
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ থেকে শুরু হচ্ছে সর্বশেষ সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ। গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ ও নৃশংসতার অভিযোগে এ মামলা চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় ৫৪তম সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির হবেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ সময় তাঁর জবানবন্দির অংশবিশেষ এবং জব্দ করা ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হবে, যা সরাসরি সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এর আগে শহীদ আবু সাঈদের পিতা, স্বজনহারা পরিবার, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমানসহ গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীরা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম। অপরদিকে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এ ছাড়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, যিনি রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, তাঁর পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই এই মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরবর্তীতে ঘটনার সত্য উদঘাটনের জন্য রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন সাবেক আইজিপি মামুন, যা আদালত মঞ্জুর করে।
এই মামলার বাইরে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। একটি মামলায় আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনামলে গুম-খুনের দায়ে তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে ২০১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে।
গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার এবং প্রশাসনের অনুগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। বর্তমানে এসব অপরাধের বিচারকাজ চলছে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।