
জুলাই মাসে ৩৭ শতাংশ এবং আগস্টে ৪৭ শতাংশ কম ইলিশ ধরা পড়ায় বাজারে দাম বেড়ে গেছে, এমন তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, গত মৌসুমের তুলনায় জুলাই মাসে ৩৭ ভাগ কম ইলিশ ধরা পড়েছে। আর আগস্টে ৪৭ ভাগ ইলিশ কম ধরা পড়েছে। যার কারণে বাজারে ইলিশের দাম বেশি। আমরা দামটা কমাতে পারিনি।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আরও জানিয়েছেন, দেশের মানুষের জন্য সুলভ মূল্যে ইলিশের ব্যবস্থা করতে না পারায় তার মধ্যে দুঃখ রয়েছে। তিনি বলেন, আমি খুবই দুঃখিত, বাংলাদেশের মানুষের জন্য এখনও প্রাপ্যতা বাড়াতে পারিনি। এটার জন্য আমার মনে অনেক দুঃখ আছে। ইতিমধ্যে আমরা সরকারিভাবে মাছ বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছি। ফিশারিজ ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের (বিএফডিসি) মাধ্যমে কিছু এলাকায় সাশ্রয়ী মূল্যে মাছ বিক্রির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উত্তরবঙ্গের কিছু মাছ সীমিত আকারে বিএফডিসির মাধ্যমে পাঠানোর উদ্যোগ নেবো।
ইলিশ সংরক্ষণ ও প্রজনন নিয়ে তিনি বলেন, আমরা খুব সফলভাবে মা ইলিশ রক্ষা করতে পারছিলাম। প্রজননের হার ছিল প্রায় ৫২ শতাংশ। তার মানে ইলিশ বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। আমি মনে করি, জাটকা সংরক্ষণটা জরুরি। এবার যে জাটকা রক্ষা হয়েছে, এর সুফল আমরা আগামী বছর পাবো।
দাম বেশি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে উপদেষ্টা জানান, এবার সময়মতো বৃষ্টি হয়নি। ডুবোচর ও পলি পড়ে নদীর নাব্যতা কমে গেছে। ইলিশ যখন সমুদ্র থেকে পদ্মা ও মেঘনায় আসবে সেই সময়ে আমরা তেমন ইলিশ পাইনি। ফলে ইলিশের বাজারে যে প্রাপ্যতা, সেটা আমরা আশানুরূপ পাইনি। সে কারণে আমরা দামটাকে কমাতে পারিনি।
ভারতে ইলিশ রফতানি বিষয়ে তিনি বলেন, ভারতে মাছ পাঠানোর ব্যাপারটা দুর্গা পূজার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে গেছে। প্রায় ছয় বছর ধরে ভারতে মাছ রফতানি হয়ে আসছে। সেখান থেকে অনুরোধ আসলে সৌজন্যবোধের কারণে দেওয়া হয়েছে। চাপটা সে অর্থে নয়। অন্য ধর্ম এবং আমাদের সম্প্রীতির যে ব্যাপারটা আমরা দেখাতে চাই, সেজন্যই এটা করা হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ, পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান, জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ও জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তারা।