
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি বিভাজনের রাজনীতি করে না। সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চায়।
শনিবার (১৬ আগস্ট) চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জে এম সেন হল প্রাঙ্গণে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে জাতীয় চারদিনব্যাপী আয়োজনে দ্বিতীয় দিনের ধর্ম সম্মেলন ও সাধু সন্ত ঋষি বৈষ্ণব মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন তিনি।
খসরু বলেন, “সমাজে যখন কোন মহামানব জন্মগ্রহণ করেন তখন তিনি সবার মঙ্গলের জন্য কাজ করেন। বিশ্বের শান্তির জন্য তিনি আবির্ভূত হন। তখন তার মঙ্গলজনক কাজ সকল মানবজাতির জন্য আশীর্বাদপুষ্ট হয়। ঠিক একইভাবে শ্রীকৃষ্ণ অন্যায় অবিচার থেকে মানবসমাজকে মুক্তি দিতে দ্বাপরযুগে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কংসসহ অনেক অসুরকে বধ করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ ও হানাহানি চলছে, যা বন্ধে সকলের সহনশীলতা প্রয়োজন। “কিন্তু যারা মানুষ মারছে, হানাহানি করছে তারা কোন সময় ধর্মের কথা বলে, কোন সময় বর্ণের কথা বলে আবার কোন সময় সংস্কৃতির কথা বলে।”
‘অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তি’ বলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাকে অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্ব বলা হয়। কেন বলতে হবে? আমার সংবিধানে তো সকল মানুষের সমান অধিকারের কথা বলেছে। তাহলে অসাম্প্রদায়িক কেন বলতে হবে? তাহলে কোন গলদ আছে এখানে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সংবিধান মানলে অবশ্যই অসাম্প্রদায়িক হতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা পুরোপুরি বলা আছে। সুতরাং অসাম্প্রদায়িক মুখে নয়, প্রকৃত অসাম্প্রদায়িক হলে দেশে কোন হানাহানি থাকবে না।”
সংখ্যালঘু শব্দ প্রসঙ্গে খসরু বলেন, “সংখ্যালঘু বলতে কোন শব্দ নেই। আমরা সবাই বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশি হিসেবে সবার অধিকার নিশ্চিত করা যেকোন সরকারের দায়িত্ব।”
তিনি বলেন, জাতি হিসেবে আমরা একটি দেশ, একটি সমাজ। যারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করেছে, তারা বারবার ধ্বংস হয়েছে। এ দেশের সাধারণ মানুষ সাম্প্রদায়িকতাকে ঘৃণা করে।
তিনি বলেন, “আজকের বাংলাদেশে আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, সেখানে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে সবাই। যদি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হয় তবে কোন বিভাজন করা যাবে না। দেশে সবার ধর্ম থাকবে, সংস্কৃতি থাকবে।”
“সবাই তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব পালন করবে। এটার সঙ্গে গণতন্ত্র বা সংবিধানের কোনো সংঘর্ষ নেই। জাতি ও রাজনীতিকদের সহনশীল হতে হবে। রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও দেশের স্বার্থে সবাইকে এক হতে হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লায়ন আর কে দাশ রুপুর। মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালন করেন বাঁশখালীর ঋষিধামের মোহন্ত শ্রীমৎ স্বামী সচিদানন্দ পুরী মহারাজ।