বিএনপির ২ নেতাকে শোকজ

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি দিয়ে ৩০ টাকা মূল্যের কুপন তৈরি করে র‌্যাফেল ড্রয়ের আয়োজন করায় খুলনার ফুলতলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ আবুল বাশার ও সদস্য সচিব মনির হাসান টিটোকে শোকজ করেছে বিএনপি। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাদের শোকজ করা হয়। চিঠিতে বলা হয়, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আপনারা বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি দিয়ে কুপন তৈরি করে 'বাংলাদেশ উৎসব' এর আয়োজন করে দলের নেতাকর্মীদের নিকট থেকে অর্থ সংগ্রহ করছেন-যা সম্পূর্ণরুপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও এক ধরনের চাঁদাবাজি। সুতরাং দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী এ ধরনের কর্মকান্ডের জন্য আপনাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার যথাযথ কারণ দর্শীয়ে আগামী ৩ দিনের মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেয়ার জন্য আপনাদেরকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর ফুলতলা উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এই কর্মসূচি সফল করতে ‘বাংলাদেশ উৎসব কুপন-২০২৪’ নামের র‌্যাফেল ড্রয়ের আয়োজন করে উপজেলা বিএনপি। এ নিয়ে দলের ভেতরে ও বাইরে সমালোচনা তৈরি হলে ১৩ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে কুপন বিতরণ স্থগিত করার ঘোষণা দেন বিএনপি নেতারা।

ঢাবি ছাত্রলীগ নেত্রী নদী গ্রেফতার

নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শামসুন্নাহার হল শাখার সাবেক সহ-সভাপতি নিশিতা ইকবাল নদীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল মল্লিক গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রাজনৈতিক তৎপরতার অভিযোগে শনিবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে নদীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

দীর্ঘ ৭ বছর পর সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন খালেদা জিয়া

দীর্ঘ প্রায় সাত বছর পর সমাবেশে বক্তব্য দেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আগামী ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন বিএনপি প্রধান। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে দেড় থেকে দুই হাজারের মতো বীর মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত থাকবেন। মুক্তিযোদ্ধা দলের কয়েকজন নেতা বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আমরা সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটি মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সবকিছু ঠিক থাকলে সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এ বিষয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ করা হবে। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন বিএনপি প্রধান। গত ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। এর মধ্য দিয়ে এক যুগ পর সেনাকুঞ্জের কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কারারুদ্ধ হওয়ার পর এটিই ছিল খালেদা জিয়ার প্রথম কোনো রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া। ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ সময় তাদের পাশাপাশি চেয়ারে বসে কথা বলতে দেখা যায়। দীর্ঘ অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ায় খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে তিনি ছিলেন সবার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সামরিক কর্মকর্তা এবং বিশিষ্টজনরাও তার উপস্থিতিতে উচ্ছ্বসিত হন। বিএনপি নেত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছানোর পর একে একে বিশিষ্টজনেরা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

ছাত্র-জনতার সঙ্গে জোট করতে চায় এবি পার্টি

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি) কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছাত্র-জনতার শক্তির সঙ্গে জোট করার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে এবি পার্টি। ইতোমধ্যে দেশের অন্তত ৪০টি জেলা এবং ২০০টি উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে নীলফামারী প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা জানান তিনি। মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আলাদাভাবে নির্বাচন করলে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে এবি পার্টি। সে রকম প্রস্তুতিও রয়েছে আমাদের। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে দেশে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চেতনা নিয়েই আগামীতে রাজনীতি করতে এমনকি দেশের মানুষের সেবা করতে চায় এবি পার্টি। এতে বক্তব্য দেন - এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও সহকারী সদস্য সচিব আবু হেলাল, জেলা এবি পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা লিয়াকত আলী ও সদস্য সচিব আলতাফ হোসেন। বক্তব্যে ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, এবি পার্টি রাষ্ট্র মেরামত করে জনগণের অধিকার সুনিশ্চিত করতে রাজনীতিতে এসেছে। দেশের সব শ্রেণির মানুষ এবি পার্টির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে পারবেন। পরে নীলফামারী সদরের কচুকাটা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

পল্লবীতে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকর্মী গ্রেফতার

ঢাকার পল্লবীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেফতাররা হলেন পল্লবী থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মামুন (৩৫), ছয় নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা মো. সাজু (৩৪), পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক মো. সৈকত ইসলাম (১৯), আওয়ামী লীগের কর্মী মো. বাচ্চু বেপারী (৬০) ও রাজু (৫২)। মামলার এজাহার অনুসারে, গেল ১৯ জুলাই বিকালে পল্লবী থানার মিরপুর-১০ আবুল তালেব স্কুলের সামনে ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাথাড়ি গুলি করে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় আকরাম খান রাব্বী নামে এক ব্যক্তি গুলিতে নিহত হোন। এ ঘটনায় নিহতের পিতা ফারুক খানের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ আগস্ট পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে মিরপুর ১১ এলাকা থেকে আসামি মো. মামুন ও সাজুকে (৩৪) গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া গত ৪ আগস্ট বিকালে পল্লবী থানার মিরপুর-১০ পপুলার-২ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে সরকার পতনের একদফা দাবিতে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন মো. আবিদ। আন্দোলনে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গুলিতে গুরুতর আহত হোন আবিদ। এ ঘটনায় আবিদের ভাই জিন্নাত সাঈদীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ নভেম্বর পল্লবী থানায় অন্য একটি মামলা করা হয়। পরে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে পল্লবীর আদর্শ নগর এলাকা থেকে এ ঘটনায় জড়িত সৈকত, বাচ্চু ও রাজুকে গ্রেফতার করা হয়। পল্লবী থানার পৃথক পৃথক মামলায় গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।

হরিণাকুণ্ডুতে বিএনপির কর্মিসভায় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত দশ, পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ

ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় বিএনপির কর্মিসভায় প্রতিপক্ষের হামলায় অন্তত দশজন আহত হয়েছে। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলার জোড়াদাহ ইউনিয়নের লালন বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সাংসদ প্রয়াত মসিউর রহমানের জ্যেষ্ঠ ছেলে কেন্দ্রীয় ড্যাবের সদস্য ও জেলা বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ইব্রাহীম রহমান বাবুর জনসভায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে হরিণাকুণ্ডু থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তাইজাল হোসেন ও জোড়াদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাজেদুর রহমান রনির লোকজন এ হামলা করেছে। তাইজাল হোসেন ও সাজেদুর রহমান জেলা বিএনপির সভাপতি এমএ মজিদের সমর্থক।’ সমাবেশে হামলার কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সমাবেশস্থলে আচানক কিছু লোক চায়নিজ কুড়াল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর শুরু করে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ইব্রাহীম রহমান বাবুর সমর্থকেরা ঝিনাইদহ শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে পোস্ট অফিসের সামনে জেলা বিএনপির সভাপতি এমএ মজিদের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। এ সময় জেলা এমএ মজিদের পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। শুক্রবার রাত সাতটার দিকে এমএ মজিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল। এ সময় বলা হয়, ‘হরিণাকুণ্ডুতে যারা বিএনপির নামে সমাবেশ করছিল, তারা পতিত আওয়ামী লীগের দোসরদের আশ্রয়দাতা। ঝিনাইদহের জেলা বিএনপির সভাপতি এমএ মজিদ ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনার নেতৃত্ব বাদে কোন ধরনের মিছিল, মিটিং ও সমাবেশ করলে তাদের কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।’ এ সময় জেলা যুবদলের সভাপতি আহসান হাবিব রনক, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম পিন্টু, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৌমেনুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ মিছিলে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করে। শহরজুড়ে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ইব্রাহীম রহমান বাবু এবং এমএ মজিদ ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। দীর্ঘ দিন ধরেই বিবদমান দুই গ্রুপ আলাদাভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছিল। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরেও জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে গণমিছিল করা হয়। এ নিয়ে ইব্রাহীম রহমান বাবু বলেন, ‘হরিণাকুণ্ডুতে পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার কর্মিসভায় প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা করেছে। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ সমাবেশে সৌমেনুজ্জামান বলেন, ‘ঝিনাইদহ শহরে কিছু নব্য বিএনপি জাগ্রত হয়েছে। ৫ আগস্টের পর যেসব বিএনপি এসেছে, তাদের বেছে বেছে নিজ হাতে বিচার করব। তারেক রহমান বলেছেন, ৫ তারিখের পর কোন আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যেন দলে আসতে না পারে। আমি ওয়ার্নিং দিতে চাই, আজকের পর থেকে এমএ মজিদ ও জাহিদুজ্জামান মনা ভাইয়ের নেতৃত্ব বাদে যদি বিএনপির কেউ একটা মিছিল মিটিং করতে চান তাহলে এর দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।’ এমএ মজিদ বলেন, ‘হরিণাকুণ্ডুতে বিএনপির কোন সমাবেশ ছিল না। এটা আওয়ামী সমাবেশ ছিল। এ ছাড়া, যেসব কর্মকাণ্ড ঘটানো হয়েছে, তা দলীয় শিষ্টাচারবহির্ভূত। জেলায় শৃঙ্খলা বজায় থাকুক, এটাই আমরা চাই। জেলা বিএনপির কমিটি আছে। এই কমিটির বাইরে কেউ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে কিছু করতে পারবে না।’ হরিণাকুণ্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আহতদের মধ্যে একজনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’ এ নিয়ে হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএ রউফ খান বলেন, ‘এক পক্ষের কর্মিসভায় প্রতিপক্ষের হামলার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’ এ নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদ সংবাদ মাধ্যমক বলেন, ‘হরিণাকুণ্ডুর ঘটনায় কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা শহরসহ সব স্থানে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে দেখা নেই আ. লীগ ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর

রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন সর্বস্তরের মানুষ। তবে সেখানে দেখা মেলেনি ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগের। আসেনি আরেক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর থেকেই রায়েরবাজার বধ্যভূমি এলাকায় শ্রদ্ধা নিবেদন করতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যানারেও হাজারও মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রায়েরবাজার শহিদ বেদিতে। তবে বিগত কয়েক বছরের তুলনায় বধ্যভূমিতে আসা মানুষের সংখ্যা কম। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত বুদ্ধিজীবীদের ভিড় থাকে। তবে এবার তাদের দেখা নেই। আওয়ামী লীগ ঘরনার একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে রায়েরবাজার এলাকায় আসলে সাধারণ মানুষের রোষানলে তাকে বধ্যভূমি এলাকা ত্যাগ করতে হয়। রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। এসময় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আজকের এইদিনে শহীদ জাতির সূর্য সন্তানদের প্রতি অত্যন্ত ভাবে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি। তাদের আত্মত্যাগ একটি জাতি গঠন হয়েছে। এ দিবসগুলো আমাদের মূল পরিচয়ের স্মারক। আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থান এ বছর আলাদা তাৎপর্য বহন করেছে। আত্মত্যাগের যে ধারাবাহিকতা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার একটি স্রোত। আমরা জাতি হিসাবে এ সূর্য সন্তানদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে এ জাতি আমাদের দেখিয়ে দিয়ে গিয়েছে, অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করে কিভাবে রুখে দাঁড়াতে হয়। তারা আমাদের যে দায়িত্ব দিয়ে গেছে, সেটি পালন করাই আমাদের কাজ। সকালে সোয়া ১০টার দিয়ে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফ সোহেল বলেন, ৭১ এবং ২৪ নিয়ে একটি মহল জলঘোলা করা চেষ্টা করে যাচ্ছে। ফ্যাসিস্টের দোসররা বার বার দেখানোর চেষ্টা করছে যে, আমরা তরুণ প্রজন্ম যারা রক্ত দিয়ে নতুন বাংলাদেশকে নিয়ে এসেছি। তারা ৭১ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমরা ২৪’কে মনে করি ৭১ এর ধারাবাহিকতা। আমরা ৭১ এর লড়াইকে একটি চলমানতার সঙ্গে দেখতে চাই। আওয়ামী লীগ সবসময় দেখানোর চেষ্টা করছ ৭১ যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে এবং তারা ক্ষমতায় এসে দেখানোর চেষ্টা করেছে এটাই হলো বাঙালি চূড়ান্ত পরিণতি। তারা তাদের ক্ষমতার ধরে রাখতে এধরণের কৌশল অবলম্বন করেছে। মুক্তিযুদ্ধকে তাদের দলীয় ব্যানারে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা বারবার বলার চেষ্টা করছি, ৭১ ছিল এ পুরো জনগোষ্ঠীর লড়াই। এ দেশের ছাত্র-জনতা, কৃষি, দিনমজুর সবার লড়াই। এটা শুধু আওয়ামী লীগের লড়াই নয়। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের যে আকাঙ্ক্ষা স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র উল্লেখিত সাম্য, মানবিকতা, সামাজিক ও সুবিচার। যেটা আওয়ামী লীগ সংবিধানের মূলনীতিতেও রাখেনি। তারা চার মূলনীতি আমদানি করেছিল তাদের মতো করে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে তারা মুক্তিযোদ্ধাকে কুক্ষিগত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তীতে আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যে লড়াই করার কথা, সেটা আওয়ামী লীগ করেনি। তারা নিজেদের স্বার্থে বিদেশি শক্তির মদদে আমাদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ করেছে। তাই আমাদের ২৪ এর লড়াই লড়তে হয়েছে। এই রায়েরবাজারে বধ্যভূমির জায়গায় ২৪ এর শহীদদের গণকবর দিয়েছে এই আওয়ামী লীগ।

গণহত্যা করেছে বলেই আওয়ামী লীগ আজ জনবিচ্ছিন্ন: মির্জা ফখরুল

গণতন্ত্র হত্যা ও গণহত্যা করেছে বলেই আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্র হত্যা ও গণহত্যা করেছে বলেই আওয়ামী লীগ আজ জনবিচ্ছিন্ন। সে কারণে তারা আজ (শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে) উপস্থিত হতে পারে নাই।’ খুব দ্রুত জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী নির্বাচন হবে বলে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা সবসময় আশাবাদী। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আমরা সহযোগিতা করছি। আমরা আশা করি খুব দ্রুত জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা হবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এই দিনে ১৯৭১ সালে বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে পাক-হানাদার বাহিনীর বাংলাদেশের প্রথিতযশা সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, অধ্যাপক, বৈজ্ঞানিক এবং সুশীল সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। ১৯৭১ সালে আমরা জাতির বর্ণ ব্যক্তিদের হারিয়েছি। আমরা জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আজ আমরা সবাই মিলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মাগফিরাত কামনা করছি। বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকের এই দিনে আমরা শপথ গ্রহণ করেছি, বাংলাদেশের মানুষ ১৯৭১ সালে যে কারণে যুদ্ধ করেছিল একটা স্বাধীন, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য। এটি হয়েছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণার মধ্য দিয়ে। মির্জা ফখরুল বলেন, ৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এই সুযোগে সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে আমরা বাংলাদেশকে একটি সত্যিকার অর্থেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, আধুনিক রাষ্ট্র, একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ড. মঈন খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায় আব্দুস সালামসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আমাদের প্রতিপক্ষ বানাবেন না, অন্তর্বর্তী সরকারকে ফখরুল

রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ না বানাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো সরকারকে সহযোগিতা করছে বলেও জানান তিনি। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের কারও কারও বক্তব্যে ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সবাই এখন এমন এমন বক্তব্য দিচ্ছেন, তাদের নিজেদের ক্ষতি হচ্ছে। সতর্ক থাকা খুবই জরুরি। গতকাল একজন উপদেষ্টা মন্তব্য করেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করছে।’ এই বক্তব্য মারাত্মক। সবাই বিশেষ করে বিএনপি এই সরকারকে সমর্থন করছে। কেননা তারা তাদের কাজ শেষ করে নির্বাচন দিয়ে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দেবে। তাই উপদেষ্টার সেই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ এবং বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। জনরোষে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, পতিত সরকার ভারতে আশ্রয় নিয়ে অ্যাকটিভ হচ্ছে। আবার ক্ষমতা দখলের জন্য ফিরে আসতে পারে। তাই এখন আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অ্যাকটিভ হতে হবে যেন তারা আর ফিরে আসতে না পারে। মিডিয়ার মাধ্যমে বেশি অ্যাকটিভ হতে হবে। আওয়ামী লীগ সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব অ্যাকটিভ। সবাইকে কথাবার্তায় সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, চরম ক্লান্তিকাল অতিক্রম করছে পুরো জাতি। এমন কোনো কথা বলা যাবে না, যাতে করে নিজেদের ক্ষতি হয়। প্রতিটি মুহূর্তে সতর্কতার সঙ্গে চলতে হবে। ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১৫ বছরের মতো আবার কেউ যাতে ইতিহাসকে বিকৃত না করতে পারে, সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনকে বিলম্বিত করলে সরকারের জন্য খারাপ সময় আসবে। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। নির্দিষ্ট দিন-তারিখে সংস্কার শেষ হবে না। ভবিষ্যতে জনগণের সরকারই তা বাস্তবায়ন করবে। রোডম্যাপ ঘোষণা করলে জনগণ নির্বাচনমুখী হবে বলেও মনে করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে দ্রুত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে। সেই নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন হবে। মেজর হাফিজ বলেন, নির্বাচন ঘিরে বিএনপির দায়িত্ব রয়েছে। বিএনপিকে নিয়ে অনেকে কুৎসা রটনা করবে, সেগুলো যেন মিথ্যা প্রমাণ করতে পারি, সে বিষয়ে নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে। এছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, প্রফেসর ড. মাহবুব উল্লাহ প্রমূখ বক্তব্য দেন।

ভারত হাসিনার চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখে: আলাল

‘মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত আমাদের বন্ধু ছিল। কিন্তু এরা যে কখন বন্ধু, কখন শত্রু এটা বুঝতে হলে আমাদের আরও কয়েকশো বছর বাঁচতে হবে। তারা এখন শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে।যাদের দিয়ে তাদের স্বার্থ হাসিল হয় তারা (ভারত) শুধু তাদের আশ্রয় দেয়। ভারত শেখ হাসিনার চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখে; এ দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক হবে না।’ বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এসব কথা বলেন। ভারতের উদ্দেশ্যে যুবদলের সাবেক সভাপতি বলেন, শেখ হাসিনার চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখা ভুলে যান। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের আমলের কথা ভুলে যান। ওটা ভুলে যেতে হবে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রজন্মকে চিনতে হবে। কারণ আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারি হাইকমিশনার অফিসে যে হামলা হয়েছে; তারপরে বাংলাদেশের ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নেমেছিল। এর কারণ একটাই এদেশের মানুষ সার্বভৌমত্বকে ভালোবাসে। মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পরে অনেক মুক্তিযোদ্ধা তৈরি হয়েছে। যেমন ৫ আগস্টের পরে অনেক জাতীয়তাবাদী দলের সৈনিক তৈরি হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে ’৭১ সালে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধ না করেও রাজাকারদের সঙ্গে ছবি তুলে; পরবর্তীকালে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম লিখিয়েছে। এ ইতিহাস বর্তমান প্রজন্ম বা পরবর্তী প্রজন্ম জানবে কিনা আমার জানা নেই। এসময় তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, আমাদের আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের সঙ্গে আছেন। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মরাও আমাদের সঙ্গে আছে। বাংলাদেশের সর্বভৌমত্বকে প্রমাণ করতে আমাদের ভুল, আমাদের কাজ, সবকিছু বিচার বিশ্লেষণ হবে আমাদের মাপকাঠিতে। কোন দাদাদের চোখ রাঙানিতে আমরা ভয় পাই না। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের সঞ্চালনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ বক্তব্য দেন।

জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে জামায়াতের বৈঠক

জামায়াতে ইসলামির নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক করেছে বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলশানস্থ জাতিসংঘের আবাসিক কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলে ইউএন হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটসের ট্রানজিশনাল জাস্টিস অ্যাডভাইজার সেবাস্টিয়ান ভেরেলস্ট এবং ফাইন্যানসিং ফর পিসবিল্ডিং এর ডেপুটি চিফ মারকাস লেনযেনসহ ৫ জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। জামায়াতে ইসলামির প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। সাক্ষাৎ শেষে ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, আজ আমরা জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। বাংলাদেশের বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিশেষ করে চলমান বিচার প্রক্রিয়া, বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি, ডেমোক্রেসি এবং বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে মতবিনিময় করার জন্য তারা বাংলাদেশে এসেছেন। তিনি বলেন, সাক্ষাৎকালে জামায়াতে ইসলামি আগামীর বাংলাদেশকে কীভাবে দেখতে চায়- সে সম্পর্কে তারা জানতে চেয়েছেন। আমরা দলের পক্ষ থেকে আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। বিচারের ব্যাপারে আমরা বলেছি, ক্রিমিনাল যারা আছে, তাদের বিচার হতে হবে। তবে সেটা যেন ফেয়ার হয় এবং কোনো ধরনের ইনজাস্টিস না হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালে যে-সব বিচার হবে, তা যেন আন্তর্জাতিক মানের হয়, সে সম্পর্কেও আমরা আলোচনা করেছি। প্রয়োজনীয় সংস্কার, ডেমোক্রেটিক সিস্টেম তৈরি ও যথাসময়ে দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হওয়ার বিষয়ে আমরা কথা বলেছি- যোগ করেন তাহের।

উপদেষ্টা নাহিদের বক্তব্যকে ‘রাজনীতি বিরোধী’ বললেন ফখরুল

সম্প্রতি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের দেয়া এক বক্তব্যকে রাজনীতি বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে দেশে ফিরে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর একটার পর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে ফখরুল ইসলাম এই মন্তব্য করেন। এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করছে- এ ধরনের বক্তব্য সম্পূর্ণ রাজনীতি বিরোধী। রাজনৈতিক দলগুলো সরকারকে সমর্থন করছে।’ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ গ্লোবাল পার্টনার্স গভর্নেন্সের (জিপিজি) একটি প্রতিনিধি দল তথ্য মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা নাহিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো চাচ্ছে সংস্কার তাদের অধীনেই হোক। তাই, তারা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। তারা সংস্কারের পরিবর্তে নির্বাচনকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।’ অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ন্যূনতম সংস্কার করে নির্বাচন দিন।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের অস্থিরতা নিরসন একমাত্র নির্বাচিত সরকারই করতে পারে।’

শহীদ বুদ্ধিজীবী ও বিজয় দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি দিল বিএনপি

১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচির কথা জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিএনপির সব কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হবে, কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। ১৪ ডিসেম্বর দুপুর দুইটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হবে। ১৬ ডিসেম্বর দেশব্যাপী বিএনপির সব কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। ভোরে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হবে। জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। বিকালে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে সর্বস্তরের মানুষ উপভোগ করতে পারবেন।’১৯৭১-এ বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর যে সরকার গঠিত হয়েছিল, তারা এই দেশের লোক হয়েও মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়- এমন দাবি করে রিজভী বলেন, ‘বিরোধী দল-মতকে স্তব্ধ করে তৈরি করা হয় বাকশাল। তৈরি হয় অবরুদ্ধ বাংলাদেশ।’বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরো বলেন, ‘পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বর সেখান থেকে দেশকে সামনের দিকে নিয়ে যান জিয়াউর রহমান। ৮১ সালে তাকে হত্যার পর ফের দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু হয়। সেই পুরানো বাকশাল শেখ হাসিনা নতুনভাবে দেশে ফের কায়েম করেছিলেন।’সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে বার বার ভাঙার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলেন। ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে সেই ফ্যাসিস্টের পতন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন রিজভী।অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার শেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করবে- এমন আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।

পলককে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিলেন ট্রাইব্যুনাল

জুলাই-আগস্ট গণহত্যা ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে গণহত্যার ঘটনা গোপন করায় অভিযোগে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে ১৮ ডিসেম্বর জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তদন্ত সংস্থাকে অনুমতি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে যাত্রাবাড়ি থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসানকে ১৫ ডিসেম্বর তদন্ত সংস্থায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনুমতি দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) প্রসিকিউশনের মাধ্যমে তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।এ সময় জুলাই-আগস্ট গণহত্যার তদন্তের অগ্রগতি ঠিকমত অবহিত করতে না পারায় তদন্ত সংস্থার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন আদালত।এ দিকে, আরেক আবেদনে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর বহু আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার ব্যাখ্যা সাত দিনের মধ্যে দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।বৃহস্পতিবার সকালে আবুল হাসানকে হাজির করা হয়। পরে আদেশের নিয়ে যাওয়া হয় কারাগারে। তবে, পলককে হাজির করা হয়নি ট্রাইব্যুনালে।গেল ৪ ডিসেম্বর শিক্ষার্থী ইমাম হোসেন তাঈম হত্যা মামলায় আবুল হাসানকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি, তাকে আজ (১২ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।মামলার সূত্রে জানা গেছে, ইমাম হোসেন তাঈমকে কাছ থেকে গুলি করার পর থানায় নিয়ে মুখমণ্ডল বিকৃত করে মৃত্যু নিশ্চিত করার ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন আবুল হাসান। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা করা হয়। এ মামলায় আবুল হাসান এজাহারভুক্ত আসামি।

মামলা শেষ হলেই তারেক রহমান দেশে ফিরবেন: ফখরুল

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে থাকা যাবতীয় মামলা শেষ হলেই তিনি দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে একটায় যুক্তরাজ্য থেকে শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর তাকে ১৩টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়। ১৮ মাস পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে কারামুক্ত হন তিনি। এর আট দিন পর ১১ সেপ্টেম্বর দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে চলে যান। তখন থেকে সপরিবারে লন্ডনে অবস্থান করছেন। যুক্তরাজ্যে থাকা অবস্থায় একাধিক মামলায় কারাদণ্ড হয় তারেক রহমানের। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কারাগার থেকে মুক্ত হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলটির অধিকাংশ নেতা। সরকার পরিবর্তনের পর তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরবেন বলে দলটির নেতাকর্মীরা ভেবে নিলেও চার মাসেও ফেরেননি তারেক রহমান। কবে নাগাদ তিনি দেশে ফিরতে পারেন এ নিয়ে দলটির নেতাকর্মীরা ধোঁয়াশায় রয়েছেন। এমন অবস্থার মধ্যে তারেক রহমান কবে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরতে পারেন সে বিষয়ে তথ্য জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। বিএনপি মহাসচিব জানান, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলাগুলো শেষ হলেই তিনি দেশে ফিরবেন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমানের বার্তা পৌঁছে দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, নেতাকর্মীদের ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন তারেক রহমান। যে বিজয় এসেছে তা রক্ষা করারও নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে বলে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম যে মন্তব্য করেছেন এর জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি জানি না উনি এমন বক্তব্য কীজন্য করেছেন। কিন্তু ওনার এমন বক্তব্য রাজনৈতিক বিরোধী। আমি আশা করি না ওনারা এই ধরনের বক্তব্য দেবেন। রাজনৈতিক দলগুলো সব সময় এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করেছে এবং একটি উদ্দেশ্য রয়েছে সেটা হচ্ছে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। যেটার জন্য গত ১৫ বছর ধরে আমরা লড়াই করছি। মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার নয়, নির্বাচনকে প্রাধান্য দিচ্ছে বিএনপি এমন ধারনা ভুল। বিএনপি দুই বছর আগেই সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। নূন্যতম সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে। বাংলাদেশে যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা নির্বাচিত সরকার ছাড়া মোকাবেলা করা চ্যালেঞ্জিং। গত ৩০ নভেম্বর স্ত্রীর চিকিৎসাসহ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করতে লন্ডন যান মির্জা ফখরুল। সেখানে তিনি যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত একটি সমাবেশে বক্তব্য দেন। এছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও যুক্তরাজ্যের বাংলা গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। সফর শেষে বুধবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন ফখরুল। আজ দুপুরের দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।

ফ্যাসিবাদ বিদায় হলেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়নি: নজরুল ইসলাম খান

ফ্যাসিবাদ বিদায় হলেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়নি বলে মন্তব্য করেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে কৃষকদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে। আগের মতো বিনা ভোটে, রাত ও ডামি ভোটে নয় জনগণের ভোটের ব্যবস্থা করে নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিবে অন্তর্বর্তী সরকার।যারা সরকারে আছে তারা জোর করে ক্ষমতায় আসেনি, জনগণই তাদের দায়িত্ব দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

দেশে ফিরেছেন মির্জা ফখরুল

স্ত্রীসহ যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। এ সময় তাকে স্বাগত জানান বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর আগে, গত ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে লন্ডনের ঢাকা ত্যাগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম। নেতাকর্মীরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করেছেন মির্জা ফখরুল। সেইসঙ্গে সেখানকার বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন তিনি। দলকে এগিয়ে নিতে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা ও পরামর্শও দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।

জনগণ কোনও ষড়যন্ত্র সফল হতে দিবে না: জামায়াত নেতা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, অর্থ লোপাটকারী, খুনী ও ভোট ডাকাতরা দেশকে পুনরায় অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্র বাংলাদেশর জনগণ কখনও সফল হতে দিবে না। এজন্য জামায়াতের কর্মীসহ বাংলাদেশের জনগণকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ২০ নম্বর দেওয়ানবাজার ওয়ার্ডের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দেওয়ানবাজার ওয়ার্ড আমীর অ্যাডভোকেট আনোয়ার সাদাতের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য ও কোতোয়ালী থানা আমীর আমির হোছাইন, কোতোয়ালী থানা নায়েবে আমীর অধ্যাপক আবদুজ জাহের, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ ফেরদৌস, দেওয়ানবাজার ওয়ার্ড সেক্রেটারি শাহ কামাল হাসান। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কোতোয়ালী থানা আমীর আমির হোছাইন বলেন, জামায়াত কর্মী মানে সমাজ কর্মী। কর্মীদের সবসময় সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রতিটি মহল্লা ও অলি-গলিতে জামায়াতের ইউনিট কায়েম করতে হবে। সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন আবদুল মতিন, মাওলানা আজিজুল হক, মোহাম্মদ হোসাইন প্রমুখ।

বিজয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়াপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়াপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে দাওয়াতপত্রটি হস্তান্তর করেন রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী। বিএনপি চেয়াপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দাওয়াতপত্র গ্রহণ করেন বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। জানতে চাইলে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন আজ রাতে বাসস’কে বলেন, ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়াপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’ আজ রাত ৮টা দিকে বিএনপি চেয়াপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব এই আমন্ত্রণপত্রটি তার কাছে পৌছে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

বন্ধুত্বের বাণী দিয়ে শেষ বিএনপির তিন সংগঠনের ঢাকা-আগরতলা লং মার্চ

ঢাকা টু আগরতলা লং মার্চ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছে শেষ হয়েছে। সেখানে সমাবেশে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল নেতারা ভারতকে প্রভুত্ব ছেড়ে বন্ধুত্বের আহ্বান জানান। পাশাপাশি, সব ধরনের ষড়যন্ত্র বন্ধে ভারতের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়। বুধবার বিকাল চারটার দিকে ঢাকা থেকে আসা লং মার্চের গাড়িবহর আখাউড়ায় ঢুকে। তবে, যানজটের কারণে সব গাড়ি বন্দর এলাকায় পৌঁছাতে পারেনি। এর আগে সকাল থেকে অন্তত আট-দশটি গাড়িতে করে জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আখাউড়ার দিকে আসতে থাকে। দুপুরে বন্দর এলাকায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকা অবমাননা, মিডিয়ায় অপপ্রচার, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠন যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল বুধবার এ লং মার্চ কর্মসূচির আয়োজন করে। লং মার্চকে ঘিরে সীমান্ত এলাকায় ছিল কড়া নিরাপত্তা। কাস্টমস এলাকা পর্যন্ত লোকজনকে আটকে দেয় আইনশৃংখলা বাহিনী। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএস জিলানী। প্রধান অতিথি ছিলেন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান। বক্তব্য দেন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ফখরুল ইসলাম প্রমুখ। সমাবেশে রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এ দেশে আওয়ামী লীগের কোন অস্তিত্ব নেই। এ দেশের মানুষ ভারতের আগ্রাসী মনোভাব মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ। ফের যদি পতাকা অবমাননা হয় তাহলে আমরা এর কঠোর জবাব দেব।’ নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, ‘ভারতে বাংলাদেশের পতাকা পোড়ানোর সময় সেখানে পুলিশ ছিল নীরব। এটি এটি অবমাননা। তারা প্রতিবেশী দেশ। কিন্তু, বন্ধু হতে পারেনি। তারা তিস্তার পানি না দিলেও ফেনী নদী থেকে নিয়ে গেছে। তারা পররাষ্ট্র নীতি কী হবে শেখায়। আগে তাদের জাহাজ ভিড়তে দিতে হয়। স্বাধীনতার পর থেকে তারা শোষণ করে। আমরা জামদানি পাঠাই, ইলিশ পাঠাই। তারা ফেলানির লাশ দেয় আর ফেন্সিডিল দেয়।’ মোনায়েম মুন্না বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনচেতা। তারা নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের বাইরে প্রভু নেই। তারা ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই। সার্বভৌম প্রশ্নে এ দেশের মানুষ প্রয়োজনে ঝুঁকি নিতে রাজি।’

যে ডিভাইস ব্যবহার করতে নেতাকর্মীদের পরামর্শ দিলেন মির্জা ফখরুল

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জোর করে কিছু করা যাবে না। ৩১ দফা যদি ঠিকমত বুঝলে আর কিছুর দরকার নাই।’ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্য বিএনপির কার্যকরী কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা থকেই শেখ হাসিনা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছিল। পরপর তিনটা নির্বাচন বেআইনিভাবে করেছে আওয়ামী লীগ। মিডিয়া ও সচিবালয় সব দখল নিয়েছিল। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ছিল। আমরা সেটা পার হয়েছি।’মিথ্যা মামলা দিয়ে খালেদা জিয়াকে হয়রানি করা হয়েছিল উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে যে বিচারক খালেদা জিয়ার রায় দিয়েছিলেন তার বাড়ির ভিটা গুড়িয়ে দিয়েছে মানুষ। তারেক রহমানকেও হয়রানি করা হয়েছে এভাবে।’এখনকার যুদ্ধ হল সাইবার ওয়ার। যে ডিভাইসের মাধ্যমে বেশি মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছানো যাবে- সেগুলো ব্যবহার করতে নেতাকর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন মির্জা ফখরুল।তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি। আমাদের দল হল নলেজড বেইজড। বংলাদেশে যেটা হয়েছে, তা কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অবদান। তরুণ প্রজন্মের কাছে আমাদের বহু প্রত্যাশা।’ভাষা আন্দোলন থেকে ছাত্র যুবকরাই আন্দোলন করেছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যুবকরা রক্ত না দিলে কি শেখ হাসিনা পালাতেন। এটার প্রতিদান দেয়া সম্ভব না।’

এ দেশের এক ইঞ্চি মাটির দিকে তাকালে চোখ উপরে ফেলা হবে

ভারতকে উদ্দেশ্য করে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী বলেছেন, ‘এ দেশের এক ইঞ্চির মাটির দিকে তাকালে সেই চোখ উপরে ফেলা হবে।’ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা থেকে আখাউড়া যাওয়ার পথে ভৈরব বাসস্ট্যান্ড মোড়ে যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এসএম জিলানী বলেন, ‘ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমরা লংমার্চ করছি। ভারত নিজেদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দাবি করে। কিন্তু, বাংলাদেশের মানুষের গণ-আন্দোলনে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনাসহ তার সব দোসরদের আশ্রয় দিয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আপনাদের জানিয়ে দিতে চাই- এই বাংলাদেশ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ না। এই বাংলাদেশ জিয়ার, খালেদার জিয়ার, তারেক রহমানের বাংলাদেশ। এ দেশের এক ইঞ্চির মাটির দিকে তাকালে সেই চোখ উপরে ফেলা হবে।’ সভায় উপস্থিত ছিলেন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভারতের আগরতলা অভিমুখী লংমার্চের যাত্রাপথে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল এই পথসভার আয়োজন করে। সভায় দলের নেতাকর্মীরা বলেন, ‘ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এই লংমার্চ কর্মসূচি করছে বিএনপি।’ ভৈরবে লংমার্চের গাড়িবহর ঢুকার সময় সড়কের দুই পাশে নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। তারা হাত নেড়ে, ফুল ছিটিয়ে গাড়িবহরকে স্বাগত জানান। এ সময় নানা রকম স্লোগান দেন তারা। এ সময় নেতাকর্মীদের হাতে ফেস্টুন, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা দেখা যায়। এর আগে, সকাল নয়টায় ঢাকার নয়াপল্টনের বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে লংমার্চ শুরু হয়। লংমার্চ শুরুর আগে নয়াপল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

ফ্যাসিস্ট ও ষড়যন্ত্রকারীদের চোখ রাঙানিকে দেশের মানুষ পরোয়া করে না: জামায়াত আমির

বাংলাদেশের মানুষ আর কারও চোখ রাঙানিকে পরোয়া করে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, দেশ যখন ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে তখন ফ্যাসিস্টরা দেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। ফ্যাসিস্ট ও ষড়যন্ত্রকারীদের চোখ রাঙানিকে দেশের মানুষ পরোয়া করে না। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় মজলিস শূরার অধিবেশনে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় স্বার্থের জায়গায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, ছাত্র-জনতার ত্যাগের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। তাদের ত্যাগের মর্যাদা দিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শফিকুর রহমান বলেন, বিভিন্ন দেশে কারারুদ্ধ বাংলাদেশিদের মুক্ত করার ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগী হতে হবে৷ দেশের মানুষ আর কারও চোখ রাঙানিকে পরোয়া করে না। জাতীয় স্বার্থের জায়গায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জামায়াত আমির বলেন, গত ১৫ বছরে জাতির সব মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল। অনেক প্রতিভাবান কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ওএসডি করা হয়েছে। গুম, খুনের ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগের কাছে বিরোধী মতসহ কারও জীবনের কোন নিরাপত্তা ছিল না। শফিকুর রহমান আরও জানান, বয়স্ক মানুষরাও তাদের জুলুম থেকে রেহাই পায়নি। তবে সবচেয়ে বেশি জুলুম ও ফ্যাসিজমের শিকার হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়ি ঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে একটা রোডম্যাপ দিতে হবে। বিগত সরকারে আসন পুনর্বিন্যাসের নামে জুলুম করেছে। সেগুলো আবার নতুন করে করতে হবে। যৌক্তিক সময়ের মধ্যে ভোটার তালিকা করে প্রবাসীদেরও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবিও জানান তিনি।

পিন্ডি থেকে স্বাধীনতা এনেছি, দিল্লির কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্য না রিজভী

রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীনতা পিন্ডির কাছ থেকে ছিনিয়ে এনেছি, দিল্লির কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির । বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে রোডমার্চের শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলন। ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশন অফিসে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা থেকে আগরতলার উদ্দেশ্যে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল এই রোডমার্চ করছে। তিনি বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা কিনেছি, এই স্বাধীনতা বিক্রি করে দেব? আমরা পিন্ডির কাছে থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি দিল্লির কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্য নয়? রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভারত রক্তপিপাসু লেডি ফেরাউনকে টিকিয়ে রাখার জন্য সমর্থন দিচ্ছে। ভারতের শাসকগোষ্ঠী গোটা পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশগুলোর কাছে সমালোচিত। অথচ ভারত গণতান্ত্রিক দেশ! তিনি বলেন, ভুটান, নেপাল, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কার লোকেরা নিজের কথায় চলুক এটা ভারত চায় না। দিল্লির কথায় চলতে হবে কেন? বাংলাদেশের মানুষের রক্তের তেজ, আত্মশক্তি, বীরত্ব এটা দিল্লির শাসকরা বুঝতে পারেনি।