
গাজা উপত্যকা দখলের ইসরায়েলি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া, একে আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত করেছে দেশটি।
পিয়ংইয়ং-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গাজা ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এই অঞ্চলে ইসরায়েলের দখলমূলক নীতিকে তারা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু বুধবার (১৩ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা সম্প্রতি গাজার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার যে পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, তার তীব্র নিন্দা জানায় পিয়ংইয়ং।
কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (KCNA)-কে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, “ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা পুরোপুরি দখল করার বিষয়ে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার ‘সিদ্ধান্ত’ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ।”
এই মন্তব্যটি আসে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা যখন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে গাজা অঞ্চল ধাপে ধাপে দখলের পরিকল্পনায় সম্মতি দেয়ার কয়েকদিন পর। মুখপাত্র আরও বলেন, এই সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে “আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলের বিষয়ে গ্যাংস্টারসুলভ মনোভাব ইসরায়েলের” রয়েছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, গাজা উপত্যকা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এছাড়াও তিনি বলেন, “গাজা উপত্যকার মানবিক সংকট আরও তীব্র করা এবং মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বেপরোয়াভাবে লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের এই অপরাধমূলক দখলদারি কর্মকাণ্ড আমরা কঠোরভাবে নিন্দা ও প্রত্যাখ্যান করছি।”
উত্তর কোরিয়া ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অবৈধ সামরিক অভিযান অবিলম্বে বন্ধ করে এবং গাজা অঞ্চল থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে যায়।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান যুদ্ধে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মহলের ব্যাপক সমালোচনার মুখে রয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬১ হাজার ৬০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়া, গাজার বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলমান রয়েছে।