
ফ্যাসিবাদের শেকল ভাঙতেই ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল, এ আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নয়; বরং ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে প্রতিরোধের লক্ষ্যেই হয়েছিল- এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)- এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর এক হোটেলে এনসিপি আয়োজিত নীতিনির্ধারণ-বিষয়ক আলোচনায় তিনি এসব কথা তুলে ধরেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান কোনো ব্যক্তি বা দলের বিরুদ্ধে হয়নি। ফ্যাসিস্ট সংস্কৃতির বিরুদ্ধে এই অভ্যুত্থান হয়েছিল।’ তিনি আরও মনে করিয়ে দেন, যে রাজনৈতিক দল স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা রাখে, তারাই দেশের প্রতিষ্ঠান গড়ে দেয়, কিন্তু স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। তার ভাষায়, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুরোপুরি এগিয়ে নিতে পারেননি।’
দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস টেনে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘জুলাই আকাঙ্ক্ষা যদি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে দেশ আরও ডিজাস্টারের দিকে যেতে পারে। আরও ক্ষতির দিকে যেতে পারে। কারণ, আমাদের দেশের ইতিহাস এটাই বলছে।’
তিনি ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচন এবং ১৯৯০-এর আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, তখন জনআকাঙ্ক্ষা থাকলেও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীলরা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি, ফলে দেশ নানা সংকটে পড়েছে।
রাজনৈতিক সংস্কার প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার অপরিহার্য। কিন্তু ব্যক্তিনির্ভর রাজনীতির কারণে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নীতি পাল্টে যায়- এতে ব্যবসায়িক গোষ্ঠীও একপক্ষের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
এনসিপির রাজনৈতিক অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের ভিশন-মিশন কম্প্রোমাইজ করে রাজনীতি করব না। গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অ্যাজেন্ডা। বৈষম্যবিরোধী নামটার কারণে ওই আন্দোলন জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এই নাম সচেতনভাবেই দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেন, জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত না হলে দেশ নতুন বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে।