মনপুরায় জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ জরুরী : শাখাওয়াত সজীব
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৮:৩৬ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২১
শাখাওয়াত সজীব : শতভাগ এলাকায় ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার জন্য সরকার কাজ করছে, তা বাস্তবায়নেরও পথে। অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে, যেখানে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর কথা ভাবা যেত না, সেখানেও বাতি জ্বলছে, বৈদ্যুতিক পাখা ঘুরছে। তবে কিছু এলাকায়, বিশেষ করে দ্বীপ এলাকায় বিদ্যুৎ গেছে নামে মাত্রা। সোলার প্যানেলের মাধ্যমে ছোট বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে তা সাধারনের ক্রয় ক্ষমতার উর্ধে। কারখানা গুলু চলছে না তাতে।
ভোলার মনপুরা উপজেলা সেখানে বেসরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে সৌরবিদ্যুৎ আছে। কিন্তু সে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে গুটিকয় মানুষের ঘরে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী শতভাগ বিদ্যুতায়ন বাস্তবায়নে ভোলা জেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলসহ বাংলাদেশের অনেক দুর্গম চরে ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মনপুরা একটি পূর্ণাঙ্গ উপজেলা হওয়া সত্ত্বেও দেড় লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর এ উপজেলায় আজও জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। এতে মনপুরার সাধারণ শিক্ষার্থীরা
ঘরে বসে অনলাইন ক্লাস এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে না। সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত বিদ্যুতের অভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। বিদ্যুৎ না থাকায় প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল সব ধরনের ব্যবসা ও শিল্প সম্প্রসারণে ব্যাঘাত ঘটছে। এতে মনপুরার বাসিন্দারা নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সাগরকন্যা মনপুরায় রয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। মৎস্য আহরণের মাধ্যমে জিডিপিতে মনপুরার মৎস্যজীবীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। কিন্তু এই মৎস্যজীবীদের আহরিত রুপালি ইলিশ সংরক্ষণ কষ্টসাধ্য শুধুমাত্র বিদ্যুৎ না থাকায়।
এই অবস্থায় মনপুরাকে পুরোপুরি আলোকিত করতে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সেই প্রকল্পেও নবায়নযোগ্য এ পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। সমস্যা হলো, এই বিদ্যুতে শিল্পকারখানা চালানো যাবে না। এ কারণেই এলাকার লোকজন মনপুরাকে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করার দাবি জানাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি যথেষ্ট যৌক্তিক। এখনে যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে বলে বলা হচ্ছে, তা আসলে স্থানীয় মানুষের খুব একটা কাজে আসবে না।
এখানে বর্তমানে তিন হাজারের মতো গ্রাহক দিনে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন। বাংলাবাজার, সিরাজগঞ্জ বাজার ও কাউয়ারটেক এলাকায় সৌরবিদ্যুতের যে তিনটি মিনি গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়, তা ‘প্রি-পেইড’ পদ্ধতিতে ৩০ টাকা ইউনিট দরে কিনতে হয়। এই দামে বিদ্যুৎ কেনা সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের বাইরে। সৌরবিদ্যুতের বাইরে ডিজেলচালিত ইঞ্জিনে ৭০০ থেকে ৭৫০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে ওজোপাডিকো (ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড)। দিনে কয়েক ঘণ্টার জন্য সেই বিদ্যুৎ পাচ্ছেন উপজেলা শহরের হাজিরহাট বাজার ও আশপাশের ৮৫৪ গ্রাহক।
এ অবস্থায় ভোলার মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন মনপুরাকে লক্ষাধিক মানুষের নাগরিক অধিকার ও আধুনিক ভাবে গড়ে তুলতে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা অত্যাবশ্যক। লেখক: সাংবাদিক।
ঢাকাওয়াচ/স