গ্রামীণফোনের চাকুরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহাল ও পাওনা পরিশোধের দাবি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৯:৫০ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
‘চাকুরিচ্যুত ও অধিকার বঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’ ধারাবাহিক কর্মসুচির অংশ হিসাবে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হল অবৈধভাবে চাকুরিচ্যুত শ্রমিকদের চাকুরিতে পুনর্বহাল, সব প্রকার আইনি পাওনা পরিশোধ ও শ্রমিক নির্যাতনে জড়িত কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবী জানানো।
গ্রামীণফোন বাংলাদেশের অন্যতম লাভজনক প্রতিষ্ঠান, দীর্ঘ দিন ধরে শ্রম আইন লঙ্ঘন করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি তথাকথিত স্বেচ্ছায় অবসরের নামে তিন হাজার ৩০০ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করেছে এবং শ্রমিকের পাওনা লভ্যাংশের বিলম্ব জরিমানা ও ন্যায্য পাওনা পরিশোধে অবহেলা করে চলেছে। তাছাড়া, চাকুরিচ্যুত শ্রমিকদের স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের দোসর কিছু কর্মকর্তা অমানবিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করে চাকুরী ছাড়তে বাধ্য করেছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে গেল ২ ডিসেম্বর থেকে 'চাকুরিচ্যুত ও অধিকার বঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে গ্রামীণফোনের শ্রমিকেরা বসুন্ধরার জিপি হাউসের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচী পালন করে এসেছে। রোববার (২২ ডিসেম্বর) শ্রমিক সমাবেশের এক পর্যায়ে ভাটারা খানার এসআই ওবাইদুল শ্রমিক নেতাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং সমাবেশ স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য করে।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে ও দাবী আদায়ের লক্ষে সোমবারের কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শ্রমিকদের প্রধান তিন দফা দাবি হল অবৈধভাবে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহাল এবং পূর্ণ আর্থিক ও সামাজিক ক্ষতিপূরণ প্রদান; সব বকেয়া পাওনা দ্রুত পরিশোধ, বিলম্বিত লভ্যাংশের পেনাল্টিসহ এবং গ্রামীণফোন কার্মকর্তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার ও অত্যাচারের তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
মানববন্ধনে শ্রমিক নেতারা বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায় না মেনে ও হীন-স্বার্থে পুনরায় মামলা করে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত করে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। দেশবাসীর কাছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রামীণফোন প্রচার করছে, তারা দেশের সমাজে, অর্থনীতিতে ও জনকল্যাণে ভূমিকা রেখে চলেছে। কিন্তু, প্রকৃতপক্ষে বিতাড়িত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে প্রায় তিন হাজার স্থায়ী শ্রমিককে নানা কৌশলে চাকুরিচ্যুত করেছে। এ কাজে তাদের সহযোগিতা করেছে চিহ্নিত স্বৈরাচারের দালাল যথা ফজলে নূর তাপস, মুস্তাফা জব্বার, তারানা হালিম, জুয়াইদ পলক প্রমুখ। দেশের আইনকে নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করে লাভজনক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান হয়েও তিন হাজার ৩০০ পরিবারকে অনিশ্চিত জীবনের দিকে ঠেলে দিয়েছে।’
এই অন্যায্য ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিচারের জন্য বক্তারা সরকারকে তদন্ত কমিটি গঠন করার দাবি জানান।
কর্মসূচী শেষে বক্তারা দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচির অব্যহত রাখার ঘোষণা দেন।