখো যাত্রীদের ভরসা। এসব লোকাল বাসে ঈদের যাত্রায় বিভিন্ন রুটে ১০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। এ পরিস্থিতিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ এবং সরকারের নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন অনেক যাত্রী। ইমপেরিয়াল এক্সপ্রেসের ম্যানেজার টুকু মাহমুদ বলেন, ‘ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি রুটে আমাদের বাস চললেও এ বছর যাত্রী সংখ্যা প্রত্যাশার তুলনায় কম।’ শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসের ম্যানেজার সোহেল হাসান জানান, এ বছর যাত্রী কম হলেও আমাদের কোনো কোচেই সিট ফাঁকা নেই। আজ দুপুর থেকে কিছু সিট ফাঁকা থাকতে পারে, তবে আশা করছি সেগুলোও বিক্রি হয়ে যাবে। ঢাকা থেকে মোকসেদপুর যাচ্ছিলেন ইব্রাহিম খলিল। তিনি বলেন, ‘ঈদে বাড়িতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল না, তবে হুট করেই যাচ্ছি। পরিবার ছাড়া ঈদ হয় না। তবে রাস্তায় বেরিয়ে ভাড়া তিনগুণ হয়ে গেছে। ১০০ টাকার সিএনজি ভাড়া ৩০০ টাকা হয়ে গেছে, আর বাসের ভাড়া ৭০০-৮০০ টাকা চাচ্ছে। এভাবে মানুষকে জিম্মি করে ভাড়া আদায় করা সংস্কৃতি আমাদের সমাজে বন্ধ হওয়া উচিত।’ খিলগাঁও থেকে আসা যাত্রী ফারিয়া মাহবুব বলেন, ‘দাদা-দাদির সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে যাচ্ছি। ঈদে গ্রামে যাওয়ার আনন্দই আলাদা। আমরা আগেই টিকিট কেটেছিলাম, কিন্তু গোপালগঞ্জের ৫০০ টাকার ভাড়া ঈদের জন্য ৬০০ টাকা নিয়ে নিয়েছে।’ বরিশালগামী যাত্রী রফিকুল ইসলাম জানান, সারারাত লঞ্চে না গিয়ে বাসে যাচ্ছি। পদ্মা সেতুর সুবিধা রয়েছে, তবে বাসে ভাড়া অনেক বেশি। ঈদে ভাড়া বাড়ানো তো স্বাভাবিক, তবে লঞ্চে ২৫০ টাকায় যেতে পারলে, বাসে ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে। সরকারের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। আরেক যাত্রী ফরিদ মিয়া বলেন, ‘ভালো কোনো গাড়ির সিট পাওয়া যাচ্ছে না। লোকাল বাসে যেতে হবে। সাকুরায় যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে সিট নেই। লোকাল বাসে গেলে অনেক ঝামেলা হতে পারে।’

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। রোববার (৩০ মার্চ) সকালে রাজধানীর বেশ কয়েক জায়গায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুসলিম উম্মাহ বাংলাদেশের আয়োজনে রোববার সকাল সোয়া ৭টায় পান্থপথের সামারাই কনভেনশন সেন্টারে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। শিশু ও নারীসহ মুসল্লিরা জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করেন।মুসল্লিরা দাবি করেন, পৃথিবীর কোথাও চাঁদ দেখা গেলে রোজা রাখা হারাম। সারা পৃথিবীতে ঈদ হচ্ছে, সে হিসেবে আমরাও পালন করছি। এর আগেও ঈদ পালন করেছি।একই তারিখে রোজা রাখা ও ঈদ উদ্যাপন করার জন্য সব মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানান নামাজে আসা মুসল্লিরা।এ ছাড়া আরও কয়েক জায়গায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। মৌলভীবাজার সার্কিট হাউস এলাকায়ও ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।জানা গেছে, চাঁদপুরের অর্ধশত গ্রামেও উদ্যাপন হচ্ছে ঈদুল ফিতর। মাদারীপুরের ২৫টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পালন করছেন ঈদুল ফিতর।প্রতি বছর রমজান শেষে ঈদের চাঁদ দেখা ও ঈদ উদ্যাপন নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দেশের অনেক স্থানেই পালিত হয় ঈদের আনুষ্ঠিকতা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।এবার আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য বলছে, ‘৩০ মার্চ অর্থাৎ ২৯ রমজানে সূর্যাস্তের সময় শাওয়াল মাসের চাঁদের বয়স হবে ১.০৫ দিন। আর পরের দিন ৩১ মার্চ ২.০৫ দিন। এ সময় চাঁদের স্থায়িত্ব হবে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় ৪৩ মিনিট আর পরের দিন আকাশে চাঁদের উপস্থিতি থাকবে ৫১ মিনিট।’আবহওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে রোববার সন্ধ্যায় খালি চোখেই দেখা যেতে পারে শাওয়াল মাসের চাঁদ। সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে একই দিনে ঈদ উদ্যাপনের বিষয়ে এবার আলোচনা উঠলেও ইসলামি চিন্তাবিদরা কোরআন এবং হাদিসের নির্দেশনাকে মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। সৌদি আরবের সঙ্গে একইসঙ্গে ঈদ উদ্যাপন বিষয়ে শিগগিরই সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ইসলামি ফাউন্ডেশন।

ছাদ ভর্তি যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ছে ট্রেন
শেষ সময়ে ঈদে বাড়ি ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ। ঢাকার কমলাপুরে তাই যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। শুরু থেকে এবারের ট্রেনযাত্রা স্বস্তিদায়ক হলেও শনিবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যার পর তার উল্টো চিত্র দেখা গেছে। শনিবার কুড়িগ্রামগামী আন্তঃনগর কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ও পঞ্চগড়গামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন প্রথমে ছাদ ভর্তি যাত্রী নিয়ে নির্ধারিত সময়ে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যায়। এরপর লালমনিরহাটগামী আন্তঃনগর ট্রেন লালমনি এক্সপ্রেস রাত ৯টা ৪৬ মিনিটে ছাদ ভর্তি মানুষ নিয়ে দেশের প্রধান ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন (কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন) ছেড়েছে। শনিবার রাতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে এমন চিত্র দেখা গেছে। ঢাকা ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোর এসি কোচ ছাড়া প্রতিটি কোচের আসন ছিল যাত্রীতে পরিপূর্ণ। এছাড়া কোচগুলোর ভেতরেও যে যেখানে পেরেছেন দাঁড়িয়ে অবস্থান নিয়েছেন। মানুষের ভিড় এতটাই যে কোচগুলোর দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই। দরজাগুলোতে বাদুড়ঝোলা হয়েও মানুষ যাত্রা করেছেন। এসব ট্রেনের ছাদে শত শত মানুষ অবস্থান করছেন। তারা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়েই ট্রেনের ছাদে উঠেছেন। তারপরও রেলওয়ে কর্মীরা ও পুলিশের সদস্যরা তাদের ছাদে উঠতে নিরুৎসাহিত করেছেন।এছাড়া বিভিন্ন ট্রেনের অসংখ্য যাত্রী প্ল্যাটফর্মে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরিফ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কেউ যেন ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করতে না পারে, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারপরও ঘরমুখো মানুষ ট্রেনের ছাদে উঠে পড়েছে। এখন যদি আমরা তাদের ফোর্স করে (জোরপূর্বক) নামাতে যাই, এতে যদি কেউ ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে আহত হন, তখন দোষটা রেলওয়েরই হবে।’

কেরানীগঞ্জ কারাগারে ঈদের তিনটি জামাত, থাকছে বিশেষ খাবারের আয়োজন
কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দুইটি জামাত কারাগারের স্টাফদের জন্য এবং একটি জামাতে অংশ নেবেন কারাবন্দিরা। শনিবার (২৯ মার্চ) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার একেএম মাসুম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সকাল ৭টা ও ১০টায় কারাগারের স্টাফদের জন্য পৃথক দুইটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সকাল ৮টায় কারাগারের মাঠে বন্দিদের জন্য আরেকটি জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ খাবারের আয়োজন: প্রতি বারের মতো এবারও ঈদের দিনে কারাবন্দিদের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একেএম মাসুম জানান, সকালে তাদের জন্য থাকবে মুড়ি, পায়েস অথবা সেমাই। দুপুরের খাবারে পরিবেশন করা হবে গরুর মাংস, মুরগির রোস্ট, ডিম, কোমল পানীয়, সালাদ ও পান-সুপারি। যারা গরুর মাংস খাবেন না, তাদের জন্য খাসির মাংসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রাতে থাকবে সাদা ভাতের সঙ্গে রুই মাছ ও আলুর দম। বিনোদন ও স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ: কারা সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দ্বিতীয় দিনে বন্দিদের জন্য বিশেষ বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি ঈদের দিন স্বাভাবিক নিয়মের চেয়ে পাঁচ মিনিট বেশি সময় ধরে ফোনে বন্দিরা স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। ঈদের দিন স্বজনরা কারাবন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে পারলেও ঈদের দ্বিতীয় দিন বাসা থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে আসতে পারবেন। তবে নির্ধারিত নিয়ম মেনে খাবার কারাগারে প্রবেশ করানো যাবে। একেএম মাসুম বলেন, ‘ঈদের দিনে দায়িত্ব পালন করা কারা স্টাফদের জন্য বিশেষ প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়েছে।’

চীন প্রধান উপদেষ্টার সফর গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে: মাহফুজুর রহমান
স্বাগতিক দেশ চীন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরটিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এক বছরের কম সময়ের মধ্যে চীনে বাংলাদেশের সরকার প্রধানের দুইটি সফর হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান উপদেষ্টার সফর তুলনার বিষয় রয়েছে। এর মানে হচ্ছে স্বাগতিক দেশ চীন ড. ইউনূসের সফরটিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে একটা নতুন ভারসাম্য তৈরির প্রচেষ্টা এখানে দেখা গিয়েছে।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘ড. ইউনূসের কারণে পূর্বের ঋণের সুদ হার কমানোতে ইতিবাচক মনোভাব, পানি ব্যবস্থাপনা বা বেল্ট অ্যান্ড রোড (বিআরআই) উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রযুক্তির হস্তান্তর ও চীনা প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলোর রিলোকেশনের মতো বিষয়গুলো উঠে এসেছে, যা বাংলাদেশের বাণিজ্য ভবিষ্যতে তৈরি পোশাকখাতের নির্ভরতা কাটিয়ে বৈচিত্র আনতে পারবে।’ অন্য দিকে তিস্তা প্রকল্পের মতো সংবেদনশীল প্রকল্পে চীনকে আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে এমন এক অবস্থা তৈরি হয়েছে, যার ফল ইতিবাচক না নেতিবাচকভাবে বাংলাদেশের ঝুলিতে আসবে, তা বুঝতে সময় প্রয়োজন। কারণ এ প্রকল্পে চীনের সম্পৃক্ততার বড় বিরোধীতাকারি হচ্ছে ভারত। সেই সঙ্গে বিআরআইতে যুক্ত হওয়াতে বাংলাদেশের জন্য লাভজনক। তবে বিআরআইতে বাংলাদেশকে যুক্ত করে চীন কতটুকু সুফল পাবে, তার প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রধান উপদেষ্টার সফরে চীন সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে মোট ২১০ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রায় ৩০টি চীনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের বিশেষ চীনা শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চলে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে, যা প্রধান উপদেষ্টা বেসরকারিখাতকে বাংলাদেশের উৎপাদন শিল্পে বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানানোর পর এসেছে। চীন আরও মোংলা বন্দর আধুনিকীকরণ প্রকল্পে প্রায় ৪০ কোটি ডলার ঋণ প্রদান, চীনা শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নে ৩৫ কোটি ডলার এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা হিসেবে আরও ১৫ কোটি ডলার বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। বাকি অর্থ অনুদান ও অন্যান্য ঋণ সহায়তা হিসেবে আসবে।

মেডিকেল সহায়তা নিয়ে মিয়ানমার যাচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী
মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা দ্রুত বাড়ছে। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে আহতের সংখ্যা। এমন সময় পাশে থাকার ঘোষণা দিয়ে কাল রোববার (৩০ মার্চ) বিশেষ বিমানে মেডিকেল সহায়তা নিয়ে দেশটিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল। শনিবার (২৯ মার্চ) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো সংবাদ বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। বার্তায় বলা হয়, ‘ভূমিকম্পে ক্ষয়-ক্ষতির প্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে ওষুধ, ত্রাণসামগ্রী, উদ্ধার এবং মেডিকেল সহায়তা দিতে বিশেষ বিমানে কাল রোববার মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল।’ উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) মিয়ানমারে সংঘটিত ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন সূত্রে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য বললেও বিবিসি জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা এক হাজার ৬৪৪ জনে পৌঁছেছে।

বিল্ডিং কোড না মানলে নগরে ভূমিকম্প মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনবে: আইপিডি
ঢাকা-চট্রগ্রামসহ বাংলাদেশের অধিকাংশ বড়-মাঝারি-ছোট শহরগুলো ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় একেবারেই অপ্রস্তুত। শনিবার (২৯ মার্চ) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (২৮ মার্চ) মিয়ানমারে সংঘটিত ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় ও আশপাশের দেশ ও অঞ্চলে সেটির বিরূপ প্রভাব পড়ে। এই ঘটনা আমাদের আরও একবার বাংলাদেশের নগরগুলোর ভূমিকম্প প্রস্তুতি না থাকা, ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড এবং মহাপরিকল্পনা ও ভূমি ব্যবহার জোনিং না মানার প্রবণতার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট অনেকগুলো ভূমিকম্প বড় আকারের ভূমিকম্পের আসন্ন পূর্বাভাস দিলেও আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শূন্য। ফলে যে কোনো সময়ে ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটার আগেই ভূমিকম্পের ঝুঁকি কমাতে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে এখনই যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে আইপিডি।’ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে অনেকগুলো সংস্কার কমিশন করলেও দেশের পরিকল্পিত নগরায়ন, টেকসই আবাসন ও ভবনের নিরাপত্তা বিষয়ক কোনো কমিশন করেনি। এই বিষয়টিকে অনভিপ্রেত বলে মনে করে আইপিডি। রাজউক এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনেকের বিরুদ্ধেই আবাসন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিভিন্ন আঁতাত করে দূর্নীতির মাধ্যমে যত্রতত্র অনুমোদনহীন ভবন গড়ে উঠতে দেওয়া এবং পরবর্তীতে মহাপরিকল্পনা সংশোধনের নামে সেসব ভবন ও প্রকল্পের বৈধতা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সরু রাস্তায় বহুতল ভবন নির্মাণের অবাধ স্বাধীনতা কিংবা ১০ তলা পর্যন্ত আবাসিক ভবনকে বহুতল বিবেচনা না করে কাঠামোগত ও অগ্নি নিরাপত্তায় ছাড় দেওয়ার উদ্যোগগুলো অত্যন্ত বিপদজনক। নাগরিক, পেশাজীবী ও পরিকল্পনাবিদদের পক্ষ থেকে এই বিষয়গুলোকে বারংবার তুলে ধরা হলেও রাজউক ও মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে মানুষের জীবনের নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করে আবাসন ব্যবসায়ীদের গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষায় অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মনে করছে আইপিডি।’ আইপিডি আরও মনে করে, ঢাকার ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনায় মাটির ভূতাত্ত্বিক গঠন ও গুণাগুণকে বিবেচনায় নিয়ে ভূমি ব্যবহার এবং ভবনের আকার-আয়তন নির্ধারণ করা প্রয়োজন। অথচ ঢাকার নগর পরিকল্পনায় এই বিষয়গুলোকে সেভাবে বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে না। ঢাকার পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলসহ ঢাকার চারিদিকে বন্যা প্রবাহ অঞ্চল ও জলাশয়-জলাভূমি ভরাট করে অধিকাংশ অনুমোদনহীন যেসব আবাসিক প্রকল্প গড়ে উঠেছে, সেখানে ইতোমধ্যে অসংখ্য বহুতল ভবন গড়ে উঠেছে। ভূমিকম্পে দুর্বল মাটির ওপর গড়ে ওঠা এসব ভবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ঢাকার ড্যাপে এলাকাভিত্তিক ভিন্নতাকে মাথায় নিয়ে ভবনের আকার-আয়তন নির্দিষ্ট করার প্রস্তাবনা থাকলেও ইমারত নির্মাণ বিধিমালার সংশোধন প্রস্তাবনায় মন্ত্রণালয় এলাকাভিত্তিক ভিন্নতাকে বাদ দিয়ে পুরো ঢাকা মহানগরীর জন্য একই ধরনের এফএআর বা ফার মান প্রস্তাব করেছে। পৃথিবীর কোনো শহরের নগর পরিকল্পনায় এ ধরনের পরিকল্পনা ও নির্মাণ কৌশল না থাকলেও এভাবেই চলছে ঢাকার মতো অত্যন্ত অবাসযোগ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ শহরের নগর পরিকল্পনা। এই ধরনের আত্ম-বিধ্বংসী প্রবণতা থেকে বের না হতে পারলে ঢাকার কাছাকাছি এপিসেন্টারে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পেও জীবন ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

লাখ টাকার জাল নোটসহ প্রস্তুতকারী চক্রের সদস্য ধরা
বিপুল পরিমাণ জাল টাকা জব্দসহ জালনোট প্রস্তুতকারী চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গ্রেপ্তারকৃতের নাম রুবেল বিশ্বাস। শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর মালিবাগ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩’-এর একটি দল। র্যাব-৩’-এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) সিনিয়র সহকারি পরিচালক সনদ বড়ুয়া জানান, র্যাব-৩’-এর একটি দল গোয়েন্দা তথ্যর ভিত্তিতে গতরাতে জালনোট প্রস্তুতকারী চক্রের সদস্য রুবেল বিশ্বাসকে (৩২) গ্রেপ্তার করে। এ সময় ১ লাখ ৯ হাজার টাকার জালনোট জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, গ্রেপ্তার রুবেল জানান, সে একটি সংঘবদ্ধ জালনোট প্রস্তুতকারী চক্রের মূলহোতা। এই চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে বাংলাদেশী বিভিন্ন মূল্যমানের টাকার জালনোট প্রস্তুত করে তা ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করে আসছে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রুবেল বিশ্বাস স্বীকার করেন যে তিনি জালনোট প্রস্তুত করে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সিল-সই জালিয়াতি: চাকরি-পদোন্নতির নামে প্রতারণার ফাঁদ
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সই-সিল জালিয়াতি ও প্রতারণায় জড়িত থাকার অভিযোগে জাফর ইকবাল (৪৬) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। র্যাব সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, সম্প্রতি প্রতারক জাফর ইকবাল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পরিচয়ে অফিসিয়াল স্বাক্ষর ও সিল ব্যবহার করে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে সাধারণ মানুষকে চাকরি দেওয়া, পদোন্নতি প্রদান, বদলি সংক্রান্ত এবং পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে গবাদি পশুসহ অন্য দ্রব্যসামগ্রী আমদানির জন্য অনুমতি প্রদান সংক্রান্ত দালালি কার্যক্রম করে প্রতারণামূলকভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল। র্যাব ওই প্রতারককে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গতকার শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র্যাব-১ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক জাফর ইকবালকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি গাইবান্ধা জেলার নবাব হোসেন প্রামাণিকের ছেলে। এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ভুয়া স্বাক্ষরিত বিভিন্ন নথিপত্র, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভুয়া সিল, ভিজিটিং কার্ডসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার জাফর বিভিন্ন প্রতারণার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি র্যাবকে জানিয়েছে, উচ্চাভিলাষী জীবনযাপন করার উদ্দেশে গ্রেপ্তার জাফর প্রতারণার কাজ বেছে নেয়। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে এই প্রতারণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। গ্রেপ্তার জাফর ইকবাল বিভিন্ন এলাকার চাকরি প্রত্যাশীদের বলতেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। এভাবে চাকরি প্রত্যাশীদের বিশ্বাস অর্জন করে এবং চাকরি দেওয়ার কথা বলে নগদ অর্থ হাতিয়ে নিত। তিনি প্রতারণার মাধ্যমে চাকরি দেওয়াসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদোন্নতি, বদলি সংক্রান্ত এবং ব্যবসায়ীদের পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে গবাদি পশুসহ বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী আমদানি ও রপ্তানির অনুমতি দেওয়া কথা বলে অসংখ্য ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রেপ্তার জাফর ইকবাল মূলত মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। সম্প্রতি এক ব্যবসায়ীকে সীমান্ত এলাকায় গবাদি পশুর বিট, খাটাল স্থাপনের ও গবাদি পশু আমদানির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভুয়া স্বাক্ষরিত অনুমতিপত্র দেন। গ্রেপ্তার জাফর ইকবালের স্থায়ী কোনো অফিস না থাকায় বিভিন্ন সময়ে ভাড়া বাসাকে অফিস হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। গ্রেপ্তার জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা সাদুল্যাপুর থানায় মামলায় অভিযুক্ত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আসছিল। সর্বশেষ রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় আত্মগোপনে থাকাবস্থায় গ্রেপ্তার জাফরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। এ ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সই জালিয়াতিকারী র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার জাফর ইকবালকে ডিএমপিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাকে ডিবি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

চাঁদের অপেক্ষায় বাংলাদেশ
সারা বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে একই সঙ্গে বাংলাদেশে ঈদ উদযাপন নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। যদিও ইসলামি চিন্তাবিদরা বলছেন, ‘কোরআন এবং হাদিসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে সিয়াম এবং ঈদ পালনের ওপর একাধিকবার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’ প্রতি বছর রমজান শেষে ঈদের চাঁদ দেখা ও ঈদ উদযাপন নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দেশের অনেক স্থানেই পালিত হয় ঈদের আনুষ্ঠিকতা। এবার আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য বলছে, ‘৩০ মার্চ অর্থাৎ ২৯ রমজানে সূর্যাস্তের সময় শাওয়াল মাসের চাঁদের বয়স হবে ১.০৫ দিন। আর পরের দিন ৩১ মার্চ ২.০৫ দিন। এসময় চাঁদের স্থায়িত্ব হবে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় ৪৩ মিনিট আর পরের দিন আকাশে চাঁদের উপস্থিতি থাকবে ৫১ মিনিট।’ আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, আকাশ মেঘ মুক্ত থাকলে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় খালি চোখেই দেখা যেতে পারে শাওয়াল মাসের চাঁদ। সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে একই দিনে ঈদ উদযাপনের বিষয়ে এবার আলোচনা উঠলেও ইসলামি চিন্তাবিদরা কোরআন এবং হাদিসের নির্দেশনাকে মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। গত কয়েক বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে একই সঙ্গে ঈদ উদযাপন বিষয়ে শিগগিরই সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ইসলামি ফাউন্ডেশন। কাল রোববার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যা ৬ টা ৩২ মিনিট থেকে ৭ টা ২০ মিনিটি পর্যন্ত চাঁদ দেখার সময় নির্দিষ্ট করেছে আবহওয়া অধিদফতর।

দেশে পৌঁছেছেন ড. ইউনূস
চীন সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (২৯ মার্চ) রাত ৮টা ১০ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এয়ার চায়নার বাণিজ্যিক বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এর আগে চার দিনের আনুষ্ঠানিক সফর শেষে শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৫৭ মিনিটে বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের চিফ প্রোটোকল অফিসার হং লেই বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে বিদায় জানান। মুহাম্মদ ইউনূস গত ২৭ মার্চ চীনের হাইনান প্রদেশে আয়োজিত বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে যোগ দেন। সম্মেলনের ফাঁকে তিনি বেশ কয়েকটি বৈঠকও করেন। প্রধান উপদেষ্টা ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। তিনি টেকসই অবকাঠামো ও জ্বালানি বিনিয়োগ, বাংলাদেশ ২.০ উৎপাদন ও বাজার সুযোগ এবং সামাজিক ব্যবসা, যুব উদ্যোক্তা এবং তিন শূন্যের বিশ্ব- এসব বিভিন্ন বিষয়ের ওপর তিনটি গোলটেবিল বৈঠকেও যোগ দেন। মুহাম্মদ ইউনূস ২৯ মার্চ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করেন। সেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন।

ক্রেতাকে মারধর: হকার সিন্ডিকেটের চারজনকে পুলিশে দিল ছাত্র-জনতা
পণ্য কেনার সময় দরদাম করতে চাইলে রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে হকারদের মারধরের শিকার হন এক যুবক। পরে স্থানীয় ছাত্র-জনতা ওই হকার সিন্ডিকেটের কয়েকজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে পণ্য কেনার সময় দরদাম নিয়ে ফুটপাতের এক দোকানদারের সঙ্গে এক যুবকের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় কয়েকজন হকার মিলে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন।এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় ছাত্র-জনতা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।পরে শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে ছাত্র-জনতা মিলে অভিযুক্তদের দোকানে যান। এ সময় হকার সিন্ডিকেটের কয়েকজনকে চিহ্নিত করে আটক করেন এবং গণধোলাই দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করেন তারা।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মিরপুর মডেল থানার ডিউটি অফিসার রমজান। তিনি বলেন, ‘যুবককে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় আজ দুপুরে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়।’

বাংলাদেশে ঈদ হতে পারে সোমবার!
বাংলাদেশে কাল রোববার (৩০ মার্চ) খোলাচোখে চাঁদ দেখা যেতে পারে। ফলে আগামী সোমবার (৩১ মার্চ) বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হতে পারে বলে প্রতিবেদন করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম গালফ নিউজ। আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্রের বরাত দিয়ে শনিবার (২৯ মার্চ) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩৬ মিনিটে এ খবর জানানো হয়েছে।তবে এ বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি প্রতিবেদনে।এদিকে আরব ও মুসলিম বিশ্বে আজ শনিবার (২৯ মার্চ) শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা ‘অসম্ভব’ হবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্র। বলা হচ্ছে, যেহেতু চাঁদ সূর্যের আগে অস্ত যাবে এবং সূর্যাস্তের পরে মিলন ঘটবে, তাই এদিন সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা সম্ভব হবে না। গালফ নিউজকে দেয়া এক বিশেষ বিবৃতিতে, আমিরাতের জ্যোতির্বিদ ও এমিরেটস অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটির চেয়ারম্যান এবং আরব ইউনিয়ন ফর স্পেস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনমির সদস্য, ইব্রাহিম আল-জারওয়ান প্রকাশ করেছেন, ‘সুনির্দিষ্ট জ্যোতির্বিদ্যাগত গণনা ইঙ্গিত দেয় যে, শনিবার (২৯ মার্চ) সূর্যাস্তের পরে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা অসম্ভব।’এই গণনার ওপর ভিত্তি করে এমিরেটস অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটি অনুমান করছে, রমজান মাস এবার ৩০ দিন পূর্ণ করবে। অর্থাৎ ৩০ মার্চ (রোববার) হবে পবিত্র মাসের শেষ দিন। ফলে, পবিত্র ঈদুল ফিতর ৩১ মার্চ (সোমবার) হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।প্রতিবেদন মতে, যেসব দেশে শাওয়াল মাস শুরু হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে প্রকৃত দর্শন (চাঁদের) প্রয়োজন, সেখানে রমজান সম্ভবত ৩০ দিনের হবে। আর ঈদুল ফিতর পড়বে ৩১ মার্চ।তবে, যেসব অঞ্চলে সূর্যাস্তের আগে সংযোগ ঘটে, সেখানে কিছু দেশ ঐতিহ্যবাহী চাঁদ দেখার পদ্ধতির ভিত্তিতে ৩০ মার্চ, রোববার ঈদ ঘোষণা করতে পারে।

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া, চাঁদাবাজি হবে না: সড়ক সচিব
এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক ও নিরাপদ করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক। শনিবার (২৯ মার্চ) গণপরিবহনে যাত্রীদের ভোগান্তি রোধে ঢাকা শহরের সায়েদাবাদ ও গাবতলী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন। সিনিয়র সচিব বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের কর্মকর্তা, বিআরটিএ-এর কর্মকর্তা, পুলিশ, শ্রমিক-মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একযোগে বসে আমরা এ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি। এবারের ঈদযাত্রায় কোনো ধরনের চাঁদাবাজি থাকবে না; অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না; ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি হবে না; মলম পার্টির উপদ্রব থাকবে না; সর্বোপরি মানুষ শান্তিতে ও নির্বিঘ্নে ঘরে ফিরে যাবে এবং একইভাবে আসার সময় আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করে যাব।’ বাড়তি ভাড়া আদায় সংক্রান্ত সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে এহছানুল হক বলেন, ‘প্রতিটি বাস টার্মিনালে বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়াও পুলিশ ও র্যাবের টিম সার্বক্ষণিকভাবে তৎপর রয়েছে। বাড়তি ভাড়া আদায়সহ যাত্রীদের সব সমস্যার সমাধানে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ সবশেষে এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক ও নিরাপদ করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন এবং সবাইকে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন সড়ক সচিব। পরিদর্শনকালে বিআরটিএর চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) মো. ইয়াসীন, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ ও মিডিয়ার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

ঈদের দিন বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল
আসন্ন ঈদুল ফিতরের দিন দেশের প্রথম বিদ্যুৎ চালিত দ্রুতগতির গণপরিবহন মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে। শনিবার (২৯ মার্চ) মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। পেজে বলা হয়, ‘ঈদুল ফিতর ২০২৫ উপলক্ষ্যে শুধুমাত্র ঈদের দিন মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে।’ ‘অন্য দিনগুলোতে যথা নিয়মে মেট্রোরেল চলাচল অব্যাহত থাকবে।’

স্বস্তির ঈদযাত্রায় অস্বস্তি ‘অতিরিক্ত ভাড়া’, হানিফ ও জোনাকি পরিবহনকে জরিমানা
আসন্ন ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটি শুরু গতকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) থেকে। শুক্র-শনিবার বন্ধের দিন থাকায় বেশিরভাগ মানুষই ঢাকা ছাড়া শুরু করেছেন এর আগ থেকেই। এতে করে শেষ দিকে এসে যানবাহন বা টিকিট কাউন্টারগুলোতে নেই বাড়তি চাপ। সাধারণ সময়ের মতোই যাত্রী নিয়ে ছাড়ছে বাস। রাস্তা ফাঁকা থাকায় কোথাও যানজটের সমস্যাও নেই বলে জানিয়েছেন বাস কাউন্টারের কর্মীরা। শনিবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর সায়েদাবাদ টার্মিনাল এলাকায় বাস কাউন্টার ও আশপাশের এলাকা ঘুরে সাধারণ সময়ের মতোই যাত্রীদের উপস্থিতি দেখা যায়। কোথাও ভিড় দেখা যায়নি। ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল যাত্রায় মহাসড়কে যানজট না থাকায় সায়দাবাদ থেকে প্রায় প্রতিটি বাস নির্দিষ্ট সময় ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রীদের মনেও ছিল প্রশান্তি। বরিশাল যাবেন আজিজুল হক। বাস কাউন্টারে আসার সঙ্গে সঙ্গেই টিকিট পেয়েছেন। এতে অনেকটাই অবাক হয়েছেন তিনি। আজিজুল জানান, এর আগে কোনো ঈদে এমন শান্তির যাত্রা হয়নি। কাউন্টারে এসে যুদ্ধ করে টিকিট কাটতে হয়েছিল। আর আজকে এসেই টিকিট পেলাম। এরকমটা সবসময় থাকুক সেই কামনা করি। সাজেদা বেগমও বলছেন একই কথা। এ রকম সুন্দরভাবে বাড়িতে যাওয়ার কথা চিন্তা করেননি তিনি। বাস কাউন্টারে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা, যানজট- সব মিলিয়ে ঈদযাত্রা অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং ছিল। এবারের মতো সুন্দরভাবে আর কখনো যাত্রা করতে পারেননি বলে জানান তিনি। তবে এর মাঝে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের বিভিন্ন বাস কাউন্টারে সরকার নির্ধারিত অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। শনিবার সকালে সায়েদাবাদের জনপথ মোড়ে কয়েকটি বাস কাউন্টারে অভিযান চালান ভোক্তা অধিকারের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস। এ সময় ইকোনো সার্ভিসের দুটি কাউন্টারে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় এক লাখ টাকা, হানিফ পরিবহনের কাছ থেকে ২০ হাজার ও জোনাকি পরিবহন থেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। সকাল থেকে তেমন যাত্রীর চাপ না থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। ঢাকা-লক্ষীপুর রুটে সরকার নির্ধারিত ভাড়া ৫৩৬ টাকা হলেও ইকোনো বাসে ৭০০ টাকা ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেন যাত্রীরা। তবে কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা বলছেন প্রতিটি গাড়ি ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে গেলেও ঢাকা আসার পথে ফাঁকা আসছে। তাই ক্ষতি পোষাতে কিছুটা অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শেখার জায়গা নয়, স্বপ্ন দেখারও জায়গা : প্রধান উপদেষ্টা
চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বিশ্বকে বদলে দিতে শিক্ষার্থীদের বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (২৯ মার্চ) বেইজিংয়ে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র শেখার জায়গা নয়, এটি স্বপ্ন দেখারও জায়গা। স্বপ্ন দেখতে পারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শক্তি উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আপনি যদি স্বপ্ন দেখেন, তবে তা ঘটবেই। আপনি যদি স্বপ্ন না দেখেন, তবে তা কখনও ঘটবে না।শিক্ষার্থীদের অতীতের দিকে নজর দেওয়ার অনুরোধ করে তিনি বলেন, যা কিছু ঘটেছে, কেউ না কেউ আগে তা কল্পনা করেছিল। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কল্পনা যেকোনো কিছু থেকে বেশি শক্তিশালী। তিনি শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে অদ্ভুত এবং অকল্পনীয় বিষয়ে স্বপ্ন দেখতে উৎসাহিত করেন, যদিও অনেক সময় এটি অসম্ভব মনে হতে পারে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, মানবসভ্যতার যাত্রা হলো অসম্ভবকে সম্ভব করা। সেটাই আমাদের কাজ। আর আমরাই তা করতে পারি।

ফাঁকা বুলি নয়, দৃশ্যমান অ্যাকশনে ডিবি: ডিবিপ্রধান
নিরাপদ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপনে ডিবি সর্বদা নগরবাসীর পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক। তিনি বলেন, কোনো ফাঁকা বুলি নয় বরং দৃশ্যমান অ্যাকশনের মাধ্যমেই ডিবি ক্রমাগত নগরবাসীর আস্থার প্রতীকে পরিণত হচ্ছে। শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ডিবি থেকে গৃহীত কার্যক্রম সংক্রান্ত বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ডিবিপ্রধান রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে ও ঈদে বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের সার্বিক নিরাপত্তায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। পবিত্র মাহে রমজানে নগরবাসী যাতে নিরাপদে ইবাদত করতে পারে সেজন্য আগে যেমন ডিবি পাশে ছিল তেমনি এবারও পাশে থাকবে। তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ঢাকা মহানগর এলাকায় পুলিশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে মহানগরীতে চেকপোস্ট ও টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৫০টি থানা এলাকায় প্রতিদিন জননিরাপত্তা বিধানে দুই পালায় ডিএমপির ৬৬৭টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া মহানগর এলাকার নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্থানে ডিএমপি কর্তৃক ৭১টি পুলিশি চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। পুলিশকে সহায়তা করার জন্য এরই মধ্যে অক্সিলিয়ারি ফোর্স নিয়োগ করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তারা কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। ইউনিফর্মড পুলিশের পাশাপাশি মহানগরীর নিরাপত্তায় ডিবির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক টিম মাঠে ক্লান্তিহীন কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও নগরবাসীর নিরাপত্তায় ডিবি ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে ও যাবে। ঈদ উপলক্ষে বিপণী বিতান, রেলস্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে ডিবির কার্যক্রম আরও বেগবান করা হয়েছে। নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে যে কোনো প্রয়োজনে ডিবি সর্বদা নগরবাসীর সঙ্গে রয়েছে। নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে যে কোন অপতৎপরতা রুখে দিতে ডিবি প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান, রেল স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে কেউ যাতে নাশকতা করতে না পারে সেজন্য ডিবির গোয়েন্দা নজরদারি পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়াও ডিবির সাইবার টিম তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। সাইবার স্পেস ব্যবহার করে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে যে কোনো অপপ্রচার রোধে ডিবি তৎপর রয়েছে। প্রো-অ্যাকটিভ পুলিশিং এর অংশ হিসেবে ডিবির জাল সর্বত্র বিস্তৃত করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীকে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে ডিবি সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, রোজা শুরুর দিন থেকে এখন পর্যন্ত ডিবির অলআউট অ্যাকশনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছিনতাইকারী, ডাকাত, চাঁদাবাজ ও বিভিন্ন অভ্যাসগত অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া ডিবির মাদকবিরোধী অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ মাদকসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পেশাদার মাদক কারবারি গ্রেফতার করা হয়েছে। ছোট বড় যে কোন অপরাধীর ক্ষেত্রে ডিবি জিরো টলারেন্স নিয়ে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। যে কোনো অপরাধের ক্ষেত্রে ডিবি ইন্টারসেপ্টর বা প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করবে। ডিবির সব সদস্যের মনোবল পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে দৃঢ় রয়েছে। নগরবাসীর ভরসার কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছতে ও অপরাধীদের জন্য মূর্তিমান আতঙ্ক হিসেবে পরিগণিত হতে ডিবির আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ডিবি তার কার্যক্রমের মাধ্যমেই থাকতে চায় নগরবাসীর ভরসার কেন্দ্রস্থলে, জনগণের দোয়ায় ও প্রার্থনায়। কোনো ফাঁকা বুলি নয় বরং ‘দৃশ্যমান অ্যাকশনের’ মাধ্যমেই ডিবি ক্রমাগত নগরবাসীর আস্থার প্রতীকে পরিণত হচ্ছে। তিনি বলেন, ঈদ শেষে মহানগরবাসী যাতে নিরাপদে ও স্বস্তিতে ঘরে ফিরতে পারে এবং কোনো ধরনের বিরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন না হয় সেজন্য ঈদ পরবর্তী সময়ে ডিবির বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে। ছিনতাইকারী, চোর, চাঁদাবাজ ও বিভিন্ন অভ্যাসগত অপরাধীদের গ্রেফতার করতে ডিবির আটটি বিভাগের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক টিম থেকে মহানগরের বিভিন্ন কৌশলগত স্থানে এ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ডিবিপ্রধান রেজাউল করিম আরও বলেন, আসন্ন ঈদ সামনে রেখে জাল টাকা তৈরি ও সরবরাহ রোধে ডিবি অত্যন্ত তৎপর রয়েছে। এরই মধ্যে ডিবির অভিযানে বিপুল সংখ্যক জালনোট ও জালনোট তৈরির সরঞ্জামসহ চক্রের বেশ কয়েকজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া অনলাইনে জালনোট বিক্রয় ঠেকাতে ডিবির সাইবার টিম সার্বক্ষণিক অনলাইনে নজরদারি করছে। জাল নোট তৈরি, বিক্রয় ও সরবরাহ রোধে পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে ডিবি। তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে ডিএমপির ইউনিফর্মড পুলিশ ও ডিবির কার্যক্রমের পাশাপাশি নিরাপত্তা সচেতনতার অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের দায়িত্বে নিয়োজিত নিরাপত্তা রক্ষীদের ডিউটি জোরদার করতে হবে এবং যেকোনো অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা নজরদারির ব্যবস্থা রাখতে হবে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকি করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পুলিশের পাশাপাশি মালিক পক্ষকে স্ব স্ব মার্কেট/শপিংমলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে এবং এলাকার থানা/ফাঁড়ির সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হবে। নগরবাসীর উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ঈদে মহল্লা, বাসা/মার্কেটে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে বা ঘটার সম্ভাবনা থাকলে তা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি, থানা বা ডিবিকে অবহিত করবেন। তাছাড়া ডিএমপির কন্ট্রোল রুমের নম্বর অথবা ৯৯৯ এ যোগাযোগ করা যেতে পারে। তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে বিপণিবিতানসহ যেকোনো স্থানে নাশকতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য থাকলে ডিবিকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে হবে এবং তার পাশাপাশি তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসময় যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড গোয়েন্দা-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম; যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভুঁইয়া ও উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।