
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, শহীদ ওসমান হাদি ভাইয়ের খুনের সঙ্গে জড়িতরা দেশের ভিতরে লুকিয়ে আছে নাকি ভারতে পালিয়েছে, তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্পষ্ট করতে পারছে না। আমাদের মনে হয় রাষ্ট্রযন্ত্র কিংবা প্রশাসন এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। কারণ খুনি পরিচিত, যার সবকিছু প্রকাশ্য, তার একার পক্ষে খুন করে পালিয়ে যাওয়া বা লুকিয়ে থাকা সম্ভব নয়। এখানে বড় একটি চক্র কাজ করছে। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ওসমান হাদির খুনের পেছনে যে চক্র কাজ করেছে, তাদের খুঁজে শাস্তির আওতায় আনা হোক।”
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর মহানগরীর জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আখতার হোসেন বলেন, “খুনিরা বাহিরে ঘুরে বেড়ালে গানম্যান নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে না। খুনিদের গ্রেপ্তার করা হলে কারও গানম্যানের প্রয়োজন হবে না। যদি খুনিদের শাস্তির আওতায় আনা হয়, তাহলে দেশের সকল মানুষ নিরাপদে থাকবে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হলে যারা খুনের পরিকল্পনা করছে তারা এ কাজ থেকে বিরত থাকবে। দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”
তিনি আরও বলেন, নানাভাবে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। “আমরা শহীদ ওসমান হাদি ভাইয়ের খুনের বিচার, খুনিদের গ্রেপ্তার চাই। তেমনি এমন খুন যেন আর না হয়, সরকার যেন সেটি নিশ্চিত করে, সেটাও চাই। গত দেড় বছরে দেশে হত্যাকাণ্ড, মারামারির ঘটনায় অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকার ব্যবস্থা নেয়নি। সরকার নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করেছে। শান্তি-শৃঙ্খলার সাথে নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকারকে কাজ করতে হবে।”
আখতার হোসেন আরও অভিযোগ করেন, পতিত আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। “গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের দোসরদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব ছিল। তারা যেভাবে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বাইরে চলে গেছে তা বন্ধ করা সম্ভব হতো। সত্যিকারের বিচার প্রক্রিয়াকে কার্যকর করা সম্ভব হলে আজ আমার ভাইকে ককটেল বিস্ফোরণে জীবন দিতে হতো না।”
এ সময় রংপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক মো. আল মামুন, মহানগরের সদস্য সচিব আব্দুল মালেক, জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর নয়ন, আবু রায়হান, রংপুর-৪ আসনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ-আল মামুন, এনসিপি নেতা তৌফিক ইসলামসহ অন্যান্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির স্মরণে রংপুর নগরীর দেয়ালজুড়ে গ্রাফিতি ও টাইপোগ্রাফি অংকন কার্যক্রম শুরু করেছে জাতীয় ছাত্রশক্তি। এই উদ্যোগের মাধ্যমে হাদির স্মৃতি সংরক্ষণ এবং তরুণ প্রজন্মকে তার অনুপ্রেরণায় জাগ্রত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর সংলগ্ন সড়ক ঘেঁষা দেয়ালে অংকন কার্যক্রমের প্রথম দিনে এনসিপি ও জাতীয় ছাত্রশক্তির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।