.png)
যথাযথ কারণ ছাড়াই জুমার নামাজ আদায় না করলে পুরুষদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি কার্যকর করবে মালয়েশিয়ার তেরেঙ্গানু রাজ্য সরকার। নতুন আইন অনুযায়ী, এ ধরনের অপরাধে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা তিন হাজার রিঙ্গিত জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড একসঙ্গে হতে পারে।
শরিয়া আইনের আওতায় ঘোষিত এই নিয়ম অনুযায়ী, কোনো মুসলিম পুরুষ প্রথমবার এ অপরাধে ধরা পড়লেই শাস্তির মুখোমুখি হবেন।
বুধবার প্রকাশিত ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, সোমবার তেরেঙ্গানুর ক্ষমতাসীন প্যান-মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি এ ঘোষণা দেয়। এর আগে নিয়ম ছিল, টানা তিনবার জুমার নামাজ না পড়লে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা এক হাজার রিঙ্গিত জরিমানার বিধান কার্যকর হতো।
নতুন বিধান বাস্তবায়নের জন্য তেরেঙ্গানু ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যৌথভাবে বিশেষ টহল দল কাজ করবে। পাশাপাশি, স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন এশিয়া হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লেবার অ্যাডভোকেটসের পরিচালক ফিল রবার্টসন। তিনি বলেন, এ ধরনের আইন ইসলামকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে। ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতার অর্থ হলো এর বিপরীতে বিশ্বাস না করারও স্বাধীনতা থাকবে। তেরেঙ্গানু কর্তৃপক্ষ এমন কঠোর আইন চাপিয়ে দিয়ে স্পষ্টভাবে মানবাধিকার বাধাগ্রস্ত করছে।
তবে রাজ্যের আইনসভার সদস্য মুহাম্মদ খালিল আবদুল হাদি স্থানীয় এক গণমাধ্যমকে জানান, শাস্তি হবে শেষ বিকল্প। তার ভাষায়, এই শাস্তির উদ্দেশ্য স্মরণ করিয়ে দেওয়া যে, জুমার নামাজ শুধু ধর্মীয় প্রতীক নয়, বরং মুসলমানদের আনুগত্যের প্রকাশ।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ২০০১ সালে প্রথম এ আইন প্রণয়ন করা হয়। পরে ২০১৬ সালে সংশোধন করে আরও কঠোর শাস্তির বিধান যোগ করা হয়। সে সময় রমজান মাসের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন বা নারীদের প্রকাশ্যে হয়রানির ক্ষেত্রেও শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
মুসলিমপ্রধান মালয়েশিয়ায় দ্বৈত আইন ব্যবস্থা চালু আছে। ইসলাম রাষ্ট্রীয় ধর্ম হলেও এখানে দেওয়ানি আইন কার্যকর। পাশাপাশি, মুসলমানদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়গুলোতে শরিয়ত আদালত কর্তৃত্ব রাখে।