
নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ১৫০ কোটি টাকা ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে শিল্প গ্রুপ এস আলমের কর্ণধার সাইফুল আলম ও সিকদার গ্রুপের ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম।
মামলায় সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার, তার ভাই রিক হক সিকদার এবং তিন বোন মমতাজুল হক সিকদার, লিসা ফাতেমা হক সিকদার, পারভীন হক সিকদার—সহ রিক হক সিকদারের ছেলে জন হক সিকদারকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া এম. এস কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভলপারস ও ম্যাম ইমপেক্সের স্বত্বাধিকারী মো. সালাউদ্দিন, মাহবুব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ মাহবুব-ই-করিম, মো. শেখ আলম, মনিশংকর বিশ্বাসকেও আসামি করা হয়েছে।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলম ছাড়াও ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপক এম. এম. মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জহুরুল হক, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল আজিজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মালেক, সাবেক পরিচালক ফারজানা পারভীন, আতিকুর নেসা, সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ ইসহাক, আহমদ মুক্তাদির আরিফ, ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক মনোনীত পরিচালক খন্দকার ইফতেখার আহমদ, বদরুন নেছা, জামাল মোস্তফা চৌধুরী, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোল্লা ফজলে আকবর এবং সাবেক পরিচালক মো. ওয়াহিদুল আলম শেঠকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, রন হক সিকদার ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রোপ্রাইটর বেঙ্গল ও এন্ডএম সার্ভিসেসের নামে ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখায় হিসাব খোলেন। একই দিনে তিনি পাওয়ার প্লান্টের দুটি কার্যাদেশ বাস্তবায়নের কথা বলে ১৫০ কোটি টাকার বাই-মুরাবাহা ঋণের আবেদন করেন। তবে দুদকের তদন্তে কোনো কার্যাদেশ বা জামানত পাওয়া যায়নি।
পরবর্তী সময়ে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ঋণ অনুমোদন করে এবং ৫ ফেব্রুয়ারি একই দিনে ১২টি ডিলের মাধ্যমে পুরো ১৫০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। একই দিনে সিকদার গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এম এস কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভলপারস, মাহবুব এন্টারপ্রাইজ ও ম্যাম ইমপেক্সের অনুকূলে যথাক্রমে ৪৭ কোটি, ৪৮ কোটি ও ৬০ কোটি টাকা দেওয়া হয়। কোনো জামানত, কার্যাদেশ বা প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই ছাড়াই এই অর্থ বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তর করে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে দুদক অভিযোগে উল্লেখ করেছে। ২০২৫ সালের ২৪ আগস্ট পর্যন্ত সুদসহ বকেয়া দাঁড়িয়েছে ২০৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বেশি।
ক্ষমতার পরিবর্তনের পর সিকদার পরিবার ও আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলমের নামে অর্ধ ডজনের বেশি মামলা করা হয়েছে দুদকের মাধ্যমে।