
সরকার আগ্রহ দেখালেও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা বা পুলিশকে বডিওর্ন ক্যামেরা (বডি ক্যাম) না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠির জবাবে কমিশন জানিয়েছে, তাদের এ বিষয়ে কিছু করণীয় নেই।
ইসির এ সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক দলগুলো অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, সিসিটিভি ক্যামেরা ও বডি ক্যাম থাকলে নির্বাচন আরও স্বচ্ছ, সুষ্ঠু এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ সহজ হতো।
ইসির উপসচিব রাশেদুল ইসলামের স্বাক্ষরিত চিঠিতে গত সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে বিষয়টি জানানো হয়।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, "এ নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা তিন-চারটি সভা করেছি। এক দিনের জন্য আউটসোর্স করেও ভাড়ায় পাওয়া যায় না। আবার এতগুলো ক্যামেরা কেনাও যৌক্তিক নয়।"
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, "ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ও বডিওর্ন ক্যামেরার বিষয়ে সাধারণ মানুষ আশান্বিত ছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তারা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। তবে নির্বাচনের প্রধান স্টেকহোল্ডার হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলে ভালো হতো।"
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, "সিসিটিভি ও বডিওর্ন ক্যামেরা সরবরাহ করার দায়িত্ব তো সরকারের। কাজেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ইসি কে? তাহলে কী তারা ভোট ডাকাতির নির্বাচন করতে চায়? ডাকসু নির্বাচনে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল বলেই কারচুপির কোনো অভিযোগই টেকেনি। কাজেই জাতীয় নির্বাচনেও সিসি ক্যামেরা লাগবেই।"
জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, "ভোটার ও পোলিং এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্রগুলোতে সিসি ক্যামেরা রাখার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আবার পুলিশের শরীরে বডি ক্যামেরা থাকলে, তাদের মাধ্যমে ভোটের অনিয়ম রোধ করা সম্ভব হবে। ইসি বডি ক্যামেরা না রাখার সিদ্ধান্ত নিলে আমরা নির্বাচনে দুদিক থেকেই অনিরাপদ হয়ে পড়ব।"
ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ৬১৮টি
ইসি প্রকাশিত খসড়া অনুযায়ী, এবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ধরা হয়েছে ৪২ হাজার ৬১৮টি। গতকাল নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “বর্তমানে দেশে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৬১ লাখ ৬১ হাজার ২০১ জন। গড়ে তিন হাজার ভোটারের জন্য একটি কেন্দ্র ধরে ভোটকেন্দ্রের এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে।” দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্র ছিল ৪২ হাজার ১৫০টি।
প্রশাসনিক সমন্বয় কমিটি গঠনের উদ্যোগ
নির্বাচনের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নিয়ে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে ইসি। এ নিয়ে শিগগিরই সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়া হবে। কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার, ভূমি, আইন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিরা থাকবেন।
নতুন দল নিবন্ধনে আজ বৈঠক
মাঠপর্যায়ের যাচাই-বাছাই শেষে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করতে আজ বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন।